27. ফারাইয
মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তি তার উত্তরাধিকারদের প্রাপ্য
আবূ হুরাইরা (রা) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক যদি ধন-সম্পদ রেখে মৃত্যুবরণ করে তাহলে তা তাঁর পরিবারের (উত্তরাধিকারীদের) প্রাপ্য। আর কোন লোক সহায়হীন পরিবার রেখে মৃত্যুবরণ করলে তাদের (ভরণ-পোষণের) দায়িত্ব আমার উপর। সহীহ্, এটি পূর্বে বর্ণিত (১০৭০নং) হাদীসের অংশ, বুখারী, মুসলিম।
ফারাইয শিক্ষা করা
আবূ হুরাইরা (রা:) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমরা মীরাস বন্টন নীতি ও কুরআন শিক্ষা কর এবং তা অন্য লোকদেরও শিক্ষা দাও। কেননা আমি তো অবশ্যই মরণশীল। যঈফ, মিশকাত (২৪৪)।ইরওয়া (১৬৬৪)
পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে মেয়ে সন্তানদের অংশ
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা) তিনি বলেন, সা’দ ইবনুর রাবী (রা)-এর স্ত্রী সা’দের ঔরসজাত তাঁর দুই মেয়েসহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে হাযির হয়ে বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ,এরা সা’দ ইবনুর রাবীর দুই মেয়ে। এদের বাবা উহুদের যুদ্ধে আপনার সাথে অংশগ্রহণ করে শহীদ হয়েছেন। এদের সমস্ত ধন-সম্পদ এদের চাচা নিয়ে নিয়েছে, এদের জন্য সামান্য কিছুও রাখেনি। এদের কোন ধন-সম্পদ না থাকলে এদের বিয়েও তো হবে না। তিনি বললেনঃ এ বিষয়টি আল্লাহ্ তা’আলাই সমাধান করে দিবেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মীরাস বন্টন বিষয়ক আয়াত অবতীর্ণ হয়। তাদের চাচাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডেকে এনে বললেনঃ সা’দের দুই মেয়েকে দুই-তৃতীয়াংশ সম্পত্তি এবং তাদের মাকে এক-অষ্টমাংশ সম্পত্তি দিয়ে দাও, তারপর যেটুকু বাকী থাকে তা তোমার। হাসান, ইবনু মা-জাহ (২৭২০)।
ঔরসজাত মেয়ের সাথে নাতনীর মীরাস
হুযাইল ইবনু শুরাহ্বীল (রাহ) তিনি বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) ও সালমান ইবনু রাবীআ (রা)-এর নিকট একজন লোক এসে তাদের কাছে মেয়ে, নাতনী ও সহোদরা বোনের মীরাসের ব্যাপারে প্রশ্ন করে। তারা দুজনেই বললেন, মেয়ে পাবে অর্ধেক সম্পত্তি এবং সহোদর বোন পাবে বাকী অংশ। তারা আরো বললেন, তুমি আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রা)-এর কাছে যাও এবং তাকে প্রশ্ন কর। তিনিও আমাদেরই অনুসরণ করবেন। লোকটি আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রা)-এর নিকট এসে তাকে ঘটনা বলে এবং তারা দুজনে যা বলেছেন তাও তাকে অবহিত করায়। আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, আমি যদি তাদের দুজনের অনুসরণ করি তাহলে পথভ্রষ্ট হব এবং সঠিক পথে অটুট থাকতে পারব না। আমি এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অনুরূপ ফায়সালাই প্রদান করব। মেয়ে পাবে অর্ধেক সম্পত্তি এবং নাতনী পাবে এক-ষষ্ঠাংশ সম্পত্তি। এভাবে দুজনের অংশ একত্রে দুই-তৃতীয়াংশ পূর্ণ হবে। বাকী সম্পত্তি পাবে বোন। সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৭২১), বুখারী।
সহোদর ভাইদের মীরাস
আলী (রা) তিনি বলেন, তোমরা এ আয়াত পাঠ করে থাক : “যা কিছু তোমরা ওয়াসিয়াত কর বা যে ঋণ রয়েছে তা আদায় করার পর.... “ (সূরা : আন-নিসা-১২)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওয়াসিয়াত পূরন করার পূর্বে ঋণ আদায়ের ফায়সালা দিয়েছেন। বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাইদের আগে সহোদর ভাই উত্তরাধিকারী হবে ( যদি মৃত ব্যক্তির উভয় ধরনের ভাই থাকে)। সহোদর ভাই উত্তরাধিকারী হবে, বৈমাত্রের ভাইয়ের পূর্বে। হাসান, ইবনু মা-জাহ (২৭১৫)। আলী (রা) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফায়সালা দিয়েছেন যে, সহোদর ভাইয়েরা একে অপরের উত্তরাধিকারী হবে, কিন্তু বৈমাত্রেয় ভাই উত্তরাধিকারী হবে না। অর্থাৎ সহোদর ভাই থাকাবস্থায় বৈমাত্রের ভাই উত্তরাধিকার হবে না। হাসান, দেখুন পূর্বের হাদীস।
মেয়েদের সাথে ছেলেদের মীরাস
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে এলেন। তখন আমি অসুস্থ অবস্থায় সালামা গোত্রে ছিলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমি কিভাবে আমার ধন-সম্পদ আমার সন্তানদের মাঝে বন্টন করব? তিনি আমাকে কোন জবাব দিলেন না। ইতোমধ্যে এ আয়াত নাযিল হলো : “আল্লাহ তা’আলা তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে তোমাদেরকে এই বিধান দিচ্ছেন- একজন পুরুষের অংশ দুইজন মহিলার অংশের সমান.... ” (সূরা : আন-নিসা-১১)। সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
বোনদের মীরাস
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) আমি অসুস্থ হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে এলেন। তিনি আমাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পেলেন। তাঁর সাথে আবূ বাকর ও উমার (রাঃ)- ও আমাকে দেখতে আসেন। তাঁরা দুজনেই পায়ে হেঁটে আসেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওযূ করলেন এবং ওযূর পানি আমার উপর ছিটিয়ে দিলেন। আমার হুঁশ ফিরে এল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার ধন-সম্পদের ব্যাপারে আমি কি করব? আমার এ কথায় তিনি কোন জবাব দিলেন না। (অধঃস্তন বর্ণনাকরী বলেন) তার নয়টি বোন ছিল। অবশেষে মীরাস বিষয়ক আয়াতটি অবতীর্ণ হলোঃ “লোকেরা তোমার কাছে জানতে চায়। বল! আল্লাহ তা‘আলঅ তোমাদেরকে কালালা প্রসঙ্গে বিধান দিচ্ছেন…..” (সূরাঃ আন-নিসা-১৭৬)। জাবির (রাঃ) বলেন, আয়াতটি আমার সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয়েছে। সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৭২৮), বুখারী, মুসলিম।
আসাবার মীরাস
ইবনু আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নির্ধারিত অংশ তার প্রাপককে (অধিকারীকে) দিয়ে দাও। এরপর যেটুকু অংশ বাকী থাকবে তার পুরুষ নিকটাত্মীয়দের মধ্যে বন্টন কর। সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৭৪০), বুখারী, মুসলিম।
পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে দাদার অংশ
ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে বলল, আমার এক ছেলে (নাতি) মারা গেছে। তার রেখে যাওয়া সম্পদের আমি কি অংশ পাব? তিনি বললেনঃ তুমি এক-ষষ্ঠাংশ পাবে। লোকটি যখন চলে যাচ্ছিল, তিনি তাকে ডেকে বললেনঃ তুমি আরো এক-ষষ্ঠাংশ পাবে। সে যখন আবার চলে যাচ্ছিল, তিনি তাকে ডেকে বলেনঃ পরবর্তী এক-ষষ্ঠাংশ তোমার জন্য অতিরিক্ত রিফিকস্বরূপ (অতিরিক্ত ওয়ারিস থাকলে তুমি তা পেতে না)। যঈফ, যঈফ আবূ দাউদ (৫০০)
দাদী-নানীর অংশ
কাবীসা ইবনু যুওয়াইব (রাঃ) তিনি বলেন, এক দাদী অথবা নানী আবু বাকর (রাঃ)-এর নিকটে এসে বলল, আমার পৌত্র অথবা দৌহিত্র মারা গেছে। আমাকে জানানো হয়েছে যে, কুরআনে আমার জন্য অংশ নির্ধারিত রয়েছে। আবু বাকর (রাঃ) বললেন, আমি কুরআনে তোমার জন্য নির্ধারিত কোন অংশ দেখতে পাচ্ছি না এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কেও তোমার (দাদীর প্রাপ্য অংশের) ব্যাপারে কোন ফায়সালা দিতে শুনিনি। অতএব আমি লোকদের কাছে ব্যাপারটা জিজ্ঞেস করে নিব। তিনি লোকদের কাছে জিজ্ঞেস করলেন। মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) সাক্ষ্য দিলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে (দাদীকে) ছয় ভাগের এক অংশ দান করেছেন। তিনি বললেন, তোমার সাথে এটা আর কে শুনেছে? তিনি (মুগীরা) বললেন, মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা (রাঃ)। রাবী বলেন, তিনি (আবু বাকর) তাকে (দাদীকে) ছয় ভাগের এক অংশ দান করলেন। পরবর্তী কালে আর এক দাদী বা নানী উমার (রাঃ)-এর নিকটে আসে। সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা বললেন, মামার যুহরীর সূত্রে আমাকে আরো বলেছেন, কিন্তু আমি তা যুহরীর সূত্রে কখনো মুখস্ত করিনি, বরং আমি মামারের সূত্রে তা মুখস্ত করেছি। উমার (রাঃ) বলেন, তোমরা (দাদী-নানী) উভয়ে যদি বেঁচে থাক তবে এটা (এক-ষষ্ঠাংশ) তোমাদের উভয়ের মাঝে বণ্টিত হবে। আর তোমাদের দুইজনের মধ্যে যদি একজন বর্তমান থাকে তবে এটা সে একাই পাবে। যঈফ, ইরওয়া (১৬৮০) যঈফ আবূ দাউদ (৪৯৭) কাবীসা ইবনু যুওয়াইব (রাঃ) তিনি বলেন, এক দাদী আবূ বাকর (রাঃ)-এর নিকটে এসে তার মীরাস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করে। তিনি তাকে বললেন, তোমার জন্য আল্লাহ্ তা'আলার কিতাবে কিছু নির্ধারিত নেই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাতেও তোমার সম্পর্কে কিছু নেই। তুমি চলে যাও, আমি লোকদের নিকটে প্রশ্ন করে ব্যাপারটি জেনে নেই। তিনি লোকদের প্রশ্ন করলে মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে হাযির থাকা অবস্থায় তিনি তাকে (দাদীকে) ছয় ভাগের এক অংশ দান করার ফাইসালা দিয়েছেন। তিনি (আবূ বাকর) প্রশ্ন করলেন, তোমার সাথে আরো কেউ ছিল কি? তখন মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ)-এর মতই কথা বললেন। অতএব আবু বাকর (রাঃ) তাকে ছয় ভাগের এক অংশ দেয়ার বিধান জারি করেন। পরবর্তী কালে অপর এক দাদী এসে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-এর কাছে তার মীরাস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করে। তিনি বলেন, আল্লাহ তা'আলার কিতাবে তোমার জন্য কোন অংশ নির্ধারিত নেই। তবে তোমার জন্য ঐ ছয় ভাগের এক অংশ নির্ধারিত আছে। তোমরা (দাদী-নানী) যদি উভয়ে বেঁচে থাক তবে এটা (ছয় ভাগের এক অংশ) তোমাদের উভয়ের মধ্যে সমানভাবে বণ্টিত হবে। আর তোমাদের উভয়ের মধ্যে যদি একজন বেঁচে থাকে তবে এটা সে একাই পাবে। দুর্বল, দেখুন পূর্বের হাদীস, এ অনুচ্ছেদে বুরাইদা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
দাদীর পুত্রের সাথে একত্রে দাদীর মীরাস
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) তিনি এমন এক দাদী সম্পর্কে বলেন যার পুত্রও তার সাথে জীবিত ছিল। সে ছিল প্রথম দাদী, যাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার পুত্রের বর্তমানে তাকে ছয় ভাগের এক অংশ দিয়েছেন। যঈফ, ইরওয়া (১৬৮৭)
মামার মীরাস
আবূ উমামা ইবনু সাহল ইবনু হুনাইফ (রাঃ) তিনি বলেন, ইমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) আবূ উবাইদা (রাঃ)-কে লিখে পাঠান যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তির কোন অভিভাবক নেই, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার অভিভাবক। যে ব্যক্তির অন্য কোন উত্তরাধিকারী নেই, মামা তার উত্তরাধিকারী। সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৭৩৭)। আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোকের অন্য কোন উত্তরাধিকারী নেই (তার) মামা তার উত্তরাধিকারী হবে। সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস
উত্তরাধিকারীহীন অবস্থায় কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে
আইশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর একজন মুক্তদাস খেজুর গাছের মাথা হতে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা তালাশ করে দেখ তার কোন উত্তরাধিকারী আছে কি না? লোকজন বলল, কেউ নেই। তিনি বললেনঃ তার রেখে যাওয়া সম্পদ গ্রামের কাউকে দিয়ে দাও। সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৭৩৩)
মুক্তদাসের উত্তরাধিকার
ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে এক ব্যক্তি উত্তরাধিকারহীন অবস্থায় মারা যায়। তার একটি মুক্তদাস ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি দান করেন। যঈফ, ইবনু মাজাহ (২৭৪১)
মুসলমান ও কাফির পরস্পরের উত্তরাধিকার স্বত্ব বাতিল
উসামা ইবনু যাইদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলিম ব্যক্তি কাফির ব্যক্তির উত্তরাধিকারী হবে না এবং কাফিরও মুসলিম ব্যক্তির উত্তরাধিকারী হবে না। সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৭২৯), বুখারী, মুসলিম।
দুটি পৃথক ধর্মের অনুসারী পরস্পরের উত্তরাধিকারী হবে না।
জাবির (রাঃ) (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দুটি পৃথক ধর্মের অনুসারী পরস্পরের উত্তরাধিকারী হবে না। সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৭৩১)।
হত্যাকারী নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারী স্বত্ব হতে বঞ্চিত হবে
আবূ হুরাইরা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হত্যাকারী কোন প্রকার উত্তরাধিকারী হবে না। ইবনু মা-জাহ (২৭৩৫)।
স্বামীর দিয়াতে স্ত্রীর উত্তরাধিকার স্বত্ব
সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব (রাহঃ) তিনি বলেন, উমার (রাঃ) বললেন, আকিলার উপর দিয়াত (রক্তমূল্য) ধার্য করা হবে। স্বামীর দিয়াতের মধ্যে স্ত্রী উত্তরাধিকারী হবে না। তখন যাহ্হাক ইবনু সুফিয়ান আল-কিলাবী (রাঃ) তাকে বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে লিখে পাঠিয়েছেনঃ “আশ্ইয়াস আয-যিবাবীর স্ত্রীকে তার স্বামীর দিয়াতের উত্তরাধিকারী বানাও”। সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৬৪২)।
মীরাস উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য এবং আকিলা আসাবাদের উপর
আবূ হুরাইরা (রাঃ) লিহ্ইয়ান বংশের একজন স্ত্রীলোককে তার (অন্যের আঘাতে মৃত্যুজনিত কারণে) গর্ভপাতের দিয়াত হিসাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি গোলাম অথবা একটি দাসী প্রদানের ফয়সালা দেন। তিনি যে মহিলাটির উপর এই দিয়াত নির্ধারন করেন পরে সে মারা যায়। তার রেখে যাওয়া সম্পত্তির ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফয়সাসলা দেন যে, এটার তার স্বামী ও ছেলেদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হবে এবং তার উপর ধার্যকৃত দিয়াত তার আসাবাগণের উপর বর্তাবে। সহীহ, ইরওয়া (২২০৫), বুখারী, মুসলিম।
যে ব্যক্তি কারো হাতে মুসলমান হয় তার মীরাস প্রসঙ্গে
তামীমুদ দারী (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশ্ন করলাম, কোন মুসলিম লোকের হাতে কোন মুশরিক লোক ইসলাম ক্ববুল করলে তার কি বিধান রয়েছে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সে (মুসলমান লোকটি) তার (নও-মুসলিম) জীবনে-মরণে অন্য সব মানুষের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে। হাসান সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (২৭৫২)
জারজ সন্তান উত্তরাধিকারী নয়।
আমর ইবনু শুআইব (রাহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক যদি কোন স্বাধীন স্ত্রীলোক অথবা দাসীর সাথে যিনায় (ব্যভিচারে) লিপ্ত হয় তাহলে (জন্মগ্রহনকারী) সন্তান ‘জারজ সন্তান’ বলে গণ্য হবে। সে কারো উত্তরাধিকারী হবে না এবং তারও কেউ উত্তরাধিকারী হবে না। সহীহ্, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৩০৫৪)।
ওয়ালার ওয়ারিস কে হবে
আমর ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি মালের উত্তরাধিকারী হবে সে-ই ওয়ালার উত্তরাধিকারী হবে (অর্থাৎ যে গোলাম মুক্ত করার মূল্য পরিশোধ করবে সে-ই গোলামের রেখে যাওয়া সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে)। যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৩০৬৬), আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসের সনদ তেমন মজবুত নয়।
ওয়ালাআতে মহিলাদের মীরাস
ওয়াসিলা ইবনুল আসকা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ স্ত্রীলোকেরা (এককভাবে) তিন ধরনের মীরাসী সম্পত্তির ওয়ারিস হতে পারেঃ নিজের আযাদকৃত গোলামের, যে শিশুকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পেয়ে সে তুলে নিয়ে লালন-পালন করেছে তার এবং যে শিশু সম্পর্কে সে লিআন করেছে তার। যঈফ, ইবনু মাজাহ (২৭৪২)