11. গান-বাজনা ও অলসতা
অনুচ্ছেদঃ কারো বক্তব্য, আল্লাহর মর্জি ও আপনার মর্জি।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) এক ব্যক্তি নবী (সাঃ)-কে বললো, আল্লাহর মর্জি এবং আপনার মর্জি। তিনি বলেনঃ তুমি আল্লাহর সাথে শরীক করলে। বলো, একমাত্র আল্লাহর মর্জি। -(আহমাদ, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ, দারিমী, তাহাবী)
অনুচ্ছেদঃ গান-বাজনা ও তামাশা।
আবদুল্লাহ ইবনে দীনার (র) আমি আবদুল্লাহ ইবনে উমার সাথে বাজারে গেলাম। তিনি সঙ্গীতরত একটি বালিকাকে অতিক্রম করতে করতে বলেন, শয়তান যদি কাউকেও ত্যাগ করতো তবে একেও ত্যাগ করতো (বাযযার, দারাওয়ারদী)। আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি খেল-তামাশা পছন্দ করি না এবং খেল-তামাশারও আমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই। অর্থাৎ আমার সাথে বাতিলের কোন সম্পর্ক নাই। ইবনে আব্বাস (রাঃ) “এমন কতক লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে ভ্ৰষ্ট করার লক্ষ্যে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে” (সূরা লোকমান : ৬)। তা হচ্ছে গান-বাজনা ও অনুরূপ বস্তুসমূহ। (তাবারী) বারাআ ইবনে আযেব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা সালামের বহুল প্রচলন করো, শান্তিতে থাকতে পারবে। অনর্থক কথাবার্তা ক্ষতিকর। (মুসনাদে আবু ইয়ালা, ইবনে হিব্বান, মুখতারাত) ফাদালা ইবনে উবাইদ (র) তিনি কোন এক মজলিসে বসা ছিলেন। তখন তিনি জানতে পারলেন যে, কতক লোক দাবা খেলায় মত্ত আছে। তিনি ক্রোধান্বিত অবস্থায় তৎক্ষণাৎ উঠে গিয়ে তাদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করলেন, অতঃপর বললেন, সাবধান! যারা পাশা খেলে এবং তার ফল (উপার্জন) খায় তারা শূকরের গোশত ভক্ষণকারী এবং রক্ত দিয়ে উযুকারীর সমতুল্য।
অনুচ্ছেদঃ উত্তম চালচলন ও জীবনপ্রণালী।
ইবনে মাসউদ (রাঃ) তোমরা এমন একটি যুগে আছো যে সময় ফকীহগণের সংখ্যা অধিক, বক্তাগণের সংখ্যা কম, যাঞ্চাকারীর সংখ্যা কম, দাতার সংখ্যা অধিক এবং আমল হচ্ছে প্রবৃত্তির পরিচালক। কিন্তু তোমাদের পর অচিরেই এমন এক যুগ আসবে যখন ফকীহগণের সংখ্যা হবে কম, বক্তার সংখ্যা হবে প্রচুর, যাঞ্চাকারীর সংখ্যা হবে অধিক, দাতার সংখ্যা হবে অল্প এবং প্রবৃত্তিই হবে আমলের পরিচালক। জেনে রাখো! আখেরী যমানায় উত্তম স্বভাব হবে কোন কোন আমলের চেয়েও উত্তম। -(মুয়াত্তা মালিক) আল-জুরাইরী (র) আমি আবুত তুফাইল (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি নবী (সাঃ)-কে দেখেছেন? তিনি বলেন, হাঁ। আমার জানামতে যারা তাঁকে দেখেছেন আমি ছাড়া তাদের কেউ ভূপৃষ্ঠে বেঁচে নাই। তিনি ছিলেন ফর্সা ও লাবণ্যময় চেহারার অধিকারী (মুসলিম, হা/৫৮৬২)। আল-জুরাইরী (র) আমি ও আবুত তুফাইল আমের ইবনে ওয়াসেলা আল-কানানী (রাঃ) আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করছিলাম। তখন আবুত তুফাইল (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ)-কে দেখেছেন, আমি ছাড়া এমন কেউ আর বেঁচে নাই। আমি বললাম, আপনি কি তাঁকে দেখেছেন? তিনি বলেন, হাঁ। আমি বললাম, তিনি কেমন ছিলেন? তিনি বলেন, তিনি ছিলেন ফর্সা, লাবণ্যময়, মধ্যম আকৃতির। (মুসলিম, আবু দাউদ) ইবনে আব্বাস (রাঃ) নবী (সাঃ) বলেনঃ উত্তম চালচলন, উত্তম স্বভাব, উত্তম আচরণ এবং মিতাচার নবুয়াতের পঁচিশ ভাগের এক ভাগ। -(মুয়াত্তা মালিক, আবু দাউদ, আহমাদ) ইবনে আব্বাস (রাঃ) নবী (সাঃ) বলেনঃ উত্তম চালচলন উত্তম আচরণ ও মিতাচার নবুয়াতের সত্তর ভাগের এক ভাগ। (আবু দাউদ)
অনুচ্ছেদঃ যাকে তুমি দাওনি পাথেয়, সে তোমার নিকট আনবে বয়ে বার্তা।
ইকরিমা (র) আমি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে কখনো কবিতা দ্বারা উপমা দিতে শুনেছেন? তিনি বলেন, কখনো কখনো তিনি ঘরে প্রবেশকালে আবৃত্তি করতেনঃ “যাকে তুমি দাওনি তোশা, আনবে খবর সে নিশ্চয়”। -(তিরমিযী, তাহাবী, নাসাঈ) ইবনে আব্বাস (রাঃ) “যাকে তুমি দাওনি তোশা, আনবে খবর সে নিশ্চয়” একজন নবীর কথা (অর্থাৎ নবী (সাঃ)-ও একথা বলেছেন)।
অনুচ্ছেদঃ অবাঞ্ছিত আকাঙ্ক্ষা।
আবু হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন ঃ তোমাদের কেউ যখন কিছু আকাঙ্ক্ষা করে তখন তার লক্ষ্য করা উচিত যে, সে কি আকাঙ্ক্ষা করছে। কেননা সে তো জানে না যে, তাকে কি দেয়া হবে? (আহমাদ, বাযযার)
অনুচ্ছেদঃ তোমরা আঙ্গুরকে কারম নামকরণ করো না।
আলকামা ইবনে ওয়াইল (রাঃ) নবী (সাঃ) বলেন তোমাদের কেউ যেন আঙ্গুরকে ‘কারম’ না বলে, বরং তোমরা হাবালা (আঙ্গুর) বলো। -(মুসলিম, দারিমী, আবু আওয়ানাসাঈ, ইবনে হিব্বান)
অনুচ্ছেদঃ কারো এরূপ বলা, তোমার অকল্যাণ হোক।
আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাঃ) এক ব্যক্তিকে অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন, যে তার কোরবানীর উট হাকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তিনি বলেনঃ তুমি তাতে আরোহণ করো। সে বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তা কোরবানীর উট। তিনি পুনরায় বলেনঃ তুমি তাতে আরোহণ করো। সে বললো, তা কোরবানীর উট। তিনি তৃতীয় বা চতুর্থবারে বলেনঃ তোমার জন্য দুঃখ হয়! তুমি তাতে আরোহণ করো। -(বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তাহাবী)
অনুচ্ছেদঃ কারো কথা, হে শালিকা, হে পাগলী।
হামনা বিনতে জাহাশ (র) নবী (সাঃ) বললেনঃ হে শ্যালিকা (বা পাগলী)! এটা কি? -(আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিযী) হাবীব ইবনে সাহ্বান আল-আসাদী (র) আমি আম্মার (রাঃ)-কে ফরয নামায পড়তে দেখলাম। অতঃপর তিনি তার পাশের লোকটিকে বলেন, হে পাগলা! অতঃপর (আবার নামাযে) দাঁড়ালেন। (হাকিম) আমর ইবনুশ শারীদ (র) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর বাহনে পেছন দিকে আমাকে তুলে নিলেন। তিনি বলেনঃ তোমার স্মৃতিতে (কবি) উমাইয়্যা ইবনে আবুস সালত-এর কবিতার কোন কিছু আছে কি? আমি বললাম, হাঁ। আমি তাকে একটি পংক্তি আবৃত্তি করে শুনালাম। তিনি বলেনঃ আরও আবৃত্তি করো। শেষ পর্যন্ত আমি তাকে এক শত পংক্তি আবৃত্তি করে শুনলাম। (মুসলিম)
অনুচ্ছেদঃ কারো কথা, আমি ক্লান্ত-শ্রান্ত।
আবদুল্লাহ ইবনে আবু মূসা (র) আয়েশা (রাঃ) বললেন, রাতে দাঁড়ানো (নফল নামায পড়া) কখনো ত্যাগ করো না। কেননা নবী (সাঃ) কখনো তা ত্যাগ করেননি। তিনি অসুস্থ থাকলে বা ক্লান্তি বোধ করলে বসে বসে নামায পড়তেন। (আবু দাউদ)
অনুচ্ছেদঃ ব্যক্তি অলসতা থেকে পানাহ চায়।
আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) নবী (সাঃ) অধিক পরিমাণে বলতেনঃ “হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা ও দুঃখজনক অবস্থা থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, ভীরুতা ও কৃপণতা থেকে এবং ঋণভার ও লোকের (শত্রুর) আধিপত্য থেকে”। -(বুখারী, আবু দাউদ, নাসাঈ, তিরমিযী)
অনুচ্ছেদঃ কারো কথা, আমার জান আপনার জন্য উৎসর্গিত।
আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) আবু তালহা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সামনে হাঁটু গেড়ে বসতেন এবং তার তীরগুলো ছড়িয়ে দিয়ে বলতেন, হে প্রিয় নবী! আমার মুখমণ্ডল আপনার মুখমণ্ডলের ঢালস্বরূপ। আমার জান আপনার জন্য উৎসর্গ হোক। (ইবনুস সুন্নী) আবু যার (রাঃ) নবী (সাঃ) ‘আল-বাকী’ নামক কবরস্থানের দিকে গেলেন। আমিও তাঁর অনুগামী হলাম। তিনি পিছনে ফিরে আমাকে দেখতে পেয়ে বলেনঃ হে আবু যার! আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার সৌভাগ্যময় দরবারে হাযির। আপনার জন্য আমি উৎসর্গিত। তিনি বলেনঃ সম্পদশালীরাই হবে কিয়ামতের দিন দরিদ্র, তবে যারা এরূপ এরূপ (দান-খয়রাত) করবে তারা ব্যতীত। আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই সমধিক জ্ঞাত। তিনি এরূপ তিনবার বলেন। অতঃপর উহুদ পাহাড় আমাদের সামনে পড়লো। তিনি বলেনঃ হে আবু যার! আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার সৌভাগ্যময় দরবারে হাযির। আপনার জন্য আমি উৎসর্গিত। তিনি বলেনঃ “এই উহুদ পাহাড় যদি মুহাম্মাদের পরিবারের জন্য সোনায় পরিণত হয়, তবে রাত আসা অবধি তাদের নিকট এক দীনার বা এক মিসকাল পরিমাণ সোনা অবশিষ্ট থাকলেও তাতে আমি খুশি হবো না”। অতঃপর আমরা একটি উন্মুক্ত মাঠে উপনীত হলাম। তিনি মাঠের এক প্রান্তে চলে গেলেন। আমি ভাবলাম, তিনি হয়তো প্রাকৃতিক প্রয়োজন সাড়তে গেছেন। তাই আমি একপাশে বসে থাকলাম। আমার কাছে ফিরে আসতে তাঁর বিলম্ব হলে তাঁর সম্পর্কে আমার (বিপদের) আশংকা হলো। অতঃপর আমি এক ব্যক্তির সাথে ফিস ফিস করে তাঁর কথা বলার আওয়াজ শুনতে পেলাম। অতঃপর তিনি একাকী আমার নিকট ফিরে এলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কার সাথে গোপনে কথা বললেন? তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি তা শুনতে পেয়েছো? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেনঃ তিনি জিবরাঈল (আঃ)। তিনি আমার নিকট এসে আমাকে এই সুসংবাদ দিলেন যে, আমার উম্মাতের যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছু শরীক না করে মারা যাবে সে বেহেশতে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যদি সে যেন করে থাকে, যদি সে চুরি করে থাকে তবুও? তিনি বলেনঃ হাঁ তবুও। (বুখারী, মুসলিম)
অনুচ্ছেদঃ কারো বলা, আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা উৎসর্গিত হোক ।
আলী (রাঃ) আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে সাদ (রাঃ) ছাড়া আর কারো জন্য ‘ফিদা’ (উৎসর্গ) শব্দ ব্যবহার করতে দেখিনি। আমি তাঁকে বলতে শুনেছিঃ তীর নিক্ষেপ করো, আমার পিতা-মাতা তোমার জন্য উৎসর্গিত হোন। (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ) আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা (রাঃ) নবী (সাঃ) মসজিদের দিকে গেলেন। তখন আবু মূসা (রাঃ) কুরআন মাজীদ পড়ছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ এ কে? আমি বললাম, আমি বুরায়আবু দাউদ, আমি আপনার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করলাম। তিনি বলেনঃ একে দাউদ (আঃ)-এর পরিবারের সুরসমূহের একটি সুর দান করা হয়েছে। (মুসলিম)
অনুচ্ছেদঃ কারো অমুসলিমদের শিশু সন্তানকে “হে বৎস” বলে সম্বোধন করা।
সাব ইবনে হাকীম (র) তিনি বলেন, আমি উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-এর নিকট এলে তিনি বলতে লাগলেন, হে ভ্রাতুষ্পুত্র, হে ভ্রাতুষ্পুত্র! অতঃপর তিনি আমার বংশপরিচয় জিজ্ঞেস করলে আমি তাকে আমার বংশপরিচয় দিলাম। তাতে তিনি বুঝতে পারলেন যে, আমার পিতা ইসলামী যুগ পাননি। তিনি আমাকে ‘হে বৎস’ ‘হে বৎস’ বলে সম্বোধন করতে লাগলেন। (মুসান্নাফ ইবনে শায়বাহ, তারীখুল কাবীর) আনাস (রাঃ) আমি নবী (সাঃ)-এর খাদেম ছিলাম। আমি অনুমতি না নিয়েই ঘরে প্রবেশ করতাম। এক দিন আমি এলে তিনি বলেনঃ বৎস! থেমে যাও। তোমার অনুপস্থিতিতে একটি ব্যাপার ঘটেছে। এখন থেকে বিনা অনুমতিতে ঘরে প্রবেশ করো না। (তিরমিযী, তাহাবী) আবু সাসাআ (রাঃ) আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) তাকে ‘হে বৎস’ বলে সম্বোধন করেছেন। -(বুখারী, নাসাঈ, ইবনে খুজাইমাহ)
অনুচ্ছেদঃ কেউ যেন না বলে, আমার আত্মা নাপাক হয়ে গেছে।
আয়েশা (রাঃ) নবী (সাঃ) বলেনঃ অবশ্যই তোমাদের কেউ যেন না বলে, আমার আত্মা নাপাক হয়ে গেছে। বরং সে বলতে পারে, আমার আত্মা নাফরমানি করেছে। -(বুখারী, মুসলিম) সাহল (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ তোমাদের কেউ যেন এরূপ না বলে, আমার মন-মানসিকতা কলুষিত হয়ে গেছে। (বলতেই যদি হয় তাহলে) যেন বলে, আমার মন-মানসিকতা খারাপ হয়ে গেছে। (বুখারী, মুসলিম, দারিমী)
অনুচ্ছেদঃ আবুল হাকাম উপনাম।
হানী ইবনে ইয়াযীদ (রাঃ) তিনি তার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দলের সাথে নবী (সাঃ)-এর নিকট গেলেন। নবী (সাঃ) তাদের কাছে শুনলেন যে, তারা তাকে “আবুল হিকাম” ডাকনাম দিয়েছে। নবী (সাঃ) তাকে ডেকে এনে বলেনঃ আল্লাহই হলেন হিকাম (হুকুমের মালিক) এবং তিনিই কেবল হুকুম দিতে পারেন। অতএব তুমি নিজের জন্য আবুল হিকাম উপনাম রাখলে কী করে? তিনি বলেন, ব্যাপারটি তা নয়, বরং আমার সম্প্রদায়ের মধ্যে কোন ব্যাপারে মতানৈক্য হলে তারা আমার কাছে আসে এবং আমি তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেই। উভয় পক্ষই আমার মীমাংসা মেনে নেয়। তিনি বলেনঃ তা তো খুবই উত্তম। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করেনঃ তোমার কি কোন সন্তান আছে? আমি বললাম, শুরায়হ, আবদুল্লাহ ও মুসলিম নামে আমার তিন সন্তান আছে। তিনি বলেনঃ তাদের মধ্যে বয়জ্যেষ্ঠ কে? আমি বললাম, শুরায়হ। তিনি বলেনঃ তাহলে তুমি আবু শুরায়হ। অতঃপর তিনি তার জন্য এবং তার সন্তানদের জন্য দোয়া করলেন। নবী (সাঃ) শুনতে পেলেন যে, প্রতিনিধি দল তাদের একজনকে “আবদুল হাজার” (পাথরের দাস) নামে ডাকে। নবী (সাঃ) জিজ্ঞেস করেনঃ তোমার নাম কি? সে বললো, আবদুল হাজার। তিনি বলেনঃ নাসাঈ, তোমার নাম আবদুল্লাহ। শুরায়হ (রাঃ) বলেন, স্বদেশে ফেরার সময় হলে হানী (রাঃ) নবী (সাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে বলুন, কোন জিনিস আমার জন্য জান্নাত অবধারিত করবে। তিনি বলেনঃ তুমি সর্বদা উত্তম কথা বলবে এবং আহার্য দান করবে। -(আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে হিব্বান, হাকিম)
অনুচ্ছেদঃ নবী (সাঃ)-এর পছন্দনীয় নাম “হাসান”।
আবু হাদরাদ (রাঃ) নবী (সাঃ) বললেনঃ আমাদের এই উটগুলোকে কে চরাতে নিয়ে যাবে বা (চারণভূমিতে) পৌঁছিয়ে দিবে? এক ব্যক্তি বললো, আমি। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তোমার নাম কি? সে বললো, অমুক। তিনি বলেনঃ তুমি বসো। অতঃপর আর এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়ালে তিনি বলেনঃ তোমার নাম কি? সে বললো, অমুক। তিনি বলেনঃ তুমিও বসো। অতঃপর আরেক ব্যক্তি দাঁড়ালে তিনি বলেনঃ তোমার নাম কি? সে বললো, নাজিয়া (মুক্তিপ্রাপ্ত)। তিনি বলেনঃ তুমিই তার যোগ্য। তুমি তা (চরাতে) নিয়ে যাও। (হাকিম)
অনুচ্ছেদঃ তাড়াহুড়া করে হাঁটা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) নবী (সাঃ) দ্রুত গতিতে এসে উপস্থিত হলেন। আমরা তখন বসা অবস্থায় ছিলাম। আমাদের দিকে তাঁর দ্রুত আসায় আমরা শংকিত হলাম। তিনি আমাদের কাছে পৌঁছে সালাম দিলেন, অতঃপর বলেনঃ আমি তোমাদেরকে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে অবহিত করার জন্য তোমাদের দিকে দ্রুতপদে এসেছি, কিন্তু তোমাদের কাছে পৌঁছতে পৌঁছতে তা ভুলে গিয়েছি। অতএব তোমরা তা রমযানের শেষ দশকে খোঁজ করো। (আহমাদ)