14. বিচার-ফায়সালা
বিচারকের প্রকার সমূহ
বুরাইদাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ক্বাযী (বিচারক) তিন প্রকারের, তার মধ্যে দু’ প্রকার ক্বাযী জাহান্নামী আর এক প্রকার জান্নাতী। যে ক্বাযী সত্য উপলব্ধি করবে এবং তদনুযায়ী ফায়সালাহ করবে সে জান্নাতবাসী হবে, আর এক ক্বাযী সে সত্য উপলব্ধি করবে কিন্তু তদনুযায়ী ফায়সালাহ করবে না, অন্যায়ের ভিত্তিতে ফায়সালাহ করবে সে জাহান্নামী হবে।আর এক ক্বাযী সত্য উপলব্ধি করতে পারবে না, অথচ অজ্ঞতার ভিত্তিতে লোকের জন্য ফায়সালাহ প্রদান করবে সে জাহান্নামী হবে।(তার নীতিভ্রষ্টতা তাকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে)। [১৪৯১]
বিচারকের পদের মহত্ত
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যাকে কায্বীর পদ দেয়া হলো তাকে যেন বিনা ছুরিতেই যবাহ করা হলো। [১৪৯২]
বিচারকের পদ প্রত্যাশা করার প্রতি সতর্কীকরণ
আবু হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা নিশ্চয়ই নেতৃত্বের লোভ কর, অথচ ক্বিয়ামাতের দিন তা লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কত উত্তম দুগ্ধদায়িনী ও কত মন্দ দুগ্ধ পানে বাধা দানকারিনী (এটা)(অর্থাৎ এর প্রথম দিক দুগ্ধদানের মত তৃপ্তিকর ও পরিণাম দুধ ছাড়ানোর মত যন্ত্রনাদায়ক)। [১৪৯৩]
চিন্তা-গবেষণা করে ফায়সালায় বিচারকের প্রতিদান রয়েছে তা সঠিক হোক বা ভুল হোক
আমর ইব্নু ‘আস (রাঃ) তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ কথা বলতে শুনেছেন, কোন বিচারক ইজ্তিহাদে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছলে তার জন্য রয়েছে দু’টি পুরস্কার। আর বিচারক ইজ্তিহাদে ভুল করলে তার জন্যও রয়েছে একটি পুরস্কার। [১৪৯৪]
রাগান্বিত অবস্থায় বিচারকার্য করা নিষেধ
আবূ বাক্রাহ(রাঃ) তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, কোন বিচারক রাগের অবস্থায় দু’জনের মধ্যে বিচার করবে না। [১৪৯৫]
বিচারকার্যের পদ্ধতি
আলী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন দু’জন লোক (দু’টো পক্ষ) কোন মোকদ্দমা তোমার কাছে আনবে তখন দ্বিতীয় ব্যক্তির (অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য) না শোনা পর্যন্ত প্রথম ব্যক্তির (অভিযোগকারীর) অনূকূলে কোন ফায়সালাহ দেবে না। এ নীতি ধরে ফায়সালাহ করলে তুমি ফায়সালা কিভাবে করতে হয় তার সঠিক ধারা জানতে পারবে। ‘আলী (রাঃ)বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপদেশ দানের পর হতে আমি বরাবর ক্বাযীর দায়িত্ব সম্পাদন করেছি। [১৪৯৬] ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এই হাদীসের সহ সহযোগী একটা হাদীস হাকিমে রয়েছে সহীহ সনদে। [১৪৯৭]
বিচারক বাহ্যিক অবস্থা দেখে বিচার করবে আভ্যন্তরীন অবস্থা দেখে নয়
উম্মু সালামাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা আমার কাছে ঝগড়া বিবাদ নিয়ে আসো। হয়তো তোমাদের কেউ অন্যজনের অপেক্ষা প্রমাণ পেশের ব্যাপারে অধিক বাকপটু। আর আমি তো যেমন শুনি তার ভিত্তিতেই বিচার করে থাকি। কাজেই আমি যদি কারো জন্য তার অন্য ভাইয়ের সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত দেই, ফলে আমি তার ভাইয়ের যে অংশ নির্ধারণ করলাম তা তো কেবল এক টুকরা আগুন। [১৪৯৮]
ন্যায্য অধিকার আদায়ে দুর্বলকে সহায়তা করা
জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, কি করে পবিত্র করা যাবে ঐ জাতিকে, যাদের দুর্বলদের হাক্ব সবলদের কাছ থেকে (বিচার মূলে) আদায় করা না যাবে। [১৪৯৯] বুরাইদাহ কর্তৃক বায্যার হাদীসগ্রন্থে একটা হাদীস এ হাদীসের সহায়করূপে বর্ণিত হয়েছে। [১৫০০] আবূ সাঈদ ইবনু মাজায় অনুরূপ একটি সমর্থক হাদীস রয়েছে। [১৫০১]
বিচারকার্যের গুরুত্ব
আয়িশা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, ন্যায় বিচারক ক্বাযীকে কিয়ামাতের দিবসে ডাকা হবে এবং সে ঐ দিন হিসাবের কঠোরতার সম্মুখীন হয়ে আকাংক্ষা করবে, হায় সে যদি জীবনে দু’জন লোকের মধ্যে ফায়সালাহ না করতো (তাই মঙ্গল ছিল)। হাদিসটি ইমাম বায়হাক্বী বর্ণনা করেছেন তাতে আছে-যদি এ ক’টি খেজুরের ব্যাপারেও ফায়সালা না করতো। [১৫০২]
মহিলাদের বিচারকার্যের দায়িত্ব না নেওয়া
আবূ বাকরাহ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ঐ জাতি কক্ষনো মুক্তি লাভ করবে না যে জাতি নিজেদের নেতৃত্ব স্ত্রীলোকের উপর অর্পণ করবে। [১৫০৩]
লোকদের বাধা প্রদান করার জন্য বিচারকের দারোয়ান রাখা নিষেধ
আবূ মারইয়াম আযদী (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ্ যাকে মুসলিমদের কোন কিছুর অলী বানিয়ে দেন (পরিচালনা দায়িত্ব অর্পণ করে)। সে যদি মুসলিম জনসাধারণের প্রয়োজন ও অভাবের প্রতি-বন্ধকতা সৃষ্টিকারী দারোয়ান রাখে তবে আল্লাহ্ও তার প্রয়োজনের সময় প্রতি-বন্ধকতা সৃষ্টি করবেন। [১৫০৪]
বিচারকার্যে ঘুষ নেওয়া হারাম
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফায়সালার ক্ষেত্রে ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহীতাকে লা’নাত করেছেন। এ হাদীসের অনুরূপ অর্থের একটা সহযোগী হাদীস ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে আবূ দাউদ, তিরমিযী ও ইবনু মাজায় বর্ণিত হয়েছে। [১৫০৫]
বিচারকের সামনে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত উভয়পক্ষের বসা
আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফায়সলাহ দিয়েছেন যে, বাদী ও বিবাদী বিচারকের সামনে বসে থাকবে। [১৫০৬]
সাক্ষ্য প্রদান এবং গ্রহণ
সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আহবান করার পুর্বেই যারা সাক্ষ্য দেয়ার জন্য উপস্থিত হয়, তাদের প্রশংসা করা প্রসঙ্গে
যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমাদেরকে উত্তম সাক্ষীগনের সংবাদ দেব না কি? (অবশ্যই দেব) তারা হচ্ছে, সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আহ্বান করার আগেই যারা সাক্ষ্য দেয়ার জন্য উপস্থিত হয়। [১৫০৭]
সাক্ষ্য দানের জন্য আহবান না করা হলেও যারা সাক্ষ্য দেয়, তাদের প্রতি নিন্দা করা প্রসঙ্গে
ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমার যুগের লোকেরাই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম। অতঃপর তাদের নিকটবর্তী যুগের লোকেরা, অতঃপর তাদের নিকটবর্তী যুগের লোকেরা। অতঃপর তোমাদের পর এমন লোকেরা আসবে, যারা সাক্ষ্য দিতে না ডাকলেও তারা সাক্ষ্য দিবে, যারা খিয়ানাত করবে, আমানত রক্ষা করবে না। তারা মান্নত করবে কিন্তু তা পুর্ন করবে না। তাদের মধ্যে মেদওয়ালাদের প্রকাশ ঘটবে। [১৫০৮]
যাদের সাক্ষ্য গ্রহন করা যায় না
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন খিয়ানাতকারী, খিয়ানাতকারিনীর ও কোন হিংসুকের সাক্ষ্য তার মুসলিম ভাইয়ের বিপক্ষে এবং কোন চাকরের সাক্ষ্য তার মালিকেরে পরিবারের পক্ষে গ্রহন করা জায়িয হবে না। [১৫০৯] আবু হুরাইরা (রাঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেন, কোন অজ্ঞ যাযাবরের সাক্ষ্য স্থায়ী বাসিন্দার বিপক্ষে গৃহিত হবে না। [১৫১০]
ব্যক্তির প্রকাশ্য দিক বিবেচনায় সাক্ষ্য গ্রহন
উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) তিনি বলেন, আল্লাহর রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে কিছু ব্যক্তিকে ওয়াহীর ভিত্তিতে পাকড়াও করা হত। এখন যেহেতু ওয়াহী বন্ধ হয়ে গেছে, সেহেতু এখন আমাদের সামনে তোমাদের যে ধরনের ‘আমাল প্রকাশ পাবে, সেগুলোর ভিত্তিতেই তোমাদের বিচার করব। [১৫১১]
মিথ্যা সাক্ষ্যদানের কঠিন শাস্তি সম্পর্কে
আবু বাকরাহ (রাঃ) নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকে বড় পাপ বলে গন্য করেছেন। [১৫১২]
নিশ্চিতভাবে জানা থাকলে সাক্ষ্য দেওয়া, সন্দেহ থাকলে সাক্ষ্য না দেওয়া
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন লোককে বলেছিলেন- তুমি কি সুর্য দেখতছ? সে বললোঃ হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ এরুপ নিশ্চিত জানা বস্তুর সাক্ষ্য দিবে। অন্যথায় তা ত্যাগ করবে। হাদিসটি ইবনু ‘আদী দুর্বল সনদে বর্ননা করেছেন। হাকিম এটিকে সহীহ মন্তব্য করে ভুল করেছেন। [১৫১৩]
শপথ ও সাক্ষ্য গ্রহন দ্বারা বিচার করার বৈধতা
ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শপথ ও সাক্ষ্য গ্রহন দ্বারা বিচার করেছেন। [১৫১৪] আবু হুরাইরা (রাঃ) একটি হাদিস ইমাম আবূ দাউদ ও তিরমিযী সংকলন করেছেন, ইবনু হিব্বান সহীহ বলেছেন। [১৫১৫]
দাবি এবং প্রমাণ
প্রমাণ ব্যতিরেকে দাবি গ্রহন করা যাবে না
ইবনু ‘আব্বাস (রা:) নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যদি কেবল দাবীর উপর ভিত্তি করে মানুষের দাবী পুরন করা হয়, তাহলে মানুষ তাদের জান ও মালের দাবী করে বসতো। কিন্তু বিবাদিকে ক্বসম করানো হবে। [১৫১৬] বায়হাক্বীতে সহীহ সনদে বর্নিত হাদীসে আছে, প্রমান দিতে হবে বাদীকে আর বাদী প্রমান দিতে না পারলে বিবাদীর উপর ক্বসমের দায়িত্ব অর্পিত হবে।
উভয় পক্ষের মধ্যে কে লটারী করার সুযোগ পাবে তা নির্নয়ের জন্য লটারী করা প্রসঙ্গে
আবু হুরাইরা (রাঃ) একদল লোককে নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হলফ করতে বললেন। তখন (কে আগে হলফ করবে এ নিয়ে) হুড়াহুড়ি শুরু করে দিল। তখন তিনি কে (আগে) হলফ করবে, তা নির্ধারনের জন্য তাদের নামে লটারী করার নির্দেশ দিলেন। [১৫১৭]
মিথ্যা শপথ দ্বা রা কোন মুসলমানের অধিকার আত্মসাৎ করার কঠিন শাস্তি প্রসঙ্গে
আবূ উমামাহ হারিসী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি স্বীয় মিথ্যা ক্বসমের মাধ্যমে মুসলিমের প্রাপ্য অধিকার আত্মসাৎ করবে আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব করে দিবেন। আর তার জন্য জান্নাতকে নিষিদ্ধ করে দেবেন। কোন এক ব্যক্তি তাঁকে বললো, হে রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি (যুলুম করে আত্মসাৎ করার) বস্তুটি তুচ্ছ হয়? উত্তরে তিনি বললেন, যদিও বাবলা গাছের একটি শাখা হয়। [১৫১৮] আশ’আস ইবনু ক্বাইস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে এমন (মিথ্যা) কসম করে, যা দ্বারা কোন মুসলিমের হক আত্মসাৎ করবে। সে (ক্বিয়ামাতের দিন) আল্লাহর সঙ্গে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করবে যে, আল্লাহ তার উপর অসন্তুষ্ট। [১৫১৯]
যদি দুজন ব্যক্তি কোন কিছু নিয়ে আদালতে দাবী পেশ করে এবং উভয়েরই কোন প্রমান নেই
আবূ মূসা আশ’আরী (রা:) দু’ব্যক্তি একটি জানোয়ারের দাবী নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে মোকদ্দমা দায়ের করলো। এ বিষয়ে তাদের কারো কোন প্রমান ছিল না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্তুটির মুল্য তাদের মধ্যে অর্ধেক করে ভাগাভাগি করে দিলেন। [১৫২০]
রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মিম্বারেকৃত ক্বসমের গুরত্ব
জাবির (রাঃ) নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি আমার এ মিম্বারের উপর পাপের (মিথ্যা) ক্বসম করবে সে তার জন্য জাহান্নামে অবস্থান ক্ষেত্র নির্ধারন করবে। [১৫২১]
আসরের পর মিথ্যা শপথ করার কঠিন অপরাধ প্রসঙ্গে
আবু হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিন রকম লোকের সাথে আল্লাহ তায়ালা ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা কথা বলবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। (এক) ঐ ব্যক্তি, যে জনশুন্য ময়দানে অতিরিক্ত পানির মালিক কিন্তু মুসাফিরকে তা থেকে পান করতে দেয় না। (দুই) সে ব্যক্তি যে আসরের পর অন্য লোকের কাছে দ্রব্য সামগ্রী বিক্রয় করতে গিয়ে এমন ক্বসম খায় যে, আল্লাহর শপথ! এটার এত দাম হয়েছে। ক্রেতা সেটাকে সত্য বলে বিশ্বাস করে সে জিনিস কিনে নেয়। অথচ সে জিনিসের এত দাম হয়নি। (তিন) ঐ ব্যক্তি যে একমাত্র দুনিয়ার স্বার্থে ইমামের বায়’আত গ্রহন করে। (বাদশাহ) ঐ লোকের মনের বাসনা পুর্ন করলে সে তার বায়’আত পুর্ন করে। আর যদি তা না হয়, তাহলে বায়’আত ভঙ্গ করে। [১৫২২]
কোন বস্তুর দাবীদার দু’জন হলে আর তা তাদের একজনের দখলে থাকলে এবং উভয়ে প্রমান পেশ করলে তা দখলকারীর বলে গণ্য হবে
জাবির (রাঃ) দু’জন লোক একটা উটনী নিয়ে বিবাদ করে তারা প্রত্যেকেই বলেঃ ‘এটা আমার উটনী, আমার অধীনেই বাচ্চা প্রসব করেছে’- তাদের দাবীর উপরে প্রত্যেকেই সাক্ষ্য প্রদান করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ উটনীটা উপস্থিত সময়ে যার অধিকারে ছিল তার অনুকুলে ফায়সালা দিয়েছিলেন। [১৫২৩]
দাবীদারের উপর কসম করার দায়িত্ব প্রসঙ্গে
ইবনু ‘উমার (রাঃ) নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) (বিবাদী ক্বসম প্রত্যাখ্যান করার ফলে) দাবীদার (বাদী) কে ক্বসম করিয়েছিলেন। [১৫২৪]
বংশবিশেষজ্ঞের উক্তিতে বংশধারা নির্ধারণ
‘আয়িশা (রাঃ) তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কাছে এমন হাসিখুশি অবস্থায় আসলেন যে, তাঁর চেহারার রেখাগুলো চমকাচ্ছিল। তিনি বললেনঃ তুমি কি দেখনে যে মুজাযযিয আল-মুদলিযী (চিহ্ন দেখে বংশ নির্ধারণকারী) যায়দ ইবনু হারিসাহ এবং উসামাহ ইবনু যায়দ-এর দিকে অনুসন্ধানের দৃষ্টিতে লক্ষ্য করেছে। এরপর সে বলেছে, তাদের সে বলেছে, তাদের দু’জনের পাগুলো পরস্পর থেকে (এসেছে) [১৫২৫]