17. কুরবানী

【1】

কুরবানীর ফাযীলত

আইশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুরবানীর দিন মানুষ যে কাজ করে তার মধ্যে আল্লাহ্‌ তা’আলার নিকট সবচাইতে পছন্দনীয় হচ্ছে রক্ত প্রবাহিত করা (কুরবানী করা)। কিয়ামতের দিন তা নিজের শিং, পশম ও ক্ষুরসহ হাযির হবে। তার (কুরবানীর পশুর) রক্ত যমিনে পড়ার আগেই আল্লাহ্‌ তা‘আলার নিকটে এক বিশেষ মর্যাদায় পৌঁছে যায়। অতএব তোমরা আনন্দিত মনে কুরবানী কর। যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩১২৬), এ অনুচ্ছেদে ইমরান ইবনু হুসাইন ও যাইদ ইবনু আরকাম (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।

【2】

দু’টি মেষ কুরবানী করা

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুই শিংযুক্ত ধূসর রং-এর দু’টি মেষ কুরবানী করেছেন। তিনি এ দু’টিকে বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার বলে নিজ হাতে যবেহ করেছেন- এর পাঁজরে নিজের পা রেখে চেপে ধরে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১২০), নাসা-ঈ

【3】

মৃত ব্যক্তির পক্ষ হতে কুরবানী করা

আলী (রাঃ) তিনি দু’টি মেষ কুরবানী করতেন, একটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ হতে এবং অপরটি নিজের পক্ষ হতে। এ ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে এই হুকুম করেছেন। অতএব আমি কখনও তা বাদ দেব না। সনদ দুর্বল।

【4】

যে ধরনের পশু কুরবানীর জন্য উত্তম

আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিং বিশিষ্ট ও মোটাতাজা (শক্তিশালী) একটি মেষ কুরবানী করেছেন। এর চেহেরা, পা ও চোখ ছিল মিটমিটে কালো। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১২৮)

【5】

যে ধরণের পশু কুরবানী করা জায়িয নয়

বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) মারফূ হাদীস (রাসূলুল্লাহ সদাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী) হিসাবে বর্ণনা করেছেনঃ খোঁড়া জন্তু যার খোঁড়ামী স্পষ্টভাবে প্রকাশিত; অন্ধ পশু যার অন্ধত্ব সম্পূর্ণভাবে প্রকাশিত; রুগ্ন পশু যার রোগ দৃশ্যমান এবং ক্ষীণকায় পশু যার হারের মজ্জা পর্যন্ত শুকিয়ে গেছে- তা দ্বারা কুরবানী করা যাবে না। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৪৪)

【6】

যে ধরনের পশু কুরবানী করা মাকরূহ

আলী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন- আমরা যেন কুরবানীর পশুর চোখ-কান ভালো করে দেখে নেই। তিনি আমাদের আরো নির্দেশ দিয়েছেন- আমরা যেন এমন পশু দিয়ে কুরবানী না করি যার কানের অগ্রভাগ বা গোড়ার অংশ কাটা; যার কান ছিদ্র করে দেয়া হয়েছে বা যার কান লম্বালম্বিভাবে ফেড়ে দেয়া হয়েছে। যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩১৪২)। অন্য একটি সূত্রেও আলী (রাঃ)-এর বরাতে অনুরূপ বর্ণিত আছে। তাতে অতিরিক্ত আছে, 'মুকাবিলা', অর্থাৎ যার কান অগ্রভাগ কাটা, মুদাবারা অর্থ যার কানের গোড়ার অংশ কাটা, শারকা অর্থ কান ফাটা খারকা অর্থাৎ যার কান ছিদ্র করে দেয়া হয়েছে। যঈফ, দেখুন পূর্বের হাদীস।

【7】

ছয় মাসের মেষকে (ভেড়া, দুম্বা, ছাগল) কুরবানী করা প্রসঙ্গে

আবূ কিবাশ (রহঃ) তিনি বলেন, আমি ছয়মাস বয়সের কিছু সংখ্যক মেষ বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মাদীনায় আনলাম। কিন্তু সেগুলো বাজারে বিক্রয় হল না (মূল্য কমে গেল)। আমি আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সাথে দেখা করে তাকে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ ‘‘ছয় মাস বয়সের মেষ কুরবানীর জন্য কতই না উত্তম!” রাবী বলেন, (এ কথা শুনে) লোকেরা মেষগুলো সাথে সাথে ছিনিয়ে নিল (তাড়াহুড়া করে কিনে নিল)। যঈফ, যঈফা (৬৪), মিশকাত (১৪৬৮), ইরওয়া (১১৪৩)। এ অনুচ্ছেদে ইবনু আব্বাস, উম্মু বিলাল বিনতি হিলাল তার পিতার সূত্রে, জাবির, উকবা ইবনু আমির (রাঃ) এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আরো একজন সাহাবী হতে হাদীস বর্ণিত আছে। উকবা ইবনু আমির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে কয়েকটি ছাগল দিলেন কুরবানীর উদ্দেশ্যে তাঁর সাহাবীদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য। বিলিয়ে দেওয়ার পর ছয় মাস বা এক বছর বয়সের একটি বাচ্চা রয়ে গেল। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বিষয়টি জানালে তিনি বললেন, তুমিই এটাকে কুরবানী কর। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৩৮)

【8】

কুরবানীর পশুতে অংশগ্রহণ করা

ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, এক ভ্রমণে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে ছিলাম। এরকম পরিস্থিতিতে কুরবানীর ঈদ উপস্থিত হল। তখন আমরা একটি গরুতে সাতজন অংশীদার হয়ে এবং একটি উটে দশজন অংশীদার হয়ে কুরবানী আদায় করলাম। সহীহ্, পূর্বে ৮৯৮ নং হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা হুদাইবিয়া নামক জায়গাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে একটি উটে সাতজন অংশীদার হয়ে এবং একটি গরুতেও সাতজন অংশীদার হয়ে কুরবানী সম্পন্ন করেছি। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৩২), মুসলিম

【9】

শিংভাঙ্গা ও কানফাটা পশু দিয়ে কুরবানী করা

আলী (রাঃ) তিনি বলেন, সাতজন ব্যক্তি পর্যন্ত একটি গরুতে অংশীদার হওয়া যায়। আমি (হুযাইয়্যা) বললাম, বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হলে (অর্থাৎ পেটে বাচ্চা পাওয়া গেলে)? তিনি বললেন, বাচ্চাটিকেও এর সাথে যবেহ কর। আমি বললাম, গরুটি খোঁড়া হলে? তিনি বললেন, তা যদি কুরবানীর স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে (তবে তা কুরবানী করা যাবে)। আমি বললাম, তার শিং ভাঙ্গা হলে? তিনি বললেন, এতে কোন সমস্যা নেই। আমাদেরকে আদেশ করা হয়েছে অথবা আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আদেশ করেছেন- আমরা যেন কুরবানীর পশুর (কেনার সময়) দুই চোখ ও দুই কান ভালভাবে দেখে নেই। হাসান, ইবনু মা-জাহ (৩১৪৩) আলী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিং ভাঙ্গা ও কান কাটা পশু কুরবানী করতে মানা করেছেন। কাতাহা (রহঃ) বলেছেন, আমি এ প্রসঙ্গে সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব (রহঃ)-এর নিকট উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘আল-আযব’ দ্বারা শিং-এর অর্ধেক বা তার বেশী ভাঙ্গাকে বুঝায়। যঈফ, ইবনু মাজাহ(৩১৪৫)।

【10】

একটি ছাগলই একটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট

আতা ইবনু ইয়াসার (রহঃ) আবূ আইয়ূব (রাঃ)-কে আমি প্রশ্ন করলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর যামানায় কুরবানীর বিধান কেমন ছিল। তিনি বললেন, কোন লোক তার ও তার পরিবারের সদস্যদের পক্ষে একটি ছাগল দ্বারা কুরবানী আদায় করত এবং তা নিজেরাও খেত, অন্যান্য লোকদেরকেও খাওয়াত। অবশেষে মানুষেরা গর্ব ও আভিজাত্যের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। ফলে পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তা তুমি নিজেই দেখতে পাচ্ছ। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৪৭)

【11】

কুরবানী করা সুন্নাত

জাবালা ইবনু সুহাইম (রহঃ) এক ব্যক্তি ইবনু উমার (রাঃ)-কে কুরবানী প্রসঙ্গে প্রশ্ন করল, এটা কি ওয়াজিব। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানী করেছেন এবং মুসলমানগণও (কুরবানী করেছেন)। সে আবার (একই বিষয়ে) প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, তুমি কি বুঝেছো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানী করেছেন এবং মুসলমানগণও। যঈফ, মিশকাত তাহকীক ছানী (১৪৭৫)। ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় দশ বছর থেকেছেন এবং বরাবর (প্রতি বছর) কুরবানী করছেন। যঈফ, দেখুন পূর্বের হাদীস।

【12】

কুরবানী করতে হবে ঈদের নামায আদায়ে পর

বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) তিনি বলেন, কুরবানীর দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সামনে খুৎবা প্রদান করলেন। তিনি বললেনঃ (ঈদের) নামায আদায়ের আগে তোমাদের কোন ব্যক্তি যেন কুরবানী না করে। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মামা দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আজকের দিন তো এমন যে, পরে গোশত অপছন্দ লাগে। তাই আমি আমার পরিবারের সদস্যদের এবং প্রতিবেশীদেরকে খাওয়ানোর জন্য কুরবানী করে ফেলেছি। তিনি বললেন, তুমি আবার একটি পশু যবেহ করে দাও। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! দুধ খায় এমন একটি বকরীর বাচ্চা এখনও আমার নিকট আছে, যা দু’টি হৃষ্টপুষ্ট বকরীর চাইতেও উত্তম। আমি কি এটাকে যবেহ করে দেব? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তোমার জন্য এটা উত্তম কুরবানী। তবে বকরীর এরূপ বাচ্চা কুরবানী করা তোমার পর আর কারো জন্য বৈধ হবে না। সহীহ্, ইরওয়া (২৪৯৫), সহীহ্ আবূ দাউদ (২৪৯৫-২৪৯৬), মুসলিম, বুখারী অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

【13】

তিন দিনের অধিক কুরবানীর গোশত খাওয়া মাকরূহ

ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি তার কুরবানীর গোশত যেন তিন দিনের অধিক না খায়। সহীহ্, ইরওয়া (১১৫৫), বুখারী, মুসলিম অনুরূপ এই বিধান পরবর্তী হাদীসের দ্বারা বাতিল হয়ে গেছে।

【14】

কুরবানীর গোশত তিন দিনের পরেও খাওয়ার সম্মতি প্রসঙ্গে

সুলাইমান ইবনু বুরাইদা (রাঃ) হতে তার বাবা তিনি (বুরাইদা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ কুরবানীর গোশত তিন দিনের পরেও রাখতে (খেতে) আমি তোমাদেরকে বারণ করেছিলাম, যেন সম্পদশালীরা উদারহস্তে তাদের গোশত দরিদ্রদের মধ্যে দান করে। এখন তোমরা ইচ্ছামত তৃপ্তিসহকারে তা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং জমা করেও রাখতে পার। সহীহ্, ইরওয়া (৪/৩৬৮-৩৬৯), মুসলিম

【15】

ফারাআ ও আতীয়াহ বিষয়ে

আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ (এখন আর কোন) ফারাআ নেই, আতীরাহ্ও নেই। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৬৮), নাসা-ঈ

【16】

আকীকা প্রসঙ্গে

ইউসুফ ইবনু মাহাক (রহঃ) তারা কয়েকজন একত্রিত হয়ে আবদুর রাহমানের মেয়ে হাফসার নিকট গেলেন। তারা তাকে আকীকার ব্যপারে প্রশ্ন করলে তিনি তাদেরকে জানান যে, তাকে আইশা (রাঃ) জানিয়েছেন, ছেলে সন্তানের পক্ষে একই বয়সের দু’টি বকরী এবং মেয়ে সন্তানের পক্ষে একটি বকরী আকীকা দেওয়ার জন্যে তাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নির্দেশ দিয়েছেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৩৬)

【17】

সদ্য প্রসূত শিশুর কানে আযান দেওয়া

উবাইদুল্লাহ ইবনু আবূ রাফি (রাঃ) হতে তার পিতা তিনি (আবূ রাফি) বলেন, ফাতিমা (রাঃ) হাসান ইবনু আলী (রাঃ)- কে প্রসব করলে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হাসানের কানে আযানের মতই আযান দিতে দেখেছি। যঈফ, যঈফা নতুন সংস্করণ (১/৪৯৩)। সালমান ইবনু আমির আয-যাব্বী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক শিশুর পক্ষেই আকীকা করা দরকার। অতএব তার পক্ষ হতে তোমরা রক্ত প্রবাহিত কর (পশু যবেহ কর) এবং তার হতে ময়লা (বা কষ্টদায়ক বস্তু, যেমন চুল) দূর কর। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৬৪) উন্মু কুরয (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট তিনি আকীকার ব্যপারে প্রশ্ন করেন। তিনি বললেনঃ ছেলে সন্তানের পক্ষে দু’টি বকরী এবং মেয়ে সন্তানের পক্ষে একটি বকরী (আকীকা দিতে হবে)। আকীকার পশু নর বা মাদী যাই হোক না কেন তাতে তোমাদের কোন অসুবিধা নেই। সহীহ্, ইরওয়া (৪/৩৯১)

【18】

(কুরবানীর উত্তম পশু ও উত্তম কাফন)

আবূ উমামা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুরবানীর জন্য উত্তম পশু হল মেষ এবং উত্তম কাফন হল হুল্লা (হুল্লা অর্থ- নতুন কাপড় অথবা সমস্ত শরীর আবৃত করে এমন কাপড়)। যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩১৬৪)।

【19】

(প্রতি বছর প্রতিটি পরিবার কুরবানী করবে)

মিখনাফ ইবনু সুলাইম (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা আরাফাতের মাঠে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ছিলাম। আমি তাঁকে বলতে শুনেছিঃ হে জনসমষ্টি! প্রতি বছর প্রতিটি পরিবারের পক্ষ হতে কুরবানী ও আতীরা রয়েছে। তোমরা কি জান, আতীরা কী? তোমরা যাকে রাজাবিয়া বল এটা তাই। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১২৫)

【20】

একটি ছাগল দ্বারা আকীকা।

আলী ইবনু আবী তালিব (রাঃ) তিনি বলেন, একটি বকরী দ্বারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাসানের আকীকা করেন এবং বলেনঃ হে ফাতিমা! তার মাথা নেড়া করে দাও এবং তার চুলের ওজনের অনুরূপ রূপা দান কর। তদানুযায়ী আমি তার চুল ওজন করলাম এবং তার ওজন এক দিরহাম বা তার কাছাকাছি হয়। হাসান, ইরওয়া (১১৭৫)

【21】

(ঈদের নামায আদায়ের পর কুরবানী করা প্রসঙ্গে)

আবদুর রাহমান ইবনু আবূ বাকরা (রাঃ) হতে তার বাবা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদের নামাযের (পর) খুৎবা প্রদান করলেন। তারপর মিম্বার হতে নেমে দু’টি মেষ আনতে বললেন। তারপর এ দু’টোকে তিনি যবেহ করলেন। সহীহ্, মুসলিম (৫/১০৮)

【22】

(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর উম্মাতের পক্ষে কুরবানী)

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি মাঠে হাযির হলাম নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ঈদুল আযহার নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে। তিনি খুৎবা সমাপ্তির পর তাঁর মিম্বার হতে নামলেন। তারপর একটি ভেড়া আনা হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা নিজ হাতে যবেহ করলেন এবং বললেনঃ “আল্লাহ্ তা‘আলার নামে, আল্লাহ মহান, এই কুরবানী আমার পক্ষ হতে এবং আমার উম্মাতের যে সকল ব্যক্তিরা কুরবানী করতে পারেনি তাদের পক্ষ হতে।” সহীহ্, ইরওয়া (১১৩৮), সহীহ্ আবূ দাউদ (২৫০১)

【23】

(শিশুর জন্মের সপ্তম, চতুর্দশ বা একবিংশ দিনে আকীকা করা)

সামুরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সকল শিশুই তার আকীকার সাথে বন্ধক (দায়বদ্ধ) অবস্থায় থাকে। জন্মগ্রহণ করার সপ্তম দিনে তার পক্ষে যবেহ করতে হবে, তার নাম রাখতে হবে এবং তার মাথা নেড়া করতে হবে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৬৫)

【24】

যে লোক কুরবানীর আশা রাখে যিলহাজ্জ মাসের চাঁদ উঠার পর তার চুল না কাটা।

উম্মু সালামা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক যিলহাজ্জের নতুন চাঁদ দেখেছে এবং কুরবানীর নিয়াত করেছে সে যেন নিজের চুল ও নখ (কুরবানীর পূর্ব পর্যন্ত) না কাটে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৪৯), মুসলিম