9. কিব্লা
কিবলার দিকে মুখ করা
বারা ইব্ন আযিব (রাঃ) তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় আগমনের পর ষোল মাস বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করেন। তারপর তাঁকে কা’বার দিকে মুখ করার নির্দেশ দেয়া হলো। এরপর এক ব্যক্তি, যিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছিলেন, আনসার সম্প্রদায়ের একদল লোকের নিকট গিয়ে বললেন যে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কা’বা অভিমুখী করা হয়েছে। ফলে তাঁরা কা’বার দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন।
যে অবস্থায় কিবলা ছাড়া অন্যদিকে মুখ করা বৈধ
ইব্ন উমর (রাঃ) তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরে তাঁর সওয়ারীর উপর সওয়ারী যেদিকেই মুখ করত সেদিকেই মুখ করে সালাত আদায় করতেন। মালিক (রহঃ) বলেন : আবদুল্লাহ ইব্ন দীনার বলেছেন, ইব্ন উমরও এরূপই করতেন। আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সওয়ারী তাঁকে নিয়ে যেদিকে মুখ করতো সেদিকে ফিরেই তিনি সালাত আদায় করতেন। তারপর বিতর আদায় করতেন কিন্তু তিনি এর ওপর ফরয সালাত আদায় করতেন না।
ইজতিহাদের পর ভুলের প্রকাশ
ইব্ন উমর (রাঃ) তিনি বলেন : লোক কুবায় ফজরের সালাতে ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি এসে বলল, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর এই রাতে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। তাতে তাঁকে কিবলার দিকে মুখ করার আদেশ করা হয়েছে। অতএব আপনারা কিবলার দিকে মুখ করুন। তখন তাদের চেহারা ছিল সিরিয়ার দিকে, পরে তারা কা’বার দিকে ঘুরে গেলেন।
মুসল্লীর সুতরা ব্যবহার করা
আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন : তবুক যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাত আদায়কারীর সুতরা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন : তা হাওদার পেছনের হেলান-কাঠের ন্যায়। [১] ইব্ন উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন : তিনি বর্শার ফলা পুঁতে তার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতেন।
সুতরার নিকটবর্তী হওয়ার আদেশ
সাহল ইব্ন আবূ হাসমা (রাঃ) তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : যখন তোমাদের কেউ সুতরার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করে, তখন সে যেন তার নিকটবর্তী হয়। তাহলে শয়তান তার সালাত ভঙ্গ করতে পারবে না।
এর পরিমাণ
আবদুল্লাহ ইব্ন উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উসামা ইব্ন যায়দ, বিলাল ও উসমান ইব্ন তালহা হাজাবী কা’বায় প্রবেশ করলেন এবং দরজা বন্ধ করে দিলেন। আবদুল্লাহ ইব্ন উমর বলেন : বিলাল যখন বের হলেন তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে কি করলেন? তিনি বললেন, তিনি একটি খুঁটি তাঁর বামদিকে, দু’টি খুঁটি তাঁর ডানদিকে রাখলেন আর তিনটি খুঁটি তাঁর পেছনে রাখলেন। আর বায়তুল্লাহ তৎকালে ছয়টি খুঁটির উপর ছিল, তারপর তিনি সালাত আদায় করলেন। তিনি তাঁর এবং দেয়ালের মধ্যস্থলে প্রায় তিন হাত ব্যবধান রাখলেন।
সালাত আদায়কারীর সামনে সুতরা না থাকলে, যাতে সালাত নষ্ট হয় আর যাতে নষ্ট হয় না
আবূ যর (রাঃ) তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন সালাত আদায় করার জন্য দাঁড়ায়, তখন সে নিজেকে আড়াল করে নেবে যদি তার সামনে হাওদার হেলান কাঠের মত কিছু থাকে। যদি তার সামনে হাওদার কাঠের মত কিছু না থাকে, তাহলে তার সালাত নষ্ট করবে নারী, গাধা এবং কাল কুকুর। আমি বললাম, লাল ও হলদে কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের অবস্থা কি ? তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করেছিলাম, যেমন তুমি আমাকে প্রশ্ন করেছ। তখন তিনি বললেন : কাল কুকুর শয়তান। [১] কাতাদা (রাঃ) তিনি বলেন : আমি জাবির (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন বস্তু সালাত নষ্ট করে ? তিনি বললেন, ইব্ন আব্বাস (রাঃ) বলতেন : ঋতুমতী নারী, কুকুর। ইয়াহ্ইয়া বলেন : শু’বা একে মরফূ’ করেছেন (অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত সনদের ধারা পৌঁছিয়েছেন)। ইব্ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন : আমি এবং ফযল আমাদের এক গর্দভীর উপর সওয়ার হয়ে আসলাম, তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরাফায় লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। তারপর তিনি কিছু বললেন, যার অর্থ হচ্ছে, আমরা কোন এক কাতারের মধ্যে ঢুকে পড়লাম এবং তা থেকে নামলাম এবং ওটাকে ঘাস খেতে ছেড়ে দিলাম। কিন্তু রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কিছুই বললেন না। ফযল ইব্ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের এক বাগানে আব্বাস (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাত করলেন, সেখানে আমাদের ছোট কুকুর ছিল আর গর্দভী ঘাস খাচ্ছিল। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে আসরের সালাত আদায় করলেন। তখন যে দু’টি তাঁর সামনে ছিল, না এ দু’টিকে ধমক দেওয়া হয়েছিল, না পেছনে সরানো হয়েছিল। সুহায়ব (রহঃ) তিনি বলেন : আমি ইব্ন আব্বাস (রাঃ)-কে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, তিনি এবং বনূ হাশিমের এক বালক রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে দিয়ে গাধার উপর সওয়ার হয়ে গেলেন। তখন তিনি সালাত আদায় করছিলেন। তখন তারা অবতরণ করে তাঁর সাথে সালাত আদায় করলেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত সমাপ্ত না করতেই বনূ আবদুল মুত্তালিবের দু’টি বালিকা দৌড়ে আসল। তারা এসে তাঁর হাঁটুদ্বয় ধরল। তিনি তাদের উভয়কে পৃথক করে দিলেন। তখনও তিনি সালাত শেষ করেন নি। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন : আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে ছিলাম আর তিনি সালাত আদায় করছিলেন। আমি যখন উঠে যেতে চাইলাম, তখন আমি দাঁড়িয়ে তাঁর সম্মুখ দিয়ে যাওয়াটাকে খারাপ মনে করে আস্তে আস্তে (চাদরের নিচ থেকে) বের হয়ে গেলাম।
মুসল্লী ও তার সুতরার মাঝখান দিয়ে যাওয়া সম্পর্কে কঠোর বাণী
বুসর ইব্ন সাঈদ (রহঃ) যে, যায়দ ইব্ন খালিদ তাঁকে আবূ জুহায়মের নিকট মুসল্লীর সামনে দিয়ে গমনকারী সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তিনি কি বলতে শুনেছেন তা জিজ্ঞাসা করার জন্য পাঠালেন। তখন আবূ জুহায়ম (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন। মুসল্লীর সামনে দিয়ে গমনকারী যদি জানত তার কি (ক্ষতি ও পাপ) হবে, তাহলে মুসল্লীর সম্মুখ দিয়ে গমন করার চাইতে চল্লিশ (বছর) দাঁড়িয়ে থাকা সে উত্তম মনে করতো। আবু সাঈদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন সালাত আদায় করতে থাকে তাহলে সে যেন কাউকে তার সামনে দিয়ে যেতে না দেয়, যদি সে না মানে, তাহলে সে যেন শক্তি প্রয়োগ করে বাধা দেয়।
এর অনুমতি
কাছীর (রহঃ)-এর দাদা তিনি বলেছেন : আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলাম তিনি সাতবার কা’বার তাওয়াফ করলেন। তারপর মাকামে ইবরাহীমের নিকট বায়তুল্লাহর বরাবর দু’ রাকা’আত সালাত আদায় করলেন। তখন তাঁর ও তাওয়াফকারীদের মধ্যে কেউ ছিল না।
নিদ্রিত ব্যক্তির পেছনে সালাত আদায় করার অনুমতি
আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (তাহাজ্জুদের) সালাত আদায় করতেন, তখন আমি তাঁর ও কিবলার মধ্যস্থলে নিদ্রিত অবস্থায় তাঁর বিছানায় শুয়ে থাকতাম। যখন তিনি বিতরের সালাত আদায় করতে ইচ্ছা করতেন, তখন আমাকে জাগিয়ে দিতেন এবং আমি বিতরের সালাত আদায় করতাম।
কবরের দিকে সালাত আদায় করার নিষেধাজ্ঞা
আবূ মারসাদ গানাবী (রহঃ) তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমরা কবরের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করবে না এবং তার উপর উপবেশন করবে না।
ছবিওয়ালা কাপড়ের দিকে সালাত আদায় করা
আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন : আমার ঘরে একখানা কাপড় ছিল যাতে ছবি ছিল। আমি তা ঘরের তাকের দিকে রাখলাম। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে সালাত আদায় করতেন। তারপর তিনি বলেছিলেন : হে আয়েশা ! ওটা আমার সম্মুখ থেকে সরাও। আমি সরিয়ে ফেললাম এবং তা দ্বারা বালিশ বানালাম।
মুসল্লি এবং ইমামের মধ্যে আড়াল
আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একখানা মাদুর ছিল। তিনি দিনের বেলা তা বিছাতেন এবং রাতের বেলায় তা দ্বারা কুঠুরির মতো বানাতেন এবং তার ভেতর সালাত আদায় করতেন। লোক তা জানতে পেরে তাঁর সঙ্গে সালাতে শরীক হতেন, তখন তাঁর মধ্যে এবং তাদের মধ্যে থাকত ঐ মাদুর। তিনি বললেন, যতক্ষন সামর্থ্য হয়, খুশিমনে আমল করতে থাক। তোমরা যতক্ষণ ক্লান্ত না হও ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলাও তোমাদের থেকে অনুগ্রহের ধারা বন্ধ করেন না। আর আল্লাহর নিকট ঐ আমলই সবচেয়ে অধিক পছন্দনীয় যা স্থায়ীভাবে করা হয়। যদিও তা স্বল্প হয়। তারপর তিনি তাঁর এই সালাতের স্থান ত্যাগ করলেন। আল্লাহ তা’আলা তাঁকে তুলে নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি আর সেখানে ফিরে আসেন নি। তিনি যখন কোন কাজ আরম্ভ করতেন, তা সবসময় আদায় করতেন।
এক বস্ত্রে সালাত
আবূ হুরায়রা (রাঃ) যে, এক প্রশ্নকারী রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এক বস্ত্রে সালাত আদায় করা সম্বন্ধে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন : তোমাদের প্রত্যেকের কি দু’খানা কাপড় রয়েছে ? [১] উমর ইব্ন আবূ সালামা (রাঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এক বস্ত্রে তার দু’দিক তাঁর দুই কাধের উপর রেখে উম্মে সালামার ঘরে সালাত আদায় করতে দেখেছেন।
এক জামায় সালাত আদায় করা
সালামা ইব্ন আক্ওয়া (রাঃ) তিনি বলেন : আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি শিকার করতে যাই তখন জামা ছাড়া আমার গায়ে আর কিছু থাকে না। আমি কি তাতেই সালাত আদায় করব ? তিনি বললেন : তার গেরেবান বন্ধ করে নেবে কাঁটা দ্বারা হলেও। [২]
ইযার পরিধান করে সালাত আদায় করা
সাহল ইব্ন সা’দ (রাঃ) তিনি বলেন : কিছু লোক রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে শিশুদের মত ইযারে গিরা দিয়ে সালাত আদায় করতেন। মহিলাদের বলা হতো, পুরুষেরা সোজা হয়ে বসার পূর্বে তোমরা তোমাদের মাথা সিজদা থেকে ওঠাবে না। আমর ইব্ন সালামা (রাঃ) তিনি বলেন : যখন আমার সম্প্রদায় রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট থেকে প্রত্যাবর্তন করল, তখন তারা বলল যে, তিনি বলেছেন : তোমাদের ইমামতি করবে সে-ই, যে তোমাদের মধ্যে কুরআন বেশি পড়তে পারে। তিনি আরো বলেন : তখন তারা আমাকে ডাকল এবং আমাকে রুকূ-সিজদা শিখিয়ে দিল। তারপর আমি তাদের নিয়ে সালাত আদায় করতাম। তখন আমার গায়ে থাকত একখানা কাটা চাদর। তারা আমার পিতাকে বলতো, আপনি কি আমাদের থেকে আপনার ছেলের নিতম্ব ঢাকবেন না ?
কোন পুরুষের এমন কাপড়ে সালাত আদায় করা যার কিছু অংশ রয়েছে তার স্ত্রীর উপর
আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে সালাত আদায় করতেন তখন আমি তাঁর পাশে ঋতুমতি অবস্থায় থাকতাম। তখন আমার গায়ে একখানা চাদর থাকত যার কিয়দংশ থাকত রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর গায়ে।
পুরুষের এমন এক বস্ত্রে সালাত আদায় করা যার কোন অংশ স্কন্ধের উপর না থাকে
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তোমাদের কেউ যেন এমন এক কাপড়ে সালাত আদায় না করে যার কিছু অংশ তার স্কন্ধে না থাকে।
রেশমী বস্ত্রে সালাত
উকবা ইব্ন আমির (রাঃ) তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একটি রেশমী কাবা (আরবী) হাদিয়া দেয়া হয়েছিল। তিনি তা পরিধান করে সালাত আদায় করলেন। তিনি সালাত আদায় করে অতি তাড়াতাড়ি অপছন্দকারীর ন্যায় তা খুলে ফেললেন। তারপর তিনি বললেন : এটা মুত্তকীদের জন্য উপযুক্ত নয়। [১]
নকশা করা কাপড়ে সালাত
আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নকশা করা কাপড়ে সালাত আদায় করলেন। তারপর বললেন : এর নকশা আমাকে অন্যমনষ্ক করে দিয়েছে। এটা আবূ জাহমের নিকট নিয়ে যাও এবং আমার জন্য নকশাবিহীন মোটা চাদর আন।
লাল কাপড়ে সালাত
আবূ জুহায়ফা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লাল ডোরাযুক্ত জুব্বা পরিধান করে বের হলেন এবং একটি তীর পুঁতে তার দিকে সালাত আদায় করলেন যার অপরদিক দিয়ে কুকুর, নারী এবং গাধা চলাচল করছিল।
চাদরে সালাত
খিলাস ইব্ন আমর (রাঃ) তিনি বলেন : আমি আয়েশা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, আমি এবং আবুল কাসেম (রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) একই চাদরে থাকতাম আর তখন আমি অধিক হায়েযগ্রস্তা ছিলাম, যদি আমা হতে কিছু তাঁর গায়ে লাগত তাহলে তিনি তা ধুয়ে ফেলতেন, এর অতিরিক্ত ধুতেন না এবং তাতেই সালাত আদায় করতেন। তারপর আবার আমার সাথে অবস্থান করতেন। যদি আমা হতে কিছু তাঁর শরীরে লাগত, তিনি তা-ই ধুতেন, তাছাড়া আর কোন অংশ ধুতেন না।
চামড়ার মোজা পরিধান করে সালাত আদায় করা
হাম্মাম (রহঃ) তিনি বলেন: আমি জারীর (রাঃ)-কে দেখলাম যে, তিনি পেশাব করলেন, তারপর পানি আনিয়ে উযূ করলেন এবং মোজার উপর মসেহ করলেন, পরে উঠে সালাত আদায় করলেন। এ ব্যাপারে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন : আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এরূপ করতে দেখেছি।
জুতা পরিধান করে সালাত আদায় করা
আবূ সালামা সাঈদ ইব্ন ইয়াযীদ বাসরী (রহঃ) তিনি বলেন : আমি আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম : রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুতা পরিধান করে সালাত আদায় করতেন কি ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আবদুল্লাহ্ ইব্ন সায়িব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন সালাত আদায় করলেন। তিনি তাঁর জুতা তাঁর বাম দিকে রাখলেন।