23. আহার ও খাদ্যদ্রব্য
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিসের উপর রেখে খাবার খেতেন?
আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনও উচ্চ দস্তরখানে (টেবিলে) বসে এবং (বিভিন্ন প্রকার চাটনি ও হজমির) ছোট ছোট পেয়ালায় নিয়ে খাননি। কখনো তাঁর জন্য পাতলা রুটি বানানো হয়নি। কাতাদা (রহঃ)-কে আমি (ইউনুস) প্রশ্ন করলাম, তাহলে কিসের উপর (থালা) রেখে তাঁরা খাওয়া-দাওয়া করতেন? তিনি বললেন, চামড়ার এই সাধারণ দস্তরখানা বিছিয়ে তার উপর। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৯২), বুখারী
খরগোশের গোশত খাওয়া
হিশাম ইবনু যাইদ (রহঃ) তিনি বলেন, আনাস (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি, আমরা একটি খরগোশকে মাররায-যাহরানে তাড়া করলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণ এর পিছু ধাওয়া করলেন। আমি এর নাগালে পৌঁছে তা ধরে ফেললাম। আমি আবূ তালহা (রাঃ)-এর সামনে খরগোশটি নিয়ে আসলে তিনি একটি ধারালো পাথর দিয়ে তা যবেহ করেন। তিনি আমাকে এর ঊরু অথবা নিতম্বের গোশত দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পাঠালে তিনি তা খেলেন। আমি (হিশাম) প্রশ্ন করলাম, তিনি কি তা খেয়েছেন? আনাস (রাঃ) বললেন, তিনি তা গ্রহণ করেছেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৪৩), নাসা-ঈ
গুইসাপ খাওয়া সম্পর্কে
ইবনু উমার (রাঃ) গুইসাপ খাওয়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ আমি তা খাই না এবং তা হারামও বলি না। সহীহ্, নাসা-ঈ
দাবু (ভালুক) খাওয়া প্রসঙ্গে
ইবুন আবী আম্মার (রহঃ) তিনি বলেন, আমি জাবির (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, দাবু কি শিকারযোগ্য প্রাণী? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি আবার বললেন, আমি কি তা খেতে পারি? জাবির (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ। প্রশ্নকারী আবার প্রশ্ন করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি তা বলেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৩৬) খুযাইমা ইবনু জাযয়ি (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকটে ভালুক খাওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ ভালুক কেউ খায় নাকি? আমি তাঁকে নেকড়ে বাঘ খাওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ কোন উত্তম লোক নেকড়ে বাঘ খায় নাকি? যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩২৩৭)।
ঘোড়ার গোশত খাওয়া প্রসঙ্গে
জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে ঘোড়ার গোশত খাইয়েছেন এবং আমাদেরকে গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। সহীহ্, ইরওয়া (৮/১৩৮) মুসলিম ও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
গৃহপালিত গাধার গোশত প্রসঙ্গে
আলী (রাঃ) তিনি বলেন, খাইবারের (যুদ্ধের) সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহিলাদের সাথে মুতআ বিয়ের সম্পর্ক স্থাপন করতে এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৯৬১), নাসা-ঈ আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, খাইবারের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে কোন প্রকারের শিকারী দাঁতযুক্ত হিংস্র প্রাণী, চাঁদমারির (নিশানার) লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে হত্যা করা প্রাণী (মুজাসসামা) এবং গৃহপালিত গাধা হারাম ঘোষণা করেছেন। হাসান সহীহ্, সহীহা (৩৫৮, ২৩৯১), ইরওয়া (২৪৮৮)
কাফিরদের পাত্রে খাওয়া
আবূ সা’লাবা (রাঃ) তিনি বলেন, মাজূসীদের (অগ্নি উপাসক) হাঁড়ি-পাতিল সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হল। তিনি বললেনঃ এগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে নাও, তারপর এগুলো রান্নার কাজে লাগাও। শিকারী দাঁতযুক্ত হিংস্র প্রাণী তিনি নিষিদ্ধ করেছেন। সহীহ্, (১৫৬০) নং হাদীস পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। আবূ সা’লাবা আল-খুশানী (রাঃ) তিনি বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল!(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমরা আহ্লে কিতাবের লোকালয়ে বাস করি, তাদের হাঁড়ি-পাতিলে রান্না করি এবং তাদের থালা-বাটি পানাহারের কাজে লাগাই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এদেরগুলো ব্যতীত অন্য ব্যবস্থা করতে না পারলে তবে পানি দিয়ে এগুলো ধুয়ে নাও। তিনি আবার বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! শিকারের পশু পাওয়া যায় এমন এলাকায় আমরা বসবাস করি, আমরা কি করব? তিনি বললেনঃ তুমি শিকারের উদ্দেশ্যে তোমার শিকারী কুকুর ছেড়ে থাকলে এবং সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলার নাম নিয়ে থাকলে সে শিকার ধরে হ্ত্যা করে ফেললে তুমি তা খেতে পার। কুকুরটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হলে তবে এর শিকার যবেহ করার সুযোগ পাওয়া গেলে তা খাও। তুমি তোমার তীর নিক্ষেপ করলে এবং সাথে সাথে আল্লাহ্ তা‘আলার নাম নিলে তা শিকারকে মেরে ফেললেও তা খেতে পার। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২০৭), নাসা-ঈ
ঘিয়ের পাত্রে ইঁদুর পড়ে মারা গেলে
মাইমূনা (রাঃ) কোন এক সময় ঘিয়ের মধ্যে একটি ইঁদুর পড়ে মারা গেল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেনঃ ইঁদুরটি তুলে ফেল এবং চারপাশের ঘিও ফেলে দাও, তারপর তা খাও। সহীহ্, বুখারী (২৩৫)
বাম হাতে খাওয়া ও পান করা নিষিদ্ধ
ইবনু উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বাম হাতে যেন তোমাদের কেউ না খায় এবং পান না করে। কেননা বাম হাতে শাইতান পানাহার করে। সহীহ্, সহীহা (১২৩৬), মুসলিম সালিম (রহঃ) হতে তার পিতা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকে যেন খাওয়ার সময় ডান হাতে খায় এবং ডান হাতে পান করে। কারণ বাম হাতে শাইতান পানাহার করে। সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস
খাওয়ার পর আঙ্গুল চেটে খাওয়া
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকে যেন খাওয়ার শেষে তার আঙ্গুল চাটে। কেননা তার জানা নেই যে, খাবারের কোন ভাগে বারাকাত নিহিত রয়েছে। সহীহ্, রাওযুন নাযীর (১৯), মুসলিম
খাবারের লোকমা নিচে পড়ে গেলে
জাবির (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি কারো খাবারের লোকমা নিচে পড়ে যায় তাহলে সে যেন সন্দেহজনক জিনিস (ময়লা) দূর করে তা খেয়ে নেয় এবং তা যেন শাইতানের জন্য ফেলে না রাখে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৭৯), মুসলিম আনাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাওয়ার পরে তাঁর তিনটি আঙ্গুল চাটতেন। তিনি বলতেনঃ তোমাদের কারো খাবারের লোকমা নিচে পড়ে গেলে সে যেন তার ময়লা দূর করে তা খেয়ে নেয় এবং শাইতানের জন্য তা ফেলে না রাখে। (বর্ণনাকারী বলেন,) আমাদেরকে তিনি থালাও চেটে খাওয়ার জন্যে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেনঃ তোমাদের খাদ্যের কোন্ অংশে বারকাত রয়েছে তা তোমাদের জানা নেই। সহীহ্, মুখাতাসার শামা-ইল (১২০), মুসলিম উম্মু আসিম (রহঃ) তিনি বলেন, একদা নুবাইশা আল-খাইর (রাঃ) আমাদের নিকটে এলেন, আমরা একটি পাত্রে খাবার খাচ্ছিলাম। তিনি আমাদের নিকটে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি পাত্রে খাবার পর তা চেটে খেলে পাত্রটি তার জন্য (আল্লাহ তা‘আলার নিকটে) ক্ষমা প্রার্থনা করে। যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩২৭১)।
পাত্রের মধ্যখান হতে খাওয়া মাকরূহ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ খাদ্যের মাঝখানে বারকাত নাযিল হয় অতএব তোমরা এর কিনারা হতে খাওয়া আরম্ভ কর, মাঝখান হতে খেও না সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৭৭)
পিঁয়াজ-রসুন (রান্না ব্যতীত) খাওয়া মাকরূহ
জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে এটা হতে খেলো, বর্ণনানুসারে তিনি প্রথম বার রসুনের কথা বলেছেন, তারপর বলেছেনঃ রসুন, পিয়াজ ও একইরকম দুর্গন্ধ যুক্ত জিনিস খেলো, সে আমাদের মাসজিদের নিকটেও যেন না আসে। সহীহ্, ইরওয়া (৫৪৭), মুসলিম সিমাক ইবনু হারব (রাঃ) জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ)-কে তিনি বলতে শুনেছেন, আবূ আইয়্যূব আনসারী (রাঃ)-এর বাড়ীতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পদার্পণ করেন। তিনি খাওয়া-দাওয়ার পর (নিত্য দিনের অভ্যাস মতো) বাকী খাবার আবূ আইয়্যূব আনসারীকে দিতেন। একদিন তিনি খাবার পাঠান। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা হতে মোটেও খাননি। আবূ আইয়্যূব (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে এর কারণ জানতে চাইলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এর মধ্যে রসুন আছে। তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল!(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা কি হারাম? তিনি বললেনঃ না, তবে আমি এর দুর্গন্ধের কারণে তা অপছন্দ করি। সহীহ্, ইরওয়া (২৫১১), মুসলিম
রসুন রান্না করে খাওয়ার অনুমতি প্রসঙ্গে
আলী (রাঃ) তিনি বলেন, রসুন রান্না না করে (কাঁচা) খেতে নিষেধ করা হয়েছে। সহীহ্, ইরওয়া (২৫১২) আলী (রাঃ) তিনি বলেনঃ রান্না করা ব্যতীত রসুন খাওয়া ঠিক নয়। যঈফ, প্রাগুক্ত। উম্মু আইয়্যূব (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের মেহমান হলেন। তারা তাঁর জন্য সুস্বাদু খাবার রান্না করেন। তার মধ্যে এই (পিয়াজ-রসুনের) সবজীরও কিছু অংশ ছিল। তিনি তা খেতে অপছন্দ করলেন। তিনি তাঁর সাহাবীদের বললেনঃ তোমরা এটা খাও। আমি তোমাদের কারো মতো নই। আমার আশংকা হচ্ছে (এটা খাওয়ার কারণে) আমার সাথীকে (ফেরেশতার) কষ্টে ফেলতে পারি হাসান, ইবনু মা-জাহ (৩৩৬৪) আবূল আলিয়া তিনি বলেনঃ রসুন হালাল খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত। সনদ দুর্বল ও বিচ্ছিন্ন। আবূ খালদার নাম খালিদ ইবনু দীনার। হাদীস বিশারদদের নিকট তিনি বিশ্বস্থ রাবী। তিনি আনাস ইবনু মালিকের দেখা পেয়েছেন এবং তার নিকট হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূল আলিয়ার নাম রুফাঈ আর-রিযাহী। আব্দুর রহমান ইবনু মাহদী বলেন, আবূ খালদাহ একজন উত্তম মুসলিম ছিলেন।
শোয়ার সময় পাত্রের মুখ ঢেকে রাখা এবং আগুন ও বাতি নিভিয়ে দেওয়া
জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা (শোয়ার আগে) ঘরের দরজা বন্ধ করে দিও, পানির পাত্রের মুখ ঢেকে বা বেঁধে দিও, থালাগুলো উপুর করে রেখ অথবা ঢেকে দিও এবং আলো নিভিয়ে দিও। কেননা শাইতান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। মশকের বন্ধ মুখ উদম করতে পারে না এবং পাত্রের মুখ খুলতে পারে না। (আলো না নিভালে) মানুষের ঘরে দুষ্টু ইঁদুর আগুন লাগিয়ে দেয়। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৪১), মুসলিম সালিম (রহঃ) হতে তার বাবা তিনি (আবদুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শোয়ার সময় তোমরা তোমাদের ঘরে আগুন জ্বালিয়ে রেখ না। সহীহ্, সহীহুল আদাব (৯৩৮), নাসা-ঈ
দু’টি খেজুর একসাথে খাওয়া মাকরূহ
ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, (একই থালায় একসথে খেতে বসলে) সাথীর সম্মতি ছাড়া একসাথে দু’টি খেজুর খেতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৩৩১), সহীহা (২৩২৩), নাসা-ঈ
খেজুর একটি উপকারী ও মানুষের খুব পছন্দের খাবার
আইশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ খেজুরহীন ঘরের মানুষেরা যেন অনাহারী। সহীহ্, সহীহা (১৭৭৬), মুসলিম
খাওয়া-দাওয়ার পর আল্লাহ তা‘আলার কাছে খাদ্যের জন্য প্রশংসা করা
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন কিছু খেয়ে অথবা কিছু পান করে বান্দাহ আল্লাহ্ তা‘আলার প্রশংসা করলে অবশ্যই তিনি তার উপর সন্তুষ্ট হন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৫১), মুসলিম
কুষ্ঠ রোগীর সাথে একত্রে খাওয়া
জাবির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক কুষ্ঠ রোগীর হাত ধরে তাকে নিজের সাথে একই পাত্রে খাওয়াতে বসান। অতঃপর তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলার নামে আল্লাহ্ তা‘আলার উপর আস্থা রেখে এবং (প্রতিটি ব্যাপারে) তার উপর ভরসা করে খাও। যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩৫৪২)।
মু’মিন খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে এক পাকস্থলী ভর্তি করে আর কাফির খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে সাতটি ভর্তি করে
ইবনু উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সাত পাকস্থলী ভর্তি করে কাফির খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে, আর একটিমাত্র পাকস্থলী ভর্তি করে মু’মিন খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৫৭), নাসা-ঈ আবূ হুরাইরা (রাঃ) একবার একজন কাফির রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাসায় মেহমান হন। তার জন্য একটি ছাগল দোহন করাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুকুম করেন। ছাগল দোহনের পর সে সবটুকু দুধ পান করে। আরেকটি ছাগল দোহন করলে সে তার দুধও পান করে। তৃতীয় ছাগল দোহন করলে সে তার দুধও পান করে। এরকমভাবে সে একটানা সাতটি ছাগলের দুধ পান করে শেষ করে ফেলে। পরের দিন সকালে সে ইসলাম ক্ববুল করে। তার জন্য একটি ছাগল দোহন করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুকুম দেন। ছাগল দোহনের পর সে তা পান করে। তার জন্য তিনি আরো একটি ছাগলের দোহন করতে হুকুম দেন। কিন্তু সে তা পান করে আর শেষ করতে পারল না। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মু’মিন লোক একটি পাকস্থলী ভর্তি করে খাদ্য গ্রহণ করে, আর কাফির লোক সাতটি পাকস্থলী ভর্তি করে খাদ্য গ্রহণ করে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৫৬), নাসা-ঈ
একজনের খাদ্যই দুইজন ব্যক্তির জন্য পর্যাপ্ত হতে পারে
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’জন ব্যক্তির খাদ্য তিনজনের জন্য পর্যাপ্ত এবং তিনজন ব্যক্তির খাদ্য চারজনের জন্য পর্যাপ্ত হতে পারে। সহীহ্, সহীহা(১৬৮৬), নাসা-ঈ
ফরিং (এক প্রকার পতঙ্গ) খাওয়া প্রসঙ্গে
আবদুল্লাহ ইবনু আবী আওফা (রাঃ) ফরিং (খাওয়া) প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি ছয়টি যুদ্ধে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে অংশগ্রহণ করেছি। আমরা ফরিং খেয়েছি। সহীহ্, নাসা-ঈ ইবনু আবী আওফা (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা সাতটি যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে অংশগ্রহণ করেছি। এ সময় আমরা ফরিং খেয়েছি। সহীহ্, নাসা-ঈ
কীট-পতঙ্গকে বদদু‘আ করা
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তারা উভয়ে বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পঙ্গপালকে বদদু‘আ করলে এভাবে বলতেনঃ “হে আল্লাহ! পঙ্গপালকে ধ্বংস করুন, এদের বড়গুলোকে হত্যা করুন, ছোটগুলোকে ধ্বংস করুন, এর ডিমগুলো বিনষ্ট করুন এবং তা সমূলে নিশ্চিহ্ন করুন, আমাদের জীবনযাত্রার উপকরণ ও রিযিক হতে সেগুলোর মুখ ফিরিয়ে রাখুন। অবশ্যই আপনি দু‘আ শ্রবণকারী”। তখন এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কিভাবে আল্লাহ্ তা‘আলার সৈন্যবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত একটি দলের মূলোচ্ছেদের জন্য দু‘আ করতে পারেন? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ওগুলো হচ্ছে সমুদ্রের মাছের ঝাঁকের ন্যায়।
জাল্লালার গোশত খাওয়া ও দুধ পান করা সম্পর্কে
ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, জাল্লালার (পায়খানা খেতে অভ্যস্ত গৃহপালিত প্রাণী) গোশত খেতে ও তার দুধ পান করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৮৯) ইবনু আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষিদ্ধ করেছেনঃ চাঁদমারির (নিশানার) লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে তীর মেরে হত্যা করা প্রাণী খেতে, জাল্লালার (পায়খানা খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়া পশু) দুধ পান করতে এবং কলসের মুখে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে। সহীহ্, ইরওয়া(২৫০৩), সহীহা (২৩৯১)
মুরগীর গোশত খাওয়া
যাহ্দাম আল-জারমী (রহঃ) তিনি বলেন, আমি আবূ মূসা (রাঃ)-এর সামনে গেলাম। তিনি তখন মুরগীর গোশত খাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, আমার সামনে এগিয়ে এসো এবং খাবারে অংশগ্রহণ কর। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি মুরগীর গোশত খেতে দেখেছি। সহীহ্, ইরওয়া (২৪৯৯), নাসা-ঈ আবূ মূসা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি মোরগের গোশত ভক্ষণ করতে দেখেছি। সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস।
হুবারার গোশত খাওয়া
ইবরাহীম ইবনু উমার ইবনু সাফীনা (রাঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে সাফীনা (রাঃ) বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাথে হুবারার গোশত খেয়েছি। যঈফ, ইরওয়া (২৫০০)। আবূ ঈসা বলেছেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উল্লেখিত সনদসূত্রেই উক্ত হাদীস জেনেছি। ইবনু আবূ ফুদাইক (রহঃ) ইবরাহীম (বুরাইদ ইবনু উমার ইবনু সাফীনাহ বলেও কথিত) ইবনু উমার ইবনু সাফীনার সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
ভুনা গোশত (কাবাব) খাওয়া
উম্মু সালামা (রাঃ) তিনি (ছাগলের) পাঁজরের ভুনা গোশত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে রাখলেন। তিনি তা হতে খেলেন, তারপর নামাযে দাঁড়িয়ে গেলেন কিন্তু (আবার) ওযূ করেননি। সহীহ্, মুখতাসার শামা-ইল (১৩৮)
হেলান দিয়ে বসে খাবার খাওয়া মাকরূহ
আবূ জুহাইফা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি হেলান দিয়ে কখনো খাবার খাই না। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৬২), বুখারী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিষ্টি জাতীয় খাদ্য ও মধু পছন্দ করতেন
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিষ্টি ও মধু পছন্দ করতেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৩২৩), নাসাঈ।
তরকারিতে ঝোলের পরিমাণ বেশি রাখা
আলকামা ইবনু আবদুল্লাহ আল-মুযানী (রহঃ) হতে তার পিতা তিনি (আবদুল্লাহ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ গোশত কিনলে (রান্নার সময়) সে যেন তাতে বেশী ঝোল রাখে। কারো ভাগে গোশত না পড়লেও সে যেন অন্তত ঝোল খেতে পায়। এটাও গোশতের অন্তর্ভুক্ত। যঈফ, যঈফা (২৩৪১)। আবূ যার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ন্যায়সংগত ও কল্যাণকর কাজের কোন বিষয়কেই যেন তোমাদের কেউ তুচ্ছ মনে না করে। সে (ভাল করার মতো) কিছু না পেলে অন্তত তার ভাইয়ের সাথে যেন হাসিমুখে মিলিত হয়। তুমি গোশত কিনে তা অথবা অন্য কিছু রান্না করার সময় তাতে ঝোলের পরিমাণ বেশি রাখবে এবং তোমার প্রতিবেশীকেও তা হতে এক আঁজলা দিবে। সহীহ্, মুসলিম (৮/৩৭), পৃথকভাবে, সহীহা (১৩৬৮), তা’লীকুর রাগীব (৩/২৬৪)
সারীদের বিশিষ্টতা
আবূ মূসা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পুরুষদের মধ্যে অনেক কামিল ব্যক্তি এসেছে। কিন্তু ইমরান-কন্যা মারইয়াম (আঃ) এবং ফির‘আউনের স্ত্রী আসিয়া (রাঃ)-এর মতো আর কোন কামিল লোক মহিলাদের মধ্যে আসেনি। অন্য সব খাবারের চাইতে সারীদের যেমন বেশি মর্যাদা (অগ্রাধিকার) রয়েছে, তেমনি মহিলাদের উপর আইশা (রাঃ)-এরও একইরকম মর্যাদা রয়েছে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৮০), নাসাঈ
গোশত দাঁত দিয়ে ভাল করে চিবিয়ে খাওয়া
আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমার পিতা (হারিস) আমাকে বিয়ে করিয়ে দেন। এ উপলক্ষে তিনি কিছু লোককে দাওয়াত করেন। তাদের মধ্যে সাফওয়ান ইবনু উমাইয়া (রাঃ)-ও ছিলেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গোশত দাঁত দিয়ে ছিড়ে ছিড়ে বা কেটে কেটে খাও। কেননা তা খুবই সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক। যঈফ, যঈফা (২১৯৩)।
গোশত ছুরি দিয়ে কেটে কেটে খাওয়ার সম্মতি প্রসঙ্গে
জাফর ইবনু আমর ইবনু উমাইয়া আয-যাম্রী (রহঃ) হতে তার বাবা তিনি (আমর ইবনু উমাইয়া) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ছুরি দিয়ে একটি ছাগলের কাঁধের (রান্না করা) গোশত কাটতে এবং তা খেতে দেখেছেন। তারপর তিনি নামায আদায়ের জন্য চলে গেলেন কিন্তু (নতুন করে) ওযূ করেননি। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৪৯০), নাসাঈ।
কোন্ ধরণের গোশত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বেশি পছন্দনীয় ছিল ?
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য গোশত আনা হল এবং তাঁকে বাহুর গোশত পরিবেশন করা হল। তিনি বাহুর গোশতই বেশি পছন্দ করতেন। তিনি তা দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে চিবিয়ে খেলেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৩০৭), বুখারী ও মুসলিম আইশা (রাঃ) তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকটে বাহুর গোশত অন্য সব অংশের গোশতের চেয়ে বেশী প্রিয় ছিল তা নয়, বরং প্রকৃত ব্যাপার এই যে, অনেক দিন পরপর তিনি গোশত খাওয়ার সুযোগ পেতেন। এজন্যই তাঁকে বাহুর গোশত পরিবেশন করা হত। কেননা বাহুর গোশত তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয় এবং গলে যায়। মুনকার, মুখতাসার শামায়িল (১৪৪)।
সিরকার বর্ণনা
জাবির (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (টক ও ঝাঁজযুক্ত পানীয়) কতই না উত্তম তরকারী! সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৩১৬, ৩৩১৭), মুসলিম আইশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সিরকা কতই না উত্তম তরকারী! সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৩১৬, ৩৩১৭), মুসলিম আবূ তালিবের কন্যা উম্মু হানী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার ঘরে এসে বললেনঃ তোমাদের (খাওয়ার মতো) কিছু আছে কি? আমি বললাম, কয়টি শুকনা রুটির টুকরা এবং সিরকা ব্যতীত আর কিছু নেই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ (আমাকে) তা-ই দাও। যে ঘরে সিরকা রয়েছে সে ঘর তরকারিশূন্য নয়। হাসান, “সহীহাহ্” (২২২০) জাবির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সিরকা কতই না উত্তম তরকারি! সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৩১৭)
তরমুজ খেজুরের সাথে একত্রে খাওয়া
আইশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তরমুজ তাজা খেজুরের সাথে একত্রে খেতেন। সহীহ্, “সহীহাহ্” (৫৭), মুখতাসার শামা-ইল (১৭০)
শসা খেজুরের সাথে একত্রে খাওয়া
আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শসা খেজুরের সাথে একত্রে খেতেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৩২৫)
উটের প্রস্রাব পান করা প্রসঙ্গে
আনাস (রাঃ) উরাইনা হতে কয়েকজন লোক মাদীনায় আসল। এ অঞ্চলের আবহাওয়া তাদের স্বাস্থ্যের অনুকূল না হওয়ায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে সাদকার উটের এলাকায় পাঠিয়ে দেন এবং বলেনঃ তোমরা এর দুধ ও প্রস্রাব পান কর। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৫৭৮), বুখারী ও মুসলিম
খাওয়ার আগে ও পরে ওযূ করা
সালমান (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমি তাওরাত কিতাবে পড়েছি, খাওয়ার পর ওযূ করার মধ্যেই খাওয়ার বারকাত আছে। আমি ব্যাপারটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকটে বললাম এবং আমি তাওরাত কিতাবে যা পড়েছি তাও তাঁকে জানালাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ খাওয়া-দাওয়ার আগে ও পরে ওযূ করার মধ্যেই বারকাত আছে। যঈফ, যঈফা (১৬৮), মুখতাসার, শামায়িল (১৫৯)।
খাওয়ার আগে ওযূ না করার সম্মতি প্রসঙ্গে
ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পায়খানা হতে বেরিয়ে এলেন। তাঁর সামনে খাবার আনা হল। লোকেরা বলল, আমরা কি আপনার জন্যে ওযূর পানি আনবো? তিনি বললেনঃ আমাকে নামাযে দাঁড়ানোর জন্য ওযূর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সহীহ্, মুখতাসার শামা-ইল (১৫৮), মুসলিম
খাওয়ার সময় বিসমিল্লাহ বলা
ইকরাশ ইবনু যুয়াইব (রাঃ) তিনি বলেছেন, মুররা ইবনু উবাইদ গোত্রের লোকেরা তাদের ধন-সম্পদের যাকাতসহ আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকটে পাঠায়। আমি মাদীনায় গিয়ে তাঁর নিকটে হাযির হলাম। তখন আমি তাঁকে মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে বসা অবস্থায় পেলাম। তিনি আমার হাত ধরে উম্মু সালামা (রাঃ)-এর ঘরে নিয়ে যান। তিনি প্রশ্ন করেনঃ কোন খাবার আছে কি? আমাদের সামনে একটি বড় পিয়ালা আনা হল। এর মধ্যে গোশতের টুকরা ও সারদ (ঝোলে ভিজানো রুটি) ভর্তি ছিল। আমরা তা থেকে খেতে লাগলাম। আমি পাত্রের এদিক-সেদিক থেকে নিয়ে খাচ্ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সামনে থেকে নিয়ে খাচ্ছিলেন। তিনি তাঁর বাঁ হাত দিয়ে আমার ডান হাত ধরে বললেনঃ হে ইকরাশ! এক জায়গা হতে খাও। কেননা সম্পূর্ণটাই একই খাদ্য। তারপর আমাদের সামনে আরেকটি পিয়ালা আনা হল। এর মধ্যে বিভিন্ন রকমের কাঁচা-পাকা খেজুর ছিল। আমি আমার সামনে থেকেই খেতে থাকলাম। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাত্রের এদিক-সেদিক থেকে নিয়ে খাচ্ছিলেন। তিনি বললেনঃ হে ইকরাশ! তুমি পাত্রের যে কোন জায়গা হতে খেতে পার। কেননা সব খেজুর এক রকম নয়। তারপর আমাদের জন্য পানি দেয়া হল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উভয় হাত ধুলেন এবং ভিজা হাত দিয়ে নিজের মুখমণ্ডল, দুই হাত ও মাথা মুছলেন। তারপর তিনি বললেনঃ হে ইকরাশ! আগুন যে জিনিস পরিবর্তন করে দিয়েছে (তা খাওয়ার পর) এটাই হল ওযূ। যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩২৪০)।
কদুর (লাউ-এর) তরকারি খাওয়া প্রসঙ্গে
আবূ তালুত (রহঃ) তিনি বলেছেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর নিকটে গেলাম। তিনি তখন কদুর তরকারী খাচ্ছিলেন আর বলছিলেন, হে কদু গাছ, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাকে পছন্দ করতেন বলেই আমি তোমাকে পছন্দ করি। সনদ দুর্বল। এ অনুচ্ছেদে হাকীম ইবনু জাবির (রাঃ) হতে তার পিতার সূত্রে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেছেন, উল্লেখিত সনদসূত্রে এ হাদীসটি গারীব। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কদুর তরকারি পেয়ালা হতে বেছে বেছে উঠিয়ে খেতে দেখেছি। তাই আমিও সবসময় কদুর তরকারি পছন্দ করি। সহীহ্, বুখারী ও মুসলিম।
যাইতূনের তেল খাওয়া প্রসঙ্গে
যাইদ ইবনু আসলাম (রহঃ) হতে তার পিতা উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা (যাইতূনের) তেল খাও এবং তা শরীরে মালিশ কর। কেননা এটা বারকাত ও প্রাচুর্যময় গাছের তেল। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৩১৯) আবূ উসাইদ (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যাইতূনের তেল খাও এবং তা শরীরে মালিশ কর। কেননা এটি একটি কল্যাণময় গাছের তেল। পূর্বের হাদীসের সহায়তায় সহীহ্
নিজ খাদিমের সাথে একত্রে খাবার খাওয়া
আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কারো খাদিম তার জন্য খাবার বানানোর সময় তাকে এর গরম ও ধোঁয়া সহ্য করতে হয়। সে যেন তার (খাদিমের) হাত ধরে তাকে নিজের সাথে একত্রে খেতে বসায়। সে (খাদিম) তার সাথে একত্রে বসে খেতে সম্মত না হলে (সংকোচ বোধ করলে) তবে সে যেন তার মুখে অন্তত একটি লোকমা তুলে দেয়। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৮৯, ৩২৯০), বুখারী
খাবার খাওয়ানোর সাওয়াব
আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সালাম আদান-প্রদানের ব্যাপক প্রসার ঘটাও, অন্যকে খাবার খাওয়াও এবং মাথার উপর আঘাত কর (জিহাদ কর) যাতে জান্নাতসমূহের উত্তরাধিকারী হতে পার। যঈফ, ইরওয়া (৩/২৩৮), যঈফা (১৩২৪)। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা দয়াময় রাহমানের ইবাদাত কর, (মানুষকে) খাবার খাওয়াও এবং সালামের অধিক প্রচলন ঘটাও, তবেই নিরাপদে জান্নাতে যেতে পারবে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৬৯৪)
রাতের খাবারের গুরুত্ব
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা অবশ্যই রাতের খাবার খাবে তা একমুঠ খেজুর হলেও। কেননা রাতের খাবার বাদ দেয়া বার্ধক্যের কারণ। যঈফ, যঈফা (১১৬)।
খাওয়ার সময় বিসমিল্লাহ বলা
উমার ইবনু আবূ সালামা (রাঃ তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে আসলেন। তখন তাঁর সামনে খাবার বিদ্যমান ছিল। তিনি বললেনঃ হে বৎস! এগিয়ে আস, বিসমিল্লাহ বল, ডান হাত দিয়ে খাও এবং তোমার সামনের খাদ্য হতে খাও। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৬৭), ইরওয়া (১৯৬৮), বুখারী ও মুসলিম “এগিয়ে আস” বাক্য ব্যতীত। আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কোন ব্যক্তি খাওয়া শুরু করে তখন যেন সে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে। সে খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে তবে যেন বলে, “বিসমিল্লাহ ফী আওয়ালিহি ওয়া আখিরাহু” (এর শুরু ও শেষ আল্লাহ তা’আলার নামে)। সহীহ্, ইরওয়া (১৯৬৫), তা’লীকুর রাগীব (৩/১১৫-১১৬), তাখরীজ-কালিমুত তাইয়্যিব (১১২)
খাওয়া-দাওয়া শেষে হাতের চর্বি পরিষ্কার না করে রাত অতিবাহিত করা মাকরূহ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শাইতান ঘ্রাণ অনুভব করতে খুবই দক্ষ এবং লোভী। তোমরা নিজেদের ব্যাপারে এই শাইতান হতে সতর্ক হও। কোন ব্যক্তি খাদ্যের চর্বি ইত্যাদির ঘ্রাণ হাত থেকে দূর না করে রাত যাপন করলে এবং এতে তার কোন ক্ষতি হলে সে এজন্য নিজেকেই যেন তিরস্কার করে। মাওযু, যঈফা (৫৫৩৩) রাওয়ুন নাখীর (২/২২৫)। আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক নিজের হাতে (গোশত ইত্যাদি) খাবারের ময়লা নিয়ে রাত অতিবাহিত করল এবং তাতে তার কোন প্রকার ক্ষতি হলে সে যেন নিজেকেই তিরস্কার করে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২৯৭)