24. হেবা

【1】

সদাকাহ্‌কারীর জন্য তার সদাকাহ্‌কৃত বস্তু সদাকাহ গ্রহীতার নিকট থেকে ক্রয় করা ঘৃণিত।

উমার (রাঃ) তিনি বলেন, আমার একটি ঘোড়া আল্লাহ্‌র পথে দান করলাম। যার কাছে ঘোড়াটি ছিল সে এর হাক আদায় করতে পারল না। তখন আমি তা ক্রয় করতে চাইলাম এবং আমার ধারণা ছিল যে, সে সেটি কম মূল্যে বিক্রি করবে। এ সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ তুমি ক্রয় করবে না এবং তোমার সদাকাহ ফিরিয়ে নিবে না, সে তা এক দিরহামের বিনিময়ে দিলেও। কেননা, যে ব্যক্তি নিজের সদাকাহ ফিরিয়ে নেয় সে যেন নিজের বমি পুনঃ ভক্ষণ করে। (বুখারী পর্ব ২৪: /৫৯, হাঃ ১৪৯০; মুসলিম ২৪/১, হাঃ ১৬২০) উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রাহে একটি অশ্ব আরোহণের জন্য দান করেছিলাম। অতঃপর আমি তা বিক্রি হতে দেখতে পাই। আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট জিজ্ঞেস করলাম, ‘আমি কি সেটা কিনে নেব?’ রাসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘না, তুমি তা ক্রয় করো না এবং তোমার সদাকাহ ফেরত নিও না।’ (বুখারী পর্ব ৫৬: /১১৯, হাঃ ২৯৭০; মুসলিম ২৪/১, হাঃ ১৬২০)

【2】

সদাকাহ গ্রহণকারীর হস্তগত হয়ে যাওয়া সদাকাহ ও হেবার মাল সদাকাহ্কারীর ফিরিয়ে নেয়া হারাম যদি না তা তার ছেলেকে বা অধস্তনকে হেবা করে থাকে ।

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দান করে তা ফেরত গ্রহণকারী ঐ কুকুরের মত, যে বমি করে এরপর তার বমি খায়। (বুখারী পর্ব ৫১: /১৪, হাঃ ২৫৮৯; মুসলিম ২৪/২, হাঃ ১৬২২)

【3】

হেবার ক্ষেত্রে কোন কোন সন্তানকে প্রাধান্য দেয়া মাকরূহ ।

নু‘মান বাশীর (রাঃ) তার পিতা তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলেন এবং বললেন, আমি আমার এই পুত্রকে একটি গোলাম দান করেছি। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার সব পুত্রকেই কি তুমি এরূপ দান করেছ? তিনি বললেন, না; তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তবে তুমি তা ফিরিয়ে নাও। (বুখারী পর্ব ৫১: /১২, হাঃ ২৫৮৬; মুসলিম ২৪/৩, হাঃ ১৬২৩) আমির (রহ.) তিনি বলেন, আমি নু‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ)-কে মিম্বরের উপর বলতে শুনেছি যে, আমার পিতা আমাকে কিছু দান করেছিলেন। তখন (আমার মাতা) আম্‌রা বিনতে রাওয়াহা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সাক্ষী রাখা ব্যতীত সম্মত নই। তখন তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলেন এবং বললেন, আমরা বিনতে রাওয়াহার গর্ভজাত আমার পুত্রকে কিছু দান করেছি। হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনাকে সাক্ষী রাখার জন্য সে আমাকে বলেছে। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার সব ছেলেকেই কি এ রকম করেছ? তিনি বললেন, না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তবে আল্লাহ্‌কে ভয় কর এবং আপন সন্তানদের মাঝে সমতা রক্ষা কর। [নু‘মান (রাঃ)] বলেন, অতঃপর তিনি ফিরে গেলেন এবং তার দান ফিরিয়ে নিলেন। (বুখারী পর্ব ৫১: /১৩, হাঃ ২৫৮৭; মুসলিম ২৪/৩, হাঃ ১৬২৩)

【4】

উমরা (এমন দান যেখানে দানকারী ও দানগ্রহীতা পরস্পরের মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা করবে যাতে তাদের একজন স্থায়ীভাবে বাড়িটির মালিক হয়ে যায়, উমরাকে রুকবাও বলা হয়) ।

জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উমরাহ (বস্তু) সম্পর্কে ফায়সালা দিয়েছেন, যাকে দান করা হয়েছে, সে-ই সেটার মালিক হবে। (বুখারী পর্ব ৫১: /৩২, হাঃ ২৬২৫; মুসলিম ২৪/৪, হাঃ ১৬২৫) আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘উমরা বৈধ। (বুখারী পর্ব ৫১ : /৩২, হাঃ ২৬২৬; মুসলিম ২৪/৪, হাঃ ১৬২৫, ১৬২৬)