39. জ্ঞান
আল্লাহ তা‘আলা যার কল্যাণ চান তাকে ধর্মের জ্ঞানে সমৃদ্ধ করেন
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা যে ব্যক্তির কল্যাণ চান, তাকে ধর্মের জ্ঞানে সমৃদ্ধ করেন। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (২২০), বুখারী ও মুসলিম।
জ্ঞান সন্ধানের ফাযীলাত
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক জ্ঞানের খোঁজে কোন পথে চলবে, তার জন্য আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতের পথ সহজ করে দিবেন। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (২২৫), মুসলিম। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি জ্ঞানের খোঁজে বের হলে সে ফিরে না আসা পর্যন্ত আল্লাহ্ তা’আলার রাস্তায় আছে বলে গণ্য হবে। যঈফ, মিশকাত (২২০), যঈফা (২০৩৭), আর-রাওয (১০৯) সাখবারা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি জ্ঞান খোঁজ করে, এটা তার জন্য তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহের কাফফারা হয়ে যায়। মাওযূ, মিশকাত (২২১), যঈফা (৫০১৭)
‘ইল্ম (জ্ঞান) গোপন করা
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক এমন ইল্ম (জ্ঞান) সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয় যা সে জানে, অতঃপর সে তা গোপন করে, তাকে ক্বিয়ামাতের দিবসে আগুনের লাগাম পরানো হবে। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (২৬৪)
জ্ঞান অন্বেষণকারীর সাথে সদ্ব্যাবহার করা এবং তাদের সদুপদেশ দেয়া
আবূ হারূন আল-আবদী (রহঃ) তিনি বলেন, আমরা আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ)-এর নিকটে (জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে) আসলে তিনি বলতেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপদেশকে “মারহাবা, স্বাগতম!” কেননা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (আমার পরে) মানুষ তো তোমাদের অনুসারী হবে। দিকদিগন্ত হতে মানুষ ধর্মের জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে তোমাদের নিকটে আসবে। তারা তোমাদের নিকটে এলে তোমরা তাদের কল্যাণ সাধনের ব্যাপারে (আমার) উপদেশ গ্রহণ কর। যঈফ, ইবনু মাযাহ (২৪৯) আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ প্রাচ্যের দিক হতে বহু লোক জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে তোমাদের নিকটে আসবে। তারা তোমাদের নিকটে এলে তোমরা তাদের কল্যাণ কামনায় (আমার) সদুপদেশ গ্রহণ কর। তিনি (হারূন) বলেন, আবূ সাঈদ (রাঃ) আমাদের দেখলে বলতেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপদেশকে স্বাগতম। যঈফ, দেখুন পূর্বের হাদিস।
জ্ঞান উঠে যাওয়া প্রসঙ্গে
‘আবুদুল্লাহ ইবনু ‘আম্র ইবনুল ‘আস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (শেষ যামানায়) আল্লাহ তা‘আলা মানুষের নিকট হতে একটানে ‘ইল্ম উঠিয়ে নিবেন না, বরং আলিমদেরকে উঠিয়ে নেয়ার মাধ্যমেই ‘ইল্ম উঠিয়ে নিবেন। অবশেষে যখন তিনি কোন আলিমই অবশিষ্ট রাখবেন না, তখন মানুষেরা অজ্ঞ জাহিলদের নেতা হিসেবে গ্রহণ করবে। তারপর বিভিন্ন বিষয়ে তাদের নিকট প্রশ্ন করা হবে, আর তারা ‘ইল্ম ছাড়াই ফাতওয়া দিবে। ফলে তারা নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে এবং অন্যকেও পথভ্রষ্ট করবে। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৫২), বুখারী ও মুসলিম। আবুদ দারদা (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। তিনি আকাশের দিকে তাকালেন, তারপর বললেনঃ এই সময়ে মানুষের কাছ থেকে ‘ইল্মকে ছিনিয়ে নেয়া হবে, এমনকি এ সম্পর্কে তাদের কোন সামর্থ্যই থাকবে না। যিয়াদ ইবনু লাবীদ আল-আনসারী (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের নিকট হতে কিভাবে ‘ইল্ম ছিনিয়ে নেয়া হবে, অথচ আমরা কুরআন তিলাওয়াত করি? আল্লাহ্র কসম! অবশ্যই আমরা তা তিলাওয়াত করবো এবং আমাদের স্ত্রীদের ও সন্তাদেরকেও তা শিখাবো। তিনি বললেনঃ হে যিয়াদ! তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক, আমি তো তোমাকে মাদীনার অন্যতম জ্ঞানী ব্যক্তি বলেই গণ্য করতাম! এই তো ইয়াহূদী-নাসারাদের নিকট তাওরাত ও ইনজীল রয়েছে, তা তাদের কি কাজে লেগেছে? জুবাইর (রাঃ) বলেন, তারপর আমি উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ)-এর সাথে দেখা করে বললাম, আপনার ভাই আবু দারদা (রাঃ) কি বলছেন তা আপনি শুন্তে পাননি? আবু দারদা (রাঃ) যা বলেছেন, তা আমি তার নিকট বললাম। তিনি বলেন, আবু দারদা (রাঃ) ঠিকই বলেছেন। তুমি চাইলে আমি তোমাকে একটি কথা বলতে পারি। ইলমের যে বস্তুটি সর্বপ্রথম মানুষের কাছ থেকে তুলে নেয়া হবে তা হল বিনয়। খুব শীঘ্রই তুমি কোন জামে মাসজিদে গিয়ে হয়তো দেখবে যে, একজন লোকও সেখানে বিনয়াবনত নয়। সহীহঃ তাখরীজু ইক্বতিযায়িল ইল্মি আল-আমাল (৮৯)
‘ইল্মের বিনিময়ে যে লোক পার্থিব স্বার্থ খোঁজ করে
কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে লোক ‘আলিমদের সাথে তর্ক বাহাস করা অথবা জাহিল-মূর্খদের সাথে বাকবিতণ্ডা করার জন্য এবং মানুষকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার উদ্দেশে ‘ইল্ম অধ্যয়ন করেছে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। হাসানঃ মিশকাত (২২৩-২২৫), তা‘লীকুর রাগীব (১/৬৮)। ইবনু ‘উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জন করে অথবা এর দ্বারা আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কিছু অর্জনের ইচ্ছা করে সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামে নির্দিষ্ট করে নেয়। য’ঈফ; ইবনু মাযাহ- হাঃ নং-২৫৮
শ্রুত জ্ঞান প্রচারে অনুপ্রেরণা দেয়া
আবান ইবনু ‘উসমান (রহঃ) তিনি বলে, কোন একদিন যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) ঠিক দুপুরের সময় মারওয়ানের নিকট হতে বেরিয়ে আসলেন। আমরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলাম, সম্ভবতঃ কোন ব্যাপারে প্রশ্ন করার জন্যই এ সময়ে মারওয়ান তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন। সুতরাং আমরা উঠে গিয়ে তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, হ্যাঁ, তিনি আমার কাছে কয়েকটি কথা জিজ্ঞেস করেছেন, যা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট শুনেছি। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ তা‘আলা সেই ব্যক্তির চেহারা আনন্দ-উজ্জ্বল করুন, যে আমার কোন কথা শুনেছে, তারপর তা সঠিক ভাবে মনে রেখেছে এবং সেভাবেই অন্যের নিকট পৌঁছে দিয়েছে। এমন অনেক লোক আছে, যারা নিজেদের তুলনায় উচ্চতর জ্ঞানের অধিকারীর নিকট জ্ঞান পৌঁছে দিতে পারে। আর অনেক জ্ঞানের বাহক এমন রয়েছে যারা নিজেরাই জ্ঞানী নয়। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ(২৩০) ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ তা‘আলা সেই ব্যক্তিকে আলোকোজ্জ্বল করুন, যে আমার কোন কথা শুনেছে এবং যে ভাবে শুনেছে সেভাবেই অন্যের নিকট তা (জ্ঞান) পৌঁছে দিয়েছে। এমন অনেক ব্যক্তি আছে যার নিকট ‘ইল্ম পৌঁছানো হয় তিনি শ্রোতার চেয়ে বেশি হৃদয়জ্ঞমকারী হয়ে থাকেন। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (২৩২) ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা সেই ব্যক্তিকে আলোকোজ্জ্বল করুন যে আমার কথা শুনেছে, তা কন্ঠস্থ করেছে, সংরক্ষণ করেছে এবং অন্যের নিকট পৌঁছে দিয়েছে। অনেক জ্ঞানের বাহক যার নিকট জ্ঞান বহন করে নিয়ে যান তিনি তার (বাহকের) চাইতে বেশি বুদ্ধিমান হতে পারেন। মু‘মিনের অন্তর তিনটি বিষয়ে খিয়ানাত (অবহেলা) করতে পারে নাঃ আল্লাহ তা‘আলার জন্য নিষ্ঠাপূর্ণ ‘আমাল, মুসলিমদের নেতৃবর্গকে সদুপদেশ দান এবং মুসলিম জামা‘আত অবলম্বন। কেননা দা‘ওয়াত (আহ্বান) তাদের পশ্চাৎকেও পরিবেষ্টন করে। সহীহঃ সহীহাহ্ (৪০৪)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি মিথ্যারোপ করা গুরুতর অপরাধ
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক নিজ ইচ্ছায় আমার উপর মিথ্যারোপ করে, সে জাহান্নামকে তার বাসস্থান বানিয়ে নিক। সহীহঃ মুতাওয়াতির, ইবনু মা-জাহ (৩০), বুখারী ও মুসলিম। ‘আলী ইবনু আবী তালিব (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা আমার প্রতি মিথ্যারোপ করো না। কেননা যে লোক আমার উপর মিথ্যারোপ করবে সে জাহান্নামে যাবে। সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, (বর্ণনাকারী বলেন) আমার মনে হয় তিনি “ইচ্ছাকৃতভাবে” কথাটুকুও বলেছেন, সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামে বানিয়ে নেয়। সহীহঃ মুতাওয়াতির, বুখারী ও মুসলিম। দেখুন পূর্বের হাদীস।
যে ব্যক্তি মিথ্যা হাদীস বর্ণনা করে
মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পক্ষ হতে যে লোক কোন হাদীস বর্ণনা করে অথচ সে জানে যে, তা মিথ্যা, সে মিথ্যাবাদীদের একজন। সহীহঃ আয্-যঈফার ভূমিকা (১/১২), মুসলিম।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীসের ব্যাপারে যা বলা নিষেধ
আবূ রাফি‘ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি যেন তোমাদের মধ্যে কাউকে এমন অবস্থায় না পাই যে, সে তার সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে বসে থাকবে এবং তার নিকট যখন আমার আদিষ্ট কোন বিষয় অথবা আমার নিষেধ সম্বলিত কোন হাদীস উত্থাপিত হবে তখন সে (তাচ্ছিল্যভরে) বলবে, আমি তা জানি না, আল্লাহ তা‘আলার কিতাবে আমরা যা পাই, তারই অনুসরণ করবো। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (১৩) মিক্বদাম ইবনু মাদীকারিব (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সাবধান! খুব শীঘ্রই এমন ব্যক্তির আগমন ঘটবে যে, সে তার সুসজ্জিত গদিতে হেলান দিয়ে বসে থাকবে, তখন তার নিকট আমার কোন হাদীস পৌঁছলে সে বলবে, আমাদের ও তোমাদের সামনে তো আল্লাহ তা‘আলার কিতাবই আছে। আমরা তাতে যা হালাল পাব সেগুলো হালাল বলে মেনে নিব এবং যেগুলো হারাম পাব সেগুলো হারাম বলে মনে নিব। সাবধান! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা হারাম ঘোষনা করেছেন তা আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক হারামকৃত বস্তুর মতই হারাম। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (১২)
‘ইল্মে হাদীস লিপিবদ্ধ করার নিষেধাজ্ঞা
আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট (হাদীস) লিপিবদ্ধ করে রাখার অনুমতি চাইলাম, কিন্তু তিনি আমাদেরকে অনুমতি দেননি। সহীহঃ মুসলিম (৮/২২৯) অনুরূপ
হাদীস লিপিবদ্ধ করার সম্মতি প্রসঙ্গে
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, এক আনসার সাহাবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে বসতেন এবং তাঁর নিকট হাদিস শুনতেন। হাদিসগুলো তার নিকটে ভালো লাগলেও তিনি তা মনে রাখতে পারতেন না। কোন এক সময় তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে তার এ অবস্থার কথা পেশ করে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার কথা শুনে থাকি এবং তা আমার নিকটে খুবই ভালো লাগে, কিন্তু তা মনে রাখতে পারি না। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তুমি তোমার ডান হাতের সাহায্য নাও, এই বলে তিনি লিখে রাখার প্রতি ইংগিত করেন। যঈফ, যঈফা (২৭৬১) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) কোন এক সময় (বিদায় হাজ্জে) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভাষণ দিলেন। আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) পূর্ণ হাদিস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আবূ শাহ আরয করলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! এ ভাষণটি আমাকে লিখে দিন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ ভাষণটি (তোমরা) আবূ শাহের জন্য লিখে দাও। সহীহঃ মুখতাসার বুখারী (৭৬), বুখারী। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলতেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের মধ্যে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্র (রাঃ) ব্যতীত আমার চাইতে বেশি তাঁর হাদীস সংরক্ষণকারী কেউ নেই। কারণ তিনি হাদীস লিখতেন, আর আমি লিখতাম না। সহীহঃ মুখ্তাসারুল বুখারী (৭৭), বুখারী।
বানী ইসরাঈল হতে কিছু বর্ণনা করা প্রসঙ্গে
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্র (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পক্ষ থেকে একটি মাত্র আয়াত হলেও তা (মানুষের নিকট) পৌঁছে দাও। আর বানী ইসরাঈলের বরাতে (হাদীস) কথা বর্ণনা করতে পার, এতে কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপর মিথ্যা চাপিয়ে দেয়, সে যেন জাহান্নামে তার থাকার জায়গা নির্ধারণ করে নেয়। সহীহঃ রাওযুন নাযীর (৫৮২), তাখরীজুল ইল্ম লিআবী খাইসামা (১১৯/৪৫), বুখারী।
সৎ কাজের পথপ্রদর্শক উক্ত কাজ সম্পাদনকারীর সমতুল্য
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একজন লোক এসে তার নিজের জন্য একটি বাহন চাইল। কিন্তু তাকে তিনি দেয়ার মত কোন বাহন না পেয়ে তাকে অন্য এক লোকের নিকট পাঠিয়ে দিলেন। সেই ব্যক্তি তাকে একটি বাহন দিল। সে এ ঘটনাটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললে তিনি বলেনঃ সৎকাজের পথপ্রদর্শক উক্ত কাজ সম্পাদনকারীর সমতুল্য। হাসান সহীহঃ সহীহাহ্ (১১৬০), তা’লীকুর রাগীব (১/৭২)। আবূ মাস‘ঊদ আল-বাদ্রী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একজন লোক একটি বাহন (জন্তুযান) চাইতে এসে বলে, আমার জন্তুযানটি চলার অযোগ্য হয়ে পড়েছে (বা মরে গেছে)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি অমুক ব্যক্তির নিকট যাও। সে তার নিকট গেলে সে তাকে একটি জন্তুযান দান করল। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে লোক কোন সৎ কাজের পথ দেখায়, তার জন্য উক্ত কাজ সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে। সহীহঃ মুসলিম (৬/৪১) আবূ মূসা আল-আশ‘আরী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা আবেদন কর, সাওয়াব পাবে। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নাবীর মুখ দিয়ে যা চান তাই ফায়সালা করান। সহীহঃ সহীহাহ্ (১৪৪৬), বুখারী ও মুসলিম। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অন্যায়ভাবে যে কোন লোককেই হত্যা করা হয় তার খুনের (গুনাহর) একটি অংশ আদমের ছেলের (কাবীল) উপর বর্তাবে। কেননা সর্বপ্রথম সে-ই (প্রাণ) হত্যার প্রচলন করে। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (২৬১৬), বুখারী ও মুসলিম।
সৎপথে বা ভ্রান্তপথে ডাকার ফলাফল
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ যদি হিদায়াতের পথে আহ্বান করে তাহলে সে তার অনুসারীর সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে, তবে অনুসরণকারীদের সাওয়াব থেকে মোটেও কম করা হবে না। আর বিপথের দিকে আহ্বানকারী ব্যক্তি তার অনুসারীদের পাপের সমপরিমাণ পাপের অংশীদার হবে, তবে তাদের (অনুসরণকারীদের) পাপ থেকে মোটেই কমানো হবে না। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (২০৬), মুসলিম। জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ ভালো কাজের প্রচলন করলে এবং তার অনুসরণ করা হলে সে তার নিজের সাওয়াবও পাবে এবং তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে, তবে তাদের সাওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না। আবার কেউ মন্দ কাজের প্রচলন করলে এবং তার অনুসরণ করা হলে তার উপর নিজের গুনাহ্ বর্তাবে উপরন্তু তার অনুসারীদের সম-পরিমাণ গুনাহ্র অংশীদারীও হবে, কিন্তু তাতে অনুসরণকারীদের গুনাহ্র পরিমাণ একটুও কমানো হবে না। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (২০৩), মুসলিম।
সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরা এবং বিদ‘আত পরিহার করা
ইরবায ইবনু সারিয়াহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন ফজরের নামাযের পর আমাদেরকে মর্মস্পর্শী ওয়াজ শুনালেন, যাতে (আমাদের) সকলের চোখে পানি এলো এবং অন্তর কেপে উঠলো। কোন একজন বলল, এ তো বিদায়ী ব্যক্তির নাসীহাতের মতো। হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এখন আপনি আমাদেরকে কি উপদেশ দিচ্ছেন? তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করার এবং (নেতার আদেশ) শ্রবণ ও মান্য করার উপদেশ দিচ্ছি, যদিও সে (নেতা) হাবশী ক্রীতদাস হয়ে থাকে। তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে, তারা বহু বিভেদ-বিসম্বাদ প্রত্যক্ষ করবে। তোমরা নতুন নতুন বিষয় আবিষ্কার করা হতে দূরে থাকবে। কেননা তা গুমরাহী। তোমাদের মধ্যে কেউ সে যুগ পেলে সে যেন আমার সুন্নাতে ও সৎপথপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশিদ্বীনের সুন্নাতে দৃঢ়ভাবে অবিচল থাকে। তোমরা এসব সুন্নাতকে চোয়ালের দাঁতের সাহায্যে শক্তভাবে আঁকড়ে ধর। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৪২) কাসীর ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিলাল ইবনুল হারিসকে বলেনঃ তুমি জেনে রাখ। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি জেনে রাখব? তিনি বললেনঃ হে বিলাল! তুমি জেনে রাখ। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি কি জেনে রাখব? তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি (আমার) এমন কোন সুন্নত জীবিত করবে, যা আমার (মৃত্যুর পর) পর বিলীন হয়ে যাবে, তার জন্য রয়েছে সেই সুন্নতের উপর আমলকারীর সম-পরিমান সওয়াব। তবে তাদের সওয়াব হতে কিছুই কমানো হবে না। আর যে ব্যক্তি পথভ্রষ্টতার বিদ’আত চালু করে, যা আল্লাহ ও তার রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সন্তুষ্ট করে না তার জন্য রয়েছে সেই বিদ’আতের উপর আমলকারীর সম-পরিমাণ পাপ। তবে তাদের পাপ হতে কিছুই কমানো হবে না। যঈফ, ইবনু মাযাহ (২১০) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেনঃ হে বৎস! তুমি যদি সকাল-সন্ধ্যা এমনভাবে কাটাতে পার যে, তোমার অন্তরে কারো প্রতি কোন রকম বিদ্বেষ নেই, তাহলে তাই কর। তিনি আমাকে পুনরায় বললেনঃ হে বৎস! এটা হল আমার সুন্নত। আর যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে জীবিত করল সে আমাকেই ভাল বাসল, আর যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসল সে তো জান্নাতে আমার সাথেই থাকবে। যঈফ, মিশকাত (১৭৫)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিষেধকৃত বিষয় হতে বিরত থাকা
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি তোমাদেরকে যে বিষয়ে বলি না সে বিষয়ে তোমরাও আমাকে ত্যাগ কর (নিজ উদ্যোগে কোন প্রশ্ন করো না)। আমি তোমাদের মধ্যে কিছু বললে আমার নিকট হতে তা গ্রহণ কর। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতগণ তাদের নাবীদেরকে বেশি বেশি প্রশ্ন ও বিরুদ্ধাচরণ করার কারণে ধ্বংস হয়েছে। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (১, ২), বুখারী ও মুসলিম অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
মদীনার ‘আলিমদের প্রসঙ্গে
আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অচিরেই মানুষ উটে চড়ে ‘ইলম অন্বেষণের উদ্দেশ্যে দুনিয়া ঘুরে বেড়াবে। কিন্তু তারা মদীনার ‘আলিমদের অপেক্ষা বিজ্ঞ ‘আলিম আর কোথাও খুঁজে পাবে না। য’ঈফ; মিশকাত-হাঃ নং-২৪৬; তা’লীক ‘আলা তানকীল-হাঃ নং- ১/৩৮৫; য’ঈফাহ-হাঃ নং-৪৮৩৩
জ্ঞানের মর্যাদা ‘ইবাদাতের চাইতেও বেশি
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একজন ফকীহ (বিজ্ঞ ‘আলিম) শাইতানের জন্য হাজার (মূর্খ) ‘আবিদ অপেক্ষা বিপজ্জনক। -মাওযূ ; ইবনু মাযাহ- হাঃ নং- ২২২ কাইস ইবনু কাসীর (রহঃ) তিনি বলেন, এক ব্যক্তি মাদীনা হতে দামিশকে (অবস্থানরত) আবু দারদা (রাঃ)-এর নিকট এলো। তিনি প্রশ্ন করলেন, ভাই! তুমি কি প্রয়োজনে এসেছো? সে বলল, একটি হাদীসের জন্য এসেছি। আমি জানতে পারলাম যে, আপনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে সেই হাদীস বর্ণনা করছেন। তিনি আবারো প্রশ্ন করলেন, তুমি অন্য কোন প্রয়োজনে আসনি? সে বলল, না। তিনি বললেন, তুমি কোন ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আসনি? সে বলল, না; সে আরো বলল, আমি শুধুমাত্র সেই হাদীসটির খোঁজেই এসেছি। এবার তিনি বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ ‘ইল্ম লাভের উদ্দেশ্যে যে লোক পথ চলে আল্লাহ তা‘আলা এর মাধ্যমে তাকে জান্নাতের পথে পৌঁছে দেন এবং ফেরেশতাগণ ইল্ম অন্বেষণকারীর সন্তুষ্টির জন্য নিজেদের ডানা বিছিয়ে দেন। অতঃপর আসমান-যমীনের সকল প্রাণী (আল্লাহ তা‘আলার নিকট) আলিমদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, এমনকি পানির জগতের মাছসমূহও। সমস্ত নক্ষত্ররাজির উপর পূর্ণিমার চাঁদের যে প্রাধান্য, ঠিক তেমনি (মূর্খ) ‘আবিদগণের উপর আলিমদের মর্যাদা বিদ্যমান। অবশ্যই আলিমগণ নাবীদের ওয়ারিস। আর নাবীগণ উত্তরাধিকার হিসেবে কোন দীনার বা দিরহাম রেখে যাননি, বরং তাঁরা রেখে গেছেন মীরাস হিসেবে ‘ইল্ম। সুতরাং যে ব্যক্তি ইল্ম লাভ করেছে, সে পূর্ণ অংশ লাভ করেছে। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (২২৩) ইয়াযীদ ইবনু সালামা (রাঃ) হে আল্লাহ্র রাসূল ! আমি তো আপনার নিকট হতে অনেক হাদিস শুনেছি। এখন আমার ভয় হয় যে, পরের হাদিসগুলো পূর্বের হাদিসগুলোকে ভুলিয়ে দিতে পারে। সুতরাং আপনি আমাকে এমন একটি বাক্য বলুন যার মধ্যে সব কিছু শামিল থাকবে। তিনি বলেনঃ তুমি যা জান সে ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় কর। যঈফা (১৬৯৬) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন দু’টি স্বভাব আছে যা মুনাফিক্বের মধ্যে একত্রে সমাবেশ হতে পারে না (১) উত্তম চরিত্র ও (২) দ্বীনের সুষ্ঠু জ্ঞান। সহীহঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (২১৯), সহীহাহ্ (২৭৮)। আবূ উমামাহ্ আল-বাহিলী (রাঃ) তিনি বলেন, দু’জন লোকের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আলোচনা করা হল। তাদের একজন আবিদ (সাধক) এবং অন্যজন ‘আলিম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের সাধারণ ব্যক্তির উপর আমার যতখানি মর্যাদা, ঠিক তেমনি একজন ‘আলিমের মর্যাদা একজন ‘আবিদের উপর। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্, তাঁর ফেরেশতাগণ এবং আসমান-যামীনের অধিবাসীরা, এমনকি গর্তের পিঁপড়া এবং পানির মাছ পর্যন্ত সেই ব্যক্তির জন্য দু’আ করে যে মানুষকে কল্যাণকর জ্ঞান শিক্ষা দেয়। সহীহঃ মিশকাত, তাহক্বীক্ব সানী (২১৩), তা’লীকুর রাগীব (১/৬০)। আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মু’মিন ব্যক্তি কখনো কল্যাণকর কথা শুনে জান্নাতে না যাওয়া পর্যন্ত তৃপ্তি পাবে না। যঈফ, মিশকাত (২১৬) আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রজ্ঞাপূর্ণ কথা মু’মিনের হারানো ধন। সুতরাং সে যেখানেই তা পাবে, সে-ই হবে তার অধিকারী। অত্যন্ত দূর্বল , মিশকাত (২১৬)