4. যাকাত
যাকাত প্রদান ওয়াজিব হওয়ার দলীল
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মু’আয (রাঃ)-কে ইয়ামান দেশে (শাসক হিসেবে) প্রেরণ করেন। অতঃপর পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেন। তাতে রয়েছে, আল্লাহ্ তা‘য়ালা তাদের উপর তাদের সম্পদের মধ্য থেকে সদাকাহ (যাকাত) ফরয করেছেন। যেটা ধনীদের নিকট থেকে গৃহিত হবে আর দরিদ্রদের মাঝে প্রদান করা হবে। [৬৩৫] শব্দ বিন্যাশ বুখারীর। [৬৩৬]
উট ও ছাগলের যাকাত
আনাস (রাঃ) আবূ বাকর (রাঃ) আনাস (রাঃ)-এর কাছে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ্ তা’আলা যাকাত সম্পর্কে যে বিধান দিয়েছেন সে সম্পর্কে লিখে জানালেন, যা আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর রসূলকে নির্দেশ দিয়েছেন। তা হচ্ছে, চব্বিশ ও তার চেয়ে কম সংখ্যক উটের যাকাত বকরী দ্বারা আদায় করা হবে। প্রতিটি পাঁচটি উটে একটি বকরী এবং উটের সংখ্যা পঁচিশ হতে পঁয়ত্রিশ পর্যন্ত হলে একটি মাদী বিনতে মাখায। [৬৩৭] ছত্রিশ হতে পঁয়তাল্লিশ পর্যন্ত একটি মাদী বিনতে লাবূন। [৬৩৮] ছয়চল্লিশ হতে ষাট পর্যন্ত ষাড়ের পালযোগ্য একটি হিককা [৬৩৯], একষট্টি হতে পঁচাত্তর পর্যন্ত একটি জাযা’আ [৬৪০], ছিয়াত্তর হতে নব্বই পর্যন্ত দু’টি বিনতে লাবূন, একানব্বইটি হতে একশ’ বিশ পর্যন্ত ষাঁড়ের পালনযোগ্য দু’টি হিককা আর একশ’ বিশের অধিক হলে (অতিরিক্ত) প্রতি চল্লিশটিতে একটি করে বিনতে লাবূন এবং (অতিরিক্ত) প্রতি পঞ্চাশটিতে একটি করে হিককা। যার চারটির বেশি উট নেই, সেগুলোর উপর কোন যাকাত নেই, তবে মালিক স্বেচ্ছায় কিছু দিতে চাইলে দিতে পারবে। [৬৪১] আর বকরীর যাকাত সম্পর্কেঃ গৃহপালিত বকরী চল্লিশটি হতে একশ’ বিশটি পর্যন্ত একটি বকরী। এর বেশি হলে দু’শটি পর্যন্ত দু’টি বকরী। দু’শর অধিক হলে তিনশ’ পর্যন্ত তিনটি বকরী। তিনশ’র অধিক হলে প্রতি একশ’-তে একটি করে বকরী। কারো গৃহপালিত বকরীর সংখ্যা চল্লিশ হতে একটিও কম হলে তার উপর যাকাত নেই। তবে স্বেচ্ছায় দান করলে তা করতে পারে। যাকাতের (রাঃ) য়ে বিচ্ছিন্ন পশুকে (পালের বকরীকে) একত্র করা যাবে না আর (যাকাত না দেয়ার বা কম দেয়ার উদ্দেশে) একত্রিত দলকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। পশুপালের শরীকদের মধ্যে হলে নায্যভাবে যাকাত আদায়ের হিসাব আপোষে মিল করে নিবে। যাকাতে দাঁত পড়া [৬৪২], বয়স্ক পশু দেয়া চলবে না। ত্রুটিযুক্ত পশু ও পাঠা যাকাত দেয়া যাবে না, তবে যদি সদাকাহ গ্রহণকারী সেচ্ছায় নেয় তবে ভিন্ন কথা। চাঁদির জন্য ওশরের চারভাগের একভাগ (অর্থাৎ চল্লিশ ভাগের একভাগ)। যদি একশত নব্বই দিরহাম বা তার কম থাকে তবে-তবে যাকাত দিতে হবে না, তবে মালিক ইচ্ছা করে দিতে পারে। যদি কারো উট এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যাকে একটি জাযা’আহ (পঞ্চম বর্ষে পতিত উটনী) সদাকাহ দিতে হবে, আর যদি তার নিকট না থাকে বরং হিক্কা থাকে তাহলে তার নিকট হতে হিক্কা নেওয়া হবে আর তার সাথে দুটি ছাগল গ্রহণ করা হবে। যদি কারো উট এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যাকে একটি হিক্কা (চতুর্থ বর্ষে পতিত উটনী) সদাকাহ দিতে হবে, অথচ যদি তার নিকট না থাকে বরং জাযা’আহ থাকে তাহলে তার নিকট হতে জাযা’আহ নেয়া হবে আর আদায়কারী তাকে কুড়িটি দিরহাম অথবা দুটি ছাগল ফিরিয়ে দিবে। [৬৪৩]
গরুর যাকাত সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে
মু’আয্ বিন জাবাল নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে ইয়ামানে পাঠিয়েছিলেন এবং তাঁকে প্রতি ৩০টি গরুর জন্য ১টি তাবী’ (১ বছর বয়সের বকনা বাছুর) গ্রহণ করতে আর প্রতি ৪০টি গরুতে একটি মুসিন্না বা দু-বছরের গাভী অথবা বলদ গ্রহণ করতে বলেছেন। আর প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক অমুসলিমের নিকট হতে এক দিনার বা তার সমমূল্যের মু’আফিরী কাপড় নিতে আদেশ দিয়েছেন। -পাঁচজনে (আহমাদ, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ), শব্দ বিন্যাস আহমাদের, তিরমিযী এটিকে হাসান বলেছেন এবং এর মাওসুল হওয়ার ব্যাপারে মতভেদের কথা ইঙ্গিত করেছেন; ইবনু হিব্বান ও হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন। [৬৪৪]
যাকাত গ্রহণের জন্য দূত পাঠানো শরীয়তসম্মত
‘আমর বিন শুয়াইব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা তিনি (তার দাদা) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন-“মুসলমানের (পশু সম্পদের) সদাকাহ আদায় করা হবে পশুর পানি পানের স্থান থেকে। [৬৪৫] বর্ণনাকারী আর আবূ দাউদে আছে “মুসলমানদের যাকাত তাদের ঘর থেকেই গ্রহণ করা হবে। [৬৪৬]
গোলাম ও ঘোড়ার যাকাতের বিধান
আবূ হুরাইয়া (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলিমের উপর তাঁর গোলাম ও ঘোড়ার কোন যাকাত নেই। [৬৪৭]
যাকাত অস্বীকারকারীর বিধান
বাহয ইবনু হাকীম তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মাঠে প্রতিপালিত প্রতি ৪০টি উটের জন্য একটি দু’বছরের উটনী (বিনতু লাবুন)। যাকাতের হিসাবের সময় কোন উট পৃথক করা যাবে না। যে ব্যক্তি সওয়াবের আশায় যাকাত দিবে তাঁর জন্যে রয়েছে নেকী। আর যে অস্বীকৃতি জানাবে তার নিকট হতে আমরা অবশ্যই তা আদায় করে নেব এবং তার সম্পদের একটি বিশেষ অংশও নিব যা আমাদের প্রতিপালকের সম্পদ বলে পরিগণিত। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বংশধরের জন্য সে সম্পদ হতে বিন্দুমাত্রও হালাল করা হয়নি। আহমাদ, আবূ দাঊদ ও নাসায়ী। হাকীম একে সহীহ বলেছেন। শাফি’ঈ (রহঃ) বিষয়টিকে প্রামাণিকতা ভিত্তিতে তার পক্ষাবলম্বন করবেন বলে বলেছেন। [৬৪৮]
যাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য একবছর অতিক্রম হওয়া শর্ত
‘আলী (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন-তোমার নিকট দুইশত দিরহাম জমা হবার পর গচ্ছিত থাকার মেয়াদ বছর পূর্ণ হলে তার জন্য-পাঁচ দিরহাম (যাকাত)। আর বিশটি দিনার এক বছর যাবত জমা থাকলে তার জন্য অর্ধ দিনার (যাকাত)। তার চেয়ে কম যাকাত নেই। আর বেশি হলে তার হিসাব অনুপাতে (যাকাত) দিতে হবে। নিসাব পরিমাণ কোন সম্পদের (গচ্ছিত থাকার) মেয়াদ এক বছর অতিবাহিত না হলে যাকাত নেই। -এটার সানাদ হাসান। এর সানাদের মারফূ‘ হওয়া সম্বন্ধে ইমামগনের মতানৈক্য রয়েছে। [৬৪৯] (স্বর্ণমুদ্রা হচ্ছে দিনার আর রৌপ্যমুদ্রা হচ্ছে দিরহাম) [৬৫০] ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিরমিযীতে আছে-কারো কোন সম্পদ সঞ্চিত হলে তার গচ্ছিত অবস্থার উপর একটি বছর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তার জন্য যাকাত ফরজ হয় না। এর সানাদের মাওকুফ হওয়াটাই অগ্রগণ্য। [৬৫১]
যে সকল গৃহপালিত পশু দ্বারা কাজ করানো হয় তাতে কোন যাকাত নেই
‘আলী (রাঃ) তিনি বলেছেন-কাজে নিয়োজিত গরুর কোন যাকাত নেই। -আবূ দাঊদ, দারাকুৎনী। এরও মাওকূফ হওয়াটা অগ্রগণ্য। [৬৫২]
ইয়াতিমের সম্পদের যাকাত
আবদুল্লাহ্ বিন ‘আমর (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যদি কেউ সম্পদশালী ইয়াতীমের তত্বাবধায়ক হয় তবে সে যেন তা ব্যবসায় খাটায়। উক্ত সম্পদকে এমনি ফেলে রাখবে না যাতে সদাকাহ (যাকাত) উক্ত মালকে খেয়ে (নিঃশেষ করে দেয়) ফেলে। তিরমিযী ও দারাকুৎনী দুর্বল সানাদে। [৬৫৩] বর্ণনাকারী এর সমার্থক একটি হাদীস শাফি’ঈ মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন। [৬৫৪]
যাকাত প্রদানকারীদের জন্য দু’আ করা মুস্তাহাব
‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) তিনি বলেন, লোকজন যখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট নিজেদের সদাকাহ নিয়ে উপস্থিত হতো তখন তিনি বলতেনঃ হে আল্লাহ্! তুমি তাদের উপর রহমত বর্ষণ কর। [৬৫৫]
ওয়াজিব হওয়ার পূর্বে যাকাত আদায় করার বিধান
‘আলী (রাঃ) ‘আব্বাস (রাঃ) তাঁর মালের বর্ষপূর্তির পূর্বে যাকাত প্রদানের ব্যাপারে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি তাকে এ ব্যাপারে অনুমতি দেন। [৬৫৬]
সাদাকাতুল ফিতর
শস্য ও ফলের যাকাতের নেসাব
জাবির বিন ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- চাঁদিতে ৫ উকিয়ার কমে সদাকাহ (যাকাত) ওয়াজিব নয়। এবং উটে পাঁচ যাওদের কমে যাকাত নেই। এবং খেজুরে ৫ অসাকের কমে যাকাত নেই। (৫ উকিয়া ৭৩৫ গ্রাম, ৫ যাওদ = ৩ থেকে ১০ টি উটের একটি পাল, ৫ ওয়াসাক = সাড়ে ১২ কেজি) [৬৫৭] বর্ণনাকারী মুসলিমে আবূ সা’ঈদের রিওয়ায়াতকৃত হাদীসে রয়েছেঃ খেজুর ও শস্যে ৫ অসাকের কমে যাকাত (ফরয) নেই। [৬৫৮] আবূ সা’ঈদের মূল হাদীসটি বুখারী, মুসলিমে রয়েছে। [৬৫৯]
শস্য ও ফলে যাকাতের পরিমাণ
সালিম বিন ‘আবদুল্লাহ্ তাঁর পিতা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- বৃষ্টি ও প্রবাহিত পানি দ্বারা সিক্ত ভূমিতে উৎপাদিত ফসল বা সেচ ব্যতীত উর্বরতার ফলে উৎপন্ন ফসলের উপর (দশমাংশ) ‘উশর ওয়াজিব হয়। আর সেচ দ্বারা উৎপাদিত ফসলের উপর অর্ধ (বিশ ভাগের এক ভাগ) ‘উশর। বুখারী; আর আবূ দাঊদে আছে, যদি মাটি সিক্ত হয় তাহলে দশমাংশ ‘উশর। আর পশু বা সেচযন্ত্রের সাহায্যে সেচকৃত উৎপাদিত ফসলে বিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে। [৬৬০]
যে পরিমাণ শস্য ও ফলে যাকাত ওয়াজিব
আবূ মূসা আল আশ’আরী ও মু’আয (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের বলেছিলেন, শুধুমাত্র চার প্রকার জিনিস হতে সদাকাহ গ্রহণ করবেঃ বার্লি, গম, কিশমিশ ও খেজুর। [৬৬১] দারাকুৎসীতে মুআয শশা-খিরা, তরমুজ, আনার ও আখ জাতীয় জিনিসের যাকাত (উশর) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাফ করে দিয়েছেন। এর সানাদটি দুর্বল। [৬৬২]
ফলের অনুমান করা ও চাষির জন্য যা ছেড়ে দেয়া হবে
সাহল বিন আবু হাসমা তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নির্দেশ করেছেন, যখন তোমরা হিসাব করবে (খেজুর জাতীয় ফলের যাকাত) তখন তা হতে এক তৃতীয়াংশ বাদ দিয়ে হিসেব করবে। যদি এক তৃতীয়াংশ ছাড়তে না পার তাহলে এক চতুর্থাংশ ছাড়বে। -ইবনু হিব্বান ও হাকিম একে সহীহ বলেছেন।” আত্তাব বিন আসীদ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, যেভাবে খেজুরের হিসাব করা হয় সেভাবেই আঙ্গুরেরও হিসাব করতে হবে। আঙ্গুরের যাকাতে কিশমিশ নিতে হবে। -এর সানাদে রাবীদের মধ্যে যোগসূত্রে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে। [৬৬৪]
অলংকারে যাকাতের বিধান
আমর বিন শু'আইব জনৈকা নারী তার মেয়েকে নিয়ে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলেন। তার কন্যার হাতে দুখানা সোনার বালা ছিল। তিনি তাকে বললেন, তুমি কি এগুলোর যাকাত আদায় কর? সে বলল, না। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কিয়ামতের দিনে আল্লাহ ঐগুলো দিয়ে আগুনের বালা বানিয়ে তোমাকে পরতে দিলে তুমি কি খুশী হবে? (এটা শুনে) সে দুটোকে ছুড়ে ফেলে দিল। -এর সানাদ শক্তিশালী। [৬৬৫] বর্ণনাকারী এবং আয়িশা কর্তৃক বর্ণিত (অনুরূপ) হাদীসটিকে হাকিম সহীহ বলেছেন। [৬৬৬] উম্মু সালামাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তিনি স্বর্ণের বালা পরতেন। তারপর তিনি বললেন, -হে আল্লাহর রসূল! এগুলো কি (কুরআনে উল্লেখিত) গচ্ছিত সম্পদ (কানয) ? নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বললেন, যদি এর যাকাত আদায় কর তবে তা কান্য হবে না। -হাকিম একে সহীহ বলেছেন।” [৬৬৭]
ব্যবসা সামগ্রীর যাকাত
সামুরাহ বিন জুনদূৰ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নির্দেশ দিতেন ঐসকল সম্পদ হতে সদাকাহ বের করতে যেগুলো আমরা বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করতাম। -এর সানাদে সামান্য দুর্বলতা রয়েছে। [৬৬৮]
পুঁতে রাখা মালের যাকাত
আবু হুরাইরা (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন-রিকাযের (ভূগর্ভস্থ পুতে রাখা সম্পদের) জন্য পাঁচ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে। [৬৬৯] আমর বিন শু'আইব রসূলুল্লাহ কোন লোক কোন বিরান জায়গায় কোন সম্পদ পেলে সে সম্বন্ধে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যদি তা কোন লোকবসতিস্থানে পাও তবে তা প্রচার করে লোকেদের জানিয়ে দাও আর যদি কোন বিরান জায়গায় পাও তবে তাতে ও রিকাযে পাঁচ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিবে। ইবনু মাজাহ হাসান সানাদে।" [৬৭০]
খনিজ সম্পদের যাকাত
বিলাল বিন হারিস রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাবলিয়াহ অঞ্চলের খনিজ সম্পদের সদাকাহ গ্রহণ করেছেন। [৬৭১]
সাদাকাতুল ফিতরের পরিমান ও বিধান
ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, প্রত্যেক গলাম, আযাদ, পুরুষ, নারী, প্রাপ্ত বয়স্ক, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিমের উপর আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সদাকাতুল ফিতর হিসেবে খেজুর হোক অথবা যব হোক এক সা’ পরিমান আদায় করা ফরয করেছেন এবং লোকজনের ঈদের সালাতের বের হবার পূর্বেই তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। [৬৭২] ইবনু ‘আদী ও দারাকুৎনী দুর্বল সানাদে বর্ণনা করেছেন : তাদের নিকট সাদাকাতুল ফিতর পৌঁছে দিয়ে তাদের এ দিনে রুযীর খোজে বের হওয়ার প্রয়োজন মিটিয়ে দাও। [৬৭৩] আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে এক সা’ খাদ্যদ্রব্য বা এক সা’ খেজুর বা এক সা’ যব বা এক সা’ কিসমিস সাদাকাতুল ফিতর আদায় করতাম। উক্ত কেতাবদ্বয়ে আরও আছে : “অথবা এক সা’ পনির দিতাম।“ আবূ সা’ঈদ বলেনঃ আজও তাই বের করবো (দিব) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যামানায় যেমনভাবে পূর্ণ এক সা’ (বের) করতাম। আবূ দাউদে আবূ সা’ঈদের কথাটি এভাবে আছে- “এক সা’ ব্যতিত আমি বের করব (দেবই) না। [৬৭৪]
যাকাতুল ফিতরের রহস্য বর্ণনা ও তার আদায়ের সময়
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোজাদারদের অনর্থক কথাবার্তা ও অশালীন আচরণের কাফফারাস্বরূপ এবং গরীব-মিসকীনদের আহারের সংস্থান করার জন্য সাদাকাতুল ফিতর (ফিতরা) নির্ধারণ করেছেন। যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের পূর্বে তা পরিশোধ করে (আল্লাহ্র নিকট)- তা গ্রহণীয় দান। আর যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের পর তা পরিশোধ করে তাও দানসমূহের অন্তর্ভুক্ত একটা দান। আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ আর হাকিম একে সহিহ বলেছেন। [৬৭৫]
নফল সাদাকাহ
গোপনে নফল সাদাকাহ করা
আবূ হুরাইরা (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সাত ধরনের লোককে আল্লাহ তা’আলা তার ছায়ায় এমন দিনে আশ্রয় দেবেন যেদিন তার ছায়া ব্যাতিত কোন ছায়াই থাকবেনা অতঃপর রাবী পূর্ণ হাদিসটি বর্ণনা করেন। তার মধ্যে আছেঃ “সে ব্যক্তি যে এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না।“ [৬৭৬]
নফল সাদাক্বার ফযীলত
উক্বাহ বিন ‘আমির (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ প্রতিটি মানুষ তার সদাকার ছায়ায় আশ্রয় পাবে যতক্ষণ না কিয়ামতে মানুষের হিসাবের নিষ্পত্তি হয়। ইবনু হিব্বান ও হাকিম।
দানগ্রহীতার একান্ত প্রয়োজন মিটায় এমন দান সবচেয়ে উত্তম
আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন মুসলিম তার কোন বিবস্ত্র মুসলিম ভাই কে কাপড় পরিধান করালে আল্লাহ তা’আলা তাকে জান্নাতে সবুজ পোশাক পরিধান করাবেন। কোন মুসলিম তার ক্ষুধার্থ মুসলিম ভাই-কে খাবার খাওয়ালে আল্লাহ তা’আলা তাকেও জান্নাতের ফল খাওয়াবেন। কোন মুসলিম তার কোন তৃষ্ণার্ত ভাই কে পানি পান করালে আল্লাহ্ তা’আলা তাকেও মোহরাঙ্কিত স্বর্গীয় সুধা পান করাবেন। আবূ দাউদ দুর্বল সানাদে। [৬৭৭]
কোন প্রকারের দান সর্বোত্তম
হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) এর সুত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেন, উপরের হাত (দাতার হাত) নীচের হাত (গ্রহীতার) হাত অপেক্ষা উত্তম। প্রথমে তাদেরকে দিবে যাদের (রাঃ) রণ-পোষণের দায়িত্ব তুমি বহন কর। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ হতে সাদাকাহ করা উত্তম। যে ব্যক্তি (পাপ ও ভিক্ষা করা হতে) পবিত্র থাকতে চায়, আল্লাহ্ তাকে পবিত্র রাখেন এবং যে পরমুখাপেক্ষিতা হতে বেচে থাকতে চায়, আল্লাহ্ তাকে স্বাবলম্বী করে দেন। শব্দ বিন্যাস বুখারীর। [৬৭৮] আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলা হল, হে আল্লাহ্র রসূল! সর্বোত্তম সদাকাহ কোনটি? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন- স্বল্প সঙ্গতিসম্পন্ন ব্যক্তির কষ্টার্জিত বস্তু হতে সদাকাহ; আর (দানের সময়) অধিস্থদের থেকে আরম্ভ (অগ্রাধিকার) কর। - আর ইবনু খুযাইমাহ, ইবনু হিব্বান ও হাকীম এটিকে সহিহ বলেছেন। [৬৭৯]
পরিবারের আবশ্যিক (রাঃ) রণ-পোষণ নফল দানের পূর্বে বিবেচ্য
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা সদাকাহ প্রদান কর। জনৈক ব্যক্তি বললেনঃ হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমার নিকট একটি দিনার (স্বর্ণ মুদ্রা) আছে। তিনি বললেন- তুমি ওঁটা নিজেকেই দান কর (রেখে দাও)। লোকটা বললঃ আমার নিকট আরও একটি আছে। তিনি উত্তরে বললেনঃ এটা তোমার ছেলেদের (সন্তানদের) জন্য খরচ কর। [৬৮০] লোকটা বললো আমার নিকট আরও একটি আছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ওঁটা তোমার স্ত্রীর জন্য খরচ কর। লোকটা বললো আমার নিকট আরও একটি আছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমিই ভাল জানো (এটা কোথায় খরচ করবে)। আবূ দাউদ, নাসায়ী, আর ইবনু হিব্বান ও হাকিম একে সহিহ বলেছেন। [৬৮১]
স্ত্রী স্বামীর ঘর থেকে দান করলে তার জন্য প্রতিদান রয়েছে
‘আয়িশা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন স্ত্রী যদি তার ঘর হতে বিপর্যয় সৃষ্টির উদ্দেশ্য ছাড়া খাদ্যদ্রব্য সদাকাহ করে তবে এ জন্যে সে সওয়াব লা(রাঃ) করবে আর উপার্জন করার কারনে স্বামীও সওয়াব পাবে [৬৮২] এবং খাজাঞ্চিও অনুরুপ সওয়াব পাবে। তাদের একজনের কারনে অন্য জনের সওয়াবে কোন কমতি হবে না। [৬৮৩]
স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে দান করার বিধান
আবু সাঈদ খুদরী তিনি বলেন, ইবনু মাসউদের স্ত্রী যায়নাব (রাঃ) (নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট) এসে বললেন ঃ "হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আজ আপনি সদাকাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমার অলংকার আছে। আমি তা সদাকাহ করার ইচ্ছা করেছি। ইবনু মাসউদ (রাঃ) মনে করেন, আমার এ সদাকায় তার এবং তার সন্তানদেরই হক বেশি। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইবনু মাসউদ (রাঃ) ঠিক বলেছে। তোমার স্বামী ও সন্তানই তোমার এ সদাকাহর অধিক হকদার ।" [৬৮৪]
যাচঞা করা নিন্দনীয় এবং এ ব্যাপারে ভীতিপ্রদর্শন
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সব সময় মানুষের কাছে চেয়ে থাকে, সে কিয়ামাতের দিন এমনভাবে উপস্থিত হবে যে, তার চেহারায় কোন গোশত থাকবে না।” [৬৮৫] . আবু হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- যে ব্যক্তি তার সম্পদ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে লোকেদের নিকট যাচঞা করে, প্রকৃতপক্ষে সে জ্বলন্ত আগুনই যাচএা করে। কাজেই সে চাইলে জ্বলন্ত আগুন কমও চাইতে পারে বেশিও চাইতে পারে। [৬৮৬]
কাজ করতে উৎসাহ প্রদান ও যাচঞা করার নিন্দা
যুবাইর ইবনু আওয়াম (রাঃ) তিনি বলেন ; তোমাদের মধ্যে কেউ রশি নিয়ে তার পিঠে কাঠের বোঝা বয়ে আনা এবং তা বিক্রি করা, ফলে আল্লাহ তার চেহারাকে (যাচঞা করার লাঞ্ছনা হতে) রক্ষা করেন, তা মানুষের কাছে সওয়াল করার চেয়ে উত্তম, চাই তারা দিক বা না দিক। [৬৮৭]
কোন প্রকারের যাচঞা করা নিন্দনীয় নয়
সামুরাহ বিন জুনদুব (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- যাচঞা করা হচ্ছে একটি ক্ষতচিহ্ন মাত্র। যে ব্যক্তি যাচএা করল যে যেন নিজের মুখমণ্ডলকেই ক্ষতবিক্ষত (কলঙ্কিত) করল। তবে সে ব্যক্তি নিরুপায় হলে দেশের সুলতানের নিকট চাইতে পারে। তিরমিয়ী একে সহীহ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।” [৬৮৮]
সদাকাহ (যাকাত ও উত্তর) বন্টন পদ্ধতি
যে ধনীর জন্য যাচঞা করা বৈধ
আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সচ্ছল ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণ করা হালাল নয়। তবে পাচজন ধনী ব্যক্তির জন্য তা হালালঃ যাকাত আদায়কারী কর্মচারী (বেতন বাবদ), যে ব্যক্তি তার নিজস্ব মাল দ্বারা যাকাতের মাল ক্রয় করে এবং ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর রাস্তায় লড়াইকারী, কোন গরীব ব্যক্তি তার প্রাপ্ত যাকাত কোন সচ্ছল ব্যক্তিকে উপহাস্বরূপ দিলে। আহমদ, আবু দাউদ ও ইবনু মাজা, হাকিম সহীহ বলেছেন আর মুরসাল হবার দোষও প্রকাশ করেছেন। [৬৮৯]
ধনী ও উপার্জনক্ষম ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণের বিধান
উবায়দুল্লাহ বিন আদী (রাঃ) তাকে দুজন লোক বলেছেন, তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমতে কিছু সদাকাহ (যাকাতের মাল) চাইতে গেলে নাবী তাদের প্রতি লক্ষ্য করলেন, তারা খুব হৃষ্টপুষ্ট, ফলে তিনি তাদের বললেন, তোমরা যদি চাও তাহলে আমি তোমাদের দিব তবে সদাকাহর মালে (সরকারী বায়তুলমালে) কোন ধনী ও উপার্জনে সক্ষম ব্যক্তির কোন অধিকার নেই। -নাসায়ী একে কাবি (দৃঢ়) সানাদের হাদীস বলে উল্লেখ করেছেন। [৬৯০]
প্রয়োজনের সময় যাচঞা করা বৈধ
কাবীসাহ বিন মুখারিক আল হিলালী (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তিন প্রকারের লোক ব্যতীত অন্য কারো যাচএঃা করা হালাল বা বৈধ নয়। যে ব্যক্তি কারো (ঋণ) পরিশোধের যামীন হয় তার জন্য ঐ পরিমাণ যাচঞা করা বৈধ যে পরিমাণের জন্য সে যামীন হয়েছে। তার পর তা বন্ধ করে দেবে। যে ব্যক্তির সম্পদ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় তার জীবন যাত্রাকে প্রতিষ্ঠিত করা পর্যন্ত যাচএঃা করতে পারবে। আর ঐ অভাবী ব্যক্তি যার পক্ষে তার উক্ত গোত্রের তিনজন জ্ঞানী ব্যক্তি সাক্ষ্য দিবে। তার আর্থিক জীবন ধারণের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু যাচঞা করা তারপক্ষে বৈধ। হে কাবীসাহ, জেনে রাখ এছাড়া যে কোন প্রকার যাচএা হারাম। যে অবৈধ যাচঞা করবে সে হারাম (রাঃ) ভক্ষণ করবে।” [৬৯১]
বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিবের জন্য যাকাত গ্রহণের বিধান
আবদুল মুত্তালিব বিন রাবী'আহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন-নিশ্চয়ই সদাকাহ (যাকাত উত্তর)ও তার বংশধরের জন্য বাঞ্ছিত নয়। সদকা হচ্ছে জনগণের (দেহ থেকে বের হওয়া) ময়লা মাত্র। অপর বর্ণনায় আছে, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর বংশধরের জন্য বৈধ নয়। [৬৯২] জুবাইর ইবনু মুতঈম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি এবং উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গেলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি বানু মুত্তালিবকে দিয়েছেন, আর আমাদের বাদ দিয়েছেন। অথচ আমরা এবং তারা আপনার সঙ্গে একই স্তরে সম্পর্কিত। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, বানু মুত্তালিব ও বানু হাশিম একই স্তরের। [৬৯৩]
বনু হাশীমের দাস-দাসীদের পক্ষে সাদাকা গ্রহণ করার বিধান
আবু রাফি (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাখযুম বংশের জনৈক ব্যক্তিকে সদাকাহর (যাকাতের) দায়িত্বে পাঠিয়েছিলেন। সে আবু রাফি'কে (রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর গোলাম) বললো, আপনি আমার সঙ্গে চলুন আপনি তা থেকে (যাকাত থেকে) কিছু পেয়ে যাবেন। আবু রাফি (রাঃ) বললেন, না যতক্ষণ না নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে তাকে জিজ্ঞেস করব ততক্ষণ (আমি তা গ্রহণ করব না)। তিনি তার নিকটে এসে জিজ্ঞেস করলেন ঃ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন ঃ (এ ব্যাপারে) গোলাম তার মুনিবের সম্প্রদায়ভুক্ত বলে বিবেচিত হয়, আর আমাদের (বনু হাশেম গোত্রের) জন্য সদাকাহ (যাকাত) মোটেই বৈধ নয়। [৬৯৪]
চাওয়া বা কামনা ছাড়া যখন কেউ কিছু দিলে তা গ্রহণ করা বৈধ
সালিম বিন আবদুল্লাহ বিন উমার রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)"-কে কিছু দান করতে চাইলেন। ফলে 'উমার বললেন-যে আমার থেকে বেশি ফকীর তাকে দিন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন- এটা লও। হয় তুমি একে নিজের সম্পদ করে নাও, নাহলে তুমি তা সদাকাহ করে দাও। নির্লো(রাঃ) ও না চাইতেই যা এ সদাকাহর সম্পদ হতে পাবে তা তুমি গ্রহণ কর। (আর ঐরূপ না হলে) ঐ সম্পদের দিকে তোমার মনসংযোগ ঘটাবে না।” [৬৯৫]