6. কিতাবুল সিয়াম (রোযা)
রমযান মাসের ফাযীলাত
আবু হুরায়রা (রাঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শাইতান ও দুষ্ট জিন্দেরকে রমযান মাসের প্রথম রাতেই শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয় এবং এর একটি দরজাও তখন আর খোলা হয় না, খুলে দেওয়া হয় জান্নাতের দরজাগুলো এবং এর একটি দরজাও তখন আর বন্ধ করা হয় না। (এ মাসে) একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকেনঃ হে কল্যাণ অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও। হে পাপাসক্ত! বিরত হও। আর বহু লোককে আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ হতে এ মাসে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং প্রত্যেক রাতেই এরূপ হতে থাকে। -সহীহ্ ইবনু মা-জাহ (১৬৪২) আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঈমানের সাথে এবং সাওয়াবের আশা করে যে লোক রমযান মাসের রোযা পালন করলো এবং (ইবাদাতের উদ্দেশ্যে) রাতে জেগে রইলো, তার পূর্ববর্তী গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর ঈমানের সাথে এবং সাওয়াবের আশা করে যে লোক লাইলাতুল কাদ্রের (ইবাদাতের জন্য) রাতে জেগে থাকে, তার পূর্ববর্তী গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হয়। -সহীহ্ ইবনু মা-জাহ (১৩২৬), বুখারী, মুসলিম
রমযান মাস আসার পূর্বক্ষণে রোযা পালন করো না
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমযান মাস আসার একদিন কিংবা দুইদিন পূর্ব থেকে তোমরা (নফল) রোযা পালন করো না। হ্যাঁ, তবে তোমাদের কারো পূর্ব অভ্যাস অনুযায়ী রোযা পালনের দিন পড়ে গেলে সে ঐ দিনের রোযা পালন করতে পারবে। তোমরা রোযা রাখ চাঁদ দেখে এবং রোযা শেষও কর চাঁদ দেখেই। (২৯ তারিখে) আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে ত্রিশ দিন পুরো কর চাঁদ দেখতে না পেলে), এরপর ইফ্তার কর (রোযা শেষ কর)। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৫০ ও ১৬৫৫), বুখারী, মুসলিম আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা রমযান মাস শুরুর এক দিন বা দু’দিন আগে রোযা পালন করো না। হ্যাঁ, তবে যে লোক অভ্যাসমত রোযা পালন করে সে লোক ঐ দিনে রোযা পালন করতে পারে। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৫০), বুখারী, মুসলিম
সন্দেহযুক্ত দিনে রোযা পালন করা মাকরূহ্
সিলা ইবনু যুফার (রহঃ) তিনি বলেন, আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাঃ)-এর নিকটে আমরা উপস্থিত ছিলাম। একটি ভুনা বক্রী (খাবারের উদ্দেশ্যে) নিয়ে আসা হলে তিনি বললেন, তোমরা সকলেই খাও। কিন্তু কোন এক লোক দূরে সরে গিয়ে বলল, আমি রোযাদার। আম্মার (রাঃ) বললেন, সন্দেহযুক্ত দিনে যে লোক রোযা পালন করে সে লোক আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নাফারমানী করে। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৪৫)
রমযান মাস নির্ধারণের উদ্দেশ্যে শাবানের চাঁদের গণনা
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা রমযানের মাস নির্ধারণের জন্য শাবানের চাঁদেরও হিসাব রাখ। -হাসান, সহীহা (৫৬৫)
চাঁদ দেখে রোযা আরম্ভ করা এবং চাঁদ দেখে রোযা শেষ করা
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা রমযানের পূর্বে রোযা রেখ না। তোমরা রমযানের চাঁদ দেখার পর রোযা রাখা আরম্ভ কর এবং চাঁদ দেখার পর তা ভাঙ্গ। মেঘের কারণে চাঁদ দেখা না গেলে তবে ত্রিশ দিন পূর্ণ কর। -সহীহ আবূ দাঊদ (২০১৬)
উনত্রিশ দিনেও একমাস পূর্ণ হয়
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমরা যতবার ত্রিশ দিন রোযা পালন করেছি, এর চেয়ে বেশি ঊনত্রিশ দিন রোযা পালন করেছি। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৫৮) আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার এক মাসের জন্য তাঁর স্ত্রীদের সাথে ঈলা (শপথ) করেন। ঘরের মাচানের একটি কক্ষে তিনি ২৯ দিন থাকেন। লোকেরা বলল, হে রাসূলুল্লাহ! আপনি তো এক মাসের জন্য ঈলা (শপথ) করেছিলেন? তিনি বললেনঃ এই মাসটি ঊনত্রিশ দিনের। -সহীহ, বুখারী।
সাক্ষ্যের ভিত্তিতে রোযা রাখা
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেছেন, কোন এক বিদুঈন ব্যক্তি নবীর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এসে বলল, আমি (রামাযানের) নতুন চাঁদ দেখেছি। তিনি বললেন তুমি কি এ কথার সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ্ তা‘আলা ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই? তুমি কি আরো সাক্ষ্য দাও যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্ তা‘আলার রাসূল? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ হে বিলাল! লোকদের মধ্যে ঘোষণা করে দাও তারা যেন আগামীকাল হতে রোযা রাখে। যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৬৫২)
ঈদের দুই মাস কম হয় না
আবূ বাক্রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দুই ঈদের মাস রমযান ও যুলহিজ্জা (একসঙ্গে) কম হয় না। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৫৯), বুখারী, মুসলিম
প্রত্যেক অঞ্চলের লোকদের জন্য তাদের চাঁদ দেখাই ধর্তব্য হবে
কুরাইব (রহঃ) মুআবিয়া (রাঃ)-এর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে উম্মুল ফাযল বিনতুল হারিস (রাঃ) তাকে শামে (সিরিয়ায়) প্রেরণ করেন। কুরাইব (রহঃ) বলেন, সিরিয়ায় পৌঁছার পর আমি উম্মুল ফাযল (রাঃ)-এর কাজটি শেষ করলাম। আমি সিরিয়ায় থাকা অবস্থায়ই রমযান মাসের চাঁদ দেখতে পাওয়া গেল। আমরা জুমু’আর রাতে (বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়) চাঁদ দেখতে পেলাম। রমযানের শেষের দিকে আমি মাদীনায় ফিরে আসলাম। ইবনু আব্বাস (রাঃ) আমাকে (কুশলাদি) জিজ্ঞাসা করার পর চাঁদ দেখা প্রসঙ্গে উল্লেখ করে বললেন, কোন্ দিন তোমরা চাঁদ দেখতে পেয়েছিলে? আমি বললাম, জুমু’আর রাতে চাঁদ দেখতে পেয়েছি। তিনি বললেন, জুমু’আর রাতে তুমি কি স্বয়ং চাঁদ দেখতে পেয়েছ? আমি বললাম, লোকেরা দেখতে পেয়েছে এবং তারা রোযাও পালন করেছে, মুআবিয়া (রাঃ)-ও রোযা পালন করেছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, কিন্তু আমরা শনিবার (শুক্রবার দিবাগত) রাত্রে চাঁদ দেখেছি। অতএব ত্রিশ দিন পুরো না হওয়া পর্যন্ত অথবা চাঁদ না দেখা পর্যন্ত আমরা রোযা পালন করতে থাকব। আমি বললাম, মুআবিয়া (রাঃ)-এর চাঁদ দেখা ও তার রোযা থাকা আপনার জন্য কি যথেষ্ট নয়? তিনি বলেন, না। আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। - সহিহ, সহিহ আবু দাউদ (১০২১), মুসলিম।
যে সব খাদ্য সামগ্ৰী দিয়ে ইফতার করা মুস্তাহাব
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি (ইফ্তারের সময়) খেজুর পায় সে যেন তা দিয়ে ইফ্তর করে। আর যে ব্যক্তি তা না পায় সে যেন পানি দিয়ে ইফ্তার করে। যেহেতু পানি পবিত্র বা পবিত্রকারী। যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৬৯৯) সালমান ইবনু আমির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন ইফ্তার করে তখন সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে। ইবনু উআইনার বর্ণনায় আরো আছেঃ এতে বারকাত রয়েছে। কেউ যদি তা না পায় তবে সে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কেননা পানি পবিত্র বা পবিত্রকারী। এ বর্ণনাটিও যঈফ। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মাগরিবের) নামায আদায়ের পূর্বেই কয়েকটা তাজা খেজুর দ্বারা ইফ্তার করতেন। তিনি তাজা খেজুর না পেলে কয়েকটা শুকনো খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন আর শুকনো খেজুরও না পেলে তবে কয়েক ঢোক পানি পান করতেন। -সহীহ্, ইরওয়া (৯২২), সহীহ আবূ দাঊদ (২০৪০)
ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আয্হা সম্মিলিতভাবে পালন করা
আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যেদিন তোমরা সবাই রোযা পালন কর সে দিন হল রোযা। যেদিন তোমরা সবাই রোযা ভঙ্গ কর সে দিন হল ঈদুল ফিত্র। আর যেদিন তোমরা সবাই কুরবানী কর সে দিন হল ঈদুল আয্হা। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৬০)
যখন রাত আসে এবং দিন চলে যায় তখন রোযাদার ইফতার করবে
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রাত আসে, দিন চলে যায় এবং সূর্য অস্তমিত হয় তখন তুমি ইফতার কর। -সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (২০৩৬), ইরওয়া (৯১৬), বুখারী, মুসলিম
বিলম্ব না করে ইফতার করা
সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যত দিন পর্যন্ত লোকেরা বিলম্ব না করে ইফ্তার করবে তত দিন পর্যন্ত তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে। -সহীহ, ইরওয়া (৯১৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ আমার বান্দাদের মাঝে যারা তাড়াতাড়ি ইফ্তার করে তারাই আমার বেশী প্রিয়। যঈফ, মিশকাত (১৯৮৯), তা‘লীকুর রাগীব (২/৯৫), তা‘লীকুল জিয়াদ। আব্দুল্লাহ ইব্নু আবদুর রহমান আব্দুল্লাহ ইব্নু আবদুর রহমান...... আওযাঈ হতে উপোরোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। য‘ঈফঃ দেখুন পূর্বের হাদীস আবূ আতিয়্যা (রহঃ) তিনি বলেন, আমি ও মাস্রূক আইশা (রাঃ)-এর নিকটে গিয়ে বললাম, হে উম্মুল মু’মিনীন! রাসূলুল্লাহু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুজন সাহাবীর মধ্যে একজন ইফ্তার করেন এবং নামায আদায় করেন বিলম্ব না করে আর অন্যজন ইফ্তার করেন এবং নামায আদায় করেন বিলম্ব করে। তিনি বললেন, তাঁদের মধ্যে কে অবিলম্বে ইফ্তার করেন এবং নামায আদায় করেন? আমরা বললাম, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ)। তিনি বললেন, এভাবেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করেছেন। অপর সাহাবী ছিলেন আবূ মূসা (রাঃ)। -সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (২০৩৯), মুসলিম
বিলম্ব করে সাহ্রী খাওয়া
যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সাহ্রী খাওয়া শেষ করেই আমরা নামায আদায় করতে দাঁড়ালাম। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাঁকে প্রশ্ন করলাম, কি পরিমাণ ব্যবধান ছিল এ দুটির মাঝে তিনি বললেন, পঞ্চাশ আয়াতের সমপরিমাণ (তিলাওয়াতের সময়)। -সহীহ, বুখারী, মুসলিম হিশাম (রহঃ) উপরোক্ত হাদীসের ন্যায় বর্ণনা করেছেন হান্নাদ ওয়াকী হতে, তিনি হিশাম হতে। তাতে আছে “পঞ্চাশ আয়াত পাঠের সমপরিমাণ”। হুযাইফা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। এরকম মতই ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকের। বিলম্ব করে সাহ্রী খাওয়াকে তাঁরা মুস্তাহাব বলেছেন।
ফজরের (সুবহি সাদিকের) বর্ণনা
তাল্ক ইবনু আলী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা (ভোররাতে) পানাহার করে যাও। তোমাদের যেন উর্ধ্বগামী আলোকরশ্মি খাবার থেকে বিরত না রাখে। তোমরা পানাহার করে যেতে পার লাল দীপ্তিটুকু প্রশস্তভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত। -হাসান সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (২০৩৩) সামুরা ইবনু জুনদাব (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদেরকে যেন সাহ্রী খাওয়া হতে বিরত না রাখে বিলালের আযান এবং দিগন্তবৃত্তে প্রকাশিত ভোরের আলো (সুবহে কাযিব), দিগন্তবৃত্তে উদ্ভাসিত বিস্তৃত আলো (সুবহি সাদিক) ব্যতীত। -সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২০৩১), মুসলিম
রোযা থাকা অবস্থায় গীবাত করা প্রসঙ্গে কঠোর হুঁশিয়ারি
আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অন্যায় কথাবার্তা (গীবাত, মিথ্যা, গালিগালাজ, অপবাদ, অভিসম্পাত ইত্যাদি) ও কাজ যে লোক (রোযা থাকা অবস্থায়) ছেড়ে না দেয়, সে লোকের পানাহার ত্যাগে আল্লাহ্ তা’আলার কোন প্রয়োজন নেই। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৮৯), বুখারী
সাহ্রী খাওয়ার ফাযীলাত
আনাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাহ্রী খাও, কেননা, সাহ্রী খাওয়ার মধ্যে বারকাত আছে। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৯২), বুখারী, মুসলিম কুতাইবা উপরোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন কুতাইবা লাইস হতে, তিনি মূসা ইবনু আলী হতে, তিনি তার পিতা (আলী) হতে, তিনি আবূ কাইস হতে, তিনি আমর ইবনুল আস (রাঃ)-এর সূত্রে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে। -সহীহ, হিজাবুল মারআতিল মুসলিমা (পৃঃ ৮৮), সহীহ আবূ দাঊদ (২০২৯), মুসলিম
সফরে থাকাবস্থায় রোযা পালন করা মাকরূহ
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) মক্কা বিজয়ের বছর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার উদ্দেশ্যে রাওয়ানা হন। তিনি রোযা রাখেন এবং লোকেরাও তাঁর সাথে রোযা রাখে। কুরাউল গামীমে পৌঁছানোর পর তাঁকে বলা হল, রোযা রাখা লোকদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আপনি কি করেন তারা সেই অপেক্ষায় আছে। আসরের নামায আদায়ের পর তিনি এক পেয়ালা পানি চেয়ে আনালেন এবং তা পান করলেন। তখন লোকেরা তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখছিল। ফলে তাদের মধ্যেকার কিছু লোক রোযা ভাঙ্গলো এবং কিছু লোক রোযা থাকল। তখনও কিছু লোক রোযা অবস্থায় আছে এ কথা তাঁর নিকটে পৌঁছলে তিনি বললেনঃ এরা হচ্ছে অবাধ্য নাফরমান। -সহীহ, ইরওয়া (৪/৫৭), মুসলিম
সফরে রোযা পালনের অনুমতি প্রসঙ্গে
আয়িশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আসলাম গোত্রের হামযা ইবনু আমর (রাঃ) সফরে থাকাবস্থায় রোযা পালন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন। আর তিনি প্রায়ই রোযা পালন করতেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ ইচ্ছা করলে তুমি রোযা পালন করতেও পার আবার ইচ্ছা করলে ভাঙ্গতেও পার। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৬২), বুখারী, মুসলিম আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, রমযান মাসেও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমরা সফরে গিয়েছি। কিন্তু রোযাদারকে সফরে রোযা পালনের কারণে কিংবা রোযা ভঙ্গকারীকে রোযা ভেঙ্গেফেলার কারণে কোনরকম দোষারোপ করতেন না। -সহীহা (৩/১৪৩), মুসলিম আবূ সাঈদ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমরা সফরে যেতাম। আমাদের মধ্যে রোযাদার এবং রোযা ভঙ্গকারী উভয়েই থাকতেন। রোযাদারের বিরুদ্ধে রোযা ভঙ্গকারী এবং রোযা ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে রোযাদার কোনরকম অভিযোগ করেননি। তারা মনে করতেন, শক্তিশালী লোক রোযা পালন করলে তা ভালই করেছে এবং দুর্বল লোক রোযা পালন না করলে তাও ভাল করেছে। -সহীহ, মুসলিম
যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকদের রোযা ভেঙে ফেলার অনুমতি আছে
সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব (রহঃ) তাকে সফরে রোযা রাখা প্রসঙ্গে প্রম্ন করা হলে তিনি বলেন, উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেছেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে রামাযান মাসে দু’টি যুদ্ধ করেছি- বদর ও মক্কা বিজয় যুদ্ধ। এ সময় আমরা রোযা ভেঙ্গে ফেলেছি। সনদ দুর্বল
গর্ভবতী নারী ও দুগ্ধদানকারিণী মায়ের জন্য রোযা ভঙ্গের অনুমতি আছে
আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব গোত্রের আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, আমাদের উপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অশ্বারোহী বাহিনী হঠাৎ আক্রমণ করল। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলাম। আমি তাঁকে সকালের খাবার খাওয়ারত অবস্থায় পেলাম। তিনি বললেনঃ কাছে আস এবং খাও। আমি বললাম, আমি রোযা আছি। তিনি বললেনঃ সামনে আস, আমি তোমাকে রোযা প্রসঙ্গে কথা বলব। আল্লাহ তা’আলা মুসাফির লোকের রোযা ও অর্ধেক নামায কমিয়ে দিয়েছেন আর গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিণী মহিলাদের রোযা মাফ করে দিয়েছেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র শপথ! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুজনের কিংবা একজনের কথা বলেছেন। আমার আফসোস এই যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমি খাবার খাইনি। -হাসান সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৬৭)
মৃত ব্যক্তির পক্ষ হতে রোযা আদায় করা
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একটি মহিলা এসে বলল, আমার বোন মারা গেছে, অথচ তার উপর পরস্পর দুমাসের রোযা কাযা অবস্থায় আছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ দেখ কোন ঋণ যদি তোমার বোনের উপর থাকত তাহলে কি তুমি সেটা পরিশোধ করতে? সে বলল, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে আল্লাহ তা’আলার হাক (অধিকার) সবচেয়ে অগ্রগণ্য। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৫৮), বুখারী, মুসলিম আবূ কুরাইব আবূ খালিদ আল-আহমার তিনি আ’মাশ হতে এই সনদে উপরোক্ত হাদীসের মতই হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। মুহাম্মাদ (বুখারী) বলেন, আবূ খালিদ আল-আহ্মার এই হাদীসটি আ’মাশ হতে বর্ণনার ক্ষেত্রে উত্তম কাজ করেছেন। তিনি আরও বলেন, আবূ খালিদ ব্যতীত আরো অনেকে আ’মাশ (রহঃ) হতে আবূ খালিদের মতই বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, আবূ মুআবিয়া প্রমুখ এই হাদীসটিকে আমাশ হতে, তিনি মুসলিম আল-বাতীন হতে, তিনি সাঈদ ইবনু জুবাইর হতে, তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এতে তাঁরা বর্ণনাকারী সালামা ইবনু কুহাইল, আতা ও মুজাহিদের নাম উল্লেখ করেননি। আবূ খালিদের নাম সুলাইমান ইবনু হাইয়্যান।
রোযার কাফ্ফারা
ইবনু উমার (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি এক মাসের রোযা অসম্পন্ন রেখে মৃত্যু বরণ করে তার পক্ষ হতে প্রতিদিনের রোযার জন্য একজন করে মিস্কীনকে যেন খাওয়ানো হয়। যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৭৫৭)
রোযাদার ব্যক্তি বমি করলে
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তিনটি জিনিস রোযা ভঙ্গ করে নাঃ রক্তমোক্ষণ, বমি ও স্বপ্নদোষ। যঈফ, তাখরীজ হাকীকাতুস্ সিয়াম (২১-২২), যঈফ আবূ দাঊদ (৪০৯)
যে লোক (রোযা থাকাবস্থায়) ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে
আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোকের রোযা থাকাবস্থায় বমি হলে সে লোককে ঐ রোযার কাযা আদায় করতে হবে না। কিন্তু কোন লোক ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে তাকে কাযা রোযা আদায় করতে হবে। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৭৬)
রোযাদার ব্যক্তি ভুলবশতঃ কিছু পানাহার করলে
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভুলবশতঃ যে লোক (রোযা থাকা অবস্থায়) কিছু খায় বা পান করে সে যেন রোযা ভেঙ্গে না ফেলে। কেননা, এটা এমন এক রিযিক যা আল্লাহ্ তা’আলা তাকে ভোজন করিয়েছেন। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৭৩), নাসা-ঈ আবূ সাঈদ আল-আশাজ্জ আবূ উসামা আবূ সাঈদ আল-আশাজ্জ আবূ উসামা হতে, তিনি আউফ হতে, তিনি ইবনু সীরীন হতে, তিনি খাল্লাস হতে, তিনি হুরায়রা (রাঃ) হতে, তিনি নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উপরোক্ত হাদীসের ন্যায় বর্ণনা করেছেন। -সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস
নিজের ইচ্ছায় রোযা ভেঙে ফেললে
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন অজুহাত ছাড়া বা রোগ ছাড়া রামাযান মাসের একটি রোযা ভেঙে ফেলে, তার পুরো জিন্দেগীর রোযা দিয়েও এর ক্ষতিপূরণ হবে না। যদিও সে জীবনভর রোযা রাখে। যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৬৭২)
রমযানের রোযা ভঙ্গের কাফ্ফারা
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, এক লোক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমিতো ধংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কিসে তোমাকে ধ্বংস করল? সে বলল, আমি রোযা থাকাবস্থায় স্ত্রীসংগম করেছি। তিনি বললেন, তুমি কি একটি গোলাম মুক্ত করতে পারবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি একসাথে দু’মাস রোযা রাখতে পারবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি ষাটজন মিসকীনকে খাওয়াতে পারবে? সে বলল, না। তিনি তাকে বললেনঃ তুমি বস। লোকটি বসে রয়ল। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক (বড়) ঝুড়িভর্তি খেজুর আসলো। তিনি তাকে বললেনঃ এগুলো নিয়ে দান-খায়রাত করে দাও। সে বলল, আমার চেয়ে দরিদ্র মাদীনার পাথরময় দুপ্রান্তের মাঝে আর কেউ নেই। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, (তার কথায়) তিনি হেসে দিলেন, এমনকি তাঁর চোয়ালের দাঁত দেখা গেলো। তিনি বললেনঃ এগুলো নাও এবং তোমার পরিবারবর্গকে খাওয়াও। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৭১), বুখারী, মুসলিম
রোযাদারের মিসওয়াক করা
আমির ইবনু রাবীআ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে রোযা থাকা অবস্থায় অসংখ্যবার মিসওয়াক করতে দেখেছি। যঈফ, ইরওয়া (৬৮)
রোযা থাকা অবস্থায় সুরমা ব্যবহার করা
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকটে এসে বলল, আমার চোখ ব্যথা করে। আমি রোযা থাকা অবস্থায় তাতে সুরমা লাগাতে পারি কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। সনদ দুর্বল
রোযা থাকাবস্থায় (স্ত্রীকে) চুমু দেয়া
আইশা (রাঃ) রমযান মাসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (রোযা থাকাবস্থায় স্ত্রীকে) চুমু দিতেন। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৮৩), মুসলিম, বুখারী অনুরূপ
রোযা থাকাবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর আলিঙ্গন
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে রোযা থাকাবস্থায় আলিঙ্গন করতেন। তবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিনি তোমাদের চেয়ে অনেক বেশি সামর্থবান ছিলেন। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৮৪), বুখারী, মুসলিম আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রোযা থাকাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (স্ত্রীকে) চুম্বন দিতেন এবং আলিঙ্গন করতেন। আর তিনি তোমাদের চেয়ে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণের অধিকারী ছিলেন। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৭৮), বুখারী, মুসলিম
রাত থাকাবস্থায় সংকল্প (নিয়্যাত) না করলে রোযা হয় না
হাফসা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ফজরের পূর্বেই যে লোক রোযা থাকার নিয়্যাত করেনি তার রোযা (ক্ববূল) হয়নি। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭০০)
নফল রোযা ভেঙ্গে ফেলা প্রসঙ্গে
উম্মু হানী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে আমি বসা ছিলাম। তাঁর কাছে কিছু শরবত নিয়ে আসা হল। তা হতে তিনি পান করলেন, তারপর আমাকে তা দিলেন। আমিও তা হতে কিছু পান করলাম। আমি বললাম, আমি তো অপরাধ করে ফেলেছি। আপনি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি বললেনঃ তা কিভাবে? আমি বললাম, আমি রোযা রেখেছিলাম, তা ভেঙ্গে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ তুমি কোন রোযার কাযা আদায় করছিলে কি? তিনি বললেন, না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে এতে তোমার কোন ক্ষতি নেই। -সহীহ্, তাখরীজুল মিশকাত (২০৭৯), সহীহ আবূ দাঊদ (২১২০) উম্মু হানী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে আসেন এবং পানীয় আনতে বলেন। তা হতে তিনি নিজে পান করলেন, তারপর উম্মু হানীকে দিলেন এবং তিনিও তা পান করলেন। তারপর উম্মু হানী (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তো রোযা রেখেছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ নফল রোযা পালনকারী নিজের আমানাতদার। সে ব্যক্তি চাইলে রোযা পূর্ণও করতে পারে আবার ভাঙ্গতেও পারে। -সহীহ, প্রাগুক্ত
রাত্রি চলে যাওয়ার পর নফল রোযা রাখা
উম্মুল মু’মিনীন আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন আমার নিকট আসলেন এবং বললেনঃ তোমার কাছে (খাওয়ার) কোন কিছু আছে কি? আমি বললাম, না। তিনি বললেনঃ তাহলে আমি রোযা রাখলাম। -হাসান সহীহ, ইরওয়া (৯৬৫), সহীহ আবূ দাঊদ (২১১৯), মুসলিম মু’মিনদের মাতা আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, আমার নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসতেন এবং বলতেনঃ তোমার নিকট সকালের খাবার কোন কিছু আছে কি? আমি বলতাম, না। তিনি বলতেনঃ আমি রোযা রাখলাম। আইশা (রাঃ) বলেন, তিনি একদিন আমার নিকট আসলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! কিছু উপহার এসেছে আমাদের জন্য। তিনি বললেনঃ তা কি? আমি বললাম, ‘হাইস’। তিনি বললেনঃ আমি তো সকাল হতে রোযা রেখেছি। আইশা (রাঃ) বলেন, তারপর তিনি তা খেলেন। -হাসান সহীহ, প্রাগুক্ত
(নফল) রোযা ভেঙ্গে ফেললে তার কাযা করা অপরিহার্য
আইশা (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমি ও হাফসা (রাঃ) দু'জনেই রোযা (নফল) ছিলাম। আমাদের সামনে খাবার আসলো এবং সে খাবারের প্রতি আমাদের লোভ জাগলো। তাই আমরা তা খেয়ে ফেললাম। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসলেন। হাফসা (রাঃ) আমার আগেই তার নিকটে গেলেন। আর তিনি ছিলেন পিতার কন্যা। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা দু'জন রোযা ছিলাম। আমাদের সামনে লোভজনক খাবার আসলে আমরা তা খেয়ে ফেললাম। তিনি বলেনঃ তোমরা দু’জনে এর বদলে আর একদিন রোযা রেখে নিও। যঈফ, যঈফ আবূ দাউদ (৪২৩)
শা’বানকে রমযানের সাথে মিলানো
উম্মু সালামা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি শা’বান ও রমযান ছাড়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একটানা দু’মাসের রোযা পালন করতে দেখিনি। -সহীহ ইবনু মা-জাহ (১৩৪৮) আইশা (রাঃ) আবূ সালামার সূত্রে আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শা’বান মাসের অনুরূপ অন্য কোন মাসে এত বেশি (নফল) রোযা পালন করতে দেখিনি। কিছু অংশ ছাড়া এ মাসের পুরো মাসটাই, বলতে কি সারা মাসটাই তিনি (নফল) রোযা রাখতেন। -হাসান সহীহ, প্রাগুক্ত
রমযান মাসের সম্মানার্থে শা’বান মাসের শেষ অর্ধেকে রোযা পালন করা মাকরূহ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শা’বান মাসের অর্ধেক বাকী থাকতে তোমরা আর রোযা পালন করো না। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৫১)
মধ্য শা'বান রাতের ফযীলত
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, এক রাতে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে হারিয়ে ফেললাম (বিছানায় পেলাম না)। আমি (তাঁর সন্ধানে) বের হলাম। এসে দেখলাম তিনি বাকী কবরস্তানে আছেন। তিনি বলেনঃ তুমি কি ভয় করছ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমার প্রতি কোন অবিচার করবেন? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অনুমান করলাম আপনি আপনার অন্য কোন বিবির নিকটে গিয়েছেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা মধ্য শা'বানে (১৫ তারিখের রাতে) দুনিয়ার কাছের আকাশে অবতীর্ণ হন। তারপর কালব গোত্রের বকরী পালের লোমের চেয়েও বেশী সংখ্যক লোককে তিনি মাফ করে দেন। যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৩৮৯)
মুহার্রামের রোযা
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমযান মাসের রোযার পরে আল্লাহ্ তা’আলার মাস মুহার্রামের রোযাই সবচেয়ে ফাযীলাতপূর্ণ। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭৪২), মুসলিম আলী (রাঃ) তিনি বলেছেন, এক ব্যক্তি তাকে প্রশ্ন করল, রামাযান মাসের পর কোন মাসের রোযা রাখতে আপনি আমাকে আদেশ করেন? তিনি তাকে বললেন, এই বিষয়ে আমি কাউকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনিনি। তবে হ্যাঁ এক সময় আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকটে বসা ছিলাম। এই সময় এক ব্যক্তি এসে তাঁকে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! রামাযান মাসের পর আর কোন মাসের রোযা পালনে আপনি আমাকে আদেশ করেন? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ রামাযান মাসের পর তুমি যদি আরো রোযা রাখতে ইচ্ছুক হও তবে মুহাররামের রোযা রাখ। যেহেতু এটা আল্লাহ তা'আলার মাস। এই মাসে এমন একটি দিবস আছে যেদিন আল্লাহ তা'আলা এক গোত্রের তাওবা ক্ববুল করেছিলেন এবং তিনি আরোও অনেক গোত্রের তাওবাও এই দিনে কুবুল করবেন। যঈফ, তা’লীকুর রাগীব (২/৭৭)
জুমু’আর দিন রোযা পালন প্রসঙ্গে
আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, প্রত্যেক মাসের শুরুতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিন দিন রোযা পালন করতেন এবং জুমুআর দিনের রোযা খুব কমই ভাঙ্গতেন। -হাসান, তাখরীজুল মিশকাত (২০৫৮) তা’লীক আলা ইবনু খুযাইমা (২১৪৯), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২১১৬)
শুধুমাত্র জুমু’আর দিন রোযা পালন করা মাকরূহ্
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে কোন ব্যক্তি যেন শুধুমাত্র জুমু’আর দিনে রোযা না রাখে জুমু’আর আগের দিন বা পরের দিন রোযা না রেখে। -সহীহ্ ইবনু মা-জাহ (১৭২৩), বুখারী, মুসলিম
শনিবারের রোযা পালন প্রসঙ্গে
আবদুল্লাহ ইবনু বুসর (রহঃ) হতে তার বোন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের উপর ফরযকৃত রোযা ছাড়া তোমরা শনিবারে আর অন্য কোন রোযা পালন করো না। আঙ্গুরের লতার বাকল বা গাছের ডাল ছাড়া তোমাদের কেউ যদি আর কিছু না পায় (সেদিনের আহারের জন্য) তবে সে যেন তাই চিবিয়ে নেয় (রোযা ভাঙ্গার জন্য)। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭২৬)
সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা পালন প্রসঙ্গে
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোযার প্রতি বেশি খেয়াল রাখতেন। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭৩৯) আইশা (রাঃ) তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাসের শনি, রবি ও সোমবার রোযা রাখতেন এবং অপর মাসের মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন। যঈফ, তাখরীজুল মিশকাত, তাহকীক ছানী (২০৫৯), আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহ তা’আলার দরবারে) আমল পেশ করা হয়। সুতরাং আমার আমলসমূহ যেন রোযা পালনরত অবস্থায় পেশ করা হোক এটাই আমার পছন্দনীয়। -সহীহ্, তাখরীজুল মিশকাত (২০৫৬), তা’লীকুর রাগীব (৮৪/২), ইরওয়া (৯৪৯)
বুধবার ও বৃহস্পতিবারের রোযা রাখা প্রসঙ্গে
উবাইদুল্লাহ্ ইবনু মুসলিম আল-কুরাশী (রহঃ) হতে তার পিতা তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে পুরো বছর রোযা রাখা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম বা তাঁকে প্রশ্ন করা হল। তিনি বলেনঃ তোমার উপর অবশ্যই তোমার পরিবারের অধিকার আছে। অতএব তুমি রামাযান ও এর পরের মাস (শাওয়ালের ছয়টি নফল রোযা) এবং প্রতি বুধ ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখ। এই পদ্ধতি মানলে তুমি যেন পুরো বছরই রোযা রাখলে এবং রোযা ভেঙে ফেলার সুযোগ পেলে। যঈফ, যঈফ আবূ দাঊদ (৪২০)
আরাফার দিন রোযা পালনের ফাযীলাত
আবূ কাতাদা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আরাফাতের দিনের রোযা সম্পর্কে আশা করি যে, তিনি এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৩০), মুসলিম
আরাফাতে অবস্থানকালে সে দিনের রোযা পালন করা মাকরূহ্
ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরাফাতে রোযা ভেঙ্গে ফেলেন। সেদিন তাঁর জন্য উম্মুল ফাদল (রাঃ) কিছু দুধ পাঠিয়েছিলেন। তিনি তা পান করেন। -সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (২১০৯), তা’লীক আলা ইবনু খুযাইমা (২১০২), উম্মুল ফাযল হতে (বুখারী ও মুসলিম ) ইবনু আবূ নাজীহ্ (রহঃ) হতে তার পিতা তিনি বলেন, আরাফাতের দিন রোযা পালন প্রসঙ্গে ইবনু উমার (রাঃ)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে হাজ্জ করেছি, তিনি সেদিন রোযা পালন করেননি। আবূ বাক্র (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, ঐ দিন তিনিও রোযা পালন করেননি। উমার (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, ঐ দিন তিনিও রোযা পালন করেননি। উসমান (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, ঐ দিন তিনিও রোযা পালন করেননি। এ দিন আমি নিজেও রোযা পালন করিনা, কাউকে রোযা রাখতেও বলি না এবং নিষেধও করি না। -সনদ সহীহ্
আশূরার দিন রোযা পালনের উৎসাহ প্রদান করা
আবূ কাতাদা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আমি আশাপোষণ করি যে, তিনি আশূরার রোযার মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের (গুনাহ্) ক্ষমা করে দিবেন। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৩৮), মুসলিম
আশূরার দিন রোযা পালন না করার সুযোগ
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, কুরাইশরা জাহিলী যুগে এমন একটি দিনে রোযা রাখত যে দিনটি ছিল আশূরা। সেদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও রোযা পালন করতেন। তিনি মাদীনায় আসার পরও ঐ রোযা পালন করেছেন এবং রোযা পালনের জন্য লোকদেরকেও আদেশ করেছেন। রমযান মাসের রোযা ফরয হওয়ার পর এটাই ফরয হিসাবে রয়ে গেল এবং তিনি আশূরার রোযা ছেড়ে দিলেন। ফলে এই দিনে যে লোক ইচ্ছা করে সে রোযা পালন করতে পারে আর যে ইচ্ছা না করে সে তা ছেড়েও দিতে পারে। -সহীহ, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২১১০), বুখারী, মুসলিম
কোন্টি আশূরার দিন?
হাকাম ইবনুল আ’রাজ (রহঃ) তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। তখন তিনি যমযম কূপের সামনে তার চাদরকে বালিশের মত করে হেলান দেওয়া অবস্থায় ছিলেন। আমি বললাম, আমাকে আশূরা প্রসঙ্গে কিছু বলে দিন তো, কোন দিনটিতে আমি রোযা রাখব? তিনি বললেন, যখন মুহার্রামের চাঁদ দেখতে পাবে তখন হতেই তুমি দিন গুনতে থাকবে। আর রোযা শুরু করবে নয় তারিখ ভোর হতে। আমি বললাম, এভাবেই কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা পালন করতেন? তিনি বললেন হ্যাঁ। -সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২১১৪), মুসলিম ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, (মুহার্রামের) দশম তারিখে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশূরার রোযা পালন করতে আদেশ করেছেন। -সহীহ, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২১১৩), মুসলিম আরও পূর্ণাঙ্গ রূপে।
যুলহিজ্জা মাসের (প্রথম) দশ দিন রোযা পালন প্রসঙ্গে
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি কখনও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (যুলহিজ্জা মাসের) দশ দিন রোযা পালন করতে দেখিনি। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭২৯), মুসলিম
যুলহিজ্জা মাসের দশ দিনের সৎকাজের ফাযীলাত
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন কোন দিন নেই যে দিনসমূহের সৎকাজ আল্লাহ্ তা’আলার নিকট যুলহিজ্জা মাসের এই দশ দিনের সৎকাজ অপেক্ষা বেশি প্রিয়। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ্ তা’আলার পথে জিহাদ করাও কি (এত প্রিয়) নয়? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা’আলার পথে জিহাদও তার চেয়ে বেশি প্রিয় নয়। তবে জান-মাল নিয়ে যদি কোন লোক আল্লাহ তা’আলার পথে জিহাদে বের হয় এবং এ দু’টির কোনটিই নিয়ে যদি সে আর ফিরে না আসতে পারে তার কথা (অর্থাৎ সেই শহীদের মর্যাদা) আলাদা। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭২৭), বুখারী আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন কোন দিন নেই যে দিনগুলোর (নফল) ইবাদাত আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট যিলহাজ্জ মাসের দশ দিনের ইবাদাত হতে বেশী প্রিয়। এই দশ দিনের প্রতিটি রোযা এক বছরের রোযার সমকক্ষ এবং এর প্রতিটি রাতের ইবাদাত কাদ্রের রাতের ইবাদাতের সমকক্ষ। যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৭২৮),
শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করা
আবূ আইয়ূব আনসারী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক রমযান মাসে রোযা পালন করলো, তারপর শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করলো, সে লোক যেন সম্পূর্ণ বছরই রোযা পালন করলো। -হাসান সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭১৬), মুসলিম
প্রতি মাসে তিন দিন রোযা পালন করা
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনটি বিষয়ে আমার নিকট হতে প্রতিশ্রুতি নেন। আমি যেন বিত্র আদায়ের পূর্বে না ঘুমাই, প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোযা আদায় করি এবং চাশ্তের নামায নিয়মিত আদায় করি। -সহীহ্, ইরওয়া (৯৪৬), সহীহ আবূ দাঊদ (১২৮৬), বুখারী, মুসলিম আবূ যার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেছেনঃ হে আবূ যার! তুমি প্রতি মাসে তিন দিন রোযা পালন করতে চাইলে তের, চৌদ্দ ও পনের তারিখে তা পালন কর। -হাসান সহীহ্, ইরওয়া (৯৪৭), মিশকাত তাহকীক ছানী (২০৫৭) আবূ যার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতি মাসে যে লোক তিন দিন রোযা পালন করে তা যেন সারা বছরই রোযা পালনের সমান। আল্লাহ্ তা’আলা এর সমর্থনে তার কিতাবে আয়াত অবতীর্ণ করেছেনঃ “কোন লোক যদি একটি সাওয়াবের কাজ করে তাহলে তার প্রতিদান হচ্ছে এর দশ গুণ” (সূরাঃ আন‘আম- ১৬০)। সুতরাং এক দিন দশ দিনের সমান। -সহীহ্, ইরওয়া মু’আযাহ (রহঃ) আমি আইশা (রাঃ)-কে বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি আবার বললাম, কোন্ কোন্ তারিখে তিনি এই রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, তিনি যে কোন দিন এই রোযা রাখতেন, এই বিষয়ে তিনি কোন সংকোচ করতেন না। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭০৮), মুসলিম
রোযা পালনের ফাযীলাত
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের প্রতিপালক বলেন, “প্রতিটি সৎ কাজের প্রতিদান হলো দশ গুণ হতে সাত শত গুণ পর্যন্ত। কিন্তু রোযা শুধুমাত্র আমার জন্যই এবং এর প্রতিদান আমি নিজেই দিব।” রোযা জাহান্নাম হতে (বাঁচার) ঢালস্বরূপ। আল্লাহ্ তা’আলার নিকট রোযা পালনকারীর মুখের গন্ধ কন্তুরী ও মিশ্ক আম্বরের গন্ধের চেয়েও অধিক পছন্দনীয়। তোমাদের কোন রোযা পালনকারীর সাথে যদি কোন জাহিল মূৰ্খতা সুলভ আচরণ করে তবে সে যেন বলে, আমি রোযাদার। -সহীহ, তা’লীকুর রাগীব (২/৫৭-৫৮), সহীহ আবূ দাঊদ (২০৪৬) সাহ্ল ইবনু সা’দ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ "রাইয়্যান" নামে জান্নাতে একটি দরজা আছে। রোযা পালনকারীকে এই দরজা দিয়ে প্রবেশের জন্য ডাকা হবে। যে সব লোক রোযা পালন করে তারা এই দরজা দিয়ে (জান্নাতে) প্রবেশ করবে। আর তাতে যে লোক প্রবেশ করবে সে আর কখনও পিপাসার্ত হবে না। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৪০), “পিপাসার্ত হবে না" বাক্যাংশ ব্যতীত - বুখারী, মুসলিম আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোযা পালনকারীর জন্য দু’টি আনন্দ আছে- একটি আনন্দ যখন সে ইফ্তার করে এবং আরেকটি আনন্দ যখন সে তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ করবে। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৩৮), মুসলিম
সারা বছর রোযা পালন করা প্রসঙ্গে
আবূ কাতাদা (রাঃ) তিনি বলেন, প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! সে সব লোকের কাজগুলো কেমন যে সব লোক সারা বছর রোযা পালন করে? তিনি বললেনঃ তার রোযা পালনও হল না, ইফতারও হলো না। -সহীহ্, ইরওয়া (৯৫২), মুসলিম
অব্যাহতভাবে রোযা পালন করা
আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রহঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রোযা পালন প্রসঙ্গে আইশা (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা পালন করেই যেতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি তো রোযা পালন করেই যাচ্ছেন। আবার রোযা পালন হতে তিনি বিরত থাকতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি বুঝি আর রোযা পালন করবেন না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনও রমযান মাস ব্যতীত সম্পূর্ণ মাস রোযা পালন করেননি। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭১০), বুখারী, মুসলিম আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর রোযা প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোন মাসে তিনি রোযা পালন করতে শুরু করলে মনে হত যে, তাঁর হয়তো আর রোযা ত্যাগের ইচ্ছা নেই। আবার যখন তিনি রোযা পালন করা ছেড়ে দিতেন তখন মনে হত তিনি হয়তো আর রোযা পালন করবেন না। তুমি যদি তাঁকে রাতে নামায রত অবস্থায় দেখতে ইচ্ছা করতে তবে সে অবস্থায়ই দেখতে পেতে। আর তুমি যদি তাঁকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে ইচ্ছা করতে তবে সে অবস্থায়ই দেখতে পেতে। -সহীহ, বুখারী (১৯৭২), মুসলিম (৩/১৬২) নামাযের বাক্যাংশ বাদে সংক্ষিপ্তভাবে। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার ভাই দাঊদ (‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রোযা হল সবচেয়ে উত্তম রোযা। তিনি একদিন রোযা পালন করতেন এবং একদিন পালন করতেন না। আর যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর মুখোমুখী হলে তিনি পালাতেন না। -সহীহ্, বুখারী, মুসলিম
দুই ঈদের দিন রোযা পালন করা মাকরূহ্
আবদুর রাহ্মা্ন ইবনু আওফ (রাঃ)-এর মুক্তদাস আবূ উবাইদ (রহঃ) তিনি বলেন, আমি উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে কুরবানীর দিন দেখতে পেয়েছি যে, খুত্বা দেওয়ার আগে প্রথমে তিনি নামায আদায় করলেন। এরপর তিনি বললেন, এই দুই ঈদের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি রোযা পালন করতে নিষেধ করতে শুনেছি। ঈদুল ফিত্রের দিন হল তোমাদের (সারা মাসের) রোযা ভঙ্গের দিন এবং মুসলিমদের ঈদের দিন। আর তোমরা ঈদুল আযহার দিন তোমাদের কুরবানীর গোশ্ত খাবে। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭২২), বুখারী, মুসলিম আবূ সাঈদ আল-খুদ্রী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’দিন রোযা পালন করতে বারণ করেছেনঃ ঈদুল আয্হা এবং ঈদুল ফিত্রের দিন। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭২১), বুখারী, ইরওয়া (৯৬২), আর রাওয (৬৪৩), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২০৮৮), মুসলিম।
আইয়্যামে তাশ্রীক-এ রোযা পালন করা মাকরূহ্
উক্বা ইবনু আমির (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাদের মুসলিম জনগণের ঈদের দিন হচ্ছে আরাফার দিন, কুরবানীর দিন ও তাশ্রীকের দিন। এ দিনগুলো হচ্ছে পানাহারের দিন। -সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২০৯০), ইরওয়া (৪/১৩০)
রোযা থাকা অবস্থান রক্তক্ষরণ করানো
রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক রক্তক্ষরণ করে এবং যাহার রক্তক্ষরণ করানো হয় তাদের দু’জনের রোযাই নষ্ট হয়ে যায়। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৭৯-১৬৮১)
এই বিষয়ে (রক্তক্ষরণের) অনুমতি প্রসঙ্গে
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রোযা পালন ও ইহরাম অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রক্তক্ষরণ করিয়েছেন। -সহীহ্, এই অর্থে “রোযা থাকাবস্থায় তিনি রক্তক্ষরণ করিয়েছেন”, বুখারী, ইবনু মা-জাহ (১৬৮২) ইবনু আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা থাকাবস্থায় রক্তক্ষরণ করিয়েছেন। -সহীহ্, প্রাগুক্ত ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা ও মদীনার মাঝখানে ইহ্রাম ও রোযা অবস্থায় রক্তক্ষরণ করিয়েছেন। এই শব্দের হাদীসটি মুনকার। প্রাগুক্ত।
সাওমে বিসাল মাকরূহ্
আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাওমে বিসাল কর না। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি তো সাওমে বিসাল করেন। তিনি বললেনঃ আমি তো তোমাদের কারো মত নই। আমাকে আমার প্রতিপালক পানাহার করান। সহীহ্, বুখারী
রোযা পালন করতে ইচ্ছা পোষণকারীর নাপাক অবস্থায় ফজর হওয়া
আবূ বাক্র ইবনু আবদুর রাহমান ইবনু হারিস ইবনু হিশাম (রহঃ) তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী আইশা ও উম্মু সালামা (রাঃ) জানিয়েছেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (কোন কোন সময়) কোন স্ত্রীর (সাথে সহবাসের) কারণে নাপাক অবস্থায় ফজর হয়ে যেত। এরপর তিনি গোসল করতেন এবং রোযা পালন করতেন। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭০৩), বুখারী, মুসলিম
রোযা থাকাবস্থায় দাওয়াত গ্রহণ করা
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কাউকে খাবারের দাওয়াত দেওয়া হলে সে লোক যেন তা গ্রহণ করে। সে রোযাদার হলে (দাওয়াতকারীর জন্য) যেন দু’আ করে। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৫০), মুসলিম আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কোন রোযাদারকে যদি খাবারের দাওয়াত দেওয়া হয় তাহলে সে যেন বলে, আমি রোযা আছি। -সহীহ, প্রাগুক্ত
স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর (নফল) রোযা আদায় করা মাকরূহ্
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মহিলা যেন স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ছাড়া রমযান মাসের রোযা ব্যতীত একদিনও অন্য কোন (নফল) রোযা পালন না করে। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৬১), নাসা-ঈ- রমযানের উল্লেখ ব্যতীত।
রমযানের রোযার কাযা আদায়ের ক্ষেত্রে বিলম্ব করা প্রসঙ্গে
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি শাবান মাস ব্যতীত আমার রমযান মাসের কাযা রোযা আদায় করতে পারতাম না (কোন সংগত ওজরবশত), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকাল পর্যন্ত এই অবস্থা ছিল। -সহীহ্, ইরওয়া (৯৪৪), রাওযুন নাযীর (৭৬৩), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২০৭৬), তামামুল মিন্নাহ, বুখারী, মুসলিম
রোযাদারের সামনে খাবার খেলে তার (রোযাদারের) ফাযীলাত
লাইলা (রহঃ) হতে তাঁর আযাদকারিনী মহিলা (উম্মু উমারা) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোযাদার ব্যক্তির সামনে বেরোযদার লোকেরা যদি খাবার খায় তাহলে ফেরেশতাগণ তার (রোযাদারের) জন্য দু‘আ করেন। যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৭৪৮), হাবীব ইবনু যাইদ (রহঃ) তিনি বলেন, আমাদের আযাদকৃত দাসী লায়লাকে উম্মু উমারা বিনতু কা’ব আল-আনসারিয়্যা (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সময় তার বাড়িতে আসেন। তখন তিনি তাঁর সামনে খাবার আনলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তুমিও খাও। তিনি বলেন, আমি (নফল) রোযা রেখেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ রোযাদার ব্যক্তির সামনে বেরোযদার লোকেরা যদি খায় তাহলে ফেরেশতাগণ তার (রোযাদারের) জন্য দু‘আ করেন। রাবী কোন কোন সময় “হাত্তা ইয়াফরুগূ” (খাওয়া শেষ না করা পর্যন্ত)-এর জায়গায় “হাত্তা ইয়াশবাউ” (পরিতৃপ্ত না হওয়া পর্যন্ত) শব্দ বর্ণনা করেছেন। যঈফ, প্রাগুক্ত। উম্মু উমারা বিনতি কা’ব (রাঃ) উম্মু উমারা বিনতি কা’ব (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর একই রকম হাদীস বর্ণিত আছে। তবে এই বর্ণনায় “হাত্তা ইয়াফরুগূ আও ইয়াশবাঊ” শব্দাবলীর উল্লেখ নেই। (পূর্বের হাদীসের ন্যায়)। এটিও যঈফ,
ঋতুবতী মহিলার রোযা কাযা করা ও নামায কাযা না করা প্রসঙ্গে
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে আমরা মাসিক ঋতুর পর পবিত্র হলে তখন আমাদেরকে তিনি রোযার কাযা আদায়ের হুকুম করতেন কিন্তু নামায কাযা আদায়ের কথা বলতেন না। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৬৩১) মুসলিম, বুখারীতে নামাযের কথা উল্লেখ নেই।
রোযাদারের নাকের ভিতরে পানি পৌঁছানো মাকরূহ্
লাকীত ইবনু সাবিরা (রহঃ) হতে তাঁর পিতা তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! ওযূ প্রসঙ্গে আমাকে জানিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ ভালোভাবে ওযূ কর, আঙ্গুলগুলোর মাঝে খিলাল কর এবং রোযা পালনকারী নাহলে নাকের গভীরে পানি পৌঁছাও। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪০৭)
কোন ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের মেহমান হলে তাদের অনুমতি ব্যতীত (নফল) রোযা রাখবে না
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ কোন সম্প্রদায়ের অতিথি হলে সে যেন তাদের সম্মতি ছাড়া নফল রোযা না রাখে। খুবই দুর্বল, ইবনু মাজাহ (১৭৬৩),
ইতিকাফের বর্ণনা
আবূ হুরায়রা ও আইশা (রাঃ) রমযানের শেষদশকেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ইতিকাফ করতেন। -সহীহ, ইরওয়া (৯৬৬), সহীহ আবূ দাঊদ (২১২৫), বুখারী, মুসলিম আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইতিকাফ করার ইচ্ছা করতেন তখন ফজরের নামায আদায় করে ইতিকাফের জায়গায় প্রবেশ করতেন। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৭১), বুখারী, মুসলিম
লাইলাতুল কাদর (কাদরের রাত্রি)
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রমযান মাসের শেষের দশদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে থাকতেন (ইতিকাফ করতেন)। তিনি বলতেনঃ রমযান মাসের শেষের দশদিন তোমরা কাদরের রাতকে খোঁজ কর। -সহীহ্, বুখারী, মুসলিম যির (রহঃ) তিনি বলেন, উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-কে আমি বললাম, হে আবুল মুনযির! এই যে সাতাশের রাত লাইলাতুল কাদর আপনি সেটা কি করে জানতে পারলেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ অবশ্যই, আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, এই রাত্রের পরবর্তী সকালে সূর্য উদিত হয় ক্ষীণ আলো নিয়ে দীপ্তিহীন অবস্থায়। আমরা সেটাকে গুনে এবং স্মরণ করে রেখেছি। আল্লাহ তা’আলার শপথ! ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-ও জানেন যে, সেটা হচ্ছে রমযানের রাত্র এবং সাতাশেরই রাত্র। কিন্তু তোমাদেরকে তিনি তা জানাতে পছন্দ করেননি, তোমরা যদি পরে এটার উপর নির্ভর করে বসে থাক। -সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (১২৪৭), মুসলিম অনুরূপ আবদুর রাহমান (রহঃ) তিনি বলেন, লাইলাতুল কাদর প্রসঙ্গে একবার আবূ বাক্রা (রাঃ)-এর কাছে আলোচনা হল। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি বাণী শোনার কারণে আমি রমযান মাসের শেষ দশদিন ব্যতীত অন্য কোন রাত্রে লাইলাতুল কাদরকে খোঁজ করি না। আমি তাঁকে বলতে শুনেছিঃ তোমরা কাদরের রাত্রে খোঁজ কর রমযানের নয়দিন বাকী থাকতে বা সাতদিন বাকী থাকতে বা পাঁচদিন বাকী থাকতে বা তিন দিন বাকী থাকতে অথবা এর শেষ রাত্রে। -সহীহ, মিশকাত তাহকীক ছানী (২০৯২)
লাইলাতুল কাদ্র সম্পর্কেই
আলী (রাঃ) রমযানের শেষ দশদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পরিবারের সদস্যদেরকে (ইবাদাতে মগ্ন থাকার জন্য) ঘুম থেকে উঠাতেন। -সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭৬৮), বুখারী, মুসলিম আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রমযানের শেষ দশদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (ইবাদাতে) এত বেশি সাধনা করতেন যে, অন্য কোন সময়ে এরকম সাধনা করতেন না। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৬৭)
শীতকালের রোযা
আমির ইবনু মাসঊদ (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, শীতকালের রোযা হচ্ছে বিনা পরিশ্রমে যুদ্ধলব্ধ মালের অনুরূপ। -সহীহ, সহীহা (১৯২২), আর-রাওয (৬৯)
“যেসব লোক রোযা আদায়ের সমর্থ হয়েও..." প্রসঙ্গে
সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) তিনি বলেন, যখন এই আয়াত অবতীর্ণ হলঃ “যেসব লোক রোযা আদায়ের ক্ষেত্রে সামর্থবান হয়েও (না রাখবে) সেসব লোক যেন একজন মিসকীনের আহার দেয়" আমাদের মধ্যে তখন যার ইচ্ছা হত সে রোযা পালন না করে তার পরিবর্তে ফিদ্ইয়া আদায় করত। অতঃপর এর পরবর্তী আয়াত “তোমাদের মধ্যে যে লোক রমযান মাস পায় সে লোক যেন রোযা পালন করে” অবতীর্ণ হলে উপরের আয়াতের (সূরাঃ বাকারা- ১৮৪) বিধান বাতিল হয়ে যায়। -সহীহ্ ইরওয়া (৪/২২), বুখারী, মুসলিম
খাবারের পর কোন লোক সফরের উদ্দেশ্যে বের হলে
মুহাম্মাদ ইবনু কা’ব (রহঃ) তিনি বলেন, রমযান মাসে আমি আনাস (রাঃ)-এর নিকট আসলাম। তখন তিনি সফরের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁর সফরের উট-টিতে হাওদা বেঁধে দেওয়া হল। তিনি সফরের পোশাক পরলেন এবং খাবার নিয়ে আসতে বললেন, তারপর তিনি তা খেলেন। আমি বললাম, এটা কি সুন্নাত? তিনি বললেন, সুন্নাত। তারপর তিনি জন্তুযানে আরোহণ করলেন। -সহীহ্ (তাসহীহ হাদীসে ইফতারিস সা-য়িমি কাবলা সাফারিহি বা’দাল ফাজরি(পৃঃ ১৩-২৮) মুহাম্মাদ ইবনু কা’ব (রহঃ) তিনি বলেন, রমযান মাসে আমি আনাস (রাঃ)-এর নিকট আসলাম। ...... পূর্বোক্ত হাদীসের মতই।
রোযাদারের জন্য উপহার
হাসান ইবনু আলী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোযাদারের জন্য তোহফা হল তৈল ও লোবান জাতীয় সুগন্ধি। মাওযূ, যঈফা (১৬৬০),
কোন সময়ে ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আয্হা হয়
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকেরা যেদিন রোযা ভেঙ্গে ফেলে সেদিন হল ঈদুল ফিত্র এবং লোকেরা যেদিন কুরবানী করে সেদিন ঈদুল আয্হা। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৬০)
ইতিকাফ ভঙ্গ করার পর পুনরায় ইতিকাফ করা
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রমযানের শেষ দশদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইতিকাফ করতেন। কিন্তু তিনি এক বছর ইতিকাফ করতে সক্ষম হননি। তাই তিনি পরের বছর বিশ দিন ইতিকাফ করেন। -সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (২১২৬)
প্রয়োজনবোধে ইতিকাফকারী বের হতে পারে কি না?
আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ইতিকাফে থাকতেন, আমার দিকে তাঁর মাথা এগিয়ে দিতেন এবং আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম। মানবীয় প্রয়োজন (প্রশ্ৰাব-পায়খানা) ব্যতীত তিনি ঘরে আসতেন না। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৬৩৩) ও (১৭৭৮) ইবনু শিহাব ইবনু শিহাব হতে উরওয়া ও আম্রা-আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে লাইস ইবনু সা’দও হাদীসটিকে বর্ণনা করেছেন। -সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস
রমযান মাসের কিয়াম (রাত্রের ইবাদাত)
আবূ যার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমরা রোযা পালন করেছি। তিনি আমাদেরকে নিয়ে রমযান মাসে কোন (নফল) নামায আদায় করেননি। অবশেষে তিনি রমযানের সাত দিন বাকী থাকতে আমাদেরকে নিয়ে নামাযে দাঁড়ালেন। এতে এক-তৃতীয়াংশ রাত চলে গেল। আমাদেরকে নিয়ে তিনি ষষ্ঠ রাতে নামাযের উদ্দেশ্যে দাঁড়াননি। তিনি আবার আমাদের নিয়ে পঞ্চম রাতে নামাযের উদ্দেশ্যে দাঁড়ান। এতে অর্ধেক রাত চলে গেল। আমরা তাকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল। যদি আমাদের বাকী রাতটিও নামায আদায় করে পার করে দিতেন। তিনি বললেনঃ ইমামের সাথে যদি কোন লোক (ফরয) নামাযে শামিল হয় এবং ইমামের সাথে নামায আদায় শেষ করে তাহলে সে লোকের জন্য সারা রাত (নফল) নামায আদায়ের সাওয়াব লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপর মাসের তিন রাত বাকী থাকা পর্যন্ত তিনি আর আমাদের নিয়ে নামায আদায় করেননি। আবার তিনি তৃতীয় (২৭শে) রাত থাকতে আমাদের নিয়ে নামাযের জন্য দাঁড়ালেন। তাঁর পরিজন ও স্ত্রীগণকেও তিনি এ রাতে ডেকে তুললেন। এত (দীর্ঘ)-সময় ধরে তিনি নামায আদায় করলেন যে, যার ফলে সাহ্রীর সময় চলে যাওয়ার সংশয় হল আমাদের মনে। বর্ণনাকারী জুবাইর ইবনু নুফাইর বলেন, আবূ বকর (রাঃ)-কে আমি বললামঃ ফালাহ্" কি? তিনি বললেন, সাহ্রী খাওয়া। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৩২৭)
রোযাদারকে ইফতার করানোর ফাযীলাত
যাইদ ইবনু খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন রোযা পালনকারীকে যে লোক ইফতার করায় সে লোকের জন্যও রোযা পালনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে। কিন্তু এর ফলে রোযা পালনকারীর সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র কমানো হবে না। -সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৪৬)
রমযান মাসে (রাত্রের ইবাদাত) দণ্ডায়মান হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা এবং এর ফাযীলাত
আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রমযানের (রাত্র জেগে) ইবাদাত-বন্দিগীতে মাশ্গুল থাকতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উৎসাহিত করতেন, তবে সেটাকে বাধ্যতামূলক হিসেবে নির্দেশ দেননি। তিনি বলতেনঃ ঈমানের সাথে এবং সাওয়াবের আশা করে যে লোক রমযান মাসে (রাতে ইবাদাতে) দন্ডায়মান হবে সে লোকের পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হবে। এ নিয়মই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু পর্যন্ত চালু ছিল। এ বিষয়টি আবূ বকর (রাঃ)-এর খিলাফত এবং উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-আর খিলাফতের প্রথম দিকেও এমনই ছিল। -সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (১২৪১), নাসা-ঈ, ইমাম বুখারীর মতে মৃত্যু পর্যন্ত...এই বাক্যাংশটি যুহরী হাদীসে সংযোগ করেছেন।