16. শিকার
কুকুরের কোন্ ধরণের শিকার খাওয়ার যোগ্য এবং কোন্ ধরণের শিকার খাওয়ার অযোগ্য
আইযুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) তিনি আবূ সা’লাবা আল-খুশানী (রাঃ) -কে বলতে শুনেছেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমরা শিকারকারী সম্প্রদায়। তিনি বললেনঃ তুমি যদি আল্লাহ্ তা‘আলার নামে তোমার কুকুর ছেড়ে থাক এবং তোমার জন্য সে শিকার ধরে তাহলে তুমি তা খেতে পার। আমি বললাম, সে যদি তা মেরে ফেলে? তিনি বললেনঃ মেরে ফেললেও। আমি বললাম, আমরা তীর নিক্ষেপকারী সম্প্রদায়। তিনি বললেনঃ তোমার তীর তোমাকে যা ফিরত দেয় তা খাও। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আমরা ভ্রমণে বের হয়ে থাকি; ইয়াহূদী, নাসারা ও মাজূসীদের এলাকা দিয়ে চলাচল করে থাকি। আমরা তাদের পাত্র ব্যতীত অন্য কোন পাত্র আমাদের ব্যবহারের জন্য জোগাড় করতে পারি না। তিনি বললেনঃ এদের পাত্র ব্যতীত তোমরা অন্য পাত্র জোগাড় করতে না পারলে এগুলোকে পানি দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে নাও, তারপর এতে পানাহার কর। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২০৭), নাসা-ঈ আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমরা আমাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর শিকারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেই। তিনি বললেনঃ তোমার জন্য এরা যা ধরে রাখে তা খাও। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! এরা যদি শিকার হত্যা করে ফেলে? তিনি বললেনঃ এরা হত্যা করলেও খেতে পার যদি এর সাথে অন্য কুকুর অংশ গ্রহণ না করে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমরা বর্শা (বা লাঠি) ছুড়ে থাকি। তিনি বলেনঃ তার তীক্ষ্ণ অগ্রভাগ শিকারকে জখম করলে তা খাও, কিন্তু তার পার্শ্বদেশের আঘাতে শিকার হলে তা খেও না। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২০৮, ৩২১২, ৩২১৪, ৩২১৫), নাসা-ঈ
মাজূসীদের (অগ্নি উপাসকদের) কুকুর দ্বারা শিকার
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমাদেরকে মাজূসীদের (অগ্নি উপাসকদের) কুকুর দ্বারা শিকার খেতে বারণ করা হয়েছে। যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩২০৯)
বাজ পাখি(বা শিকারী পাখির) শিকার খাওয়া
আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে বাজ পাখির শিকার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ সে যা তোমার জন্য ধরে রাখে তা খাও। মুনকার; সহীহ আবূ দাঊদ (২৫৪১)
শিকারের প্রতি কোন লোক তীর ছোড়ার পর তা অদৃশ্য হয়ে গেলে
আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমি শিকারের দিকে তীর ছুড়ে থাকি। পরবর্তী দিন সেটাতে আমার তীর বিদ্ধ অবস্থায় দেখি। তিনি বললেনঃ তুমি যদি জানতে পার যে, তোমার তীরই এটাকে মেরেছে এবং এতে কোন হিংস্র পশুর চিহ্ন না দেখ তা খাও। সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৫৩৯), নাসা-ঈ অনুরূপ
কোন লোক শিকারকে লক্ষ্য করে তীর ছোড়ার পর তা পানির মধ্যে মৃত পেলে
আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে শিকারের বিষয়ে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, তুমি তোমার তীর ছোঁড়ার সময় আল্লাহ্ তা‘আলার নাম স্মরণ কর। তুমি যদি শিকারকে মৃত পাও তবুও তা খেতে পার। কিন্তু তুমি তা পানিতে পড়ে থাকা অবস্থায় পেলে তা খাওয়া থেকে বিরত থাক। কেননা তোমার জানা নেই, এটাকে পানি হত্যা করেছে না তোমার তীর হত্যা করেছে। সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৫৪০), নাসা-ঈ
কুকুর তার শিকার হতে কিছু খেলে
আদী ইবনু হাতীম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের শিকারের বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, তুমি তোমার শিকারী কুকুরকে শিকারের উদ্দেশ্যে ছাড়ার সময় আল্লাহ্ তা‘আলার নাম স্মরণ করে থাকলে সে তোমার জন্য যা ধরে রাখে তা খাও। যদি সে শিকারের কিছু অংশ খেয়ে ফেলে তবে তা খেও না। কেননা সে তা নিজের জন্য শিকার করেছে। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! যদি আমাদের কুকুরের সাথে অন্য কুকুর এসে মিলিত হয়ে যায়? তিনি বললেনঃ তুমি তো আল্লাহ্র নাম নিয়েছ তোমার কুকুরের ক্ষেত্রে, অন্য কারো কুকুরের বেলায় তো নাওনি। সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৫৩৮, ২৫৪৩), ইরওয়া (২৫৪৬), নাসা-ঈ
বর্শা দিয়ে শিকার করা
আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, বর্শা দিযে শিকার করা প্রসঙ্গে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ এর তীক্ষ্ণ অগ্রভাগ দিয়ে যেটা শিকার করেছ তা খাও। আর যেটা এর পার্শ্বদেশ দ্বারা শিকার করেছ তা মৃত পশুর সমতুল্য (নিষিদ্ধ)। সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (২৫৪৩), নাসা-ঈ
চকমকি (সাদা) পাথর দিয়ে যবেহ করা
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) তার বংশের একজন লোক একটি অথবা দু’টি খরগোশ শিকার করার পর একটি সাদা পাথর দ্বারা তা যবেহ করে। সে শিকার দু’টি ঝুলানো অবস্থায় রেখে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে দেখা করে। সে এ বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করে। তিনি তাকে এটা খাওয়ার নির্দেশ দেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৭৫)
কোন পশুকে চাঁদমারির লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে তীর ছুড়ে মারা হলে তা খাওয়া নিষেধ
আবুদ দারদা (রাঃ) তিনি বলেন, ‘মুজাস্সামা’ খাওয়াকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। যে পশুকে চাঁদমারির নিশানা বানিয়ে তীর ছুড়ে হত্যা করা হয় তাকে ‘মুজাস্সামা’ বলে। সহীহ, সহীহা (২৩৯১) উম্মু হাবীবা বিনতু ইরবায ইবনু সারিয়া (রহঃ) হতে তার বাবা খাইবারের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিম্নের পশুগুলো খাওয়া অবৈধ ঘোষণা করেছেনঃ শিকারী দাঁতওয়ালা হিংস্র পশু, নখর ও থাবাযুক্ত হিংস্র পাখি, গৃহপালিত গাধা, মুজাস্সামা এবং খালীসা। তিনি (সদ্য হস্তগত) গর্ভবতী বাঁদীর সাথে সন্তান প্রসব না করা পর্যন্ত সহবাস করতেও বারণ করেছেন। সহীহ, খালীসা ব্যতীত অন্যগুলি পৃথক পৃথকভাবে সহীহ্, সহীহা (৪/২৩৮-২৩৯), (১৬৭৩), (২৩৫৮), (২৩৯১), ইরওয়া (২৪৮৮), সহীহ্ আবূ দাঊদ (১৮৮৩, ২৫০৭) ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন জীবন্ত পশুকে তীর ছুড়ে মারার জন্য লক্ষ্যবস্তু (চাঁদমারি) বানাতে নিষেধ করেছেন। সহীহ্ ইবনু মা-জাহ (৩১৮৭), মুসলিম
জানীন (পশুর গর্ভাস্থ ভ্রুণ) যবেহ করা বিষয়ে
আবূ সাঈদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জানীন (গর্ভস্থ ভ্রুণ) -এর মাকে যবেহ করাই এ জন্য যথেষ্ট। সহীহ্, ইব্নু মা-জাহ (৩১৯৯)
থাবা ও শিকারী দাঁতওয়ালা হিংস্র পশু ও নখরযুক্ত শিকারী পাখি খাওয়া নিষেধ
আবূ সা’লাবা আল-খুশানী (রাঃ) তিনি বলেন, থাবা ও শিকারী দাঁতওয়ালা হিংস্র পশু (খেতে) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন। সহীহ্, ইব্নু মা-জাহ (৩২৩২), নাসা-ঈ জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, খাইবারের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হারাম ঘোষণা করেছেন গৃহপালিত গাধা, খচ্চরের গোশত, প্রত্যেক শিকারী দাঁতওয়ালা হিংস্র পশু এবং পাঞ্জাধারী শিকারী পাখিকে (খাওয়াকে)। সহীহ্, ইরওয়া (৮/১৩৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক শিকারী দাঁতওয়ালা হিংস্র পশু (খাওয়া) অবৈধ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। হাসান সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৩৩), মুসলিম
জীবিত পশুর শরীরের কোন অংশ কেটে আলাদা হয়ে গেলে তা মৃত (এবং খাওয়া হারাম)
আবূ ওয়াকিদ আল-লাইসী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনায় আসলেন। এখানকার জনগণ জীবিত উটের কুঁজ ও মেষের লেজের গোড়ার গোশত পিন্ডের অংশ কেটে খেত। তিনি বলেন, জীবিত পশুর শরীরের কোন অংশ কেটে আলাদা করা হলে তা মৃত হিসেবেই গণ্য। স’হীহ, ইবনু মা-জাহ (৩২১৬)
কণ্ঠনালী ও বুকের উপরিভাগে যবেহ করা
আবুল উশারা (রাহঃ) হতে তার পিতা তিনি (পিতা) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! যবেহ কি শুধু কণ্ঠনালী ও বক্ষস্থলের উপরিভাগেই (কণ্ঠনালীর শুরু এবং শেষ অংশের মধ্যবর্তী স্থানে) করতে হবে? তিনি বললেনঃ তুমি যদি তার উরুতে আঘাত করতে পার তবে তোমার জন্য যথেষ্ট হবে। যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩১৮৪), আহমাদ ইবনু মানী (রাহঃ) বলেন, ইয়াযীদ ইবনু হারূন বলেছেন, উরুতে যবেহ করা শুধুমাত্র জরুরী অবস্থায় প্রযোজ্য। এ অনুচ্ছেদে রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
গিরগিটি (টিকটিকি) জাতীয় প্রাণী মেরে ফেলা বিষয়ে
আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রথম আঘাতেই যে লোক একটি গিরগিটি (টিকটিকি) মারতে পারে তার জন্য এই এই পরিমাণ সাওয়াব। সে এটাকে দ্বিতীয় আঘাতে মারতে পারলে তার জন্য এই এই পরিমাণ সাওয়াব। সে তা তৃতীয় আঘাতে মারতে পারলে তার জন্য এত এত সাওয়াব। সহীহ, মুসলিম (৭/৪২)
সাপ মারা
সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে তার বাবা তিনি (আবদুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাপ মার। পিঠে দু’টি দাগ বিশিষ্ট সাপ ও লেজকাটা সাপকে তোমরা মেরে ফেল। কেননা এ দু’টি সাপ দৃষ্টিশক্তি ধ্বংস করে এবং (মহিলাদের) গর্ভপাত ঘটায়। সহীহ্, নাসা-ঈ আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের ঘরে বসবাসকারী অন্য প্রাণীও আছে। এদেরকে তিনবার সাবধান কর। এরপরও তা হতে তোমাদের জন্য (ক্ষতিকর কিছু) প্রকাশ পেলে তবে এটাকে মেরে ফেল। সহীহ, যঈফা (৩১৬৩ নং হাদীসের অধীনে), মুসলিম আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা (রাহঃ) তিনি বলেন, আবূ লাইলা বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঘরের মধ্যে সাপ দেখা গেলে তোমরা বল, “আমরা নূহ (আঃ)-এর দোহাই ও সুলাইমান ইবনু দাঊদ (আঃ)-এর দোহাই দিয়ে বলছি, তুমি আমাদের কষ্ট দিও না। এরপরও তা দেখা গেলে তোমরা একে হত্যা কর।” যঈফ, যঈফা (১৫০৮)
কুকুর নিধন প্রসঙ্গে
আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুকুর (আল্লাহ্ তা’আলার) সৃষ্ট প্রাণীগুলোর একটি প্রাণী না হলে আমি এর সবগুলোকে মেরে ফেলার হুকুম করতাম। অতএব এগুলোর মধ্যে যে কুকুরগুলো অত্যাধিক কালো সেগুলোকে তোমরা মেরে ফেল। সহীহ, মিশকাত তাহকীক ছানী (৪১০২), গাইয়াতুল মারাম (১৪৮), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৫৩৫)
কুকুর পালনকারী কি পরিমাণ সাওয়াব কমে যায়
ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক শিকারী কুকুর অথবা গবাদিপশু পাহারাদার কুকুর ব্যতীত ভিন্ন উদ্দেশ্যে কুকুর লালন-পালন করে থাকে, তার সাওয়াব প্রতিদিন দুই কীরাত (উহুদ পর্বতের সমতুল্য নেকি) পরিমাণ কমে যায়। সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৫৩৪), নাসা-ঈ ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিকারী কুকুর অথবা গবাদিপশু পাহারাদার কুকুর ব্যতীত অন্যান্য কুকুর মারার হুকুম দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, তাকে বলা হল, আবূ হুরাইরা বলেন, “অথবা ফসলাদি পাহারাদার কুকুর” বর্ণনাকারী বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর কৃষিভূমি ছিল। সহীহ্, ইরওয়া (২৫৪৯), মুসলিম আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন খুতবা দিচ্ছিলেন তখন তাঁর চেহারার সম্মুখ থেকে যারা খেজুর গাছের ডাল সরিয়ে রেখেছিলেন তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ কুকুর যদি (আল্লাহ্ তা‘আলার) সৃষ্ট প্রজাতিসমূহের মধ্যে একটি প্রজাতি না হতো তবে আমি এগুলোকে ধ্বংসের জন্য নির্দেশ দিতাম। অতএব এদের মধ্যে যে কুকুরগুলো মিশমিশে কালো তাদেরকে মেরে ফেল। যে বাড়ীর মানুষেরা শিকারের উদ্দেশ্যে, ফসলাদি ও মেষপাল পাহারা দেয়ার উদ্দেশ্য ব্যতীত কুকুর পালন করে থাকে তাদের সৎআমল হতে প্রতিদিন এক কীরাত করে (সাওয়াব) কমে যায়। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২০৫) আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গবাদিপশু পাহারাদার কুকুর, শিকারী কুকুর অথবা কৃষিক্ষেতে পাহারাদার কুকুর ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্য নিয়ে যে লোক কুকুর লালন-পালন করে থাকে তার সাওয়াব হতে প্রতিদিন এক কীরাত পরিমাণ কমে যায়। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২০৪) নাসা-ঈ, বুখারীতে শিকারী কুকুরের উল্লেখ আছে মুয়াল্লাকভাবে।
বাঁশ ইত্যাদির চোকলা বা ফালি দ্বারা যবেহ করা
রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আগামীকাল আমরা শত্রু পক্ষের মুখোমুখি হবো। অথচ আমাদের নিকট ছুরি নেই (কিভাবে যবেহ করব)? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ দাঁত ও নখ ছাড়া রক্ত প্রবাহিত করতে সক্ষম এমন যে কোনো জিনিস দিয়ে আল্লাহ্ তা‘আলার নাম নিয়ে যবেহ করলে তোমরা তা খাও। আমি তোমাদের দাঁত ও নখ প্রসঙ্গে বলছি যে, দাঁত হল হাড্ডি এবং নখ হল হাবশীদের (ইথিওপিয়ার বসবাসকারীদের) ছুরি। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৮৭), নাসা-ঈ
উট, গরু, মেষ-ছাগল ইত্যাদি ছুটে পালিয়ে গিয়ে বন্য হয়ে গেলে তা তীর মেরে শিকার করা যাবে কি-না?
আবাইয়া ইবনু রিফাআ ইবনু রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে তিনি (রাফি) বলেন, এক ভ্রমণে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাথে ছিলাম, দলের একটি উট বাঁধন ছিড়ে পালিয়ে যায়। তাদের সাথে কোন ঘোড়া ছিল না। একজন লোক (এর প্রতি) তীর মারলে আল্লাহ্ তা‘আলা এটাকে থামিয়ে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ বন্য পশুর মত এসব পশুর মধ্যেও পালিয়ে যাবার স্বভাব আছে। অতএব যে পশু ঐ রকম করবে তোমরাও তার সাথে একই ব্যবহার কর। সহীহ্, এ হাদীসটি পূর্বের হাদীসের পরিপূরক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুরূপ হাদীস মাহমূদ ইবনু গাইলান-ওয়াকী হতে, তিনি সুফিয়ান হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি আবাইয়া ইবনু রিফাআ হতে, তিনি তার দাদা রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) হতে এ সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। এই সূত্রটিতে ‘আবাইয়া-তার আব্বা’ এরকম কথা নেই এবং এটাই অনেক বেশি সহীহ্। এ হাদীস মোতাবিক আলিমগণ আমল করেছেন। সুফিয়ানের বর্ণনার মত শুবা (রহঃ) ইবনু মাসরূকের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।