25. শিকার সম্পর্কীত অধ্যায়

【1】

কাঠ বা পাথর দ্বারা যে প্রাণী হত্যা করা হয়েছে তা খাওয়া জায়েয নয়

নাফি’ (র) ‘জুরূফ’ নামক স্থানে পাথর দ্বারা দুইটি পাখি বধ করেছিলাম, একটি তখনই মারা গিয়েছিল। আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) উহা ফেলে দেন এবং অপরটিকে যবেহ করতে দৌঁড়ে গেলেন। উহাও যবেহ করার পূর্বেই মারা যায়। উহাকেও তিনি ফেলে দিলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) যে সমস্ত প্রাণী লাঠি বা গোলার আঘাতে হত্যা করা হয়েছে ঐগুলো আহার করা কাসিম ইবন মুহাম্মাদ (র) মাকরূহ বলে মনে করতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) তাঁহার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সাঈদ ইবন মুসায়্যাব (র) বন্য প্রাণীর মত গৃহপালিত প্রাণীকে তীর ইত্যাদি দ্বারা হত্যা করা মাকরূহ বলে মনে করতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) বলেন : কোন লাঠির অগ্রভাগে ছুঁচালো কোন জিনিস লাগান থাকলে, আর ইহা শিকারকৃত প্রাণীকে যখমী করে দিলে উহা আহার করাতে আমি কোন দোষ মনে করি না। মালিক (র) বলেন : আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন- يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَيَبْلُوَنَّكُمْ اللهُ بِشَيْءٍ مِنْ الصَّيْدِ تَنَالُهُ أَيْدِيكُمْ وَرِمَاحُكُمْ . অর্থাৎ ‘হে মু’মিনগণ! তোমাদের হাত ও বর্শা, যা শিকার করে সে বিষয়ে আল্লাহ্ অবশ্য তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন। [১] মালিক (র) বলেন: ‘মানুষ তার বর্শা, হাত অথবা অস্ত্র দ্বারা বিদ্ধ করায় যা আহত হয় তাই শিকার, যেইরূপ উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন। মালিক (র) বিজ্ঞ আলিমগণকে বলতে শুনেছি- কেউ কোন বন্য প্রাণী তীর ইত্যাদি দ্বারা আহত করবার পর উহা অন্য একভাবে যখ্মী হল, যেমন পানিতে পড়ে গেল বা শিকারের উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষণ পায়নি এমন কোন কুকুর উহার উপর আক্রমণ চালাল, তবে ঐ ব্যক্তির আঘাতেই উহা মরিয়াছে বলে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঐ প্রাণীর গোশ্ত খাওয়া জায়েয হবে না। মালিক (র) বলেন : শিকারের প্রাণী আহত হয়ে ভেগে যাওয়ার পর উহা পাওয়া গেলে, উহাতে যদি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের আঘাতের চিহ্ন বা তীর আটকানো পাওয়া যায় তবে উহা খাওয়া জায়েয হবে। এক রাত্রি অতিবাহিত হওয়ার পর যদি পাওয়া যায় তবে উহা মাকরূহ হবে।

【2】

প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রাণী দ্বারা শিকার

নাফি’ (র) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলতেন : প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর যদি কোন প্রাণী শিকার করে তবে উহা মেরে ফেলুক বা জীবিত ধরুক সকল অবস্থায়ই উহা খাওয়া জায়েয। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) নাফি’ (র) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলতেন : প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর শিকারকৃত প্রাণীর কিছু ভক্ষণ করুক কিংবা না করুক তবুও উহার শিকার খাওয়া জায়েয হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রা)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর যদি কোন প্রাণী শিকার করে কিছু ভক্ষণ করে ফেলে তবে কি হবে ? তিনি বললেন : একটি টুকরাও যদি রাখে তবুও তা খেয়ে নিও। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) তিনি কোন কোন আহলে ইল্মকে বলতে শুনেছেন, বাজ, গৃধ্র, ঈগল ইত্যাদি। শিকারী পাখী যদি প্রশিক্ষণ পায় এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের মত বুঝতে পারে তবে বিসমিল্লাহ বলে ছেড়ে থাকলে ঐগুলির শিকার জায়েয বলে গণ্য হবে। মালিক (র) বলেন : আমি এই বিষয়ে উত্তম যা শুনেছি তা হল, বাজপাখির পাঞ্জা বা কুকুরের মুখ হতে যদি শিকার ছুটে যায় এবং পরে মারা যায় তবে উহা খাওয়া হালাল হবে না। মালিক (র) বলেন : অনুরূপ বাজপাখীর পাঞ্জায় বা কুকুরের মুখে যদি শিকারকৃত প্রাণীটি জীবিত পাওয়া যায় এবং শিকারী উহাকে যবেহ করবার পূর্বে উহা মারা যায় তবে উহা খাওয়া হালাল হবে না। মালিক (র) বলেন : তদ্ররূপ শিকারী যদি কোন প্রাণী শিকার করে, উহাকে জীবিত অবস্থায় পেয়েও যবেহ করতে বিলম্ব করে এবং শিকারটি মারা গেলে উহা খাওয়া হালাল হবে না। মালিক (র) বলেন : কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি মজূসী (অমুসলিম) দ্বারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর শিকারের উদ্দেশ্যে ছাড়ে এবং উহা শিকার করে অথবা শিকারকৃত প্রাণীটিকে মেরে ফেলে তবুও উহা খাওয়া হালাল হবে। এতে কোন দোষ নেই, যদিও মুসলমান উহাকে যবেহ না করে থাকে। এর উদাহরণ হল- কোন মুসলিম ব্যক্তি কোন মজূসীর নিকট হতে ছুরি নিয়ে কোন প্রাণী যবেহ করল, কিংবা তীর-ধনুক নিয়ে কোন প্রাণী শিকার করল। ইহা খাওয়া যেমন হালাল উহাও তেমন হালাল হবে। ইহা আমাদের নিকট সর্বসম্মত। মালিক (র) বলেন : কোন মজূসী (অমুসলিম) যদি কোন মুসলমান কর্তৃক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর শিকারের উদ্দেশ্যে ছাড়ে এবং শিকার করে তবে উহা খাওয়া হালাল হবে না। কিন্তু যদি মুসলমান উহাকে জীবিত অবস্থায় পায় এবং নিজে যবেহ করে তবে হালাল হবে। এর উদাহরণ হল- কোন মজূসী ব্যক্তি কোন মুসলমান হতে বর্শা ও তীর নিয়ে কোন প্রাণী শিকার করল এবং প্রাণীটি মারা গেল কিংবা মুসলমানের নিকট হতে ছুরি নিয়ে কোন মজূসী প্রাণীটি যবেহ করল, উভয় অবস্থায় কোনটিই হালাল হবে না।

【3】

জলজ প্রাণী শিকার

আবদুর রহমান ইবনু আবূ হুরায়রা (রা) ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা)-এর নিকট জিজ্ঞেস করলে তিনি উহা খেতে নিষেধ করেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) নাফি’ (র) বলেন : অতঃপর আবদুল্লাহ বাড়ী গিয়ে কুরআন শরীফ এনে নিম্নোক্ত আয়াতটি পড়ে শুনান, أُحِلَّ لَكُمْ صَيْدُ الْبَحْرِ وَطَعَامُهُ “তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার ও উহা আহার করা হালাল করা হয়েছে।” [১] নাফি’ (র) বলেন, অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) আমাকে আবদুর রহমান ইবনু আবূ হুরায়রা (রা)-এর নিকট এই কথা বলার জন্য পাঠান যে, তাঁর প্রশ্নোল্লিখিত প্রাণী আহার করতে কোন অসুবিধা নেই। উমার ইবনু খাত্তাব (রা) এর আযাদকৃত গোলাম সা‘দুলজারী বর্ণনা করেন- যে সমস্ত মাছ পরস্পরকে হত্যা করে ফেলে বা শীতে মারা যায় সে ধরনের মাছ সম্পর্কে আমি আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি তখন বললেন : উহা খাওয়াতে কোন দোষ নেই। পরে আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনু আ’স (র)-কে এই সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনিও অনুরূপ জবাব প্রদান করেছিলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) আবূ হুরায়রা (রা) যাইদ ইবনু সাবিত (রা) জায়েয বলে মনে করতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) আবূ সালমা ইবনু আবদুর রহমান (র) মদীনার দিকে সমুদ্র তীরবর্তী গ্রাম জারের বাসিন্দাগণ মারওয়ান ইবনু হাকাম-এর নিকট এসে সমুদ্র-নিক্ষিপ্ত প্রাণী সম্পর্কে প্রশ্ন করল। মারওয়ান বললেন : উহা আহার করায় কোন দোষ নেই। যাইদ ইবনু সাবিত ও আবূ হুরায়রা (রা)-কেও এই সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে পার। তাঁরা কি বললেন আমাকে তা জানিয়ে যেও। তারা দুজনের নিকট এসে এতদসম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তাঁরাও বললেন : এতে কোন দোষ নেই। মারওয়ানের নিকট তাঁদের এই জবাব শুনালে তিনি বললেন : আমি তো পূর্বেই তোমাদেরকে এই কথা বলে দিয়েছিলাম। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) বলেন : মজূসী (অমুসলিম) ব্যক্তি কর্তৃক শিকারকৃত মাছ আহার করা জায়েয। কারণ রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : সমুদ্রের পানি পাক এবং উহার মৃত প্রাণীও হালাল। মালিক (র) বলেন : মৃত প্রাণীও যখন হালাল, তখন উহা শিকার করে যে-ই আনুক না কেন উহাতে ক্ষতি নেই।

【4】

দন্তবিশিষ্ট হিংস্র প্রাণী আহার করা হারাম হওয়া সম্পর্কে

আবূ সা‘লাবা খোশানী (র) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : দন্তবিশিষ্ট সকল হিংস্র প্রাণী আহার করা হারাম। আবূ হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : দন্তবিশিষ্ট সকল হিংস্র প্রাণী হারাম। (বুখারী ৫৫৩০, মুসলিম ১৯৩২, তবে ইমাম মুসলিম এই শব্দে বর্ণনা করেছেন =======) আবূ হুরাইরা (রাঃ) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : দন্তবিশিষ্ট সকল হিংস্র প্রাণী হারাম। মালিক (র) বলেন, আমাদের নিকটও মাসআলা অনুরূপ।

【5】

যে সকল প্রাণী খাওয়া মাকরূহ্

মালিক (র) ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধার গোশ্ত আহার করা সম্পর্কে উত্তম যা শুনেছি তা এই- উহা আহার করা যাবে না। কারণ আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন : অশ্ব, অশ্বতর ও গর্দভ আমি আরোহণ এবং শোভার জন্য সৃষ্টি করেছি। (সহীহ, মুসলিম ১৯৩৩) আল্লাহ তা‘আলা আন‘আম সম্বন্ধে ইরশাদ করেন : যাতে তোমরা এগুলোর উপর আরোহণ কর এবং এগুলো আহার কর। আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেন : আল্লাহ তাদেরকে জীবনোপকরণস্বরূপ যেসব চতুষ্পদ আন’আম দান করেছেন সেই সব প্রাণী যবেহ কালে আল্লাহর নাম নেয়। তখন এগুলো হতে তোমরা আহার কর এবং প্রার্থীকে আহার করাও। মালিক (র) বলেন : আমি আহলে ইলমের নিকট শুনেছি উপরিউক্ত আয়াতে উল্লেখিত ‘বা-ইস’ শব্দের অর্থ ফকির এবং মু’তার শব্দের অর্থ আগন্তুক। মালিক (র) বলেন : (এই আয়াতগুলো দ্বারা বুঝা গেল) আল্লাহ্ তা‘আলা ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধা আরোহণ করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর আন’আম জন্তুসমূহ আহার এবং আরোহণ উভয় কাজের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। মালিক (র) বলেন : কানি’ ভিক্ষুককেও বলা হয়।

【6】

মৃত প্রাণীর চামড়া

আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা) একবার রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মৃত বকরীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। উম্মুল মু’মিনীন মায়মুনা (রা)-এর জনৈক গোলামকে তিনি ইহা দিয়েছিলেন। তিনি তখন বললেন : তোমরা ইহার চামরা কোন কাজে লাগালে না কেন? তারা বলল : হে আল্লাহর রসূল ! ইহা তো মৃত। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, ইহা খাওয়া হারাম (কিন্তু চামড়া দ্বারা অন্য কোন উপকরণ লাভ করা জায়েয)। (বুখারী ১৪৯২, মুসলিম ৩৬৩) আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: দাবাগত [১] করার পর চামড়া পাক হয়ে যায়। (সহীহ, মুসলিম ৩৬৬) আয়িশা (রা) দাবাগত করার পর মৃত জন্তুর চামড়া ব্যবহার করতে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন। (যয়ীফ, আবূ দাঊদ ৪১২৪, নাসাঈ ৪২৫২, ইবনু মাজাহ ৩৬১২, আলবানী হাদীসটি যয়ীফ বলেছেন [সহীহ ও যয়ীফ সুনান আবূ দাঊদ])

【7】

যে মৃত প্রাণী আহার করতে বাধ্য হয়

মালিক (র) মুয্তার বা খাদ্যের অভাবে ওষ্ঠাগতপ্রাণ ব্যক্তি মৃত জন্তুর গোশ্ত পেট ভরে আহার করতে পারে এবং উহা রাখতেও পারে। যখন হালাল খাদ্য পাবে তখন তা ফেলে দিবে। মালিক (র)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, মুয্তার বা খাদ্যের অভাবে ওষ্ঠাগতপ্রাণ ব্যক্তি যদি মৃত জন্তু বা কারো বাগানের ফল বা ক্ষেতের শস্য বা বকরী খেয়ে ফেলে তবে কি হবে? মালিক (র) বললেন, বাগান, ক্ষেত বা বকরীর মালিক যদি ঐ ব্যক্তিকে মুয্তার হিসেবে সত্য বলে মনে করে এবং চোর মনে করে হাত না কাটে তবে মৃত জন্তু আহার করার তুলনায় এই সমস্ত জিনিস খাওয়াই উত্তম । কিন্তু উহা হতে বহন করে নিয়ে যাবে না। আর তা না হলে আমার মতে উক্ত ব্যক্তির জন্য মৃত পশু খাওয়া উত্তম। যে কোন অবস্থায়ই যদি অন্যের মাল খাওয়া জায়েজ হত তবে গুণ্ডা-বদমাশরা একে বাহানা করে অন্যের ধন-সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়ে যেত। মালিক (র) বলেন, এই বিষয়ে আমি যা শুনেছি তন্মধ্যে ইহা আমার নিকট উত্তম।