29. ‘কাসামাহ’ (খুনের ব্যপারে হলফ করা), ‘মুহারিবীন’ (শত্রু সৈন্য), ‘কিসাস” (খুনের বদলা) এবং ‘দিয়াত’ (খুনের শাস্তি স্বরূপ জরিমানা)

【1】

‘কাসামাহ’ খুনের ব্যাপারে হলফ করা

ইয়াহইয়া এবং রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ) তাঁরা উভয়েই বলেছেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহল ইবনু যায়দ (রাঃ) ও মুহাইয়্যিসাহ ইবনু মাস‘ঊদ বাড়ি থেকে বের হয়ে খাইবার পর্যন্ত এলেন। এরপর সেখান থেকে উভয়েই আলাদা হয়ে গেলেন। তারপর মুহাইয়্যিসাহ্ (রাঃ) ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু সাহলকে একস্থানে খুন হওয়া অবস্থায় পেলেন। তখন তিনি তাঁকে দাফন করলেন। এরপর তিনি এবং হুওয়াইয়িসাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) ও ‘আবদুর রহমান ইবনু সাহল (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আগমন করলেন। আর তিনি ছিলেন দলের সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি। ‘আবদুর রহমান (রাঃ) তাঁর উভয় সাথীর আগে কথা বলার জন্য এগিয়ে এলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে কথা বলার জন্য সামনে এসো। সুতরাং তিনি চুপ করে গেলেন এবং তার সাথী দু‘জন কথা বললেন। আর তিনি তাদের দু‘জনের সাথে কথা বললেন। তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুল্লাহ বিন সাহলের (হত্যা ও) হত্যাস্থান বিষয়ে কথা বললেন তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে বললেনঃতোমরা কি এ ব্যাপারে পঞ্চাশবার হলফ (শপথ) করতে পারবে (যে হত্যাকারী পার্শ্ববর্তী ইয়াহূদী সম্প্রদায়) তাহলে নিহত ব্যাক্তির কিসাস বা দিয়াত প্রাপ্তির ব্যাপারে হকদার হবে। প্রতি উত্তরে তারা বলল, আমরা কিভাবে এ ব্যাপারে হলফ (শপথ) করবো? আমরা তো সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃতাহলে ইয়াহূদীরা পঞ্চাশবার হলফ করে তোমাদের দাবী নাকচ করে দিবে। তারা তখন বলল, আমরা কিভাবে কাফির সম্প্রদায়ের হলফ গ্রহণ করে নেব? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ঐ অবস্থা অবলোকন করলেন, তখন তার ‘দিয়্যাত’ দিয়ে দিলেন (নিজের থেকে)। (ই.ফা. ৪১৯৫, ই.সে. ৪১৯৫) সাহল ইবনু আবূ হাসমাহ এবং রাফি‘ ইবনু খাদীজ (রাঃ) একদা মুহাইয়িসাহ ইবনু মাস‘ঊদ ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহল (রাঃ) উভয়েই খাইবারের দিকে গমন করলেন। তারা সেখানের এক খেজুরের বাগানের নিকট থেকে পৃথক হয়ে গেলেন। এরপর ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহল (রাঃ) তথায় নিহত হলেন। (এই খুনের জন্য) তারা ইয়াহূদী সম্প্রদায়কে অভিযুক্ত করলেন। এরপর তাঁর ভাই ‘আবদুর রহমান এবং চাচাত ভাই হুওয়াইয়্যিসাহ ও মুহাইয়্যিসাহ্ (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে আগমন করলেন। ‘আবদুর রহমান (রাঃ) তাঁর ভাই এর ব্যাপারে কথোপকথন করলেন। আর তিনি ছিলেন তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃবয়োজ্যেষ্ঠকে সম্মান দাও। অথবা বললেন, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরই কথা আরম্ভ করা উচিত। তখন তাঁরা দু’জন সাথীদের ব্যাপারে কথাবার্তা বললেন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃতাদের কোন ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে তোমাদের মধ্য থেকে কাউকে পঞ্চাশবার হলফ করে বলতে হবে, তাহলে তার দিয়্যাত প্রদান করা হবে। তখন তারা বলল, ব্যাপারটি এমন যে, আমরা তথায় তখন উপস্থিত ছিলাম না। এমতাবস্থায় আমরা কিভাবে হলফ করে বলবো? তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃতবে ইয়াহূদীদের মধ্য থেকে কেউ পঞ্চাশবার ‘হলফ’ করে তোমাদের খুনের দাবী নাকচ করে দেবে। তাঁরা বলল, হে আল্লাহর রসূল! তারা তো কাফির সম্প্রদায়। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের পক্ষ হতে তাঁর “দিয়্যাত” আদায় করে দিলেন। সাহল (রাঃ) বরেন, এরপর একদা আমি তাদের উট রাখার স্থানে প্রবেশ করলাম। তখন ঐ উটের মধ্য হতে একটি উটনী আমাকে তার পা দ্বারা লাথি মারল। হাম্মাদ (রহঃ) এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন- অথবা এর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪১৯৬, ই.সে. ৪১৯৬) সাহল ইবনু আবূ হাসমা (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর তিনি আরবী (তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের পক্ষ হতে তাঁর “দিয়্যাত” আদায় করে দেন) এ কথা বলেছেন। কিন্তু তাঁর বর্ণিত হাদীসে আরবী (উটনী আমাকে লাথি মারল) এ কথা বলেননি। (ই.ফা. ৪১৯৭, ই.সে. ৪১৯৭) সাহল ইবনু আবূ হাসমাহ্ (রাঃ) সাহল ইবনু আবূ হাসমাহ্ (রাঃ) থেকে তাঁদের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪১৯৮ ,ই.সে. ৪১৯৮) বুশায়র ইবনু ইয়াসার (রাঃ) বানূ হারিসাহ্‌ গোত্রের ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহল ইবনু যায়দ আনসারী ও মুহাইয়্যিসাহ্‌ ইবনু মাস‘ঊদ ইবনু যায়দ আনসারী (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে খাইবার গমন করেন। সেখানকার অধিবাসী ছিল ইয়াহূদী সম্প্রদায়। তখন ইয়াহূদী ও মুসলিমদের মধ্যে চুক্তি বলবৎ ছিল। কোন প্রয়োজনের তাগিদে তখন সেখান থেকে উভয়েই পৃথক হয়ে গেলেন। এরপর ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহল (রাঃ) নিহত হলেন। তাঁকে এক হাউজের মধ্যে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেল। তখন তাঁর সাথী তাঁকে দাফন করলেন। এরপর তিনি মাদীনায় ফিরে এলেন। নিহত ব্যক্তির ভাই ‘আবদুর রহমান ইবনু সাহল, মুহাইয়্যিসাহ্‌ ও হুওয়াইয়্যিসাহ্‌ (রাঃ) এসে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর মৃত্যুর ঘটনা এবং যে স্থানে নিহত হলেন সবই বর্ণনা করলেন। বুশায়র (রহঃ) ধারণা করেছেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে বললেনঃ তোমরা এ ব্যাপারে পঞ্চাশবার হলফ করে বলবে, তাহলে তোমরা তোমাদের নিহত ব্যক্তির অথবা তোমাদের সাথীর দিয়্যাতের (খুনের জরিমানা) হকদার হবে। তারা বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমরা তো তখন সেখানে প্রত্যক্ষ দেখিনি এবং উপস্থিতও ছিলাম না। তিনি ধারণা করছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইয়াহূদীরা পঞ্চাশবার এ ব্যাপারে ‘হলফ’ করে তোমাদের খুনের দাবী নাকচ করে দেবে। তখন তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কিভাবে একটি কাফির সম্প্রদায়ের হলফ গ্রহণ করতে পারি? বুশায়র (রহঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিজের পক্ষ হতে তার দিয়্যাত আদায় করে দিয়েছেন। (ই.ফা. ৪১৯৯ , ই.সে. ৪১৯৯) বুশায়র ইবনু ইয়াসার (রহঃ) বানূ হারিসাহ্ গোত্রের এক আনসারী ব্যক্তি যাকে ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহল ইবনু যায়দ নামে ডাকা হতো, সে এবং তার এক চাচাতো ভাই, যাকে মুহাইয়্যিসাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ ইবনু যায়দ নামে ডাকা হতো….. এর পরবর্তী হাদীসের অংশটুকু লায়স (রহঃ)- এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন এবং তার হাদীসের শেষ কথা----- (তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের পক্ষ হতে তার ‘দিয়্যাত’ আদায় করেছেন) পর্যন্ত বর্ণনা করেন। ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) বলেন, আমার নিকট বুশায়র ইবনু ইয়াসার (রহঃ) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, সাহল ইবনু আবূ হাসমাহ্ (রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, “নিশ্চয় ফার্য হিসেবে আদায়কৃত ঐ সমস্ত ‘দিয়্যাতের’ উট রাখার স্থানে একটি উটনী আমাকে লাথি মেরেছিল।” (ই.ফা. ৪২০০ , ই.সে. ৪২০০) সাহল ইবনু আবূ হাসমাহ্‌ আনসারী (রাঃ) তিনি বলেন, তাদের মধ্য হতে একদল লোক খাইবারের দিকে গমন করল। এরপর তারা সেখান হতে পৃথক হয়ে গেল। তারপর তারা তাদের একজনকে নিহত অবস্থায় পেল। এভাবে হাদীসের শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেন। বর্ণনাকারী বলেন যে, এতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুনের বদলা (দিয়্যাত) বাতিল হয়ে যাওয়াকে অপছন্দ মনে করলেন। অতএব, তিনি সদাকাহ্‌র উট থেকে একশ’ উট ‘দিয়্যাত’ হিসেবে প্রদান করলেন। (ই.ফা. ৪২০১ , ই.সে. ৪২০১) সাহ্‌ল ইবনু আবূ হাসমাহ্‌ (রাঃ) তাঁর সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে গণ্য ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহল এবং মুহাইয়্যিসাহ্‌ (রাঃ) উভয়েই খাইবারের দিকে গমন করলেন দূর্গম পথ দিয়ে। এরপর এক ব্যক্তি মুহাইয়্যিসাহ্‌ (রাঃ)-এর নিকট এসে খবর দিল যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহল (রাঃ) নিহত হয়েছেন এবং তাঁকে একটি নর্দমা বা কূপের মধ্যে ফেলে রাখা হয়েছে। সুতরাং তিনি তথাকার ইয়াহূদীদের কাছে এসে বললেন, আল্লাহর শপথ তোমরাই তাঁকে হত্যা করেছ। তারা আল্লাহর শপথ করে বললো, আমরা তাঁকে হত্যা করিনি! এরপর তিনি স্বীয় সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে এলেন এবং তাঁদের কাছে ঐ ঘটনা বর্ণনা করলেন। পরিশেষে তিনি ও তাঁর বড় ভাই হুওয়াইয়িসাহ্‌ এবং ‘আবদূর রহমান ইবনু সাহল (রাঃ) (নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে) আগমন করলেন। এরপর মুহাইয়্যিসাহ্‌ (রাঃ) কথা বলার জন্য অগ্রসর হলেন, যিনি (নিহত ব্যক্তির সঙ্গে) খাইবারে ছিলেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহাইয়্যিসাহ্‌ (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেন, বড় জন! বড় জন! অর্থাৎ বয়ষ্ক ব্যক্তিকে কথা বলতে দাও। তখন হুওয়াইয়িসাহ্‌ (রাঃ) কথাবার্তা বললেন, এরপর মুহাইয়্যিসাহ্‌ (রাঃ)-ও কথা বললেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হয়ত তারা তোমাদের সাথীর খুনের বদলা (দিয়্যাত) আদায় করে দিবে, নতুবা যুদ্ধের জন্য তৈরি হবে। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের কাছে ঐ ব্যাপারে পত্র লিখলেন। প্রতি উত্তরে তারা লিখল যে, আল্লাহর শপথ নিশ্চয়ই আমরা তাকে হত্যা করিনি। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুওয়াইয়িসাহ্‌, মুহাইয়্যিসাহ্‌ ও ‘আবদূর রহমানকে বললেন, তোমরা কি শপথের মাধ্যমে তোমাদের সাথীর রক্তপণ আদায়ের হকদার হতে সক্ষম হবে? তাঁরা বলল, না। তখন তিনি বললেনঃ তাহলে ইয়াহুদীরা তোমাদের কাছে হলফ করে বলুক। তাঁরা তখন বলল, তারাতো (ইয়াহূদী) মুসলিম নয়। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের পক্ষ হতে তাঁর ‘দিয়্যাত’ (খুনের বদলা) আদায় করে দিলেন। এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের একশ’ উটনী প্রদান করলেন এবং ঐগুলো তাদের বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেয়া হলো। সাহল (রাঃ) বলেন, ঐগুলির মধ্য হতে একটি লাল রঙের উটনী আমাকে লাথি মেরেছিল। (ই.ফা. ৪২০২ , ই.সে. ৪২০২) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একজন আনসারী সাহাবার রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুনের ব্যাপারে হলফ করে বলা ----- যা জাহিলী যুগে চলত তা পূর্বের ন্যায় বলবৎ রেখেছেন। (ই.ফা. ৪২০৩ , ই.সে. ৪২০৩) মুহাম্মাদ ইবনু রাফি‘ (রহঃ), ইবনু শিহাব থেকে একই সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং এ কথা অতিরিক্ত করেছেন যে, ----- রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে (দিয়্যাতের) ব্যাপারে নিষ্পত্তি করেছিলেন, যা তারা ইয়াহূদীদের উপর (হত্যার) দাবী উত্থাপন করছিল। (ই.ফা. ৪২০৪, ই.সে. ৪২০৪) হাসান ইবনু আলী হুলওয়ানী (রাযিঃ) আনসারী লোকদের সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ইবনু জুরাইজ (রাযিঃ) এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪২০৫, ইসলামিক সেন্টার ৪২০৫)

【2】

শত্রু সৈন্য এবং মুরতাদদের বিচার

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) উরাইনাহ্‌’ গোত্রের কিছু সংখ্যক লোক মাদীনায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এল। (সেখানের আবহাওয়া তাদের অনুকূলে না হওয়ায়) তারা অসুস্থ হয়ে পড়ল। এতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে বললেনঃ তোমরা ইচ্ছে করলে সদাকাহ্‌র ঐ সব কাছে যেতে পার এবং তার দুধ ও মূত্র পান করতে পার। তারা তা-ই করল এবং এতে তারা সুস্থ হয়ে গেল। এরপর তারা রাখালদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদেরকে হত্যা করল। পরিশেষে তারা ইসলাম ত্যাগ করে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাল সম্পদ নিয়ে পলায়ন করে। এ সংবাদ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পৌঁছলে তিনি তাদের পিছনে লোক পাঠালেন, তাঁরা তাদেরকে গ্রেফতার করল। এরপর তাদের হাত-পা কেটে দিল এবং তাদের চোখ উপড়ে ফেলল এবং তাদেরকে রৌদ্রে নিক্ষেপ করল। এভাবে তারা মারা গেল। (ই.ফা. ৪২০৬ , ই.সে. ৪২০৬) আনাস (রাঃ) “উকল” গোত্রের আটজনের একটি দল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলো। তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ইসলামের উপর বাই‘আত করল। অতঃপর মাদীনার আবহাওয়া তাদের প্রতিকূল হওয়ায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট অভিযোগ করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা কি আমাদের রাখালের সাথে গমন করে উটের মূত্র এবং দুগ্ধ পান করতে পারবে? তখন তারা বলল, জী-হ্যাঁ। এরপর তারা বের হয়ে গেল এবং এর (উটের) মূত্র ও দুগ্ধ পান করল। এতে তারা সুস্থ হয়ে গেল অতঃপর তারা রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে গেল। এ সংবাদ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পৌঁছল। তিনি তাদের পিছনে লোক পাঠালেন। তাঁরা তাদেরকে পাকড়াও করে নিয়ে এল। তাদের প্রতি নির্দেশ জারি করা হলো। তখন তাদের হাত-পা কর্তন করা হলো এবং তপ্ত লৌহ শলাকা চোখে প্রবেশ করানো হলো। এরপর তাদেরকে রৌদ্রে নিক্ষেপ করা হলো। অবশেষে তারা মারা গেল। ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) ….. বর্ণনা ---- এর স্থলে ---- উল্লেখ রয়েছে। রাবী বলেন, অতঃপর তাদের চোখগুলো উপড়ে ফেলা হলো। (ই.ফা. ৪২০৭ , ই.সে. ৪২০৭) আনাস ইবনু মালিক (রা.) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট ‘উকল’ অথবা ‘উরাইনাহ্‌’ গোত্রের একদল লোক এলো। মাদীনার আবহাওয়া তাদের (বসবাসের) জন্য উপযোগী হয়নি। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে ‘লিকাহর’ (দুগ্ধবতী উটনীর) নির্দেশ দিলেন। তাদেরকে আরো নির্দেশ দিলেন এর মূত্র ও দুগ্ধ পান করার জন্য। এ হাদীসটি হাজ্জাজ ইবনু আবূ উসমানের বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ অর্থে বর্ণিত হয়েছে। রাবী বলেন যে, এবং তাদের চক্ষুসমূহ উপড়ে ফেলা হল আর তারা রৌদ্রে নিক্ষিপ্ত হল। তারা পানি পান করতে চাইল, কিন্তু তাদেরকে পানি পান করানো হল না। (ই.ফা. ৪২০৮, ই.সে. ৪২০৮) আবূ কিলাবাহ্‌ (র.) তিনি বলেন, একদা আমি উমার ইবনু আবদুল আযীয (রাঃ)-এর পিছনে বসা ছিলাম। তিনি জনগণের কাছে জানতে চাইলেন, তোমরা ‘কাসামাহ্‌’ (খুনের ব্যাপারে হলফ করা) সম্পর্কে কি বল? আম্বাসাহ (র.) বললেন, আমাদের কাছে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এমন হাদীস বর্ণনা করেছেন। আমি বললাম, আনাস (রাঃ) বিশেষ করে আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর কাছে একদল লোক আগমন করল। এরপর আনাস আইয়ূব এবং হাজ্জাজ এর অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। আবূ কিলাবাহ্‌ (র.) বলেন, আমি যখন হাদীসের বর্ণনা শেষ করলাম, তখন বললাম, হে আম্বাসাহ! আপনি কি আমার উপর মিথ্যার অভিযোগ আনলেন? তখন তিনি বললেন, না। আমার কাছে আনাস (রাঃ)-এরূপেই হাদীস বর্ণনা করেছেন। হে সিরিয়াবাসী! তোমরা সর্বদাই কল্যাণের মধ্যে থাকবে যতদিন তোমাদের মাঝে এই লোক বিদ্যমান থাকবেন। অথবা (রাবীর সন্দেহ) তাঁর মত লোক তোমাদের মাঝে অবস্থান করবেন। (অর্থাৎ এ দ্বারা তিনি আবূ কিলাবার স্মরণশক্তির প্রশংসা করলেন।) (ই.ফা. ৪২০৯, ই.সে. ৪২০৯) আনাস ইবনু মালিক (রা.) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ‘উকল’ সম্প্রদায়ের আটজন লোক এলো- এ হাদীস উপরে বর্ণিত হাদীসের মতই, শুধু “তাদেরকে তিনি দাগ দেননি” (তপ্ত লৌহ শলাকা দ্বারা কর্তিত স্থানে পুড়ে দেয়া) এ কথাটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪২১০, ই.সে. ৪২১০) আনাস ইবনু মালিক (রা.) তিনি বলেন, ‘উরাইনাহ্‌’ গোত্রের একদল লোক রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আগমন করে ইসলাম গ্রহণ করল এবং তাঁর কাছে বাই‘আত নিল। মাদীনায় অবস্থানকালে তাদের মস্তিষ্কে বিভ্রাটজনিত রোগ দেখা দিল। (--) শব্দের অর্থ (--) মস্তিষ্কের রোগ, কিংবা হৃৎপিণ্ডের রোগ উদরী রোগ। এরপর তিনি উল্লিখিত হাদীসের বর্ণনাকারীর অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। শুধু এতটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, তাঁর (নাবী সঃ-এর) কাছে তখন বিশজনের মত আনসারী যুবক ছিল। তাদেরকে তিনি ওদের (ধরার) জন্য প্রেরণ করলেন। এবং তাদের সঙ্গে একজন এমন অভিজ্ঞ লোক প্রেরণ করলেন, যিনি তাদের পদচিহ্ন দেখে গন্তব্য স্থল নির্ণয় করতে সক্ষম। (ই.ফা. ৪২১১, ই.সে. ৪২১১) আনাস (রা.) হাম্মাম এর হাদীসে উল্লেখ রয়েছে যে, উরাইনাহ্‌ গোত্রের একদল লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আগমন করল। আর সা’ঈদ (রাঃ)-এর হাদীসে ‘উক্‌ল’ এবং ‘উরাইনাহ্‌’ এর কথা উল্লেখ আছে। এরপর তিনি উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪২১২, ই.সে. ৪২১২) আনাস (রা.) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ লোকদের চোখে গরম লোহা ঢুকিয়ে দেন। কেননা তারা রাখালদের চক্ষুসমূহে গরম লোহা ঢুকিয়ে দিয়েছিল। (ই.ফা. ৪২১৩, ই.সে. ৪২১৩)

【3】

পাথর ও অন্যান্য ধারালো কর্তনকারী ও ভারী জিনিস দ্বারা হত্যা করার দায়ে ‘কিসাস’ আরোপিত হবে এবং মহিলা কর্তৃক পুরুষকে হত্যার দায়েও কিসাস আরোপিত হবে

আনাস ইবনু মালিক (রা.) একদা এক ইয়াহূদী একটি মেয়েকে কয়েকটি রূপার টুকরার জন্য পাথর দ্বারা হত্যা করল। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তাকে এমন অবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আনা হল যে, তখনও তার জীবন অবশিষ্ট ছিল। তখন তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাকে কি অমুক ব্যক্তি মেরেছে? সে তখন মাথা নেড়ে উত্তর দিল, না। এরপর তিনি তাকে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করলেন, তখনও সে মাথা নেড়ে উত্তর দিল, না। আবার তিনি তাকে তৃতীয়বার জিজ্ঞেস করলেন, তখন সে বলল, হ্যাঁ এবং মাথা নেড়ে ইঙ্গিত করল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (ইয়াহূদীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যার কথা স্বীকার করল) তখন তাকে তিনি দু’টি পাথরের মাঝে চাপা দিয়ে হত্যা করলেন। (ই.ফা. ৪২১৪, ই.সে. ৪২১৪) শু’বাহ্‌ উল্লিখিত সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেন। আর ইবনু ইদ্রীসের বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ আছে যে, (--) (তখন তিনি তার মাথা দু’টি পাথরের মাঝে রেখে পিষে দিলেন।) (ই.ফা. ৪২১৫, ই.সে. ৪২১৫) আনাস (রা.) এক ইয়াহূদী ব্যক্তি কোন এক আনসারী মেয়েকে তার গহনার জন্য হত্যা করল। এরপর তাকে একটি কূপে ফেলে দিল এবং তার মাথা পাথর দ্বারা পিষে দিল। এরপর তাকে পাকড়াও করা হল এবং রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আনা হল। তিনি নির্দেশ দিলেন, তার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তার উপর পাথর নিক্ষেপ করার জন্য। তখন তার প্রতি পাথর নিক্ষেপ করা হল। অবশেষে সে মারা গেল। (ই.ফা. ৪২১৬, ই.সে. ৪২১৬) ইসহাক্ ইবনু মানসূর (র.) আইয়ূব (র.) উক্ত সানাদে অনুরূপভাবে হাদীসটি বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪২১৭, ই.সে. ৪২১৭) আনাস ইবনু মালিক (রা.) একদা এক ক্রীতদাসীকে এমন অবস্থায় পাওয়া গেল যে, তার মাথা দু’টি পাথরের মাঝে রেখে পিষে দেয়া হয়েছে। তখন তারা (পরিবারের লোকেরা) তাকে জিজ্ঞেস করল, কে তোমাকে এমন করেছে, অমুক-অমুক ব্যক্তি? এভাবে (জিজ্ঞেস করতে করতে) তারা এক ইয়াহূদীর নাম উল্লেখ করল। তখন সে মাথা নেড়ে (হ্যাঁ সূচক) উত্তর দিল। তখন ইয়াহূদীকে আটকানো হল। সে তা স্বীকার করল। অতএব রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মাথা পাথর দ্বারা পিষে দেয়ার নির্দেশ দিলেন। (ই.ফা. ৪২১৮, ই.সে. ৪২১৮)

【4】

যখন কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির জীবন অথবা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর আক্রমণ করে, তখন যদি আক্রান্ত ব্যক্তি তা প্রতিহত করে এবং প্রতিহত করার সময় আঘাতকারীর জীবন অথবা অঙ্গের ক্ষতিসাধন করে, তবে এর জন্য তাকে কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না

ইমরান ইবনু হুসায়ন (রা.) তিনি বলেন, ইলায়া ইবনু মুন্‌ইয়া অথবা ইবনু উমাইয়াহ্‌ (রাঃ) এক ব্যক্তির সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হল। তখন একজন অপর জনের হাতে দাঁত দিয়ে কামড় বসিয়ে দিল। সে যখন আপন হাত তার মুখ থেকে সজোরে টেনে আনল তখন তার সম্মুখভাগের একটি দাঁত খসে গেল। ইবনু মুসান্না (একটির স্থলে) দু’টি দাঁত বলেছেন। উভয়েই তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের একজন কি এমনভাবে দাঁত দিয়ে কামড় দিলে যেমনভাবে উট কামড় দেয়? তবে এরজন্য কোন (দিয়্যাত) ক্ষতিপূরণ নেই। [দ্রষ্টব্য হাদীস ৪৩৭০] (ই.ফা. ৪২১৯, ই.সে. ৪২১৯) ইবনু ইয়া’লা (রা.)-এর সূত্রে নাবী (সঃ) ইবনু ইয়া’লা (রাঃ)-এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪২২০, ই.সে. ৪২২০) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রা.) এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির হাতে কামড় বসিয়ে দিল। তখন সে সজোরে তার হাত টেনে নিল। এতে সে ব্যক্তির দাঁত খসে পড়ল। এ ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট অভিযোগ দায়ের করা হ’ল। তখন তিনি তা নাকচ করে দেন এবং বলেন, তুমি তো প্রতিপক্ষের গোশ্‌ত খেতে চেয়েছিলে। (ই.ফা. ৪২২১, ই.সে. ৪২২১) সাফওয়ান ইবনু ইয়া’লা (রা.) ইয়ালা ইবনু মুন্‌ইয়া (রাঃ)-এর এক শ্রমিকের হাতে এক ব্যক্তি কামড় বসিয়ে দিল। তখন সে সজোরে তার হাত টেনে নিল। এতে ঐ ব্যক্তির দাঁত খসে পড়ল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ ব্যাপারে মুকাদ্দমা দায়ের করা হল। তখন তিনি তা নাকচ করে দেন এবং বলেন যে, তুমি তো তার হাত এমনভাবে চিবাতে চেয়েছিলে যেমনভাবে উট চিবায়। [দ্রষ্টব্য হাদীস ৪৩৭১] (ই.ফা. ৪২২২, ই.সে. ৪২২২) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রা.) এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির হাতে কামড় বসিয়ে দিল। সে তখন তার হাত সজোরে টেনে নিল। এতে তার একটি অথবা দু’টি দাঁত খসে পড়ল। সে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করল। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি আমার কাছে কি চাও? তুমি কি চাও যে, আমি তাকে নির্দেশ করবো তার হাত তোমার মুখে প্রবেশ করিয়ে দেবে, আর তুমি তা কামড়াবে যেমন উট চিবিয়ে থাকে? তুমি ইচ্ছে করলে তোমার হাত তার মুখের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিতে পার, সে তখন তা দাঁতে কর্তন করবে, এরপর তুমিও তা সজোরে টেনে নিও। [দ্রষ্টব্য হাদীস ৪৩৬৬] (ই.ফা. ৪২২৩, ই.সে. ৪২২৩) ইয়া’লা ইবনু মুন্‌য়াহ্‌ (রা.) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এমন এক ব্যক্তি এসে অভিযোগ দায়ের করল-যে অপর এক ব্যক্তির হাতে কামড় বসিয়ে দিয়েছিল। সে যখন তার হাত সজোরে টেনে নিল। এতে তার দু’টি দাঁত পড়ে গেল। অর্থাৎ-যে ব্যক্তি দাঁত দ্বারা কামড় দিয়েছিল তার দাঁত পড়ে গেল। বর্ণনাকারী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার এ অভিযোগ নাকচ করে দিলেন এবং বললেন, তুমি তার হাত এমনভাবে চর্বন করতে চেয়েছিলে যেমন উট চর্বন করে থাকে। (ই.ফা. ৪২২৪, ই.সে. ৪২২৪) ইয়া’লা ইবনু উমাইয়াহ্‌ (রা.) তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে তাবূকের যুদ্ধ করেছি। বর্ণনাকারী বলেন, ইয়া’লা বলতেন, ঐ যুদ্ধ আমার নিকট একটি নির্ভরযোগ্য (পুণ্যের) কাজ ছিল। আতা (র.) ..... সাফওয়ান (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, ইয়া’লা (রাঃ) বলেছেন, আমার একজন শ্রমিক ছিল সে এবং অপর এক ব্যক্তি পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হল। এতে একজন অপরজনের হাতে কামড় বসিয়ে দিল। বর্ণনাকারী বলেন, সাফওয়ান (রাঃ) আমাকে খবর দিয়েছেন তাদের দু’জনের মধ্যে কে অন্যের হাতে কামড় দিয়েছিল। যে ব্যক্তির হাতে কামড় দিয়েছিল সে ব্যক্তি কামড় দাতার মুখ থেকে তার হাত সজোরে টেনে নিল। এতে তার সম্মুখের দু’টি দাঁতের একটি দাঁত পড়ে গেল। তখন উভয়েই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে অভিযোগ পেশ করল, তখন তিনি দাঁত পড়ে যাওয়ার অভিযোগ নাকচ করে দিলেন। (ই.ফা. ৪২২৫, ই.সে. ৪২২৫) ইবনু জুরায়জ (র.) হতে একই সূত্রে ইবনু জুরায়জ (র.) হতে একই সূত্রে উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪২২৬, ই.সে. ৪২২৬)

【5】

দাঁত এবং এর অনুরূপ ব্যাপারে কিসাস (বদলা) সাব্যস্ত করার বর্ণনা

আনাস (রা.) রাবী (রাঃ)-এর ভগ্নি হারিসার মাতা এক ব্যক্তিকে আহত করল। এ ব্যাপারে তারা (তার আত্মীয়রা) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট অভিযোগ আনলো। তখন রসূসুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্‌ কিসাস! আল্‌ কিসাস (বদলা)! অর্থাৎ-এতে কিসাস আরোপিত হবে। তখন উম্মু রাবী বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! অমুকের (উম্মু হারিসার) নিকট হতে কি কিসাস নেয়া হবে? আল্লাহ্‌র কসম! তাঁর নিকট হতে কিসাস না নেয়া হোক। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সুব্‌হানাল্লাহ! (অর্থাৎ- তিনি আশ্চর্যান্বিত হয়ে বললেন) হে উম্মু রাবী‘ ! কিসাস নেয়া তো আল্লাহ্‌র কিতাবের নির্দেশ। তিনি বললেন, জী না। আল্লাহ্‌র শপথ নিয়ে আরয করছি, তার নিকট হতে কখনও কিসাস (বদলা) না নেয়া হোক। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি বারবার এ কথা বলছিলেন। পরিশেষে আহত ব্যক্তির ওয়ারিশগণ (দিয়্যাত) ক্ষতিপূরণ নিতে সম্মত হল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ্‌র বান্দাগণের মধ্যে এমনও লোক আছে, যদি সে আল্লাহ্‌র নামে শপথ করে কোন কথা বলে তখন আল্লাহ্‌ তা’আলা তা সত্যে পরিণত করে দেন। (ই.ফা. ৪২২৭, ই.সে. ৪২২৭)

【6】

মুসলিম ব্যক্তির হত্যা কি অবস্থায় বৈধ

আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন মুসলিমকে হত্যা করা বৈধ নয়, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল। কিন্তু তিনটি কাজের যে কোন একটি করলে (তা বৈধ)। ১. বিবাহিত ব্যক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত হলে; ২. জীবনের বিনিময়ে জীবন, অর্থাৎ কাউকে হত্যা করলে; ৩. এবং স্বীয় ধর্ম পরিত্যাগকারী, যে (মুসলিমদের) দল থেকে বিচ্ছিন্ন (মুরতাদ) হয়ে যায়। (ই.ফা. ৪২২৮, ই.সে. ৪২২৮) আ’মাশ (রহঃ) আ’মাশ (রহঃ) হতে উল্লেখিত সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪২২৯, ই.সে. ৪২২৯) আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে বললেনঃ সে সত্তার কসম যিনি ব্যতীত অন্য কোন মা’বূদ নেই; এমন কোন মুসলিম ব্যক্তিকে হত্যা করা বৈধ নয় যে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন মা’বুদ নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল। কিন্তু তিন প্রকার ব্যক্তি ব্যতীত- ১. যে বক্তি ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগ করে মুসলিমদের দল পরিত্যাগকারী হয়। আহ্মাদ (রহঃ) ……….. অথবা ………. শব্দ বর্ণনায় সন্দেহ করেছেন; ২. বিবাহিত ব্যভিচারী এবং ৩. জীবনের বিনিময়ে জীবন। অর্থাৎ- কিসাস গ্রহণ। আ’মাশ (রহঃ) বলেন যে, আমি ইব্রাহীমের নিকট হাদীসটি বর্ণনা করলাম, তিনিও আসওয়াদ (রহঃ)-এর সূত্রে ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪২৩০, ই.সে. ৪২৩০) হাজ্জাজ ইবনু শা’ইর ও কাসিম ইবনু যাকারিয়্যা (রহঃ) হতে উভয় সানাদে সুফ্ইয়ান (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি তাঁর বর্ণিত হাদীসে ………… (সে সত্তার কসম যিনি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই) এ কথার উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪২৩১, ই.সে. ৪২৩১)

【7】

যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম হত্যার প্রচলন করল- তার পাপের বর্ণনা

আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি কোন ব্যক্তি অত্যাচারিত হয়ে খুন হয়, তবে সে খুনের একাংশ (পাপ) আদম (আঃ)-এর প্রথম পুত্র (কাবিল)-এর উপর বর্তায়। কেননা সে সর্বপ্রথম খুনের প্রথা প্রচলন করেছিল। (ই.ফা. ৪২৩২, ই.সে. ৪২৩২) আ’মাশ (রহঃ) উক্ত সানাদে হাসীস বর্ণনা করেছেন। তবে জারীর এবং ইসহাক্ (রহঃ)-এর হাদীসে …… (কেননা সে খুনের প্রথা প্রচলন করেছে) এ কথার উল্লেখ আছে। কিন্তু …… (প্রথম) কথাটির উল্লেখ নেই।(ই.ফা. ৪২৩৩, ই.সে. ৪২৩৩)

【8】

পরকালে হত্যার পরিণাম, কিয়ামাতের দিন এর বিচারই প্রথম করা হবে

আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম খুনের বিচার করা হবে। (ই.ফা. ৪২৩৪, ই.সে. ৪২৩৪) ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তাদের কেউ কেউ শু’বাহ্ (রহঃ) হতে …………… (বিচার করা হবে) কথাটি বর্ণনা করেছেন। আর কেউ কেউ ………………. (মানুষের মাঝে হুকুম (বিচার) করা হবে) কথাটি বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪২৩৫, ই.সে. ৪২৩৫)

【9】

হত্যা, সম্মান এবং মালের হক বিনষ্ট করা হারাম হওয়ার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারী

আবূ বাকরাহ (রাঃ)-এর সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেছেনঃ কাল আবর্তিত হয়ে পূর্বাবস্থায় ফিরে এসেছে, যে অবস্থায় আল্লাহ তা’আলা আকাশসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এক বছর হয় বার মাসে, তন্মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস। (অর্থাৎ- তাতে যুদ্ধ বিগ্রহ করা হারাম) এর তিন মাস হল ধারাবাহিক- ১. যুল কা’দা, ২. যুলহাজ্জাহ্ এবং ৩. মুহাররাম। আর রজবও নিষিদ্ধ মাস, যা জামাদিউস্ সানী এবং শা’বানের মাঝে অবস্থিত। এর পর তিনি বললেনঃ এটি কোন্ মাস? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ ব্যাপারে অধিক জানেন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি কিছুক্ষণ চুপ রইলেন। আমরা ভাবলাম যে, তিনি হয়ত এ মাসের নতুন কোন নাম বলবেন। এরপর তিনি বললেনঃ এ-কি “যুলহাজ্জাহ্” মাস নয়? আমরা বললাম, জী-হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এ কোন্ শহর? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অধিক জানেন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি কিছুক্ষণ চুপ রইলেন। এতে আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি হয়ত এর অপর কোন নাম রাখবেন। তিনি বললেনঃ এ-কি (মাক্কা) শহর নয়। আমরা বললাম, জী-হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এ কোন্ দিন? আমরা বললাম আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অধিক জ্ঞাত। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি কিছুক্ষণ চুপ রইলেন। এতে আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি হয়ত এর অন্য কোন নাম বলবেন। তিনি বললেনঃ এ-কি ইয়াওমুন্নাহার (ঈদুল আযহার দিন) নয়? আমরা বললাম, জী-হ্যাঁ, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তিনি বললেনঃ তোমাদের জান ও মাল এবং রাবী মুহাম্মাদ বলেন, আমি ধারণা করি এর সাথে তিনি তোমাদের মান সম্ভ্রম এ কথা যুক্ত করে বললেনঃ এগুলো তেমন মর্যাদাপূর্ণ যেমন তোমাদের কাছে আজকার দিবস, এ নগর এবং এ মাসও পবিত্র। তোমরা খুব শীঘ্রই তোমাদের প্রভুর সাথে মিলিত হবে। তখন তোমাদেরকে তোমোদের কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অতএব তোমরা আমার পরে পথভ্রষ্ট হয়ে একে অন্যের সাথে ঝগড়া-ফাসাদে লিপ্ত হয়ো না। সাবধান! তোমাদের উপস্থিতগণ অবশ্যই অনুপস্থিতদের কাছে আমার এ বাণী পৌছে দিবে। সম্ভবতঃ উপস্থিত ব্যক্তি যাদের কাছে আমার বাণী পৌছে দিবে, তাঁরা কেউ কেউ হয়ত এখানকার শ্রোতাদের চেয়ে অধিকতর সংরক্ষণকারী হবে। এরপর তিনি বললেনঃ ওহে! শুনো, আমি কি আল্লাহর নির্দেশ পৌছে দেইনি? ইবনু হাবীব তাঁর বর্ণনায় ………………….. (রজব নিষিদ্ধ মাস) বর্ণনা করেছেন। আবূ বকর (রাঃ)-এর অপর বর্ণনায় …………… (তোমরা আমার পরে ধর্মান্তরিত হয়ো না) বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ৪২৩৬, ই.সে. ৪২৩৬) আবূ বাক্রাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, যখন ঐদিন (ইয়াওমুন্নাহার) উপস্থিত হল তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের উটের উপর উঠলেন। এক ব্যক্তি তাঁর উটের লাগাম ধরে রেখেছিল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা জান কি, আজ কোন দিন? তাঁরা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অধিক জ্ঞাত। আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি হয়ত এ নাম ব্যতীত অপর কোন নাম বলবেন। এরপর তিনি বললেনঃ আজকের দিন কি ইয়াওমুন্নাহারের নয়? আমরা বললাম, জী-হ্যা, হে আল্লাহর রসূল। তিনি বললেনঃ এটা কোন মাস? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই সবচেয়ে ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ এটা কি যিলহাজ্জ মাস নয়? আমরা বললাম, জী-হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেনঃ এটি কোন শহর? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই অধিক জ্ঞাত। বর্ণনাকারী বলেন, এতে মনে করলাম যে, তিনি হয়ত এর অন্য কোন নাম বলবেন। এরপর তিনি বললেন, এ-কি (মাক্কাহ্) শহর নয়। আমরা বললাম, জী-হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয় তোমাদের জান-মাল এবং সম্মান (বিনষ্ট করা) তোমাদের উপর এরূপ হারাম, যেরূপ তোমাদের জন্য আজকের দিন, এ মাস এবং এ নগরের পবিত্রতা বিনষ্ট করা হারাম। তোমাদের উপস্থিতগণ অনুপস্থিতদের কাছে আমার এ বাণী অবশ্যই পৌঁছে দিবে। এরপর তিনি কাল ও সাদা রং-মিশ্রিত দু’টি ছাগলের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন এবং ঐ দু’টি যাবাহ করলেন এবং যাবাহকৃত ছাগলের এক অংশ আমাদের মাঝে বন্টন করে দিলেন। (ই.ফা. ৪২৩৭, ই.সে. ৪২৩৭) আবূ বাকরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, যখন সেদিন (ইয়াওমুন্নাহারের দিন) উপস্থিত হ’ল তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি উটের উপর উপবেশন করলেন। রাবী বলেন, এক ব্যক্তি তার লাগাম ধরে রেখেছিল। রাবী’র সন্দেহ …….…… শব্দের পরিবর্তে ………..…. (লাগাম) শব্দ বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি ইয়াযীদ ইবনু যুরাই’ (রাঃ)-এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪২৩৮, ই.সে. ৪২৩৮) আবূ বাক্রাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, ইয়াওমুন্নাহার- অর্থাৎ- ঈদুল আযহার দিন আমাদের সামনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ভাষণে বললেনঃ আজ কোন্দিন? এরপরবর্ণনাকারীগণ, ইবনু ‘আওনেরহাদীসেরঅনুরূপবর্ণনাকরলেন। কিন্তুতারা …..…………. (তোমাদের মান-সম্মান) এ শব্দটি উল্লেখ করেননি এবং ……………. (অতঃপর তিনি দু’টি ছাগলের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন) এবং এর পরবর্তী অংশটুকুও উল্লেখ করেননি। আর তিনি তাঁর বর্ণিত হাদীসে ‘তোমাদের এ দিন, এ মাস এবং এ শহরের পবিত্রতার ন্যায়’ থেকে নিয়ে- ……………………………… (যেদিন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ করবে। শুনো! আমি কি তোমাদের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছি? তখন সকলেই বললো, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন) এ পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪২৩৯, ই.সে. ৪২৩৯)

【10】

হত্যার স্বীকারোক্তি দেয়াএবং নিহত ব্যক্তির অভিভাবকদের কিসাসের দাবি করা বৈধ, হত্যাকারী ব্যক্তির নিহত ব্যক্তির অভিভাবকের নিকট ক্ষমার আবেদন করা মুস্তাহাব

আলকামাহ্ ইবনু ওয়ায়িল (রহঃ) তাঁর পিতা তার কাছে বর্ণনা করেছেন, আমি একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বসেছিলাম। এমন সময় একটি লোক অপর এক ব্যক্তিকে চামড়ার দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনে নিয়ে আগমন করল এবং বলল, হে আল্লাহর রসূল! এ ব্যক্তি আমার ভাইকে হত্যা করেছে। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি কি তাকে হত্যা করেছ? (তখন সে বলল, যদি সে তা স্বীকার না করতো, তবে আমি তার উপর সাক্ষী দাঁড় করাতাম।) সে তখন বলল, হ্যাঁ আমি তাকে হত্যা করেছি। তিনি জিজ্ঞেস করলেন : তুমি তাকে কিভাবে হত্যা করেছ? সে বলল, আমি এবং সে গাছের পাতা সংগ্রহ করছিলাম। এমন সময় সে আমাকে গালি দিল। এতে আমর রাগ চড়ে গেল। তখন আমি কুঠার দ্বারা তার মাথায় আঘাত করলাম। এভাবে আমি তাকে হত্যা করেছি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তোমার কি এমন কোন সম্পদ আছে যদ্দ্বারা ‘দিয়্যাত’ (রক্তপণ) পরিশোধ করবে? তখন সে বলল, আমার কাছে একটি কম্বল ও কুঠার ব্যতীত আর কিছুই নেই। তখন তিনি বললেনঃ তোমার সম্প্রদায়ের লোকেরা কি তোমার নিকট থেকে এগুলো কিনে নিয়ে তোমাকে মুক্ত করিয়ে নেবে? সে বলল, আমার সম্প্রদায়ের কাছে আমার এতখানি মর্যাদা নেই। অতএব তিনি তার বন্ধনের দড়ি নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারদের দিকে ছুঁড়ে দিলেন এবং বললেনঃ তুমি তোমার সাথীকে আটকে রাখ। সে তখন তাকে নিয়ে চলে গেল। যখন সে পিছনের দিকে যাচ্ছিল, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি সে তাকে হত্যা করে-তবে সেও তার সমকক্ষ হয়ে গেল। এ কথা শুনে সে ফিরে এলো এবং বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি শুনলাম, আপনি বলছেন : ‘যদি সে তাকে হত্যা করে তবে সে তার সমান হয়ে যাবে।’ আমি তো তাকে আপনার নির্দেশেই ধরে এনেছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি কি এ চাওনা যে, সে তোমার এবং তোমার ভাইয়ের পাপের বোঝা গ্রহণ করুক। তখন সে বলল, তাই কি হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন সে বলল, যদি তাই হয়, (তবে ভাল)। এ বলে সে তার বন্ধনের দড়ি নিক্ষেপ করল এবং তাকে মুক্ত করে দিল। (ই.ফা. ৪২৪০, ই.সে. ৪২৪০) ওয়ায়িল (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক ব্যক্তিকে হাযির করা হল, যে অপর এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। তখন তিনি নিহত ব্যক্তির ওয়ারিসকে তার কাছে হতে কিসাস গ্রহণের অনুমতি দিলেন। তখন সেতাকে নিয়ে চলল এমনঅবস্থায় যে, তার গলায় একটি চামড়ার দড়ি ছিল, যদ্দ্বারা তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। যখন সে ফিরে যাচ্ছিল তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়েই জাহান্নামী। বর্ণনাকারী বলেন, তখন এক লোক ঐ ব্যক্তির সাথে গিয়ে মিলিত হল এবং তাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণী শোনাল। সে তখন হত্যাকারীকে ছেড়ে দিল। ইসমা’ঈল ইবনু সালিম (রহঃ) বলেন, আমি এ ঘটনা হাবীব ইবনু সাবিত (রহঃ)-এর নিকট বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেন, আমাকে ইবনু আশ্ওয়া’ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য তাকে (ইতোপূর্বে) বলেছিলেন, কিন্তু সে তা অস্বীকার করেছিল। (ই.ফা. ৪২৪১, ই.সে. ৪২৪১)

【11】

গর্ভের সন্তানের ‘দিয়্যাত’ এবং ভুলবশত হত্যা এবং ভুলসদৃশ ইচ্ছাকৃত হত্যার দিয়্যাত (রক্তপণ), অপরাধীর ওয়ারিসগণের উপর আবশ্যক হওয়া সম্পর্কে

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হুযায়ল গোত্রের দু’জন মহিলা একে অপরের প্রতি তীর নিক্ষেপ করল তাতে আহত মহিলার গর্ভপাত হয়ে গেল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এতে (দন্ড স্বরূপ আহতকারী মহিলাকে) একটি গোলাম অথবা একটি দাসী আযাদ করে দেয়ার হুকুম দিলেন। (ই.ফা. ৪২৪২, ই.সে. ৪২৪২) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, যে ব্যক্তি বানূ লিহ্ইয়ান গোত্রের এক মহিলার গর্ভপাত ঘটানোর জন্য দায়ী ছিল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রতি একটি গোলাম অথবা একটি দাসী প্রদানের নির্দেশ দেন। এরপর যে মহিলাকে (ক্ষতিপূরণ হিসেবে) গোলাম প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন, সে মরে গেল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফায়সালা দিলেন যে, তার পরিত্যক্ত সম্পদ তার সন্তার ও স্বামীর। আর হত্যাকারীর ওয়ারিসগণের উপর দিয়াত (রক্তপণ) প্রদানের হুকুম আরোপিত হবে। (ই.ফা. ৪২৪৩, ই.সে. ৪২৪৩) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, হুযায়ল গোত্রের দু’জন মহিলা পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হল। এতে একজন অপরজনকে পাথর দ্বারা আঘাত করল। এর দ্বারা সে ঐ মহিলা ও তার গর্ভের সন্তানকে হত্যা করে ফেলল। তখন নিহত মহিলার উত্তরাধিকারীরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে অভিযোগ করল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুকুম দিলেন যে, সন্তানের দিয়্যাত হল একটি দাস কিংবা-দাসী প্রদান করা। নিহত মহিলার দিয়্যাত (রক্তপণ) হত্যাকারী মহিলার ওয়ারিসগণের উপর আরোপিত হবে। আর (নিহত) মহিলার ওয়ারিস হবে তার সন্তান এবং তার সাথে অন্য ওয়ারিসগণ। হামাল ইবনু নাবিগাতুল হযালী (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কিভাবে এর ক্ষতিপূরণ প্রদান করবো, যে পান করেনি, খায়নি, কথা বলেনি এবং শব্দও করেনি? সে তো এলো আর গেল। এমন ছন্দযুক্ত বাক্যবলার কারণে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ যেন গণকদের ভাই। (ই.ফা. ৪২৪৪, ই.সে. ৪২৪৪) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, দু’জন মহিলা পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হল …… এরপর পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। কিন্তু রাবী তাতে …………… (নিহত মহিলার ওয়ারিস হবে তার সন্তান আর তার সঙ্গে অন্যান্য ওয়ারিসগণ) এ কথা উল্লেখ করেননি। বরং তিনি উল্লেখ করেছেন, ………………. (তখন কোন ব্যক্তি বলল, আমরা কিভাবে এর ক্ষতিপূরণ দেব)? আর রাবী তার বর্ণনায় হামাল ইবনু মালিকের নামও উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪২৪৫, ই.সে. ৪২৪৫) মুগীরাহ্ ইবনু শু’বাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, এক মহিলা তার সতীনকে কুঁড়েঘরের খুঁটি দ্বারা আঘাত করল। সে ছিল গর্ভবতী মহিলা। (আঘাতকারী মহিলা আঘাত দিয়ে) তাকে মেরে ফেলল। বর্ণনাকারী বলেন যে, তাদের একজন ছিল লিহ্ইয়ান গোত্রের মহিলা। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হত্যাকারী মহিলার ওয়ারিসগণের ওপর নিহত মহিলার হত্যার (দিয়াত) ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিলেন এবং গর্ভে নিহত হওয়া (সন্তানের) জন্য একটি দাস (ক্ষতিপূরণ হিসেবে) প্রদানের হুকুম দিলেন। তখন হত্যাকারী মহিলার গোত্রের এক ব্যক্তি বলল, আমরা এমন শিশুর কিভাবে ক্ষতিপূরণ দেব যে খায়নি, পান করেনি এবং কোন শব্দও করেনি? সে তো এলো আর গেল। এ বাতিলযোগ্য। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে যেন বেদুঈনের মত ছন্দযুক্ত বাক্যে কথা বলল। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি তাদের উপর (দিয়্যাত) ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ দিলেন। (ই.ফা. ৪২৪৬, ই.সে. ৪২৪৬) মুগীরাহ্ ইবনু শু’বাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, একজন মহিলা তার সতীনকে তাঁবুর খুঁটি দিয়ে মেরে ফেলল। এ অভিযোগ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট দায়ের করা হল। তখন তিনি হত্যাকারী মহিলার গোত্রের উপর দিয়্যাত প্রদানের নির্দেশ দিলেন। নিহত মহিলাটি ছিল গর্ভবতী। অতএব তিনি গর্ভের বাচ্চার জন্য (দিয়াত হিসেবে) একটি দাস প্রদানের নির্দেশ দিলেন। এতে তার গোত্রের এক লোক বলল, আমরা কেমন করে তার রক্তপণ আদায় করব যে খায়নি, পান করেনি এবং কোন শব্দও করেনি? তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এতো বেদুঈনের ছন্দযুক্ত কথার মত একটি কথা বলছে। (ই.ফা. ৪২৪৭, ই.সে. ৪২৪৭) মানসূর (রহঃ) মানসূর (রহঃ) হতে উক্ত সানাদে জারীর এবং মুফায্যাল (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই ফা ৪২৪৮, ই সে ৪২৪৮) মানসূর (রহঃ) উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি তাতে একটু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন…… এবং সে গর্ভপাত ঘটিয়ে দিয়েছিল। তখন এ ঘটনা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থাপন করা হল। তিনি এতে একটি গোলাম (দিয়্যাত হিসেবে) প্রদানের জন্য হত্যাকারী মহিলার অভিভাবকের প্রতি নির্দেশ দিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর বর্ণিত হাদীসে আরবী (মহিলার দিয়্যাত) কথাটির উল্লেখ করেননি। (ই ফা ৪২৪৯, ই সে ৪২৪৯) মিস্ওয়াক ইবনু মাখরামাহ (রাঃ) তিনি বলেন, ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) জনগনের কাছে একবার (আরবী) মহিলার গর্ভের সন্তান হত্যার ক্ষতিপূরণ সম্পর্কে পরামর্শ চাইলেন। তখন মুগীরাহ্ ইবনু শু’বাহ্ (রাঃ) বললেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে একদা উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি এ অপরাধের কারণে একটি দাস অথবা দাসী প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। রাবী বলেন, তখন ‘উমার (রাঃ) মুগীরাহ্ (রাঃ) কে বললেন, এ ব্যাপারে আপনার সঙ্গে সাক্ষ্যদাতা একজন লোক নিয়ে আসুন। বর্ণনাকারী বলেন যে, তখন তার স্বপক্ষে মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) সাক্ষ্য প্রদান করলেন। (ই ফা ৪২৫০, ই সে ৪২৫০)