45. চোরের হাত কাটা
চোরের হাত কাটা
আবূ হুরায়রা (রা) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেছেনঃ যখন কোন ব্যভিচারী ব্যভিচার করে, তখন সে মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না, যখন চোর চুরি করে, তখন সে মুমিন অবস্থায় চুরি করে না, যখন কোন মদ্যপায়ী মদ পান করে, তখন সে মুমিন অবস্থায় মদপান করে না, আর যখন কোন ডাকাত লোক চক্ষুর সামনে ডাকাতি করে, তখনও সে মুমিন অবস্থায় ডাকাতি করে না। আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) । তিনি বলেছেনঃ যখন ব্যভিচারী ব্যভিচার করে, তখন সে মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না, আর যখন চোর চুরি করে তখন সে মুমিন অবস্থায় চুরি করে না, আর যখন কোন মদ্যপায়ী মদ পান করে তখন সে মুমিন অবস্থায় মদ পান করে না। এরপরও তওবার সুযোগ রাখা হয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ যখন কোন ব্যভিচারী ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না; আর কেউ মুমিন অবস্থায় চুরি করে না এবং মুমিন অবস্থায় মদপান করে না। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি চুতর্থ একটি কথা বলেন, যা আমি ভুলে গিয়েছি। যখন সে এসব গুনাহে লিপ্ত হয় তখন সে তার ঘাড় হতে ইসলামের বন্ধন বের করে ফেলে। যদি তওবা করে, আল্লাহ্ তার তওবা কবূল করেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সেই চোরের উপর আল্লাহ্র লা’নত, যে একটি ডিম চুরি করে, যার বিনিময়ে তার হাত কাটা যায় এবং একটি রশি১ চুরি করে, আর তার হাত কাটা হয়।
চুরি স্বীকার করানোর জন্য চোরকে মারা বা বন্দী করা
নু’মান ইব্ন বশীর (রাঃ) কয়েকজন কালায়ী গোত্রের লোক তার নিকট এসে বললোঃ কতিপয় তাঁতী আমাদের মালপত্র চুরি করেছে। তিনি কয়েকদিন তাদেরকে বন্দি করে রেখে ছেড়ে দেন। কালায়ী লোকেরা তাঁর নিকট এসে বলেলোঃ আপনি ঐ সকল লোককে কোন প্রকার শাস্তি বা পরীক্ষা না করে ছেড়ে দিলেন? নু’মান (রাহঃ) বললেনঃ তোমরা কী চাও ? তোমরা চাইলে আমি তাদের মারব। তারপর যদি তোমাদের মাল তাদের নিকট পাওয়া যায়, তবে তো ভাল, আর তা না হলে, আমি তোমাদের পিঠ থেকে তার প্রতিশোধ নেব ! তারা বললোঃ এটা কি আপনার আদেশ ? তিনি বললেনঃ এটা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর হুকুম। বাহয ইব্ন হাকীম (রাঃ) পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অভিযোগের ভিত্তিতে কোন কোন লোককে বন্দী করেন। বাহয ইব্ন হাকীম (রাঃ) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে অভিযোগের ভিত্তিতে বন্দী করে পরে তাকে ছেড়ে দেন।
চোরকে উপদেশ দান
আবূ উমায়রা মাখযূমী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এমন এক চোরকে উপস্থিত করা হয় যে তার অপরাধ স্বীকার করে, কিন্তু তার নিকট কোন মাল পাওয়া যায়নি। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি তো মনে করি না যে, তুমি চুরি করেছ। সে বললোঃ নিশ্চয়ই (করেছি)। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এই ব্যক্তিকে নিয়ে যাও এবং তার হাত কেটে দাও, পরে আমার নিকট নিয়ে এসো। লোকেরা তাকে নিয়ে গিয়ে হাত কেটে দিল এবং আবার নিয়ে আসলো। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি বল, আমি আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা চাচ্ছি এবং তওবা করছি। সে ব্যক্তি বললোঃ আমি আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা চাচ্ছি এবং তওবা করছি। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আল্লাহ্ ! তাকে ক্ষমা করুন।
চোরকে বিচারকের নিকট আনার পর ক্ষমা করলে
সাফওয়ান ইব্ন উমাইয়া (রাঃ) এক ব্যক্তি তাঁর চাদর চুরি করলে তিনি চোরকে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট নিয়ে আসলেন। তিনি তার হাত কাটার আদেশ দিলেন। তখন সাফওয়ান বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আবূ ওয়াহাব ! আমার নিকট আনার পূর্বে তুমি কেন তাকে ক্ষমা করলে না ? পরে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার হাত কেটে দিলেন। সাফওয়ান ইব্ন উমাইয়া (রাঃ) এক ব্যক্তি তাঁর চাদর চুরি করলে তিনি চোরকে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট নিয়ে আসেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার হাত কাটার আদেশ দিলেন। সাফওয়ান বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আবূ ওয়াহাব ! তুমি এখানে আনার পূর্বে কেন তাকে ক্ষমা করলে না? তিনি তার হাত কেটে দিলেন। আতা ইব্ন আবূ রাবাহ্ (রহঃ) তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি কাপড় চুরি করে। তাকে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আনা হলে তিনি তার হাত কাটার আদেশ দেন। তখন ঐ ব্যক্তি বললোঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি তাকে তা দান করলাম। তিনি বললেনঃ এর আগে কেন দিলে না?
কোন মাল রক্ষিত এবং কোন মাল অরক্ষিত
সাফওয়ান ইব্ন উমাইয়া (রাঃ) তিনি কা‘বা শরীফ তওয়াফ করলেন এবং সালাত আদায় করলেন। তারপর তিনি তাঁর চাদর ভাঁজ করে মাথার নীচে রেখে শুয়ে পড়লেন। চোর এসে চাদর টান দিলে তিনি চোরকে ধরে ফেললেন এবং তাকে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট নিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! এই ব্যক্তি আমার চাদর চুরি করেছে। তিনি চোরকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি চাদর চুরি করেছ ? সে বললোঃ হ্যাঁ, তিনি বললেনঃ একে নিয়ে যাও এবং তার হাত কেটে দাও। তখন সাফওয়ান বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমার এই নিয়ত ছিল না যে, মাত্র একটি চাদরের জন্য তার হাত কাটা যাবে। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমার নিকট বিচার আনার পূর্বে যদি তুমি ক্ষমা করতে, তবে হতো, এখন আর হবে না। ইব্ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ সাফওয়ান তাঁর চাদর মাথার নীচে রেখে নিদ্রা গেলেন। এক ব্যক্তি তা চুরি করলো, সাফওয়ান, উঠে দেখেন চোরে তা নিয়ে উধাও হচ্ছে। তিনি দৌড় দিয়ে চোরকে ধরে ফেললেন। তারপর তাকে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট নিয়ে আসলেন। তিনি তার হাত কাটার আদেশ দিলেন। সাফওয়ান বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমার চাদর এমন নয় যে, এর বিনিময়ে একজনের হাত কাটা যেতে পারে। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ একথা আগে কেন মনে করনি? সাফওয়ান ইব্ন উমাইয়া (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি মসজিদেআমার একটি চাদরের উপর নিদ্রিত ছিলাম, যার মূল্য ত্রিশ দিরহাম হবে। এক ব্যক্তি এসে তা উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং পরে সে ধরা পড়ে। তাকে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত করা হলে তিনি তার হাত কাটার আদেশ করলেন। আমি বললামঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! ত্রিশ দিরহামের পরিবর্তে আপনি তার হাত কাটার আদেশ দিলেন? আমি চাদর তার নিকট বিক্রি করছি আর এর মূল্য তার নিকট বাকি রাখছি। তিনি বললেনঃ আমার নিকট আনার পূর্বে তুমি কেন এরূপ করলে না ? সাফওয়ান ইব্ন উমাইয়া (রাহঃ) তাঁর একখানা চাদর মাথার নীচ হতে চুরি হয়ে গেল। তিনি মসজিদে নববীতে নিদ্রিত ছিলেন। তিনি চোরকে ধরে ফেললেন। তারপর তাকে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে উপস্থিত হলেন। তিনি তার হাত কাটার আদেশ করলেন। তখন সাফওয়ান বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! আপনি তার হাত কাটবেন ? রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তবে তুমি এর পূর্বে তাকে ছেড়ে দিলে না কেন ? আমর ইব্ন শু’আয়ব (রহঃ) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন অপরাধীকে আমার নিকট আনার পূর্বে ক্ষমা করে দেবে। যখন আমার নিকট কোন মোকদ্দমা উপস্থিত হয়, তখন শাস্তি অবধারিত হয়ে যায়। আব্দুল্লাহ ইবন আমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দণ্ডনীয় অপরাধসমূহ (বিচারকের নিকট আসার পূর্বে) ক্ষমা করে দেবে। কেননা কোন বিচার আমার নিকট আসলে এর শাস্তি অবধারিত হয়। ইবন উমর (রাঃ) মাখযুম গোত্রের এক নারী লোকদের থেকে ধারে মালপত্র নিত, পরে সে অস্বীকার করতো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার হাত কাটার আদেশ দেন। ইবন উমর (রাঃ) তিনি বলেন মাখযুম গোত্রের এক মহিলা তার পড়শী মহিলাদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে জিনিসপত্র ধার নিত। পরে সে অস্বীকার করতো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কারনে তার হাত কাটার আদেশ দেন। ইবন উমর (রাঃ) এক নারী লোকদের থেকে অলঙ্কার ধার করতো এবং নিজের কাছে রেখে দিত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এই নারীর উচিত আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তওবা করা। এরপর তিনি বললেনঃ হে বিলাল! ওঠো এবং এই মহিলার হাত ধরে কেটে ফেল। নাফি (রহঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় এক নারী অলঙ্কার ধার করতো। একবার সে একটি অলঙ্কার ধার করল। তারপর সেটি রেখে দিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এই মহিলা তওবা করুক এবং তার নিকট যা আছে তা তাকে ফেরৎ দিক। তিনি কয়েকবার এরূপ বললেন কিন্তু সেই মহিলা তা মান্য না করায় তিনি তার হাত কাটার আদেশ দেন। জাবির (রাঃ) মাখযূম গোত্রের এক নারী চুরি করলে তাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে উপস্থিত করা হল। সে উম্মুল মু’মিনীন উম্মে সালামা (রাঃ) -এর নিকট আশ্রয় নিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ যদি মুহাম্মদের মেয়ে ফাতিমা হত,তবুও তার হাত কাটার আদেশ দিতাম। সুতরাং তার হাত কাটা হল। সাঈদ ইবন মুসাইয়্যাব (রহঃ) মাখযূম গোত্রের এক নারী লোকের মারফত ধারে অলঙ্কার এনে নিজের কাছে রেখে দিল এবং অস্বীকার করলো। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার হাত কাটার আদেশ দেন। সাঈদ ইবন মুসাইয়্যাব (রহঃ) অনুরুপ হাদীস বর্ণিত রয়েছে।
মাখযুমী নারীর হাদীসে যুহরী (র) হতে বর্ণনাকারীদের মধ্যে বর্ণনাগত পার্থক্য।
সুফয়ান (রাহঃ) তিনি বলেনঃ মাখযূম গোত্রের এক নারী লোকদের নিকট হতে জিনিসপত্র ধার করত এবং পরে অস্বীকার করত।তাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পেশ করা হল এবং তার বিষয়ে কথা বল। তিনি বললেন “যদি ফাতিমা (রাঃ) -ও হতো, তা হলে তার হাট কেটে দিতাম”। সুফয়ানকে জিজ্ঞেস করা হল, এটা কে বর্ণনা করেছেন? তিনি বলেন, আইয়্যূব ইবন মুসা (রহঃ) যুহরী (রহঃ) হতে, তিনি উরওয়া হতে এবং তিনি হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে। আইয়্যুব ইবন মূসা যুহরী হতে, তিনি উরওয়া হতে এবং তিনি আয়েশা (রাঃ) থেকে। এক নারী চুরি করলে তাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট নিয়ে আসা হল। লোকেরা বললোঃ এরজন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উসামা ইবন যায়দ ব্যতীত কে সুপারিশ করতে পারবে? তারা এই ব্যাপারে উসামা (রাঃ) -কে বললো। উসামা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আরয করলে তিনি বললেন, “হে উসামা! বনী ইসরাঈল এ জন্যই ধ্বংস হয়েছে যে, তাদের মধ্যে যদি কোন আমীর লোক কোন অপরাধ করতো, তারা তাকে ছেড়ে দিত,শাস্তি দিত না। আর যখন কোন গরীব লোক কোন অপরাধ করতো, তখন তারা তাকে শাস্তি দিত। যদি ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদও এই অপরাধ করতো, তবুও আমি তার হাত কাটার আদেশ দিতাম। আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক চোরকে আনা হলে তিনি তার হাত কাটেন। তারা বলল, আমরা চাইনি তার এতটা হোক। তিনি বললেন যদি ফাতিমাও হতো,আমি তারও হাত কাটতাম। আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় এক নারী চুরি করলো। লোক বললোঃ আমরা এ ব্যাপারে , রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে কথা বলতে পারব না। তার প্রিয়পাত্র উসামা ব্যতিত আর কেউ-ই এ ব্যাপারে তার সাথে কথা বলতে পারবে না। উসামা (রাঃ) তারা সাথে কথা বললে তিনি বললেন, হে উসামা! বনী ইসরাঈল এ জন্যই ধ্বংস হয়েছে যে, তাদের মধ্যে কোন সম্মানী ব্যক্তি অপরাধ করলে, তারা তাকে ছেড়ে দিত। আর গরীব লোক কোন অপরাধ করলে তারা তাকে হত্যা করতো। যদি ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদও হতো, আমি তার হাত কাটতাম। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেনঃ এক নারী এমন লোকের মারফত অলংকার ধার করতো, যাদেরকে তারা চিনতো, কিন্তু ঐ নারীকে তারা চিনতো না। এরপর সে তা বিক্রি করে মূল্য রেখে দিত। পরে ঐ নারীকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আনা হলো। তার আত্মীয়গন উসামা ইবন যায়দকে সুপারিশ করতে বললেন। উসামা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আরয করলে তাঁর চেহারার রং পরিবর্তিত হয়ে গেল, অথচ উসামা (রাঃ) আরয করতেই থাকলেন। এরপর তিনি বললেন, তুমি কি আল্লাহ তা’আলার নির্ধারিত শাস্তির বিরুদ্ধে সুপারিশ করছো? উসামা বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। সেই সন্ধ্যায়ই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর হামদ আদায় করলেন, যেরূপ তাঁর হক আছে। এরপর তিনি বললেন, তোমাদের পূর্বেরকার লোক এজন্যই ধ্বংস হয়েছে যে, যখন তাদের মধ্যে কোন ধনী লোক চুরি করতো, তখন তারা তাকে ছেড়ে দিত; আর যখন গরীব লোক চুরি করতো, তখন তারা তাকে শাস্তি দিত। ঐ সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার জীবন। যদি ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদও চুরি করতো, তবে আমি তার হাত কাটার আদেশ দিতাম। পরে ঐ মহিলার হাত কাটা হয়। আয়েশা (রাঃ) কুরায়শরা জনৈক মাখযূমী নারীর ব্যাপারে চিন্তিত হয়ে পড়ে, যে চুরি করেছিল। তারা বললোঃ এর ব্যাপারে কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে কথা বলবে? তারা আরো বললোঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রিয়পাত্র উসামা ইবন যায়দ ব্যতীত আর কে এ ব্যাপারে সাহস করবে? সুতরাং উসামা (রাঃ) তাঁর সঙ্গে কথা বললেন। রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বললেনঃ তুমি কি আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক নির্ধারিত হদ্দের ব্যাপারে সুপারিশ করছো? এরপর তিনি দাঁড়িয়ে খুতবা দিলেন। তাতে বললেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা এ কারণেই ধ্বংস হয়েছে যে,তাদের মধ্যে যখন কোন সভ্রান্ত ব্যক্তি চুরি করতো, , তখন তারা তাকে ছেড়ে দিত। পক্ষান্তরে যদি তাদের কোন দুর্বল লোক যখন চুরি করতো,তারা তার উপর হদ কার্যকর করত। আল্লাহর শপথ ! যদি ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদও চুরি করতো, তবে আমি তার হাত কাটে দিতাম। আয়েশা (রা:) কুরায়শদের মাখযূম গোত্রের এক নারী চুরি করলে তাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত করা হলো। তারা বলল, এ ব্যাপারে তার নিকট কে কথা বলবে? তারা বললোঃ উসামা (রাঃ)। উসামা তার নিকট এসে কথা বললে, তিনি তাকে ধমক দিলেন এবং বললেনঃ বনী ইসরাঈল যখন তাদের কোন ভদ্রলোক চুরি করতো, , তখন তারা তাকে ছেড়ে দিত। আর যখন গরীব লোক চুরি করতো, তখন তারা তার হাত কেটে দিত। মুহাম্মদের প্রাণ যার হাতে, তার শপথ, যদি ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদও চুরি করতো, আমি তার হাত কাটার নির্দেশ দিতাম। আয়েশা (রাঃ) মাখযূম গোত্রীয়া যে নারী চুরি করেছিল, তার ব্যাপারটা কুরায়শকে চিন্তিত করে তুলল (কেননা সে তাদের বংশের ছিল)। তারা বললোঃ এই মামলায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর নিকট কে কথা বলবে? লোক বললোঃ এই দুঃসাহস কে করতে পারে, উসামা ব্যতিত, যিনি তার প্রিয় পাত্র। উসামা তাঁর নিকট কথা বললে তিনি বললেনঃ তোমাদের পূর্বের লোকেরা ধ্বংস হয়েছে এজন্য যে, তাদের কোন ধনী লোক চুরি করতো, তারা তাকে ছেড়ে দিত। আর যখন কোন দুর্বল লোক যখন চুরি করতো,তারা তার উপর হদ্ জারী করতো। আল্লাহর কসম, যদি ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদও চুরি করতো, তা হলে আমি তার হাতও কাটার নির্দেশ দিতাম। আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে মক্কা বিজয়ের সময় এক নারী চুরি করলো। লোক তাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট নিয়ে আসল। উসামা (রাঃ) তার ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে কথা বললেন। তিনি যখন কথা বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেহারা বিবর্ণ হলো। তিনি বললেন, হে উসামা! তুমি আল্লাহ তা’আলার নির্ধারিত শাস্তির ব্যাপারে সুপারিশ করছো? উসামা (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। সন্ধ্যা হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে আল্লাহর হামদ বর্ণনার পর বললেন, তোমাদের পূর্ববর্তী লোক এজন্যই ধ্বংস হয়েছে যে, তাদের মধ্যে কোন অভিজাত লোক চুরি করতো, তখন তারা তাকে ছেড়ে দিত। আর কোন গরীব লোক চুরি করলে তারা তাকে শাস্তি দিত। তিনি বললেনঃ ঐ সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ। যদি ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ চুরি করতো, তবে আমি তারও হাত কাটার নির্দেশ দিতাম। উরওয়া ইবন যুবায়র (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে মক্কা বিজয়ের সময় এক নারী চুরি করলো। তার গোত্রের লোকেরা ভীত হয়ে উসামা ইবন যায়দ-এর নিকট সুপারিশপ্রার্থী হলো। উরওয়া (রাঃ) বলেনঃ উসামা (রাঃ) এ ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সঙ্গে কথা বললে, তার এর চেহারা বিবর্ণ হলো। তিনি বললেন, তুমি কি আল্লাহর বিধানের ব্যাপারে আমার নিকট সুপারিশ করতে চাও? উসামা (রাহঃ) বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। সন্ধ্যা হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভাষণ দিতে দাঁড়ালেন। তিনি আল্লাহর যথাযথ প্রশংশা জ্ঞাপনের পর বললেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী লোক এজন্যই ধ্বংস হয়েছে যে, যখন তাদের কোন অভিজাত লোক চুরি করতো, তখন তারা তাকে ছেড়ে দিত। আর যখন কোন দুর্বল লোক চুরি করতো, তখন তারা তাকে শাস্তি দিত। আল্লাহর কসম! যদি ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদও চুরি করতো, তা হলে আমি তার হাত কাটে দিতাম। এরপর তার আদেশে ঐ নারীর হাত কাটা হলো। পরে ঐ নারী উত্তমরূপে তওবা করলো। আয়েশ (রাঃ) বলেনঃ ঐ নারী পরে আমার নিকট আসতো এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তার প্রয়োজন তুলে ধরতাম।
হদ বা শাস্তি বিধানের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পৃথিবীতে একটি হদ প্রতিষ্ঠিত হওয়া পৃথিবীবাসীদের জন্য ত্রিশ দিন বৃষ্টি বর্ষিত হওয়া অপেক্ষা উত্তম। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ কোন স্থানে হদ প্রতিষ্ঠিত হওয়া ঐ এলাকাবাসীর উপর চল্লিশ দিন বৃষ্টি হওয়া অপেক্ষা উত্তম।
কত মূল্যের মাল চুরিতে হাত কাটা যাবে।
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি ঢাল-যার মূল্য ছিল পাঁচ দিরহাম, চুরি করায় চোরের হাত কাটার নির্দেশ দেন। আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিন দিরহাম মূল্যের ঢাল চুরি করায় চোরের হাত কেটে দেন। ইবন উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঢাল ছুরির জন্য হাত কেতে দেন, যার মূল্য ছিল তিন দিরহাম। আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক চোরের হাত কেটে দেন যে, মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট স্থান থেকে ঢাল চুরি করেছিল, যার মূল্য ছিল তিন দিরহাম। ইবন উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি ঢাল চুরিতে হাত কেটে দেন, যার মূল্য ছিল তিন দিরহাম। আনাস ইবন মালিক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি ঢাল চুরির জন্য হাত কাটেন। আনাস (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ) একটি ঢাল চুরি জন্য হাত কেটে দেন, যার মূল্য ছিল পাঁচ দিরহাম। কাতাদা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি আনাসকে বলতে শুনেছিঃ আবূ বকর (রাঃ)-এর সময় এক লোক একটি ঢাল চুরি করে যার মূল্য সাব্যস্ত হয় পাঁচ দিরহাম। এ কারনে তার হাত কাটা হয়।
যুহরী হতে বর্ণনাকারীদের মতপার্থক্য
হাফস ইবন হাসসান (রহঃ) যুহরী থেকে, তিনি উরওয়া হতে এবং তিনি আয়েশা (রাঃ) থেকে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক দীনারের এক-চতুর্থাংশের (চার ভাগের এক ভাগ) জন্য চোরের হাত কাটার নির্দেশ দেন। আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একটি ঢালের মুল্য অর্থাৎ এক দীনারের তিনভাগের একভাগ বা অর্ধ দীনার কিংবা এর অধিক না হলে চোরের হাত কাটা যাবে না। আয়েশা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দীনারের চার ভাগের এক ভাগের জন্য চোরের হাত কাটা যাবে। আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দীনারের এক-চতুর্থাংশ বা ততোধিকের জন্য চোরের হাত কাটা যাবে। আয়েশা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেনঃ দীনারের চতুর্থাংশ বা ততোধিকের জন্য চোরের হাত কাটা যাবে। আয়েশা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেনঃ দীনারের চতুর্থাংশ বা তদুর্ধের জন্য চোরের হাত কাটা যাবে। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেনঃ দীনারের এক-চতুর্থাংশ বা তদুর্ধের জন্য চোরের হাত কাটা যাবে। আয়েশা (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দীনারের চতুর্থাংশ বা তদুর্ধের জন্য চোরের হাত কাটা যাবে। হযরত আয়েশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দীনারের চতুর্থাংশ বা তদুর্ধের জন্য চোরের হাত কাটা যাবে। আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দীনারের চতুর্থাংশ বা তদুর্ধের জন্য চোরের হাত কাটা হবে। আমর (রহঃ) তিনি আয়েশা (রাহঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ দীনারের চতুর্থাংশ বা তদুর্ধের জন্য চোরের হাত কাটা যাবে। আয়েশা (রাঃ) , তিনি বলেনঃ দীনারের এক-চতুর্থাংশ বা তদুর্ধের জন্য চোরের হাত কাটা যাবে। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেনঃ দীনারের চতুর্থাংশ বা তদুর্ধের জন্য চোরের হাত কাটা যাবে। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেনঃ অনেক দিন অতিবাহিত হয়নি আর আমি ভুলে যাইনি যে, দীনারের চতুর্থাংশ বা তদুর্ধের জন্যই চোরের হাত কাটা যাবে।
এই হাদীসে ‘আমর (রহঃ) থেকে বর্ণনাকারী আবূ বকর ইবন মুহাম্মদ ও আব্দুল্লাহ ইবন আবূ বকর (রহঃ)-এর বর্ণনাগত পার্থক্য
আয়েশা (রাহঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ চোরের হাত কাটা হবে না দীনারের চতুর্থাংশ বা ততোধিক ব্যতীত। আয়েশা (রাঃ) সুত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রথম হাদীসের ন্যায় বর্ণনা করেছেন। আয়েশা (রাঃ) চোরের হাত কাটা যাবে দীনারের চতুর্থাংশ বা ততোধিকের জন্য। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ চোরের হাত কাটা যাবে ঢালের মূল্যে, আর ঢালের মূল্য হলো দীনারের চতুর্থাংশ। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেনঃ দীনারের চতুর্থাংশ বা তদুর্ধের জন্য রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চোরের হাত কাটতেন। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দীনারের চতুর্থাংশ ব্যতীত চোরের হাত কাটা যাবে না। উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঢালের (চুরির) জন্য চোরের হাত কাটা যাবে। আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ঢালের মূল্যের কমে চোরের হাত কাটতেন না। আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, ঢালের মূল্য কত? তিনি বললেনঃ দীনারের চতুর্থাংশ। আয়েশা (রাঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ দীনারের চতুর্থাংশ বা ততোধিক ব্যতীত চোরের হাত কাটা যাবে না। আয়শা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ ঢালের জন্য অথবা এর মুল্যের কমে হাত কাটা যাবে না। উরওয়া ইবনে যুবায়ের (রাঃ) আয়েশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঢাল অথবা এর মুল্যের কোন দ্রব্য চুরি করা ব্যতীত হাত কাটা যাবে না। উরওয়া (রাঃ) বলেনঃ ঢাল চার দিরহাম হয়ে থাকে। সুলায়মান ইবনে ইয়াসার (রহঃ) তিনি আয়েশা (রাঃ) কে বলতে শুনেছেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ দীনারের চতুর্থাংশ বা তদুর্ধের জন্য ব্যতীত চোরের হাত কাটা যাবে না। সুলায়মান ইবনে ইয়াসার (রাঃ) তিনি বলেনঃ পাঁচ দিরহামের জন্য চোরের পাঁচ আঙ্গুল কাটা যাবে। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেনঃ হাফজা (শুধু চামড়ার ধাল) বা তুরস (কাঠ ও চামড়াযোগে গঠিত ঢাল)-এর মত মূল্যের বস্তুতে চোরের হাত কাটা যাবে না। এর প্রত্যেকটিই মূল্যবান বস্তু। আব্দুল্লাহ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঁচ দিরহাম মূল্যের জন্য চোরের হাত কাটার নির্দেশ দেন। আয়মন (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঢালের সমপরিমাণ মূল্যের জন্য চোরের হাত কাটতেন, আর সে সময় ঢালের মূল্য ছিল এক দীনার। আয়মন (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়ে ঢালের মুল্যের কমে হাত কাটা হয়নি। আর তখন ঢালের মুল্য ছিল এক দীনার। আয়মন (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়ে ঢালের মুল্যের কমে হাত কাটা হয়নি। আর সে সময় ঢালের মুল্য ছিল এক দীনার। আয়মান (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়ে ঢালের মুল্যের কমে হাত কাটা হয়নি। আর তখন ঢালের মুল্য ছিল এক দীনার। আয়মন (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়ে ঢালের মুল্যের জন্য চোরের হাত কাটা হতো, যা ছিল এক দীনার বা দশ দিরহাম। আয়মন ইবন উম্মে আয়মন (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঢালের মুল্য ব্যতীত হাত কাটা যাবে না। আর তখন এর মূল্য ছিল এক দীনার। আয়মন (রাঃ) তিনি বলেনঃ ঢালের মুল্যের কমে চোরের হাত কাটা যাবে না। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস (রাঃ) । তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়ে ঢালের দাম হতো দশ দিরহাম। ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে আনুরূপ বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সময়ে ঢালের মুল্য ছিল দশ দিরহাম। আতা (রহঃ) (...) আতা (রাঃ) তিনি বলেনঃ সর্বনিম্ন যাতে হাত কাটা যাবে, তা হলো ঢালের মূল্য। আর তখন এর মূল্য ছিল দশ দিরহাম। ইমাম আবূ আব্দুর রহমান নাসাঈ (রহঃ) বলেন, পূর্বে যে আয়মান থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহচর্য পেয়েছেন বলে আমি মনে করি না। তার থেকে বর্ণিত অন্য হাদীস দ্বারা আমার এ কথা প্রমাণিত হয়। নিম্নে সে হাদীস উদ্ধৃত হলঃ (আরবি)। ইবন যুবায়র (রাঃ) এর আযাদকৃত দাস আয়মান (রাঃ) তিনি তুবায় সূত্রে কা’ব (রাঃ) হতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি উত্তমরূপে উযু করে সালাত আদায় করে; রাবি আব্দুর রাহমান বলেন, ইশার সালাত আদায় করে এবং পরে চার রাকআত সালাত আদায় করে এবং তাতে রুকূ-সিজদা পূর্ণরূপে আদায় করে, আর যা পড়ে তা উপলব্ধি করে, তবে তা শবে কদরের ইবাদতের ন্যায় হবে। হাদিসের মানঃ মাকতু মাওকুফ কা’ব (রাঃ) তিনি বলেনঃ যে বেক্তি উত্তমরূপে উযু করে এশার সালাতের জামায়াতে শরীক হয় এবং এরপর অনুরূপ চার রাকাআত সালাত আদায় করে। এতে কুরাআন পড়ে এবং রুকূ-সিজদা পূর্ণরূপে আদায় করে, তবে তার জন্য শবে কদরের সওয়াবের মত হবে। হাদিসের মানঃ মাকতু মাওকুফ আমর ইবন শুআয়াব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম )এর সময় ঢালের মুল্য ছিল দশ দিরহাম।
ফল গাছে থাকতে চুরি হওয়া
আমর ইবন শুআয়ব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– কে জিজ্ঞাসা করা হলো, কি পরিমাণ মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে ? তিনি বললেনঃ যে ফল গাছে ঝুলছে, ঐ ফল চুরি হলে হাত কাটা যাবে না। কিন্তু যখন তা খোলায় এনে রাখা হয়, আর সেখান হতে এ পরিমান ফল চুরি হয় যার মূল্য ঢালের মুল্যের সমান, তখন হাত কাটা যাবে। এভাবে যে জন্তু পাহারের চরনভূমিতে চরে, তাতে হাত কাটা যাবে না। কিন্তু যখন তা খোয়াড়ে তোলা হয়, তখন চুরি করলে এবং তার মূল্য ঢালের মূল্যের সমপরিমাণ হলে হাত কাটা যাবে। আব্দুল্লাহ ইব্ন আমর (রাহঃ) গাছে ফল চুরির ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি প্রয়োজনের তাগিদে ফল নেয়, কিন্তু লুকিয়ে কাপড়ে বেঁধে না নেয়, তবে তার কোন শাস্তি হবে না। যদি কেউ এরূপ ফল নিয়ে বের হয়, তবে তার দ্বিগুন জরিমানা হবে, এবং তার আলাদা শাস্তি হবে। গাছ হতে ফল নামিয়ে রাখার পর যদি কেউ চুরি করে আর এর মূল্য ঢালের মূল্যের পরিমান হয়, তবে তার হাত কাটা যাবে। যদি কোন ব্যক্তি ঢালের মূল্যের চেয়ে কম মূল্যের বস্তু চুরি করে, তবে তার দ্বিগুণ জরিমানা দিতে হবে, আর শাস্তি পৃথক হবে। আব্দুল্লাহ ইব্ন আমর (রাঃ) মুযায়না গোত্রের এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– এর নিকট এসে বললোঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্ ! পাহাড়ে চরে বেড়ায় এমন জন্তুর ব্যাপারে আপনি কী আদেশ করেন? তিনি বললেনঃ যদি কেউ এরূপ জন্তু চুরি করে, তবে যেন তা ফেরৎ দেয় এবং এরূপ অন্য একটি জন্তুও দিবে। আর তাকে শাস্তি দেওয়া হবে, তার হাত কাটা যাবে না। ঐ ব্যক্তি বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! গাছে ঝুলান ফল সম্বন্ধে আপনি কি বলেন? তিনি বলেনঃ চোর ঐ ফল এবং আরও ঐ পরিমাণ ফল আদায় করবে এবং তাকে শাস্তি দেওয়া হবে, গাছে ঝুলন্ত কোন ফল চুরিতে হাত কাটা যাবে না। ফল গাছ থেকে নামিয়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। আর তা থেকে এত ফল চুরি হয়েছে যার মূল্য ঢালের মূল্যের সমপরিমান চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আর যদি ঐ পরিমানের চাইতে কম হয় ; তবে দ্বিগুণ জরিমানা দিবে, আর শাস্তিস্বরূপ বেত্রাঘাত খাবে।
যা চুরি করলে হাত কাটা যাবে না
রাফে’ ইবনে খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– কে বলতে শুনেছিঃ ফল এবং খেজুর গাছের শাঁস চুরিতে হাত কাটা নেই। রাফে’ ইব্ন খাদিজ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলতে শুনেছি ফল এবং খেজুর গাছের শাঁস চুরিতে হাত কাটা নেই। রাফে’ ইব্ন খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছিঃ ফল এবং খেজুর গাছের শাঁস চুরিতে হাত কাটা নেই। রাফে’ ইব্ন খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফল এবং খেজুর গাছের শাঁস চুরিতে হাত কাটা নেই। রাফে’ ইব্ন খাদীজ (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেছেনঃ ফল এবং খেজুর গাছের শাঁস চুরিতে হাত কাটা নেই। রাফে’ ইব্ন খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফল এবং খেজুর গাছের শাঁস চুরিতে হাত কাটা নেই। রাফে’ ইব্ন খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফল এবং খেজুর গাছের শাঁস চুরিতে হাত কাটা নেই। রাফে’ ইব্ন খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছিঃ ফল এবং খেজুর গাছের শাঁস চুরিতে হাত কাটা নেই। রাফে’ ইব্ন খাদীজ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফল এবং খেজুর গাছের শাঁস চুরিতে হাত কাটা নেই। রাফে’ ইব্ন খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছিঃ ফল এবং খেজুর গাছের শাঁস চুরিতে হাত কাটা নেই। রাফে’ ইব্ন খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছিঃ ফল এবং খেজুর গাছের শাঁস চুরিতে হাত কাটা নেই। জাবির (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেছেনঃ আমানতে খিয়ানতকারী, প্রকাশ্যে লুণ্ঠনকারী এবং ছোঁ মেরে পলায়নকারী ব্যক্তির প্রতি হাত কাটার শাস্তি আরোপিত হবে না। জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমানতে খিয়ানতকারী লুণ্ঠনকারী এবং ছোঁ মেরে পলায়নকারী ব্যক্তির প্রতি হাত কাটার শাস্তি আরোপিত হবে না। জাবির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন কিছু খপ করে নিয়ে পালায়, তাঁর শাস্তি হাত কাটা নয়। জাবির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমানতে খিয়ানতকারীর হাত কাটা যাবে না। জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রকাশ্যে লুণ্ঠনকারী এবং ছোঁ মেরে মাল নিয়ে পলায়নকারী এবং খিয়ানতকারীর হাত কাটা যাবে না। জাবির (রাঃ) তিনি বলেনঃ খিয়ানতকারী ব্যক্তির হাত কাটা যাবে না।
চোরের হাত কাটার পর পা কাটা
হারিস ইবন হাতিব (রা) রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট এক চোরকে আনা হলে তিনি বললেন: তাকে হত্যা কর। লোকজন বললো : ইয়া রাসূলাল্লাহ! সেতো চুরি করেছে। তিনি বললেন : তাকে হত্যা কর। লোকজন বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! সে তো চুরি করেছে। তিনি বললেন : তবে তার হাত কেটে ফেল। পরে এই লোকটি আবার চুরি করলে তার-পা কাটা হলো। এরপর আবু বকর (রা)-এর খিলাফতকালে সে আবার চুরি করল। এভাবে তার সমস্ত হাত পা কাটা গেল। পরে সে পঞ্চমবার চুরি করলে আবু বকর (রা) বললেন : রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার অবস্থা অবগত ছিলেন বলেই তিনি বলেছিলেন, তাকে হত্যা কর। এরপর হযরত আবু বকর (রা) তাকে কুরায়শদের যুবকদের হাতে ছেড়ে দেন, যেন তারা তাকে হত্যা করে। তাদের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবন যুবায়রও ছিলেন। তিনি নেতৃত্ব পছন্দ করতেন। তিনি বললেন : তোমরা আমাকে তোমাদের দলপতি নিযুক্ত কর। তারা তাঁকে দলপতি নিযুক্ত করল। যখন তিনি মারা শুরু করলেন, তখন তারা ঐ ব্যক্তিকে মারল এবং এভাবে তারা তাকে হত্যা করল।
চোরের হস্তদ্বয় ও পদদ্বয় কেটে ফেলা
জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এক চোরকে আনা হলে তিনি বললেন: তাকে হত্যা কর। লোকজন বলল: ইয়া রাসুলাল্লাহ্! সেতো চুরি করেছে। তিনি বললেন: তবে তার হাত কেটে ফেল। তখন তার হাত কাটা হলো। পরে আবার তাকে চুরির কারণে ধরে আনা হলে তিনি বললেন: তাকে হত্যা কর। লোকজন বললো: ইয়া রাসুলাল্লাহ্! সে তো চুরি করেছে। তিনি বললেন: তবে তার পা কাট। তখন তা কাটা হল। তৃতীয়বারও তাকে আনা হলো। তিনি বললেন: তাকে হত্যা কর। লোকজন বললো: ইয়া রাসুলাল্লাহ্। এ ব্যক্তি তো চুরি করেছে। তিনি বললেন: তবে তার বাম হাত কাট। তাকে চতুর্থবারও আনা হল। তিনি বললেন: তাকে হত্যা কর। লোকজন বললো: ইয়া রাসুলাল্লাহ্! লোকটি তো চুরি করেছে। তিনি বললেন: তবে তার (ডান) পা কেটে ফেল। এরপর তাকে পঞ্চমবারও আনা হলে তিনি বললেন: এবার তাকে হত্যা কর। জাবির (রাঃ) বলেন: আমরা ঐ চোরকে মিরবাদ নামক স্থানের দিকে নিয়ে গেলাম। তাকে উঠাতে গেলে সে চিত হয়ে গেল। এরপর সে তার কাটা হাত-পা নিয়ে দাপাদাপি করতে লাগল। উট তার এ অবস্থা দেখে ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করে দিল। তাকে দ্বিতীয়বার উঠানো হলো, কিন্তু সে পুনরায় ঐরূপ করলো। আবার তৃতীয়বার তাকে উঠানো হলো। পরে আমরা তাকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করি এবং তাকে এক কূপে নিক্ষেপ করি। এরপর উপর থেকে তার উপর পাথর নিক্ষেপ করি।
সফরে হাত কাটা
বুস্র ইব্ন আবূ আরতাত (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে বলতে শুনেছি: সফরে হাত কাটা যাবে না। আবু হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: ক্রীতদাস যদি চুরি করে, তবে তাকে বিক্রি করে ফেলবে বিশ দিরহামের বিনিময়ে (বা অর্ধেক মূ্ল্যে) হলেও।
বালেগ হওয়ার বয়স এবং যে বয়সে উপনীত হলে নর-নারীর উপরে হদ (শরঈ শাস্তি) আরোপ করা যায়।
আতিয়্যা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বনূ কুরায়যার বন্দীদের মধ্যে ছিলাম। তারা পর্যবেক্ষণ করতো, যার (নাভির নিচের) চুল গজাত, তাকে হত্যা করতো, আর যার গজায় নি, তাকে ছেড়ে দিত, হত্যা করতো না।
চোরের কর্তিত হাত ঘাড়ে ঝুলানো
ইব্ন মুহায়রীয (রাঃ) তিনি বলেন, আমি ফাযালা ইব্ন উবায়দকে চোরের হাত তার ঘাড়ে ঝুলিয়ে দেয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন: এটা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চোরের হাত কেটে তার ঘাড়ে লটকে দিয়েছিলেন।
চোরের হাত কাটা
আবদুর রহমান ইব্ন মুহায়রীয (রহঃ) তিনি বলেন, আমি ফাযালা ইব্ন উবায়দকে জিজ্ঞাসা করলাম: চোরের হাত কেটে ঝুলিয়ে দেয়া কি সুন্নত? তিনি বললেন: হ্যাঁ, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এক চোরকে আনা হলে তিনি তার হাত কেটে তার ঘাড়ে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। আবদুর রহমান ইব্ন আউফ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: চোরের উপর তার শাস্তি কার্যকার করা হলে চোরাই মালের জন্য তাকে জরিমানা দিতে হবে না।