40. অনুমতি প্রার্থনা
সালামের প্রসার করা
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যে পর্যন্ত না (তোমরা) ঈমানদার হবে, আর ঈমানদার হতে পারবে না, যে পর্যন্ত না পরস্পর ভালোবাসা স্থাপন করবে। আমি কি এমন একটি কাজের কথা তোমাদেরকে বলে দিব না, যখন তোমরা তা করবে, পরস্পর ভালোবাসা স্থাপিত হবে? তোমরা একে অপরের মধ্যে সালামের প্রসার ঘটাও। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৩৬৯২), মুসলিম।
সালামের ফাযীলাত সম্পর্কে যা বলা হয়েছে
‘ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট একজন লোক এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম।নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ দশ (নেকী)। তারপর অন্য এক লোক এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ বিশ। অতঃপর আরেক লোক এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ত্রিশ। সহীহঃ তা’লীকুর রাগীব (৩/২৬৮)
তিনবার অনুমতি চাইতে হবে
আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) তিনি বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) ‘উমার (রাঃ) এর নিকট অনুমতি চেয়ে বলেন, আসসালামু আলাইকুম, আমি কি আসতে পারি? ‘উমার (রাঃ) বলেন, এক। আবূ মূসা (রাঃ) কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। তিনি আবারও সালাম দিয়ে বলেন, আমি কি ভিতরে আসতে পারি? ‘উমার (রাঃ) বলেন, দুই। তারপর আবূ মূসা (রাঃ) অল্প সময় নীরবতা অবলম্বন করলেন। তিনি আবার বললেন, আসসালামু আলাইকুম, আমি কি আসতে পারি? ‘উমার (রাঃ) বললেন, তিন। এবার তিনি চলে যেতে লাগলেন। ‘উমার (রাঃ) প্রহরীকে জিজ্ঞেস করলেন, তিনি কি করছেন? প্রহরী বলল, তিনি চলে গেছেন। তিনি বললেন, তাকে আমার নিকট ফিরিয়ে নিয়ে এসো। তারপর তিনি উমারের সামনে এলে তিনি প্রশ্ন করলেন, আপনি এরকম করলেন কেন? তিনি বললেন, আমি সুন্নাত পালন করেছি। ‘উমার (রাঃ) বললেন, সুন্নাত পালন করেছেন? আল্লাহর কসম! এর স্বপক্ষে আপনাকে দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে, তা না হলে আমি আপনার ব্যবস্থা করছি (অর্থাৎ- শাস্তি দিব)। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি (আবূ মূসা) আমাদের নিকট আসলেন। আমরা কয়জন আনসারী বন্ধু একসাথে বসে ছিলাম। তিনি বললেন, হে আনসার সম্প্রদায়! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাদীস সম্পর্কে কি তোমরা সবার চাইতে বেশি জ্ঞাত নও? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বলেননি যে, তিনবার অনুমতি চাইতে হবে? তারপর তোমাকে অনুমতি দিলে তো দিল, নতুবা ফিরে যাবে। উপস্থিত লোকজন তার সাথে কৌতুক করতে লাগল। আবু সা‘ঈদ (রাঃ) বলেন, এবার আমি মাথা তুলে তার দিকে তাকালাম এবং বললাম, আপনার উপর এ ব্যাপারে কোন শাস্তি হলে আমি আপনার অংশীদার হব। রাবী বলেন, তারপর তিনি উমারের নিকট এসে এ ঘটনা বললেন। ‘উমার (রাঃ) বললেন, আমি এ সম্পর্কে জানতাম না। সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে তিনবার সম্মতি চাইলাম। তিনি আমাদের সম্মতি দিলেন। সনদ দূর্বল, মতন মুনকার
সালামের জবাব দেয়ার নিয়ম
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে সময়ে মসজিদের এক পাশে বসা ছিলেন। লোকটি নামায আদায় করে এসে তাঁকে সালাম করল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ওয়াআলাইকা, তুমি ফিরে গিয়ে আবার নামায আদায় কর। তারপর তিনি দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করলেন। সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১১৬০), বুখারী ও মুসলিম।
সালাম পৌঁছানো
‘আয়িশাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, জিবরীল (আঃ) তোমাকে সালাম দিয়েছেন। তিনি (‘আয়িশাহ) বললেন, ওয়া ‘আলাইহিস সালামু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ। সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম
প্রথমে সালাম প্রদানকারী ব্যক্তির ফাযীলাত
আবূ উমামাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! দু’জন লোকের মধ্যে সাক্ষাৎ হলে কে প্রথম সালাম দিবে? তিনি বললেনঃ তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার বেশি নিকটবর্তী। সহীহঃ মিশকাত (৪৬৪৬), তাখরীজুল কালিমিত তাইয়্যিব (১৯৮)।
হাতে ঈশারা করে সালাম দেয়া মাকরূহ
‘আমর ইবনু শু‘আইব (রহঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিজাতির অনুকরণকারী ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়। তোমরা ইয়াহূদী-নাসারাদের অনুকরণ করো না। কেননা ইয়াহূদীগণ আঙ্গুলের ইশারায় এবং নাসারাগণ হাতের ইশারায় সালাম দেয়। হাসানঃ সহীহাহ (২১৯৪)
শিশুদেরকে সালাম দেয়া
সাইয়্যার (রহঃ) তিনি বলেন, আমি সাবিত আল-বুনানীর সাথে হাঁটছিলাম। তিনি কয়েকজন শিশুর পাশ দিয়ে চলার সময় তাদেরকে সালাম দিলেন এবং বললেন, কোন একদিন আমি আনাস (রাঃ) এর সাথে ছিলাম। তিনি শিশুদের পাশ দিয়ে চলার সময় তাদেরকে সালাম দিলেন এবং বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ছিলাম। তিনি শিশুদের পাশ দিয়ে চলার সময় তাদেরকে সালাম দিয়েছেন। সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
স্ত্রীলোককে সালাম দেয়া
আসমা বিনতু ইয়াযীদ (রাঃ) তিনি বলেন, কোন এক সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন। সেখানে একদল মহিলা বসা ছিল। তিনি হাত উঠিয়ে তাদেরকে সালাম দিলেন। ‘আবদুল হামীদ তার হাতের ইশারায় বুঝিয়ে দিলেন। “হাতের ইশারা” ব্যতীত হাদীসটি সহীহঃ জিলবাবুল মারআতিল মুসলিমাহ (১৯৪-১৯৬)।
নিজের ঘরে প্রবেশকালে সালাম দেয়া
আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেনঃ হে বৎস! তুমি যখন তোমার পরিবার-পরিজনের নিকটে যাও, তখন সালাম দিও। তাতে তোমার ও তোমার পরিবার-পরিজনের কল্যাণ হবে। হাদীসটির সানাদ দুর্বল।
কথা বলার আগেই সালাম দিতে হবে
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কথা-বার্তা বলার আগেই সালাম বিনিময় হবে। হাসানঃ সহীহাহ (৮১৬)।
যিম্মীদের (অমুসলিম নাগরিকদের) সালাম দেয়া অপছন্দনীয়
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ইয়াহূদী-নাসারাদেরকে প্রথম সালাম করো না। রাস্তায় তাদের মধ্যে কারো সাথে তোমাদের দেখা হলে, পথের সংকীর্ণ পার্শ্ব দিয়ে তাঁকে চলতে বাধ্য কর। সহীহ। ‘আয়িশাহ (রাঃ) তিনি বলেন, কোন একদিন একদল ইয়াহূদী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, আসসামু ‘আলাইকা (আপনার মৃত্যু হোক)। তাদের এ কথার জবাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আলাইকুম (তোমাদেরই তাই হোক)। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, আলাইকুমুস সাম ওয়াল লা‘নাত (তোমাদের উপর মৃত্যু ও অভিশাপ পতিত হোক)। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে ‘আয়িশাহ! আল্লাহ তা‘আলা সকল ব্যাপারেই কোমলতা পছন্দ করেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, তারা কি বলেছে আপনি কি তা শুনেননি? তিনি বললেনঃ আমিও তো বলে দিয়েছি, আলাইকুম। সহীহঃ রাওযুন নাযীর (৭৬৪), বুখারী ও মুসলিম।
মুসলিম ও অমুসলিমদের একত্র সমাবেশে সালাম প্রদান
উসামাহ ইবনু যাইদ (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইয়াহূদী-মুসলিম সম্মিলিত একটি সমাবেশের পাশ দিয়ে চলার সময় তাদেরকে সালাম দিলেন। সহীহঃ বুখারী (৬২৫৪), মুসলিম (৫/১৮২-১৮৩)।
সাওয়ারী ব্যক্তি পদচারী ব্যক্তিকে সালাম প্রদান করবে
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আরোহী পদচারীকে, পদচারী বসা ব্যক্তিকে এবং অল্প সংখ্যক বেশি সংখ্যককে সালাম দিবে। ইবনুল মুসান্না বর্ণিত হাদীসে আরো আছেঃ বয়সে নবীনরা প্রবীণদেরকে সালাম করবে। সহীহঃ সহীহাহ (১১৪৫), বুখারী ও মুসলিম। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অল্প বয়সী বেশী বয়সীদেরকে, পদচারী বসা লোকদেরকে এবং অল্প সংখ্যক বেশি সংখ্যককে সালাম করবে। সহীহঃ প্রাগুক্ত (১১৪৯), বুখারী। ফাযালাহ ইবনু ‘উবাইদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অশ্বারোহী পথচারীকে, পথচারী দাঁড়ানো ব্যক্তিকে এবং অল্প সংখ্যক বেশি সংখ্যককে সালাম দিবে। সহীহঃ প্রাগুক্ত (১১৫০)
উঠতে বসতে সালাম করা
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ কোন মাজলিসে উপস্থিত হলে সে যেন সালাম করে, তারপর তার ইচ্ছা হলে বসে পড়বে। তারপর সে যখন উঠে দাঁড়াবে, তখনো যেন সালাম করে। কেননা পরের সালামের চাইতে প্রথম সালাম বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। হাসান সহীহঃ সহীহাহ (১৮৩), তাখরীজুল কালিম (২০১)।
বাড়ির সম্মুখভাগ দিয়ে সম্মতি চাইবে
আবূ যার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক পর্দা তুলে কারো ঘরের মধ্যে তাকালো এবং সম্মতি পাওয়ার আগেই ঘরের গোপনীয় বিষয় দেখে ফেললো, সে দন্ডনীয় অপরাধী হয়ে গেলো, যা করা তার পক্ষে বৈধ নয়। সে যখন ঘরের ভেতরে তাকিয়ে ছিলো, তখন কেউ যদি এগিয়ে এসে তার দু’চোখ ফুঁড়ে বা সমূলে উপড়ে ফেলে দিত তবে তাকে আমি অপরাধী সাব্যস্ত করতাম না। আর কেউ যদি উন্মুক্ত দরজার পাশ দিয়ে যায় যার পর্দা নেই , আর সে যদি এদিকে তাকায়, তবে তাতে তার কোন দোষ নেই, বরং দোষ বাড়িওয়ালার (পর্দা ঝুলানো তাদের দায়িত্ব )। যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৩৫২৬)
যে ব্যক্তি বাসিন্দাদের বিনা অনুমতিতে তাদের ঘরের ভিতরে উঁকি ঝুঁকি মারে
আনাস (রা:) কোন এক সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে ছিলেন, তখন জনৈক ব্যক্তি তাঁর দিকে উঁকি দিল। তিনি তীরের ফলা তার দিকে তাক করলে সে সরে পড়ল। সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম। সাহ্ল ইবনু সা’দ (রাঃ) জনৈক লোক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ঘরের একটি ছিদ্রপথে তাঁর দিকে উঁকি দিল। তখন তিনি একটি লোহার চিরুনি দিয়ে তাঁর মাথার চুল বিন্যাস করছিলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি যদি জানতাম যে উঁকি দিয়ে আমার দিকে তাকাচ্ছে, তাহলে এটা (চিরুনি) তোমার চোখে ঢুকিয়ে দিতাম। দৃষ্টিশক্তির কারণেই তো অনুমতি প্রার্থনায় নিয়ম চালু করা হয়েছে। সহীহঃ সহীহুত্ তারগীব (৩/২৭৩), বুখারী ও মুসলিম।
অনুমতি চাওয়ার পূর্বেই সালাম দিতে হয়
কালাদাহ্ ইবনু হাম্বল (রহঃ) সাফওয়ান ইবনু উমাইয়্যা (রাঃ) তাকে কিছু দুধ, ছানা ও তরকারীসহ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট পাঠান। সে সময়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপত্যকার উপরে অবস্থান করছিলেন। তিনি (কালাদাহ্) বলেন, আমি অনুমতিও চাইলাম না, সালামও করলাম না, বরং এমনি তাঁর নিকট চলে গেলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ তুমি ফিরে গিয়ে বল, আস্সালামু আলাইকুম, আমি কি আসতে পারি? (তারপর আমার নিকট এসো)। আর এ ঘটনাটি সাফওয়ানের ইসলাম গ্রহণের পরের। সহীহঃ সহীহাহ্ (৮১৮) জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, আমার বাবার কিছু ঋণ ছিল। এ ব্যাপারে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর নিকট যাওয়ার অনুমতি চাইলাম। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ তুমি কে? আমি বললাম, আমি। তিনি বলেন, আমি, আমি। মানে হল যেন তিনি এ ধরণের উত্তর অপছন্দ করেছেন। সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
সফরে থেকে ফিরে রাতের বেলায় স্ত্রীর নিকট যাওয়া অপছন্দনীয়
জাবির (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফর থেকে ফিরে রাতের বেলায় স্ত্রীর নিকট যেতে তাদেরকে নিষেধ করেছেন। সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
লেখার ওপর ধুলা ছিটিয়ে দেওয়া
জাবির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ কিছু লিখলে (শুকানোর জন্য) তার ওপর যেন কিছু ধুলা ছিটিয়ে দেয়। কেননা তা লক্ষ্য পূরণে পরিপূরক। যঈফ, মিশকাত (৫৬৫৭), যঈফা (১৭৩৮)
কলম কানের উপর রাখা
যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে উপস্থিত হলাম। তাঁর সম্মুখে একজন লেখক বসে ছিলেন। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনলামঃ তোমার কানে কলমটি রেখে দাও, কেননা তা বিষয়বস্তু মনে রাখতে সহায়ক। মাওযূ, যাঈফা (৮৬৫)
সুফিয়ানী ভাষা শিক্ষা করা
যাইদ ইবনু সাবিত (রা:) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)আমাকে ইয়াহূদীদের কিতাবী ভাষা (হিব্রু) অধ্যয়নের জন্য আদেশ করেন এবং বলেনঃ আল্লাহ্র কসম! আমি আমার পত্রাদির ব্যাপারে ইয়াহূহীদের উপর নিশ্চিন্ত হতে পারি না। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, তারপর মাসের অর্ধেক যেতে না যেতেই আমি সুফিয়ানী ভাষা আয়ত্ত করে ফেললাম, এ ভাষা শিক্ষার পর থেকে তিনি ইয়াহূদীদের নিকট কোন কিছু লিখতে চাইলে আমিই তা লিখে দিতাম। আর তারা তাঁর নিকট কোন চিঠি পাঠালে, আমি তাঁকে তা পড়ে শুনাতাম। হাসান সহীহঃ মিশকাত(৪৬৫৯)
মুশরিকদের সাথে পত্রবিনিময়
আনাস ইবনু মালিক (রা:) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মৃত্যুর পূর্বে কিস্রা,কাইসার ও নাজাশী এবং তখনকার সব পরাক্রান্ত রাজা-বাদশাহ্দের নিকট তাদেরকে আল্লাহ্র দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে চিঠি দিয়েছেন। তবে ইনি সেই নাজাশী নন,নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যার জানাযা আদায় করেছিলেন। সহীহঃ মুসলিম (৫/১৬৬)
মুশরিকদের নিকট চিঠি লেখার নিয়ম
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) আবূ সুফ্ইয়ান ইবনু হার্ব (রাঃ) তাঁকে বলেছেন, তিনি কুরাইশদের একটি ব্যবসায়ী দলে সিরিয়া গিয়েছিলেন। হিরাকল (হিরাক্লিয়াস) তাকে ডেকে পাঠালেন। তিনি তার নকট গেলেন। তারপর বর্ণনাকারী তার বর্ণিত হাদীসটি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর একটি চিঠি নিয়ে আসা হল এবং তা পড়ানো হল। তাঁকে লিখা ছিলঃ বিসমিল্লা-হির-রাহমা-নির রাহীম, আল্লাহ্র বান্দা ও তাঁর রাসূল মুহাম্মাদের পক্ষ হতে রোমের রাষ্ট্রপ্রধান হিরাকলের প্রতি। হিদায়তের অনুসারীদের প্রতি সালাম। তারপর এই......। সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
চিঠির উপর সীলমোহর লাগানো
আনাস ইবনু মালিক (রা:) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন অনাবরদের চিঠি লিখতে চাইলেন, তখন তাঁকে বলা হল, অনাবরগণ সীল লাগানো ব্যাতীত কোন চিঠিপত্র গ্রহণ করে না। তারপর তিনি একটি আংটি (সীল) বানালেন। তিনি (আনাস) বলেন, এখনও মনে হচ্চে যেন আমি তাঁর হাতে এর শুভ্রতা (আংটির চাকচিক্য ) দেখতে পাচ্ছি। সহীহঃ মুখতাসার শামা-য়িল (৭৪) , বুখারী ও মুসলিম।
সালাম বিনিময়ের নিয়ম
মিক্বদাদ ইবনুল আস্ওয়াদ (রা:) তিনি বলেন, আমি এবং আমার দু’জন সাথী এমন অবস্থায় (মাদীনায়) পৌছালাম যে, আমাদের চোখ-কান ক্ষুধার যন্ত্রণায় অচল হয়ে যাওয়ার উপক্রম হল। তারপর আমরা আমাদেরকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাহাবীদের নিকট উপস্থাপন করতে লাগলাম; কিন্তু কেউই আমাদেরকে গ্রহণ করলেন না। অবশেষে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট হাযির হলাম। তিনি আমাদেরকে নিয়ে তাঁর পরিবারের নিকট গেলেন। সেখানে তিনটি বকরী ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা এগুলোর দুধ দোহন কর। তারপর আমরা এগুলো দোহন করে প্রত্যেকেই যার যার অংশের দুধ পান করতাম এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর অংশ উঠিয়ে রেখে দিতাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলায় আসতেন এবং এমনভাবে সালাম দিতেন যে, ঘুমন্ত লোকেরা জাগ্রত হত না অথচ জাগ্রত লোকেরা তা শুনতে পেত। তারপর তিনি মসজিদে গিয়ে নাময আদায় করতেন, তারপর তাঁর জন্য রাখা দুধ পান করতেন। সহীহঃ আদাবুয্ যিফা-ফ নতুন সংস্করণ (১৬৭-১৯৬), মুসলিম
প্রস্রাবরত লোককে সালাম দিয়া মাকরূহ
ইবনু ‘উমার (রা:) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর প্রস্রাবরত অবস্থায় একজন লোক তাঁকে সালাম দিল। কিন্তু তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সালামের উত্তর দেননি। হাসান সহীহঃ ৯০ নং হাদীসের পুনরুক্তি।
প্রথমেই “আলাইকাস্ সালাম” বলা নিষেধ
আবূ তামীমা আল-হুজাইমী (রা:) তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে খোঁজ করে না পেয়ে বসে রইলাম। এরই মধ্যে আমি তাঁকে একদল লোকেরা মাঝে দেখতে পেলাম, কিন্তু আমি তাঁকে চিনতাম না। তাদের মাঝে তিনি মীমাংসা করেছিলেন। কাজ শেষে কয়েকজন তাঁর সাথে উঠে দাড়ালো এবং বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল ! আমি ইহা দেখে তাঁকে বললাম, ‘আলাইকাস্ সালামু ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি বললেনঃ “আলাইকাস্ সালামু ” হল মৃত ব্যক্তির জন্য সালাম। এ কথাটি তিনি তিন বার বললেন। তারপর তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেনঃ কোন ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাতের সময় যেন বলে, “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহ্মাতুল্লাহি”। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সালামের উত্তর দিলেনঃ ওয়া ‘আলাইকা ওয়া রাহ্মাতুল্লাহ, ওয়া ‘আলাইকা ওয়া ‘আলাইকা ওয়া রাহ্মাতুল্লাহ। সহীহঃ সহীহাহ্ (১৪০৩) জাবির ইবনু সুলাইম (রা:) তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললাম, ‘আলাইকাস্ সালাম’। তিনি বললেন, ‘আলাইকাস্ সালাম বল না বরং ‘ আসসালামু ‘আলাইকা’ বল। তারপর তিনি দীর্ঘ ঘটনা বর্ণনা করেন। সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস। আনাস ইবনু মালিক (রা:) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাম করার সময় তিনবার সালাম করতেন এবং কোন কথা বলার সময় তিনবার পুনরাবৃত্তি করতেন। হাসান সহীহঃ মুখতাসার শামা-য়িল (১৯২), বুখারী।
মাজলিসে খালি জায়গায় বসা
আবূ ওয়াকিদ আল-লাইসী (রা:) কোন এক সময় কয়েকজন লোকসহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে বসা ছিলেন। সে সময় তিনজন লোক এসে হাযির হল। তাদের দু’জন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে আসল এবং একজন চলে গেল। এরা দু’জন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সামনে দাঁড়িয়ে সালাম করল এবং এদের একজন বৈঠকে খালি জায়গা দেখে বসে পড়ল আর অন্যজন লোকদের পিছনে গিয়ে বসল। এদের তৃতীয়জন তো পিঠ ফিরিয়ে চলে গেল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন অবসর হলেন , তখন উপস্থিত লোকদেরকে বললেনঃ আমি কি এদের তিনজনের ব্যাপারে তোমাদেরকে জানাবো না? এদের একজন তো আল্লাহ তা’আলার আশ্রয় নিল, ফলে আল্লাহ তাকে আশ্রয় দিয়েছেন; দ্বিতীয়জন লজ্জা পেল, কাজেই আল্লাহ তা’আলা ও তার হতে লজ্জা করেছেন, আর তৃতীয়জন আল্লাহ হতে মুখ ফিরিয়ে নিল, কাজেই আল্লাহ তা’আলাও তার হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম। জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রা:) তিনি বলেন, আমরা যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট আসতাম, তখন যে যেখানেই জায়গা পেতো সে সেখানেই বসে পড়তো। সহীহঃ সহীহাহ্ (৩৩০), তাখরীজুল ‘ইল্ম লি আবী খাইসামহ্ (১০০)।
পথের পার্শ্বে বসা লোকের দায়িত্ব
বারাআ (রাঃ) কোন একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাস্তার পাশে বসা কয়েকজন আনসারীর সম্মুখ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি তাদের বললেনঃ তোমাদের খুব প্রয়োজনে রাস্তায় বসতে হলে তোমরা সালামের জবাব দিবে, মাযলুমদকে সাহায্য করবে এবং লোকদেরকে রাস্তা দেখিয়ে দিবে। মতন (বক্তব্য) সহীহ।
মুসাফাহার (করমর্দন) বর্ণনা
বারাআ ইবনু ‘আযিব (রা:) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে দু’জন মুসলিম পরস্পর মিলিত হয়ে মুসাফাহা করে তাদের আলাদা হবার পূর্বেই তাদের (সগীরা ) গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৩৭০৩) আনাস ইবনু মালিক (রা:) তিনি বলেন , কোন একসময় জনৈক ব্যক্তি প্রশ্ন করল , হে আল্লাহর রাসুল ! আমাদের কোন ব্যক্তি তার ভাই কিংবা বন্ধুর সাথে দেখা করলে সে কি তার সামনে ঝুঁকে (নত) যাবে? তিনি বললেনঃ না। সে আবার প্রশ্ন করন , তাহলে কি সে গলাগলি করে তাকে চুমু খাবে? তিনি বললেনঃ না। সে এবার বলল, তাহলে সে তার হাত ধরে মুসাফাহা (করমর্দন) করবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। হাসানঃ ইবনু মা-জাহ (৩৭০২)। কাতাদাহ (রহঃ) তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)–কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসুলাল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীদের মধ্যে মুসাফাহার প্রচলন ছিল কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। সহীহঃ বুখারী (৬২৬৩) ইবনু মাসঊদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সালামের সময় হাত ধরা (মুসাফাহা করা) সালামের পূর্ণতা সম্পাদনকারী। যঈফ, যঈফা (২৬৯১) আবূ উমামা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ রোগীকে সম্পূর্নভাবে সেবা করার পূর্ণতা হল তার কপালে হাত রাখা অথবা (রাবীর সন্দেহ) তিনি বলেনঃ রোগীর হাতের উপর হাত রেখে প্রশ্ন করা, সে কেমন আছে? আর তোমাদের সালামের পূর্ণতা হল একে অন্যের সঙ্গে মুসাফাহা করা। যঈফ, যঈফা (১২৮৮)
মুআনাকা (কোলাকুলি) ও চুম্বন
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, যাইদ ইবনু হারিসা (রাঃ) যখন (সফর হতে) মদীনায় ফিরে এলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন আমার ঘরে ছিলেন। তিনি এসে দরজা খটখট করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খালি গায়ে কাপড় টানতে টানতে তার নিকটে গেলেন। আল্লাহ্র শপথ! আমি তাঁকে আগে বা পরে কখনো খালি গায়ে দেখিনি। তারপর তিনি যাইদের সাথে কোলাকুলি করলেন এবং তাকে চুমু খেলেন। যঈফ, মিশকাত (৪৬৮২), রিয়াদুস সালেহীন এর মুকাদ্দামা (ওয়াও/৫) নাকদুল কাত্তানী (১৬)
হাতে ও পায়ে চুমু দেওয়া
সাফওয়ান ইবনু আসসাল (রাঃ) তিনি বলেন, জনৈক ইয়াহূদী তার এক সঙ্গিকে বলল, আস আমরা এই নবীর নিকট যাই। তার বন্ধু বলল, নবী বলো না, তিনি যদি শুনে ফেলেন তাহলে খুশীতে তাঁর চার চোখ হয়ে যাবে। অতঃপর এরা দু’জন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন সম্পর্কে প্রশ্ন করল। তিনি তাদের বললেনঃ আল্লাহ্র সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করো না, চুরি করো না, যেনা করো না, আল্লাহ যেসব প্রাণ হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন সঙ্গত কারণ ছাড়া সেগুলো হত্যা করো না, হত্যার উদ্দেশ্যে কোন নির্দোষ ব্যক্তিকে বিচারালয়ে নিয়ে যেও না, যাদু করো না, সুদ খেয়ো না, সতী-সাধ্বী মহিলাকে যেনার অপবাদ দিও না, যুদ্ধের ময়দান থেকে পিঠ ফিরিয়ে পলায়ন করো না এবং বিশেষ করে তোমরা ইয়াহূদীগণ শনিবারের সীমা লংঘন করো না। রাবী বলেন, এসব স্পষ্ট আয়াতের ব্যাখ্যা শুনে তারা তাঁর হাতে-পায়ে চুমু দিল এবং বলল, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি নবী। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তাহলে আমার অনুসরণ করতে তোমাদের বাধা কিসের? রাবী বলেন, তারা বলল, দাঊদ (আঃ) তাঁর রবের নিকটে দু’আ করেছিলেন যে, তাঁর (বংশধরের) সন্তানদের মধ্যেই যেন নবী হন। আমরা আশংকা করছি আমরা যদি আপনার অনুসরণ করি তাহলে ইয়াহূদীগণ আমাদের হত্যা করে ফেলবে। যঈফ, ইবনু মাযাহ (৩৭০৫)
মারহাবা (স্বাগতম) বলা
উম্মু হানী (রা:) তিনি বলেন, আমি মক্কা বিজয়ের বৎসর রাসুলাল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট হাযির হলাম। তখন তিনি গোসল করছিলেন। এবং ফাতিমা (রাঃ) একটি কাপড় দ্বারা তাঁকে আড়াল করে রেখেছিলেন। তিনি বলেন , আমি তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি (রাসুল্লাল্লাহ সাল্লালাহু আলাইই ওয়া সাল্লাম) প্রশ্ন করলেনঃ কে? আমি বললাম , আমি উম্মু হানী। তিনি বললেনঃ উম্মু হানীকে স্বাগতম। তারপর বর্ণনাকারী এ হাদীসের পূর্ণ ঘটনা বর্ণনা করেন। সহীহঃ বুখারী (৩৫৭) , মুসলিম (২/১৫৮)। ইকরিমা (রাঃ) ইবনু আবূ জাহল তিনি বলেন, আমি যেদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এলাম তখন তিনি বললেনঃ আরোহী মুহাজিরকে খোশআমদেদ। সনদ দূর্বল