21. জিহাদ
ওজরের কারণে জিহাদে অংশগ্রহণ না করার সুযোগ
বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা আমার জন্য কাঁধের হাড় অথবা তক্তা আন। তিনি তাতে এই আয়াত লিখালেনঃ “মু’মিনদের মধ্যে যেসব লোক ঘরে বসে থাকে তারা সমকক্ষ হতে পারে না”। আমর ইবনু উম্মি মাকতূম (রাঃ) তাঁর পিছনে বসা ছিলেন। তিনি বললেন, আমার জন্য (ঘরে বসে থাকার) অনুমতি আছে কি? তখন অবতীর্ণ হলঃ “ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ ব্যতীত”। সহীহ্, বুখারী (২৮৩১, ৪৫৯৩, ৪৫৯৪), মুসলিম (৬/৪৩), তক্তা শব্দ ব্যতীত
কোন ব্যক্তি মা-বাবাকে ফেলে জিহাদের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলে
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট একজন লোক এসে তাঁর কাছে জিহাদে যোগদানের সম্মতি চাইল। তিনি বললেনঃ তোমার মা-বাবা কি বেঁচে আছে? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তুমি তাদের সেবায় জিহাদ কর। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৭৮২), নাসা-ঈ
শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিকেই অভিযানে প্রেরণ করা
ইবনু জুরাইজ (রহঃ) আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ “তোমরা আল্লাহ্ তা’আলার আনুগত্য কর, রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের সকল কাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদেরও” এই আয়াত প্রসঙ্গে বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু হুযাফা ইবনু কাইস ইবনু আদী আস-সাহ্মী (রাঃ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে একটি অভিযানে প্রেরণ করেছিলেন। সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩৫৯), নাসা-ঈ
একাকী ভ্রমণ করা অনুচিত
ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একাকী ভ্রমণে যে কি (অনিষ্ট) রয়েছে, তা আমি যে রকম জানি, অন্যরাও সে রকম জানলে কোন ভ্রমণকারীই রাতে একাকী ভ্রমণ করত না। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৭৬৮), বুখারী আমর ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একা ভ্রমণকারী এক শাইতান, দুইজন ভ্রমণকারী দুই শাইতান এবং তিনজন ভ্রমণকারী একটি জামা’আত। হাসান, সহীহা (৬৪), মিশকাত (৩৯১০), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩৪৬)
যুদ্ধে মিথ্যা ও ধোকার আশ্রয় নেওয়ার অনুমতি আছে
আমর ইবনু দীনার (রহঃ) তিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যুদ্ধ হল ধোকা। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৮৩৩, ২৮৩৪)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়টি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন
আবূ ইসহাক (রহঃ) তিনি বলেন, আমি যাইদ ইবনু আরকাম (রাঃ)-এর পাশে উপস্থিত ছিলাম। তাকে প্রশ্ন করা হল, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়টি যুদ্ধ করেছেন? তিনি বললেন, ঊনিশটি। আমি প্রশ্ন করলাম, আপনি কতটি যুদ্ধে তাঁর সাথে ছিলেন? তিনি বললেন, সতেরটিতে। আমি বললাম, এর মধ্যে সর্বপ্রথম কোন্ যুদ্ধটি ছিল? তিনি বললেন, যাতুল উশাইর বা উশাইরার যুদ্ধ। সহীহ্, নাসা-ঈ
যুদ্ধের সময় (সৈন্যদেরকে) সারিবদ্ধভাবে বিন্যস্ত করা
আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদরের যুদ্ধে আমাদেরকে রাতের বেলা সারিবদ্ধভাবে বিন্যস্ত করেছেন। সনদ দুর্বল। আবূ ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে আবূ আইউব (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সনদসূত্রে এটি জেনেছি। আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে এ হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি এ প্রসঙ্গে অজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক (রহঃ) সরাসরি ইকরিমা হতে হাদীস শুনেছেন। তিরমিযী বলেন, আমি ইমাম বুখারীর সাথে আমার সর্বপ্রথম সাক্ষাতে লক্ষ্য করি যে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনু হুমাইদ আর-রাযী প্রসঙ্গে ভাল ধারণা পোষণ করতেন। কিন্তু পরে তিনি তাকে দুর্বল রাবী বলে আখ্যায়িত করেন।
যুদ্ধের সময় দু’আ করা
ইবনু আবী আওফা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি মুশরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তাঁকে অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু'আ করার সময় বলতে শুনেছিঃ “হে আল্লাহ! কিতাব অবতীর্ণকারী এবং দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী! শক্রবাহিনীকে পরাজিত কর এবং তাদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত কর"। সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩৬৫), নাসা-ঈ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ক্ষুদ্র পতাকার বর্ণনা
জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় প্রবেশ করেন এবং তাঁর ক্ষুদ্র পতাকা ছিল সাদা রং-এর। হাসান, ইবনু মা-জাহ (৩৮১৭)
(রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের) বড়) পতাকার বর্ণনা
মুহাম্মাদ ইবনুল কাসিমের মুক্তদাস ইউনুস ইবনু উবাইদ (রহঃ) তিনি বলেন, মুহাম্মাদ ইবনুল কাসিম আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (বড়) পতাকা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করার জন্য বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ)-এর নিকট প্রেরণ করেন। বারাআ (রাঃ) বলেন, পতাকাটি ছিল কালো রং-এর, বর্গাকৃতির এবং পশমী কাপড়ের। “বর্গাকৃতির” শব্দটি ব্যতীত হাদীসটি সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩৩৩) ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাইয়াহ্ (বড় পতাকা) ছিল কালো রং-এর এবং লিওয়া (ছোট পতাকা) ছিল সাদা রং-এর। হাসান, ইবনু মা-জাহ (২৮১৮)
(যুদ্ধক্ষেত্রের বিশেষ) প্রতীক বা সংকেতধ্বনি
মুহাল্লাব ইবনু আবূ সুফরা (রহঃ) তিনি এমন একজনের সূত্রে বর্ণনা করেছেন, যিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ যদি রাতের আঁধারে শক্র বাহিনী তোমাদেরকে আক্রমণ করে তাহলে তোমরা এই সংকেত উচ্চারণ করঃ ‘হা-মীম’, তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না। সহীহ্, মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৯৪৮)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর তরবারির বর্ণনা
মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) তিনি বলেছেনঃ আমি আমার তরবারি সামুরা (রাঃ)-এর তরবারির আকৃতিতে তৈরী করেছি। সামুরা (রাঃ) বলেন যে, তিনি তার তরবারি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তরবারির আদলে তৈরী করেছেন। তাঁর তরবারি ছিল বানূ হানীফ গোত্রের তরবারির মতই। যঈফ, মুখতাসার শামায়িল মুহাম্মাদীয়া (৮৮)।
যুদ্ধ চলা কালীন সময়ে রোযা না রাখা
আৰূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের বছর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মাররায-যাহরান নামক জায়গায় পৌছলেন, তখন তিনি আমাদেরকে শক্রর মুকাবিলা করার কথা জানিয়ে দিলেন। তিনি আমাদেরকে রোযা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিলেন। তাই আমরা সবাই রোযা ভেঙ্গে ফেললাম। সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২০৮১), মুসলিম
শঙ্কিত অবস্থায় বাইরে বের হওয়া
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ তালহা (রাঃ)-এর মানদূব নামক ঘোড়ার উপর চড়ে রাওয়ানা করলেন। তিনি (বাইরে গিয়ে ভীতির কোন কারণ খুঁজে না পেয়ে ফিরে এসে) বললেনঃ ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। আমি ঘোড়াটিকে অবশ্য সাগরের স্রোতের মতো বেগবান পেলাম। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৭৭২) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, একবার মাদীনার জনগণের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের মানদূব নামক ঘোড়াটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ধার নিলেন। তিনি (বাইরে হতে ঘুরে এসে) বললেনঃ আমরা ভয় পাওয়ার কোন কারণ খুঁজে পেলাম না। আমরা অবশ্য ঘোড়াটিকে সমুদ্রের স্রোতের অনুরূপ বেগবান পেলাম। সহীহ্ দেখুন পূর্বের হাদীস আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন অত্যন্ত সুদর্শন, দানশীল ও সাহসী পুরুষ। আনাস (রাঃ) বলেন, মদীনাবাসীগণ এক রাতে একটি (বিকট) শব্দ শুনতে পেয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ তালহা (রাঃ)-এর একটি জিনবিহীন ঘোড়ায় উঠে কাঁধে তলোয়ার ঝুলিয়ে তাদের সাথে দেখা করেন এবং বলেন, তোমরা ভয় পেও না, তোমরা ভয় পেও না। তিনি আরও বলেন, আমি এটাকে সমুদ্রের অনুরূপ বেগবান পেয়েছি অর্থাৎ ঘোড়াটিকে। সহীহ্, দেখুন হাদীস নং (১৬১৯)
যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অবিচল থাকা
বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) তিনি বলেন, আমাদেরকে একজন লোক প্রশ্ন করল, হে আবূ উমারা! আপনারা কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) (যুদ্ধে একা ফেলে) রেখে পালিয়েছিলেন? তিনি বললেন, আল্লাহ্র শপথ! কখনো নয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো (যুদ্ধ হতে) পালাননি। বরঞ্চ কয়েকজন তাড়াহুড়াকারী লোক পালিয়েছিল। হাওয়াযিন বংশের জনগণ তীরবৃষ্টি বর্ষণ করতে করতে তাদের মুখোমুখি হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর খচ্চরের পিঠে বসা অবস্থায় ছিলেন এবং এর লাগাম ধরে রেখেছিলেন আবূ সুফিয়ান ইবনুল হারিস ইবনু আবদুল মুত্তালিব। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছিলেনঃ “নিঃসন্দেহে আমি (আল্লাহ্র) নাবী, এর মধ্যে বিন্দুমাত্র মিথ্যা নেই, আমি আবদুল মুত্তালিবের বংশধর”। সহীহ্, মুখতাসার শামাইল (২০৯), নাসা-ঈ ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা হুনাইনের যুদ্ধের দিন দুইটি দলকে পলায়নপর দেখতে পেলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে একশত জন লোকও ছিল না।
তলোয়ার ও তার অলংকরণ বিষয়ে
মাযীদা (রাঃ) তিনি বলেছেন, মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মক্কায় যাওয়ার সময় তাঁর তরবারি ছিল সোনা-রূপা খচিত। (অধঃস্তন রাবী) তালিব বলেন, আমি তাকে (হূদকে) রূপা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তরবারির হাতলটি ছিল রৌপ্য খচিত। যঈফ, মুখতাসার শামায়িল মুহাম্মাদীয়া (৮৭) ইরওয়া (৩/৩০৬)। আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তলোয়ারের হাতল ছিল রৌপ্যখচিত। সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩২৬-২৩২৮), ইরওয়া (৮২২), মুখতাসার শামাইল (৮৫, ৮৬)
লৌহ বর্মের বর্ণনা
যুবাইর ইবনুল আওয়াম (রাঃ) তিনি বলেন, উহুদ যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিধানে দু’টি লৌহ বর্ম ছিল। তিনি তা পরিহিত অবস্থায় (আহত হওয়ার পর) একটি পাথরের উপর উঠার চেষ্টা করেন, কিন্তু উঠতে পারেননি। তিনি তালহা (রাঃ)-কে নিচে বসিয়ে তার কাঁধে চড়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাথরের উপর উঠে উপবিষ্ট হন। যুবাইর (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ তালহা (তার জন্য জান্নাত) নির্ধারিত করে নিল। হাসান, মিশকাত (৬১১২), মুখতাসার শামাইল (৮৯), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩৩২)
শিরস্ত্রাণের বর্ণনা
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন লোহার শিরস্ত্রাণ পড়ে মক্কায় প্রবেশ করেন। তাঁকে বলা হল, কাবার পর্দার সাথে ইবনু খাতাল জড়িয়ে আছে। তিনি বললেনঃ তাকে মেরে ফেল। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৮০৫), নাসা-ঈ
ঘোড়ার মর্যাদা
উরওয়া আল-বারিকী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাত পর্যন্ত ঘোড়ার কপালে কল্যাণ বাঁধা রয়েছেঃ পুরস্কার ও গানীমাত। সহীহ্, নাসা-ঈ
কোন প্রকার ঘোড়া উত্তম
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লাল রং-এর ঘোড়ায় কল্যাণ রয়েছে। হাসান সহীহ্, মিশকাত (৩৮৭৯), তা’লীকুর রাগীব (২/১৬২), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২২৯৩) আবূ কাতাদা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কালো রং-এর ঘোড়া সবচাইতে উত্তম, যার কপাল ও উপরের ওষ্ঠ সাদা। তারপর যে ঘোড়ার ডান পা ও কপাল ব্যতীত বাকী পাগুলো সাদা রং-এর। কালো বর্ণের ঘোড়া পাওয়া না গেলে লাল-কালো মিশ্রিত বর্ণের অনুরূপ ঘোড়া উত্তম। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৭৮৯) উপরোক্ত হাদীসের মতো মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার-ওয়াহ্ব ইবনু জারীর উপরোক্ত হাদীসের মতো মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার-ওয়াহ্ব ইবনু জারীর হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি ইয়াহ্ইয়া ইবনু আইয়্যূব হতে, তিনি ইয়াযীদ ইবনু আবী হাবীব হতে এই সূত্রেও অনুরূপ অর্থের হাদীস বর্ণিত আছে।
কোন ধরনের ঘোড়া অপছন্দনীয়
আবূ হুরাইরা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিকাল ঘোড়া অর্থাৎ তিন পা সাদা ও এক পা শরীরের রং বিশিষ্ট ঘোড়া অপছন্দ করেছেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৭২৯০), মুসলিম
ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা
ইবনু উমার (রাঃ) হাফ্ইয়া হতে সানিয়্যাতুল বিদা পর্যন্ত জায়গাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিশেষ পদ্ধতিতে প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত হালকা শরীরবিশিষ্ট ঘোড়াসমূহের দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন। এই দু’টি জায়গার মাঝের দূরত্ব ছয় মাইল। তিনি সানিয়্যাতুল বিদা হতে যুরাইক বংশের মাসজিদ পর্যন্ত ভারী দেহবিশিষ্ট অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়াসমূহের দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন। এ দু’টি জায়গার মাঝের দূরত্ব এক মাইল। আমিও ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় যোগ দেই। আমার ঘোড়াটি আমাকে-সহ লাফ দিয়ে একটি দেয়াল টপকে যায়। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৮৭৭), নাসা-ঈ। বুখারীতে দেয়াল টপকানোর কথা উল্লেখ নেই। আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তীর নিক্ষেপ এবং উট ও ঘোড়দৌড় ব্যতীত অন্য কিছুতে প্রতিযোগিতা নেই। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৮৭৮)
গাধা দিয়ে ঘুড়ীর পাল দেওয়া (সঙ্গম করানো) নিষেধ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন একজন আদেশপ্রাপ্ত বান্দা। তিনটি বিষয় ছাড়া তিনি আমাদেরকে কোন বিশেষ নির্দেশ দেননি। তিনি আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন আমরা যেন উত্তমরূপে ওযূ করি, সাদকার জিনিস না খাই এবং গাধা দিয়ে ঘুড়ীর পাল না দেই।
দুঃস্থ মুসলমানদের ওয়াসিলা দিয়ে বিজয়ের প্রার্থনা করা
আবুদ দারদা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আমাকে খোঁজ কর তোমাদের মধ্যে যারা নিঃস্ব-দুর্বল তাদের মাঝে। কেননা তোমরা রিযিক এবং সাহায্য-সহযোগীতাপ্রাপ্ত হয়ে থাক অসহায়-দুর্বল লোকদের ওয়াসিলায়। সহীহ্, সহীহা (৭৭৯), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩৩৫), তা’লীকুর রাগীব (১/২৪)
ঘোড়ার গলায় ঘন্টা বাঁধা নিষেধ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে কাফেলার সাথে কুকুর অথবা ঘন্টা থাকে ফেরেশতাগণ তাদের সঙ্গী হয় না। সহীহ্, সহীহা (৪/৪৯৪), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩০৩), মুসলিম
কোন ব্যক্তিকে সেনাবাহিনীর কোন দায়িত্বে নিযুক্ত করা
বারাআ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুইটি বাহিনী (যুদ্ধে) পাঠান। তিনি আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ)-কে এক দলের এবং খালিদ ইবনুল ওয়ালীদ (রাঃ)-কে অন্য দলের অধিনায়ক নিয়োগ করেন। তিনি বলেনঃ যুদ্ধ চলার সময় আলী পুরো বাহিনীর সেনাপতির দায়িত্ব পালন করবে। রাবী বলেন, আলী (রাঃ) একটি দুর্গ দখল করেন এবং বন্দীদের মধ্য হতে একটি বাঁদী নিজের জন্য নিয়ে নেন। খালিদ (রাঃ) এই বিষয়ে তার সমালোচনা করে একটি চিঠি লিখে তা দিয়ে আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকটে পাঠান। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকটে (চিঠি নিয়ে) উপস্হিত হলাম। তিনি তা পড়লেন এবং তাঁর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। তারপর তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে এবং যাকে আল্লাহ তা‘আলা ভালোবাসেন তার প্রসঙ্গে তুমি কি ভাব! আমি বললাম, আমি আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের অসন্তুষ্টি হতে আল্লাহ্ তা‘আলার আশ্রয় চাই। আমি তো পত্রবাহক মাত্র। এ কথায় তিনি নীরব হলেন।
ইমাম (নেতা) প্রসঙ্গে
ইবনু উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সাবধান! তোমরা সকলেই রাখাল (দায়িত্বশীল) এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার রাখালী (দায়িত্ব পালন) প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যিনি জনগণের নেতা তাকে তার রাখালী (দায়িত্ব) বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। ব্যক্তি তার পরিবারের লোকদের রাখাল (অভিভাবক)। তাদের ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর সংসারের রাখাল (ব্যবস্থাপিকা) তাকে এর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। গোলাম তার মনিবের সম্পদের রাখাল (পাহারাদার)। তাকে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হবে। অতএব, সাবধান! তোমরা সকলেই রাখাল এবং তোমাদের সকলকেই নিজ নিজ রাখালী বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (২৬০০), নাসা-ঈ
নেতার আনুগত্য করা
উম্মুল হুসাইন আল-আহ্সামিয়া (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বিদায় হাজ্জের সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে খুতবা দিতে শুনেছি। তখন তাঁর গায়ে একটি চাদর ছিল। তিনি তাঁর বগলের নিচে এটা পেচিয়ে রেখেছিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তাঁর বাহুর গোশতপিন্ডের দিকে আমি তাকিয়ে দেখলাম তা দোল খাচ্ছে। আমি তাঁকে বলতে শুনলামঃ উপস্থিত জনমন্ডলী! আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় কর। যদি তোমাদের নেতা হিসাবে কোন নাক-কান কাটা হাবশী ক্রীতদাসকেও নিযুক্ত করা হয়, তবে সে তোমাদের জন্য যে পর্যন্ত আল্লাহ্ তা’আলার কিতাবের ফায়সালা প্রতিষ্ঠিত রাখবে সে পর্যন্ত তার কথা শোন এবং তার আনুগত্য কর। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৮৬১)
স্রষ্টার নাফারমানী করে সৃষ্টির আনুগত্য করা যাবে না
ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সকল মুসলমানেরই নেতার কথা শোনা ও আনুগত্য করা অবশ্য কর্তব্য, তা হোক তার পছন্দের বা অপছন্দের, তাকে যে পর্যন্ত গুনাহের কাজের নির্দেশ না দেওয়া হবে। যদি তাকে গুনাহের কাজের নির্দেশ দেওয়া হয় তাহলে তা না শুনা এবং না মানাই তার কর্তব্য। সহীহ্, নাসা-ঈ
পশুর লড়াই অনুষ্ঠান এবং কোন প্রানীর মুখে দাগ দেওয়া বা আঘাত করা নিষেধ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পশুর লড়াই বাধাতে মানা করেছেন। যঈফ, গায়াতুল মারাম (৩৮৩), যঈফ আবূ দাঊদ (৪৪৩) মুজাহিদ (রহঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পশুর লড়াই অনুষ্ঠান করতে মানা করেছেন। যঈফ, গায়াতুল মারাম (৩৮)। জাবির (রাঃ) মুখমন্ডলে দাগ দিতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন। সহীহ্, ইরওয়া (২১৮৫), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩১০), মুসলিম
বালেগের বয়সসীমা এবং বাইতুল মাল হতে ভাতা নির্ধারণের সময়
ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, আমাকে কোন এক সেনাবাহিনীতে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে হাযির করা হয়। তখন আমার বয়স চৌদ্দ বছর ছিল। তিনি আমাকে গ্রহণ করেননি। আমাকে আবার পরের বছর সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির উদ্দেশ্যে তাঁর সামনে হাযির করা হয়। তখন আমার বয়স পনের বছর ছিল। এবার তিনি আমাকে গ্রহণ করলেন। নাফি (রহঃ) বলেন, আমি এ হাদীসটি উমার ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) এর সামনে বর্ণনা করলে তিনি বলেন, এটাই বালেগ ও নাবালেগের মধ্যে পার্থক্যকারী বয়সসীমা। তারপর যারা পনের বছর বয়সে পদার্পণ করেছে তিনি তাদের জন্য বাইতুল মাল হতে ভাতা নির্ধারণের নির্দেশ জারী করেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৫৪৩), নাসা-ঈ ইবনু আবী উমার-সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা হতে, তিনি উবাইদুল্লাহ (রহঃ)-এর সূত্রে একইরকম বর্ণনা করেছেন। এতে নাফি (রহঃ) বলেন, উমার ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) বললেনঃ এ হলো বালেগ ও নাবালেগের যুদ্ধে অংশগ্রহণের বয়সসীমা। এই সূত্রে ভাতা নির্ধারণের উল্লেখ নেই। সহীহ্ দেখুন পূর্বের হাদীস আবূ ঈসা বলেন, ইসহাক ইবনু ইউসুফের সূত্রে বর্ণিত হাদীস হাসান সহীহ্ এবং সুফিয়ান সাওরীর বর্ণনা হিসাবে গারীব।
ঋণগ্রস্ত অবস্থায় কেউ শহীদ হলে
আবদুল্লাহ ইবনু আবূ কাতাদা (রাহঃ) হতে তার পিতা তিনি তার পিতা (কাতাদা (রাঃ))-কে বর্ণনা করতে শুনেছেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক সময় তাদের মাঝে দাঁড়ালেন। তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলার পথে জিহাদ এবং আল্লাহ্ তা‘আলার উপর ঈমান হল সবচেয়ে উত্তম কাজ। একজন লোক দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি কি মনে করেন, আমি আল্লাহ্ তা‘আলার পথে নিহত হলে তাতে আমার গুনাহসমূহ কি মাফ হয়ে যাবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, হ্যাঁ। আল্লাহ্ তা‘আলার পথে তুমি যদি এরূপভাবে নিহত হও যে, তুমি ধৈর্য ধারণকারী, সাওয়াবের আশাবাদী, অগ্রগামী হও এবং পৃষ্ঠ প্রদর্শনকারী না হও। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি কিভাবে প্রশ্ন করেছিলে (তা আবার বল)? লোকটি বলল, আপনি কি মনে করেন, আল্লাহ্ তা‘আলার পথে আমি নিহত হলে কি তাতে আমার গুনাহসমূহের কাফফারা হয়ে যাবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, তোমার গুনাহসমূহের কাফফারা হয়ে যাবে, যদি তুমি ধৈর্যশীল হও, সাওয়াবের আকাঙ্ক্ষী ও সৎ উদ্দেশ্য পোষণকারী হও, অগ্রগামী হও এবং পৃষ্ঠ প্রদর্শনকারী না হও। কিন্তু ঋণের ক্ষমা হবে না, কেননা আমাকে জিবরীল এ কথা বলেছেন। সহীহ্, ইরওয়া (১১৯৭), মুসলিম
শহীদদের দাফনকার্য প্রসঙ্গে
হিশাম ইবনু আমির (রাঃ) তিনি বলেন, উহুদের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট শহীদদের কথা বলা হলে তিনি বললেনঃ প্রশস্তভাবে কবর খনন কর, সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ কর এবং একই কবরে দুই-দুইজন অথবা তিন-তিনজনকে দাফন কর। এদের মধ্যে যে কুরআনে বেশি পারদর্শী ছিল তাকে সম্মুখে (কিবলার দিকে) রাখ। বর্ণনাকারী বলেন, আমার পিতাও মারা যান। তাকে দু‘জনের সামনে রাখা হয়। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৫৬০)
পরামর্শ করা
আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, বদর যুদ্ধকালে যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে আসা হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এসব বন্দীর ব্যাপারে তোমাদের কি মত? এরপর রাবী দীর্ঘ ঘটনা বর্ণনা করেন। যঈফ, ইরওয়া (৫/৪৭-৪৮)।
বন্দীর লাশের কোন বিনিময় নেই
ইবনু আব্বাস (রাঃ) একদা মুশরিকরা তাদের এক মুশরিকের লাশ কিনতে চাইল। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের নিকটে লাশ বিক্রয় করতে অস্বীকার করেন। সনদ দুর্বল।
যুদ্ধক্ষেত্র হতে পালানো
ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের একটি বাহিনী অভিযানে পাঠান। (শত্রুর আক্রমণে) এক পর্যায়ে আমাদের কিছু লোক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আমরা মাদীনায় ফিরে এসে (লজ্জায়) আত্মগোপন করে থাকলাম আর (মনে মনে) বললাম, আমরা ধ্বংস হয়ে গেছি। তারপর আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে তাঁকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা (যুদ্ধক্ষেত্র হতে) পলায়নকারী। তিনি বললেনঃ বরং তোমরা (নিজেদের ইমামের কাছে) পুনঃপ্রত্যাবর্তনকারী এবং আমি তোমাদের দলের সাথেই আছি। যঈফ, ইরওয়া (১২০৩)।
শহীদ ব্যক্তিকে তার নিহত হওয়ার জায়গায় কবর দেওয়া
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমার ফুফু উহুদের যুদ্ধে আমার বাবার মৃতদেহ নিজেদের কবরস্থানে দাফনের উদ্দেশ্যে আনেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘোষক ঘোষণা করলেন, “শহীদদেরকে তাদের নিহত হওয়ার জায়গায় ফিরিয়ে আন”। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৫১৬)
সফর হতে প্রত্যাবর্তনকারীদের অভ্যর্থনা জানানো
সাইব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) তিনি বলেন, তাবূকের যুদ্ধশেষে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফিরে আসলে জনগণ তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর উদ্দেশ্যে সানিয়্যাতুল বিদা পর্যন্ত এগিয়ে যায়। সাইব (রাঃ) বলেন, জনগণের সাথে আমিও এগিয়ে গেলাম। আমি তখন বালক ছিলাম। সহীহ্, বুখারী
ফাই প্রসঙ্গে
মালিক ইবনু আওস ইবনু হাদাসান (রহঃ) তিনি বলেন, উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ ফাই হিসাবে আল্লাহ তাঁর রাসূলকে যেসব সম্পদ দিয়েছিলেন, তার মধ্যে নাযীর গোত্র হতে প্রাপ্ত সম্পদও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তা অর্জনের লক্ষ্যে মুসলমানরা না ঘোড়া দৌঁড়িয়েছে আর না উট হাঁকিয়েছে (বিনা যুদ্ধে অর্জিত)। বিশেষভাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য এই সম্পদ নির্দিষ্ট ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই সম্পদ হতে তাঁর পরিবার-পরিজনের সাংবাৎসরিক ভরণ-পোষণের যোগাড় করতেন এবং বাকী সম্পদ আল্লাহ্ তা‘আলার পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে ঘোড়া ও যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে খরচ করতেন। সহীহ্, মুখতাসার শামাইল (৩৪১), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৬২৪-২৬২৬), নাসা-ঈ