20. মক্কা ও মদীনার মসজিদে সালাতের মর্যাদা

【1】

মক্কা ও মদীনার মসজিদে সালাতের মর্যাদা।

কায‘আ (রহঃ) তিনি বলেন, আমি আবূ সা‘ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ)-কে চারটি (বিষয়) বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছি। আবূ সা‘ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বারটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, মসজিদুল হারাম, মসজিদুর রাসূল এবং মসজিদুল আক্‌সা (বায়তুল মাক্‌দিস) তিনটি মসজিদ ব্যতীত অন্য কোন মসজিদে (সালাতের) উদ্দেশে হাওদা বাঁধা যাবে না (অর্থাৎ সফর করা যাবে না)। আবূ হুরায়রা (রাঃ) আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মসজিদুল হারাম ব্যতীত আমার এ মসজিদে সালাত আদায় করা অপরাপর মসজিদে এক হাজার সালাতের চেয়ে উত্তম।

【2】

কুবা মসজিদ। [১]

[১] কুবা মসজিদ : মসজিদে নববী থেকে প্রায় তিন মাইল দূ্রে অবস্থিত মদীনার প্রথম মসজিদ এবং মদীনায় হিজরত কালে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রথম অবস্থান স্থল। নাফি‘ (রহঃ) ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) দু’ দিন ছাড়া অন্য সময়ে চাশ্‌তের সালাত আদায় করতেন না, যে দিন তিনি মক্কায় আগমন করতেন। তাঁর অভ্যাস ছিল যে, তিনি চাশ্‌তের সময় মক্কায় আগমন করতেন। তিনি বাইতুল্লাহ্‌ ত্বওয়াফ করার পর মাকামে ইব্‌রাহীম-এর পিছনে দাঁড়িয়ে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করতেন। আর যে দিন তিনি কুবা মসজিদে গমন করতেন। তিনি প্রতি শনিবার সেখানে গমন করতেন এবং সেখানে সালাত আদায় না করে বেরিয়ে আসা অপছন্দ করতেন। নাফি‘ (রহঃ) বলেন, তিনি (ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) হাদীস বর্ণনা করতেন যে, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুবা মসজিদ যিয়ারত করতেন- কখনো সওয়ারীতে, কখনো পদব্রজে। নাফি‘ (রহঃ) তিনি [ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)] তাঁকে আরো বলতেন, আমি আমার সাথীদেরকে যেমন করতে দেখেছি তেমন করব। আর কাউকে আমি দিন রাতের কোন সময়ই সালাত আদায় করতে বাধা দিইনা, তবে তাঁরা যেন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় (সালাতের) ইচ্ছা না করে।

【3】

প্রতি শনিবার যিনি কুবা মসজিদে আগমন করেন।

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি শনিবার কুবা মসজিদে আসতেন, কখনো পদব্রজে, কখনো সওয়ারীতে। ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)-ও ঐরূপ করতেন।

【4】

পদব্রজে কিংবা সওয়ারীতে করে কুবা মসজিদে আগমন করা।

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরোহণ করে কিংবা পায়ে হেঁটে কুবা মসজিদে আসতেন। ইব্‌নু নুমায়র (রহঃ) নাফি‘ (রহঃ) হতে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করতেন।

【5】

কবর ও (মসজিদে নববীর) মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানের ফযীলত।

‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু যায়দ-মাযিনী (রাঃ) আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার ঘর ও মিম্বার-এর মধ্যবর্তী স্থানটুকু জান্নাতের বাগানগুলোর একটি বাগান। আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার ঘর ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের বাগানগুলোর একটি বাগান আর আমার মিম্বর অবস্থিত আমার হাউয (কাউসার)-এর উপরে।

【6】

বায়তুল মাকদিসের মসজিদ।

যিয়াদের আযাদকৃত দাস কাযা‘আ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি আবূ সা‘ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ)-কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে চারটি বিষয় বর্ণনা করতে শুনেছি, যা আমাকে আনন্দিত ও মুগ্ধ করেছে। তিনি বলেছেনঃ নারীগণ স্বামী কিংবা মাহ্‌রাম [১] ব্যতীত দু’দিনের দূরত্বের পথে সফর করবে না। ‘ঈদুল ফিত্‌র ও ‘ঈদুল আযহার দিনগুলোতে সিয়াম নেই। দু’ (ফরজ) সালাতের পর কোন (নফল ও সুন্নাত) সালাত নেই। ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত এবং ‘আসরের পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত। এবং ১. মসজিদুল হারাম ২. মসজিদুল আক্‌সা এবং ৩. আমার মসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদে (যিয়ারতের উদ্দেশে) হাওদা বাঁধা যাবে না। (সফর করা যাবে না)।