30. সন্তানের দুধ পান করানোর বিধান

【1】

শিশুদের দুধ পান করানো

আমর ইবনু আবদির রহমান (র) উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রা) তার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিকট ছিলেন। (এমন সময়) তিনি জনৈক ব্যক্তির আওয়ায শুনলেন। সে ব্যক্তিটি হাফসা (রা)-এর গৃহে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করছিল। আয়িশা (রা) বললেন : আমি বললাম, ইয়া রসূলুল্লাহ! ইহা (অপরিচিত) ব্যক্তির আওয়ায, আপনার গৃহে অনুমতি চাচ্ছিলেন। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : আমি মনে করি সে ব্যক্তি অমুক, হাফসা (রা)-এর দুধ চাচা হবে। আয়িশা (রা) বললেন : ইয়া রসূলুল্লাহ্! যদি অমুক তার দুধ চাচা জীবিত থাকতেন, তিনি আমার নিকট প্রবেশ করতে পারতেন। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হ্যাঁ জন্মসূত্রে আত্মীয়তার ফলে যেসব (সম্পর্ক ও বিবাহ) হারাম হয় দুগ্ধপান করার ফলেও সেসব হারাম হয়ে যায়। (বুখারী ২৬৪৬, মুসলিম ১৪৪৪) উরওয়া ইবনু যুবাইর (র) আয়িশা উম্মুল মু’মিনীন (রা) বলেন : পর্দার হুকুম নাযিল হওয়ার পর আমার দুধ চাচা আবুল কু’আয়সের ভাই আফলাহ্ (রা) আমার নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আমি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস না করা পর্যন্ত তাকে অনুমতি দিতে অস্বীকার করলাম। আয়িশা (রা) বলেন : তারপর রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশরীফ আনলেন এবং আমি এই বিষয়টি তাকে অভিহিত করলাম। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আমার নিকট আসার অনুমতি দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন। আয়িশা (রা) বললেন : ইয়া রসূলাল্লাহ! আমাকে স্ত্রীলোক দুধ পান করিয়েছে, পুরুষ আমাকে পান করায়নি। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তিনি তোমার চাচা, তোমার নিকট সে প্রবেশ করতে পারবে, আয়িশা (রা) বলেন, এই ঘটনা পর্দার হুকুম নাযিল হওয়ার পরে সংঘটিত হয়েছে। [১] আয়িশা (রা) বলেছেন : জন্মের (সম্পর্কের) দ্বারা যা হারাম হয় দুধ পানের (সম্পর্কের) দ্বারাও তা হারাম হবে। (বুখারী ৫২৩৯, মুসলিম ১৪৪৫) উরওয়া ইবনু যুবাইর (র) উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রা) তার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তার দুধ চাচা আবূ কু‘আয়স-এর ভাই আফলাহ্ (রা) পর্দার হুকুম আবর্তীণ হওয়ার পর তার কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আয়িশা (রা) বলেন : আমি আমার নিকট প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকার করিলাম। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়াহি ওয়া সাল্লঅম তাশরীফ আনিলে পর আমি যাহা করিয়াছি উহা তাহাকে অবহিত করলাম। অতঃপর তাকে (দুধ চাচাকে) আমার নিকট প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে নির্দেশ দিলেন। (বুখারী ৫১০৩, মুসলিম ১৪৪৫) সাওর ইবনু যায়দ দিলী (র) আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা) বলতেন : দুই বৎসর সময়ের ভিতরে দুধ একবার চুষলেও উহা হারাম করবে। অর্থাৎ জন্মসূত্রে বিবাহ যেমন অবৈধ হয় তদ্রƒপ এতেও হয়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) আমর ইবনু শারীদ (র) আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা)-এর নিকট প্রশ্ন করা হল এমন এক ব্যক্তি সম্বন্ধে, যার স্ত্রীর রয়েছে দুজন। তাদের মধ্যে এক স্ত্রী এক ছেলেকে, আর এক স্ত্রী এক কন্যাকে দুধ পান করিয়েছে। এই ছেলে সেই কন্যাকে বিবাহ করতে পারবে কি? তিনি বললেন : না কারণ (উভয়ে পিতার দিক দিয়ে) বীর্য এক। (সহীহ, তিরমিযী ১১৪৯, আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন [সহীহ ও যয়ীফ সুনানে তিরমিযী]) নাফি’ (রা) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলতেন : ছোট বেলায় যাকে দুধ খাওয়ান হয় উহাই গ্রহণযোগ্য, বড়দের দুধ পান করান ধর্তব্য নয়, অর্থাৎ উহাতে দুধ পান-এর ফলে যে হুকুম হয় তা হবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) নাফি’ (র) সালিম ইবনু আবদিল্লাহ (র) তাঁর নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তিনি যখন দুগ্ধপোষ্য ছিলেন, তখন আয়িশা উম্মুল মু’মিনীন (রা) তাকে পাঠালেন তার ভগ্নী উম্মে কুলসুম বিন্ত আবী বাকর (রা)-এর নিকট এবং বলে দিলেন একে (সালিমকে) দশবার দুধ চোষায়ে দিন, যেন সে আমার নিকট প্রবেশ করতে পারে। সালিম বলেন : উম্মে কুলসুম আমাকে তিনবার দুধ চোষায়েছেন। তারপর আমি পীড়িত হই, তাই আমাকে তিনবার ছাড়া আর দুধ পান করাননি, যেহেতু উম্মে কুলসুম আমাকে দশবার দুধ পান করাননি তাই আমি আয়িশা (রা)-এর নিকট প্রবেশ করতাম না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) নাফি’ (র) সফিয়্যা বিন্ত আবী উবায়দ (র) তাঁর নিকট বর্ণনা করেছেন যে, উম্মুল মু’মিনীন হাফসা (রা) আসিম ইবনু ‘আবদিল্লাহ ইবনু সা’দ (র)-কে তার ভগ্নী ফাতিমা বিন্ত উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-এর নিকট পাঠালেন। তখন আসিম ছোট এবং দুগ্ধপোষ্য (উদ্দেশ্য) যেন তিনি আসিমকে দশবার দুধ পান করিয়ে দেন যাতে সে হাফসা (রা)-এর নিকট প্রবেশ করতে পারে। তিনি (ফাতেমা) উহা করলেন, তাই আসিম তার [হাফসা (রা)-এর নিকট যাতায়াত করতেন]। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) আয়িশা (রা) ভগ্নীগণ অথবা তাঁর ভাতিজীগণ যাদেরকে দুধ পান করিয়েছেন তারা আয়িশা (রা)-এর নিকট প্রবেশ করতে পারতেন। আর যাদেরকে তাঁর ভাবীগণ দুধ পান করিয়েছেন [১] তাঁরা তাঁর নিকট প্রবেশ করতে পারতেন না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) ইবরাহীম ইবনু উকরা (র) সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র)-কে রাযা’আত [সন্তানকে দুগ্ধ পান করানো]। সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। সাঈদ বললেন : দুই বৎসরের মধ্যে পান করানো হলে যদিও এক ফোটা হয় উহা বিবাহ সম্পর্ক হারাম করবে, আর যা দুই বৎসরের পর বাহিরে হয় তা খাদ্যদ্রব্য বলে গণ্য হবে, যা আহার করেছে। উহাতে বিবাহ সম্পর্ক হারাম হবে না] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) ইবরাহীম ইবনু ‘উকবা (র) বলে : অতঃপর আমি উরওয়াহ্ ইবনু যুবায়র (রা)-এর নিকট প্রশ্ন করি। তিনি সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব-এর মতোই বললেন। ইয়াহইয়া ইবন সাঈদ (র) আমি সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র)-কে বলতে শুনেছি স্ত্রীলোকদের সন্তানদের দুধ পান করানো তখন গ্রহণযোগ্য হবে যখন তারা দোলনাতে থাকে এবং যা গোশত ও রক্ত সৃষ্টি করে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) ইবনু শিহাব (র) বলতেন : রাযা’আত [দুধ পান করান] অল্প হোক বেশি হোক উহা হারাম করবে। আর রাযা’আত পুরুষের পক্ষের আত্মীয়তাও হারাম করবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) ইয়াহ্ইয়া (র) বলেন : আমি মালিক (র)-কে বলতে শুনেছি সন্তানদের দুধ পান অল্প হোক বা বেশি হোক, যদি উহা দুই বৎসরের মধ্যে হয় তবে হারাম করবে। তিনি বলেন, দুই বৎসরের পরে হলে অল্প হোক বা বেশি হোক উহা কিছুই হারাম করবে না। উহা হচ্ছে খাদ্যদ্রব্যের মতো।

【2】

বয়স্ক হওয়ার পর দুধ পান করা

ইবন শিহাব (র) কে প্রশ্ন করা হল বয়স্কের দুধ পান করা সম্বন্ধে। তিনি (উত্তরে) বললেন : উরওয়াহ্ ইবন যুবায়র (র) আমাকে বলেছেন : আবূ হুযায়ফা ইবন উতবা ইবন রবি’আ (রা) রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদের মধ্যে একজন সাহাবা ছিলেন। তিনি বদরের যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন, তিনি সালিম (রা)-কে পালক পুত্র করেছিলেন যাকে বলা হত সালিম মাওলা আবূ হুযায়ফা। [সায়িবা নামক জনৈকা মহিলা তাকে আযাদ করেন, পরে আবূ হুযায়ফা তাকে লালন-পালন করেন এবং পুত্ররূপে গ্রহণ করেন। এইজন্য সালিমকে আবূ হুযায়ফার মাওলা বলা হয়েছে] যেমন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়দ ইব্নু হারিসা (রা)-কে পুত্র সন্তান বানিয়েছিলেন এবং আবূ হুযায়ফা সালিমের নিকট তার ভাতিজী ফাতেমা বিনত ওয়ালিদ ইবন উতবা ইবন রবি’আকে বিবাহ দিলেন, তিনি সালিমকে নিজের পুত্র বলে মনে করতেন। ফাতেমা ছিলেন প্রথম ভাগে হিজরতকারিণীদের মধ্যে একজন মহিলা এবং তিনি তখন কুরাইশদের অবিবাহিত মহিলাদের মধ্যেও ছিলেন অন্যতম । যখন আল্লাহ তাঁর কিতাবে যায়দ ইবন হারিসা সম্পর্কে এই আয়াত অবতীর্ণ করলেন- ادْعُوهُمْ لِآبَائِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِنْدَ اللهِ فَإِنْ لَمْ تَعْلَمُوا آبَاءَهُمْ فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ وَمَوَالِيكُمْ. (অর্থাৎ তোমরা তাদেরকে ডাক তাদের পিতৃপরিচয়ে। আল্লাহর নিকট এটাই ন্যায়সঙ্গত, যদি তোমরা তাদের পরিচয় না জান তবে তাদেরকে তোমাদের ধর্মীয় ভ্রাতা ও বন্ধুরূপে গণ্য করবে।) যাদেরকে পোষ্যপুত্র বানিয়েছে তাদেরকে তাদের পিতৃপরিচয়ের দিকে ফিরিয়ে দাও। আর যদি পিতার পরিচয় না জান তবে তার মাওলার (মনিব বা মিত্রতা সূত্রে স্থাপিত সম্পর্কের স্বজন) দিকে তাদেরকে ফিরিয়ে দাও। আর হুযায়ফার স্ত্রী সাহলা বিনত সুহায়ল যিনি ছিলেন আমির ইবন লুয়াই গোত্রের, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রসূল! সালিমকে আমরা পুত্ররূপে গ্রহণ করেছিলাম। সে আমার কক্ষে প্রবেশ করে এই অবস্থায় যে, আমি তখন একটি কাপড় পরিধান করে থাকি। আর আমার গৃহও মাত্র একটি। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কি? তখন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : এ বিষয়ে আমাদের কথা হলা তাকে পাঁচবার (স্তন হতে) দুধ পান করিয়ে দাও। তা হলে এই দুধের কারণে সে হারাম হয়ে যাবে। এবং সাহলা দুধ পান করানোর কারণে তাকে পুত্র বলে জানতেন। উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রা) রসূলুল্লাহ্ (সা)-এর এ অভিমত গ্রহণ করেছেন, অতএব সেই সকল পুরুষের তাঁর নিকট প্রবেশ করা তিনি পছন্দ করতেন। তিনি তাঁর ভগ্নী উম্মে কুলসুম বিনত আবি বাক্র সিদ্দীক (রা)-কে এবং তাঁর ভাতিজীদেরকে সেই সকল পুরুষকে দুধ পান করানোর নির্দেশ দিতেন। কিন্তু নবী করীম (সা)-এর অন্যান্য সহধর্মিণী এই প্রকার দুধ পানের দ্বারা কোন পুরুষের তাঁদের নিকট প্রবেশ করাতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেন। তাঁরা বলতেন, [‘আয়িশা সিদ্দিকা (রা)-কে উদ্দেশ্য করে] আল্লাহর কসম, আমরা মনে করি, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহলা বিন্ত সুহাইলাকে যে হুকুম দিয়েছিলেন তা কেবলমাত্র সালিমের জন্য রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ হতে রুখ্সত (বিশেষ অনুমতি) স্বরূপ ছিল। কসম আল্লাহ্‌র! এই প্রকারের দুধ পান করানো দ্বারা আমাদের নিকট কোন লোক প্রবেশ করতে পারবে না। বয়স্কদের দুধ পান করানো সম্বন্ধে আর সকল নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী এই অভিমতের উপর অটল ছিলেন। (সহীহ, মুসলিম ১৪৫৩) আবদুল্লাহ্ ইবন দীনার (র) তিনি বলেছেন : বয়স্কদের দুধ পানের বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্য “দারুল কাযা” বিচারালয় ইহা ছিল উমার ফারূক (রা)-এর ঘর, তাঁর শাহাদাতের পর তাঁর ঋণ পরিশোধ করার জন্য এই ঘর বিক্রি করা হয়, তাই একে দারুল কাযা বলা হয়)-এর নিকট এক ব্যক্তি আসল। আবদুল্লাহ্ ইবন উমার (রা)-এর কাছে তখন আমি উপস্থিত ছিলাম। আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমার (রা) বললেন : এক ব্যক্তি ‘উমার ইবন খাত্তাব (রা)-এর নিকট এসে বললেন, আমার এক দাসী ছিল। আমি তার সাথে সঙ্গম করতাম আমার স্ত্রী ইচ্ছাপূর্বক তাকে দুধ খাওয়াইয়া দেয়, তারপর আমি সেই দাসীর নিকট (সঙ্গমের উদ্দেশ্যে) প্রবেশ করলাম। আমার স্ত্রী বলল থাম। উহার সাথে সংগত হইও না আল্লাহ্‌র কসম, আমি উহাকে দুধ পান করাইয়াছি। উমার (রা) বললেন, তোমার স্ত্রীকে শাস্তি দাও, তারপর দাসীর নিকট গমন কর, দুধ পান করানো ছোটদের বেলায় গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) ইয়াহইয়া ইবন সা‘ঈদ (র) এক ব্যক্তি আবূ মূসা আশ’আরী (রা)-কে প্রশ্ন করলেন, আমি আমার স্ত্রীর স্তন চুষেছি, দুধ আমার ভিতরে প্রবেশ করেছে। আবূ মূসা আশ’আরী (রা) বললেন আমি মনে করি, তোমার স্ত্রী তোমার উপর হারাম হয়েছে। ‘আবদুল্লাহ্ ইবন মাস’ঊদ (রা) বললেন : ভেবে দেখুন এই ব্যক্তি কে, কি ফতোয়া দিচ্ছেন? আবূ মূসা বললেন : তবে আপনি কি বলেন? আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাসঊদ (রা) বললেন : দুধ খাওয়া দুই বৎসরের ভিতরেই হয়, অতঃপর আবূ মূসা (রা) বললেন : এই ‘বিজ্ঞজন’ যতদিন তোমাদের মধ্যে আছেন তোমরা (কোন বিষয়ে) আমার কাছে ফতোয়া জিজ্ঞেস করো না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

【3】

দুধ পান করানোর বিবিধ বিষয়

উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রা) রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হারাম হয়ে যায় দুধ পানের দ্বারা, যেমন হয় জন্মগত সম্পর্কের দ্বারা। (সহীহ, আবূ দাঊদ ২০৫৪, তিরমিযী ১১৪৭, নাসাঈ ৩৩০৩, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [সহীহ ওযায়ীফ সুনানে তিরমিযী]) জদামা বিনতি ওয়াহাব আসদিয়া (রা) উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রা)-কে খবর দিয়েছেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, আমি সংকল্প করেছিলাম গীলা হতে বারণ করার, কিন্তু আমার নিকট উল্লেখ করা হয় যে, রোম ও পারস্যের লোকেরা এটা করে থাকে, তাদের সন্তানদের কোন ক্ষতি হয় না। (সহীহ, মুসলিম ১৪৪২) মালিক (রা) বলেন : গীলা হইতেছে শিশুকে দুধ পান করানোকালীন সময়ে স্ত্রীর সহিত স্বামীর সঙ্গম করা। আমরা বিনত আবদির রহমান (র) নবী করীম (স)-এর পত্নী আয়িশা (রা) বলেছেন : কুরআনে যা অবতীর্ণ হয়েছিল তাতে দশবার দুধ চোষার কথা নির্ধারিত ছিল, যা হারাম করবে, তারপর উহা রহিত হইয়া যায় নির্ধারিত পাঁচবার দুগ্ধ চোষার (অবতীর্ণ হুকুমের) দ্বারা। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওফাত হয় তখনও সেই পাঁচবার দুধ চোষার (হুকুমের অংশ) সম্মিলিত আয়াত তিলাওয়াত করা হত। [১] (সহীহ, মুসলিম ১৪৫২) মালিক (র) বলেন, এর উপর আমল নাই। অর্থাৎ পাঁচবারের উপর আমল নাই। দুগ্ধ পান অল্প হোক বা বেশি হোক বিবাহ সম্পর্ক হারাম করবে।