25. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর রুটির বিবরণ

【1】

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবারবর্গ কখনো একাধারে ২দিন পেট ভরে যবের রুটি আহার করেননি

আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ওফাত পর্যন্ত মুহাম্মাদ (সঃ) এর পরিবারবর্গ একাধারে ২দিন পেট ভরে যবের রুটি আহার করেননি। [১০৯] ব্যাখ্যাঃ বদান্যতা ও দানশীলতায় রাসূলুল্লাহ (সঃ) ছিলেন অতুলনীয়। স্বেচ্ছায় এ অবস্থাকে গ্রহণ করে নেয়ার কারণেই তাকে এরূপ সাদাসিধা জীবন-যাপন করতে হয়েছে। তিনি চাইলে সীমাহীন স্বাচ্ছন্দের সাথে জীবন কাটাতে পারতেন। কিন্তু তা তার পছন্দনীয় ছিল না।

【2】

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কখনো যবের রুটি উদ্ধৃত থাকত না

আবু উমামা বাহিলী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর গৃহে কখনো যবের রুটি উদ্ধৃত থাকত না। [১১০] ব্যাখ্যাঃ অন্যদের দান করার দরুন রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ঘরে অতিরিক্ত পাকানোর মতো খাদ্য থাকত না। তাছাড়া আহলুস সুফফা এবং অন্যান্য মেহমান তো থাকতই।

【3】

মাঝে মাঝে তিনি আহারের জন্য কিছুই পেতেন না

ইবনে আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ছত্র এবং তার পরিবারবর্গ একাধারে কয়েক রাত অনাহারে এমনভাবে কাটাতেন যে, তারা আহার্য বস্তুর কোন কিছুই পেতেন না। আর অধিকাংশ সময় তাদের খাবার হতো যবের রুটি (অর্থাৎ ধারাবাহিক যবের রুটিও পেতেন না)[১১১] সাহল ইবনে সা’দ (রাঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো রাসূলুল্লাহ (সঃ) কি ময়দার রুটি আহার করতেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর ওফাত পর্যন্ত ময়দা দেখেননি। তারপর তাঁকে বলা হলো, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সময় আপনাদের কি চালনি ছিল? তিনি বললেন, আমাদের কোন চালনি ছিল না। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, তবে আপনারা যবের রুটি ভাবে ব্যবহার করতেন? তিনি বললেন, আমরা তাতে ফু দিতাম, যাতে অখাদ্য কিছু থাকলে তা উড়ে যায়। এরপর আমরা খামির করে নিতাম। [১১২] ব্যাখ্যাঃ সাহল (রাঃ) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ময়দা দেখেননি এবং চালনি ব্যবহার করেননি। এ কথা তিনি তার জানা অনুসারে বলেছেন। কেননা তখন মক্কা ও মদিনায় চালনির প্রচলন ছিল না। অন্যথায় রাসূলুল্লাহ (সঃ) নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্বে সিরিয়া সফরের সময় ময়দা দেখে থাকতে পারেন। কেননা সিরিয়ায় চালনি দিয়ে ময়দা চালার রেওয়াজ আগে থেকেই ছিল।

【4】

তিনি আহারের জন্য টেবিল এবং ছোট প্লেট ব্যবহার করতেন

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সঃ) টেবিলে আহার করতেন না, ছোট প্লেটে খাবার নিতেন না এবং তার জন্য চাপাতিও তৈরি করা হতো না। (বর্ণনাকারী) ইউনুস বলেন, আমি কাতাদা (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করে বললাম, তাহলে কোন ধরণের প্লেটে তারা আহার করতেন? তিনি বলেন, দস্তরখানের উপর রেখে আহার করতেন। [১১৩] ব্যাখ্যাঃ ‘সুকুররুজাহ’ শব্দটি ফারসী শব্দ। ক্ষুধা এবং হজমকারক রুচিবর্ধক বিভিন্ন উপকরণ রাখার ছোট ছোট পাত্র। রাসূলুল্লাহ (সঃ) যেহেতু নিজে পেটভরে আহার করতেন না, কাজেই পরিতৃপ্ত ভোজনের উপকরণও ব্যবহার করতেন না। তাছাড়া এভাবে আহার করা যেহেতু বিলাসী, তাই রাসূলুল্লাহ (সঃ)তে এসব পদ্ধতি পরিহার করতেন। এটা অতিভোজনকারী লোভী লোকদের অভ্যাস। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ই মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর জীবদ্দশায় একাধারে ২দিন যবের রুটি আহার করেননি। [১১৪]