24. পানপাত্র ও পানীয়

【1】

মদ পানকারী প্রসঙ্গে

ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সকল প্রকারের নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্য মদের অন্তর্ভূক্ত এবং সকল নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্যই হারাম। পৃথিবীতে যে লোক মদ পান করে এবং মদ পানে আসক্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে সে পরকালে তা পান করতে পারবে না। সহীহ্‌, ইরওয়া (৮/৪১) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মদ পানকারী ব্যক্তির চল্লিশ দিনের নামায ক্ববূল করা হয় না। সে তাওবা করলে তবে আল্লাহ তা’আলা তার তাওবা ক্ববূল করেন। যদি আবার সে মদ পান করে তাহলে আল্লাহ তা’আলা তার চল্লিশ দিনের নামায ক্ববূল করেন না। যদি সে তাওবা করে তাহলে আল্লাহ তা’আলা তার তাওবা গ্রহণ করেন। সে যদি আবার মদ পানে লিপ্ত হয় তাহলে তার চল্লিশ দিনের নামায আল্লাহ তা’আলা গ্রহণ করেন না। যদি সে তাওবা করে আল্লাহ তা’আলা তার তাওবা কবূল করেন। সে চতুর্থ বারে মদ পানে জড়িয়ে পড়লে আল্লাহ তা’আলা তাঁর চল্লিশ দিনের নামায গ্রহণ করেন না। যদি সে তাওবা করে আল্লাহ তা’আলা তার তাওবা ক্ববূল করবেন না এবং তাকে ‘নাহ্‌রুল খাবাল’ হতে পান করাবেন। প্রশ্ন করা হল, হে আবূ আবদুর রাহমান (ইবনু উমার)! খাবাল নামক ঝর্নাটি কি? তিনি বললেন, জাহান্নামীদের পূঁজের ঝর্ণা। সহীহ্‌, ইবনু মাজাহ্‌ (৩৩৭৭)।

【2】

সকল প্রকারের নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্যই হারাম

আইশা (রাঃ) মধু দ্বারা বানানো মদ সম্বন্ধে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ সকল প্রকারের নেশা সৃষ্টিকারী পানীয়ই হারাম। সহীহ্‌, ইবনু মাজাহ্‌ (৩৩৮৬), বুখারী ও মুসলিম। ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ সকল প্রকারের নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্যই হারাম। সহীহ্‌, ইবনু মাজাহ্‌ (৩৩৮৭), মুসলিম।

【3】

যে দ্রব্য পরিমাণ বেশি হলে নেশার সৃষ্টি করে তার অল্প পরিমানও হারাম

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে দ্রব্যের বেশি পরিমাণ (পান করলে) নেশার সৃষ্টি করে, তার অল্প পরিমাণও (পান করা) হারাম। হাসান সহীহ, ইবনু মাজাহ্‌ (৩৩৯৩)। আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সকল প্রকার নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্য হারাম। যে দ্রব্যের এক ‘ফারাক’ (মশক) পরিমাণ (পানে) নেশা সৃষ্টি হয় তার এক আঁজল পরিমাণও হারাম। সহীহ্‌, ইরওয়া (২৩৭৬)।

【4】

মাটির কলসে বানানো নাবীয সম্পর্কে

তাঊস (রাহঃ) ইবনু উমার (রাঃ)-এর নিকট একজন লোক এসে প্রশ্ন করল, সবুজ কলসে বানানো নাবীয পান করতে কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তাঊস (রাহঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলার শপথ! আমি এটা ইবনু উমার (রাঃ)-এর নিকটেই শুনেছি। সহীহ্‌, মুসলিম।

【5】

দুব্বা, নাকীর ও হানতামে নাবীয বানানো মাকরূহ

আমর ইবনু মুররা (রাহঃ) তিনি বলেন, আমি যাযানকে বলতে শুনেছি, ইবনু উমার (রাঃ)-কে আমি প্রশ্ন করলাম, কোন কোন ধরনের পাত্র ব্যবহার করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন এ বিষয়ে আমাকে আপনাদের ভাষায় জানিয়ে দিন এবং তা আমাদের ভাষায় ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিন। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘হানতামাহ’ ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। এটা মাটি দ্বারা বানানো এক প্রকার সবুজ কলস। ‘দুব্বা’ ব্যবহার করতেও তিনি নিষেধ করেছেন। এটা কদুর খোল দ্বারা বানানো পাত্রবিশেষ। তিনি ‘নাকীর’-এর ব্যবহারকেও নিষেধ করেছেন। এটা খেজুর গাছের মূল-কান্ড খুঁড়ে বানানো কাঠের পাত্রবিশেষ। তিনি ‘মুযাফফাত’ ব্যবহার করতেও নিষেধ করেছেন। এটা আলকাতরার প্রলেপযুক্ত পাত্রবিশেষ। তিনি মশকের মধ্যে নাবীয বানানোর আদেশ করেছেন। সহীহ্‌, সহীহা (২৯৫১), মুসলিম।

【6】

উল্লেখিত পাত্রসমূহে নাবীয বানানোর সম্মতি প্রসঙ্গে

সুলাইমান ইবনু বুরাইদা (রাহঃ) হতে তার বাবা তিনি (বুরাইদা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি এসব পাত্র কাজে লাগাতে তোমাদেরকে নিষেধ করেছিলাম। প্রকৃতপক্ষে পাত্র কোন জিনিসকে হালালও করতে পারে না এবং হারামও করতে পারে না। তবে সকল প্রকারের নেশা সৃষ্টিকারী জিনিসই হারাম। সহীহ্‌, তা’লীক আলা ইবনি মাজাহ্‌, মুসলিম। জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদের পাত্রসমূহ ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। আনসারগণ তাঁর কাছে কিছু অসুবিধার কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের আর কোন পাত্র নেই। তিনি বললেনঃ আচ্ছা! তাহলে (এগুলো ব্যবহার করতে) আপত্তি নেই। সহীহ্‌, বুখারী।

【7】

(চামড়ার) মশকের মধ্যে নাবীয বানানো

আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা মশকের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য নাবীয (খেজুরের শরবত) বানাতাম। এর উপরিভাগে যে ছিদ্র ছিল দড়ি দ্বারা তা বেঁধে দেওয়া হত। আমরা সকালে তাঁর জন্য নাবীয বানাতাম। তিনি রাতে তা পান করতেন। আবার তাঁর জন্য আমরা রাতে নাবীয বানাতাম। তিনি ভোরে তা পান করতেন। সহীহ্‌, ইবনু মাজাহ্‌ (৩৩৯৮)।

【8】

যেসব শস্য, ফল ও পানীয় হতে মদ বানানো হয়

নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মদ বানানো হয় গম দিয়ে, মদ বানানো হয় যব দিয়ে, মদ বাননো হয় খেজুর দিয়ে, মদ বানানো হয় আঙ্গুর দিয়ে এবং মদ বানানো হয় মধু দিয়ে। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ্‌ (৩৩৭৯)। হাসান ইবনু আলী আল-খাল্লাল-ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু আদাম হতে তিনি ইসরাঈল (রাহঃ) হতে উপরের বর্ণিত হাদীসের মতোই হাদীস বর্ণনা করেছেন। সহীহ্‌, ইবনু মাজাহ্‌ (৩৩৭৯)। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) গম দিয়ে মদ উৎপাদন করা হয়... উপরের হাদীসের মতোই পরের বর্ণনা। সহীহ্‌, দেখুন পূর্বের হাদীস। আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দুইটি গাছের ফল দিয়ে মদ বানানো হয়-খেজুর ও আঙ্গুর। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ্‌ (৩৩৭৮), মুসলিম।

【9】

কাঁচা ও পাকা খেজুর মিশানো পানীয়

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কাঁচা ও পাকা খেজুর একসাথে মিশিয়ে নাবীয বানাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ্‌ (৩৩৯৫), বুখারী ও মুসলিম। আবূ সাঈদ (রাঃ) (নাবীয বানানোর উদ্দেশ্যে) কাঁচা ও পাকা খেজুর একসাথে মিশাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। তিনি কিশমিশ ও পাকা খেজুর একসাথে মিশাতেও নিষেধ করেছেন। মাটির কলসে নাবীয বানাতেও তিনি নিষেধ করেছেন। সহীহ্‌, মুসলিম (৬/৮৮, ৯৪)।

【10】

স্বর্ণের অথবা রুপার তৈরী পাত্রে পান করা নিষেধ

হাকাম (রাহঃ) তিনি বলেন, ইবনু আবী মাইলাকে আমি বর্ণনা করতে শুনেছি, হুযাইফা (রাঃ) পানি চাইলেন। একজন লোক তার জন্য রুপার পাত্রে পানি আনলেন। পাত্রটি তিনি ছুড়ে ফেলে দেন এবং বলেন, আমি এটা হতে তাকে বিরত থাকতে বলেছিলাম, কিন্তু সে বিরত থাকতে সম্মত হয়নি। স্বর্ণের অথবা রুপার পাত্রে পান করতে এবং রেশমী পোশাক পরতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। তিনি আরো বলেছেনঃ এ সকল জিনিস তাদের (কাফিরদের) জন্য দুনিয়াতে এবং তোমাদের জন্য আখিরাতে। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ্‌ (৩৪১৪), বুখারী ও মুসলিম।

【11】

দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় পানি পান করা নিষেধ

আনাস (রাঃ) যে কাউকে দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় পান করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। দাঁড়িয়ে খাওয়া-দাওয়া করার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ এটাতো অত্যধিক খারাপ। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ্‌ (৩৪২৪), মুসলিম। ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যামানায় আমরা হাঁটতে হাঁটতে খাবার খেতাম এবং দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় পানি পান করতাম। সহীহ্‌, মিশকাত (৪২৭৫)। আল-জারূদ ইবনুল মুআল্লা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় পান করতে নিষেধ করেছেন। পূর্বের হাদীসের সহায়তায় সহীহ্‌।

【12】

দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় পান করার সম্মতি

ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যমযমের পানি দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় পান করেছেন। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ্‌ (৩৪২২)। আমর ইবনু শুআইব (রহঃ) আমর ইবনু শুআইব (রাহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি (দাদা) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দাঁড়িয়ে ও বসে পান করতে দেখেছি। হাসান, মিশকাত (৪২৭৬), মুখতাসার শামা-ইল (১৭৭)।

【13】

পাত্র হতে পান করার সময় নি:শ্বাস নেওয়া

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাত্র হতে পানি পানের সময় তিনবার নি:শ্বাস নিতেন। তিনি বলতেনঃ এভাবে পান করা অধিক স্বাচ্ছন্দকর ও তৃপ্তিদায়ক। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ্‌ (৩৪১৬), মুসলিম। ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা এক চুমুকে উটের মত পানি পান করো না; বরং দুই–তিনবারে (শ্বাস নিয়ে) পান কর। তোমরা যখন পান করবে তখন আল্লাহ্‌ তা‘আলার নাম নিবে (বিসমিল্লাহ বলবে) এবং যখন শেষ করবে তখন আল্লাহ্‌ তা‘আলার প্রশংসা করবে ( আলহামদুলিল্লাহ বলবে)। যঈফ, মিশকাত, তাহকিক ছানী (৪২৭৮)।

【14】

দুই নিঃশ্বাসে পান করা

ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন পান করতেন তখন দুইবার নিঃশ্বাস নিতেন। যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩৪১৭)।

【15】

পানীয় দ্রব্যের মধ্যে ফুঁ দেওয়া নিষেধ

আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) পানীয় দ্রব্যের মধ্যে ফুঁ দিতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। একজন বলল, পানির পাত্রে ময়লা দেখতে পেলে? তিনি বলেনঃ তা ঢেলে ফেলে দাও। লোকটি বলল, আমি এক নিঃশ্বাসে তৃপ্ত হতে পারি না। তিনি বললেনঃ পাত্রটিকে নিঃশ্বাসের সময় তোমার মুখ হতে সরিয়ে রাখ। হাসান, সহীহাহ্ (৩৮৫). ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে এবং তাতে ফুঁ দিতে বারণ করেছেন। সহীহ্, ইবনু মাজাহ (৩৪২৯)।

【16】

পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলা নিষেধ

আবদুল্লাহ ইবনু আবী কাতাদা (রাহঃ) হতে তার পিতা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি পান করার সময় যেন পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না ছাড়ে। সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাউদ (২৩), বুখারী ও মুসলিম।

【17】

মশকের মুখ উল্টা অবস্থায় রেখে পান কার নিষেধ

আবূ সাঈদ (রাঃ) তিনি মশকের মুখ উল্টা অবস্থায় রেখে তা হতে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৪১৮), বুখারী ও মুসলিম।

【18】

মশকের মুখ উল্টা অবস্থায় রেখে তা হতে পানি পানের সম্মতি প্রসঙ্গে

ঈসা ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উনাইস (রহঃ) হতে তাঁর পিতা তিনি (পিতা) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি যে, তিনি একটি ঝুলন্ত মশকের দিকে উঠে যান এবং এর মুখ উল্টে ধরে তা থেকে পানি পান করেন। মুনকার, যঈফ আবূ দাউদ। কাবশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার ঘরে আসলেন, তিনি দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় একটি ঝুলন্ত মশকের মুখ হতে পানি পান করলেন। আমি পরে উঠে গিয়ে মশকের মুখের সেই অংশ (বারকাতের আশায়) কেটে রেখে দেই। সহীহ্, মিশকাত (৪২৮১), মুখতাসার শামা-ইল (১৮২)।

【19】

ডান পাশের মানুষেরা পান করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে

আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, পানি মিশানো দুধ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে হাযির করা হল। একজন বেদুঈন লোক ছিল তাঁর ডান পাশে এবং আবূ বকর (রাঃ) ছিলেন বাম পাশে। তা তিনি প্রথমে নিজে পান করলেন, তারপর বেদুঈনকে দিলেন এবং বললেনঃ প্রথমে ডান পাশের মানুষেরা পর্যায়ক্রমে অগ্রাধিকার পাবে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৪২৫), বুখারী ও মুসলিম।

【20】

সবার পান করা শেষে পরিবেশনকারী পান করবে

আবূ কাতাদা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকদেরকে পানীয় পরিবেশনকারী সবার পান করা শেষে পান করবে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৪৩৪), মুসলিম।

【21】

কোন ধরণের পানীয় দ্রব্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বেশি প্রিয় ছিল?

আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঠান্ডা মিষ্টি শরবত বেশি পছন্দ করতেন। সহীহ্, মিশকাত তাহকীক ছানী (৪২৮২), সহীহা (৩০০৬), মুখতাসার শামা-ইল (১৭৫)। যুহরী (রাহঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্ন করা হল, কোন প্রকার পানীয় দ্রব্য বেশি ভাল? তিনি বললেনঃ ঠান্ডা মিষ্টি শরবত। সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস