28. কাসামাহ
আল-কাসামাহ
১একটি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে বাদীর পক্ষ হয়ে ৫০ জন লোকের শপথ গ্রহণে যখন কোন সাক্ষী পাওয়া যায় না। সাহ্ল ইবনু আবূ হাস্মাহ (রাঃ) একবার ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহ্ল ও মুহাইসাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) খাইবারে পৌঁছে উভয়েই খেজুরের বাগানের ভিন্ন ভিন্ন পথে চলে গেলেন। সেখানে ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহ্ল (রাঃ)-কে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর ‘আবদুর রহমান ইবনু সাহ্ল ও ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ)-এর দুই ছেলে হুওয়াইসাহ(রাঃ) ও মুহাইসাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এলেন এবং তাঁর কাছে নিহত ব্যক্তির কথা বলতে লাগলেন। ‘আবদুর রহমান (রাঃ) কথা শুরু করলেন। তিনি ছোট ছিলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বললেনঃ তুমি বড়দের সম্মান করবে। বর্ণনাকারী ইয়াহ্ইয়া বলেনঃ কথা বলার দায়িত্ব যেন বড়রা পালন করে। তখন তারা তাদের লোক সম্পর্কে কথা বললেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বললেনঃ তোমাদের পঞ্চাশ জন লোক কসমের মাধ্যমে তোমাদের নিহত ভাইয়ের হত্যার হক প্রমাণ কর। তাঁরা বললেনঃ হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! ওরা তো কাফির সম্প্রদায়। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের তরফ থেকে তাদের নিহত ব্যক্তির ফিদ্ইয়া দিয়ে দিলেন। সাহ্ল (রাঃ) বললেনঃ আমি সেই উটগুলো থেকে একটি উট পেলাম। সেটি নিয়ে আমি যখন আস্তাবলে গেলাম তখন উটনীটি তার পা দিয়ে আমাকে লাথি মারলো। (বুখারী পর্ব ৭৮ অধ্যায় ৮৯ হাদীস নং ৬১৪২-৬১৪৩; মুসলিম ২৮/১, হাঃ ১৬৬৯)
ধর্মত্যাগী মুরতাদ ও যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাদের বিধান।
আনাস (রাঃ) ‘উক্ল গোত্রের আটজন লোক রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এল। তারা তাঁর হাতে ইসলামের বায়‘আত গ্রহণ করল। কিন্তু সে এলাকার আবহাওয়া তাদের অনুকূলে হল না এবং তাদের শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ল। তারা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এর অভিযোগ করল। তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা কি আমার রাখালের সঙ্গে তার উটপালের কাছে গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করবে না? তারা বলল, হ্যাঁ। তারপর তারা তথায় গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করল। ফলে তারা সুস্থ হয়ে গেল। এরপর তারা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে চলল। এ সংবাদ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পৌঁছলে তিনি তাদের পশ্চাদ্ধাবনের লক্ষ্যে লোক পাঠালেন। তারা ধরা পড়ল এবং তাদেরকে নিয়ে আসা হল। তাদের সম্বন্ধে নির্দেশ প্রদান করা হল। তাদের হাত-পা কাটা হল, লৌহশলাকা দ্বারা তাদের চক্ষু ফুঁড়ে দেয়া হল। এরপর উত্তপ্ত রৌদ্রে তাদেরকে ফেলে রাখা হল। অবশেষে তারা মারা গেল। (বুখারী পর্ব ৮৭ অধ্যায় ২২ হাদীস নং ৬৮৯৯; মুসলিম ২৮/২, হাঃ ১৬৭১)
পাথর বা কোন ভারী জিনিস দ্বারা কেউ নিহত হলে কিসাস নেয়ার প্রমাণ এবং মহিলাকে হত্যা করার অপরাধে পুরুষকে হত্যা করা।
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে এক ইয়াহূদী একটি বালিকার উপর নির্যাতন করে তার অলঙ্কারাদি ছিনিয়ে নেয়। আর (পাথর দ্বারা) তার মস্তক চূর্ণ করে। সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার পূর্ব মুহূর্তে তার পরিবারের লোকেরা তাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে নিয়ে আসে। তখন সে নিশ্চুপ ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (একজন নির্দোষ ব্যক্তির নাম উল্লেখ পূর্বক) তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমাকে সে হত্যা করেছে? অমুক? সে মাথার ইশারায় বললঃ না। তিনি অন্য এক নিরপরাধ ব্যক্তির নাম ধরে বললেন, তবে কি অমুক? সে ইশারায় জানাল, না। এবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হত্যাকারীর নাম উল্লেখ করে বললেনঃ তবে অমুক ব্যক্তি মেরেছে কি? সে মাথা নেড়ে বললঃ জি, হ্যাঁ। এরপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদেশ উক্ত ব্যক্তির মাথা দু’পাথরের মাঝখানে রেখে চূর্ণ করা হলো। (বুখারী পর্ব ৬৮ অধ্যায় ২৪ হাদীস নং ৫২৯৫; মুসলিম ২৮/৩,হাঃ ৮৫২)
কোন আক্রান্ত ব্যক্তি কোন আক্রমণকারীকে প্রতিহত করতে গিয়ে আক্রমণকারী যদি মারা যায় অথবা তার অঙ্গহানি হয় তাহলে কোন দায়-দায়িত্ব নেই।
ইমরান ইব্নু হুসায়ন (রাঃ) এক ব্যক্তির হাত দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরল। সে তার হাত ঐ ব্যক্তির মুখ থেকে টেনে বের করল। ফলে তার দু’টি দাঁত উপড়ে গেল। তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তাদের মুকাদ্দমা পেশ করল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ তার ভাইকে কি কামড়াবে যেমন উট কামড়ে থাকে? তোমার জন্য কোন রক্তপণ নেই। (বুখারী পর্ব ৮৭ অধ্যায় ১৮ হাদীস নং ৬৮৯২; মুসলিম ২৮/৪, হাঃ ১৬৭৩) ইয়া‘লা ইবনু উমাইয়্যা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে জাইশ্ল উসরাত অর্থাৎ তাবূকের যুদ্ধে লড়াই করেছিলাম। আমার ধারণায় এটাই ছিল আমার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ‘আমাল। আমার একজন মজদুর ছিল। সে একজন লোকের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং তাদের একজন আরেক জনের আঙ্গুল দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে। (বের করার জন্য) সে আঙ্গুল টান দেয়। এতে তার (প্রতিপক্ষের) একটি সামনের দাঁত পড়ে যায়। তখন লোকটি (অভিযোগ নিয়ে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট গেল। কিন্তু তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] তার দাঁতের ক্ষতি পূরণের দাবী বাতিল করে দিলেন এবং বললেন সে কি তোমার মুখে তার আঙ্গুল ছেড়ে রাখবে, আর তুমি তা (দাঁত দিয়ে) চিবুতে থাকবে? বর্ণনাকারী [ইয়া‘লা (রাঃ)] বলেন, আমার মনে পড়ে তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বলেছেন, যেমন উট চিবায়। (বুখারী পর্ব ৩৭ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ২২৬৫; মুসলিম ২৮/৪, হাঃ ১৬৭৪)
দাঁত ও এ জাতীয় ক্ষতি যাতে কিসাসের হুকুম বিদ্যমান।
আনাস (রাঃ) তিনি বলেছেন, রুবাঈ- যিনি আনাস (রাঃ)-এর ফুফু এক আনসার মহিলার সামনের একটি বড় দাঁত ভেঙ্গে ফেলেছিলেন। এরপর আহত মহিলার গোত্র এর কিসাস দাবী করে। তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলো, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিসাসের নির্দেশ দিলেন, আনাস ইবনু মালিকের চাচা আনাস ইবনু নযর বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহ্র শপথ রুবাঈ-এর দাঁত ভাঙ্গা হবে না। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আনাস! আল্লাহ্র কিতাব তো “বদলা”র বিধান দেয়। পরবর্তীতে বিরোধীপক্ষ রাযী হয়ে মুক্তিপণ বা দিয়ত গ্রহণ করল। এরপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্র কতক বান্দা আছে যারা আল্লাহ্র নামে কসম করলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের কসম সত্যে পরিণত করেন। (বুখারী পর্ব ৬৫ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ৪৬১১; মুসলিম ২৮/৫, হাঃ ১৯০৩)
কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে মুসলিমের রক্ত বৈধ।
আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মুসলিম ব্যক্তি যিনি সাক্ষ্য দেন যে আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন ইলাহ্ নেই এবং আমি আল্লাহ্র রাসূল, তিন-তিনটি কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করা বৈধ নয়। (যথা) প্রাণের বদলে প্রাণ। বিবাহিত ব্যভিচারী। আর আপন দ্বীন পরিত্যাগকারী মুসলিম জামা‘আত থেকে বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি। (বুখারী পর্ব ৮৭ অধ্যায় ৬ হাদীস নং ৬৮৭৮; মুসলিম ২৮/৬, হাঃ ১৬৭৬)
হত্যার প্রথম প্রচলনকারীর পাপের বর্ণনা।
আবদুল্লাহ (ইবনু মাস‘ঊদ) (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে, তার এ খুনের পাপের অংশ আদাম (‘আ.)-এর প্রথম ছেলের (কাবিলের) উপর বর্তায়। কারণ সেই সর্বপ্রথম হত্যার প্রচলন ঘটায়। (বুখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৩৩৩৫; মুসলিম ২৮/৭ হাঃ ১৬৭৭)
ক্বিয়ামাতের দিন রক্তের (বিনিময়ে) রক্ত দ্বারা প্রতিশোধ গ্রহণ এবং সেদিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথম রক্তের বিষয়ে ফায়সালা করা হবে।
আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথম হত্যার বিচার করা হবে। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৪৮ হাদীস নং ৬৫৩৩; মুসলিম ২৮/৮, হাঃ ১৬৭৮)
মুসলিমদের রক্ত, সমভ্রম ও সম্পদ (বিনষ্ট করা) কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
আবূ বাকরাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সময় ও কাল আবর্তিত হয় নিজ চক্রে যেদিন থেকে আল্লাহ আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। এক বছর হয় বার মাসে। এর মধ্যে চার মাস সম্মানিত। তিনমাস ক্রমান্বয়ে আসে যেমন যিলকদ, যিলহাজ্জ ও মুহার্রম এবং রজব মুদার বা জমাদিউল আখির ও শাবান মাসের মাঝে হয়ে থাকে। (এরপর তিনি প্রশ্ন করলেন) এটি কোন্ মাস? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই অধিক জানেন। এরপর তিনি চুপ থাকলেন। এমনকি আমরা ধারণা করলাম যে, হয়তো তিনি এ মাসের অন্য কোন নাম রাখবেন। (তারপর) তিনি বললেন, এ কি যিলহাজ্জ মাস নয়? আমরা বললামঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এটি কোন্ শহর? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই অধিক জানেন। তারপর তিনি চুপ থাকলেন। আমরা ধারণা করলাম যে, হয়তো তিনি এ শহরের অন্য কোন নাম রাখবেন। তারপর তিনি বললেন, এটি কি (মাক্কাহ্) শহর নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, এটি কোন্ দিন? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই ভাল জানেন। তারপর তিনি চুপ থাকলেন। এতে আমরা মনে করলাম যে, তিনি এ দিনটির অন্য কোন নামকরণ করবেন। তারপর তিনি বললেন, এটি কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। এরপর তিনি বললেন, তোমাদের রক্ত তোমাদের সম্পদ। রাবী মুহাম্মাদ বলেন, আমার ধারণা যে, তিনি আরও বলেছিলেন, তোমাদের মান-ইজ্জত- তোমাদের উপর পবিত্র, যেমন পবিত্র তোমাদের আজকের এই দিন, তোমাদের এই শহর ও তোমাদের এই মাস। তোমরা শীঘ্রই তোমাদের রবের সঙ্গে মিলিত হবে। তখন তিনি তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। খবরদার! তোমরা আমার ইন্তিকালের পরে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ো না যে, একে অন্যের গর্দান উড়াবে। শোন, তোমাদের উপস্থিত ব্যক্তি অনুপস্থিত ব্যক্তিকে আমার পয়গাম পৌঁছে দেবে। অনেক সময় যে প্রত্যক্ষভাবে শ্রবণ করেছে তার থেকেও তার মাধ্যমে খবর-পাওয়া ব্যক্তি অধিকতর সংরক্ষণকারী হয়ে থাকে। রাবী মুহাম্মাদ [ইবনু সীরীন (রহ.)] যখনই এ হাদীস বর্ণনা করতেন তখন তিনি বলতেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্যই বলেছেন। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা শোন, আমি কি (আল্লাহ্র পায়গাম) পৌঁছে দিয়েছি? এভাবে দু’বার বললেন। (বুখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৭৮ হাদীস নং ৪৪০৬; মুসলিম ২৮/৯, হাঃ ১৬৭৯)
পেটের বাচ্চার রক্তপণ, অনিচ্ছাকৃত হত্যার জন্য রক্তপণ প্রদানের অপরিহার্যতা ও শিবহে আমদের দিয়াত বা রক্তপণ অপরাধীর অভিভাবকের উপর ওয়াজিব।
আবূ হুরাইরাহ (রাযি) বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার হুযাইল গোত্রের দু’জন মহিলার মধ্যে বিচার করেন। তারা উভয়ে মারামারি করেছিল। তাদের একজন অন্যজনের উপর পাথর নিক্ষেপ করে। পাথর গিয়ে তার পেটে লাগে। সে ছিল গর্ভবতী। ফলে তার পেটের বাচ্চাকে সে হত্যা করে। তারপর তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট অভিযোগ দায়ের করে। তিনি ফায়সালা দেন যে, এর পেটের সন্তানের বদলে একটি পূর্ণ দাস অথবা দাসী দিতে হবে। জরিমানা আরোপকৃত মহিলার অভিভাবক বললঃ হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এমন সন্তানের জন্য আমার উপর জরিমানা কেন হবে, যে পান করেনি, খাদ্য খায়নি, কথা বলেনি এবং কান্নাকাটিও করেনি। এ অবস্থায় জরিমানা প্রত্যাখ্যানযোগ্য। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বল্লেনঃ এ তো (দেখছি) গণকদের ভাই। (বুখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৪৬ হাদীস নং ৫৭৫৮; মুসলিম ২৮/১১, হাঃ ১৬৮১) উমার (রাঃ) তিনি মহিলাদের গর্ভপাত সম্পর্কে সহাবাদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। তখন মুগীরাহ (রাঃ) বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা করেছেন। মুহাম্মাদ ইব্নু মাসলামাহ (রাঃ) সাক্ষ্য দিলেন যে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ ফায়সালা করতে দেখেছেন। (বুখারী পর্ব ৮৭ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৬৯০৫-৬৯০৬; মুসলিম হাঃ ২৮/১১, ১৬৮৩)