10. লুক্বতাহ (হারানো বস্তু প্রাপ্তি)

【1】

লুক্বতার সংজ্ঞা

সুওয়াইদ ইবনু গাফালাহ (রাঃ) তিনি বলেন আমি যায়িদ ইবনু সুহান এবং সালমান ইবনু রবী‘আহ এক সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। এ সময় আমি একটি চাবুক পাই। তারা দু’জনেই আমাকে চাবুকটি ফেলে দিতে বললেন। তখন আমি বললাম, না, যদি এর মালিককে পাই (তাহলে তাকে এটি ফেরত দিবো), অন্যথায় আমি নিজে এটা ব্যবহার করব। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি হাজ্জ পালন শেষে মদিনায় গিয়ে (এ বিষয়ে) উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন , আমি একটি থলে পেয়েছিলাম। যার মধ্যে একশো দীনার ছিল। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আসলাম। তিনি বললেনঃ এক বছর পর্যন্ত ঘোষণা দিয়ে যাও। আমি তাই করলাম। আমি (এক বছর পর) পুনরায় তার কাছে আসলাম। তিনি আরো এক বছর ঘোষণা দিতে বললেন। ফলে আমি আরো এক বছর ঘোষনা দিলাম। অতঃপর তার কাছে এসে বললাম, আমি এর মালিকের সন্ধান পাইনি। তিনি বললেনঃ দীনারের সংখ্যা, থলি এবং থলির বাঁধন হিফাযাতে রাখো। যদি এর মালিক আসে (তাকে তা দিয়ে দিবে)। অন্যথায় তুমি এগুলো কাজে লাগাবে। বর্ণনাকারী সালামাহ ইবনু কুহাইল বলেন, আমার মনে নেই যে, সুওয়াইদ কি তিন বছর ঘোষণা দেয়ার কথা বলেছেন নাকি এক বছর। শু‘বাহ এই সানাদে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ অর্থের হাদীস বর্ণিত। তিনি বলেন, “এক বছর পর্যন্ত ঘোষণা দাও”- তিনি এ কথাটি তিনবার বলেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি অবহিত নই যে, (সালামাহ) এক বছর ঘোষণা করার কথা বলেছেন নাকি তিন বছর। সালামাহ ইবনু কুহাইল (রহঃ) সূত্র এ সানাদে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ অর্থের হাদীস বর্ণিত। তিনি ঘোষণা সর্ম্পকে বলেন, দুই অথবা তিন বছর। আর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (দীনারের) পরিমাণ, থলে এবং থলের বাঁধন চিনে রাখো। যদি এর মালিক আসে এবং এর সংখ্যা ও থলে চিনতে পারে তাহলে তাকে তা দিয়ে দিবে। যায়িদ ইবনু খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) একদা এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাস্তায় পড়ে থাকা জিনিস সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ তুমি ঐ জিনিস সর্ম্পকে এক বছর পর্যন্ত ঘোষণা দিতে থাকবে। অতঃপর তুমি এর থলি ও বাঁধন চিনে রাখবে। তারপর সেখান থেকে খরচ করবে। যদি এর মালিক এসে উপস্থিত হয় তবে তাকে তা ফেরত দিবে। লোকটি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! পথহারা বকরী বিধান কি? তিনি বললেন, তা ধরে রাখো। কেননা সেটা হয়তো তোমার অথবা তোমার ভাইয়ের কিংবা বাঘের জন্য। লোকটি আবার বললো, হে আল্লাহর রাসূল! পথহারা উটের বিধান কি? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এতে অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাঁর চিবুক বা চেহারা লালবর্ণ ধারণ করলো। অতঃপর তিনি বললেনঃ এর (উটের) সাথে তোমার কি সর্ম্পক? কারণ এর পা আছে এবং পেটের ভিতর পানিও রয়েছে, যতক্ষণ না এর মালিক আসে। [১৭০৪] সহীহ : বুখারী ও মুসলিম। মালিক (রহঃ) সূত্র পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত। এতে আরো রয়েছে : উটের পেটে পানি সংরক্ষিত আছে। সে পানি পানের স্থানে যেতে পারবে, ঘাস খেতে পারবে। কিন্তু এ হাদীসে হারিয়ে যাওয়া বকরী ধরে রাখার কথা নেই। তিনি লুক্বতাহ সর্ম্পকে বলেন, এ ব্যাপারে এক বছর পর্যন্ত ঘোষণা দিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে মালিক ফিরে এলে তাকে তা ফিরিয়ে দিবে, অন্যথায় তোমার যা ইচ্ছে করবে। এতে ‘ইসতানফিক্ব’ শব্দটি নেই। ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, সাওরী, সুলায়মান ইবনু হিলাল এবং হাম্মাদ ইবনু সালামাহ (রহঃ) রবী‘আহ সূত্রে অনুরূপ বর্ননা করেছেন। কিন্তু (হারানো বকরী) “ ধরে রাখার কথা নেই”। সহীহ : মুসলিম। যায়িদ ইবনু খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাস্তায় পড়ে থাকা বস্তু সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ এক বছর পর্যন্ত ঘোষণা করবে। যদি এর মালিক এসে উপস্থিত হয় তাহলে তাকে তা ফিরিয়ে দিবে। অন্যথায় এর থলি ও বাঁধন চিনে রাখবে। অতঃপর তুমি তা থেকে ভোগ করবে। তবে (পরবর্তীতে) যদি এর মালিক এসে যায় তবে তাকে তা ফিরিয়ে দিবে। [১৭০৬] সহীহ : মুসলিম, এর সানাদে অতিরিক্ত আছে : নাদর, সাঈদ হতে বুসর সূত্রে। এটাই সঠিক। যায়িদ ইবনু খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হলো…অতঃপর রবী‘আহ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। খালিদ বলেন, পড়ে থাকা বস্তু সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এক বছর যাবত এর ঘোষণা করবে। এর মালিক ফিরে আসলে তাকে তা ফেরত দিবে। নতুবা তুমি এর থলি ও বাঁধন চিনে রাখবে এবং তা তোমার মালের সাথে রেখে দিবে। আর এর মালিক ফিরে এলে তাকে তা দিয়ে দিবে। [১৭০৭] ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ ও রবী‘আহ্ কুতাইবাহর সানাদ ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ ও রবী‘আহ্ কুতাইবাহ্র সানাদে এবং তার হাদীসের অর্থে বর্ননা করেন। এত আরো রয়েছে : যদি এর মালিক ফিরে আসে এবং এর থলি ও পরিমাণ সর্ম্পকে সঠিক তথ্য পেশ করে তাহলে তাকে তা দিয়ে দিবে। হাম্মাদ তার সানাদ পরম্পরায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ননা করেছেন। ইমাম আবূ দাউদ বলেন, হাম্মাদ ইবনু সালামাহ, সালামাহ ইবনু কুহাইল, ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ এবং ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘উমারের হাদীসে অতিরিক্ত বর্ননা হলো : যদি এর মালিক ফিরে আসে এবং এর থলি ও বাঁধন চিনতে পারে তবে তাকে তা ফিরিয়ে দিবে। এ বাক্যের মধ্যে “এর থলি ও বাঁধন চিনতে পারে ” কথাটি সংরক্ষিত নয়। উক্ববাহ ইবনু সুওয়াইদ তার পিতা থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ননা করে বলেনঃ “এক বছর ঘোষণা দিতে হবে।” এছাড়াও ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে বর্ণিত হাদীসেও এক বছর ঘোষণা করার কথা আছে। যায়িদ ইবনু খালিদের হাদীস- সহীহ। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমরের হাদীস- হাসান সহীহ। সুওয়াইদের হাদীস- সহীহ। ‘উমার ইবনুল খাত্তাবের হাদীস- সহীহ। ইয়াদ ইবনু হিমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাস্তায় পড়ে থাকা বস্তু পাবে, সে যেন একজন অথবা দুইজন সত্যবাদী লোককে এর সাক্ষী রাখে। বিষয়টি যেন সে গোপন না রাখে এবং আত্মসাৎ না করে। যদি সে এর মালিককে পায় তাহলে তাকে তা ফিরিয়ে দিবে। অন্যথায় মহান আল্লাহর মাল, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করে থাকেন। [১৭০৯] আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে গাছে ঝুলে থাকা ফল সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ কেউ যদি তা নিরূপায় (অভাবী) হয়ে খায় এবং তা লুকিয়ে না নেয় তাহলে তার জন্য দোষণীয় নয়। আর যে ব্যক্তি এর বিপরীত করবে (লুকিয়ে নিবে) তাহলে তার জন্য এর দ্বিগুণ জরিমানা রয়েছে এবং সে শাস্তিও পাবে। আর যে ব্যক্তি খেঁজুর চুরি করে এরূপ অবস্থায় যে, তা গাছ থেকে কেটে শুকানোর জন্য আঙ্গিনায় রাখা হয়েছে, তাহলে চুরিকৃত জিনিসের মূল্য যুদ্ধের একটি ঢালের পরিমান হলে তার হাত কাটা হবে। বর্ণনাকারী পথহারা বকরী ও উটের কথাও উল্লেখ করেছেন যেমন বর্ননা করেছেন অন্যান্য বর্ণনাকারীগণ। তিনি বলেন, তাঁকে লুক্বতাহ সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, জন সাধারণের চলাচলের পথে কিছু পাওয়া গেলে এক বছর যাবত তা ঘোষণা করতে থাকবে। যদি এর মালিক এসে যায় তাহলে তাকে তা দিয়ে দিবে। আর যদি না আসে তবে তা তোমার। আর যে জিনিস অনাবাদী এলাকায় (গুপ্তধনরূপে) পাওয়া যাবে তাতে এক পঞ্চমাংশ (যাকাত) দিবে। [১৭১০] আমর ইবনু শু‘আইব (রহঃ) এই সানাদে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত। এতে রয়েছে : তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হারানো বকরী ধরে রাখতে বলেছেন। আমর ইবনু শু‘আইব (রহঃ) এই সানাদে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত। এতে আরো রয়েছে : পথহারা বকরী তোমার জন্য অথবা তোমার ভাইয়ের জন্য অথবা বাঘের জন্য। অতএব তা ধরে রাখো। বর্ণনাকারী আইযূব, ইয়া‘কুব ইবনু ‘আত্বা, ‘আমর ইবনু শু‘আইব হতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে অনুরূপ বর্ননা করেছেন যে, তুমি তা ধরে রাখো। ইবনু আমরের হাদীস- হাসান। ‘আমর ইবনু শু‘আইব হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত। তিনি পথহারা বকরী সর্ম্পকে বলেন, তুমি তা নিজের হিফাযতে রেখে দাও, এর মালিক ফিরে আসা পর্যন্ত। আবূ সাঈদ আল-খুদরী একদা ‘আলী ইবনু আবূ ত্বালিব (রাঃ) পথে পড়ে থাকা দীনার পেয়ে তা ফাত্বিমাহ (রাঃ)-এর কাছে নিয়ে আসেন। তিনি এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলে জবাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এটা আল্লাহ প্রদত্ত রিযিক্ব। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), ‘আলী এবং ফাত্বিমাহ (রাঃ) সকলেই তা দিয়ে খাবার কিনে এনে খেলেন। এর পরে এক মহিলা এসে দীনার খুঁজতে থাকে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি তার দীনার পরিশোধ করে দাও। আলী (রাঃ) তিনি পথে পতিত একটি দীনার পেয়ে তা দিয়ে আটা কিনলেন। আটার বিক্রেতা তাকে (রাসূলের জামাতা হিসেবে) চিনতে পেরে তাঁকে দীনারটি ফেরত দিলেন। অতঃপর আলী (রাঃ) দীনারটি ভাঙ্গিয়ে দুই ক্বিরাত দিয়ে গোশত কিনলেন। সাহ্‌ল ইবনু সা‘দ (রাঃ) একদা ‘আলী ইবনু আবু ত্বালিব (রাঃ) ফাত্বিমাহ (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে হাসান ও হুসাইন (রাঃ)-কে কান্নারত পেয়ে তাকে কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করেন। তখন ফাত্বিমাহ (রাঃ) বলেন তাঁরা ক্ষুধার জ্বালায় কান্না করছে। ‘আলী (রাঃ) ঘর থেকে বের হলেন এবং বাজারে গিয়ে একটি দীনার পতিত অবস্থায় পেলেন। তিনি দীনারটি ফাত্বিমাহর কাছে নিয়ে এসে বিষয়টি তাকে জানালেন। ফাত্বিমাহ বলেন, আপনি দীনারটি নিয়ে উমুক ইয়াহুদীর কাছে গিয়ে আমাদের জন্য আটা ক্রয় করুন। অতঃপর ‘আলী (রাঃ) ইয়াহুদীর কাছে গিয়ে আটা কিনলেন। ইয়াহুদী বললো আপনি তো ঐ লোকের জামাতা, যিনি নিজেকে “আল্লাহর রাসূল” দাবী করেন। তখন ‘আলী (রাঃ) বলেন, হ্যাঁ। তখন ইয়াহুদী বললো, আপনি দীনারটি ফেরত নিন এবং এই আটাও নিয়ে যান (মূল্য দিতে হবে না)। ‘আলী (রাঃ) আটা নিয়ে ফাত্বিমাহ (রাঃ)-এর কাছে এসে বিষয়টি তাকে জানালেন। ফাত্বিমাহ (রাঃ) বললেন, আপনি উমুক কসাইয়ের কাছে গিয়ে আমাদের জন্য এক দিরহামের গোশত ক্রয় করুন। তিনি সেখানে গিয়ে দীনারটি বন্ধক রেখে এক দিরহাম মূল্যের গোশত কিনে ঘরে ফিরলেন। ফাত্বিমাহ (রাঃ) আটা দিয়ে রুটি বানালেন এবং গোশত রান্না করলেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে খবর দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের কাছে আসলে ফাত্বিমাহ (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনাকে ঘটনাটি খুলে বলছি। আপনি যদি এটা আমাদের জন্য হালাল মনে করেন তাহলে আমরা তা খাবো এবং আমাদের সাথে আপনিও খাবেন। ঘটনা এরূপ। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা বিস্‌মিল্লাহ বলে খাও। তাঁরা যখন খাচ্ছিলেন তখন এক যুবক আল্লাহ ও ইসলামের নামে শপথ উচ্চারণ করে দীনারটি খুঁজছিলো। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ মোতাবেক তাকে ডেকে দীনার সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করা হলো। সে বললো দীনারটি আমার নিকট থেকে বাজারে পড়ে গেছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে ‘আলী! তুমি কসাইয়ের নিকট গিয়ে বলো , রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনাকে দীনারটি আমার কাছে ফেরত দিতে বলেছেন। আর তিনি আপনার দিরহাম দিয়ে দিবেন। অতঃপর কসাই তা ফেরত দিলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটি ঐ যুবককে ফিরিয়ে দিলেন। জাবির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে লাঠি, রশি, চাবুক এবং এ ধরনের পতিত জিনিস ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন। [১৭১৭] আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পথহারা উটের হুকুম হলো : যদি কেউ তা পাওয়ার পর বিষয়টি গোপন করে তাহলে তাকে জরিমানা হিসেবে ঐ উটের সাথে অনুরূপ আরেকটি উট দিতে হবে। আবদুর রহমান ইবনু ‘উসমান আত-তাইমী তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম) হাজীদেরকে পথে পড়ে থাকা বস্তু তুলে নিতে নিষেধ করেছেন। আহমাদ বলেন, ইবনু ওয়াহ্হাব হাজ্জের মৌসুমে পথে পড়ে থাকা বস্তু সম্পর্কে বলেন, তা পতিত অবস্থায় থাকতে দাও যাতে তার মালিক তা পেয়ে যায়। আল-মুনযির ইবনু জারীর (রহঃ) সূত্র তিনি বলেন, একদা আমি জারীরের (রাঃ) সাথে বাওয়াযীজ নামক স্থানে ছিলাম। এ সময় রাখাল গরুর পাল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলো। যাতে অন্য একটি গরুও ছিলো। ফলে জারীর (রাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করেন, এটা কোথা থেকে এলো। রাখাল বললো, আমাদের গরুর পালের মধ্যে এসে ঢুকে পড়েছে। আমি জানি না, গরুটি কার? তখন জারীর (রাঃ) বলেনঃ এটাকে পাল থেকে বের করো। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি : পথভ্রষ্ঠ লোকই পথহারা পশুকে আশ্রয় দিয়ে থাকে। সহীহ মারফু, তার সূত্রে।