39. শিষ্টাচার
‘আবুল কাসিম’ উপনাম নিষিদ্ধ এবং পছন্দনীয় নামসমুহের বিবরণ
আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, বাকী’ নামক স্থানে এক লোক আর এক লোককে ডাক দিল- হে আবুল কাসিম! তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে দৃষ্টি দিলেন। সে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনাকে উদ্দেশ্য করিনি; আমি তো অমুককে ডেকেছি। সে সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমার নামে তোমরা নাম রাখো; কিন্তু আমার উপনামে তোমরা নামকরণ করো না।[১] (ই.ফা. ৫৪০১, ই.সে. ৫৪২৩) ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলার নিকটে তোমাদের নামগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পছন্দনীয় নাম ‘আবদুল্লাহ ও ‘আবদুর রহমান। (ই.ফা. ৫৪০২, ই.সে. ৫৪২৪) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমাদের মাঝে এক লোকের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নিল। সে তার নাম রাখল ‘মুহাম্মাদ’। সে সময় তার সম্প্রদায়ের লোকেরা তাকে বলল, আমরা তোমাকে ছাড়ব না রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নামে নাম রাখা হলে। এরপর সে তার সন্তানটিকে পিঠে বয়ে নিয়ে চলল এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমার একটি পুত্র সন্তান জন্ম নিয়েছে আমি তার নাম রাখলাম ‘মুহাম্মাদ’। এতে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা আমাকে বলছে, আমরা তোমাকে ছাড়ব না রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নামে নাম রাখা হলে। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমার নামে তোমরা নাম রাখো, কিন্তু আমার উপনাম অনুসারে উপনাম রেখো না। কারণ, আমি একমাত্র (আরবি) (বণ্টনকারী); (আল্লাহ প্রদত্ত সম্পদ) তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে থাকি। (ই.ফা. ৫৪০৩, ই.সে. ৫৪২৫) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বললেন, আমাদের মাঝে একজন লোকের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নিলো। সে তার নাম দিল ‘মুহাম্মাদ’। আমরা বললাম, তোমাকে আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নামের দ্বারা তোমার কুন্ইয়াত রাখতে দিব না, যতক্ষণ তুমি তাঁর অনুমতি না নিবে। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর সে তাঁর নিকট গিয়ে বলল যে, আমার একটি ছেলে জন্ম নিয়েছে। আমি রসূলুল্লাহর নামে তার নাম রেখেছি। ওদিকে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা সে নাম দিয়ে আমার উপনাম বলতে অস্বীকৃতি জানায়। (তারা বলল) যতক্ষণ তুমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অনুমতি গ্রহণ না করো। এরপর তিনি বললেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রাখো, আমার উপনামে নাম রেখো না। কারণ, আমাকে ‘কাসিম’ (বণ্টনকারী) হিসেবে পাঠানো হয়েছে; আমি তোমাদের মাঝে বণ্টন করার দায়িত্ব পালন করি। (ই.ফা. ৫৪০৪, ই.সে. ৫৪২৬) হুসায়ন (রহঃ) হুসায়ন (রহঃ) হতে উপরোল্লিখিত সূত্রে হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। “কেননা একমাত্র আমাকে বণ্টনাকারীরূপে পাঠানো হয়েছে; “তোমাদের মধ্যে বণ্টন করার দায়িত্ব পালন করি”- উক্তিটুকু বর্ণনা করেননি। (ই.ফা. ৫৪০৫, ই.সে. ৫৪২৭) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার নামে তোমরা নাম রাখো এবং আমার উপনাম অনুসারে উপনাম রেখো না। কারণ, আমিই হলাম ‘আবুল কাসিম’। তোমাদের মধ্যে ভাগাভাগি করে থাকি। রাবী আবূ বকর (রহঃ) এর বর্ণনায় ... স্থানে ... রয়েছে। [১] (ই.ফা. ৫৪০৬, ই.সে. ৫৪২৮) আ‘মাশ (রহঃ) আ‘মাশ (রহঃ) হতে উপরোক্ত সূত্রে বর্ণনা করেছেন। একমাত্র আমাকে ‘কাসিম’ (বণ্টনাকারী) রূপে সৃষ্টি করা হয়েছে; তোমাদের মধ্যে আমি বণ্টন করে থাকি। (ই.ফা. ৫৪০৭, ই.সে. ৫৪২৯) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) এক আনসারী লোকের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নিলে সে তার নাম ‘মুহাম্মাদ’ রাখা ইচ্ছা করল। তখন সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলো, তিনি বললেনঃ আনসারীরা ভাল কর্ম করেছে। আমার নামে তোমরা নাম রাখো, তবে আমার উপনামে উপনাম রেখো না। (ই.ফা. ৫৪০৮, ই.সে. ৫৪৩০) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) আবূ বাক্র ইবনু আবূ শাইবাহ্, মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না, মুহাম্মাদ ইবনু ‘আম্র ইবনু জাবালাহ্ ইবনুল মুসান্না ও বিশর্ ইবনু খালিদ (রহঃ), ইস্হাক ইবনু ইব্রাহীম হান্যালী ও ইস্হাক ইবনু মানসূর (রহঃ) ... জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) এর সানাদে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে ইতোপূর্বে আমরা যাঁদের হাদীস বর্ণনা করেছি তাঁদের হাদীসের হুবহু রিওয়ায়াত করেছেন। শু’বাহ (রহঃ) এর সানাদে বর্ণিত হাদীসে নায্র (রহঃ) বলেছেন যে, এতে হুসায়ন ও সুলাইমান (রহঃ) আরো কিছু বর্ধিত বলেছেন। হুসায়ন (রহঃ) বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘আমি তো বণ্টনকারী হিসেবে প্রেরিত হয়েছি; আমি তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে থাকি’। আর সুলাইমান (রহঃ) বলেছেন, ‘একমাত্র আমিই বণ্টনকারী, তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে থাকি’। (ই.ফা. ৫৪০৯, ই.সে. ৫৪৩১) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে এক লোকের পুত্র জন্ম নিলে সে তার নাম রাখল ‘কাসিম’। আমরা বললাম, আমরা তোমাকে ‘আবুল কাসিম’ (কাসিমের বাপ) উপনামে ডাকব না এবং তোমার চোখ শীতল করব না। সে তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সম্মুখে এসে ঐ ব্যাপারটি বলল। তিনি বলললেন তোমার সন্তানের নাম রাখো ‘আবদুর রহমান’। (ই.ফা. ৫৪১০, ই.সে. ৫৪৩২) জাবির (রাঃ) জাবির (রাঃ) হতে ইবনু ‘উয়াইনাহ্ (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অবিকল বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি “তোমার চোখ শীতল করব না” এ উক্তি বর্ণনা করেননি। (ই.ফা. ৫৪১১, ই.সে. ৫৪৩৩) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, আবূল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমার আমার নামে নাম রাখো এবং আমার উপনাম হিসেবে উপনাম রেখো না। ‘আম্র (রহঃ) তার বর্ণনাতে বলেছেন, ‘আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) হতে বর্ণিত’ এবং তিনি এই উক্তিটি করেননি বলতে শুনেছি। (ই.ফা. ৫৪১২, ই.সে. ৫৪৩৪) আল মুগীরাহ্ ইবনু শু’বাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি যে সময় নাজরান গমন করলাম, তখন সেখানকার ব্যক্তিরা আমাকে জিজ্ঞেস করল, আপনারা পড়েন (আরবি) (হে হারূনের বোন) অথচ মূসা (আঃ) ছিলেন ‘ঈসা (‘আঃ) এর এত দিন আগে? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আমি যখন ফিরে আসলাম তখন এ বিষয়ে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, তারা (ইয়াহূদী-খ্রিষ্টানরা) তাদের পূর্ববর্তী নবী সালিহ্গণের নামে (বাচ্চাদের) নাম রাখতো। (ই. ফা. ৫৪১৩, ই. সে. ৫৪৩৫)
মন্দ নাম এবং নাফি’ ইত্যাদি শব্দে নাম রাখা মাকরূহ
সামুরাহ্ ইবনু জুনদাব (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের গোলামদের চারটি নাম দ্বারা নামকরণ করতে বারণ করেছেনঃ আফ্লাহ্, রাবাহ্, ইয়াসার ও নাফি’।(ই.ফা. ৫৪১৪, ই.সে. ৫৪৩৬) সামুরাহ্ ইবনু জুনদাব (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমার ক্রীতদাসের নাম রাবাহ্, ইয়াসার, আফ্লাহ্ ও নাফি’ রেখো না। (ই.ফা. ৫৪১৫, ই.সে. ৫৪৩৭) সামুরাহ্ ইবনু জুনদাব (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্র নিকট বেশি পছন্দনীয় কালাম চারটি। আল্লাহ্র পবিত্রতা ঘোষণা করছি, যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর, (এক) আল্লাহ্ ছাড়া আর উপাস্য নেই এবং আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ। এগুলোর যে কোন শব্দ দ্বারা তুমি আরাম্ভ কর, এতে তোমার কোন ক্ষতি নেই এবং কক্ষনো তোমার ক্রীতদাসের নাম ইয়াসার, রাবাহ্, নাজীহ্ ও আফ্লাহ্ রাখবে না। কেননা, তুমি হয়তো বা ডাকবে ‘ওখানে সে আছে কি?’ আর সে (তখন) সেখানে নাও থাকতে পারে। তখন কেউ বলবে- ‘না’ এখানে নেই। (এ জবাবে কু-ধারণা তৈরি হতে পারে)। (বর্ণনাকারী বলেন), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কেবল এ চারটি নাম বলেছেন। অতঃপর কেউ যেন আমার চাইতে অধিক সংযোজন না করে। (ই.ফা . ৫৪১৬, ই.সে. ৫৪৩৮) যুহায়র (রহঃ) ইসহাক্ ইবনু ইব্রাহীম, উমাইয়াহ্ ইবনু বিস্তাম, মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও ইবনু বাশ্শার (রহঃ) হতে মানসুর (রহঃ) হতে যুহায়র (রহঃ) এর সানাদানুসারে হাদীসে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু জারীর (রহঃ) ও রাওহ (রহঃ) উল্লিখিত হাদীস যুহায়র (রহঃ) বর্ণিত সম্পূর্ণ ঘটনার বর্ণনা সম্বলিত হাদীসের অবিকল। তবে শু’বাহ্ (রহঃ) এর হাদীসে শুধু সন্তানের নাম রাখার বর্ণনা আছে। তিনি (চার) এর কথাটি বর্ণনা করেননি। (ই.ফা. ৫৪১৭, ই.সে. ৫৪৩৯) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইয়া’লা, বারাকাহ্, আফলাহ, ইয়াসার ও নাফি’ ইত্যাদি এ রকম নাম রাখা বারণ করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। অতঃপর তাঁকে আমি লক্ষ্য করলাম যে, এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চুপ রইলেন, কিছু বললেন না। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে উঠিয়ে নেয়া হলো এবং তিনিই তা (শক্তভাবে) বারণ করেননি। পরে ‘উমার (রাঃ) তা বারণ করার ইচ্ছা পোষণ করলেন, তারপর তিনিও তা পরিত্যাগ করেন। (ই.ফা. ৫৪১৮, ই.সে. ৫৪৪০)
উত্তম নামে মন্দ নামের পরিবর্তন এবং ‘বার্রাহ’ নামকে যাইনাব, জুওয়াইরিয়াহ্ ও অনুরূপ নামে পরিবর্তন করা
ইবনু ‘উমার (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আছিয়া (অমান্যকারী) এর নাম পরিবর্তন করে দিলেন এবং বললেন, তুমি জামিলা (সুন্দরী)। বর্ণনাকারী আহ্মাদ (রহঃ) এর সানাদে --- এর স্থানে ----- দিয়ে উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ৫৪১৯, ই. সে. ৫৪৪১) ইবনু ‘উমার (রাঃ) ‘উমার (রাঃ) এর এক মেয়েকে (‘আসিয়াহ্) নামে ডাকা হত। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নাম রাখলেন, ‘জামীলাহ্’। (ই. ফা. ৫৪২০, ই. সে. ৫৪৪২) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, (উম্মুল মু’মিনীন) ‘জুওয়াইরিয়াহ্’ (রাঃ) এর আসল নাম ছিল ‘বার্রাহ’ (পুণ্যবতী) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নাম পরিবর্তন করে রাখলেন ‘জুওয়াইরিইয়াহ (স্নেহময়ী কিশোরী)। কেননা ‘বার্রাহ’ (পুণ্যবতী) এর নিকট হতে বের হয়ে এসেছেন- এমন বাক্য তিনি পছন্দ করতেন না। ইবনু আবূ ‘উমার (রাঃ) এর হাদিসে কুরায়ব (রহঃ) সূত্রে --- এর স্থানে ---- বর্ণিত হয়েছে। (ই. ফা. ৫৪২১, ই. সে. ৫৪৪৩) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) যাইনাব (রাঃ) এর আসল নাম ছিল ‘বার্রাহ’। তাই বলা হলো, তিনি আত্নশুদ্ধি করেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নামকরণ করলেন ‘যাইনাব’। ইবনু বাশ্শার ছাড়া উপরোল্লিখিত রাবীদের বর্ণিত হাদীসের হুবুহু শব্দ বর্ণিত হয়েছে। তবে ইবনু আবী শাইবাহ --- এর স্থলে ---- বলেছেন। (ই.ফা. ৫৪২২, ই. সে. ৫৪৪৪) যাইনাব বিনতু উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, পূর্বে আমার নাম ‘বার্রাহ্’ ছিল। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নাম রাখলেন ‘যাইনাব’। তিনি বলেন, যাইনাব বিনতু জাহ্শ (রাঃ) তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ) নিকট আসলো। তাঁর (ও) নাম ছিল ‘বাররাহ্’ তাঁর নামও তিনি ‘যাইনাব’রেখে দিলেন। (ই.ফা. ৫৪২৩, ই. সে. ৫৪৪৫) মুহাম্মাদ ইবনু ‘আম্র ইবনু ‘আতা (রহঃ) তিনি বলেন, আমার কন্যার নাম রাখলাম ‘বার্রাহ’। সে সময় যাইনাব বিনতু আবূ সালামাহ্ (রাঃ) আমাকে বললেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ নাম রাখতে বারণ করেছেন। আমার নাম ‘বার্রাহ্’- (পূণ্যবতী) রাখা হয়েছিল। তাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা স্বয়ং আত্মা পরিশুদ্ধ বলে দাবি করো না। আল্লাহ তা’আলাই অধিকতর জানেন তোমাদের মাঝে পুণ্যবানদের সম্পর্কে। অতঃপর তাঁরা বলল, তবে আমরা তাঁর কি নামকরণ করবো? তিনি বললেন, তার নাম রাখো ‘যাইনাব’। (ই.ফা. ৫৪২৪, ই. সে. ৫৪৪৬)
মালিকুল আমলাক কিংবা মালিকুল মুলূক নাম রাখা নিষিদ্ধকরণ
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর তা’আলার নিকট অধিকতর ঘৃণিত নাম ঐ লোকের, যার নাম ‘মালিকুল আমলাক’ (বাদশার বাদশাহ) রাখা হয়। ইবনু আবূ শাইবাহ্ (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসে বেশি বর্ণনা করেছেন- ‘আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে অন্য কোন ‘মালিক’ ‘অধিপতি’ নেই”। আশ’আসী (রহঃ) বলেন, বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান (রহঃ) বলেছেন, এ শব্দ (ফারসী) ভাষায় ‘শাহান শাহ- এর অবিকল। আর আহ্মাদ ইবনু হাম্বাল (রহঃ) বলেন, আমি আবূ ‘আম্র (রহঃ) কে (আরবি) এর অর্থ জানতে চাইলে তিনি বলেন, (আরবি) চরম নিকৃষ্ট। (ই. ফা. ৫৪২৫, ই. সে. ৫৪৪৭) হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ্ (রহঃ) তিনি বলেন, এগুলো আবূ হুরাইরা্ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। তারপর তিনি কিছু হাদীস বর্ণনা করলেন। তন্মধ্যে অন্যতম একটি হলো, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলার নিকট সবচেয়ে রাগের কারণ, সবচেয়ে ঘৃণিত, অধিকতর ক্ষিপ্রতার সম্মুখীন হবে সে লোক যার নাম রাখা হয়েছে ‘মালিকুল আম্লাক’ (রাজাধিরাজ সম্রাট), আল্লাহ ছাড়া অন্য আর কেউ ‘মালিক’ (সম্রাট) নেই। (ই.ফা. ৫৪২৬, ই. সে. ৫৪৪৮)
সন্তান জন্ম নিলে নবজাতককে খুরমা (ইত্যাদি) চিবিয়ে তাঁর মুখে দেয়া এবং এ উদ্দেশে তাকে কোন নেককার ব্যক্তির নিকট নিয়ে যাওয়া মুস্তাহাব; জন্মের দিন নাম রাখা জায়িয; ‘আব্দুল্লাহ এবং ইবরাহীম ও অন্যান্য নাবীগণের নামে নামকরণ করা মুস্তাহাব
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবনু আবূ তাল্হাহ্ আনসারী এর জন্মকালে আমি তাঁকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে নিয়ে গেলাম। সে সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় গায়ে একটি ‘আল্খাল্লা’ জড়িয়ে তাঁর উটের গায়ে তৈল মালিশ করছিলেন। তিনি প্রশ্ন করলেন, তোমার সাথে খেজুর আছে কি? আমি বললাম, হ্যাঁ। তারপর আমি তাঁর হাতে কয়েকটি খেজুর দিলাম। তিনি তাঁর মুখে জড়িয়ে দিয়ে চিবালেন। তারপর শিশুটির মুখ ফাঁক করে তার মুখের ভিতরে দিলেন। শিশুটি তা চুষতে লাগল। সে সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘আনসারীদের খেজুরের প্রতি ভালবাসা’ এবং তিনি তাঁর নাম রাখলেন, ‘আব্দুল্লাহ। (ই.ফা. ৫৪২৭, ই. সে. ৫৪৪৯) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, আবূ তালহাহ্ (রাঃ) এর এক পুত্র সন্তান রোগগ্রস্ত ছিল। (একদিন) আবূ তালহাহ্ (রাঃ) (তাঁর কর্মে) বের হলো এদিকে তাঁর বাচ্চাটি মারা যায়। যখন আবূ তালহাহ্ (রাঃ) ফিরে আসলেন, তিনি (স্ত্রীকে) প্রশ্ন করলেন, আমার সন্তান কি করছে? (স্ত্রী) উন্মু সুলায়ম (রাঃ) বললেন, সে পুর্বের চেয়ে অধিকতর শান্ত। তারপর তিনি তাঁকে রাতের খাদ্য দিলেন, তিনি তা খেলেন, তারপর তার সাথে মিলিত হলেন। তারপর তিনি অবসর হলে উন্মু সুলায়ম (রাঃ) বললেন, শিশুটিকে দাফন করে এসো। যখন সকাল হলো আবূ তালহাহ্ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে এসে তাঁকে (সব) ঘটনা অবহিত করলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি গতরাতে মিলিত হয়েছো? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি (দু’আ করে) বললেন, হে আল্লাহ! তাদের দু’জনের জন্যে বারাকাত দিন। তারপর তাঁর স্ত্রী একটি সন্তান প্রসব করলেন। সে সময় আবূ তালহাহ্ (রাঃ) আমাকে বললেন, তাকে (কোলে) তুলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে নিয়ে যাও। তাকে নিয়ে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আসলেন। উন্মু সুলায়ম (রাঃ) তাঁর সঙ্গে কতক খেজুরও দিলেন। রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে (শিশুটিকে) কোলে নেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, তার সাথে কিছু আছে কি? তাঁরা বললো, হ্যাঁ, কয়েকটি খেজুর। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেগুলো বের করলেন ও চিবালেন। তারপর তা তাঁর মুখ হতে নিলেন এবং বাচ্চাটির মুখের মধ্যে দিলেন। এরপর তাকে তাহনীক করে তাঁর জন্যে দু’আ করলেন এবং তার নাম রাখলেন ‘আব্দুল্লাহ। (ই.ফা. ৫৪২৮, ই. সে. ৫৪৫০) আনাস (রাঃ) মুহাম্মাদ ইবনু বাশ্শার (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) হতে এ ঘটনা সহকারে রাবী ইয়াযীদ (রহঃ) এর হাদীসের অবিকল বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৫৪২৯, ই. সে. ৫৪৫১) আবূ মুসা (রাঃ) তিনি বলেন, আমার একটি পুত্র সন্তান ভুমিষ্ঠ হলে আমি তাকে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে উপস্থিত হলাম। তিনি তার নাম রাখলেন ইব্রাহীম এবং একটি খেজুর চিবিয়ে তাঁর মুখে দিলেন। (ই.ফা. ৫৪৩০, ই. সে. ৫৪৫২) ‘উরওয়াহ্ ইবনু যুবায়র ও ফাতিমাহ্ বিনতু মুনযির ইবনু যুবায়র (রহঃ) তাঁরা বলেন, আসমা বিনতু আবূ বাক্র (রাঃ) যে সময় হিজরাত করলেন, সে সময় তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) কে পেটে ধারণ করছিলেন। কুবায় পৌছলে তিনি ‘আব্দুল্লাহকে প্রসব করলেন। তারপর প্রসবের পর তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে গেলেন যাতে তিনি তাকে (নবজাতককে) খেজুর চিবিয়ে বারাকাত দেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাচ্চাটিকে তাঁর নিকট হতে নিয়ে নিজের কোলে রাখলেন। এরপর একটি খেজুর নিয়ে আসলেন। বর্ণনাকারী বলেন, ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, তা পাওয়ার আগ পর্যন্ত খুঁজে যোগাড় করতে আমাদের কিছু সময় দেরী হলো। তারপর তিনি তা চিবিয়ে নিজ মুখে থেকে তার মুখের ভিতরে দিলেন। অতএব তাঁর পেটে প্রথম যা ঢুকল তা ছিল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর লালা। আসমা (রাঃ) আরও বলেছেন, তারপর তিনি তাকে হাত বুলিয়ে দিলেন এবং তার জন্যে দু’আ করলেন, আর তার নাম রাখলেন ‘আব্দুল্লাহ। তারপর সাত কিংবা আট বছর বয়সে সে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে বাই’আত হওয়ার জন্য এলো। (পিতা) যুবায়র (রাঃ) তাকে তা করার উপদেশ দিয়েছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে এগিয়ে আসতে দেখে মুচকি হাসলেন। তারপর তাকে বাই’আত করে নিলেন। (ই.ফা. ৫৪৩১, ই.সে. ৫৪৫৩) আসমা (রাঃ) তিনি মাক্কায় (থাকাকালে) ‘আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ)-কে গর্ভে ধারণ করেন। তিনি বলেন, আমি (মক্কা থেকে) মাদীনায় (হিজরাতের উদ্দেশ্যে) বের হলাম। সে সময় আমার গর্ভকাল পূর্ণ হয়ে আসছে। আমি মাদীনায় এসে কুবায় গমন করলাম এবং তাঁকে প্রসব করলাম। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর খিদমাতে গেলাম। তিনি তাকে (নবজাতককে) তাঁর কোলে রাখলেন, এরপর একটি খেজুর আনিয়ে তা চিবালেন, অতঃপর তাঁর মুখ থেকে লালাসহ তার (বাচ্চাটির) মুখে দিলেন। অতএব রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর লালাই ছিল প্রথম খাদ্য, যা তার পেটে ঢুকলো। অতঃপর খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দেয়ার পর তার জন্য দু’আ করলেন এবং তাকে বারাকাত (এর দু’আ) দিলেন। এ সন্তানই ছিল (মাদীনায়) হিজরাতের পর ইসলামের প্রথম নবজাতক। (ই.ফা. ৫৪৩২, ই. সে. ৫৪৫৪) আসমা বিনতু আবূ বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) কে গর্ভে ধারণ করে হিজরাত করে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে পৌছলেন। অতঃপর উসামাহ্ (রাঃ) এর হাদীসের অবিকল উল্লেখ করেন। (ই.ফা. ৫৪৩৩, ই. সে. ৫৪৫৫) ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে (নবজাতক) সন্তানদের নিয়ে আসা হত। তাদের জন্য তিনি বারাকাতের দু’আ করতেন এবং খেজুর চিবিয়ে তাদের মুখে দিতেন। (ই.ফা. ৫৪৩৪, ই. সে. ৫৪৫৬) ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়রকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে (নবজাতক) নিয়ে আসলাম তাকে তাহনীক করার জন্য। অতঃপর আমরা একটি খেজুর চাইলাম। তবে তা সংগ্রহ করা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়লো। (ই.ফা. ৫৪৩৫, ই. সে. ৫৪৫৭) সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) তিনি বলেন, মুনযির ইবনু আবূ উসায়দ (রাঃ) কে তাঁর জন্মের সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আনা হলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর রানের উপরে তাকে রাখলেন। আবূ উসায়দ (রাঃ) (পাশে) উপবিষ্ট। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সামনে কোন বিষয় মনোযোগ দিলেন। আবূ উসায়দ (রাঃ) তার সন্তানের ব্যাপারে (কাউকে) আদেশ করলেন। তাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রানের উপর থেকে উঠিয়ে নিয়ে তাকে ফেরত পাঠিয়ে দিলো। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সজাগ হলেন এবং বললেন, বাচ্চাটি কোথায়? আবূ উসায়দ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা তাকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছি। তিনি প্রশ্ন করলেন, তার নাম কী? তারা বলল ‘অমুক’- হে আল্লাহ’র রসূল! তিনি বললেন, না; বরং তাঁর নাম মুনযির। এভাবে তিনি সেদিন থেকে তাঁর নাম ‘মুনযির’ রেখে দিলেন। (ই.ফা. ৫৪৩৬, ই. সে. ৫৪৫৮) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষের মাঝে চরিত্রগুণে সর্বোত্তম ছিলেন। আমার এক ভাই ছিল, যাকে আবূ ‘উমায়র বলে সম্বোধন করা হতো। বর্ণনাকারী বলেন, আমি অনুমান করি তিনি বলেছিলেন যে, সে দুধ ছাড়ানো বয়সের ছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখনই (আমাদের ঘরে) আসতেন, তখন তাকে দেখে বলতেন, হে আবূ ‘উমায়র! কি করেছো নুগায়র (চড়ূইছানা)? এ কথা বলে তিনি তাঁর সঙ্গে খেলা করতেন। (ই.ফা. ৫৪৩৭, ই. সে. ৫৪৫৯)
নিজের ছেলে ছাড়া অন্যকে ‘হে বৎস! বলা জায়িজ এবং আদর প্রকাশের উদ্দেশ্যে তা করা মুস্তাহাব
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, হে বৎস! (ই.ফা. ৫৪৩৮, ই. সে. ৫৪৬০) আল-মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট ‘দাজ্জাল’ সম্বন্ধে আমার চেয়ে বেশি কেউ প্রশ্ন করেনি যত প্রশ্ন আমি করেছি। তিনি আমাকে বলেন, হে বৎস! তার কোন্ বিষয় তোমাকে অস্থির করেছে? সে কিছুতেই তোমার অনিষ্ট করতে পারবে না। মুগীরাহ্ বলেন, আমি বললাম, তারা তো ধারণা করে থাকে যে, তার সাথে পানির নহরসমুহ এবং রুটির পাহাড়সমুহ থাকবে। তিনি বললেন, তা আল্লাহ্র নিকট তার থেকে সহজতর। (ই.ফা. ৫৪৩৯, ই.সে. ৫৪৬১) ইসমাঈ’ল (রহঃ) আবূ বাক্র ইবনু আবূ শাইবাহ্ ও ইবনু নুমায়র, সুরায়জ ইবনু ইউনুস, ইসহাক্ ইবনু ইব্রাহীম ও মুহাম্মদ ইবনু রাফি‘ (রহঃ) ... ইসমাঈ’ল (রহঃ) হতে উপরোক্ত সূত্রে হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। কিন্তু তাঁদের মাঝে ইয়াযীদ (রহঃ) বর্নিত হাদীস ছাড়া কারো হাদীসে মুগীরাহ্ (রাঃ)-এর প্রতি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্তিটি “হে বৎস” শব্দের উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ৫৪৪০, ই.সে. ৫৪৬২)
অনুমতি গ্রহন প্রসঙ্গে
বুস্র ইবনু সা‘ঈদ (রহঃ) তিনি বলেন, আমি আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, আমরা মাদীনার আনসারীদের একটি বৈঠকে উপবিষ্ট ছিলাম। সেময় আবূ মূসা (রাঃ) অস্থির হয়ে, অথবা (বর্ণনাকারী বলেছেন) ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আমাদের নিকট এলেন। আমরা বললাম, আপনার সমস্যা কি? তিনি বললেন, ‘উমার (রাঃ) আমার নিকট লোক প্রেরন করলেন, যেন আমি তাঁর নিকট যাই। আমি তাঁর চৌকাঠে তিনবার সালাম করলাম। তিনি আমাকে উত্তর দিলেন না। তাই আমি ফিরে আসলাম। পরে আমাকে (ডেকে নিয়ে) তিনি বললেন, আমাদের নিকট আসতে কোন বিষয় তোমাকে নিষেধ করলো। অতঃপর আমি বললাম, আমি আপনার নিকট এসেছিলাম এবং আপনার চৌকাঠে (দাঁড়িয়ে) তিনবার সালাম করেছিলাম। তবে তারা (গৃহের কেউ) আমাকে সালামের উত্তর দিলেন না। তাই আমি ফিরে গেলাম। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে যদি কেউ তিনবার অনুমতি চায়, আর তাকে অনুমতি দেয়া না হয়, তাহলে সে যেন ফিরে আসে। সে সময় ‘উমার (রাঃ) বললেন, এ ব্যাপারে প্রমান দাও। নতুবা তোমাকে প্রহার করব। সে সময় উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) বললেন, তার সাথে গোষ্ঠীর সবচেয়ে অল্প বয়সের সন্তানই যাবে। আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) বললেন, আমি বললাম, আমি গোষ্ঠীর কনিষ্ঠতম। তিনি বললেন, তবে একে নিয়ে যাও। (ই.ফা. ৫৪৪১, ই.সে. ৫৪৬৩) ইয়াযীদ ইবনু খুসাইফাহ্ (রহঃ) কুতাইবাহ্ ইবনু সা‘ঈদ (রহঃ) ও ইবনু আবূ ‘উমার (রহঃ) ... ইয়াযীদ ইবনু খুসাইফাহ্ (রহঃ) হতে উপরোল্লিখিত সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং আবূ ‘উমার (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসে বাড়তি বলেছেন যে, আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) বলেন, সে সময় আমি তার সাথে উঠে দাঁড়ালাম এবং ‘উমার (রাঃ) এর নিকট গিয়ে সাক্ষ্য প্রদান করলাম। (ই.ফা. ৫৪৪২, ই.সে. ৫৪৬৮) আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) এর নিকট একটি মাজলিসে ছিলাম। তখন আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ) ক্রোধাম্বিত অবস্থায় এসে দাঁড়িয়ে বললেন, আমি তোমাদের আল্লাহ্র শফথ দিয়ে বলছি, তোমাদের মাঝে কেউ কি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছ যে, ‘অনুমতি গ্রহণ’ তিনবার, এতে যদি তোমাকে অনুমতি দেয়া হয়, ‘ভাল’, নতুবা তুমি প্রত্যাবর্তন কর। উবাই (রাঃ) বললেন, তাতে কী হয়েছে? তিনি বললেন, গতকাল (খলীফা) ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর নিকট আমি তিনবার অনুমতি চাইলাম। আমাকে অনুমতি দেয়া হয়নি। তারপর আমি প্রত্যাবর্তন করলাম। পরদিন তাঁর নিকট গমন করলাম এবং তাঁর নিকট প্রবেশ করে তাঁকে সংবাদ দিলাম যে, আমি গতকাল এসেছিলাম এবং তিনবার সালাম করে (উত্তর না পেয়ে) চলে গিয়েছিলাম। তিনি বললেন, আমরা তোমার শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম, কিন্তু আমরা তখন ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু যে পর্যন্ত না তোমাকে অনুমতি দেয়া হয় সে পর্যন্ত তুমি তা চাইতে থাকলে না কেন? তিনি বললেন, আমি তো সে অনুমতি চেয়েছি, যেরূপ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি। ‘উমার (রহঃ) বললেন, আল্লাহ্র শপথ! তোমার পিঠে ও পেটে আঘাত করব; অথবা তুমি এমন ব্যক্তি পেশ করবে, যে এ ব্যাপারে তোমার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। সে সময় উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র শপথ! আমাদের মধ্যে সবচেয়ে অল্প বয়সের লোকই তোমার সঙ্গে যাবে; তিনি বলেন, হে আবূ সা‘ঈদ! দাঁড়াও, অতঃপর আমি দাঁড়ালাম এবং ‘উমার (রাঃ) এর নিকট এসে বললাম, অবশ্যই আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এ কথা বলতে শুনেছি। (ই.ফা. ৫৪৪৩, ই.সে. ৫৪৬৫) আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) আবূ মুসা (রাঃ) ‘উমার (রাঃ) এর দরজায় এসে অনুমতি চাইলেন। ‘উমার (রাঃ) (শব্দ শুনে মনে মনে) বললেন, একবার হলো। অতঃপর দ্বিতীয়বার অনুমতি চাইলেন। ‘উমার (রাঃ) বললেন, দু‘বার হলো। অতঃপর তৃতীয়বার অনুমতি চাইলেন। ‘উমার (রাঃ) বললেন, তিনবার হলো। অতঃপর তিনি প্রত্যাবর্তন করলেন। পরে [‘উমার (রাঃ)] তাঁর পশ্চাতে লোক প্রেরণ করে তাকে ডেকে নিয়ে বললেন, এটি যদি এমন হয়, যা তুমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে সংরক্ষণ করেছ, তাহলে তা উপস্থাপন করো। নতুবা আমি তোমাকে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিব। আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) বলেন, সে সময় তিনি আমাদের নিকট এসে বললেন, তোমরা কি জান না যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেনঃ ‘অনুমতি গ্রহণ তিনবার’। বর্ণনাকারী বলেন, লোকেরা তখন (এ কথা শুনে) হাসাহাসি করতে লাগল। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, তোমাদের নিকট একজন মুসলিম ভাই আগমন করেছেন, যাকে ভয় দেখানো হয়েছে, আর তোমরা হাসছ? (তাঁকে বললাম) চলুন! এ শাস্তিতে আমি আপনার অংশীদার হবো। সে সময় তিনি (আমাকে সাথে নিয়ে) তার নিকট গিয়ে বললেন, এ যে আবূ সা‘ঈদ ... (আমার সাক্ষী)। (ই.ফা. ৫৪৪৪, ই.সে. ৫৪৬৬) আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না এবং ইবনু বাশ্শার (রহঃ) আহ্মাদ ইবনু খিরাশ (রহঃ) ... আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে আবূ মাসলামাহ্ (রহঃ) হতে নেয়া বিশ্র ইবনু মুফায্যাল (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৫৪৪৫, ই.সে. ৫৪৬৭) ‘উবায়দ ইবনু ‘উমায়র (রহঃ) (খলীফা) ‘উমার (রাঃ) এর নিকট আবূ মূসা (রাঃ) তিনবার অনুমতি প্রার্থনা করলেন। তখন (উত্তর না পেয়ে) তিনি যেন তাঁকে ব্যতিব্যস্ত মনে করে চলে গেলেন। সে সময় ‘উমার (রাঃ) বললেন, তুমি কি ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়স (আবূ মূসা) এর শব্দ শোননি? তোমরা তাকে অনুমতি দাও! সে সময় তাকে ‘উমারের নিকট ডাকা হলো। তখন তিনি তাঁকে বললেন, এ রকম করতে তোমাকে কোন্ বিষয় তোমাকে উৎসাহিত করেছে? তিনি বললেন, আমাদের এ রকম করার আদেশ করা হয়েছে। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই তুমি এ বিষয়ে সাক্ষী হাজির করবে, নতুবা অবশ্যই আমি এমন করবো অর্থাৎ শাস্তি দিবো। তিনি বেরিয়ে গিয়ে আনসারীদের এক বৈঠকে পৌছলেন। তাঁরা বললেন, আমাদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সের লোকই এ ব্যাপারে তোমার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। তখন আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) উঠলেন এবং বললেন, আমাদের এরূপই নির্দেশ দেয়া হয়। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর এ ব্যাপারটি আমার নিকট অজ্ঞাত রয়েছে। (কারন) বাজারের বাণিজ্যে আমাকে এ ব্যাপারে উদাসীন রেখেছে। (ই.ফা. ৫৪৪৬, ই.সে. ৫৪৬৮) ইবনু জুরায়জ (রহঃ) মুহাম্মদ ইবনু বাশ্শার ও হুসায়ন ইবনু হুরায়স (রহঃ) ... ইবনু জুরায়জ (রহঃ) হতে উক্ত সূত্রে হুবহু বর্ণনা করেছেন। কিন্তু বর্ণনাকারী নায্র (রহঃ) তাঁর বর্নিত হাদীসে ‘বাজারের ক্রয়-বিক্রয় আমাকে এ বিষয় হতে উদাসীন রেখেছে’ বাক্যটি বর্ণনা করেননি। (ই.ফা. ৫৪৪৭, ই.সে. ৫৪৬৯) আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ) আবূ বুরদাহ্ (রাঃ) এর সানাদে আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ) হতে বর্নিত। আবূ বুরদাহ্ (রহঃ) বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর নিকট এসে বললেন, আস্সালামু ‘আলাইকুম- এ (আমি) ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়স। তবে তিনি তাঁকে অনুমতি দিলেন না। তখন (পুনরায়) বললেন, আস্সালামু ‘আলাইকুম- এ যে, আবূ মূসা। আস্সালামু ‘আলাইকুম- এ যে আশ‘আরী। তারপর (উত্তর না পেয়ে) চলে গেলেন। সে সময় ‘উমার (রাঃ) বললেন, (তাকে) আমার নিকট ডেকে নিয়ে আসো। আমার নিকট ফিরিয়ে নিয়ে আসো। প্রত্যাবর্তন শেষে তিনি বললেন, কিসে তোমাকে ফিরিয়ে দিল, হে আবূ মূসা? আমরা কোন্ কর্মে মশগুল ছিলাম। তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আমি বলতে শুনেছি- ‘অনুমতি প্রার্থনা তিনবার’। এতে তোমাকে অনুমতি দেয়া হলে ভাল, নতুবা ফিরে যাবে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, এ ব্যাপারে অবশ্যই তুমি আমার নিকট প্রমাণাদি নিয়ে আসবে। নতুবা আমি এমন করব, তেমন করব, (সাজা দিব)। তখন আবূ মূসা (রাঃ) ফিরে গেলেন। ‘উমার (রাঃ) বললেন, প্রমান যোগাড় করতে পারলে, বিকালে তাকে তোমরা মিম্বারের নিকট দেখতে পাবে, আর যদি প্রমান না পায়, তাহলে তোমরা তাঁকে দেখতে পাবে না। বিকালে তিনি এলে তাঁরা তাঁকে (মিম্বারের নিকট দেখতে) পেল। ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আবূ মূসা! কি বলছ? প্রমান পেয়েছ? তিনি বললেন, হাঁ- উবাই ইবনু কা‘ব! তিনি বললেন, ইনি ন্যায়পরায়ণ! তারপর উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেন- হে আবূ তুফায়ল![২৩} ইনি কী বলেন? তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এমন বলতে আমি শুনেছি- হে ইবনুল খাত্তাব! আপনি কখনো রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সহাবীগণের জন্য শাস্তি স্বরূপ হয়ে পরবেন না। তিনি বললেন, সুব্হানাল্লাহ্! (আমি তা কখনো চাই না)। আমি তো একটি বিষয় শোনার পর সে ব্যাপারে সুনিশ্চিত হতে আমার আগ্রহ প্রকাশ করেছি। (ই.ফা. ৫৪৪৮, ই.সে. ৫৪৭০) তাল্হাহ্ ইবনু ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আবান (রহঃ) ... তাল্হাহ্ ইবনু ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) হতে এ সানাদে হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি বলেছেন, ‘উমার (রাঃ) (‘উবাইকে উদ্দেশ্য করে) বললেন, হে আবুল মুন্যির! আপনি কি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এ কথাটি শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (তিনি আরো বলেন) হে ইবনুল খাত্তাব! আপনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সহাবীদের প্রতি শাস্তিদাতা স্বরূপ হবেন না। তবে তিনি ‘উমার (রাঃ) এর সুবহানাল্লাহ্ ও পরবর্তী উক্তিটি বর্ণনা করেন নি। (ই.ফা. ৫৪৪৯, ই.সে. ৫৪৭১)
অনুমতি প্রার্থীকে “কে এখানে” প্রশ্ন করা হলে “আমি” বলে উত্তর দেওয়া মাকরুহ
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে তাঁকে ডাকলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশ্ন করলেন, ‘এ কে’? আমি বললাম, ‘আমি’। বর্ণনাকারী [জাবির (রাঃ)] বলেন, তখন তিনি বের হয়ে এলেন আর বলছিলেন, আমি! আমি!! (ই.ফা. ৫৪৫০, ই.সে. ৫৪৭২) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট অনুমতি চাইলাম। তিনি বললেন, ‘এ কে’? আমি বললাম, ‘আমি’। সে সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি! আমি!! (ই.ফা. ৫৪৫১, ই.সে. ৫৪৭৩) শু’বাহ্ (রহঃ) ইসহাক্ ইবনু ইব্রাহীম, মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও ‘আবদুর রহমান ইবনু বিশ্র (রহঃ) সবাই শু’বাহ্ (রহঃ) সূত্রে উল্লিখিত সানাদে হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তাদের বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, তিনি যেন তা (‘আমি’ ‘আমি’ বলা) পছন্দ করলেন না। (ই.ফা. ৫৪৫২, ই.সে. ৫৪৭৪)
পরের ঘরে উঁকি দেয়া নিষিদ্ধকরণ
সাহ্ল ইবনু সা’দ আস-সা’ইদী (রাঃ) এক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরজার একটি ছিদ্র দিয়ে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন। সে সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট একটি (মাথার চুল আঁচড়ানো) চিরুনি ছিল, যা দ্বারা তিনি তাঁর মাথা আচরাচ্ছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখতে পেয়ে বললেনঃ আমি যদি জানতাম যে, তুমি আমাকে দেখছ তাহলে নিশ্চয়ই তা দ্বারা তোমার চোখে খোঁচা দিতাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বললেনঃ চোখের জন্যেই তো অনুমতির বিধান করা হয়েছে। (ই.ফা. ৫৪৫৩, ই.সে. ৫৪৭৫) শিহাব (রহঃ) সাহ্ল ইবনু সা’দ আনসারী (রাঃ) তাঁকে বলেছেন, এক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ঘরের একটি দরজার ছিদ্র দিয়ে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাতে একটি চিরুনি ছিল, যা দ্বারা তিনি মাথার চুল আচড়াচ্ছিলেন। সে সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, যদি আমি জানতাম যে, তুমি দেখছো, তাহলে সেটি দ্বারা তোমার চোখে খোঁচা দিতাম। চোখের জন্যই আল্লাহ অনুমতি নেয়ার বিধান করেছেন। (ই.ফা. ৫৪৫৪, ই.সে. ৫৪৭৬) সাহ্ল ইবনু সা’দ (রাঃ) আবূ বাক্র ইবনু আবূ শাইবাহ্, ‘আম্র আন্ নাকিদ, যুহায়র ইবনু হার্ব, ইবনু আবূ ‘উমার ও আবূ কামিল জাহ্দারী (রহঃ) ... সাহ্ল ইবনু সা’দ (রাঃ) এর সানাদে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আল্-লায়স (রহঃ) ও ইউনুস (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের হুবুহু বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৫৪৫৫, ই.সে. ৫৪৭৭) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এক লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কোন এক হুজরার ভিতরে তাকাল। তখন তিনি তাকে দেখে একটি তীরের ফলক অথবা বর্ণনাকারীর সংশয় কয়েকটি ফলক নিয়ে দাঁড়ালেন। আমি যেন (এখনও ঐ দৃশ্য) দেখছি যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে খোঁচা দেয়ার উদ্দেশে সুযোগ সন্ধান করছেন। (ই.ফা. ৫৪৫৬, ই.সে. ৫৪৭৮) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক কোন গোত্রের ঘরে তাদের নির্দেশ ছাড়া উঁকি মারে, তাহলে তার চোখে আঘাত করা তাদের জন্য জায়িয হয়। (ই.ফা. ৫৪৫৭, ই.সে. ৫৪৭৯) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক যদি বিনা অনুমতিতে তোমার প্রতি উঁকি দেয় আর তুমি তাকে পাথর মেরে তার চোখ ফুঁড়ে দাও, তাতে তোমার কোন গুনাহ হবে না। (ই.ফা. ৫৪৫৮, ই.সে. ৫৪৮০)
হঠাৎ দৃষ্টি পড়া
জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আচমকা নজর পড়া ব্যাপারে প্রশ্ন করলাম। তিনি আমাকে আদেশ করলেন, যেন আমি আমার দৃষ্টি দ্রুত ফিরিয়ে নেই। (ই.ফা. ৫৪৫৯, ই.সে. ৫৪৮১) ইউনুস (রহঃ) ইসহাক্ ইবনু ইব্রাহীম (রহঃ) ... ইউনুস (রহঃ) হতে উপরোল্লিখিত সূত্রে হুবুহু হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৫৪৬০, ই.সে. ৫৪৮২)