43. স্বপ্ন
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বাণী : যে আমাকে স্বপ্নে দেখলো সে আমাকেই দেখলো
আবূ সালামাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যাতে ভয় পেয়ে জ্বর জ্বর ভাব অনুভব করতাম। তবে আমাকে কম্বল দিয়ে ঢাকতে হতো না। অবশেষে আমি আবূ কাতাদাহ্ (রাঃ)-এর সঙ্গে দেখা করলাম এবং এ বিষয়টি তার নিকট বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি (আরবী) সু-স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে, আর (আরবী) খারাপ স্বপ্ন শাইতানের তরফ হতে। অতএব তোমাদের কেউ যখন এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে না, তখন যেন সে তার বাম পাশে তিনবার থু থু ফেলে এবং এর অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে (অর্থাৎ- আ’ঊযুবিল্লাহ পড়ে), তাহলে সেটি তার ক্ষতি করবে না। (ই.ফা. ৫৭০০, ই.সে. ৫৭৩২) আবূ কাতাদাহ্ (রাঃ)-এর সানাদে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুবহু হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে এঁরা এদের বর্ণিত হাদীসে (পূর্বোল্লিখিত হাদীসের) বর্ণনাকারী আবূ সালামাহ্ (রহঃ) -এর কথা– আমি স্বপ্ন দেখে ভয় পাওয়ার দরুন জ্বর জ্বর ভাব দেখা দিতো, কিন্তু আমাকে কম্বল দিয়ে ঢাকতে হতো না’ কথাটি বর্ণনা করেননি। (ই.ফা. ৫৭০১, ই.সে. ৫৭৩৩) যুহরী (রহঃ) উপরোল্লিখিত সূ্ত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তাঁদের উভয়ের বর্ণিত হাদীসে- ‘ভয় পেয়ে জ্বরাক্রান্ত হয়ে পড়তাম’ উক্তিটি নেই। আর (প্রথম সূত্রে) বর্ণনাকারী ইউনুস (রহঃ) বর্ধিত করে বলেছেন, যখন সে ঘুম হতে জেগে উঠবে তখন সে যেন তিনবার তার বাম পাশে থু থু ফেলে। (ই.ফা. ৫৭০২, ই.সে. ৫৭৩৪) আবূ কাতাদাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, (আরবী) সু-স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে, আর (আরবী) দুঃস্বপ্ন শাইতানের তরফ থেকে। অতএব তোমাদের কেউ যখন এমন কোন ব্যাপারে স্বপ্নে দেখে, যা সে পছন্দ করে না, তখন সে যেন তার বাম পাশে তিন বার থু থু ফেলে এবং (আ’ঊযুবিল্লাহ্ বা সূরা আল ফালাক্ব ও সূরা আন্ নাস পড়ে) স্বপ্নের অনিষ্ট হতে আশ্রয় চায়। কারণ (এভাবে করলে) তা তার কোন খারাবী করতে পারবে না। রাবী বলেন, আমি এমন স্বপ্নও দেখতাম যা আমার জন্য পাহাড়ের চাইতেও কঠিন (ও ভয়াবহ) কিন্তু এখন অবস্থা এই যে, এ হাদীস যখন আমি শুনে ফেলেছি, এখন আর সে সবের পরোয়া করি না। (ই.ফা. ৫৭০৩, ই.সে. ৫৭৩৫) ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ (রাঃ) উপরোল্লিখিত সূ্ত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু বর্ণনাকারী আস্-সাকাফী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে আছে, (আমার উস্তাদ) বর্ণনাকারী আবূ সালামাহ্ (রাঃ) বলেছেন, ‘আমি এমন স্বপ্নও দেখতাম যা.....। আর বর্ণনাকারী আল-লায়স ও ইবনু নুমায়র (রাঃ) সূ্ত্রে বর্ণিত হাদীসে আবূ সালামাহ্ (রাঃ) এর কথা হতে হাদীসের শেষাংশ নেই এবং বর্ণনাকারী ইবনু রুম্হ্ এ হাদীসের রিওয়ায়াতে বর্ধিত বলেছেন যে, আর সে (স্বপ্নদ্রষ্টা) লোক যে পাশে ঘুমাচ্ছিল সে পাশ পরিবর্তন করে অন্যপাশে ঘুমাবে। (ই.ফা. ৫৭০৪, ই.সে. ৫৭৩৬) আবূ কাতাদাহ্ (রহঃ) সূ্ত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেছেন, ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্র তরফ থেকে আর মন্দ স্বপ্ন শাইতানের তরফ থেকে। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন স্বপ্ন দেখল আর এতে কোন কিছু পছন্দ হলো না, তখন সে যেন তার বাম পাশে থু থু ফেলে এবং শাইতান (এর অনিষ্ট) হতে আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করে, (তাহলে) তা তাকে কোন সমস্যায় ফেলবে না। আর কোরো কাছে ঐ স্বপ্নের কথা বর্ণনা করবে না। আর যদি কোন ভাল স্বপ্ন দেখে তাহলে সু-সংবাদ গ্রহণ করবে। আর যাকে সে মুহাব্বাত করে এমন ব্যক্তি ব্যতীত কারো নিকট তা বর্ণনা করবে না। (ই.ফা.৫৭০৫, ই.সে. ৫৭৩৭) আবূ সালামাহ্ (রহঃ) তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম, যা আমাকে রোগগ্রস্ত করে দিত। তিনি বলেন, পরে আমি আবূ কাতাদাহ্ (রাঃ)-এর সঙ্গে দেখা করলাম (এবং আমার সমস্যার ব্যাপারটি তাঁকে বললাম)। তখন তিনি বললেন, আমিও এমন স্বপ্ন দেখতাম, যা আমাকে অসুস্থ করে দিত। অবশেষে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনলাম, ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ থেকে। অতএব তোমাকে কেউ যখন এমন (স্বপ্ন) দেখে, যা সে পছন্দ করে তাহলে তা তার ঘনিষ্ট লোক ব্যতীত কারো নিকট যেন প্রকাশ না করে। আর যখন এমন (স্বপ্ন) দেখে, যা সে অপছন্দ করে তাহলে সে যেন তার বামপাশে তিন (বার) থু থু নিক্ষেপ করে এবং শাইতানের অনিষ্ট ও স্বপ্নের অমঙ্গল থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে ও কাউকে তা না বলে। কারণ (এভাবে করলে) সে স্বপ্ন তার কোন অকল্যাণ হবে না। (ই.ফা. ৫৭০৬, ই.সে. ৫৭৩৮) জাবির (রাঃ)-এর সানাদে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যখন এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে না তখন সে যেন তার বামপাশে তিনবার থু থু ফেলে এবং শাইতান (এর খারাবী) থেকে আল্লাহর নিকট তিনবার আশ্রয় প্রার্থনা করে। আর যে পাশে ঘুমন্ত ছিল তা হতে যেন বিপরীত পাশে ঘুমায়। (ই.ফা. ৫৭০৭, ই.সে. ৫৭৩৯) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূ্ত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেন, যখন যুগ ও সময় (কিয়ামাতের) সন্নিকটে হয়ে আসবে তখন প্রায়শ (খাঁটি) মুসলিমের স্বপ্ন মিথ্যা ও ভ্রান্ত হবে না। তোমাদের (মাঝে) অধিক সত্যভাষী লোক সর্বাধিক সত্য (ও বাস্তব) স্বপ্নদ্রষ্টা হবে। আর মুসলিমের স্বপ্ন নুবূওয়াতের পঁয়তাল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর স্বপ্ন তিন (প্রকার)- ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে সুসংবাদ (বাহক)। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন শাইতানের পক্ষ হতে দুর্ভাবনা তৈরি করে। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন শাইতানের পক্ষ হতে দুর্ভাবনা তৈরি করে। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন যা মানুষ তার মনের সাথে কথা বলে (এবং ভাবনা-চিন্তা করে) তা থেকে (উদ্ভূত)। অতএব তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু (স্বপ্ন) দর্শন করে- যা সে পছন্দ করে না, তাহলে সে যেন (ঘুম থেকে) উঠে দাঁড়ায় এবং সলাত আদায় করে আর মানুষের নিকট সে (স্বপ্নের) কথা গোপন রাখে। তিনি (আরও) বলেছেন যে, আমি (স্বপ্নে) হাত কড়া (দেখা) পছন্দ করি এবং গলায় বেড়ী (দেখা) পছন্দ করি না। কারণ, হাত কড়া দীন-ধর্মে অবিচলতা (‘র পরিচায়ক)। বর্ণনাকারী বলেন, তবে আমি জানি না যে, তা (রিওয়ায়াতের এ শেষাংশটি) মূল হাদীসের অংশ (নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বাণী) নাকি তা [জাবির (রাঃ) থেকে রিওয়ায়াতকারী] ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেছেন। (ই.ফা. ৫৭০৮, ই.সে. ৫৭৪০) আইয়ূব (রাঃ) উপরোল্লিখিত সুত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর তিনি (তাঁর বর্ণিত) হাদীসে বলেছেন, আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) বলেন, হাত কড়া (দেখা) আমাকে বিমোহিত করে এবং গলায় বেড়ী (দেখা) আমি পছন্দ করি না। (কেননা) হাতকড়া হলো দ্বীন ধর্মে অটল থাকার পরিচায়ক। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেন, (খাঁটি) ঈমানদারের স্বপ্ন নুবূওয়াতের (চল্লিশ অংশের) একটি অংশ। (ই.ফা. ৫৭০৯, ই.সে. ৫৭৪১) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, যখন যুগ বা সময় কিয়ামাতের সন্নিকটে এসে যাবে... বর্ণনাকারী (এভাবেই) হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন এবং তিনি তাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নামোল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৫৭১০, ই.সে. ৫৭৪২) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সানাদে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি তাঁর বর্ণনায় আর আমি গলায় বেড়ী দেখা পছন্দ করি না... পর্যন্ত অংশ সংযোজন করেছেন। আর স্বপ্ন নুবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ- উক্তিটি তিনি বর্ণনা করেননি। (ই.ফা. ৫৭১১, ই.সে. ৫৭৪৩) ‘উবাদাহ্ ইবনু সামিত (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিনের স্বপ্ন নুবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। (ই.ফা. ৫৭১২, ই.সে. ৫৭৪৪) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপরে বর্ণিত হাদীসের হুবহু বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৫৭১৩, ই.সে. ৫৭৪৫) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘অবশ্য’ ঈমানদারের স্বপ্ন নুবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। (ই.ফা. ৫৭১৪, ই.সে. ৫৭৪৬) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলিমের স্বপ্ন, যা সে দেখে অথবা যা তার ব্যাপারে দৃশ্য হয়। বর্ণনাকারী ইবনু মুসহির বর্ণিত হাদীসে ‘মুসলিমের স্বপ্ন’ এ জায়গায় রয়েছে ‘ভাল স্বপ্ন’ নুবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগরে এক ভাগ। (ই.ফা. ৫৭১৫, ই.সে. ৫৭৪৭) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সানাদে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেন, সৎ লোকের স্বপ্ন নুবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। (ই.ফা. ৫৭১৬, ই.সে. ৫৭৪৮) ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবূ কাসীর (রহঃ) উপরোল্লিখিত সূ্ত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৫৭১৭, ই.সে. ৫৭৪৯) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবূ কাসীর (রহঃ) তাঁর পিতার সূ্ত্রে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। (ই.ফা. ৫৭১৮, ই.সে. ৫৭৫০) ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন নুবূওয়াতের সত্তর ভাগের এক ভাগ। (ই.ফা. ৫৭১৯, ই.সে. ৫৭৫১) ইয়াহ্ইয়া সূ্ত্রে ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) অবিকল রিওয়ায়াত করেছেন। (ই.ফা. ৫৭২০, ই.সে. নেই) কুতাইবাহ্ ও ইবনু রুমহ্ (রহঃ) লায়স ইবনু সা’দ থেকে (ভিন্ন সানাদে) ইবনু রাফি’ ও ইবনু ফুদায়ক (রহঃ) নাফি’ (রহঃ) হুবহু রিওয়ায়াত করেছেন। লায়স-এর হাদীসে আছে নাফি’ (রহঃ) বলেন, আমার ধারণা ইবনু ‘উমার (রহঃ) বলেছেনঃ স্বপ্ন নুবূওয়াতের সত্তর ভাগের এক ভাগ। [৩৩] (ই.ফা. ৫৭২১, ই.সে. নেই) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক আমাকে স্বপ্নে দেখে সে (অবশ্যই) আমাকে দেখেছে। কারণ, শাইতান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। (ই.ফা. ৫৭২২, ই.সে. ৫৭৫২) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে লোক আমাকে স্বপ্নে দেখে, শীঘ্রই সে আমাকে জেগে থাকাবস্থায় দেখতে পাবে। অথবা তিনি বলেছেন, সে যেন আমাকে জাগ্রত অবস্থায় প্রত্যক্ষ করলো। কারণ শাইতান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। (ই.ফা. ৫৭২৩, ই.সে. ৫৭৫৩) আবূ কাতাদাহ্ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেনঃ যে আমাকে দেখলো সে যেন (অবশ্যই) সত্যই দেখলো। যুহরীর ভাইয়ের ছেলে তাঁর চাচা (অর্থাৎ যুহরী) তাঁকে হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি ইউনুস বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ দু’টি হাদীস সানাদসহ রিওয়ায়াত করেন। (ই.ফা. ৫৭২৩, ই.সে. ৫৭৫৪) জাবির (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক স্বপ্নযোগে আমাকে দেখল, সে নিশ্চয়ই আমাকে (স্বপ্নে) দেখল। কারণ, শাইতানের পক্ষে আমার আকৃতি ধারণ করা অসম্ভব। তিনি আরও বলেন, তোমাদের কেউ যখন খারাপ স্বপ্ন দেখে সে যেন ঘুমের মধ্যে তার সাথে শাইতানের চক্রান্তের সংবাদ কাউকে না দেয়। (ই.ফা. ৫৭২৪, ই.সে. ৫৭৫৫) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক স্বপ্নযোগে আমাকে দেখল সে অবশ্যই আমাকেই দেখল। কারণ আমার রূপ ধারণ করা শাইতানের পক্ষে অসম্ভব। (ই.ফা. ৫৭২৫, ই.সে. ৫৭৫৬) জাবির (রাঃ) একবার এক বেদুঈন তাঁর নিকট এসে বলল, আমি স্বপ্নে প্রত্যক্ষ করলাম যে, আমার মস্তিষ্ক কর্তন করা হয়েছে আর আমি তার পিছু পিছু ছুটে চলেছি। সে সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে রাগান্বিত হয়ে বললেনঃ ঘুমের মধ্যে তোমার সঙ্গে শাইতানের খেলাধূলার সংবাদ কাউকে প্রকাশ করো না। (ই.ফা. ৫৭২৬, ই.সে. ৫৭৫৭) জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, এক বেদুঈন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন আমার মাথা কর্তন করা হয়েছে এবং তা গড়াতে শুরু করেছে, আর আমি তার পিছনে পিছনে খুব জোরে দৌড়াতে লাগলাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে বেদুঈন আরবকে বললেন, তোমার ঘুমের মধ্যে তোমার সঙ্গে শাইতানের ক্রীড়া-কৌতুকের ব্যাপারে কারো নিকটেই প্রকাশ করো না। বর্ণনাকারী [জাবির (রাঃ)] বলেন, এ ঘটনার পর আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে ভাষণ দিতে শুনলাম। তাতে তিনি বললেন, তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে তার সঙ্গে শাইতানের ক্রীড়া-কৌতুকের ব্যাপারে বলে দিও না। (ই.ফা. ৫৭২৭, ই.সে. ৫৭৫৮)
ঘুমের মধ্যে শাইতানের সঙ্গে খেলাধুলার সংবাদ প্রকাশ করবে না
জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, এক লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন, আমার মস্তিষ্ক কর্তন করা হয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হেসে বললেন, শাইতান যখন তোমাদের কারো সঙ্গে তার ঘুমের মধ্যে খেলাধূলা করে, তখন সে যেন কোন ব্যক্তির নিকট তা প্রকাশ না করে। আর বর্ণনাকারী আবূ বকর (রহঃ) -এর বর্ণনাতে আছে- ‘যখন তোমাদের কারো সঙ্গে ক্রীড়া-কৌতুহল করা হয়’ তিনি ‘শাইতান’ শব্দ বর্ণনা করেননি। (ই.ফা. ৫৭২৮, ই.সে. ৫৭৫৯)
স্বপ্নের ব্যাখ্যা
উবাইদুল্লহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) অথবা আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) হাদীস রিওয়ায়াত করতেন যে, জনৈক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হলো …..। ভিন্ন সূত্রে হারমালাহ্ ইবনু ইয়াহ্ইয়া তুজীবী (রহঃ) ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উতবাহ্ (রাঃ) [ইবনু শিহাব (রহঃ)] -কে সংবাদ দিয়েছেন যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এ হাদীসটি রিওয়ায়াত করতেন যে, জনৈক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দরবারে এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি আজ রাতে স্বপ্ন দেখলাম যে, শামিয়ানা হতে ঘি ও মধু ঝড়ে পড়ছে আর লোকদের দেখলাম- তারা তা থেকে তাদের হাতের অঞ্জলি ভরে ভরে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ বেশি পরিমাণ নিচ্ছে, কোউ স্বল্প পরিমাণে। আর একটি রশি দেখলাম আসমান থেকে জমিন পর্যন্ত সংযোগ স্থাপনকারী, আর দেখলাম আপনি তা ধরলেন এবং উপরে উঠ গেলেন, এরপর এক ব্যক্তি তা ধরল এবং সে উপর উঠে গেল, তারপর আর এক ব্যক্তি তা ধরল এবং তা ছিঁড়ে পড়ে গেল। পরিশেষে তা তার জন্য জুড়ে দেয়া হলো এবং সেও উপরে উঠে গেল। স্বপ্ন বর্ণনার এ পর্যায়ে আবূ বকর (রহঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার পিতা আপনার জন্য উৎসর্গিত! আল্লাহ্র শপথ! আপনি অবশ্য আমাকে অনুমতি দিবেন, তাহলে আমি এ স্বপ্নটির ব্যাখ্যা করব। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আপনি ব্যাখ্যা করুন। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, শামিয়ানাটি হলো ইসলামের (রূপক) শামিয়ানা, আর যে ঘি ও মধু ফোটা ঝরে পড়ছিল, তা হচ্ছে আল-কুরআনের মধুরতা ও কোমলতা আর মানুষেরা যে তা থেকে অঞ্জলি ভরে ভরে নিয়ে যাচ্ছিল তা হলো- কেউ বেশি পরিমাণে আর কেউ সামান্য পরিমাণে আল-কুরআন হতে সংগ্রহ করছে। আর আসমান হতে জমিন পর্যন্ত সংযুক্ত রশিটি হলো হক ও সত্য (পথ), যার উপরে আপনি রয়েছেন তা ধারণ করলেন, আর আল্লাহ তা দিয়ে আপনাকে উপরে উঠিয়ে নিলেন। তারপর আপনার পরে এক লোক তা ধারণ করলেন এবং তা দিয়ে সেও উপরে উঠে যাবে, তারপর আর এক লোক তা ধারণ করবে এবং তা দিয়ে সেও উপরে উঠে যাবে, তারপর আর এক লোক তা ধারণ করবে এবং তা ছিঁড়ে পরে যাবে, পরে তা তার জন্য জুড়ে দেয়া হবে এবং তা দিয়ে সে উপরে উঠে যাবে। হে আল্লাহর রসূল! এখন আমাকে বলে দিন, আমার পিতা আপনার উদ্দেশে উৎসর্গিত, আমি ঠিক বলেছি নাকি ভুল বলেছি? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কতক ঠিক বলেছেন আর কতক ভুল করেছেন। তিনি বললেন, তাহলে আল্লাহ্র শপথ! হে আল্লাহর রসূল! যা আমি ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বর্ণনা করে দিবেন। তিনি বললেন, এভাবে শপথ করবে না। (ই.ফা. ৫৭২৯, ই.সে. ৫৭৬০) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, উহুদ (যুদ্ধক্ষেত্র) হতে তাঁর ফিরে আসার সময় জনৈক লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দরবারে এলো। সে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আজ রাতে আমি স্বপ্নে দেখলাম- একটি ‘শামিয়ানা’ তা থেকে ফোটা ফোটা ঘি ও মধু ঝরছে। হাদীসের পরবর্তী অংশ ইউনুস (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অর্থানুরূপ। (ই.ফা. ৫৭৩০, ই.সে. ৫৭৬১) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) কিংবা আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) ‘আবদুর রায্যাক বলেন (আমার ঊর্ধ্বতন বর্ণনাকারী উস্তাদ) মা’মার (রহঃ) কখনো বর্ণনা করতেন ইবনু ‘আব্বাস (রহঃ) হতে আবার কখনো বর্ণনা করতেন আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) হতে এ মর্মে যে, জনৈক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বললেন, আজ রাতে (স্বপ্নে) আমি একটি শামিয়ানা দেখতে পাই, তারপর পূর্বোল্লিখিত বর্ণনাকারীগণের বর্ণিত হাদীসের অর্থে হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৫৭৩১, ই.সে. ৫৭৬২) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (যেসব অভ্যাসে অভ্যস্ত) ছিলেন (সে সবের মধ্যে একটি ছিল এই) যে, তিনি তাঁর সাহাবীগণকে (ফজরের সলাতের পরে) বলতেন, তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখলে সে তা আমার নিকট প্রকাশ করুক, তাহলে আমি তাকে তার ব্যাখ্যা বলে দিব। জনৈক লোক এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি একটি শামিয়ানা দেখলাম …..। পরবর্তী বর্ণনা (পূর্বোল্লিখিত) বর্ণনাকারীগণের বর্ণিত হাদীসের অবিকল।(ই.ফা. ৫৭৩২, ই.সে. ৫৭৬৩)
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর স্বপ্ন
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক রাতে আমি দেখলাম যেভাবে ঘুমন্ত লোক দেখে (অর্থাৎ-স্বপ্ন), যেন আমরা ‘উক্বাহ্ ইবনু রাফি’-এর গৃহে রয়েছি। তখন আমাদের নিকট ইবনু তাব৩৪ (নামক) খেজুর হতে কিছু তাজা খেজুর নিয়ে আসা হলো। তখন আমি এর বিশ্লেষণ করলাম- পৃথিবীর বুকে আমাদের জন্য উন্নতি এবং আখিরাতে উত্তম পরিণতি। আর আমাদের দ্বীন অবশ্যই উত্তম।(ই.ফা. ৫৭৩৩, ই.সে. ৫৭৬৪) নাফি’ (রহঃ) ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) এ মর্মে বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি ঘুমের মধ্যে আমার একটি দাঁতন দিয়ে মিস্ওয়াক করতে দেখলাম। তখন দু’ লোক আমাকে আকৃষ্ট করল, যাদের একজন অন্যজনের চেয়ে বয়সে বড়। তখন আমি মিস্ওয়াকটি কম বয়সীকে দিতে গেলে আমাকে বলা হলো- ‘বড়কে দিন’, তাই আমি বয়স্ককে দিয়ে দিলাম। (ই.ফা. ৫৭৩৪, ই.সে. ৫৭৬৫) আবূ মূসা (রাঃ)-এর সানাদ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি মাক্কাহ্ থেকে এমন এক দেশে হিজরত করে যাচ্ছি, যেখানে খেজুর বৃক্ষ আছে, তাতে আমার কল্পনা এদিকে গেল যে, তা ইয়ামামাহ্ অথবা হাজর (এলাকা) হবে। পরে (বাস্তবে) দেখি যে, তা হলো মাদীনাহ্- (যার পূর্ব নাম) ইয়াস্রিব। আমি আমার এ স্বপ্নে আরও দেখলাম যে, আমি একটি তলোয়ার নাড়াচাড়া করলাম, ফলে তার মধ্যখান ভেঙ্গে গেল। তা ছিল উহুদের দিনে যা মু’মিনগণের উপর আপতিত হয়েছিল। তারপরে আমি আর একবার সে তলোয়ার নাড়া দিলে তা পূর্বের চাইতে ভাল হয়ে গেল। তারপরে মূলত তা হলো সে বিজয় ও ঈমানদারদের সম্মেলন- যা আল্লাহ সংঘটিত করলেন (মাক্কাহ্ বিজয়)। আমি তাতে একটি গরুও দেখলাম। আর আল্লাহ তা‘আলাই কল্যাণের অধিকারী। মূলত তা হলো- উহুদের যুদ্ধে (শাহাদাতপ্রাপ্ত) মু’মিনদের দলটি। আর মঙ্গল হলো, সে কল্যাণ যা পরবর্তীতে আল্লাহ তা‘আলা দান করেছেন এবং সততা ও নিষ্ঠার সে সাওয়াব ও প্রতিদান- যা আল্লাহ তা‘আলা আমাদের বদর যুদ্ধের পরে দিয়েছেন। (ই.ফা. ৫৭৩৫, ই.সে. ৫৭৬৬) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, (ভণ্ড নাবী) মুসাইলামাহ্ কায্যাব নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আমলে মাদীনায় আসলো, সে তখন বলতে থাকল- ‘মুহাম্মাদ যদি তার (মৃত্যুর) পরে আমাকে নেতৃত্ব দেয়ার ওয়া‘দা করে, তাহলে আমি তার অনুসরণ করব। সে তার সম্প্রদায়ের প্রচুর লোকজন নিয়ে মাদীনায় আসলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দিকে অগ্রসর হলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সাবিত ইবনু কায়স ইবনু শাম্মাস (রাঃ), আর তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাতে ছিল খেজুর শাখার একটি টুকরো। পরিশেষে তিনি সহচর বেষ্টিত মুসাইলামার সম্মুখে গিয়ে থামলেন এবং কথাবার্তার এক পর্যায়ে বললেন (তুমি যদি আমার কাছে এ) সামান্য খেজুর ডালের টুকরাটিও আবদার করো, তবু আমি তা তোমাকে দিব না এবং আমি কিছুতেই তোমার বিষয়ে আল্লাহ্র আইন লঙ্ঘন করব না। আর যদি তুমি (অবাধ্য হয়ে) পিছনে ফিরে যাও, তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তোমাকে পরাভূত করবেন। আর আমি অবশ্যই ধারণা করি যে, যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে তা তোমার বিষয়েই দেখানো হয়েছে। আর (আমি তোমার সঙ্গে বেশি কথা বলতে চাই না) এ সাবিত আমার তরফ থেকে তোমাকে উত্তর দিবে। তারপর তিনি তার নিকট হতে ফিরে চললেন। (ই.ফা. ৫৭৩৬, ই.সে. ৫৭৬৭) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) পরে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বক্তব্য- ‘আমি মনে করি যে, আমাকে (স্বপ্নে) যা দেখানো হয়েছে তা তোমার বিষয়েই দেখানো হয়েছে” সম্বন্ধে প্রশ্ন করলাম। তখন আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) আমাকে বললেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি ঘুমে থাকাবস্থায় আমার দু’হাতে দু’টি সোনার কাঁকন দেখতে পেলাম; সে দু’টির অবস্থা আমাকে মহাদুশ্চিন্তায় ফেলল। স্বপ্নে আমার নিকট ওয়াহী পাঠানো হলো যে, ও দু’টিকে ফুঁ দিন। আমি সে দু’টিকে ফুঁ দিলে সে দু’টি ভেসে গেল। তখন আমি স্বপ্নে দেখা সে বালা দু’টির ব্যাখা করলাম- দু’জন নুবূওয়াতের মিথ্যা দাবীদার, যারা আমার পরে আত্মপ্রকাশ করবে। (বর্ণনাকারী বলেন), তাদের উভয়ের একজন হলো আল-‘আনসী সান‘আ-বাসীদের নেতা এবং অপরজন হলো মুসাইলামাহ্-ইয়ামামাবাসীদের সরদার। (ই.ফা. ৫৭৩৬, ই.সে. ৫৭৬৭) হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) তিনি বলেন, এ হলো সেসব হাদীস যা আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন। এ কথা বলে তিনি কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করেন। এটি হলো (সেগুলোর একটি)। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেন, আমি নিদ্রিত ছিলাম এমতাবস্থায় আমার নিকট দুনিয়ার ভাণ্ডারসমূহ নিয়ে আসা হলো। সে সময় আমার হাতে দু’টি স্বর্ণের কাঁকন রেখে দেয়া হলে সে দু’টি আমার জন্য অনেক ওজন মনে হলো এবং তারা আমাকে দুর্ভাবনায় ফেলল। তখন আমার নিকট ওয়াহীর মাধ্যমে জানানো হলো যে, আমি যেন সে দু’টির উপরে ফুঁ দেই। তখন আমি ফুঁ দিলে সে দু’টি উড়ে গেল। আমি সে দু’টির ব্যাখ্যা করলাম- সে দু’ মিথ্যাবাদী (ভণ্ড নাবী) যে দু’জনের মাঝে আমি রয়েছি- (অর্থাৎ-) সান’আ অধিবাসী আসওয়াদ আল-‘আনসী এবং ইয়ামামাহ্ অধিবাসী মুসাইলামাতুল কায্যাব। (ই.ফা. ৫৭৩৭, ই.সে. ৫৭৬৮) সামুরাহ্ ইবনু জুনদাব (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজরের সলাত আদায়ন্তে লোকদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন এবং বলতেন, তোমাদের কেউ কি গত রাতে কোন স্বপ্ন দেখেছে? (ই.ফা. ৫৭৩৮, ই.সে. ৫৭৬৯)