51. জান্নাত, তার বিবরণ, আনন্দ-উপভোগ ও তার বাসিন্দা
জান্নাত, তার বিবরণ, আনন্দ-উপভোগ ও তার বাসিন্দা
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জাহান্নাম প্রবৃত্তি দিয়ে বেষ্টিত। আর জান্নাত বেষ্টিত দুঃখ-ক্লেশ দিয়ে। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ২৮ হাদীস নং ৬৪৮৭; মুসলিম পর্ব ৫১ হাঃ ২৮২২, ২৮২৩) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ বলেছেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন জিনিস তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চক্ষু দেখেনি, কোন কান শুনেনি এবং যার সম্পর্কে কোন মানুষের মনে ধারণাও জন্মেনি। তোমরা চাইলে এ আয়াতটি পাঠ করতে পার, “কেউ জানে না, তাদের জন্য তাদের চোখ শীতলকারী কী জিনিস লুকানো আছে” (সূরাহ সাজদাহ ৩২/১৩)। (বুখারী পর্ব ৫৯ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ৩২৪৪; মুসলিম ৫১ হাঃ ২৮২৪)
জান্নাতে এক বৃক্ষ আছে যার ছায়ায় কোন আরোহী শত বছর চললেও তা অতিক্রম করতে পারবে না।
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেছেন, জান্নাতের মধ্যে এমন একটি বৃক্ষ আছে, যার ছায়ায় একজন সওয়ারী একশত বছর চলতে থাকবে, তবুও সে এ ছায়া অতিক্রম করতে পারবে না। [বুখারী পর্ব ৬৫ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৪৮৮১; মুসলিম ৫১ অধ্যায় ১ হাঃ ২৮২৬) সাহ্ল ইব্নু সা‘দ (রাঃ) তিনি বলেছেনঃ জান্নাতের মাঝে এমন একটি বৃক্ষ হবে যার ছায়ার মাঝে একজন আরোহী একশ’ বছর পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবে, তবুও বৃক্ষের ছায়াকে অতিক্রম করতে পারবে না। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৫১ হাদীস নং ৬৫৫২; মুসলিম ৫১ অধ্যায় ১ হাঃ ২৮৫২) আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) নিশ্চয়ই জান্নাতের মাঝে এমন একটি বৃক্ষ হবে যার ছায়ায় উৎকৃষ্ট, উৎফুল্ল ও দ্রুতগামী ঘোড়ার একজন আরোহী একশ’ বছর পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবে। তবুও তার ছায়া অতিক্রম করতে পারবে না। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৫১ হাদীস নং ৬৫৫৩; মুসলিম ৫১/১, হাঃ ২৮২৭, ২৮২৮)
জান্নাতবাসীদের উপর আল্লাহ্র রেজামন্দি ও সন্তুষ্টি এবং তিনি কখনও কোনদিন তাদের উপর রাগান্বিত হবেন না।
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা জান্নাতীগণকে সম্বোধন করে বলবেন, হে জান্নাতীগণ! তারা জবাবে বলবে, হে আমাদের প্রভু! হাযির, আমরা আপনার সমীপে হাযির। এরপর আল্লাহ্ তা‘আলা বলবেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট হয়েছ? তারা বলবে, আপনি আমাদেরকে এমন বস্তু দান করেছেন যা আপনার মাখ্লুকাতের ভিতর থেকে কাউকেই দান করেননি। অতএব আমরা কেন সন্তুষ্ট হব না? তখন তিনি বলবেন, আমি এর চেয়েও উত্তম কিছু তোমাদেরকে দান করব। তারা বলবে, প্রভু হে! এর চেয়েও উত্তম সে কোন্ বস্তু? আল্লাহ্ তা‘আলা বলবেন, তোমাদের ওপর আমি আমার সন্তুষ্টি অবধারিত করব। এরপর আমি আর কখনও তোমাদের ওপর অসন্তুষ্ট হব না। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৫১ হাদীস নং ৬৫৪৯; মুসলিম ৫১/২, হাঃ ২৮২৯)
জান্নাতবাসীরা বিশেষ বাসস্থানের লোকেদের সেভাবে দেখবে যেমন তোমরা আকাশে তারকা দেখে থাক।
সাহল বিন সা’দ(রাঃ) তিনি বলেন জান্নাতীরা জান্নাতে বালাখানাগুলো দেখতে পাবে,যেমন তোমরা আকাশে তারকাগুলো দেখতে পাও।(সানাদে অন্তর্ভুক্ত) রাবী ‘আবদুল ‘আযীয বলেন, আমার পিতা বলেছেন যে, আমি এ হাদীসটি নু‘মান ইব্নু আবূ আইয়্যাশকে বলেছি। অতঃপর তিনি বলেছেন, আমি এ মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, অবশ্যই আবূ সা‘ঈদকে এ হাদীস বর্ণনা করতে আমি শুনেছি এবং এতে তিনি এটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন “যেরূপ অস্তমান তারকাকে আকাশের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে তোমরা দেখে থাক।” (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৫১ হাদীস নং ৬৫৫৬; মুসলিম ৫১/৩, হাঃ ২৮৩০) আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, অবশ্যই জান্নাতবাসীরা তাদের উপরের বালাখানার বাসিন্দাদের এমনভাবে দেখতে পাবে, যেমন তোমরা আকাশের পূর্ব অথবা পশ্চিম দিকে উজ্জ্বল দীপ্তিমান নক্ষত্র দেখতে পাও। এটা হবে তাদের মধ্যে মর্যাদার পার্থক্যের কারণে। সহাবীগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এ তো নাবীগনেরজায়গা। তাদের ব্যতীত অন্যরা সেখানে পৌঁছতে পারবে না। তিনি বললেন, হ্যাঁ, সে সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যেসব লোক আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনবে এবং রসূলগণকে সত্য বলে স্বীকার করবে। (বুখারী পর্ব ৫৯ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ৩২৫৬; মুসলিম ৫১/৩ হাঃ ২৮৩১)
যে দলটি জান্নাতে প্রথমে প্রবেশ করবে তারা পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় জ্বলজ্বল করবে, তাদের ও তাদের স্ত্রীদের বর্ণনা।
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সর্বপ্রথম যে দল জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের মুখমণ্ডল হবে পূর্ণিমার রাতের চন্দ্রের মত উজ্জ্বল। অতঃপর যে দল তাদের অনুগামী হবে তাদের মুখমণ্ডল হবে আকাশের সর্বাধিক দীপ্তিমান উজ্জ্বল তারকার ন্যায়। তারা পেশাব করবে না, পায়খানা করবে না। তাদের থুথু ফেলার প্রয়োজন হবে না এবং তাদের নাক হতে শ্লেষ্মাও বের হবে না। তাদের চিরুণী হবে স্বর্ণের তৈরী। তাদের ঘাম হবে মিসকের মত সুগন্ধযুক্ত। তাদের ধনুচি হবে সুগন্ধযুক্ত চন্দন কাষ্ঠের। বড় চক্ষু বিশিষ্ট হুরগণ হবেন তাদের স্ত্রী। তাদের সকলের দেহের গঠন হবে একই। তারা সবাই তাদের আদি পিতা আদাম (‘আ.)-এর আকৃতিতে হবেন। উচ্চতায় তাদের দেহের দৈর্ঘ্য হবে ষাট হাত। (বুখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৩৩২৭; মুসলিমঃ-২৮২৪
জান্নাতের তাঁবুসমূহ এবং ওগুলোতে বসবাসরতা বিশ্বাসীদের স্ত্রীগণ।
আবূ মূসা আল-আশ‘আরী (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘গুণসম্পন্ন মোতির তাঁবু থাকবে যার উচ্চতা ত্রিশ মাইল। এর প্রতিটি কোণে মু’মিনদের জন্য এমন স্ত্রী থাকবে যাদেরকে অন্যরা কখনো দেখেনি।’ (বুখারী পর্ব ৫৯ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ৩২৪৩; মুসলিম ৫১/৯ হাঃ ২৮৩৮)
কতক লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে যাদের অন্তর হবে পাখীর অন্তরের মত।
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা আদাম (‘আ.)-কে সৃষ্টি করলেন। তাঁর দেহের দৈর্ঘ্য ছিল ষাট হাত। অতঃপর তিনি (আল্লাহ) তাঁকে (আদমকে) বললেন, যাও, ঐ ফেরেশতা দলের প্রতি সালাম কর এবং তাঁরা তোমার সালামের জওয়াব কিভাবে দেয় তা মনোযোগ দিয়ে শোন। কারণ এটাই হতে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালামের রীতি। অতঃপর আদাম (‘আ.) (ফেরেশতাদের) বললেন, “আসসালামু আলাইকুম”। ফেরেশতামণ্ডলী তার উত্তরে “আসসালামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ” বললেন। ফেরেশতারা সালামের জওয়াবে “ওয়া রহমাতুল্লাহ” শব্দটি বাড়িয়ে বললেন। যারা জান্নাতে প্রবেশ করবেন তারা আদাম (‘আ.)-এর আকৃতি বিশিষ্ট হবেন। তবে আদাম সন্তানের দেহের দৈর্ঘ্য সর্বদা কমতে কমতে বর্তমান পরিমাপে এসেছে। (বুখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৩৩২৬; মুসলিম ৫১/১১ হাঃ ২৮৪১)
জাহান্নামের আগুনের উত্তাপ, তার গভীরতা এবং এর ভিতরে শাস্তি।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের একভাগ মাত্র। বলা হল, ‘হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! জাহান্নামীদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্য দুনিয়ার আগুনই তো যথেষ্ট ছিল।’ তিনি বললেন, ‘দুনিয়ার আগুনের উপর জাহান্নামের আগুনের তাপ আরো ঊনসত্তর গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, প্রত্যেক অংশে তার সমপরিমাণ উত্তাপ রয়েছে।’ (বুখারী পর্ব ৫৯ অধ্যায় ১০ হাদীস নং ৩২৬৫; মুসলিম ২৮৪৩
অত্যাচারী ও উদ্ধতরা জাহান্নামের আগুনে এবং দুর্বল ও বিনীতরা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জান্নাত ও জাহান্নাম পরস্পর বিতর্ক করে। জাহান্নাম বলে দাম্ভিক ও পরাক্রমশালীদের দ্বারা আমাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। জান্নাত বলে, আমার কী হলো? আমাতে কেবল মাত্র দুর্বল এবং নিরীহ ব্যক্তিরাই প্রবেশ করছে। তখন আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা‘আলা জান্নাতকে বলবেন, তুমি আমার রহমত। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছে আমি অনুগ্রহ করব। আর তিনি জাহান্নামকে বলবেন, তুমি হলে আযাব। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছে শাস্তি দেব। জান্নাত ও জাহান্নাম প্রত্যেকের জন্যই রয়েছে পূর্ণতা। তবে জাহান্নাম পূর্ণ হবে না যতক্ষণ না তিনি তাঁর পা তাতে রাখবেন। তখন সে বলবে, বাস, বাস, বাস। তখন জাহান্নাম পূর্ণ হয়ে যাবে এবং এর এক অংশ অপর অংশের সঙ্গে মুড়িয়ে দেয়া হবে। আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্টির কারো প্রতি যুলম করবেন না। অবশ্য আল্লাহ্ তা‘আলা জান্নাতের জন্য অন্য মাখলূক সৃষ্টি করবেন। (বুখারী পর্ব ৬৫ হাদীস নং ৪৮৫০; মুসলিম ৫১/১৩, হাঃ ২৮৪৬) আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জাহান্নাম সর্বদাই বলতে থাকবে আরও কি আছে? এমন কি রাব্বুল ইযযত তাতে তাঁর পা রাখবেন। জাহান্নাম বলবে, ‘বাস, বাস’ তোমার ইযযতের কসম! সেদিন তার একাংশ অপরাংশের সঙ্গে মিলিত হয়ে যাবে। (বুখারী পর্ব ৮৩ অধ্যায় ১২ হাদীস নং ৬৬৬১; মুসলিম ৫১/১৩, হাঃ ২৮৪৮) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ক্বিয়ামাত দিবসে মৃত্যুকে একটি ধূসর রঙের মেষের আকারে আনা হবে। তখন একজন সম্বোধনকারী ডাক দিয়ে বলবেন, হে জান্নাতবাসী! তখন তাঁরা ঘাড় মাথা উঁচু করে দেখতে থাকবে। সম্বোধনকারী বলবে, তোমরা কি একে চিন? তারা বলবেন হ্যাঁ, এ হল মৃত্যু। কেননা সকলেই তাকে দেখেছে। তারপর সম্বোধনকারী আবার ডেকে বলবেন, হে জাহান্নামবাসী! জাহান্নামীরা মাথা উঁচু করে দেখতে থাকবে, তখন সম্বোধনকারী বলবে তোমরা কি একে চিন? তারা বলবে, হ্যাঁ, এ তো মৃত্যু। কেননা তারা সকলেই তাকে দেখেছে। তারপর (সেটি) যবেহ করা হবে। আর ঘোষক বলবেন, হে জান্নাতবাসী! স্থায়ীভাবে (এখানে) থাক। তোমাদের আর কোন মৃত্যু নেই। আর হে জাহান্নামবাসী! চিরদিন (এখানে) থাক। তোমাদের আর মৃত্যু নেই। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঠ করলেন “তাদের সতর্ক করে দাও পরিতাপের দিবস সম্বন্ধে যখন সকল ফয়সালা হয়ে যাবে অথচ এখন তারা গাফিল, তারা অসতর্ক দুনিয়াবাসী-অবিশ্বাসী।” [বুখারী পর্ব ৬৫ সূরা (১৯) মারইয়াম অধ্যায় ১ হাদীস নং ৪৭৩০; মুসলিম ৫১/১৩, হাঃ ২৮৪৯] ইব্নু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন জান্নাতীগণ জান্নাতে আর জাহান্নামীগণ জাহান্নামে চলে যাবে, তখন মৃত্যুকে উপস্থিত করা হবে, এমন কি জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী স্থানে রাখা হবে। এরপর তাকে যবহ্ করে দেয়া হবে এবং একজন ঘোষণাকারী এ মর্মে ঘোষণা দিবে যে, হে জান্নাতীগণ! (এখন আর) কোন মৃত্যু নেই। হে জাহান্নামীগণ! (এখন আর কোন) মৃত্যু নেই। তখন জান্নাতীগণের আনন্দ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। আর জাহান্নামীদের বিষণ্নতাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৫১ হাদীস নং ৬৫৪৮; মুসলিম ৫১/১৪, হাঃ ২৮৫০) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেনঃ কাফিরের দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানের দূরত্ব একজন দ্রুতগামী অশ্বারোহীর তিন দিনের ভ্রমণের সমান হবে। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৫১ হাদীস নং ৬৫৫১; মুসলিম-২৮৫২ হারিস ইব্নু ওয়াহাব খুযাঈ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী লোকদের পরিচয় বলব না? তারা দুর্বল এবং অসহায়; কিন্তু তাঁরা যদি কোন ব্যাপারে আল্লাহ্র নামে কসম করে বসেন, তাহলে তা পূরণ করে দেন। আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামী লোকদের পরিচয় বলব না? তারা রূঢ় স্বভাব, অধিক মোটা এবং অহংকারী তারাই জাহান্নামী। [বুখারী পর্ব ৬৫ সূরা (৬৮) নূন ওয়াল ক্বলাম অধ্যায় ১ হাদীস নং ৪৯১৮; মুসলিম ৫১/১৩, হাঃ ২৮৫৩] ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যাম‘আ (রাঃ) তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে খুতবাহ দিতে শুনেছেন, খুতবায় তিনি কওমে সামূদের প্রতি প্রেরিত উষ্ট্রী ও তার পা কাটার কথা উল্লেখ করলেন। তারপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) إِذْ انْبَعَ أَشْقَاهَا এর ব্যাখ্যায় বললেন, ঐ উষ্ট্রীটিকে হত্যা করার জন্য এক হতভাগ্য শক্তিশালী ব্যক্তি তৎপর হয়ে উঠল যে সে সমাজের মধ্যে আবূ যাম‘আর মত প্রভাবশালী ও অত্যন্ত শক্তিধর ছিল। এ খুতবায় তিনি মেয়েদের সম্পর্কে আলোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছেন, তোমাদের মধ্যে এমন লোকও আছে যে তার স্ত্রীকে ক্রীতদাসের মত মারপিট করে; কিন্তু ঐ দিনের শেষেই সে আবার তার সঙ্গে এক বিছানায় মিলিত হয়। তারপর তিনি বায়ু নিঃসরণের পর হাসি দেয়া সম্পর্কে বললেন, তোমাদের কেউ কেউ হাসে সে কাজটির জন্য যে কাজটি সে নিজেও করে। [বুখারী পর্ব ৬৫ সূরা (৯১) আশ্শাম্স্ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৪৯৪২; মুসলিম ৫১/১৩, হাঃ ২৮৫৫] আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি ‘আম্র ইব্নু ‘আমির খুয‘আইকে তার বহির্গত নাড়ি-ভুঁড়ি নিয়ে জাহান্নামের আগুনে চলাফেলা করতে দেখেছি। সেই প্রথম ব্যক্তি যে সাইবা উৎসর্গ করার প্রথা প্রচলন করে। (বুখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ৯ হাদীস নং ৩৫২১; মুসলিম ২৮৫৬
পৃথিবীর ধ্বংস এবং পুনরুত্থান দিবসে মানুষের একত্র সমাবেশ।
‘আয়িশাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষকে হাশরের ময়দানে উঠানো হবে খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তখন তো পুরুষ ও নারীগণ একে অপরের প্রতি দৃষ্টিপাত করবে। তিনি বললেনঃএরূপ ইচ্ছে করার চেয়েও কঠিন হবে তখনকার অবস্থা। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৪৫ হাদীস নং ৬৫২৭; মুসলিম ৫১/১৪, হাঃ ২৮৫৯) ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মাঝে খুতবা দিতে দাঁড়ালেন। এরপর বললেনঃনিশ্চয়ই তোমাদের হাশর করা হবে খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়। আয়াতঃ“যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছি তেমনিভাবে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করব।” আর ক্বিয়ামাতের দিন সর্বপ্রথম ইব্রাহীম (‘আ.)-কে পোশাক পরিধান করানো হবে। আমার উম্মাত থেকে কিছু লোককে আনা হবে আর তাদেরকে আনা হবে বামওয়ালাদের (বাম হাতে ‘আমালনামা প্রাপ্ত) ভিতর থেকে। তখন আমি বলব, হে প্রভু! এরা তো আমার উম্মাত। এরপর আল্লাহ্ তা‘আলা বলবেনঃনিশ্চয়ই তুমি জান না তোমার পরে এরা কী করেছে। তখন আমি আরয করব, যেমন আরয করেছে নেক্কার বান্দা অর্থাৎ ‘ঈসা (‘আ.) (আরবী) পর্যন্ত। অর্থাৎ যতদিন আমি ছিলাম আমি তাদের ওপর সাক্ষী ছিলাম” পর্যন্ত। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এরপর জবাব দেয়া হবে। এরা সর্বদাই দ্বীন থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শনের ওপর বিদ্যমান ছিল। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৪৫ হাদীস নং ৬৫২৬; মুসলিম ৫১/১৪, হাঃ ২৮৬০) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, ক্বিয়ামাতের দিন মানুষের হাশর হবে তিন প্রকারে। একদল তো হবে আল্লাহ্ তা‘আলার প্রতি আশিক ও দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত বান্দাদের। দ্বিতীয় দল হবে দু’জন, তিনজন, চারজন বা দশজন এক উটের ওপর আরোহণকারী। আর অবশিষ্ট যারা থাকবে অগ্নি তাদেরকে একত্রিত করে নেবে। যেখানে তারা থামবে আগুনও তাদের সঙ্গে সেখানে থামবে। তারা যেখানে রাত্রি যাপন করবে আগুনও সেখানে তাদের সঙ্গে রাত্রি যাপন করবে। তারা যেখানে সকাল করবে আগুনও সেখানে তাদের সঙ্গে সকাল করবে। যেখানে তাদের সন্ধ্যা হবে আগুনেরও সেখানে সন্ধ্যা হবে। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৪৫ হাদীস নং ৬৫২২; মুসলিম ৫১/১৪, হাঃ ২৮৬১)
পুনরুত্থান দিবসের বর্ণনা, আল্লাহ যেন আমাদেরকে তার ভয়-ভীতি থেকে রক্ষা করেন।
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমার (রাঃ) “যেদিন সব মানুষ জগতসমূহের প্রতিপালকের সামনে দাঁড়াবে।” (সূরাহ মুতাফ্ফিফীন ৮৩/৬) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তির কানের লতা পর্যন্ত ঘামে ডুবে যাবে। [বুখারী পর্ব ৬৫ সূরা (৮৩) ওয়াইলুল লিল মুতাফ্ফিফীন অধ্যায় হাদীস নং ৪৯৩৮; মুসলিম ৫১/১৫, হাঃ ২৮৬২] আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন মানুষের ঘাম হবে। এমনকি তাদের ঘাম যমীনে সত্তর হাত ছাড়িয়ে যাবে এবং তাদের মুখ পর্যন্ত ঘামে নিমজ্জিত হবে; এমনকি কান পর্যন্ত। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৪৭ হাদীস নং ৬৫৩২; মুসলিম ৫১/১৫, হাঃ ২৮৬৩)
মৃত ব্যক্তিকে জান্নাতে বা জাহান্নামে তার স্থান দেখানো হয়, ক্ববরের শাস্তির প্রমাণ এবং তাত্থেকে আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা।
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমার (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ মারা গেলে অবশ্যই তার সামনে সকাল ও সন্ধ্যায় তার অবস্থান স্থল উপস্থাপন করা হয়। যদি সে জান্নাতী হয়, তবে (অবস্থান স্থল) জান্নাতীদের মধ্যে দেখানো হয়। আর সে জাহান্নামী হলে, তাকে জাহান্নামীদের (অবস্থান স্থল দেখানো হয়) আর তাকে বলা হয়, এ হচ্ছে তোমার অবস্থান স্থল, ক্বিয়ামাত দিবসে আল্লাহ্ তোমাকে পুনরুত্থিত করা অবধি (এভাবে দেখানো হয়)। (বুখারী পর্ব ২৩ অধ্যায় ৮৯ হাদীস নং ১৩৭৯; মুসলিম ৫১/১৭, হাঃ ২৬৮৮) আবূ আইয়ুব আনসারী (রা.) তিনি বলেন, (একবার) সূর্য ডুবে যাওয়ার পর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হলেন। তখন তিনি একটি আওয়াজ শুনতে পেয়ে বলেনঃ ইয়াহূদীদের ক্ববরে আযাব দেয়া হচ্ছে। (বুখারী পর্ব ২৩ অধ্যায় ৮৭ হাদীস নং ১৩৭৫; মুসলিম ৫১/১৭, হাঃ ২৮৬৯) আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বান্দাকে যখন তার ক্ববরে রাখা হয় এবং তার সাথীরা এতটুকু মাত্র দূরে যায় যে, সে তখনও তাদের জুতার আওয়াজ শুনতে পায়।* এ সময় দু’জন ফেরেশতা তার নিকট এসে তাকে বসান এবং তাঁরা বলেন, এ ব্যক্তি অর্থাৎ মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে তুমি কী বলতে? তখন মু’মিন ব্যক্তি বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহ্র বান্দা এবং তাঁর রাসূল। তখন তাঁকে বলা হবে, জাহান্নামে তোমার অবস্থান স্থলটির দিকে নযর কর, আল্লাহ্ তোমাকে তার বদলে জান্নাতের একটি অবস্থান স্থল দান করেছেন। তখন সে দু’টি স্থলের দিকেই দৃষ্টি করে দেখবে। (বুখারী পর্ব ২৩ অধ্যায় ৮৬ হাদীস নং ১৩৭৪; মুসলিম ২৮৭০ বারাআ ইব্নু ‘আযিব (রাঃ) তিনি বলেন, মু’মিন ব্যক্তিকে যখন তার ক্ববরে বসানো হয় তখন উপস্থিত করা হয় ফেরেশতাগণকে। অতঃপর (ফেরেশতাগণের প্রশ্নের উত্তরে) সে সাক্ষ্য প্রদান করে যে, “আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র রাসূল ।” এটা আল্লাহ্র কালামঃ(যার অর্থ) “আল্লাহ্ পার্থিব জীবনে ও আখিরাতে অবিচল রাখবেন সে সকল লোককে যারা ঈমান এনেছে, প্রতিষ্ঠিত বাণীতে” (ইব্রাহীম ২৭)। (বুখারী পর্ব ২৩ অধ্যায় ৮৬ হাদীস নং ১৩৬৯; মুসলিম ২৮৭১ আবূ ত্বলহা (রাঃ) বাদরের দিন আল্লাহ্র নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশে চব্বিশজন কুরাইশ সর্দারের লাশ বাদর প্রান্তরের একটি নোংরা আবর্জনাপূর্ণ কূপে নিক্ষেপ করা হল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন দলের বিরুদ্ধে জয় লাভ করলে সে স্থানের পার্শ্বে তিন দিন অবস্থান করতেন। বাদর প্রান্তরে অবস্থানের পর তৃতীয় দিনে তিনি তাঁর সাওয়ারী প্রস্তুত করার আদেশ দিলেন, সাওয়ারীর জিন শক্ত করে বাঁধা হল। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পদব্রজে অগ্রসর হলে সহাবাগণও তাঁর পেছনে পেছনে চললেন। তাঁরা বলেন, আমরা ভাবছিলাম, কোন প্রয়োজনে তিনি কোথাও যাচ্ছেন। অতঃপর তিনি ঐ কূপের কিনারে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং কূপে নিক্ষিপ্ত ঐ নিহত ব্যক্তিদের নাম ও তাদের পিতার নাম ধরে ডাকতে শুরু করলেন, হে অমুকের পুত্র অমুক, হে অমুকের পুত্র অমুক! তোমরা কি এখন অনুভব করতে পারছ যে, আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য তোমাদের জন্য পরম খুশীর বিষয় ছিল? আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছিলেন আমরা তো তা সত্য পেয়েছি, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছিলেন তোমরাও তা সত্য পেয়েছ কি? বর্ণনাকারী বলেন, ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি আত্মাহীন দেহগুলোর সঙ্গে কী কথা বলছেন? নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ঐ মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, আমি যা বলছি তা তাদের চেয়ে তোমরা অধিক শুনতে পাচ্ছ না। (বুখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ৩৯৭৬; মুসলিম ৫১/১৭, হাঃ ২৮৭৫)
(পুনরুত্থান দিবসে) হিসাবের প্রমাণ।
ইব্নু আবূ মুলায়কাহ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর স্ত্রী ‘আয়িশা (রাঃ) কোন কথা শুনে না বুঝলে বার বার প্রশ্ন করতেন। একদা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “(কিয়ামতের দিন) যার কাছ থেকে হিসেব নেয়া হবে তাকে শাস্তি দেয়া হবে।” ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেনঃ আমি জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহ্ তা‘আলা কি ইরশাদ করেননি, (তার হিসাব-নিকাশ সহজেই নেয়া হবে) (সূরাহ ইনশিক্বাক ৮৪/৮)। তখন তিনি বললেনঃ তা কেবল হিসেব প্রকাশ করা। কিন্তু যার হিসাব পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে নেয়া হবে সে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। (বুখারী পর্ব ৩ অধ্যায় ৩৬ হাদীস নং ১০৩; মুসলিম ৫১/১৮, হাঃ ২৮৭৬) ইব্নু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন আল্লাহ্ তা‘আলা কোন কাওমের উপর আযাব অবতীর্ণ করেন তখন সেখানে বসবাসরত সকলের উপরই সেই আযাব নিপতিত হয়। অবশ্য পরে (ক্বিয়ামাতের দিন) প্রত্যেককে তার ‘আমাল অনুসারে উঠানো হবে। (বুখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ১৯ হাদীস নং ৭১০৮; মুসলিম ৫১/১৯, হাঃ ২৮৭৯)