1. জুজউল রাফউল ইয়াদাইন
হাদিস নং ১-১০০
আলী বিন আবু তালিব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাতের (তাকবীরে তাহরিমার) জন্য তাকবীর বলতেন, তখন কাঁধ বরাবর দু'হাত উঠাতেন, যখন তিনি রুকূ’ করার ইচ্ছা পোষণ করতেন। আর যখন রুকূ’ থেকে তাঁর মাথা উঠাতেন তখনও (ঐরুপ করতেন)। আর যখন দু’রাকাআত শেষে (তৃতীয় রাকাআতের জন্য) উঠতেন তখনও অনুরূপ করতেন।” এটি উত্তম (হাসান) সনদে বর্ণিত হয়েছে। সালেম বিন আব্দুল্লাহ তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে (সালাতে) দু'হাত উত্তোলন করতে দেখেছি। যখন তিনি (তাকবীরে তাহরিমার জন্য) তাকবীর বলতেন, যখন রুকূ’ করতেন ও যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন। কিন্তু তিনি দু' সাজদাহর মাঝে এমনটি করতেন না। আলী বিন আবদুল্লাহ- যিনি তৎকালীন সময়ে বড় বিদ্বান ছিলেন, তিনি বলেন, যুহরী সালেম হতে, তিনি তার পিতা হতে বর্ণনা করেছেন, রাফ্উল ইয়াদায়ন প্রতিটি মুসলিমদের জন্য অপরিহার্য বিষয়। মুহাম্মাদ বিন আমর তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দশজন সাহাবীসহ আবু হামিদের নিকট ছিলাম, আবু কাতাদা তাঁদেরই একজন, তিনি বলেন, আমি তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূলের সালাত বিষয়ে বেশি জানি। তারা বললেন, কী রকম? আল্লাহর কসম! তুমিতো আমাদের চেয়ে বেশি সাহচর্য লাভ করনি। আর অনুসরণে আমাদের চেয়ে বেশি অগ্রগামীও ছিলে না। তিনি বললেন, কিন্তু আমি তাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতাম। তারা বলল, তার বর্ণনা দাও। তিনি বললেন, তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তাঁর দু'হাত উঠাতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন ও রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন, আর যখন তিনি দুরাকাআত শেষে (তৃতীয় রাকাআতের জন্য) দাঁড়াতেন তখনও অনুরূপ করতেন।” হাদীসটি সহীহ ও মারফু'। আব্বাস বিন সাহল তিনি বলেন, আবু হুমাইদ, আবু উসাইদ ও মুহাম্মদ বিন মাসলমাহ (রাবীত্রয়) একত্রিত হয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের বর্ণনা দিলেন। অতঃপর আবু হুমাইদ বললেন, আমি তোমাদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত সম্পর্কে বেশি জানি। তিনি (সালাতের জন্য) দাঁড়িয়ে আল্লাহু আকবার বলতেন, তখন তাঁর দু' হাত উঠাতেন, এরপর যখন তিনি রুকূ’’র জন্য আল্লাহু আকবার বলতেন তখন দু'হাত উঠাতেন, এরপর তিনি (যখন) রুকূ’ করতেন, তখন তার দু'হাত তাঁর দু'হাঁটুর উপর স্থাপন করতেন” এ হাদীসটি মারফু' ও হাসান। আল আব্বাস আস সাঈদী আল আব্বাস আস সাঈদী থেকে আমাদেরকে খবর দিচ্ছেন, তিনি বলেন, আমি আবু কাতাদা, আবু উসাইদ ও আবু হুমাইদ এর সঙ্গে বাজারে অবস্থান করছিলাম, এমতাবস্থায় তারা সকলেই বলল, “আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত সম্পর্কে তোমাদের চেয়ে বেশি জানি। তখন তাদের একজন (আবু উসাইদকে) বললেন, তুমি সালাত আদায় কর। তখন তিনি তাকবীর দিয়ে কিরাআত পাঠ করলেন, এরপর পুনরায় তাকবীর দিয়ে দু'হাত উঠালেন, এরপর তারা (তিনজন) বললেন, তুমি সঠিকভাবেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত আদায় করেছ।” এ বর্ণনাটি হাসান। মালিক ইবনুল হুওয়াইরিস তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকবীর (তাহরীমা) দিয়ে দু'হাত উঠাতেন, আর যখন রুকূ’ করতেন ও রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন।” হাদীসটি মারফু' ও এর সনদ সহীহ। আনাস বিন মালিক (রাঃ) তিনি (আনাস (রাঃ)) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন রুকূ’’ করতেন তখন তিনি তার দু’হাত উঠাতেন। হাদীসটি মারফু’। আলী বিন আবূ তালিব (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ফরয সালাত (আদায়ের) উদ্দেশ্যে দাঁড়াতেন, তখন আল্লহু আকবার বলতেন ও তাঁর দু’হাত দু’কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এরপর যখন তিনি রুকূ’’ করার ইচ্ছাপোষণ করতেন, তখনও তিনি তা করতেন, এরপর যখন তিনি রুকূ’’ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপ করতেন, তিনি তাঁর সালাতে বসাবস্থায় (হাত) উঠাতেন না, আর যখন দু’সাজদা (রাকাআত) শেষ করে দাঁড়াতেন তখনও ঐ ভাবে দু’হাত উঠাতেন আর তাকবীর দিতেন। হাদীসটি মারফূ’ ও হাসান। আবূ নুআঈম আল ফযল বিন দুকাইন আবূ নুআঈম আল ফযল বিন দুকাইন আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, কায়স বিন সুলাইম আল আম্বারী আমাদেরকে খবর দিয়েছেন, তিনি বলেন, আমি আলকামা বিন ওয়ায়িল বিন হুজুরকে বর্ণনা করতে শুনেছি, আমার পিতা (ওয়ায়িল বিন হুজুর) আমাকে বলেছেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছি, তিনি যখন সালাত আরম্ভ করতেন তখন তাকবীর দিতেন ও দু’হাত উঠাতেন। অতঃপর তিনি যখন রুকূ’ করার ইচ্ছাপোষণ করতেন ও রুকূ’র পরে ও দুহাত উঠাতেন। এর সনদ সহীহ। ইমাম নাসাঈ ও কায়স বিন সালীম থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আবদুল্লাহ বিন ইউসুফ আবদুল্লাহ বিন ইউসুফ আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি মালিক থেকে, তিনি ইবনু শিহাব থেকে, তিনি সালিম বিন আবদুল্লাহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা (আবদুল্লাহ বিন উমার) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাত আরম্ভ করতেন তাঁর দু’হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন, আর যখন রুকূ’’র জন্য তাকবীর বলতেন ও রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন ও অনুরূপ দু’হাত উঠাতেন। তিনি সাজদায় এরূপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করতেন না। হাদিসের মানঃ অন্যান্য সালিম আব্দুল্লাহ সালিম আব্দুল্লাহ, তাঁর পিতা (আবদুল্লাহ ইবনু উমার) যখন সিজদা থেকে মাথা উঠাতেন ও যখন (তাশাহুদের পরে) দাঁড়ানোর ইচ্ছা পোষণ করতেন, তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদীস টি মাওকূফ ও এর সনদ সহীহ। নাফে’ আবদুল্লাহ ইবনু উমার যখন সালাত শুরু করতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন, যখন রুকূ’’ করতেন, যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন, যখন দু’সাজদাহ (রাকআত) থেকে উঠে দাঁড়াতেন, তখন (তিনি) তাকবীর দিতেন ও রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদীসটি মওকূফ ও সহীহ। নাফে’ ইবনু উমার (রাঃ) যখন কোন (অজ্ঞ) ব্যাক্তিকে রুকূ’র সময় ও রুকূ’ থেকে উঠার পর রাফ্উল ইয়াদায়ন করতে না দেখতেন, তখন তার দিকে পাথর নিক্ষেপ করতেন। হাদিসটি মাওকূফ ও এর সনদ সহীহ। আত্বা তিনি বলেন আমি ইবনু আব্বাস, ইবনু যুবায়র, আবূ সাঈদ (আল খুদরী) ও জাবির (ইবনু আবদুল্লাহ) [রাঃ]-কে দেখেছি, তাঁরা যখন সালাত শুরু করতেন ও রুকূ’’ করতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। এ হাদীসটি হাসান। আব্দুর রহমান আল আরাজ তিনি আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি (আবূ হুরাইরা) যখন (সালাত শুরুর) তাকবীর দিতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন, যখন রুকূ’’ করতেন ও যখন রুকূ’’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন ও রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। এটি সহীহ হাদীস। আসিম আল আহওয়াল আসিম আল আহওয়াল থেকে আমাদের হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি আনাস বিন মালিক (রাঃ)-কে দেখেছি, তিনি যখন সালাত শুরু করতেন, তখন আল্লাহু আকবার বলতেন ও রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন, আর প্রত্যেক রুকূ’তে (যাওয়ার সময়) ও রুকূ’’ থেকে মাথা উঠিয়েও রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদীসটি মাওকূফ ও এর সনদ সহীহ। আবূ হামযাহ আবূ হামযাহ থেকে আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি (আবদুল্লাহ) ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে দেখেছি, তিনি যখন (তাহরিমার) তাকবীর বলতেন, আর যখন রুকূ’ করতেন এবং যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদীসটি মাওকূফ ও এর সনদ সহীহ। আত্বা আত্বা থেকে আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছি, তিনি যখন (সালাত শুরুর) তাকবীর দিতেন ও রুকূ’ করতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদীসটি মাওকূফ ও এর সনদ সহীহ। আমর বিন মুররাহ আমর বিন মুররাহ থেকে আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি হাযারা মাউতু এলাকার একটি মাসজিদে প্রবেশ করে দেখলাম, সেখানে আলকামা বিন ওয়ায়িল তার পিতা থেকে হাদীস বর্ণনা করছেন, তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লা’হু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকূ’র পূর্বে ও পরে রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদীসটি মারফূ‘ ও সহীহ। খাত্তাব বিন উসমান ইসমাঈল তিনি আবদে রব্বিহী বিন সুলাইমান বিন উমাইর থেকে আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি উম্মুদ দারদা (রা:)-কে দেখেছি, তিনি সালাতে কাঁধ বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদীসটি মারফূ‘ ও হাসান। হাদীসটি ইমাম বুখারীর তারীখ আল কাবীরেও (৬ষ্ঠ খন্ড ৭৮ পৃষ্ঠায়) বর্ণিত হয়েছে। মুহাম্মদ বিন মুকাতিল আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক মুহাম্মদ বিন মুকাতিল আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক থেকে খবর দিয়েছেন, তিনি ইসমাঈল থেকে, তিনি আবদু রব্বিহী বিন সুলাইমান বিন উমাইর থেকে আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি উম্মুদ দারদা (রা:)-কে দেখেছি তিনি যখন সালাত আরম্ভ করতেন, যখন রুকূ’‘ করতেন, আর যখন সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলতেন তখন কাঁধ বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। আর তিনি বলতেন, রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ। ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণের কতিপয় স্ত্রী তাদের চেয়ে (শরীয়তের বিষয়ে) বেশি জানতেন। এমনকি তারা সালাতে রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদীসটি হাসান। ইসহাক বিন ইবরাহীম আল হানযালী মুহাম্মদ বিন ফুযাইল ইসহাক বিন ইবরাহীম আল হানযালী মুহাম্মদ বিন ফুযাইল থেকে। তিনি আসিম বিন কুলাইব থেকে, তিনি মাহারিব বিন দীনার থেকে আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি (আবদুল্লাহ) ইবনু উমার (রাঃ)- কে দেখেছি, তিনি রুকূ’তে (যাওয়ার পূর্বে) রাফ্উল ইয়াদায়ন করেছেন, আমি তাকে সে সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন দু’রাকাআত শেষে দাঁড়াতেন তখন তাকবীর দিতেন ও রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদীসটির সনদ সহীহ। মুসলিম বিন ইবরাহীম শু‘বাহ তিনি আসিম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়ায়িল বিন হুজুর আল হাযরামী (রাঃ) থেকে আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছেন, যখন (তাহরিমার) তাকবীর বলতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন, অতঃপর যখন রুকূ’ করার ইরাদা করতেন তখনও রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। ইমাম বুখারী (রহ) বলেন, উমার ইবনুল খাত্তাব, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবূ হুরাইরা, উবাইদুল্লাহ বিন উমাইর, তার পিতা, আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস ও আবূ মূসা (রাঃ) থেকে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণিত হয়েছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকূ’তে (যাওয়ার পূর্বে) ও রুকূ’ থেকে মাথা উঠিয়ে রাফ্উল ইয়াদায়ন করেছেন। ইমাম বুখারী বলেন, আমরা যা কিছু উল্লেখ করলাম তা একজন অতি অল্প জানা লোকের জন্যও যথেষ্ট, ইনশা আল্লাহু তা‘আলা। এর সনদ সহীহ। ইবনুল খুযাইমাহ (৬৯৮, ৬৯৭) একে সহীহ’র মধ্যে গণ্য করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল আবদুল্লাহ তিনি ইবনু জুরাইজ থেকে পাঠ করা শুনেছেন, তিনি বলেন, আল হাসান বিন মুসলিম আমাকে এ মর্মে খবর দিয়েছেন যে, তিনি ত্বাউস থেকে সালাতে রাফ্উল ইয়াদায়ন সম্পর্কিত হাদীস শুনেছেন, তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনু উমার, আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস ও আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (তার তিনজনই) রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। ত্বাউস বলেন, সালাত শুরুর প্রাক্কালে যে প্রথম তাকবীর দেয়া হয় সেখানে বাকী তাকবীরগুলোর চেয়ে কিছুটা বেশি হাত উঁচু করতে হয়। (ইবনু জুরাইজ বলেন,) আমি আত্বা (বিন আবূ রিবাহ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার নিকট কি এমন (কথা) পৌঁছেছে, প্রথম তাকবীরে অন্য তাকবীরগুলোর চেয়ে হাত বেশি উঠাতে হবে? তিনি বললেন, না। এর সনদ সহীহ। বর্ণনাকারী এমনকি মুসাদ্দাদ আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করে বলেছেন, ইয়াযীদ বিন যুরাই‘ আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি সাঈদ থেকে, তিনি ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আল হাসান থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহচরগণের হাতগুলো দৃশ্যত পাখা সদৃশ, যখন রুকূ’তে যেতেন, আর যখন রুকূ’ থেকে তাদের মাথাগুলো উঠাতেন তখন তারা সেগুলো (হাতগুলো) উঠাতেন। সহীহ। মূল কপিতে (মাখতূতাহ) শু‘বার উল্লেখ রয়েছে, যেখানে অন্য কপিতে সাঈদ বিন আরুবাহর উল্লেখ রয়েছে, যা ঠিক নয়। এ বর্ণনাটি শাহেদ থাকার কারণে সহীহ। ক্বাতাদাহ থেকে শু‘বা কর্তৃক বর্ণনাটিও বিশুদ্ধ। তাই ক্বাতাদাহর তাদলীসের বিষয়টি প্রত্যাখ্যাত। আবূ দাঊদের বর্ণনায় (১ম খন্ড ১১০ পৃষ্ঠা) صدرهمإلى(প্রথম তাকবীরে বক্ষ পর্যন্ত রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন) আছে, যা শারীক আল কূফীর তাদলীসের কারণে দুর্বল। মূসা বন ইসমাঈল আবূ হেলাল তিনি হুমাইদ বিন হিলাল থেকে আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহচরবৃন্দ যখন সালাত আদায় করতেন তাদের হাতগুলো পাখা সদৃশ কান পর্যন্ত উঠতো। [ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন] আল হাসান (আল বাসরী) ও হুমাইদ বন হিলাল কোন একজন সাহাবীকেও বাদ দেননি। (অর্থাৎ তাবেয়ীগণের কথা অনুযায়ী বলা যায়, সকল সাহাবী কোন প্রকার ব্যতিক্রম ছাড়াই রাফ্উল ইয়াদায়ন করেছেন) -এ বর্ণনাটি হাসান। আবূ হিলাল মুহাম্মদ বিন সালীম আল বাসরী দুর্বল রাবী (দেখুন তুহফা আল আকয়িয়্যাহ ৯৮, ১৭ পৃষ্ঠা) কিন্তু এর পূর্বে বর্ণিত শাহেদ হাদীসটির কারণে এটি হাসান বলে পরিগণিত হয়েছে। আবূল ইয়ামান আবূল ইয়ামান আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি শু’আইব থেকে, তিনি যুহরী থেকে, তিনি সালিম বিন আবদুল্লাহ থেকে, আবদুল্লাহ ইবনু উমার বলেন, আমি নাবী (সাঃ)-কে দেখেছি, যখন তিনি সালাতে (শুরুর) তাকবীর বলতেন, তখন তাকবীর বলার সঙ্গে দু’হাত তাঁর দু’কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন। আর যখন তিনি রুকূ’র জন্য তাকবীর বলতেন, তখন তাকবীর বলার সঙ্গে দু’হাত তাঁর দু’কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন। আর যখন তিনি রুকূ’র জন্য তাকবীর বলতেন, তখনও অনুরূপ করতেন, যখন তিনি সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলতেন, তখনও ঐরূপ করতেন, আর বলতেন, রাব্বানা লাকাল হামদ। আর তিনি যখন সাজদাহ করতেন, তখন ঐরূপ করতেন না। আর যখন তিনি সাজদাহ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও ঐরূপ করতেন না। হাদীসটি সহীহ। বর্ণনাটি সহীহ বুখারীতেও (৭৩৮) উল্লেখ আছে। সালীম থেকে যুহরীর শ্রবণের বাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। (দেখন অত্র পুস্তকের ৩৮ নং হাদীস) ইয়াহইয়া বিন সুলাইমান ইয়াহইয়া বিন সুলাইমান আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি ইবনু ওয়াহব থেকে, তিনি ইউনুস থেকে, তিনি ইবনু শিহাব থেকে, তিনি সালিম বিন আবদুল্লাহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা (আবদুল্লাহ বিন উমার) থেকে, তিনি (উম্মুল মু’মিনীন) হাফসা থেকে বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, অবশ্যই আবদুল্লাহ ইবনু উমার সৎ ব্যক্তি। হাদীসটি সহীহ। ইমাম বুখারী হাদীসটিকে সহীহুল বুখারী (৩৭৪১, ৩৭৪০) এ বর্ণনা করেছেন। আলী বিন আবদুল্লাহ আলী বিন আবদুল্লাহ আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি সুফইয়ান থেকে, তিনি বলেন, আমর (বিন দীনার) বলেছেন, ইবনু উমার বলেন, অবশ্যই আমার পিতা যখন ইসলাম গ্রহণ করলেন, সে সময়কার কথা বলব, (কাফিররা) বলল, উমার নাস্তিক (ধর্মত্যাগী) হয়ে গেছে। উমার নাস্তিক (ধর্মত্যাগী) হয়ে গেছে। তখন আল আসী বিন ওয়ায়িল এসে বলল, উমার নাস্তিক (ধর্মত্যাগী) হয়ে গেছে তো কী হয়েছে? আমি তার প্রতিবেশী (তার সাহায্যকারী)। তখন তারা তাকে [উমার (রাঃ)] ছেড়ে দিল। ইমাম বুখারী বলেন, সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব বলেছেন, আামি যদি কারো ব্যাপারে জান্নাতী হওয়ার সাক্ষ্য দিতাম, তাহলে অবশ্যই ইবনু উমারের জন্যই সাক্ষ্য দিতাম। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ বলেন, নাবী (সাঃ)-এর তরিকা আঁকড়ে ধরা ও পুঙ্খাণুপুঙ্খভাবে তাঁর অনুসরণকারী ইবনু উমারের চেয়ে বেশি কেউ ছিল না। ইমাম বুখারী বলেন, কতিপয় অজ্ঞ লোক ওয়ায়িল বিন হুজর সম্পর্কে সমালোচনা করেছেন (যে সমালোচনা বাতিল)। সন্দেহাতীতভাবে ওয়ায়িল বিন হুজর ছিলেন ইয়ামানের রাজপুত্র। তিনি যখন নাবী (সাঃ)-এর নিকট আগমন করেন তখন নাবী (সাঃ) তাকে সম্মানিত করেন এবং তাকে একখণ্ড জমি বরাদ্দ দেন। আর তার সঙ্গে মুআবিয়া বিন আবূ সুফইয়ানকে প্রেরণ করেন। ইমাম বুখারী এ হাদীসটিকে একই সনদে স্বীয় সহীহুল বুখারীর (৩৮৬৫) মধ্যে উল্লেখ করেছেন। হাফস বিন উমার হাফস বিন উমার আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি জামে’ ইবনু মাত্বার থেকে, তিনি আলকামা বিন ওয়ায়িল থেকে, তিনি তাঁর পিতা (ওয়ায়িল বিন হুজর) থেকে বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয় নাবী (সাঃ) তাঁকে (ওয়ায়িল বিন হুজরকে) হাযরামাওত এলাকায় এক টুকরা জমি বরাদ্দ দিয়েছিলেন। এর সনদ সহীহ। ইমাম তিরমিযী (১৩৮১) একে হাসান বলেছেন। আবদুল্লাহ বিন সালিহ আবদুল্লাহ বিন সালিহ আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি আল লাইস থেকে, তিনি ইউনুস (বিন ইয়াযীদ আল আইলী) থেকে, তিনি ইবনু শিহাব (আর যুহরী) থেকে, তিনি সালিম আবদুল্লাহ থেকে, নিশ্চয় আবদুল্লাহ ইবনু উমার বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে দেখেছি, যখন তিনি সালাতের জন্য দাঁড়াতেন, তখন কাঁধ বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন, অতঃপর তাকবীর বলতেন। যখন তিনি রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপ (কাঁধ বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন) করতেন। অতঃপর বলতেন, সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ। আর তিনি যখন সিজদা থেকে মাথা উঠাতেন তখন তিনি এরূপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করতেন না। হাদীসটি সহীহ। জমহুর মুহাদ্দিসগণের নিকট ইউনুস বিন ইয়াযীদ আল আইলী বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী এবং তার হাদীস সহীহ। তার ব্যাপারে সমালোচনা অগ্রহণযোগ্য। (তাহযীবুত তাহযীব প্রমুখ) আবূ আন-নু’মান (মুহাম্মাদ বিন ফযল আরিম) আবূ আন-নু’মান (মুহাম্মাদ বিন ফযল আরিম) আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি আবদুল ওয়াহিদ বিন যিয়াদ আশ শাইবানী থেকে, তিনি মুহারিব বিন দিসার থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ বিন উমারকে দেখেছি, তিনি যখন সালাত আরম্ভ করতেন, তখন তাকবীর দিতেন ও রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। যখন তিনি রূকূ করার মনন্থ করতেন তখনও রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। যখন তিনি রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও (অনুরূপ রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন)। এর সনদ সহীহ। আল আইয়াম ইবনুল ওয়ালিদ আল আইয়াম ইবনুল ওয়ালিদ আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি আবদুল আ’লা থেকে, তিনি উবাইদুল্লাহ থেকে, তিনি নাফি’ থেকে, তিনি ইবনু উমার থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি তাকবীর (তাহরীমা) বলে রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। আর যখন সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন। আর ইবনু উমার রাফ্উল ইয়াদায়ন করে বলেন, নাবী (সাঃ)-ও অনুরূপ করতেন। এ হাদীসটি সহীহ। ইবরাহীম ইবনুল মুনযির ইবরাহীম ইবনুল মুনযির আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি মা’মার থেকে, তিনি ইবরাহীম বিন ত্বহমান থেকে, তিনি আবুয যুবায়র থেকে বর্ণনা করে বলেন, আমি ইবনু উমার (রাঃ)-কে দেখেছি। তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন তিনি কান বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। যখন তিনি রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। আর যখন তিনি (দু’রাকআত শেষে দাঁড়াতেন তখনও অনুরূপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করতেন। হাদীসটি সনদ হাসান। মাসায়িলে আবদুল্লাহ বিন আহমাদ (১/২৪৪, ২৪৩) ও আত তাহমীদ (৯/১২৭) গ্রন্থে এর শাহেদ হাদীস রয়েছে। আবদুল্লাহ বিন সালিহ আবদুল্লাহ বিন সালিহ আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি আল লাইস থেকে, তিনি নাফি’ থেকে বর্ণনা করেছেন। (তিনি বলেন, আবদুল্লাহ) ইবনু উমার যখন সালাতের জন্য উদ্যত হতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন, আর যখন রুকূ’ থেকে মাথা উত্তোলন করতেন, আর যখন দুই সিজদাহ (রাকআত) থেকে উঠে দাঁড়াতেন তখনও তাকবীর বলে রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। সহীহ। ইমাম বুখারীর মত অভিজ্ঞ মুহাদ্দিসগণ যখন আবদুল্লাহ বিন সালিহ থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন তখন তার হাদীস সহীহ। (তাহযীবুত তাহযীব, হাদীউস সারী মুকাদ্দামা ফাতহুল বারী, প্রমুখ) সুতরাং “কাসীরুল গালাত” কর্তৃক এ বর্ণনার দোষ-ত্রুটি নির্ণয়টি বাতিল। এ হাদীসটি বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে। মূসা বিন ইসমাঈল মূসা বিন ইসমাঈল আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি হাম্মাদ বিন সালামাহ থেকে, তিনি আইয়ূব থেকে, তিনি নাফি’ থেকে, তিনি ইবনু উমার থেকে বর্ণনা করেছেন। নাবী (সাঃ) যখন (তাহরিমার) তাকবীর বলতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন তখন, যখন রুকূ’ থেকে তাঁর মাথা উঠাতেন (তখনও রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন)। হাদীসটি সহীহ। মূসা বিন ইসমাঈল থেকেও ইমাম বাইহাকী তার মা’রিফাতুস সুনান (১/৪২) এটি বর্ণনা করেছেন। হাম্মাদ বিন সুলাইমানের স্মৃতিশক্তি খর্ব হওয়ার পূর্বে বর্ণিত হাদীস এটি। (আল কাওয়াকিবুন নিরাত, প্রমুখ) তাছাড়া এর বহু শাহেদ রয়েছে। ইমাম মুসলিমও এটি ক্বাতাদাহ থেকে বর্ণনা করেছেন। (৩৯১/৮৬৫)। মূসা বিন ইসমাঈল মূসা বিন ইসমাঈল আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি হাম্মাদ বিন সালামাহ থেকে, তিনি ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি নাসর বিন আসিম থেকে, তিনি মালিক ইবনুল হুওয়াইরিস থেকে বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি সহীহ। নিশ্চয়ই নাবী (সঃ) যখন সালাতে প্রবেশ করতেন তখন কানের ছিদ্র বরাবর দু’হাত উঠাতেন (রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন)। যখন রুকূ’তে যেতেন তখন, যখন রুকূ’ থেকে তাঁর মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করতেন। হাদীসটি সহীহ। মাহ্মুদ মাহ্মুদ আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি ইবনু উলাইয়াহ থেকে, তিনি খালিদ থেকে বর্ণনা করেছেন। আবূ কিলাবা যখন রুকূ’তে যেতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন, যখন রুকূ’ থেকে তাঁর মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করতেন। যখন তিনি সাজদায় যাওয়ার জন্য ঝুঁকতেন তাঁর দু’হাঁটু দিয়ে শুরু করতেন। যখন তিনি উঠে দাঁড়াতেন দু হাতের উপর ভর দিয়ে দাঁড়াতেন। তিনি হাদীসটি মালিক ইবনুল হুওয়াইরিস থেকে উল্লেখ করেছেন। হাদীসটি যঈফ। এখানে দুজন মাহমুদ নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। যদি মাহমুদ বিন গাইলান হয় তাহলে হাদীসটি সহীহ। আর যদি মাহমুদ বিন ইসহাক আল খাযাঈল হয়ে থাকে তাহলে হাদীসটি মুনকাতি। এরকম অনিশ্চয়তার কারণে হাদীসটিকে যঈফ হিসেবেই ধরে নেয়া হলো। আল্লাহই ভালো জানেন। আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আমাদেরকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি আবূ আমির থেকে, তিনি ইব্রাহীম বিন ত্বাহমান থেকে, তিনি আবু যুবায়র থেকে, তিনি ত্বাউস থেকে বর্ণনা করেছেন। ইবনু আব্বাস যখন সালাতের জন্য দাড়াতেন তখন তাঁর দু’কান বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। যখন তিনি রুকূ’ থেকে তাঁর মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাড়াতেন তখনও অনুরুপ করতেন। হাদিসটি সহীহ। আবূ যুবায়র তাদলিসের কারণে হাদিসটি দূর্বল হলেও এর অনেকগুলো শাহেদ হাদিস থাকার কারণে সহীহ বলে স্বীকৃত। মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি আবদুল্লাহ থেকে, তিনি ইসমাঈল থেকে, তিনি স্বালিহ বিন কাইসান থেকে, তিনি আবদুর রহমান আল আ’রাজ থেকে, তিনি আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন , রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন সালাত শুরু করতেন আর যখন রুকূ’তে যেতেন তখন তাঁর কাঁধ বরাবর (দু’হাত উঠিয়ে ) রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদিসটির মতন সহীহ। ইসমাইল বিন আইয়াশের সিরিয়ার বাইরের লোক থেকে বর্ণনার কারণে এর সনদ দুর্বল। (ইসমাইল বিন আইয়াশের সিরিয়ার নন এমন ব্যক্তি থেকে বর্ণনার কারণে দুর্বল মনে করা হয়েছে )। কিন্তু এর অনেক শাহেদ হাদীস আছে । (দেখুন সহীহ ইবনু খুযাইমাহ (১/৩৪৪) ভারতীয় ছাপার মধ্যে মুহাম্মাদ বিন মুকাতিল এর পর “আখবারানা আফিয়া” কথাটি ভুল। সঠিক শব্দ হল “আখবারানা আবদুল্লাহ” যা আসল যহিরিয়্যাহ কপিতে উল্লেখ আছে। ইসমাঈল ইসমাঈল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি মালিক থেকে, তিনি নাফি’ থেকে বর্ণনা করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমার যখন সালাত আরম্ভ করতেন আর যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন তাঁর কাধ বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদিসটি সহীহ। মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি আবদুল্লাহ (ইবনুল মুবারক) থেকে, তিনি (মুহাম্মাদ) বিন আজলান থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি আল নু’মান বিন আবূ আইয়াশকে বলতে শুনেছি, প্রতিটি জিনিসের একটি সৌন্দর্য রয়েছে, আর সালাতের সৌন্দর্য হচ্ছে তোমার রাফ্উল ইয়াদায়ন করা, যখন তুমি (সালাত শুরুর) তাকবীর দিবে, যখন রুকূ’তে যাবে, আর যখন রুকূ’ থেকে মাথা উত্তোলন করবে (তখন রাফ্উল ইয়াদয়ন করা)। এর সনদ সহীহ। মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি আবদুল্লাহ (ইবনুল মুবারক) থেকে, তিনি আল আওযাঈ থেকে, তিনি হাসান বিন আত্বিয়্যাহ থেকে, তিনি আল কাসিম বিন মুখাইমিরাহ থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাফ্উল ইয়াদায়ন হচ্ছে তাকবীরের জন্য। তিনি বলেন, আমি যখন ঝুকতাম তখন তাকে দেখেছি (অর্থাৎ যখন রুকূ’র জন্য ঝুকতাম তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতাম )। হাদিসটির সনদ সহীহ। মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি আবদুল্লাহ (ইবনুল মুবারক) থেকে, তিনি শারীক থেকে, তিনি আল লাইস থেকে, তিনি আত্বা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি জাবির বিন আবদুল্লাহ ও আবূ সাঈদ আল খুদরী ও ইবনু আব্বাস (রাঃ)–কে দেখেছি, তারা যখন সালাত আরম্ভ করতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন তখন, যখন রুকূ’’ থেকে তাঁদের মাথা উঠাতেন তখনও (রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন)। হাদিসটি হাসান। মূল জহিরিয়া নুসখার মধ্যে হাদ্দাসানা মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল লেখা আছে যেখানে ভারতীয় ছাপায় শুধু হাদ্দাসানা মাকাতিল লেখা রয়েছে। যা ভুল। মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল আমাদেরকে খবর দিয়েছেন। তিনি আবদুল্লাহ (ইবনুল মুবারক) থেকে, তিনি ইকরামাহ বিন আম্মার থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি সালিম বিন আবদুল্লাহ, আল কাসিম বিন মুহাম্মাদ, আত্বা, ও মাকহূলকে দেখেছি, তারা সালাতে রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন ও যখন (রুকূ’ থেকে মাথা) উঠাতেন। এর সনদ হাসান। যদিও ইকরামাহ বিন আম্মার হাদিস শ্রবণের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন। তথাপি তিনি হাসানুল হাদিস। (যার বর্ণিত হাদিস হাসান) লাইস জারীর লাইস থেকে বর্ণনা করে বলেন, আত্বা ও মুজাহিদ উভয়ে সালাতে রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। নাফি’ ত্বাউসও অনুরুপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করতেন। হাদিসটি হাসান। এটি পূর্ণ সনদ সহকারে যদিও পাওয়া যায়নি, তথাপি আত্বা, মুজাহিদ, নাফি’ ও ত্বাউস কর্তৃক রাফ্উল ইয়াদায়নের হাদিস বিশুদ্ধ সনদে প্রমাণিত। লাইস তিনি উমার, সাইদ বিন যুবায়র ও ত্বাউস সূত্রে বর্ণনা করেন, তারা ও তাঁদের সঙ্গী সাথীরা যখন রুকূ’ করতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন। হাদিসটি হাসান। এটি মুত্তাসিল সনদে পাওয়া যায়নি। কিন্তু এর অনেক শাহেদ হাদিস থাকার কারণে হাসান। মূসা বিন ইসমাঈল মূসা বিন ইসমাঈল আমাদেরকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি আবদুল ওয়াহিদ বিন যিয়াদ, তিনি আসিম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি আনাস বিন মালিক (রাঃ)–কে দেখেছি, তিনি যখন সালাত আরম্ভ করতেন তখন তাকবীর বলতেন, অতঃপর রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন, যখনই রুকূ’তে যেতেন ও রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন (তখনও রাফ্উল ইয়াদায়ন করতেন)। হাদিসটির সনদ সহীহ।