6. নেশাদার দ্রব্য
নেশাদার দ্রব্য
মদ এমন একটি বস্তু যা বিবেককে আচ্ছন্ন করে ফেলে। আর বিবেক আচ্ছন্ন হলে মানুষের হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। এজন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মদ হচ্ছে সকল অশ্লীল কর্মের মূল। উল্লেখ্য যে, মদ কোন নির্ধারিত বস্তুর নাম নয়। যেসব বস্তু বেশী পরিমাণ খেলে বিবেকের ক্ষতি হয় তার অল্প বস্তুও মদ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلاَمُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ- إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمْ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللهِ وَعَنْ الصَّلاَةِ فَهَلْ أَنْتُمْ مُنتَهُونَ- হে মুমিনগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ শয়তানের অপবিত্র কর্ম। অতএব তোমরা এগুলি থেকে বেঁচে থাক। যাতে তোমরা কল্যাণ প্রাপ্ত হও। শয়তান তোমাদের মাঝে মদ ও জুয়ার মাধ্যমে শত্র“তা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করতে চায় এবং আল্লাহর যিক্র ও ছালাত থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে চায়। তাহলে কি তোমরা বিরত থাকবে’? (মায়িদাহ ৯০-৯১) ওছমান (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা নেশাদার দ্রব্য থেকে বেঁচে থাক। কেননা নেশাদার দ্রব্য হচ্ছে অশ্লীল কর্মের মূল। যে ব্যক্তি নেশাদার দ্রব্য থেকে বেঁচে থাকে না তারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের নাফরমানী করার কারণে সে শাস্তির হক্বদার হয়’। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘যারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং তার সীমালঙ্ঘন করে, আল্লাহ তাকে এমন আগুনে প্রবেশ করাবেন যেখানে সে চিরকাল থাকবে। তার জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি’ (নিসা ১৪; নাসাঈ, হাদীছ ছহীহ)। ইবনু ওমর (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘সব নেশাদার দ্রব্য মদ আর সব ধরনের মদ হারাম। যে ব্যক্তি সর্বদা নেশাদার দ্রব্য পান করে তওবা বিহীন অবস্থায় মারা যাবে সে পরকালে সুস্বাদু পানীয় পান করতে পাবে না’ (মুসলিম ২/১৬৭ পৃঃ, ‘মদ্যপান’ অধ্যায়, ‘সকল নেশাদার দ্রব্য হারাম’ অনুচ্ছেদে, মিশকাত হা/৩৬৩৮; বাংলা মিশকাত ৭ম খণ্ড, হা/৩৪৭২ ‘হুদূদ’ অধ্যায়)। জাবির (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর ওয়াদা রয়েছে- নেশাদার দ্রব্য পানকারীদের আল্লাহ “ত্বিনাতে খাবাল” পান করাবেন। জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! ‘ত্বিনাতে খাবাল’ কি জিনিস? রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, জাহান্নামীদের শরীর হতে গলে পড়া রক্তপুজ মিশ্রিত অত্যন্ত গরম তরল পদার্থ’ (মুসলিম ২/১৬৭ পৃঃ)। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘সর্বদা নেশাদার দ্রব্য পান কারী মূর্তিপূজকের ন্যায় অপরাধী’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৩৭৫, হাদীছ ছহীহ)। আবু দারদা (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘সর্বদা নেশাদার দ্রব্য পানকারী জান্নাতে যাবে না’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৩৭৬, হাদীছ ছহীহ)। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, জুয়া ও লটারীতে অংশগ্রহণকারী, খোঁটাদানকারী এবং সর্বদা মদপানকারী জান্নাতে যাবে না’ (দারেমী, মিশকাত হা/৩৬৫৩; বাংলা মিশকাত ৭ম খণ্ড, হা/৩৪৮৬ ‘শাস্তি’ অধ্যায়)। আম্মার ইবনু ইয়াসার (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর মানুষ কখনো জান্নাতে যাবে না। (১) যে ব্যক্তি তার পরিবারে বেহায়াপনার সুযোগ দেয়। (২) পুরুষের বেশধারী নারী। (৩) নিয়মিত নেশাদার দ্রব্য পানকারী’ (তাবরাণী, তারগীব হা/৩৩৮১)। ইবনু ওমর (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর লোকের প্রতি আল্লাহ তা’আলা জান্নাত হারাম করেছেন। (১) সর্বদা মদপানকারী, (২) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান ও (৩) পরিবারে বেপর্দার সুযোগ দানকারী (দায়ূছ)’ (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩৬৫৫)। আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যাবে না। (১) সর্বদা নেশাদার দ্রব্য পানকারী। (২) আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্নকারী। (৩) যাদুকে বিশ্বাসকারী’ (আহমাদ, মিশকাত, হাদীছ ছহীহ হা/৩৬৫৬)। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নেশাদার দ্রব্য পান করবে আল্লাহ তার ৪০ দিন ছালাত কবুল করবেন না। যদি এ অবস্থায় মারা যায় তাহলে জাহান্নামে যাবে। যদি তওবাহ করে তাহলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন। আবার নেশাদার দ্রব্য পান করলে আল্লাহ তার ৪০ দিন ছালাত কবুল করবেন না। যদি এ অবস্থায় মারা যায় তাহলে জাহান্নামে যাবে। আর যদি তওবা করে তবে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন। আবার যদি নেশাদার দ্রব্য পান করে আল্লাহ তার ৪০ দিন ছালাত কবুল করবেন না। এ অবস্থায় মারা গেলে জাহান্নামে যাবে। তওবা করলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন। লোকটি যদি চতুর্থবার মদ পান করে আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামাতের দিন ‘রাদাগাতুল খাবাল’ পান করাবেন। ছাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! ‘রাদাগাতু খাবাল’ কী? রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘আগুনের তাপে জাহান্নামীদের শরীর হতে গলে পড়া রক্তপূজ মিশ্রিত গরম তরল পদার্থ’ (ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/ ২৭৩৮, হাদীছ ছহীহ)। মদের সাথে সম্পর্ক রাখে এমন দশ শ্রেণীর লোকের প্রতি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অভিশাপ করেছেন। (১) যে লোক মদের নির্যাস বের করে (২) প্রস্তুতকারক (৩) মদপানকারী (৪) যে পান করায় (৫) আমদানীকারক (৬) যার জন্য আমদানী করা হয় (৭) বিক্রেতা (৮) ক্রেতা (৯) সরবরাহকারী এবং (১০) এর লভ্যাংশ ভোগকারী’ (তিরমিযী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/২৭৭৬; বঙ্গানুবাদ ৬ষ্ঠ খণ্ড, হা/ ২৬৫৬)। আবু মালিক আশ’আরী (রাঃ) নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘আমার কিছু উম্মত মদ পান করবে এবং তার নাম রাখবে ভিন্ন। তাদের নেতাদেরকে গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্র দিয়ে সম্মান করা হবে। আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ভুমিকম্পের মাধ্যমে মাটিতেই ধসিয়ে দিবেন। আর তাদেরকে বানর ও শূকরে পরিণত করবেন’ (বুখারী, ইবনে মাজাহ হা/৪০২০)। এ হাদীছ দ্বারা বুঝা গেল মানুষ মদ্যপান করবে, তবে মদের নাম অন্য হবে। আর নেতা ও দায়িত্বশীলদের সর্বক্ষণের সঙ্গী হবে বাদ্যযন্ত্র ও গায়িকা। এদের চরিত্র হবে নোংরা, এদের প্রিয় কাজ হবে অশ্লীলতা। তাদের স্বভাব ও কৃষ্টি-কালচার হবে শূকর ও বানরের ন্যায়। এরা স্বপরিবারে পাশ্চাত্যদের স্বভাব চরিত্র গ্রহণ করবে। মু’আয ইবনে জাবাল (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘ইসলামের সূচনা বা রাজত্ব শুরু হয়েছে নবী ও দয়া দ্বারা। তারপর রাজত্ব আসবে খেলাফত ও রহমত দ্বারা, তারপর আসবে অত্যাচারী শাসকদের যুগ। তারপর আসবে কঠোরতা, উচ্ছৃংখলতা, বিপর্যয় সৃষ্টিকারীর যুগ। এসব অত্যাচারী শাসকেরা রেশমী কাপড় পরিধান করা, অবৈধভাবে নারীদের লজ্জাস্থান উপভোগ করা এবং মদ পান করাকে হালাল মনে করবে। এরপরও তাদের প্রচুর রুযী দেয়া হবে। দুনিয়াবী যে কোন কাজে তাদের সাহায্য করা হবে। অবশেষে এ পাপের মধ্যে লিপ্ত থেকে আল্লাহর সম্মুখে উপস্থিত হবে’ (বায়হাক্বী, বাংলা মিশকাত হা/৫১৪৩, হাদীছ ছহীহ)। আনাস (রাঃ) আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, ক্বিয়ামতের আলামত সমূহের মধ্যে রয়েছে (১) বিদ্যা উঠে যাবে (২) মূর্খতা বেড়ে যাবে (৩) ব্যাভিচার বেশি হবে (৪) মদপান বৃদ্ধি পাবে (৫) পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে (৬) নারীর সংখ্যা বেশি হয়ে যাবে। এমনকি একজন পুরুষ ৫০ জন মহিলার পরিচালক হবে। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, ‘বিদ্যা কমে যাবে এবং মূর্খতা প্রকাশ পাবে’ (বুখারী, মুসলিম মিশকাত হা/৫২০৩)। আনাস (রাঃ) নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যখন আমার উম্মত নেশাদার দ্রব্য পান করবে, গায়িকাদের নিয়ে নাচ-গানে মত্ত হবে এবং বাদ্যযন্ত্র নিয়ে ব্যস্ত হবে তখন অবশ্যই তিনটি ভয়াবহ বিপদ নেমে আসবে- (১) বিভিন্ন এলাকায় ভূমি ধসে যাবে (২) উপর থেকে অথবা কোন জাতির পক্ষ থেকে যুলুম অত্যাচার চাপিয়ে দেওয়া হবে (৩) অনেকের পাপের দরুণ আকার-আকৃতি বিকৃত করা হবে। আর এ গযবের মূল কারণ তিনটি। (ক) মদ পান করা (খ) নায়িকাদের নিয়ে নাচ-গানে মত্ত হওয়া (গ) বাদ্যযন্ত্রের প্রতি আগ্রহী হওয়া। ইবনে আব্বাস (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘অবশ্য অবশ্যই আমার উম্মতের কিছু সম্প্রদায় রাত্রী অতিবাহিত করবে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য-পানীয়তে ভোগ বিলাসী হয়ে এবং বিভিন্ন ধরনের বিনোদন ও আমোদ-প্রমোদে। এমতাবস্থায় তাদের সকাল হবে শূকর ও বানরের আকৃতিতে রূপান্তরিত হয়ে’ (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৬০৪, ২৬৯৯)। মু’আয ইবনে জাবাল (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে দশটি বিষয়ে উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, (১) আল্লাহর সাথে কাউকেও শরীক করবে না, যদিও তোমাকে নিহত করা হয় বা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। (২) তুমি তোমার পিতা-মাতার অবাধ্য হবে না, যদি তারা তোমাকে তোমার পরিবার-পরিজন ও তোমার মাল-মাত্তা ছেড়ে যেতে বলেন। (৩) ইচ্ছা করে কখনও ফরয ছালাত ত্যাগ করবে না। কেননা যে ইচ্ছা করে ফরয ছালাত ছেড়ে দিবে, তার (হেফাযতের) পক্ষে আল্লাহর প্রদত্ত দায়িত্ব উঠে যাবে। (এখন তাকে কাফেরের ন্যায় হত্যা করা যেতে পারে)। (৪) কখনও শরাব পান করবে না। কেননা তা সমস্ত অশ্লীলতার মূল। (৫) সাবধান! (সর্বদা) গোনাহ হতে বেঁচে থাকবে। কেননা গোনাহগার দ্বারা আল্লাহর ক্রোধ পৌঁছে থাকে! (৬) খবরদার! জিহাদ হতে পলায়ন করবে না। যদিও সকল লোক ধ্বংস হয়ে যায়। (৭) যখন লোকের মধ্যে মহামারী দেখা দিবে আর তুমি সেখানে থাকবে, তখন তথায় অবস্থান করবে (পলায়ন করবে না)। (৮) তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী তোমার পরিবারের জন্য ব্যয় করবে (কার্পণ্য করে তাদের খাওয়ার কষ্ট দিবে না)। (৯) তাদের (পরিবারের লোকদের) আদব-কায়দা শিক্ষা দানের ব্যাপারে শাসন হতে কখনও বিরত থাকবে না। (১০) এবং আল্লাহর সম্পর্কে তাদের ভয় প্রদর্শন করতে থাকবে’ (আহমাদ, মিশকাত হা/৬১)। আবু দারদা (রাঃ) আমার দোস্ত আমাকে অছিয়ত করেছেন, ‘নেশাদার দ্রব্য পান কর না। নিশ্চয়ই তা সব ধরনের অন্যায়ের চাবী’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৩৭১)। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘সব ধরনের নেশাদার দ্রব্য হারাম’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৩৮৮)। ইবনু ওমর (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘প্রত্যেক ঐ বস্তু যা বিবেকের ক্ষতি করে সেসবই মদ। আর সব ধরনের মদই হারাম’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৩৯০)। জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যে বস্তু বেশী পরিমাণ খেলে বিবেকের ক্ষতি হয়, তার কমও হারাম’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৩৯৩)। আবু হুরায়রা (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ নেশাদার দ্রব্য এবং তার মূল্য হারাম করেছেন। মৃতপ্রাণী ও তার মূল্য হারাম করেছেন। শূকর ও তার মূল্য হারাম করেছেন’ (আবুদাউদ হা/৩৪৮৫)। জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) তিনি মক্কা বিজয়ের বছর নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে মক্কায় বলতে শুনেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মদ, মৃতপ্রাণী, শূকর ও মূর্তির ক্রয়-বিক্রয় হারাম করেছন’ (আবুদাউদ হা/৩৪৮৬)। আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘নেশাদার দ্রব্য পানকারী জান্নাতে যাবে না। পিতামাতার অবাধ্য ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না। খোটা দানকারী জান্নাতে যাবে না’ (তারগীব হা/২৩৬৩)। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ‘যে ব্যক্তি মদ পান করবে আল্লাহ তার উপর ৪০ দিন সন্তুষ্ট হবেন না’ (আহমাদ হা/২৭৬৪৪; তারগীব হা/৩৪১০)। আনাস (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নেশাদার দ্রব্যপানকারীকে জুতা ও বেতের মাধ্যমে ৪০ বার মারতেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৬১৫; বাংলা মিশকাত ৭ম খণ্ড, হা/৩৪৫১ ‘শাস্তি’ অধ্যায়)। ওমর (রাঃ)-এর যুগে নেশাদার দ্রব্য পানকারীদের সংখ্যা বেশী হলে তিনি ৮০ বেত্রাঘাত করতেন (বুখারী, মিশকাত হা/৩৬১৬)।