11. সালাতুল-খাওফ

【1】

সালাতুল-খাওফ বা ভয়কালীন নামায

সালিহ ইবনু খাওয়াত (র) এমন এক ব্যক্তি হতে বর্ণনা করেন, যিনি জাতুররিকা’ যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সালাতুল-খাওফ আদায় করেন। একদল তাঁর সাথে কাতারে দাঁড়িয়েছিল, আর একদল শত্রুর মুকাবেলায় সারিবদ্ধ ছিল। যে দল তাঁর সাথে ছিল, তিনি সে দলকে নিয়ে এক রাক’আত সালাতুল-খাওফ আদায় করলেন। অতঃপর তিনি দণ্ডায়মান রইলেন, (দলে যাঁরা ছিলেন) তাঁরা নিজের নামায আদায় করে নিলেন। অতঃপর তাঁরা প্রত্যাবর্তন করে শত্র“র মুকাবেলায় সারিবদ্ধ হয়ে গেলেন। তারপর দ্বিতীয় দল উপস্থিত হল। নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের সাথে বাকি নামায আদায় করলেন। অতঃপর তিনি বসা অবস্থায় রইলেন। সঙ্গিগণ তাদের নামায পূর্ণ করলে তাঁদের সাথে সালাম ফিরালেন। (বুখারী ৪১২৯, ৪১৩০, মুসলিম ৮৪২) সালিহ ইবনু খাওওয়াত আনসারী (র) সাহল ইবনু আবি হাসমা (র) তাঁর কাছে বর্ণনা করেছিলেন যে, সালাতুল-খাওফ হল এই ইমাম নামাযে দাঁড়াবেন। তাঁর সঙ্গীদের একদল (তখন) তাঁর সাথে থাকবে। আর একদল শত্রুর মুকাবেলায় থাকবে। অতঃপর ইমাম এক রাক’আত নামায আদায় করে সিজদা করবেন। তারপর দাঁড়িয়ে যাবেন। যখন পূর্ণ দাঁড়িয়ে যাবেন, তখন ইমাম দণ্ডায়মান থাকবেন। তাঁর সঙ্গীরা অবশিষ্ট এক রাক’আত পূর্ণ করে সালাম ফিরিয়ে চালে যাবে ইমাম তখনও দণ্ডায়মান থাকবেন। নামায শেষ করে দলটি শত্রুর মুকাবেলায় নিয়োজিত হবে। অতঃপর তাঁদেরকে এক রাক’আত পড়াবেন, অতঃপর তাঁরা দাঁড়িয়ে নিজ নিজ পরবর্তী আক’আত পড়িবে এবং সালাম ফিরাবে। (বুখারী ৪১৩১, মুসলিম ৮৪১) নাফি’ (র) আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা)-কে সালাতুল খাওফ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেনঃ ইমাম অগ্রসর হবেন (স্বীয় স্থানে), তাঁর সাথে থাকবে লোকের একাংশ। তিনি তাদের এক রাক’আত আদায় করাবেন। আর একদল লোক নিয়োজিত হবে ইমাম ও শত্র“দের মাঝখানে এবং সে দল তখন নামায আদায় করবে না। যখন ইমাম তাঁর সাথে যে দল আছে সে দলকে এক রাক’আত আদায় করাবেন, তখন তারা পেছনে সরে যে দল নামায আদায় করেনি, সে দলের স্থানে চলে যাবে, তারা সালাম ফিরাইবে না। অতঃপর যারা নামায আদায় করেনি তারা এগিয়ে আসবে। ইমাম তাদের সাথে এক রাক’আত আদায় করবেন। তৎপর ইমাম দু রাক’আত পূর্ণ পড়িয়াছেন বিধায় তিনি প্রত্যাবর্তন করবেন। অতঃপর উভয় দলের প্রত্যেকে দাঁড়িয়ে এক রাক’আত আদায় করবে ইমামের প্রত্যাবর্তন করার পর। এইভাবে উভয় দলের প্রত্যেকের দুই দুই রাক’আত পড়া হবে। আর যদি খাওফ বা ভীতি এর চাইতে প্রচণ্ড হয়, তবে যে যেভাবে সম্ভব নামায আদায় করে নিবে; চলমান অবস্থায় হোক বা দাঁড়িয়ে অথবা সওয়ারীর উপর হোক, কিবলামুখী হোক বা না হোক। (সহীহ্, বুখারী ৪৫৩৫) মালিক (র) বললেন, নাফি’ (র) বলেছেন, আমি মনে করি, আবদুল্লাহ (রা) এটা (সালাতুল-খাওফের নিয়ম) রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন। সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (রা) খন্দকের দিন সূর্য অস্ত গিয়েছে অথচ রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহর ও আসরের নামায আদায় করেননি। (ইমাম বুখারী অনুরূপ অর্থে ৭৪৫ নং হাদীস বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) বলেন, সালাতুল-খাওফ সম্পর্কে যা আমি শুনেছি, তন্মধ্যে কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (র) কর্তৃক সালিহ ইবনু খাওওয়াত (র) হতে বর্ণিত হাদীসটি আমার কাছে সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয়।