10. দণ্ড বিধি
ব্যভিচারীর দণ্ড
ব্যভিচারীর দণ্ড প্রসঙ্গে যা বর্ণিত হয়েছে
যায়দ ইব্নু খালিদ জুহানী (রাঃ) এক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি আল্লাহর কসম খেয়ে বলছি যে, আপনি আল্লাহর কিতাব মুতাবেক আমাদের মাঝে ফয়সালা করে দিন’। তখন তার প্রতিপক্ষ যে এর থেকেও বেশি বাকপটু সে দাঁড়িয়ে বলল, ‘সে ঠিকই বলেছে, হ্যাঁ, আপনি আমাদের মাঝে কিতাবুল্লাহ্ মুতাবেক ফয়সালা করুন এবং আমাকে কথা বলার অনুমতি দিন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি বলো। তখন বেদুঈন বলল, ‘আমার ছেলে এ লোকের বাড়িতে মজুর ছিল। অতঃপর তার স্ত্রীর সঙ্গে সে যিনা করে’। লোকেরা আমাকে বললোঃ তোমার ছেলের উপর রজম (পাথরের আঘাতে হত্যা) ওয়াজিব হয়েছে। তখন আমার ছেলেকে একশ বকরী এবং একটি বাঁদীর বিনিময়ে এর নিকট হতে মুক্ত করে এনেছি। পরে আমি আলিমদের নিকট জিজ্ঞেস করলে তারা বললেন, ‘তোমার ছেলের উপর একশ’ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের নির্বাসন ওয়াজিব হয়েছে’। আর এ নারীকে রজম করতে হবে। সব শুনে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যে সত্ত্বার হাতে আমার প্রাণ! ‘আমি তোমাদের মাঝে কিতাবুল্লাহ মুতাবেকই ফয়সালা করব। বাঁদী এবং বকরী পাল তোমাকে ফেরত দেয়া হবে, আর তোমার ছেলেকে একশ’ বেত্রাঘাতসহ এক বছরের নির্বাসন দেয়া হবে’। আর অপরজনের ব্যাপারে বললেন, ‘হে উনাইস! তুমি আগামীকাল সকালে এ লোকের স্ত্রীর নিকট যাবে, সে যিনা করার স্বীকৃতি দিলে তাকে রজম করবে’। [১৩১২]
বেত্রাঘাত এবং পাথর নিক্ষেপ করা প্রসঙ্গে
উবাদাহ ইবনু সামিত (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার কাছ থেকে নাও আমার কাছে থেকে নাও, অবশ্য আল্লাহ ব্যভিচারিণীদের জন্য ব্যবস্থা করেছেন; তা হচ্ছে কুমার-কুমারী ব্যভিচার করলে তাদের শাস্তি হবে-একশত বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশ হতে বহিস্কার করা, আর বিবাহিত পুরুষ ও বিবাহিতা স্ত্রীলোক যিনা করলে তাদের প্রত্যেককে একশ করে দুর্রা মারা এ রজম (পাথর নিক্ষেপে হত্যা) করা হবে। [১৩১৩]
যিনার অপরাধের স্বীকারোক্তি এবং তা একাধিকবার স্বীকার করা শর্ত কিনা?
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, এক মুসলিম ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এল। তিনি তখন মাসজিদে ছিলেন। সে তাঁকে ডেকে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি যিনা করেছি। তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এভাবে কথাটি সে চারবার বলল। যখন সে নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য দিল তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মধ্যে কি পাগলামির দোষ আছে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি বিবাহিত? সে বলল, হ্যাঁ। তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা তাকে নিয়ে যাও আর পাথর মেরে হত্যা করো। [১৩১৪]
ব্যাভিচারের স্বীকারোক্তিকারীকে বার বার জিজ্ঞেস করা যাতে শাস্তি থেকে রক্ষা পায়
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, যখন মায়িয ইব্নু মালিক নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এল তখন তাকে বললেন সম্ভবত তুমি চুম্বন করেছ অথবা ইশারা করেছ অথবা (খারাপ দৃষ্টিতে) তাকিয়েছ? সে বলল, না, হে আল্লাহর রসূল! [১৩১৫]
যা দ্বারা ব্যভিচার সাব্যস্ত হয়
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) তিনি তাঁর ভাষণে বলেছিলেন: নিশ্চয় আল্লাহ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন। আর তাঁর উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। এবং আল্লাহর অবতীর্ণ বিষয়াদির একটি ছিল রজমের আয়াত। আমরা সে আয়াত পড়েছি, বুঝেছি, আয়ত্ত করেছি। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাথর মেরে হত্যা করেছেন। আমরাও তাঁর পরে পাথর মেরে হত্যা করেছি। আমি আশংকা করছি যে, দীর্ঘকাল অতিবাহিত হবার পর কোন লোক এ কথা বলে ফেলতে পারে যে, আল্লাহর কসম! আমরা আল্লাহর কিতাবে পাথর মেরে হত্যার আয়াত পাচ্ছি না। ফলে তারা এমন একটি ফর্য ত্যাগের কারণে পথভ্রষ্ট হবে, যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ঐ ব্যক্তির উপর পাথর মেরে হত্যা অবধারিত যে বিবাহিত হবার পর যিনা করবে, সে পুরুষ হোক বা নারী, যখন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে অথবা গর্ভ বা স্বীকারোক্তি পাওয়া যাবে। [১৩১৬]
দাসীর ব্যভিচার করার বিধান
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছি, তোমাদের কোন দাসী ব্যভিচার করলে এবং তার ব্যভিচার প্রমাণিত হলে তাকে ‘হদ’ স্বরূপ বেত্রাঘাত করবে এবং তাকে ভর্ৎসনা করবে না। এরপর যদি আবার ব্যভিচার করে তাকে ‘হদ’ হিসাবে বেত্রাঘাত করবে কিন্ত তাকে ভর্ৎসনা করবে না। তারপর সে যদি তৃতীয়বার ব্যভিচার করে এবং তার ব্যভিচার প্রমাণিত হয় তবে তাকে বিক্রি করে দেবে, যদিও তা চুলের রশির (তুচ্ছ মূল্যের) বিনিময়ে হয়। [১৩১৭]
মনিব স্বীয় দাসের উপর হাদ্দ কায়েম করবে
আলী (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের দাস-দাসীর উপরও দণ্ড জারী করবে। আবূ দাঊদ মুসলিমে হাদীসটি মাওকূফ হিসেবে বর্ণিত আছে। [১৩১৮]
সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত গর্ভবতীর ‘রজম’ (পাথর নিক্ষেপ করা) বিলম্বিত করা
ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) জুহাইনাহ গোত্রের কোন এক স্ত্রীলোক যিনার দ্বারা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থয় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে হাজির হয়ে বললঃ হে আল্লাহর নাবী! আমি হদ্দের উপযুক্ত হয়েছি, আপনি আমার উপর যিনার হদ্দ ক্বায়িম করুন (প্রস্তরাঘাতে হত্যা করে আমার প্রায়শ্চিত্ত বা তাওবার ব্যবস্থা করুন)। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার ওয়ালীকে (অভিভাবককে) ডাকালেন ও বললেন, তার সাথে ভাল ব্যবহার কর, সন্তান প্রসব করলে আমার নিকট তাকে নিয়ে এসো। অভিভাবক তাই করলো (সন্তান প্রসব করার পর তাকে নাবীর দরবারে নিয়ে এলো); রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার পরনের কাপড় শক্ত করে বেঁধে দিতে আদেশ করলেন, তারপর তার আদেশক্রমে তাকে রজম করা হলো। তারপর তার জানাযা নামায পড়ালেন। উমার (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর নাবী! সে ব্যভিচার করেছে তবু আপনি তার জানাযা নামায পড়লেন? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বলেনঃ সে তো এমন তাওবাহ করেছে যে, যদি তা মাদীনাসীর ৭০ জনের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হয় তবে তাদের জন্য তার এ তাওবাহ যথেষ্ট হয়ে যাবে। (হে উমার!) তুমি কি এর চেয়ে উৎকৃষ্ট কোন ব্যক্তি পেয়েছ? যে স্বয়ং আল্লাহর জন্য প্রাণ বিসর্জন করেছে। সহীহ মুসলিম [১৩১৯]
আহলে কিতাবের বিবাহিত ব্যক্তিকে রজম মারা
জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসলাম গোত্রের একজন পুরুষ, একজন ইয়াহুদী পুরুষ ও একজন রমণীকে রজম করেছিলেন। মুসলিম [১৩২০] ইবনু উমার (রাঃ) দুজন ইয়াহুদীকে রজম করা প্রসঙ্গে বুখারী ও মুসলিমের হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। বুখারী [১৩২১]
অসুস্থ ব্যক্তির উপর হাদ্দ জারী করা প্রসঙ্গে
সাঈদ ইবনু সা’দ ইবনু উবাদাহ (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমাদের মহল্লায় একটা জীর্ণ শীর্ণ ক্ষুদ্র লোক বাস করত। সে তাদের কোন এক দাসীর সাথে নোংরা কাজ (যিনা) করে ফেলে। ফলে সা’দ এ ঘটনা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে ব্যক্ত করেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ওর উপর হদ্দ জারি কর। লোকেরা বললঃ সে এর থেকে অনেক দুর্বল (একশ দুররা তো বরদাস্ত করার কোন শক্তি ওর নেই)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ একটা ডাল নাও, যাতে একশো শাখা থাকে, তারপর তাকে ঐটি দিয়ে একবার প্রহার কর ফলে লোকেরা তাই করলো। [১৩২২]
যে ব্যক্তি লুত সম্প্রদায়ের ন্যায় সমকামীতে লিপ্ত হবে অথবা কোন জন্তুর সাথে ব্যভিচার করবে তার বিধান
ইবনু আব্বাস (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যাকে তোমরা লুত (আঃ)’র কওমের ন্যায় পুরুষে পুরুষে ব্যভিচার করতে দেখবে তাদের উভয়কে হত্যা করবে, আর যাকে কোন জন্তুর সাথে ব্যভিচার করতে দেখবে তাকে এবং জন্তুটিকেও হত্যা করবে। [১৩২৩]
দেশ থেকে বিতাড়িত করার বিধান এখনও চালু রয়েছে, রহিত করা হয়নি
ইবনু উমার (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হদ্দের দুররা মেরেছেন (মারিয়েছেন) ও দেশ হতে বিতাড়িত করেছেন। আবু বাকর (রাঃ) তার খিলাফতকালে দুররা মেরেছেন ও দেশ হতে বিতাড়িত করেছেন। উমার (রাঃ) দুররা মেরেছেন ও দেশ হতে বিতাড়িত করেছেন। [১৩২৪]
পুরুষের মেয়েলী সাজে সজ্জিত হয়ে মেয়েদের কাছে প্রবেশ করার বিধান
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লা’নত করেছেন নারীরূপী পুরুষ ও পুরুষরূপী নারীদের উপর এবং বলেছেন, তাদেরকে বের করে দাও তোমাদের ঘর হতে এবং তিনি অমুক অমুককে বের করে দিয়েছেন। [১৩২৫]
সন্দেহের অবকাশ থাকলে হাদ্দকে প্রতিহত করা প্রসঙ্গে
আবু হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সম্ভব হলে হাদ্দকে এড়িয়ে চলো (হাদ্দ জারি করবে না বাধ্য হলে করবে।) [১৩২৬] আয়িশাহ (রাঃ) তিরমিযীতে এরূপ শব্দে আছে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সাধ্যানুযায়ী মুসলিমদের উপর হতে হাদ্দকে প্রতিহত কর। [১৩২৭] আলী (রাঃ) তিনি বলেনঃ সন্দেহের অবকাশ থাকলে দন্ডকে প্রতিহত করবে। [১৩২৮]
যে ব্যক্তি কোন পাপ কাজ করে ফেলে তাহলে তার তা গোপন করা উচিত
ইবনু উমার (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যেসব নোংরা বস্তু হতে দূরে থাকার জন্য আল্লাহর নির্দেশ দিয়েছেন তা হতে দূরে থাকবে। আল্লাহ না করুন যদি কেউ তাতে পড়েই যায়, তবে যেন সে তা গোপন করে নেয়- আল্লাহর পর্দা দিয়ে আর মহান আল্লাহর কাছে তাওবাহ করে। কেননা যে ব্যক্তি নিজের রহস্যাবৃত বস্তুকে প্রকাশ করে ফেলবে তার উপরে আমরা আল্লাহর কিতাবের ফায়সালা জারি করব। [১৩২৯]
যিনার অপবাদ প্রদানকারীর শাস্তি
যিনার অপবাদ প্রদানকারীর শাস্তির প্রমাণ
আয়িশাহ (রাঃ) তিনি বলেন, যখন কুরআনে আমার উপর আরোপিত অপবাদ হতে মুক্তি সংক্রান্ত আয়াত অবতীর্ণ হলো তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মিম্বারে উঠে দাঁড়ালেন ও এর উল্লেখ করলেন এবং ক্বুরআনের আয়াত পাঠ করে শুনালেন, তারপর মিম্বার হতে অবতরণ করলেন, এবং দুজন পুরুষ (হাসসান ইবনু সাবিত, মিসতাহ ইবনু আসাসা) ও একজন স্ত্রীলোক (হামনা বিনতু জাহাশ) কে তাঁর আদেশক্রমে হাদ্দ মারা হলো। [১৩৩০]
স্ত্রীর প্রতি স্বামীর ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ করার বিধান
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, ইসলামের সর্বপ্রথম সংঘটিত লি’আন’ এজন্য ছিল যে, হিলাল ইবনু উমাইয়াহ তার স্ত্রীর সাথে শারীক ইবনু সাহমার ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ করেছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে (হিলালকে) বলেন, প্রমাণ উপস্থিত কর অন্যথায় তোমার পিঠের উপর অপবাদের হাদ্দ মারা হবে। [১৩৩১] ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। [১৩৩২]
দাসের প্রতি ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ করার শাস্তি
আবদুল্লাহ ইবনু আমির ইবনু রাবীআহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি আবু বকর, উমার ও উসমান (রাঃ) খলীফাদের এবং তাদের পরবর্তী খলিফাগণের যুগও পেয়েছি- তারা কেউ দাসের উপর অপবাদের হাদ্দ ৪০ কোড়া ছাড়া (আর বেশি) মারতেন না।
দাসের প্রতি ব্যভিচারের অপবাদ আরোপকারীর বিধান
আবু হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে কেউ আপন ক্রীতদাসের প্রতি অপবাদ আরোপ করল – অথচ সে তা থেকে পবিত্র যা সে বলেছে- ক্বিয়ামাত দিবসে তাকে কশাঘাত করা হবে। তবে যদি এমনই হয় যেমন সে বলেছে (সে ক্ষেত্রে কশাঘাত করা হবে না)। [১৩৩৩]
চুরির দন্ড
চোরের হাত কর্তনের আবশ্যকতা এবং যে পরিমাণ চুরিতে হাত কাটা যাবে – এ প্রসঙ্গে
আয়িশাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন চোরের হাত চার ভাগের এক ভাগ দিনার বা তার অধিক পরিমাণ মাল চুরি ছাড়া কাটা যাবে না। বুখারীতে এভাবে আছে, এক চতুর্থাংশ দীনার বা তার অধিক চুরির কারণে হাত কাটা যাবে। আহমাদে আছে এক চতুর্থাংশ দীনারের চুরির কারণে হাত কাটো, এর কমে হাত কেটো না। [১৩৩৪] ইবনু উমার (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিন দিরহাম মূল্যের ঢালের চুরিতে হাত কেটেছিলেন। [১৩৩৫] আবু হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহর লা’নত বর্ষিত হয় চোরের উপর যে একটি ডিম চুরি করেছে। তাতে তার হাত কাটা গেছে বা একটি দড়ি চুরি করেছে যার ফলে তার হাত কাটা গেছে। [১৩৩৬]
‘আরিয়া’র (নিজের প্রয়োজন মেটাতে ফেরত দেয়ার শর্তে সাময়িকভাবে কোন কিছু গ্রহণ করা) অস্বীকারকারীর বিধান এবং শাস্তির ক্ষেত্রে সুপারিশ করা নিষেধ
আয়িশাহ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তুমি কি আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তি গুলোর একটি শাস্তির ব্যাপারে আমার কাছে সুপারিশ করছ? এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ালেন এবং খুতবা দিলেন। বললেন, হে লোকসকল! তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতরা এ জন্য ধ্বংস হয়েছিল যে, তারা তাদের মধ্যকার উচ্চ শ্রেণীর কোন লোক চুরি করলে তাকে ছেড়ে দিত। পক্ষান্তরে কোন দুর্বল লোক চুরি করলে তার উপর নির্ধারিত শাস্তি প্রয়োগ করত। অন্য সূত্রে আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। কোন এক নারী আসবাবপত্র চেয়ে নিয়ে তা (ফেরত না দিয়ে) অস্বীকার করে বসত, ফলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার হাত কাটার আদেশ দিয়েছিলেন। [১৩৩৭]
আমানতের খিয়ানতকারী, ছিনতাইকারী এবং লুন্ঠনকারীর হাত কাটা যাবে না
জাবির (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমানতের খিয়ানতকারী ও ছিনতাইকারী, লুন্ঠনকারীর হাত কাটা যাবে না। [১৩৩৮]
খেজুর গাছের মাথি এবং ফল চুরি করার বিধান
রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, ফলে ও খেজুরের গাছের মাথিতে হাত কাটার বিধান নেই। [১৩৩৯]
চুরির স্বীকারোক্তিকারীকে বার বার জিজ্ঞেস করা যাতে স্বীকার করা থেকে ফিরে আসে
আবু উমাইয়া মাখযুমী (রাঃ) তিনি বলেনঃ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে কোন এক চোরকে আনা হলো যে যথারীতি চুরির কথা স্বীকার করেছিল কিন্তু তার নিকটে কোন মাল পাওয়া যায়নি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তুমি চুরি করেছ বলে তো আমি মনে করছি না! সে বললঃ হাঁ (আমি চুরি করেছি)। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুই কি তিনবার তাকে এ কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলেছেন। অতঃপর তাঁর আদেশক্রমে তার হাত কাটা হলো এবং তাকে পুনরায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে আনা হলো। তাকে তিনি বললেনঃ আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও ও তাওবাহ কর। সে বললঃ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইছি ও তাওবাহ করছি। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকটির জন্য ৩ বার এই বলে প্রার্থনা জানালেন যে, হে আল্লাহ! তুমি তার তাওবাহ কবুল কর। [১৩৪০]
হাত কাটার পর রক্ত বন্ধ করা প্রসঙ্গে
ইমাম হাকিম আবু হুরাইরা (রাঃ) এ অর্থেই একটি হাদীস সংকলন করেছেন, তাতে রাবী বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তাকে নিয়ে গিয়ে তার হাত কেটে দাও ও তার রক্ত বন্ধ করে দাও। হাদীসটি বাযযারও সংকলন করেছেন ও তিনি হাদীসটির সানাদকে নির্দোষ বলেছেন। [১৩৪১]
চোরের উপর হাদ্দ জারী করা হলে তাকে মালের ক্ষতিপূরণের জন্য দায়ী করা যাবে না
আবদুর রহমান ইবনু আউফ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ চোরের উপর হাদ্দ জারি করা হলে তাকে মালের ক্ষতিপূরণের জন্য দায়ী করা যাবে না। [১৩৪২]
সংরক্ষিত মাল চুরির অপরাধ ব্যতীত হাত কাটা যাবে না
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনিল ‘আস (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে গাছে ঝুলন্ত খেজুর প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ যদি নিয়ে যাওয়ার জন্য আঁচলে না বেঁধে কেবল প্রয়োজন (ক্ষুধা) মেটানোর জন্য খায় তবে তাতে কোন দোষ নেই। আর যদি কিছু নিয়ে বেরিয়ে যায় তবে তাকে জরিমানা করতে হবে ও শাস্তি ও দিতে হবে। আর যদি খামারে রাখার পর সেখানে হতে তার কিছু উঠিয়ে নিয়ে যায় আর তার মূল্য একটি ঢাল পরিমাণ হয়ে যায় তবে তার হাত কাটা হবে। [১৩৪৩]
ইমামের কাছে আনার পূর্বেই চোরকে ক্ষমা করা জায়েয
সাফওয়ান ইবনু উমাইয়াহ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেছিলেন – যখন তিনি (সাফওয়ান) তার এক চাদর চুরির ব্যাপারে হাত কাটার আদেশ দেয়ার পর সুপারিশ করেছিলেন – কেন তুমি তাকে (চোরকে) আমার কাছে আনার আগেই এ সুপারিশ করনি। [১৩৪৪]
বারংবার চুরি করলে চোরের শাস্তি
জাবির (রাঃ) কোন এক চোরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আনা হলে তিনি তাকে হত্যা করতে বলেন। সাহাবীগণ বলেনঃ এ তো চুরি করেছে মাত্র। তিনি বলেনঃ তার হাত কেটে দাও ফলে তার হাত কাটা হল। তারপর দ্বিতীয় বার তাকে আনা হলে তিনি এবারেও বললেনঃ তাকে হত্যা করো। কিন্তু পূর্বের মতই ঘটল (হত্যা করা হল না) তারপর তৃতীয়বার তাকে আনা হলে ঐরূপ ঘটলো। তারপর চতুর্থবার তাকে আনা হলো এবং ঐরূপ ঘটল। তারপর তাকে পঞ্চমদফা আনা হলে তিনি তাকে হত্যা করার আদেশ দিলেন। [১৩৪৫] হারিস ইবনু হাত্বিব অনুরূপ হাদীস নাসায়ীতে সংকলিত হয়েছে। আর ইমাম শাফিঈ বলেনঃ ৫ম দফায় চোরকে হত্যা করার আদেশ মানসুখ বা বাতিল হয়ে গেছে। [১৩৪৬]
মদ্যপানকারীর শাস্তি এবং নিশাজাতীয় দ্রব্যের বর্ণনা
মদ পানকারীর শাস্তি
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) মদ পানকারী এ ব্যক্তিকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে নিয়ে আসা হলো। তিনি তাকে দু’খানা ছড়ি (এক যোগে ধরে তার) দ্বারা চল্লিশের মত কোড়া মারলেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ ১ম খলিফা আবু বাকর (রাঃ) এরূপ কোড়া মেরেছেন, উমার (রাঃ) তার খিলাফতকালে এ ব্যাপারে লোকদের সাথে পরামর্শ করলেন। আবদুর রহমান ইবনু আওফ বলেনঃ সর্বাপেক্ষা হালকা শাস্তি হচ্ছে আশি (কোড়া)। ‘উমার (রাঃ) ঐ (৮০-র) আদেশই জারি করলেন। [১৩৪৭]
সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তির হুকুম
আলী (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ৪০ কোড়া মেরেছেন, আবু বাকার (রাঃ) ও ৪০ কোড়া মেরেছেন, উমার (রাঃ) ৮০ কোড়া মেরেছেন, আলী (রাঃ) বলেনঃ এগুলো সবই সুন্নত (সঠিক)। কিন্তু ৮০ কোড়া মারা আমার নিকট অধিক প্রিয় (বুখারীর বর্ণনায় ৮০ কোড়া মারার কথা আছে)। এ হাদীসে আরো আছে কোন একজন লোক তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছিল, সে মদ বমি করেছিল। ফলে উসমান (রাঃ) বলেনঃ সে মদ খেয়েছে বলেই তো মদ বমি করেছে। [১৩৪৮]
বার বার মদ পানকারীর বিধান
মু’আবিয়াহ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদ পানকারী প্রসঙ্গে বলেনঃ যখন তা পান করবে তখন তাকে কোড়া মারো, তারপর পান করলে কোড়া মারো, তারপর ৩য় বার পান করলেও তাকে কোড়া মারো, তারপর ৪র্থ বার মদ পান করলে তার গর্দান কেটে দাও। তিরমিযীর বক্তব্যে হাদীসটি মানসুখ হয়েছে বলে ব্যক্ত হয়েছে, ইমাম যুহরী হতে আবু দাউদ এটা মানসুখ হওয়াকে স্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন। [১৩৪৯]
মুখমন্ডলে প্রহার করা নিষেধ
আবু হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন তোমরা হাদ্দ মারবে তখন মুখমন্ডলে মারবে না। [১৩৫০]
মাসজিদে হাদ্দ কায়েম করা নিষেধ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মাসজিদে কোন হাদ্দ কায়েম করা (জারি করা) যাবে না। [১৩৫১]
মদের প্রকৃত অর্থ
আনাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ আল্লাহ মদ হারাম করার আয়াত নাযিল করেছেন আর মাদীনায় (তখন) খেজুরের মদ ছাড়া অন্য কোন মদ পান করা হত না। [১৩৫২] উমার (রাঃ) তিনি বলেন, মদ হারাম করে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। আর তা তৈরী হয় পাঁচ রকম জিনিস থেকেঃ আঙ্গুর, খেজুর, মধু, গম ও যব। আর মদ হল, যা বুদ্ধিকে বিলোপ করে। (অর্থাৎ চেতনার মধ্যে ব্যতিক্রম ঘটায়, সঠিকভাবে কোন বস্তুকে উপলব্ধি করার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।) [১৩৫৩] ইবনু উমার (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ প্রত্যেক নেশা আনয়নকারী বস্তু খামর (মাদক) আর প্রত্যেক নেশা আনয়নকারী বস্তু হারাম। [১৩৫৪] জাবির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে বস্তুর অধিক পরিমাণ ব্যবহারে নেশা আনে ঐ বস্তুর অল্প ব্যবহারও হারাম। [১৩৫৫]
নাবীয রস খাওয়ার বৈধতা এবং এর শর্ত প্রসঙ্গ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য মশকে কিশমিশ ভিজিয়ে নাবিজ করা হতো আর তিনি তা সে দিন, পরের দিন এবং তার পরে ৩য় দিন সন্ধ্যা বেলাও পান করতেন। তারপরও কিছু থেকে গেলে তা ঢেলে ফেলে দিতেন। [১৩৫৬]
মদ দিয়ে চিকিৎসা করা হারাম
উম্মু সালামাহ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের রোগ নিরাময়ের ব্যবস্থা আল্লাহ তার হারামকৃত বস্তুর মধ্যে করেননি। [১৩৫৭ ] ওয়ায়িল আল হাযরামী তারিক ইবনু সুওয়াইদ (রাঃ) মদ দিয়ে ওষুধ তৈরী করা প্রসঙ্গে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করেছিলেন, উত্তরে তিনি বলেন, ওটাতো ওষুধ নয় বরং তা ব্যাধি। [১৩৫৮]
শাসন এবং শাসনকারীর বিধান
শাসন করা বৈধ এবং এর নির্ধারিত সীমা
আবূ বুর্দা (রাঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেন, আল্লাহ্র নির্দিষ্ট হদসমূহের কোন হদ ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে দশ বেত্রাঘাতের বেশি দণ্ড দেয়া যাবে না। [১৩৫৯]
আল্লাহর হাদ্দ ব্যতিরেকে সম্মানী ব্যক্তিদের ভুল ত্রুটি ক্ষমা করা
আয়িশা (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: সম্মানী ব্যক্তিদের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করবে। তবে আল্লাহর নির্ধারিত হদ্দ ব্যতীত। [১৩৬০]
তা’যীযের কারণে মৃত্যুবরণকারীদের বিধান
আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব (রাঃ) তিনি বলেন, আমি কাউকে শরীয়তের দণ্ড দেয়ার সময় সে তাতে মরে গেলে আমার দুঃখ হয় না। কিন্তু মদ পানকারী ছাড়া। সে মারা গেলে আমি জরিমানা দিয়ে থাকি। [১৩৬১]
সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হওয়া ব্যক্তি প্রসঙ্গে
সা‘ঈদ উবনু যাইদ (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হয় সে শহীদের দরজা লাভ করে। [১৩৬২]
ফিতনা দেখা দিলে মুসলমানদের করণীয়
আবদুল্লাহ ইবনু খাব্বাব (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, সমাজে ফিতনা দেখা দিলে, হে আল্লাহর বান্দা তুমি তাতে হত্যাকারী না হয়ে নিহত হও। [১৩৬৩] ইমাম আহমাদ অনুরূপ হাদীস খালিদ ইবনু উরফুতাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।