19. ফারায়িয (ওয়ারিসী স্বত্ব)
ফারায়িয শিক্ষা করা
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জ্ঞান তিন প্রকার। এগুলো ছাড়া যা আছে তা অতিরিক্ত। (১) মুহকাম আয়াতসমূহ (২) প্রতিষ্ঠিত হাদীস (৩) ন্যায্যভাবে সম্পত্তি বন্টনের জ্ঞান দুর্বলঃ যঈফ আল-জামি’উস সাগীর (৩৮৭১), মিশকাত (২৩৯), ইরওয়া(১৬৬৪), যঈফ সুনান ইবনু মাজাহ (৭/৫৪)।
কালালাহ (পিতৃহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি) সম্পর্কে
জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাকে দেখার জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং আবূ বকর (রাঃ) পায়ে হেঁটে উপস্থিত হলেন। তখন আমি বেহুঁশ থাকায় তাঁর সাথে কথা বলতে পারিনি। তিনি উযু করলেন এবং তাঁর উযুর পানি আমার গায়ে ছিটিয়ে দিলেন। আমি জ্ঞান ফিরে পেয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সম্পত্তি কি করবো? আমার শুধু কয়েকটি বোন আছে। জাবির (রাঃ) বলেন, অতঃপর উত্তরাধিকার সম্পর্কিত আয়াত অবর্তীর্ণ হলোঃ “লোকেরা তোমার কাছে ফাতাওয়াহ্ জিজ্ঞেস করে। বলো, আল্লাহ তোমাদের কালালাহ সম্পর্কের ফাতাওয়াহ্ দিচ্ছেন...” (সূরাহ আন-নিসাঃ ১৭৬)
যার সন্তান নেই কিন্তু বোন আছে
জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। তখন আমার অধীনে আমার সাতটি বোন ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে আসলেন। তিনি আমার মুখমন্ডলে ফুঁ দিলেন। আমি জ্ঞান ফিরে পেয়ে বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার বোনদের জন্য আমার সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ ওসিয়াত করবো কি? তিনি বললেনঃ তাদের প্রতি অনুগ্রহ করো। আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেনঃ তাদেরকে অনুগ্রহ করো। আমাকে ছেড়ে চলে যাবার সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে জাবির! এ রোগে তুমি মারা যাবে বলে মনে হচ্ছে না। মহান আল্লাহ আয়াত অবতীর্ণ করেছেন এবং তোমার বোনদের বিষয়টি সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি তাদের জন্য তোমার সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ নির্ধারণ করেছেন। অধস্তন বর্ণনাকারী বলেন, জাবির (রাঃ) বলতেন, আমার ব্যাপারে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “লোকেরা তোমার কাছে ফাতাওয়াহ্ জিজ্ঞেস করে। বলো, আল্লাহ তোমাদের কালালাহ সম্পর্কের ফাতাওয়াহ্ দিচ্ছেন…” (সূরাহ আন-নিসাঃ ১৭৬)। আল-বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) তিনি বলেন, ‘কালালাহ’ সম্পর্কিত আয়াত সবশেষে অবতীর্ণ হয়ঃ “লোকেরা তোমার কাছে ফাতাওয়াহ্ জিজ্ঞেস করে। বলো, আল্লাহ তোমাদের কালালাহ সম্পর্কের ফাতাওয়াহ্ দিচ্ছেন…” (সূরাহ আন-নিসাঃ ১৭৬)। আল-বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! “লোকেরা তোমাকে কালালাহ সম্পর্কে ফাতাওয়াহ জিজ্ঞেস করে।” কালালাহ কি? তিনি বললেনঃ যে আয়াত গরমকালে অবতীর্ণ হয়েছে তাই তোমার জন্য যথেষ্ট (অর্থাৎ সূরাহ আন-নিসার ১৭৬ নং আয়াত)। আমি আবূ ইসহাক্বকে বলি, ‘কালালাহ’ ঐ ব্যক্তিকে বলা হয়, যে সন্তানহীন অবস্থায় মারা যায়। তিনি বললেন, হাঁ, লোকদের ধারণা এরুপই।
সহোদর ভাই-বোনের মীরাস
হুযাইল ইবনু শুরাহবীল আল-আওদী (রহঃ) তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আবূ মূসা আল-আশ‘আরী (রাঃ) ও সালমান ইবনু রবী‘আহর (রাঃ) নিকট উপস্থিত হয়ে উভয়কে কন্যা, পুত্রের কন্যা ও সহোদর বোনের মীরাস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তারা উভয়ে বললেন, মৃতের কন্যা অর্ধেক পাবে এবং সহোদর বোন অর্ধেক পাবে। তারা পুত্রের কন্যা (নাতনীকে) উত্তরাধিকার করেননি। (তারা বললেন) তুমি ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-কে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারো। হয়তো তিনিও এ ব্যাপারে আমাদের মতই বলবেন। লোকটি তার নিকট এসে প্রশ্ন করলো এবং তাকে তাদের কথাও জানালো। তিনি বললেন, (যদি ঐরুপ অভিমত সমর্থন করি) তবে তো আমি পথভ্রষ্ট হবো এবং হিদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত থাকবো না। আমি এ বিষয়ে সেই ফায়সালাই দিবো যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দিয়েছেন। মেয়ে পাবে অর্ধেক এবং পুত্রের কন্যা (নাতনী) পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ যেন (উভয়টি মিলে) দুই-তৃতীয়াংশ পূর্ণ হয়। আর অবশিষ্ট (এক-তৃতীয়াংশ) অংশ পাবে সহোদর বোন। জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে বেরিয়ে আল-আসওয়াফ নামক স্থানে এক আনসারী মহিলার নিকট উপস্থিত হই। তখন ঐ মহিলা তার দু‘টি মেয়েকে নিয়ে রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এরা সাবিত ইবনু ক্বায়িসের (রাঃ) কন্যা। তিনি আপনার সাথে উহুদ যুদ্ধে যোগদান করে শহীন হন। এদের চাচা এদের সমস্ত সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে এবং এদের জন্য কিছুই রাখেনি। হে আল্লাহর রাসূল! এ বিষয়ে আপনি কি বলেন? আল্লাহর শপথ! এদের সম্পত্তি না থাকলে এদেরকে বিবাহ দেয়া সম্ভব নয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃএদের ফয়সালা আল্লাহই দিবেন। বর্ণনাকারী বলেন, ইতিমধ্যে সূরাহ আন-নিসার আয়াত অবতীর্ণ হলো: “তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদেরকে বিধান দিচ্ছেন….।” (আয়াত ১১-১৪)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: তোমরা ঐ মহিলা ও তার প্রতিপক্ষকে আমার নিকট ডেকে আনো। তিনি মেযে দু’টির চাচাকে বললেনঃসম্পত্তির তিন ভাগের দুই ভাগ এদেরকে দিয়ে দাও, এদের মাকে দাও আট ভাগের এক ভাগ এবং অবশিষ্ট সম্পদ তোমার। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, বর্ণনাকারী বিশর ভুল করেছেন। আসলে মেয়ে দু’টি সা‘দ ইবনুল রবী‘ (রাঃ) এর কন্যা। কারণ সাবিত ইবনু ক্বায়িস (রাঃ) শহীদ হন ইয়ামামার যুদ্ধে। হাসান: কিন্তু এতে সাবিত ইবনু ক্বায়িসের উল্লেখ করাটা ভুল। মাহফূয হলো সা‘দ ইবনু রাবী। যেমন নীচের হাদীসে রয়েছে। জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) সা‘দ ইবনুর রবী‘ (রাঃ) এর স্ত্রী বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সা‘দ (রাঃ) দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন এবং দু‘টি কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। অতঃপর হাদীসের বাকী অংশ উপরের হাদীসের অনুরুপ। আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, এ হাদীসটি অধিক সঠিক। আল-আসওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) আল্লাহর নাবীর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জীবদ্দশায় মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) ইয়ামানে অবস্থানকালে এক বোন ও এক কন্যার প্রত্যেককে মৃতের সম্পত্তির অর্ধেক অর্ধেক প্রদান করেছেন।
দাদীর অংশ
ক্বাবীসহ ইবনু যুয়াইব (রাঃ) তিনি বলেন, একদা জনৈক মৃতের নানী আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর নিকট এসে তার মীরাস (প্রাপ্য) চাইলে তিনি বলেন, আল্লাহর কিতাবে তোমার কোন অংশ উল্লেখ নাই। আমার জানামতে আল্লাহর নাবীর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুন্নাতেও কিছু উল্লেখ নাই। সুতরাং এখন তুমি চলে যাও, এ বিষয়ে আমি লোকদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখি। তিনি লোকদেরকে জিজ্ঞেস করলে আল মুগীরাহ ইবনু শু‘বাহ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি তাকে ছয় ভাগের-এক ভাগ প্রদান করেছেন। তিনি বললেন, ঐ সময়ে তোমার সাথে অন্য কেউ ছিল কি? আল-মুগীরাহ (রাঃ) বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) ছিলেন। অতঃপর তিনিও আল-মুগীরাহ ইবনু শু‘বাহ্র (রাঃ) অনুরুপ বললেন। আবূ বকর (রাঃ) তাকে ছয় ভাগের এক ভাগ প্রদানের নির্দেশ দিলেন। অতঃপর ‘উমার ইবনুল খাত্তাবের (রাঃ) খিলাফতের সময় জনৈক দাদী এসে তার মীরাস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, তোমার উত্তরাধিকার সম্পর্কে আল্লাহর কিতাবে কিছু উল্লেখ নাই। প্রথমে প্রদত্ত নির্দেশ নানীর ব্যাপারে ছিল। আর আমার নিজের পক্ষ হতে মীরাসের বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা সম্ভব নয়। সুতরাং তুমিও এক-ষষ্ঠাংশের বেশি পাবে না। যদি তোমরা দাদী-নানী উভয়ে জীবিত থাকো তাহলে তা ঐ এক-ষষ্ঠাংশ তোমাদের উভয়ের মধ্যে (অর্ধেক করে) ভাগ করা হবে। আর যদি উভয়ের মধ্যে কোন একজন জীবিত থাকলে সে তা একাই পাবে। দুর্বল: যঈফ সুনান আত-তিরমিযী (৩৭০/২১৯৭), ইরওয়া (১৬৮০), যঈফ সুনান ইবনু মাজাহ (৫৯৫/২৭২৪), মিশকাত (৩০৬১)। ইবনু বুরাইদাহ (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাদী ও নানীর জন্য এক-ষষ্ঠাংশ নির্ধারণ করেছেন; যদি মৃতের মা জীবিত না থাকে। দুর্বল: মিশকাত (৩০৪৯)।
মৃতের পরিত্যক্ত সম্পদে দাদার অংশ
ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) একদা এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলো, আমার পৌত্র মারা গেছে। এখন আমি কি তার মীরাস পাবো? তিনি বললেনঃতোমার জন্য এক-ষষ্ঠাংশ। সে চলে যাওয়ার সময় তাকে ডেকে বললেনঃতুমি আরও এক-ষষ্ঠাংশ পাবে। অতঃপর সে যখন আবার চলে যাচ্ছিল তাকে ডেকে বললেনঃতুমি অতিরিক্ত ষষ্ঠাংশ উপহার হিসাবে পেয়েছো। ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, এটা সুস্পষ্ট জানা নেই কখন সে এক-ষষ্ঠাংশ পায় (আর কখন এক-তৃতীয়াংশ)। ক্বাতাদাহ বলেন, দাদার সর্বনিম্ন প্রাপ্ত অংশ হচ্ছে এক-ষষ্ঠাংশ। দুর্বল: যঈফ সুনান আত-তিরমিযী (৩৬৯/২১৬৯), মিশকাত (৩০৬০)। উমার (রাঃ) একদা তিনি উপস্থিত লোকদের জিজ্ঞেস করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাদার মীরাস কতটুকু করেছেন তা তোমাদের মধ্যে কার জানা আছে? মা‘ক্বিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) বললেন, আমি অবহিত আছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জন্য এক-ষষ্ঠাংশ নির্ধারণ করেছেন। তিনি বলেন, কোন ওয়ারিসের সাথে? মা‘ক্বিল (রাঃ) বললেন, তা আমি জানি না। তিনি (‘উমার) বললেন, তা না জানলে তোমার কথায় কোন লাভ নেই।
আসাবাহর মীরাস সম্পর্কে
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: (মৃতের) সম্পদ আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী আহলে ফারায়িযের মধ্যে বন্টন করা হবে। এদেরকে বন্টনের পর যা অবশিষ্ট থাকবে তা মৃতের নিকটাত্নীয় পুরুষ ব্যক্তি পাবে।
নিকটাত্নীয়ের মীরাস সম্পর্কে
আল-মিক্বদাম (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আমি ঐ ব্যক্তির যিম্মাদার যে সন্তান ও ঋণ রেখে মারা যায়। তিনি কখনো বলেছেন: “আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ‘তার যিম্মাদার’। কেউ ধন-সম্পদ রেখে গেলে তা তার ওয়ারিসদের প্রাপ্য। যার ওয়ারিস নেই আমি তার ওয়ারিস। আমি তার রক্তপণ আদায় করবো। যার কোন ওয়ারিস নেই, মামা তার ওয়ারিস, সে রক্তপণ আদায় করবে এবং তার ওয়ারিস হবে। আল-মিক্বদাম আল-কিনদী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আমি প্রত্যেক মুমিনের জন্য তার নিজের চেয়েও অধিক নিকটবর্তী। যে ব্যক্তি ঋণ বা সন্তান রেখে মারা যাবে তা আমার দায়িত্বে থাকবে। কেউ সম্পদ রেখে যাবে তা তার উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য। যার অভিভাবক নাই আমি তার যিম্মাদার। আমি হবো তার সম্পদের উত্তরাধিকারী এবং তার বন্দী মুক্ত করবো। যার ওয়ারিস নেই, মামা তার ওয়ারিস হবে। সে তার সম্পদের অধিকারী হবে এবং তার বন্দী মুক্ত করবে। আবূ দাঊদ বলেন ‘যাই‘আ’ শব্দের অর্থ সন্তান। আল-মিক্বদাম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি: যার কোন ওয়ারিস নেই আমি তার ওয়ারিস হবো। আমি তার বন্দী মুক্ত করবো এবং তার সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবো। যার কোন ওয়ারিস নাই, মামা তার ওয়ারিস। সে তার বন্দী মুক্ত করবে এবং তার সম্পদের উত্তরাধিকারী হবে। আয়িশাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর একটি মুক্তদাস কিছু জিনিস রেখে মারা গেলো। তার কোন সন্তান বা আত্নীয় না থাকায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেলেন: তার সম্পদ তার গ্রামের কোন লোককে প্রদান করো। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃএখানে তার এলাকার কেউ আছে কি? সাহাবীগণ বললেন, হাঁ। তিনি বললেনঃতাকে এর পরিত্যক্ত বস্তু প্রদান করো। বুরাইদাহ (রাঃ) তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললো, আয্দ গোত্রের এক ব্যক্তির কিছু সম্পদ আমার কাছে আছে। আমি ঐ বংশের এমন কোন লোক পাইনি যাকে তা হস্তান্তর করতে পারি। তিনি বললেনঃদেখো কোন আয্দীকে এক বছর পর্যন্ত খুঁজে পাও কিনা। পরে লোকটি এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এই মাল হস্তান্তর করার মত কোন লোক আমি আয্দ গোত্রে পাইনি। তখন তিনি বললেনঃতুমি খুযা‘আ গোত্রের যে ব্যক্তির সাথে প্রথম সাক্ষাত পাবে তাকে এই মাল দিবে। সে যখন চলে যাচ্ছিল তিনি বললেনঃলোকটিকে ডেকে আনো। সে তাঁর কাছে ফিরে আসলে তিনি বললেনঃখুজা‘আ গোত্রের কোন বৃদ্ধ লোক খুঁজে তাকে এই মাল হস্তান্তর করো। বুরাইদাহ (রাঃ) তিনি বলেন, খুজা‘আ গোত্রের এক লোক মারা গেলে তার পরিত্যক্ত জিনিসপত্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আনা হয়। তখন তিনি বলেন: তার কোন ওয়ারিস বা আত্নীয় আছে কিনা খোঁজ করো। কিন্তু তারা কোন ওয়ারিস বা আত্নীয় খুঁজে পেলো না। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এই মাল খুজা‘আ গোত্রের বৃদ্ধ ব্যক্তিকে দিবে। অন্য বর্ণনায় আছে, খুজা‘আর কোন বৃদ্ধ লোককে খোঁজ করো। দুর্বলঃ মিশকাত (৩০৫৬)। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) একটি লোক মারা যায় এবং তার একজন মু্ক্তদাস ছাড়া অন্য কোন উত্তরাধিকারী ছিলো না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তার কেউ আছে কি? লোকেরা বললো, তার মুক্তদাসটি ছাড়া আর কেউ নেই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মাল তাকে দিলেন। দুর্বল: মিশকাত (৩০৬৫)।
লি‘আনকারিণীর সন্তানের মীরাস সম্পর্কে
ওয়াসিলাহ ইবনুল আসকা‘ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, নারীরা তিন ব্যক্তির মীরাস পাবে: (১) তার মুক্তদাসের (২) তার কুড়িয়ে পাওয়া শিশুর মীরাস এবং (৩) যে সন্তান সম্পর্কে সে লি‘আন করেছে। দুর্বল: ইরওয়া (১৫৭৬), মিশকাত (৩০৫৩)। মাকহুল (রহঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ব্যভিচারের অপরাধে অভিযুক্ত নারীর সন্তানের উত্তরাধিকার তার মাকে করেছেন এবং তার (মায়ের) মৃত্যুর পর তার পরবর্তীগণ এর ওয়ারিস হবে। 'আমর ইবনু শু'আইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতার ও তার দাদার সূত্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
কোন মুসলিম কি কাফিরের ওয়ারিস হবে
উসামাহ ইবনু যায়িদ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মুসলিম ব্যক্তি কাফিরের এবং কাফির ব্যক্তি মুসলিমের উত্তরাধিকারী হবে না। উসামাহ ইবনু যায়িদ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে হাজ্জে যাওয়ার পথে জিজ্ঞেস করি, হে আল্লাহর রাসূল! আগামীকাল সকালে কোথায় নামবেন? তিনি বললেন, আক্বীল কি আমাদের জন্য কোনো মনযিল অবশিষ্ট রেখেছে? পুনরায় তিনি বললেন, আমরা বনী কিনানাহর উপত্যকায় অবতরণ করবো; যেখানে বসে কুরাইশরা কুফরীর উপর অটল থাকার শপথ করেছিল- অর্থাৎ আল-মুহাস্সাব নামক জায়গায়। এখানেই বনী কিনানাহর লোকজন কুরাইশদেরকে বনী হাশিম গোত্রের বিরূদ্ধে ওয়াদাবদ্ধ করেছিল যে, তারা হাশিম গোত্রের সাথে কোনরূপ বৈবাহিক সম্পর্ক গড়বে না, তাদের সাথে ব্যবসা করবে না এবং তাদেরকে কোনরূপ সহযোগিতা করবে না। 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আমর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দুটি ভিন্ন ধর্মের লোক পরস্পরের ওয়ারিস হয় না। 'আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদাহ (রহঃ) একবার দুই সহোদর ভাই তাদের উত্তরাধিকারিত্ব নিয়ে ইয়াহইয়া ইবনু ইয়া'মুরের সম্মুখে ঝগড়ায় লিপ্ত হলো। তাদের পিতা ইয়াহুদী অবস্থায় মারা যায়। তাদের একজন ছিল মুসলিম, অপরজন ইয়াহুদী। অতঃপর তিনি (মু'আয) মুসলিম ব্যক্তিকেও উত্তরাধিকারী করলেন। তিনি বললেন, আবুল আসওয়াদ আমাকে জানান যে, এক ব্যক্তি তাকে বলেছেন, মু'আয (রাঃ) বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, ইসলাম বৃদ্ধি করে, কমায় না। তারপর মুসলিম ব্যক্তিকে উত্তরাধিকারী করেন। দুর্বলঃ যঈফ আল-জামি'উস সাগীর (২২৮২) আবুল আসওয়াদ আদ-দীলী (রহঃ) এক ইয়াহুদীর পরিত্যক্ত সম্পদে ওয়ারিস হওয়ার বিষয়ে তার মুসলিম উত্তরাধিকারী মু'আযের (রাঃ) নিকট আসে... এরপর উপরের হাদীসের অনুরূপ মারফুভাবে।
মৃতের মীরাস বন্টনের পূর্বে কোনো ওয়ারিস মুসলিম হলে
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জাহিলী যুগে যে মীরাস বণ্টিত হয়েছে তা যার জন্য বণ্টিত হয়েছে তারই থাকবে। আর যে সম্পদ ইসলামী যুগে বণ্টন হবে তা ইসলামী নীতি অনুসারে বণ্টিত হবে।
ওয়ালাআ (আযাদকৃত গোলামের পরিত্যক্ত মাল)
ইবনু ‘উমার (রাঃ) উম্মুল মু'মিনীন ‘আয়িশাহ (রাঃ) মুক্ত করার জন্য একটি দাসী কেনার ইচ্ছা করলেন। বাঁদীর মালিক বললো, আমরা তাকে আপনার নিকট এ শর্তে বিক্রি করতে পারি যে, তার ‘ওয়ালাআ’ (মৃত্যুর পর পরিত্যক্ত সম্পদের মালিক) আমরা হবো। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উত্থাপন করলে তিনি বলেন, সে তোমাকে এর থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না। কারণ দাসীর সম্পদের মালিক তার মুক্তকারী হবে। আয়িশাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুক্তদাসের পরিত্যক্ত সম্পদ ঐ ব্যক্তি পাবে যে মূল্য পরিশোধ করেছে এবং সদয় ব্যবহার করেছে। আমর ইবনু শু‘আইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্র রিয়াব ইবনু হুযাইফাহ জনৈক মহিলাকে বিবাহ করে এবং তার গর্ভে তিনটি সন্তান জন্ম হয়। অতঃপর তাদের মা মারা গেলে তারা তার পরিত্যক্ত বাড়ি ও আযাদকৃত দাসের সম্পদের উত্তরাধিকারী হয়। ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) ছিলেন তাদের আত্মীয়। পরবর্তী সময় তিনি তাদেরকে সিরিয়ায় প্রেরণ করেন। তারা সেখানে মৃত্যু বরণ করে। পরে ‘আমর ইবনুল ‘আস সেখানে যান। তখন ঐ মহিলার মুক্তদাস কিছু মালপত্র রেখে মারা যায়। মহিলার ভাইয়েরা ‘আমরের বিরুদ্ধে ‘উমার ইবনুল খাত্তাবের (রাঃ) নিকট অভিযোগ করলে ‘উমার (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পিতা বা পুত্র যে ওয়ালাআ সঞ্চয় করলো সেগুলো তার আসাবা পাবে। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) বলেন, ‘উমার (রাঃ) ‘আমরকে একটি রায় লিখেন। এতে ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ, যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) ও অন্য এক লোক সাক্ষী হন। ‘আবদুল মালিক যখন (৬৮৫ খৃ.) খলীফা হলেন, তখন হিশাম ইবনু ইসমাঈল বা ইসমাঈল ইবনু হিশামের নিকট অনুরূপ একটি অভিযোগ করা হয়। তিনি বিষয়টি ‘আবদুল মালিকের নিকট পাঠিয়ে দেন। ‘আবদুল মালিক বলেন, আমার মনে হয় এর ফায়সালা ইতিপূর্বে আমার নজরে পড়েছে। তিনি বলেন, তিনি ‘উমার ইবনুল খাত্তাবের (রাঃ) রায় অনুসারেই রায় দিলেন। আর সেই ওয়ালাআর সম্পত্তি এখনো আমাদের অধিকারে রয়েছে।
কেউ কারো হাতে ইসলাম গ্রহণ করলে
তামীম আদ-দারী (রাঃ) তিনি বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (বর্ণনাকারী) ইয়াযীদের বর্ণনায় রয়েছে, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), যে ব্যাক্তি কোন মুসলিমের হাতে ইসলাম কবুল করেছে তার ব্যাপারে কি বিধান? তিনি বললেনঃ ঐ মুসলিম ব্যাক্তি তার জীবন ও মরণে ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
ওয়ালাআ বিক্রয় করা সম্পর্কে
ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওয়ালাআ বিক্রয় এবং হেবা করতে নিষেধ করেছেন।
সদ্য প্রসূত শিশু কান্নার পর মারা গেলে সে সম্পর্কে
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ শিশু ভূমিষ্ঠ হয়ে কান্নার শব্দ করে মারা গেলে তাকে ওয়ারিস গণ্য করবে।
আত্মীয়তার মীরাস মৌখিক স্বীকৃতির মীরাসকে রহিত করে
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, (আল্লাহ্র বাণী) : “যাদের সাথে তোমরা ওয়াদাবদ্ধ তাদের প্রাপ্য তাদেরকে প্রদান করো” (সূরাহ আন-নিসা : ৩৩)। পূর্ব যুগের লোকেরা পারস্পরিক চুক্তি বা শপথের মাধ্যমে একে অপরের ওয়ারিস হতো, অথচ তাদের মধ্যে বংশীয় বা আত্মীয়তার কোন সম্পর্ক থাকতো না। এ সুযোগ রহিত হয় সূরাহ আল-আনফালের এ আয়াত দ্বারা : “আল্লাহ্র বিধানে রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়রা একে অন্যের চেয়ে অধিক হকদার”। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে মহান আল্লাহর এ বাণী সম্পর্কে বর্ণিত : যাদের সাথে তোমরা ওয়াদাবদ্ধ তাদের প্রাপ্য তাদেরকে প্রদান করো” (সূরাহ আন-নিসা : ৩৩)। তিনি বলেন, মুহাজিরগণ হিজরাত করে মদিনায় আসার পর, আত্মীয়তার বন্ধন ছাড়াই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক তাদের মাঝে প্রতিষ্ঠিত ভ্রাতৃ-বন্ধনের ভিত্তিতে আনসারদের মীরাস পান। যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় : “পিতা-মাতা ও আত্মীয়রা যে সম্পদ রেখে যাবে, আমরা এর প্রত্যেকটির হকদার নির্দিষ্ট করে দিয়েছি... (সূরাহ আন-নিসা : ৩৩), তিনি বলেন, “যাদের সাথে তোমরা ওয়াদাবদ্ধ তাদের প্রাপ্য তাদেরকে প্রদান করো” উপরের আয়াত দ্বারা রহিত। কিন্তু সাহায্য, উপদেশ, ওসিয়াত ইত্যাদি করার নির্দেশ বহাল আছে, কিন্তু ওয়ারিস হওয়ার প্রথা বাতিল। দাঊদ ইবনুল হুসাইন (রহঃ) তিনি বলেন, আমি রবী’র কন্যা এবং সা’দের মায়ের নিকট কুরআন পড়তাম। সা’দের মা ছিলেন ইয়াতীম। তিনি আবূ বাক্রের (রাঃ) তত্ত্বাবধানে লালিত হন। যখন আমি এ আয়াত পড়ি : “যাদের সাথে তোমরা ওয়াদাবদ্ধ তাদের প্রাপ্য তাদেরকে প্রদান করো”। তিনি বললেন, “যাদের সাথে তোমাদের চুক্তি রয়েছে...” এ আয়াত পাঠ করো না। কেননা এ আয়াত আবূ বকর (রাঃ) ও তার ছেলে ‘আবদুর রহমানের প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে। সে ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করায় আবূ বকর (রাঃ) শপথ করে বলেন, সে তার উত্তরাধিকারী হবে না। অতঃপর সে ইসলাম গ্রহণ করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুর রহমানকে মীরাসের অংশ দেয়ার জন্য আবূ বকর (রাঃ)-কে নির্দেশ দেন। বর্ণনাকারী ‘আবদুল ‘আযীয বর্ণনা করেন, তরবারি তাকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করার পূর্বে সে ইসলাম গ্রহণ করেনি। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) (আল্লাহ্র বাণী) : “যারা ঈমান এনেছে, হিজরাত করেছে এবং নিজেদের জান-মাল দিয়ে আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে, এবং যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে এবং সাহায্য করেছে- তারা পরস্পরের বন্ধু। আর যারা ঈমান এনেছে কিন্তু হিজরাত করেনি, তাদের সাথে তোমাদের বন্ধুত্ব ও পৃষ্ঠপোষকতার সম্পর্ক নেই-যতক্ষণ তারা হিজরাত না করে” (সূরাহ আল-আনফাল : ৭২)। বেদুঈনরা মুহাজিরদের ওয়ারিস হতো না এবং মুহাজিরগণও তাদের ওয়ারিস হতেন না। উপরের আয়াত রহিত হয় এ আয়াত দ্বারা : “আল্লাহ্র কিতাবে রক্তের আত্মীয়গণ পরস্পরের মাঝে অধিক হকদার। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সবকিছু অবহিত” (সূরাহ আল-আনফাল : ৭৬)।
শপথ বা চুক্তি সম্পর্কে
জুবাইর ইবনু মুত্ব’ইম (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ (অন্যায় কাজে) চুক্তিবদ্ধ হওয়া ইসলামে জায়িয নয়। ইসলাম জাহিলী যুগের এ জাতীয় চুক্তির উপর কঠোরতা আরোপ করেছে। আসিম আল-আহওয়াল (রহঃ) তিনি বলেন, আমি আনাস্ ইবনু মালিক (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের ঘরে বসে মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক গড়েন। তাকে বলা হলো, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বলেননি : ইসলামে কোন ওয়াদা নাই? উত্তরে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বাড়িতে আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব গড়েছেন। আনাস এ কথাটা দুই-তিনবার বললেন।
স্বামীর রক্তপণে স্ত্রীর মীরাস
সাইদ (রহঃ) তিনি বলেন, ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলতেন, রক্তপণে বংশের লোকদের অংশ আছে। স্ত্রী তার স্বামীর দিয়াতের ওয়ারিস হয় না। দাহ্হাক ইবনু সুফিয়ান (রাঃ) তাকে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে লিখিত নির্দেশ পাঠান : আশ’আম আদ-দিবাবীর স্ত্রীকে তার রক্তপণের ওয়ারিস বানাও। তখন ‘উমার (রাঃ) নিজস্ব মত পরিবর্তন করেন। অন্য বর্ণনায় আছে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বেদুঈনদের প্রশাসক নিযুক্ত করেন।