7. ক্রয়-বিক্রয়ের বিধান অধ্যায়
ক্রয় বিক্রয়ের শর্তাবলী ও তার নিষিদ্ধ বিষয়
উত্তম ক্রয়-বিক্রয়ের ফযীলত
রিফা‘আহ বিন রাফি’ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন- ‘কোন্ প্রকারের জীবিকা উত্তম?’ উত্তরে তিনি বললেন— নিজ হাতের কামাই এবং সৎ ব্যবসায় । -হাকিম একে সহীহ বলেছেন। [৮৩১]
যে সমস্ত ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করা হয়েছে
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মাক্কাহ বিজয়ের বছর মাক্কাহয় অবস্থানকালে বলতে শুনেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রসূল হারাম করে দিয়েছেন মদ, মৃতপ্রাণী, শূকর ও মূর্তি ক্রয় বিক্রয়। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! মৃত জন্তুর চর্বি সম্পর্কে আপনি কী বলেন? তা দিয়ে তো নৌকায় প্রলেপ দেয়া হয় এবং চামড়া তৈলাক্ত করা হয় আর লোকে তা প্রদীপ জ্বালিয়ে থাকে। তিনি বললেন, না, সেটিও হারাম। তারপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের ধ্বংস করুন। আল্লাহ যখন তাদের জন্য মৃত জিনিসের চর্বি হারাম করে দেন, তখন তারা তা সংগ্রহ করে, তা বিক্রি করে তার মূল্য ভক্ষণ করে। [৮৩২]
ক্রেতা এবং বিক্রেতার মতবিরোধের বিধান
ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) ৭৮৩/১. তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছিঃ ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে মতবিরোধের সময় যদি কোন সাক্ষ্য প্রমাণ না থাকে সেক্ষেত্রে বিক্রেতার কথাই গ্রহণযোগ্য হবে নতুবা তারা চুক্তি বাতিল করবে। -হাকিম একে সহীহ বলেছেন। [৮৩৩]
নিকৃষ্ট উপার্জনসমূহ
আবূ মাস‘ঊদ আনসারী (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন কুকুরের মূল্য, ব্যভিচারের বিনিময় এবং গণকের পারিশ্রমিক (গ্রহণ করতে)। [৮৩৪]
বিক্রিত দ্রব্য থেকে সুবিধা পাওয়ার জন্য শর্তারোপ করার বিধান
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি একটা উটের উপর উপবিষ্ট ছিলেন। উটটি অচল হয়ে যাওয়াতে তাকে ছেড়ে দেয়ার ইরাদা করলেন; তিনি বলেন, তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে আমার সাক্ষাত হলে তিনি আমার জন্য দু‘আ করলেন, আর উটটিকে প্রহার করলেন, তারপর থেকে উটটি এমন গতিতে চলতে লাগল যা ইতিপূর্বে আর চলেনি। তারপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন- তুমি একে আমার নিকট এক উকিয়াহর বিনিময়ে বিক্রি কর। আমি বললাম, না। অতঃপর দ্বিতীয়বার তিনি বললেন, এটা আমার কাছে বিক্রি কর। ফলে আমি ঐটি তাঁর নিকট এক উকিয়াহ্র মূল্যে বিক্রি করে দিলাম এবং বাড়ি পর্যন্ত তার উপর চড়ে যাবার শর্ত করে নিলাম। যখন বাড়ি পৌঁছালাম তখন উটটি নিয়ে তাঁর নিকটে এলাম। ফলে সেটির নগদ মূল্য তিনি দিয়ে দিলেন। তারপর ফিরে আসছি এমন সময় তিনি আমার পেছনে লোক পাঠালেন এবং আমাকে বললেন- তুমি কি মনে করছ যে, আমি তোমার উটটি কম মূল্য দিয়ে নিতে চাচ্ছি- তুমি তোমার উট ও দিরহামগুলো নাও, এ (সবই) তোমার জন্য। -এ (শব্দের) ধারাবাহিকতা মুসলিমের। [৮৩৫]
"মুদাব্বার" গোলাম বিক্রির বিধান
জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, কোন এক সহাবী তাঁর একমাত্র দাসকে মুদাব্বের* করে মুক্ত করার ব্যবস্থা করেন। সেটি ছাড়া তার আর কোন সম্পদ ছিল না। ফলে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাসটিকে নিয়ে ডেকে আনালেন ও বিক্রি করে দিলেন। [৮৩৬]
ইদুর পড়ে যাওয়া ঘিয়ের বিধান
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী মাইমূনাহ (রাঃ) ঘি-এর মধ্যে পড়ে ইঁদুর মারা যাওয়া সম্বন্ধে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, ইঁদুরটিকে উঠিয়ে ফেলে তার চারপাশের ঘি ফেলে দিয়ে তা খাও। - আহমাদ ও নাসায়ী বৃদ্ধি করেছেনঃ “জমে যাওয়া ঘি-এর জন্য (এরূপ ব্যবস্থা)”। [৮৩৭] আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- যদি জমা ঘি-এর মধ্যে ইঁদুর পড়ে তাহলে ইঁদুরটি ও তার আশেপাশের ঘি ফেলে দাও, আর যদি ঘি তরল হয় তাহলে (ঘি নেয়ার জন্য) এগিয়ো না। (তা সম্পূর্ণ গ্রহণের অনুপযোগী)। - বুখারী ও আবূ হাতিম এ হাদীসের রাবীর উপর অহমের হুকুম জারী করেছেন (তার স্মৃতিশক্তি ছিল দুর্বল)। [৮৩৮]
কুকুর এবং বিড়াল ক্রয় বিক্রয়ের বিধান
আবূ যুবাইর (রাঃ) তিনি জাবির (রাঃ) - কে বিড়াল ও কুকুরের মূল্য (এর বৈধা বৈধ) সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কারণে ধমক দিয়েছেন। - নাসায়ীতে রয়েছে শিকারী কুকুরের মূল্য ব্যতীত। অর্থাৎ শিকারী কুকুরের মূল্য বৈধ। [৮৩৯]
শরীয়ত সম্মত সকল শর্তের বৈধতা এবং এছাড়া অন্য সকল শর্ত বাতিল বলে গন্য হওয়া
আয়িশা (রাঃ) তিনি বলেন, বারীরাহ (রাঃ) আমার কাছে এসে বলল, আমি আমার মালিক পক্ষের সাথে নয় উকিয়া দেয়ার শর্তে মুকাতাবা [৮৪০] করেছি- প্রতি বছর যা হতে এক উকিয়া করে দিতে হবে। আপনি (এ ব্যাপারে) আমাকে সাহায্য করুন। আমি বললাম, যদি তোমার মালিক পক্ষ পছন্দ করে যে, আমি তাদের একবারেই তা পরিশোধ করব এবং তোমার ওয়ালা-এর অধিকার আমার হবে, তবে আমি তা করব। তখন বারীরাহ (রাঃ) তার মালিকদের নিকট গিয়ে তা বলল। তারা তাতে অস্বীকৃতি জানাল। বারীরাহ (রাঃ) তাদের নিকট হতে (আমার কাছে) এল। আর তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সে বলল, আমি (আপনার) সে কথা তাদের কাছে পেশ করেছিলাম। কিন্তু তারা নিজেদের জন্য ওয়ালার অধিকার সংরক্ষণ ছাড়া রাযী হয়নি। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শুনলেন, ‘আয়িশা (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তা সবিস্তারে জানালেন। তিনি বললেন, তুমি তাকে নিয়ে নাও এবং তাদের জন্য ওয়ালার শর্ত মেনে নাও। কেননা, ওয়ালা এর হক তারই, যে আযাদ করে। ‘আয়িশা (রাঃ) তাই করলেন। এরপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে আল্লাহর হাম্দ ও সানা বর্ণনা করলেন। তারপর বললেন, লোকদের কী হলো যে, তারা আল্লাহর বিধান বহির্ভূত শর্তারোপ করে। আল্লাহর বিধানে যে শর্তের উল্লেখ নেই, তা বাতিল বলে গণ্য, একশত শর্ত করলেও না। আল্লাহর ফায়সালাই সঠিক, আল্লাহর শর্তই সুদৃঢ়। ওয়ালার হাক্ব তো তারই, যে মুক্ত করে। শব্দ বিন্যাস বুখারীর। মুসলিমে আছে- নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আয়িশা (রাঃ)-কে বললেন, তাকে কিনে নাও, তাদের জন্য অলা-র শর্ত কর। [৮৪১]
উম্মুল অলাদ (যে দাসীর গর্ভে মনিবের সন্তান জন্মগ্রহন করেছে তার) বিক্রয়ের বিধান
ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, উমার (রাঃ) জননী দাসী বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন, তিনি বলেছেন, বিক্রি করা যাবে না, হেবা (দান) করা যাবে না, ওয়ারিস হিসেবেও কেউ তাকে অধিগ্রহণ করতে পারবে না। তার মালিক যতদিন চাইবে ততদিন তার দ্বারা ফায়দা উঠাবে। মালিকের মৃত্যুর পর সে স্বাধীন হয়ে যাবে। -বাইহাকী বলেছেন- এ হাদীসের কিছু বর্ণনাকারী, অহম বা অনিশ্চয়তার ভিত্তিতে ‘মারফূ’ বৰ্ণনা করেছেন। [৮৪২] জাবির (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমরা জননী দাসী বিক্রি করে দিতাম আর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মধ্যে জীবিত ছিলেন, এ বিষয়টিকে আমরা দোষ হিসেবে দেখতাম না। -ইবনু হিব্বান একে সহীহ্ বলেছেন। [৮৪৩]
উদ্বৃত পানি বিক্রয় করা এবং মাদী জন্তুর উপর নর উঠানোর মজুরী গ্রহণ করা নিষেধ
জাবির বিন ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উদ্বৃত্ত পানি বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। (মুসলিমের) অন্য বর্ণনায় আছে- নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নরকে মাদীর উপর (গর্ভসঞ্চারের উদ্দেশ্যে যৌন মিলন ঘটানোর ব্যবস্থা বিক্রি করতে) উঠাতে নিষেধ করেছেন। [৮৪৪] ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পশুকে পাল দেয়া বাবদ বিনিময় নিতে নিষেধ করেছেন। [৮৪৫]
যে সমস্ত ব্যবসা নিষিদ্ধ
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন গর্ভস্থিত বাচ্চার গর্ভের প্রসবের মেয়াদের উপর বিক্রি করতে। এটি জাহিলিয়াতের যুগে প্রচলিত এক ধরনের বিক্রি ব্যবস্থা। কেউ এ শর্তে উটনী ক্রয় করত যে, এই উটনীটি প্রসব করবে পরে ঐ শাবক তার গর্ভ প্রসব করার পর তার মূল্য পরিশোধ করা হবে। -শব্দ বিন্যাস বুখারীর। [৮৪৬]
ওয়ালা -এর বিক্রয় এবং তা হেবা করা নিষেধ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘অলা’*-এর বিক্রয় ও হেবা (দান)-কে নিষিদ্ধ করেছেন। [৮৪৭]
ধোঁকা দিয়ে বিক্রি করা নিষেধ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষিদ্ধ করেছেন, কেনা-বেচায় পাথর নিক্ষেপ প্রথা আর প্রতারণামূলক যাবতীয় ব্যবসায়। [৮৪৮]
খাদ্য বস্তু হাতে আসার পূর্বেই মৌখিকভাবে বিক্রি করা নিষেধ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) আয়িশা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি খাদ্যবস্তু ক্রয় করলো, সে যেন তা না মেপে বিক্রি না করে। [৮৪৯
এক জিনিস বিক্রির মধ্যে দুই জিনিস বিক্রি করার বিধান
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই বিক্রয়ের মধ্যে দু’টি বিক্রয় সাব্যস্ত করাকে নিষিদ্ধ করেছেন। -তিরমিযী ও ইবনু হিব্বান একে সহীহ বলেছেন। আবূ দাউদে আছে- যে ব্যক্তি একই বিক্রয়ের মধ্যে একাধিক বিক্রয় করতে চায় তার জন্য বিক্রয়টি কম-বেশি হবে যা সুদ বলে গণ্য। [৮৫০]
ক্রয় বিক্রয়ের কতিপয় মাসআলা
‘আম্র বিন শু’আইব (রাঃ) তিনি তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা (রাঃ) হতে বর্ণনা করে বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- ‘সালাফ ও বিক্রয় বৈধ নয়।’ ‘একই বিক্রয়ে দু’টি শর্ত বৈধ নয়।’ ‘যাতে কোন জিম্মাদারী নেই তাতে কোন লাভ নেই।’ যা তোমার দখলে নেই তা বিক্রয়যোগ্যও নয়। - তিরমিযী, ইবনু খুযাইমাহ ও হাকিম সহীহ বলেছেন। [৮৫১] ইমাম হাকিম উলূমুল হাদীস গ্রন্থে উপরোক্ত সাহাবী থেকেই ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ)- এর একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করেন, তাতে রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শর্তারোপ করে বিক্রি করা নিষেধ করেছেন। ইমাম তাবারানীও তাঁর আওসাত গ্রন্থে একই সনদে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, যা গরীব। [৮৫২]
“উরবুন” নামক বিক্রির বিধান”
আমর বিন শু‘আইবের সূত্রে উক্ত রাবী তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উরবান’ * নামক ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন। বর্ণনাকারী ইমাম মালিক; তিনি বলেন, হাদিসটি ‘আম্র বিন শু‘আইব এর সুত্রে পৌঁছেছে । [৮৫৩] * ‘উরবানের অর্থঃ বিক্রেতাকে দেয়া অফেরতযোগ্য বায়না।
পণ্য হাতে আসার পূর্বেই বিক্রি করা নিষেধ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমি বাজারে জয়তুনের তেল ক্রয় করলাম। ক্রয় পাকাপাকি হবার পর একজন লোক আমার কাছে এসে আমাকে তাতে একটা ভাল লাভ দিতে চাইলো। আমিও তার হাতে হাত মেরে বিক্রয় পাকাপাকি করতে চাইলাম। হঠাৎ করে কোন লোক পেছন থেকে আমার হাত ধরে নিল। আমি পেছনে চেয়ে দেখলাম- তিনি যায়দ বিন সাবেত (রাঃ)। তিনি বললেন, যেখানে ক্রয় করবেন ঐ স্থানে বিক্রয় করবেন না- যতক্ষন না আপনার স্থানে নিয়ে না যান। অবশ্য রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্রয় করার স্থানে পণ্য বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন- যতক্ষণ না তা ক্রেতা তার ডেরায় বা স্থানে নিয়ে যায়। - শব্দ বিন্যাস আবূ দাউদের। ইবনু হিব্বান ও হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন । [৮৫৪]
স্বর্ণমুদ্রার বদলে রৌপ্যমুদ্রা দিয়ে ক্রয়-বিক্রয় করা নিষেধ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! অবশ্য আমি ‘বাকী’ (নামক স্থানে) উট বিক্রয় করে থাকি; দীনারের বিনিময়ে বিক্রয়ের কথা বলে দিরহাম নিয়ে থাকি- আর দিরহামের বিনিময়ের কথা বলে দীনার নিয়ে থাকি। এটার পরিবর্তে এগুলো আর এগুলোর পরিবর্তে এটা। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ঐ দিনের বাজার দরে নিলে তাতে দোষ নেই । তাহলে যেন একে অপর থেকে আলাদা হয়ে যাবার পূর্বেই তোমাদের মধ্যে (লেন-দেনের) আর কিছু বাকী না থাকে। - হাকীম একে সহীহ্ বলেছেন। [৮৫৫]
ধোঁকা দেওয়া নিষেধ
ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেছেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাজ্শ বা ধোঁকা দিয়ে দাম বাড়ানোর কাজকে নিষিদ্ধ করেছেন। [৮৫৬]
কতিপয় লেনদেন নিষেধ
জাবির (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহাকালাহ (ওজন করা গমের বিনিময়ে বিনিময়ে জমির কোন শস্য বিক্রয় করা) মুযাবানাহ (গাছে লাগানো ফলকে শুকনো ফলের বিনিময়ে বিক্রয় করা); মুখাবারাহ (অর্থাৎ জমির অনির্দিষ্ট কিছু অংশ ভাড়া দেয়া) এবং সুন্ইয়াই (কোন বস্তুর সওদার সমষ্টি থেকে কিছু অংশ পৃথকীকরণকে) নিষিদ্ধ করেছেন- তবে তা নিশ্চিত ভাবে জানা থাকলে দোষ নেই। তিরমিযী একে সহীহ্ বলেছেন। [৮৫৭] আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহাকালাহ; মুখাযারাহ (ব্যবহারোপযোগী হয়নি এমন কাঁচা ফল বিক্রয় করা), মুলামাসাহ (বিক্রয়ের কাপড় না দেখেই হাত দিয়ে ছুয়ে বিক্রয় পাকা করা), মুনাবাযাহ (পণ্যদ্রব্য যেমন কাপড়কে ক্রেতা বিক্রেতা একে অপরের উপর নিক্ষেপ দ্বারা বিক্রয় পাকা করা) ও মুযাবানাহ (অর্থাৎ গাছে ফল থাকা অবস্থায় তা শুকনো ফলের বিনিময়ে বিক্রি করা) – এর বেচা-কেনা নিষিদ্ধ করেছেন । [৮৫৮]
বহিরাগত বিক্রেতার সঙ্গে সাক্ষাত করা এবং গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসীর বিক্রয় করা নিষিদ্ধ
‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা পণ্যবাহী কাফেলার সাথে (শহরে প্রবেশের পূর্বে সস্তায় পণ্য খরিদের উদ্দেশে) সাক্ষাৎ করবে না এবং শহরবাসী যেন গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রয় না করে। রাবী তাউস (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, শহরবাসী যেন গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রয় না করে, তাঁর এ কথার অর্থ কী? তিনি বললেন, তার হয়ে যেন সে প্রতারণামূলক দালালী না করে। আব্বাসকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, শহরে লোক গ্রাম্য লোকের (ক্রয়-বিক্রয়ে) যেন দালালী না করে। -শব্দ বিন্যাস বুখারীর। [৮৫৯] আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পণ্য আমদানীকারীদের সাথে পথে গিয়ে ক্রয় করবে না; এভাবে ক্রয় করলে বিক্রেতা মোকামে পৌঁছে ঐ ক্রয় বাতিল করার অধিকারী হবে। [৮৬০]
কোন ভাইয়ের বিক্রয়ের উপর বিক্রয় করা (কমমূল্যে বিক্রয় করার প্রস্তাব দেয়া) এবং কোন ভাইয়ের ক্রয়ের উপর ক্রয় করা (বেশী দাম দিয়ে ক্রয় করার প্রস্তাব দেওয়া) নিষিদ্ধ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসী কর্তৃক বিক্রয় করা হতে নিষেধ করেছেন এবং তোমরা প্রতারণামূলক দালালী করবে না। কোন ব্যক্তি যেন তার ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় না করে। [৮৬১] কেউ যেন তার ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব না দেয়। কোন মহিলা যেন তার বোনের (সতীনের) তালাকের দাবী না করে, যাতে সে তার পাত্রে যা কিছু আছে, তা নিজেই নিয়ে নেয়। (অর্থাৎ বর্তমান স্ত্রীর হক নষ্ট করে নিজে তা ভোগ করার জন্য) -মুসলিম শরীফে আরো আছে- কোন মুসলিম ভাইয়ের ক্রয় করার দরের উপরে দর করবে না। [৮৬২]
দাস-দাসীদের বিক্রির ক্ষেত্রে এদের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো (অর্থাৎ একজনকে এক জায়গায় আর অন্যজনকে অন্য জায়গায় বিক্রি করা) নিষেধ
আবূ আইউব আল-আনসারী (রাঃ) আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি দাসী বিক্রয়কালে মাতা-পুত্রের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটায় পরকালে তার প্রিয়জনের থেকে আল্লাহ্ তাকে পৃথক করে দেবেন। -আহমাদ (রাঃ), তিরমিযী ও হাকিম হাদীসটিকে সহীহ্ বলেছেন কিন্তু তার সানাদ সম্বন্ধে বিরূপ বক্তব্য রয়েছে; এ হাদীসটির একটা শাহেদ বা সমর্থক রয়েছে। [৮৬৩] ‘আলী ইবনু আবী তালিব (রাঃ) তিনি বলেছেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দুটি দাসভাইকে বিক্রয়ের আদেশ দিয়েছিলেন। আমি তাদেরকে পৃথকভাবে বিক্রি করে দিয়েছিলাম। অতঃপর আমি এ কথা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানালে তিনি বললেন, তাঁদেরকে পেলে ফেরত আনবে এবং তুমি তাঁদেরকে একত্রে বিক্রয় করবে। (অর্থাৎ তারা দুইভাই যেন একত্রে বাস করতে পারে।) -এটির সকল বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য; ইবনু খুযাইমাহ, ইবনু জারূদ, ইবনু হিব্বান, হাকিম, তাবারানী ও ইবনু কাত্তান এটিকে সহীহ বলেছেন। [৮৬৪]
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করার বিধান
আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যুগে একবার জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেলো। লোকজন বললো, হে আল্লাহর রাসূল! জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। অতএব আপনি আমাদের জন্য মূল্য বেঁধে দিন। তিনি বলেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ মূল্য নিয়ন্ত্রণকারী, সংকোচনকারী, সম্প্রসারণকারী এবং রিযিক দানকারী। আমি আমার রবের সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাত করতে চাই যে, কেউ যেন আমার বিরুদ্ধে রক্তের ও সম্পদের কোনরূপ অভিযোগ উত্থাপন করতে না পারে। -ইবনু হিব্বান একে সহীহ বলেছেন। [৮৬৫]
(খাদ্য দ্রব্য) গুদামজাত করার বিধান
মা‘মার বিন ‘আবদিল্লাহ (রাঃ) তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেনঃ খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত কেবল (সমাজ বিরোধী) পাপী লোকেরাই করে থাকে। [৮৬৬]
উট, গরু, ছাগলের দুধ আটকিয়ে রেখে বিক্রয় করা নিষেধ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমরা উটনী ও বকরীর দুধ (স্তন্যে) আটকিয়ে রেখ না। যে ব্যক্তি এরূপ পশু ক্রয় করে, সে দুধ দোহনের পরে দু’টি অধিকারের যেটি তার পক্ষে ভাল মনে করবে তাই করতে পারবে। যদি সে ইচ্ছা করে তবে ক্রয়কৃত পশুটি রেখে দিবে আর যদি ইচ্ছা করে তবে তা ফেরত দিবে এবং এর সাথে এক সা‘ পরিমাণ খেজুর দিবে। মুসলিমে রয়েছেঃ ক্রেতা ৩ দিন পর্যন্ত ফেরতের সুযোগ পাবে। অন্য হাদীসে, মুআল্লাকরূপে বুখারীতেও আছে- এক সা‘ খাদ্য দ্রব্য দেবে, গম দিলে হবে না, ইমাম বুখারী বলেছেন- এক্ষেত্রে খেজুরের কথা অধিক উল্লেখ রয়েছে। [৮৬৭] আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) তিনি বলেন, যে ব্যক্তি (স্তন্যে) দুধ আটকিয়ে রাখা বকরী ক্রয় করে তা ফেরত দিতে চায়, সে যেন এর সঙ্গে এক সা‘ পরিমাণ খেজুরও দেয়। বুখারী (রহঃ); ইসমাইলী বর্ণনা অতিরিক্ত করেছেন যে, খেজুর হতে এক সা‘ বা আড়াই কেজি মালিককে দেবে। [৮৬৮]
প্রতারনা, ঠগবাজি করা নিষেধ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটা ‘খাদ্য-স্তুপের’ পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে তাঁর হাত তাতে প্রবেশ করালেন। ফলে তাঁর আঙ্গুলে কিছু ভিজা অনুভূত হল। তারপর তিনি বললেন, হে খাদ্য বিক্রেতা, এ আবার কি? লোকটি বললেন হে আল্লাহ্র রাসূল, ওতে বৃষ্টি পেয়েছে। তিনি বললেন, ‘কেন তুমি ঐ ভেজা অংশটাকে উপরে রাখলে না- তাহলে লোকে তা দেখতে পেত। যে ধোকাবাজী করে (কেনা-বেচা করে) সে আমাদের নীতিতে নয়।’ [৮৬৯]
মদ তৈরিকারকদের নিকট আঙ্গুর বিক্রি করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা
বুরাইদাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- আঙ্গুর পাড়বার মৌসুমে বিক্রয় না করে যে ব্যক্তি মদ তৈরিকারকদের নিকটে বিক্রয় করার জন্য আঙ্গুরকে গোলাজাত করে রাখে তাহলে সে জেনে-বুঝেই বলপূর্বক জাহান্নামে প্রবেশ করে। তাবরানীর আল-আওসাত নামক কিতাবে উত্তম সানাদে বর্ণনা করেছেন। [৮৭০]
জিম্মাদার ব্যক্তি লভ্যাংশের হকদার
আয়িশা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- (দাস-দাসী বা পশু বা অন্য কিছুর হতে) লভ্যাংশের অধিকার জিম্মাদারী পাবে। (কেননা, ক্ষয়-ক্ষতির দায়-দায়িত্ব তারই)। -বুখারী ও আবূ দাউদ (রহঃ) একে যয়ীফ বলেছেন; তিরমিযী, ইবনু খুযাইমাহ, ইবনু জারূদ, ইবনু হিব্বান, হাকিম ও ইবনু কাত্তান হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। [৮৭১]
লভ্যাংশ খরচ করার বিধান
উরওয়া আল-বারিকী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর জন্য একটা কুরবানীর জন্তু বা ছাগল কেনার উদ্দেশ্যে তাকে একটি দীনার দেন। তিনি তাঁর জন্য দুটি ছাগল কিনে এর একটি এক দীনারে বিক্রয় করে একটি দীনার ও একটি ছাগল নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উপস্থিত হন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জন্য বরকতের দোয়া করেন। রাবী বলেন, এরপর তিনি মাটি কিনলে তাতেও লাভবান হতেন। - বুখারী অন্য হাদীসের আনুসঙ্গিকরূপে হাদীসটি তাখরীজ করেছেন তবে তার শব্দ ব্যবহার করেননি। [৮৭২] বর্ণনাকারী তিরমিযী এর পৃষ্ঠপোষকরূপে হাকিম বিন হিযামের একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। [৮৭৩]
ধোঁকা দিয়ে বিক্রি করার কতিপয় মাসআলা
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গবাদি পশুর গর্ভস্থ বাচ্চা প্রসবের পূর্বে, পশুর স্তনের দুধ পরিমাণ না করে, পলাতক গোলাম, গানীমাতের মাল বন্টনের পূর্বে, দান-খয়রাত হস্তগত করার পূর্বে এবং ডুবুরীর বাজির ভিত্তিতে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। - ইবনু মাজাহ, বায্যার ও দারাকুতনী দুর্বল সানাদে (রাঃ)। [৮৭৪] ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মাছ পানিতে থাকা অবস্থায় ক্রয় করবে না- কেননা এটা একটা ধোঁকা বিশেষ। - আহমাদ এর সানাদকে মাওকূফ হওয়া সঠিক বলে ইঙ্গিত করেছেন। [৮৭৫]
ধোঁকা দিয়ে বিক্রি করার আরও কতিপয় মাসআলা
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাওয়ার উপযোগী না হওয়া পর্যন্ত ফল বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন এবং পশম পশুর শরীরে থাকা অবস্থায় এবং দুধ ওলানে থাকাকালীন বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। - তাবারানীর আল-আওসাত, দারাকুতনী, আবূ দাউদ-ইকরামার মারাসিলে এটি বর্ণনা করেছেন, আর এটা (মুরসাল হওয়াটা) অগ্রগণ্য; আবূ দাউদ এটাকে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে শক্তিশালী সানাদে মাওকূফরূপেও বর্ণনা করেছেন। আর ইমাম বাইহাকী (রহঃ) তা প্রাধান্য দিয়েছেন। [৮৭৬] আবূ হুরাইরা (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাযামীন (পশুর পেটের বাচ্চা) ও মালাকীহ্ নরের পিঠের বীর্য (নসল সূত্র) বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। বায্যার (রাঃ); এর সানাদ দুর্বল। [৮৭৭]
ক্রয়ের ঠিক রাখা, না রাখার স্বাধীনতা
ক্রয়-বিক্রয়ের মালামাল ফেরত প্রদানকারী ব্যক্তিকে সুযোগ দেয়া মুস্তাহাব
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের (বা অনুতপ্ত ব্যক্তির অনুরোধে) চুক্তি ভঙ্গের সুযোগ দিলো, আল্লাহ তার ত্রুটি–বিচ্যুতি মাফ করবেন। - ইবনু হিব্বান ও হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন। [৮৭৮]
ক্রেতা এবং বিক্রেতার বেচা কেনার স্থান পরিত্যাগ করা পর্যন্ত সাওদা বাতিল করার অধিকার থাকা
ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেন, যখন দু’ ব্যক্তি ক্রয়-বিক্রয় করে, তখন তাদের উভয়ে যতক্ষণ বিচ্ছিন্ন না হবে অথবা একে অপরকে ইখতিয়ার প্রদান না করবে, ততক্ষণ তাদের উভয়ের ইখতিয়ার থাকবে। এভাবে তারা উভয়ে যদি ক্রয়-বিক্রয় করে তবে তা সাব্যস্ত হয়ে যাবে। আর যদি তারা উভয়ে ক্রয়-বিক্রয়ের পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তাদের কেউ যদি তা পরিত্যাগ না করে তবে ক্রয়-বিক্রয় সাব্যস্ত হয়ে যাবে। - শব্দ বিন্যাস মুসলিমের। [৮৭৯]
চুক্তিভঙ্গের শঙ্কায় ক্রেতা-বিক্রেতার স্থান ত্যাগ করা নিষেধ
আম্র বিন শু‘আইব তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি তাঁর দাদা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয় বেচাকেনার স্থান ছেড়ে যাবার পূর্ব পর্যন্ত (ক্রয়-বিক্রয় বাতিল করার) অধিকারী থাকবে। এ সুযোগ থাকবে তাদের জন্য- যারা খেয়ার বা অধিকার দেয়ার চুক্তিতে ক্রয় বিক্রয় করবে। ক্রয়-বিক্রয় প্রত্যাহার করবে এ ভয়ে অন্যকে ছেড়ে চলে যাওয়া হালাল বা বৈধ হবে না। আর অন্য বর্ণনায় আছে- ‘এ অধিকার তাদের উভয়ের স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত।’ [৮৮০]
কেনা বেচায় প্রতারিত ব্যক্তির বিক্রয় বাতিল করার অধিকার থাকার বিধান
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) এক সাহাবী নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উল্লেখ করলেন যে, তাকে ক্রয়-বিক্রয়ে ধোঁকা দেয়া হয়। তখন তিনি বললেন, যখন তুমি ক্রয়-বিক্রয় করবে তখন বলবে কোন প্রকার ধোঁকা নেই। [৮৮১]
সুদ
সুদের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এবং এর কঠিন শাস্তির প্রসঙ্গ
জাবির (রাঃ) তিনি বলেছেন- নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুদগ্রহীতা, সুদদাতা, সুদ লেন-দেনের লেখক ও সাক্ষীদ্বয়কে লানত করেছেন। আর তিনি তাদের সকলকে সমান (অপরাধী) বলেছেন। [৮৮২] বর্ণনাকারী বুখারীতেও আবূ জুহাইফাহ থেকে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। [৮৮৩] আবদুল্লাহ বিন মাস‘ঊদ (রাঃ) তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন – সুদের সত্তরটি স্তর (প্রকারভেদ) রয়েছে। তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা ছোটটি হচ্ছে – কোন ব্যক্তি তার মা বিবাহ করার ন্যায় আর কোন মুসলিম ভাই – এর সম্মান হানী করাও বড় ধরনের সুদের সমতুল্য (পাপ কাজ)। - ইবনু মাজাহ সংক্ষিপ্তভাবে; হাকিম পূর্ণভাবে বর্ণনা করে সহীহ বলেছেন। [৮৮৪]
সুদী লেনদেনের প্রকার এবং পন্য বিনিময়ের পদ্ধতি
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সমান পরিমাণ ছাড়া তোমরা সোনার বদলে সোনা বিক্রি করবে না, একটি অপরটি হতে কম-বেশি করবে না। [৮৮৫] সমান ছাড়া তোমরা রূপার বদলে রূপা বিক্রি করবে না ও একটি অপরটি হতে কম-বেশি করবে না। আর নগদ মুদ্রার বিনিময়ে বাকী মুদ্রা বিক্রি করবে না। [৮৮৬] উবাদাহ বিন সামিত (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- সোনার দ্বারা সোনা, রূপার দ্বারা রূপা, গমের বদলে গম, যবের বদলে যব, খেজুরের বদলে খেজুর ও লবণের বদলে লবণ লেনদেন (কম-বেশি না করে) একই রকমে সমপরিমাণে ও হাত বাঁ হাত অর্থাৎ নগদে বিক্রয় চলবে। যখন ঐ বস্তুগুলোর মধ্যে প্রকারভেদ থাকবে তখন নগদে তোমরা ইচ্ছানুযায়ী বিক্রয় কর। [৮৮৭] আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- সোনার পরিবর্তে সোনার (লেনদেন) ওজনে সমানে সমানে হবে আর রূপা, রূপার পরিবর্তে ওজনে বরাবর হতে হবে। যে ব্যক্তি এ সবের লেনদেনে বেশি দেবে বা বেশি নেবে তা সুদ বলে গণ্য হবে। [৮৮৮]
পরস্পর বিনিময়ে একই জাতীয় পণ্যে অতিরিক্ত গ্রহণ হারাম
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে খায়বারে তহসীলদার নিযুক্ত করেন। সে জানীব নামক (উত্তম) খেজুর নিয়ে উপস্থিত হলে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, খায়বারের সব খেজুর কি এ রকমের? সে বলল, না, আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রসূল! এরূপ নয়, বরং আমরা দু’ সা’ এর পরিবর্তে এ ধরনের এক সা’ খেজুর নিয়ে থাকি এবং তিন সা’ এর পরিবর্তে এক দু’ সা’। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এরূপ করবে না। বরং মিশ্রিত খেজুর দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দিরহাম দিয়ে জানীব খেজুর ক্রয় করবে এবং তিনি বললেন, ওজন করা হয় এমন বস্তুর লেনদেন এরূপভাবে হবে। মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, এভাবেই এর পরিমাপ করতে হবে। [৮৮৯]
নির্দিষ্ট পরিমাণের বিনিময়ে অনির্দিষ্ট বস্তু লেনদেনের বিধান
জাবির বিন ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দিষ্ট পরিমাণ খেজুরের বদলে খেজুরের ঐরূপ স্তুপ বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন যার কোন পরিমাণ জানা নেই। [৮৯০]
খাদ্যের বিনিময়ে খাদ্য বিক্রির বিধান
মা’মার বিন ‘আবদিল্লাহ তিনি বলেছেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, খাদ্য বস্তুর বদলে- বরাবর, সমানে সমান লেনদেন হবে। সাহাবী বলেছেন- আমাদের তৎকালীন সাধারণ খাদ্য বস্তু ছিল যব। [৮৯১]
এক পণ্যের সাথে অন্য পণ্য মিলিত থাকাবস্থায় লেনদেনের বিধান
ফুযালাহ বিন ‘উবাইদ (রাঃ) তিনি বলেন, খায়বার বিজয়ের (ঐতিহাসিক) দিবসে আমি একখানা হার বারো দিনারের বদলে খরিদ করেছিলাম। তাতে সোনা ও ছোটা দানা বা পুঁতি (মূল্যবান পাথর) ছিল। ঐগুলোকে আমি পৃথক করে খুলে ফেলায় [৮৯২] তাতে আমি বারো দিনারের অধিক (সোনা) পেলাম। এ সংবাদ আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দিলাম। তিনি বললেন, এটিকে খোলার পূর্বে বিক্রয় করা যাবে না। [৮৯৩]
বাকীতে প্রাণীর বদলে প্রাণী বিক্রির বিধান
সামুরাহ বিন জুনদুব (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রাণীর বদলে প্রাণী বাকীতে বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। - তিরমিযী ও ইবনু জারূদ একে সহীহ বলেছেন। [৮৯৪] আবদুল্লাহ বিন ‘আম্র (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে একটি সৈন্যদলের প্রস্তুরি জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তখন উট নিঃশেষিত, ফলে তিনি তাকে সাদাকাহর উটের উপর উট সংগ্রহের আদেশ দিলেন। বর্ণনাকারী (সাহাবী) বলছেন, আমি সদাকাহর উট এলে একটি উটের বদলে দু’টি উট দেব বলে উট সংগ্রহ করতে লাগলাম। - এর রাবীগণ নির্ভরযোগ্য। [৮৯৫
‘ঈনা’ ক্রয় বিক্রয়ের বিধান
ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেছেন- আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, যখন তোমরা ‘ঈনা (নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে পুনঃ মূল্য কম দিয়ে ক্রেতার নিকট হতে ঐ বস্তু ফেরত নিয়ে) কেনা-বেচা করবে আর গরুর লেজ ধরে নেবে এবং চাষবাসেই তৃপ্ত থাকবে আর আল্লাহ্র পথে জিহাদ (সংগ্রাম) করা বর্জন করবে তখন আল্লাহ তোমাদেরকে অবমাননার কবলে ফেলবেন আর তোমাদের দ্বীনে প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত তোমাদের উপর থেকে এটা অপসারিত করবেন না।– আবূ দাঊদ নাফি‘ কর্তৃক বর্ণিত। এর সানাদে ত্রুটি রয়েছে; আহমাদেও তদ্রূপ আতা কর্তৃক বর্ণিত; এর বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য; ইবনু কাত্তান এটিকে সহীহ বলেছেন। [৮৯৭]
কারও জন্য সুপারিশ করার বিনিময়ে হাদিয়া গ্রহণ করার বিধান
আবূ উমামাহ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার কোন ভায়ের জন্য সুপারিশ করল, অতঃপর তার জন্য হাদিয়া দিল তারপর সুপারিশকারী তা গ্রহণ করল, তাহলে সে সুদেরই এক বড় দরজায় উপনীত হল।– এর সানাদটি আলোচনা সাপেক্ষ। [৮৯৮]
ঘুষের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা
আবদুল্লাহ বিন্ ‘আম্র বিন্ আস (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুষ দাতা ও ঘুষ গ্রহীতা উভয়কেই অভিসম্পাত করেছেন। - তিরমিযী একে সহীহ বলেছেন। [৮৯৯]
‘মুযাবানাহ’ নামক ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুযাবানা নিষেধ করেছেন, আর তা হলো বাগানের ফল বিক্রয় করা। খেজুর হলে মেপে শুকনো খেজুরের বদলে, আঙ্গুর হলে মেপে কিসমিসের বদলে, আর ফসল হলে মেপে খাদ্যের বদলে বিক্রি করা। তিনি এসব বিক্রি নিষেধ করেছেন। [৯০০]
শুকনো খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রি করার বিধান
‘দ বিন আবূ আক্কাস (রাঃ) তিনি বলেছেন- আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে শুকনা খেজুরের সাথে তাজা খেজুরের বিনিময় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে শুনেছি। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তাজা খেজুর শুকালে কি কমে যায়? লোকজন বলেন, হাঁ। তিনি এ জাতীয় লেনদেন করতে নিষেধ করেন। - ইবনু মাদীনী, তিরমিযী, ইবনু হিব্বান ও হাকিম একে সহীহ বলেছেন। [৯০১]
ঋণের পরিবর্তে ঋণ বিক্রয় করা নিষেধ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কালয়ী দ্বারা কালায়ী অর্থাৎ ঋণের পরিবর্তে ঋণ বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। ইসহাক, বায্যার দুর্বল সানাদে (রাঃ)। [৯০২]
বাই-‘আরায়ার অনুমতি, মূল বস্তু (গাছ) ও ফল বিক্রয়
‘আরায়া’‘র বিধান [৯০৩]
যায়দ ইব্নু সাবিত (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরায়্যার ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছেন যে, ওযনকৃত খেজুরের বিনিময়ে গাছের অনুমানকৃত খেজুর বিক্রি করা যেতে পারে। মুসলিমে আছে- আরিয়া ক্রয়-বিক্রয়ে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুমতি দিয়েছেন। বাড়ীওয়ালা শুকনো খেজুর দিয়ে গাছের তাজা খেজুর অনুমানের ভিত্তিতে নিবে এবং ঐ টাট্কা খেজুর খাবে। [৯০৪] আবূ হুরাইরা (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঁচ অসাকের কম পরিমাণ অথবা পাঁচ অসাক পরিমাণ (গাছের) তাজা খেজুর অনুমান করে শুকনো খেজুরের বিনিময়ে বিক্রয় করার অনুমতি দিয়েছেন। [৯০৫]
গাছের ফল ব্যবহারের উপযোগী হওয়ার পূর্বেই বিক্রয় করা নিষেধ
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গাছের ফল ব্যবহার উপযোগী হওয়ার আগেই তা বিক্রি করতে ক্রেতা ও বিক্রেতাকে নিষেধ করেছেন। অন্য বর্ণনায় আছে- সেলাহ্ (পুষ্ট) হবার অর্থ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হয়ে তিনি বলতেন, ‘ফলের দূর্যোগকাল উত্তীর্ণ হওয়া।’ [৯০৬] আনাস বিন মালিক (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবশ্য ফলে পরিপক্কতা আসার পূর্বে বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। ‘পরিপক্কতা’র অবস্থা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হয়ে তিনি বলেছেন- ফলের রং যেন লালচে বা হলুদ হয়ে ওঠে। - শব্দ বিন্যাস বুখারীর। [৯০৭] আনাস (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আঙ্গুরের ক্ষেত্রে কালচে রং না ধরা পর্যন্ত তা বিক্রয় করতে একং শস্য দৃঢ় পুষ্ট হবার পূর্বে বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন।– ইবনু হিব্বান ও হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন। [৯০৮]
গাছের ফল বিক্রি করার পর যদি প্রাকৃতির দূর্যোগে নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে ক্ষতির পরিমানমত মূল্য বিক্রেতার ছেড়ে দেওয়ার আদেশ
জাবির বিন ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- যদি তুমি তোমার কোন (মুসলিম) ভাই-এর নিকটে ফল বিক্রয় কর তারপর তা কোন দুর্যোগে নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তার নিকট থেকে কিছু (মূল্য বাবদ) গ্রহণ করা তোমার জন্য বৈধ হবে না। কারণ তোমার মুসলিম ভাইয়ের মাল (মূল্য) তুমি কিসের বিনিময়ে নেবে? অন্য বর্ণনায় আছে- অবশ্য নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দূর্যোগে ক্ষতির পূরণ করতে বলেছেন। অর্থাৎ এ অবস্থায় ক্ষতির পরিমাণমত মূল্য না নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। [৯০৯]
খেজুর বাগান তা’বীর করার পর বিক্রি করার বিধান [৯১০]
ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- যে ব্যক্তি খেজুর গাছ তা’বীর (ফুলের পরাগায়ন) করার পর গাছ বিক্রয় করে, তার ফল বিক্রেতার। কিন্তু ক্রেতা শর্ত করলে তা তারই। [৯১১]
সালম (অগ্রিম) ক্রয় বিক্রয়, ঋণ ও বন্ধক
অগ্রিম বেচা কেনার বৈধতা এবং এ শর্তসমূহের বর্ণনা
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মাদীনায় আগমন করেন তখন লোকেরা এক বা দু’ বছরের বাকীতে খেজুর সলম (অগ্রিম বিক্রি পদ্ধতিতে) বেচা-কেনা করত। এতে তিনি বললেন, যে ব্যক্তি খেজুরে সলম করতে চায় সে যেন নির্দিষ্ট মাপে এবং নির্দিষ্ট ওজনে সলম করে। বুখারীতে ‘ফলের’ স্থলে ‘যে কোন বস্তুর’ কথা উল্লেখের রয়েছে। [৯১২] আবদুর রহমান বিন আব্যা ও ‘আবদুল্লাহ বিন আবী আওফা (রাঃ) তাঁরা বলেছেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে (জিহাদে) আমরা মালে গনীমত লাভ করতাম, আমাদের কাছে সিরিয়া হতে কৃষকগণ আসলে আমরা তাদের সঙ্গে গম, যব ও যায়তুনে সলম করতাম। অন্য একটি বর্ণনায় আছে- এবং তেলে-নির্দিষ্ট মেয়াদে। তিনি [মুহাম্মাদ ইবনু আবূ মুজালিদ (রহঃ)] বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, তাদের নিকট সে সময় ফসল মওজুদ থাকত, কি থাকত না? তাঁরা উভয়ে বললেন, আমরা এ বিষয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করিনি। [৯১৩]
মানুষের সম্পদ নষ্ট করা অথবা ফেরত দেয়ার উদ্দেশ্যে গ্রহণকারীর প্রতিদান
আবূ হুরাইরা (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষের মাল (ধার) নেয় পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা‘আলা তা আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন। আর যে তা নেয় বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা‘আলা তাকে ধ্বংস করেন। [৯১৪]
পণ্য বিক্রয় করার বিধান
আয়িশা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! অমুক (ইয়াহূদী) লোকের কাপড় সিরিয়া থেকে এসেছে, আপনি যদি তার নিকট লোক পাঠান তাহলে দু’খানা কাপড় বাকীতে এ কথার উপর আনবেন যে, পরে সক্ষম হলে তার দাম দিয়ে দিবেন। ফলে তিনি তার কাছে লোক পাঠালেন কিন্তু সে তা দিলনা। -এ হাদীসের রাবীগণ নির্ভরযোগ্য (সিকা)। [৯১৫]
বন্ধক রাখা জিনিসের বন্ধক গ্রহীতার উপকার নেয়ার বিধান
আবূ হুরাইরা (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, বাহনের পশু বন্ধক থাকলে তার খরচের পরিমাণে তাতে আরোহণ করা যাবে। তদ্রূপ দুধেল প্রাণী বন্ধক থাকলে তার খরচের পরিমাণে দুধ পান করা যাবে। (মোট কথা) আরোহণকারী এবং দুধ পানকারীকেই খরচ বহন করতে হবে। [৯১৬]
বন্ধকদাতা কর্জ আদায়ে অপারগতার কারণে বন্ধকগ্রহীতা বন্ধক রাখা জিনিসের হকদার হবে না
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- বন্ধক রাখা বস্তু থেকে তার মালিককে বঞ্চিত করা যাবে না। যা লাভ হবে তা তার এবং লোকসানও তাকেই নিতে হবে। -হাদীসের রাবীগণ নির্ভরযোগ্য কিন্তু আবূ দাউদ ও অন্য মুহাদ্দিসের নিকটে এটা মুরসাল হাদীস বলে সংরক্ষিত। [৯১৭]
কর্জ করা এবং তা পরিশোধের সময় অতিরিক্ত দেওয়া জায়েয
আবূ রাফি‘ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তির নিকট থেকে একটা অল্প বয়সের উট [৯১৮] ধার নিয়েছিলেন। তারপর তাঁর নিকটে যাকাতের উট এসে গেলে তিনি আবূ রাফে‘কে ঐরুপ অল্প বয়সের একটি (বাকারাহ্) উট দিয়ে দিতে আদেশ দিলেন। আবূ রাফে‘ বললেন, আমি সপ্তম বছরে পদার্পণকারী রাবায়ী উত্তম উট ব্যতীত পাচ্ছি না। [৯১৯] নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাকে ভাল উটই দিয়ে দাও। কারণ লোকেদের মধ্যে অবশ্য ঐ ব্যক্তি উত্তম যিনি ঋণ পরিশোধে উত্তম। (মুসলিম) [৯২০]
ঋণে লাভ বা উপস্বত্ত লাভের বিধান
আলী (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, লাভ বা উপস্বত্ত লাভের এরূপ সমস্ত ঋণই সুদে গণ্য হবে। হাদীসটিকে হারিস বিন আবূ উসামাহ বর্ণনা করেছেন; এর সানাদ সাকিত বা অগ্রহণযোগ্য বা বাতিল। [৯২১] ফুযালাহ বিন ‘উবাইদ (রাঃ) বাইহাকীতে দুর্বল সূত্রে এই হাদীসটির একটি শাহিদ (সমর্থক হাদীস) রয়েছে। [৯২২] আবদুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) বুখারীতে একটা মাওকূফ হাদীস রয়েছে। [৯২৩]
দেউলিয়া ও সম্পত্তির কর্তৃত্ব বিলোপ
নিঃস্ব ব্যক্তির নিকটে ঋণদাতা তার মাল হুবহু পেয়ে গেলে তার বিধান
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যখন কেউ তার মাল এমন লোকের কাছে পায়, যে নিঃসম্বল হয়ে গেছে, তবে অন্যের চেয়ে সে-ই তার বেশী হকদার। [৯২৪] ইমাম আবূ দাউদ ও মালিক উক্ত আবূ বাক্র (রাঃ) থেকে মুরসালরূপে এরূপ শব্দযোগে বর্ণনা করেছেন ‘কোন ব্যক্তি কোন বস্তু (বাকীতে) বিক্রয় করল, তারপর ক্রেতা অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়লো, অথচ বিক্রেতা তার মূল্য বাবদ কিছুই গ্রহণ করেনি-যদি ঐ বিক্রিত বস্তুটি পূর্ববৎই থেকে থাকে তাহলে বিক্রেতাই ঐ বস্তুর অধিক হকদার হবে। আর যদি ক্রেতা মরে গিয়ে থাকে তাহলে বিক্রেতা অন্যান্য মহাজনদের সমপর্যায়ভুক্ত হবে। [৯২৫] (সহিহ লিগাইরিহি) বাইহাকী একে মাওসূল বা অবিচ্ছিন্ন সানাদযুক্ত হাদীসরূপে বর্ণনা করেছেন ও আবূ দাউদের অভিমতের অনুকূলে হাদীসটিকে যঈফ বলেছেন। [৯২৬] আর ‘উমার বিন খালদাহ কর্তৃক আবূ দাউদে ও ইবনু মাজাহতে বর্ণিত হয়েছে- আমরা আমাদের এক নিঃস্ব বন্ধুর ব্যাপারে আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর নিকটে আসলাম। তিনি বললেন, আমি এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ফয়সালা অনুযায়ী ফয়সালা দেব। (তা হচ্ছে) যে ব্যক্তি বাকীতে কোন বস্তু ক্রয় করার পর নিঃস্ব হয়ে যায় অথবা মারা যায়, আর বিক্রেতা ব্যক্তি তার ঐ মাল ঠিকভাবে পেয়ে যায়, তাহলে সে ঐ বস্তুর সর্বাপেক্ষা অধিক হকদার হবে। হাকিম হাদীসটিকে সহীহ্ বলেছেন। আর আবূ দাউদ একে যঈফ বলেছেন এবং অত্র হাদীসে মৃত্যুর উল্লেখ সংযেজিত অংশটুকুকেও তিনি যঈফ বলেছেন। [৯২৭]
সামর্থবান ব্যক্তির ঋণখেলাপি হওয়া হারাম এবং তার বিরুদ্ধে যা করা বৈধ
আম্র ইবনু শারীদ (রাঃ) তিনি তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সামর্থ্যবান ধনী ব্যক্তির ঋণ পরিশোধে টালবাহানা করার অপরাধ তার সম্মানহানি ও শাস্তিপ্রাপ্তিকে বৈধ করে দেয়। -বুখারী হাদীসটিকে মু‘আল্লাকরূপে বর্ণনা করেছেন; ইবনু হিব্বান একে সহীহ্ বলেছেন। [৯২৮]
নিঃস্ব ব্যক্তির সম্পদ বণ্টন এবং তাকে দান করা শরীয়তসম্মত
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) তিনি বলেছেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে কোন ব্যক্তি ফল ক্রয় করে তাতে বিপদগ্ৰস্ত হয়ে পড়েন এবং তার ঋণের বোঝা বেড়ে যায়। ফলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা তাকে সাদাকাহ (সাহায্য) প্রদান কর। লোকেরা তাকে সাদাকাহ বা সাহায্য করলো কিন্তু ঐ সাহায্যের পরিমাণ ঋণ সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ করার মত হল না। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার পাওনাদারদেরকে বললেন, যা পাচ্ছ তা নাও, এর অধিক আর তোমাদের জন্য হবে না। [৯২৯]
নিঃস্ব ব্যক্তির মালিকানা হরণ শরীয়তসম্মত
কা‘ব বিন মালিক কর্তৃক তাঁর পিতা (রাঃ) অবশ্য রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (তাঁর প্রিয় সাহাবী) মু‘আযের মালের উপর ক্রোক আরোপ করেছিলেন, আর তাঁর ঋণ পরিশোধ হেতু তাঁর মাল বিক্রয় করে দিয়েছিলেন। দারাকুতনী (রাঃ), হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন; আবূ দাউদ একে মুরসাল হাদীসরূপে বর্ণনা করেছেন এবং হাদীসটি মুরসাল হওয়াকে অগ্রগণ্য বলেছেন। [৯৩০] ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমার ১৪ বছর বয়সে ওহুদ যুদ্ধের সময় আমাকে যোদ্ধাদের মধ্যে শামিল করার জন্য রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে হাজির করা হলে তিনি আমাকে অনুমতি দেননি। তারপর খন্দকের যুদ্ধের সময় ১৫ বছর বয়সে আমাকে তাঁর সম্মুখে পেশ করা হলে তিনি আমাকে এর অনুমতি প্রদান করেন। [৯৩১] বাইহাকীতে আছে, আমাকে অনুমতি দেননি আর আমাকে সাবালক মনে করেননি। ইব্নু খুযাইমাহ হাদীসটিকে সহীহ্ বলেছেন। [৯৩২]
গুপ্ত স্থানে লোম উঠার মাধ্যমে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া
আতিয়্যাহ কুরাযী (রাঃ) তিনি বলেছেন, বানু কুরাইযার (সামরিক শাস্তির) ঘটনাকালে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে আমাদেরকে হাজির করা হয়, তাতে যে সব যুবকের গুপ্ত স্থানের লোম উদ্গম হয়েছিল তাদেরকে (অপরাধী ধরে) হত্যা করা হল আর যাদের তা বের হয়নি তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হল। আমার সে সময় তা বের হয়নি বলে আমাকে (নাবালেগ ধরে) ছেড়ে দেয়া হয়েছিল-ইব্নু হিব্বান ও হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন। [৯৩৩]
স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে স্ত্রীর নিজের মাল হতে খরচ করার বিধান
‘আম্র বিন শু‘আইব তিনি তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, স্বামীর বিনা অনুমতিতে কোন দান বৈধ হবে না। অন্য শব্দে আছে, কোন স্ত্রীলোকের জন্য তার মালের হস্তান্তর বা অন্যকে প্রদান করা বৈধ হবে না যদি তাঁর স্বামী তার ইজ্জত আব্রুসহ জীবনযাপনের দায়িত্ব বহন করেন। -ইমাম হাকিম সহীহ্ বলেছেন। [৯৩৪]
কোন ব্যক্তির ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া তিনজন সাক্ষী ব্যতীত গ্রহীত হবে না
কাবীসাহ বিন মুখারিক তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তিন শ্রেণীর লোক ব্যতীত কারও জন্য ভিক্ষা করা বৈধ নয়। ১ কোন ব্যক্তি কারও ঋণ পরিশোধের জিম্মাদারী নিয়েছে তা আদায় দেয়া পর্যন্ত তার ভিক্ষা চাওয়া বৈধ- তারপর সে তা থেকে বিরত থাকবে। ২ কোন ব্যক্তির ধনসম্পদ কোন দুর্যোগহেতু ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় তার জন্য- তার জীবন ধারনের সামর্থ্য অর্জন পর্যন্ত ভিক্ষা করা বৈধ হবে। ৩ ঐ ব্যক্তি যাকে দুর্ভিক্ষে পেয়েছে, অতঃপর তার অনাহার থাকার পক্ষে তার কওমের মধ্যে থেকে তিনজন জ্ঞানী লোক সাক্ষী দেন যে অমুক ব্যক্তিকে দুর্ভিক্ষে পেয়েছে, তার জন্য ভিক্ষা করা বৈধ হবে। [৯৩৫]
আপোষ মীমাংসা
শরীয়ত বিরোধী না হলে সন্ধি করা জায়েয
আম্র বিন আওফ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- মুসলিমদের মধ্যে আপোষ-মীমাংসা করা বৈধ কাজ, তবে তার দ্বারা হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল করা হলে তা অবৈধ হবে । মুসলিম ব্যক্তি স্বীয় শর্তাদি পালনেও বাধ্য, তবে ঐ শর্ত পালনে বাধ্য নয় যার দ্বারা হালাল বস্তুকে হারাম ও হারাম বস্তুকে হালাল করা হয় । -তিরমিযী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন । অন্যান্য মুহাদ্দিস মুনকার বলেছেন । কেননা এ হাদীসের রাবী ‘কাসীর বিন ‘আবদুল্লাহ বিন আম্র বিন আওফ দুর্বল । তিরমিয়ী সম্ভবতঃ সানদের আধিক্যতা হেতু হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন ।” [৯৩৭] আবূ হুরাইরা (রাঃ) এই হাদীসটিকে ইবনু হিব্বান সহীহ বলেছেন।” [৯৩৮]
মুসলিম প্রতিবেশী তার অপর প্রতিবেশী ভাইকে তার দেয়ালে কাঠ গাড়তে দিতে বাধা প্রদান করা নিষেধ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন প্রতিবেশী যেন তার প্রতিবেশীকে তার দেয়ালে খুঁটি পুততে নিষেধ না করে । তারপর আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, কী হল, আমি তোমাদেরকে এ হাদীস হতে উদাসীন দেখতে পাচ্ছি । আল্লাহর কসম, আমি সব সময় তোমাদেরকে এ হাদীস বলতে থাকব । [৯৩৯]
মুসলিম ভাইয়ের অসন্তষ্ট-মনে তার সামন্যতম সম্পদ নেওয়া নিষেধ
আবু হুমাইদ সাঈদী (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন লোক তার ভাই-এর অন্তরকে ব্যথিত করে তার লাঠি (সামান্য বস্তু) গ্রহণও বৈধ হবে না । -ইবনু হিব্বান ও হাকিম তাঁদের সহীহা এর মধ্যে। [৯৪০]
অপর ব্যক্তির উপর ঋণ ন্যস্ত করা ও কোন বস্তুর যামীন হওয়া
হাওলার (অপর ব্যক্তির উপর কর্জ ন্যস্ত করা) বৈধতা এবং তা গ্রহণ করা
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ধনী ব্যক্তির ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করা জুলুম । যখন তোমাদের কাউকে (তার জন্যে) কোন ধনী ব্যক্তির হাওয়ালা করা হয়, তখন সে যেন তা মেনে নেয় । আহমাদের অন্য বর্ণনায় আছেঃ হাওয়ালা করলে তা মেনে নেবে।” [৯৪১]
মৃত ব্যক্তির কর্জের জিম্মা নেওয়া জায়েয এবং তা পরিশোধ না করা পর্যন্ত মৃত ব্যক্তি (শাস্তি থেকে রেহাই পাবে না)
জাবির (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমাদের কোন একজন সাহাবী ব্যক্তি ইনতিকাল করায় আমরা তার গোসল দিলাম, খুশবু লাগালাম, কাফন পরালাম । তারপর তার লাশ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকটে হাজির করলাম । আমরা বললাম, তার জানাযা পড়ান । তিনি দু-এক পা এগিয়ে আসলেন, অতঃপর বললেন, তার কি কোন ঋণ রয়েছে? আমরা বললাম, দুটি দীনার (ঋণ আছে) । এ কথা শুনে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফিরে গেলেন । আর কাতাদাহ দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) দু'টির ঋণ পরিশোধের জিম্মা নিলেন । তারপর আমরা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকটে এলাম, আবু কাতাদাহ বললেন, আমার জিন্মায় ঐ দীনার দুটি রইলো । তৎপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে ঋণ দাতার হক এবারে সাব্যস্ত হল এবং মৃতব্যক্তি ঋণ থেকে মুক্ত হল তো? আবু কাতাদাহ উত্তরে বললেন, জি-হাঁ । তারপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত সাহাবীর জানাযার সলাত আদায় করলেনম । ইবনু হিব্বান ও হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন। (৯৪২)
দরিদ্র মৃত ব্যক্তির ঋণের জিম্মা রাষ্ট্রীয় কোষাগারের নেওয়া জায়েয
আবূ হুরাইরা (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট যখন কোন ঋণী ব্যক্তির জানাযা উপস্থিত করা হত তখন তিনি জিজ্ঞেস করতেন, সে তার ঋণ পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত মাল রেখে গেছে কি? যদি তাকে বলা হত যে, সে তার ঋণ পরিশোধের মতো মাল রেখে গেছে তখন তার জানাযার সলাত আদায় করতেন । নতুবা বলতেন, তোমরা তোমাদের সাথীর জানায আদায় করে নাও । পরবর্তীতে যখন আল্লাহ তার বিজয়ের দ্বার উন্মুক্ত করে দেন, তখন তিনি বললেন, আমি মুমিনদের জন্য তাদের নিজের চেয়েও অধিক নিকটবর্তী । তাই কোন মু'মিন ঋণ রেখে মারা গেলে সে ঋণ পরিশোধ করার দায়িত্ব আমার । আর যে ব্যক্তি সম্পদ রেখে যায়, সে সম্পদ তার উত্তরাধিকারীদের জন্য । [৯৪৩] বুখারীর অন্য এক বর্ণনায় আছে- "যে মরে যাবে আর ঋণ পরিশোধের মত কিছু রেখে না যায়।” [৯৪৪]
হাদ্দের ক্ষেত্রে জিম্মা নেওয়ার বিধান
'আম্র বিন শু'আইব (রাঃ) তিনি তাঁর পিতা হতে, তিনি তার দাদা হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, হদ্-এর ব্যাপারে কোন জিম্মাদারী নেই । -বাইহাকী দুর্বল সানাদে । [৯৪৫]
যৌথ ব্যবসা ও উকিল নিয়োগ করা
শরীকানা ব্যবসার ক্ষেত্রে উপদেশ সহকারে উৎসাহ প্রদান এবং এতে খিয়ানত না করা
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেছেন- যতক্ষণ দু'জন শরীকদার ব্যবসায়ে একে অপরের সাথে খিয়ানত (বিশ্বাসঘাতকতা) না করে ততক্ষণ আমি তাদের তৃতীয় শরীক হিসাবে (তাদের সহযোগিতা করতে) থাকি । অতঃপর যখন খিয়ানত করে, তখন আমি তাদের মধ্য থেকে বেরিয়ে যাই (তারা আমাদের সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হয়) । -হাকিম একে সহীহ বলেছেন ।
শরীকানা ব্যবসায় ইসলাম আসার পূর্বেও প্রচলিত ছিলো
সায়িব ইবনু ইয়াযীদ মাখযূমী (রাঃ) তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ব্যবসায়ে শরীক ছিলেন তার নাবী হওয়ার পূর্বে । তারপর তিনি (মাখযুমী) মাক্কবিজয় দিবসে এলেন । নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বাগত জানিয়ে বললেন, 'মারহাবা স্বাগতম-হে আমার ভাই! আমার শেয়ারদার ।” [৯৪৭]
একাধিক অংশীদার হওয়ার বিধান
আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন সাদ (রাঃ), (আম্মার রাঃ) ও আমি গনীমতের মালের ব্যাপারে অংশীদার হই (এই মর্মে যে, আমরা যা পাবো তা তিনজনে ভাগ করে নিবে) । হাদীসের শেষে আছে- সা'দ দু’জন বন্দী আনলেন, আমি ও আম্মার কিছুই আনতে পারলাম না।” [৯৪৮]
উকিল (ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি) নিয়োগ করার বৈধতা
জাবির বিন আবদিল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমি খাইবারে যাবার মনস্থ করি । তাই নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে আসলাম । তিনি বললেন- যখন তুমি খাইবারে আমার উকিল বা প্রতিনিধির নিকটে গমন করবে তখন তুমি তার নিকট থেকে পনেরো ‘অসক' (খেজুর) নিয়ে নেবে । আবু দাউদ সহীহ বলেছেন । [৯৪৯]
দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির পক্ষে দায়িত্বভার অর্পনকারীর কল্যাণে মাল খরচের বিধান
উরওয়াহ বারিকী (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে একটি দীনার দিয়ে তার জন্য কুরবানীর জন্তু ক্রয় করতে পাঠিয়েছিলেন । অন্য হাদীসের মধ্যে তিনি এ অংশটুকু বর্ণনা করেছেন যা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে ।[৯৫০]
যাকাতদাতাদের কাছ থেকে যাকাত উসুল করার জন্য কোন ব্যক্তিকে নিয়োজিত করার বৈধতা
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইমরান (রাঃ)-কে সদাকাহ (যাকাত) আদায়ের জন্য নিয়োগ করেছিলেন । (হাদীসটির আরো অংশ রয়েছে) । [৯৫১]
উট কুরবানী করার ক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিয়োগ করা জায়েয
জাবির (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তেষট্টিটি উট কুরবানী করলেন এবং 'আলী (রাঃ)-কে অবশিষ্টগুলি (৩৭টি) যবাহ করার নির্দেশ দিলেন (এ হাদীসটি দীর্ঘ হাদীসের অংশবিশেষ) । [৯৫২] আবূ হুরাইরা (রাঃ) এক ব্যভিচারীর ঘটনায় নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, হে উনাইস (ইবনু যিহাক আসলামী) সে মহিলার নিকট যাও । যদি সে (অপরাধ) স্বীকার করে তবে তাকে প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা কর । (দীর্ঘ হাদীসের অংশবিশেষ)। [৯৫৩]
সকল বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান
সত্য কথা বলা আবশ্যক যদিও তা তিক্ত
আবূ যার গিফারী (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তুমি সত্য কথা বলবে যদিও তা তিক্ত (অপ্রিয়) হয়। ইবনু হিব্বান, তিনি দীর্ঘ একটি হাদীস বর্ণনা করে সহীহ্ বলেছেন । [৯৫৪]
অপরের বস্তু থেকে সাময়িকভাবে উপকৃত হওয়া
অন্যের মালিকানাধীন সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়া আবশ্যক
সামুরাহ বিন্ জুনদুব (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ধাররূপে গৃহীত বস্তু ফেরত না দেয়া পর্যন্ত গ্রহীতা (ক্ষয়-ক্ষতির) দায়ী থাকবে । - হাকিম একে সহীহ বলেছেন ।[৯৫৫]
আমানত ও ধার নেয়া বস্তু ফেরৎ দেয়া ওয়াজিব
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমার নিকটে আমানতরূপে রক্ষিত বস্তু আমানতদাতাকে ফেরত দাও আর তোমার সাথে খেয়ানত করে এমন লোকের সাথেও তুমি বিশ্বাসঘাতকতা করবে না । -তিরমিযী একে হাসান বলেছেন আর হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন । আর আবূ হাতিম রাযী একে মু্ন্কার (দুর্বল হাদীস) বলেছেন । হাদীস শাস্ত্রের একদল হাফিয হাদীসটিকে বর্ণনা করেছেন, যা আরীয়ার অন্তর্ভুক্ত । [৯৫৬]
আরিয়া”র যিম্মা নেওয়ার বিধান
ইয়া’লা বিন্ উমাইয়াহ তিনি বলেছেন-রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, যখন আমার দূতগণ (প্রেরিত লোকগণ) তোমার নিকটে আসবে তখন তুমি তাদেরকে ৩০টি বর্ম দিবে । আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! ওগুলো কি ক্ষতিপূরণের দায়িত্বমুক্ত সাময়িক ঋণ বিশেষ না পরিশোধ্য ধার মাত্র? তিনি বললেন, পরিশোধীয় ধার স্বরূপ । -ইবনু হিব্বান সহীহ্ বলেছেন । [৯৫৭] সাফওয়ান বিন্ উমাইয়াহ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিকট থেকে হুনাইন যুদ্ধের সময় কিছু বর্ম ধার নিয়েছিলেন, ফলে সাফওয়ান তাঁকে বললেন, হে মুহাম্মদ! এটা জোরপূর্বক গ্রহণ করা হল? তিনি বললেন, না, ক্ষতিপূরণ দায়মুক্ত ফেরত দেয়ার শর্তে নেয়া হলো । -হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন । [৯৫৮] বর্ণনাকারী ইমাম হাকিম এর একটি সমর্থক দুর্বল হাদীস ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন । [৯৫৯]
জোরপূর্বক অন্যায়ভাবে কিছু অধিকার করা
অন্যায়ভাবে এক বিঘৎ পরিমাণ কারও জমি দখল করা গুনাহ
সা’ঈদ ইবনু যায়দ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- যে ব্যক্তি যুল্ম করে অন্যের এক বিঘত যমীনও আত্মসাৎ করে, ক্বিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনের শিকল তার গলায় পরিয়ে দেয়া হবে । [৯৬০]
অপরের বস্তু নষ্ট করলে তার বিধান
আনাস (রাঃ) একদিন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কোন এক সহধর্মিণীর কাছে ছিলেন । উম্মুল মু’মিনীনদের অপর একজন খাদিমের মারফত এক পাত্রে খাবার পাঠালেন । তিনি পাত্রটি ভেংগে ফেললেন । তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা জোড়া লাগিয়ে তাতে খাবার রাখলেন এবং (সাথীদেরকে) বললেন, তোমরা খাও এবং উক্ত খাদিমকে দিয়ে ভাল পেয়ালাটি (ভাঙ্গাটির বদলে) পাঠিয়ে দিলেন । আর ভাঙ্গা পেয়ালাটি রেখে দিলেন । তিরমিযী ‘আয়িশা-কে ভঙ্গকারিনী বলে উল্লেখ করেছে । আর তিনি বর্ধিত বর্ণনা করেছেন যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, ‘খাবার নষ্ট করলে (জরিমানা স্বরূপ) খাবার ও পাত্র নষ্ট করলে তার পরিবর্তে পাত্র । তিরমিযী একে সহীহ্ বলেছেন । [৯৬১]
অন্যের জমিতে চাষাবাদ করার বিধান
রাফি’ বিন খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের জমি তাদের অমুমতি ছাড়াই আবাদ করবে সে তার জন্য কোন শস্য প্রাপ্য হবে না-কেবল সে খরচ পাবে। -তিরমিযী একে হাসান বলেছেন; বলা হয়ে থাকে, বুখারী একে যয়ীফ বলেছেন । [৯৬২]
অন্যের জমিতে খেজুর গাছ রোপন করা বিধান
উরওয়াহ ইবনু যুবাইর (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন এক সহাবী বলেছেন, অবশ্য দু’জন লোক নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সমীপে একখন্ড জমির বিবাদ মীমাংসার জন্য বিচারপ্রার্থী হয়েছিল; তাদের এক জনের জমিতে অন্যজন খেজুর গাছ রোপন করেছিল । নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জমির মালিককে জমি প্রদান করেছিলেন, আর গাছ রোপণকারীকে গাছ উঠিয়ে নিতে হুকুম দিয়েছিলেন । তিনি বলেছিলেন অত্যাচারী রোপনকারীর জন্য কোন হক (দাবী) সাব্যস্ত নয় । -আবূ দাউদ হাসান সানাদে । [৯৬৩] বর্ণনাকারী আসহাবে সুনানে সা’ঈদ বিন যায়দ থেকে ‘উরওয়াহ কর্তৃক শেষাংশে বর্ণিত হয়েছে । এর মাউসূর ও মুরসাল (যুক্ত ও ছিন্ন সূত্র) এবং সাহাবী নির্দিষ্ট করার ব্যাপারে মতবিরোধ ঘটেছে । হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
কারও সম্পদ, রক্ত (খুন) এবং সন্মানহানী করার ব্যাপারে কঠিনভাবে নিষেধাজ্ঞা
আবূ বাক্রাহ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানী দিবসে মিনায় ভাষণ দানকালে বলেছেন, ‘তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ, তোমাদের সন্মান তোমাদের পরস্পরের জন্য হারাম, যেমন আজকের তোমাদের এ দিন, তোমাদের এ মাস, তোমাদের এ শহর মর্যাদাসম্পন্ন । [৯৬৪]
শুফ্’আহ বা অগ্রে ক্রয়ের অধিকারের বিবরণ
শুফ্’আহ শরীয়তসম্মত এবং প্রতিবেশির শুফ্’আহর বিধান
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সব সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা হয়নি, তাতে শুফ্’আহ এর ফায়সালা দিয়েছেন । যখন সীমানা নির্ধারিত হয়ে যায় এবং রাস্তাও পৃথক হয়ে যায়, তখন শুফ্’আহ এর অধিকার থাকে না । - শব্দ বিন্যাস বুখারী থেকে গৃহীত । [৯৬৫] মুসলিমে আর একটি বর্ণনায় আছে- শুফ্’আহ প্রত্যেক অংশ বিশিষ্ট বস্তুতে রয়েছে – তা জমি হোক, বাড়ি হোক বা প্রাচীরবেষ্টিত বাগ-বাগিচা হোক । এগুলি তার শরীকদারকে বিক্রয় করার প্রস্তাব না দিয়ে অন্যের কাছে বিক্রয় করা সঙ্গত নয় – (অন্য বর্ণনায় শরীকদারকে বিক্রয়ের প্রস্তাব না দেয়া পরযন্ত বৈধ হবে না ।) তাহাবীর বর্ণনায় আছে- নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সমস্ত বস্তুতেই ‘শুফ্’আর’ বিধি জারী করেছিলেন । তাহাবীর রাবীগণ নির্ভরযোগ্য ।
প্রতিবেশীর শুফ্’আহর বিধান
আবূ রাফি’ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ঘরের প্রতিবেশী সর্বাপেক্ষা শুফ্’আহ্র হকদার । –এর মধ্যে একটি ঘটনা রয়েছে । [৯৬৬] আনাস বিন মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বাড়ির প্রতিবেশী বাড়ির বেশী হকদার । নাসায়ী (রা), ইবনু হিব্বান একে সহীহ বলেছেন । এর একটি দুর্বল দিক রয়েছেন । [৯৬৭] জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রতিবেশী অন্যের চেয়ে তার শুফ্’আহ্র অধিক হকদার – যদি উভয়ের রাস্তা এক হয় তাহলে প্রতিবেশী অনুপস্থিত থাকলে তার জন্য (বিক্রয়কারী) প্রতিবেশীকে তার বাড়ি ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে (তাকে না জানিয়ে অন্যের কাছে বিক্রয় করতে পারবে না) । -এর সকল রাবী নির্ভরযোগ্য । [৯৬৮]
শুফ,’আহর সময়
ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন – ‘শুফ্আ’র হক উট বাঁধা রশি খুলে ফেলার অনুরূপ । - বায্যারে আরো আছে – অনুপস্থিত শরীকেরে জন্য শুফ্’আহর হক কার্যকর নয় । - এ হাদীসের সানাদ য’ঈফ । [৯৬৯]
লভ্যাংশের বিনিময়ে কারবার
ঋণ প্রদানে বরকত হয়
সুহায়ব (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনটি জিনিসের মধ্যে বরকত রয়েছেঃ মেয়াদ নির্দিষ্ট করে ক্রয়-বিক্রয়, মুকারাযা ব্যবসা এবং পারিবারিক প্রয়োজনে গমে যব মিশানো, ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয় । -ইবনু মাজাহ দুরবল মানাদে । [৯৭০] ৯০৫. হাকিম বিন হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনই যৌথভাবে কারবার করার জন্য কোন ব্যক্তিকে মাল দিলে এ শর্তগুলো আরোপ করতেনঃ জানোয়ার ও কাঁচা অস্থায়ী মালে আমার পুঁজি লাগবে না, আমার মাল সামুদ্রিক যানে চাপাবে না, কোন প্লাবনভূমিতে তা নিয়ে রাখবে না । যদি তুমি এরূপ কিছু কর তাহলে তুমি আমার মালের খেসারত দিতে বাধয থাকবে । - দারাকুতনী, এর রাবীগণ নির্ভরযোগ্য। [৯৭১] ইমাম মালিক মুয়াত্তায় বলেছেন- আলা বিন আবদুর রহমান বিন ইয়াকূব হতে বর্ণিত, তিনি তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি (ইয়াকূব) উসমান (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাল নিয়ে উভয়ের মধ্যে লাভ বন্টিত হবার শর্তে ব্যবসা করেছিলেন । -এই হাদীসে মাওকূফ্ সুত্রে সহীহ্ । [৯৭২]
সম্পদের মালিক যৌথ ব্যবসায় কল্যাণমূলক যে কোন শর্ত করতে পারে
মসাকাত বা বিনিময়ে তত্ত্বাবধান ও ইজারাহ বা ভাড়া বা ঠিকায় সম্পাদন
অংশ নির্ধারণ করে বর্গা দেয়া
ইবনু ‘উমার (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহূদীদের সঙ্গে উৎপাদিত ফল কিংবা ফসলের অর্ধেক শর্তে খায়বারের জমি বর্গা দিয়েছিলেন । উক্ত সহীহ্ দ্বয়ের বর্ণনায় আছে – তখন ইয়াহূদীরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে অনুরোধ করল যেন তাদের সে স্থানে বহাল রাখা হয় এ শর্তে যে, তারা সেখানে চাষাবাদের দায়িত্ব পালন করবে আর ফসলের অর্ধেক তাদের থাকবে । আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বললেন, আমরা এ শর্তে তোমাদের এখানে বহাল থাকতে দিব যতদিন আমাদের ইচ্ছা । কাজেই তারা সেখানে অহাল রইল । অবশেষে ‘উমার (রাঃ) তাদেরকে নির্বাসিত করে দেন । [৯৭৩] মুসলিমে আছে- উৎপন্ন ফল ও শস্যের অর্ধেকের বিনিময়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বারের ইহূদীদেরকে সেখানকার খেজুর বাগান ও আবাদী জমি তাদের নিজ ব্যয়ে আবাদ করার দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন ।
নির্দিষ্ট জিনিসের বিনিময়ে জমি কেরায়া ভাড়া করার বৈধতা
হানযালাহ বিন কাইস তিনি বলেছেন, আমি রাফি’ বিন খাদিজা(রাঃ) কে সোনা ও রৌপ্যের বিনিময়ে জমি ইজারায় (লাগানর) বৈধতা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে তিনি (সাহাবি রাফি’) বললেন, এতে কোন দোষ নেই । লোকেরা নবী(সাঃ) এর যুগে পানি প্রবাহের স্থলে, নহর ও নালার পাড়ের আর কোন ক্ষেতের অংশ বিশেষের বিনিময়ে ঠিকার লেনদেন করত । এসবের কোনটি নষ্ট হয়ে যেত আর কোনটি ঠিক থাকত এবং কোনটি ঠিক থাকত আর কোনটি নষ্ট হয়ে যেত, আর তখন এসব ঠিকা ব্যতিত অন্য কোনরূপ ঠিকা ছিল না । এই (অনিশ্চিত অবস্থার) ঠিকা সম্বন্ধেই নবী(সাঃ) তাকে ধমক দিয়েছেন । কিন্তু এমন জ্ঞ্যাত বস্তু যা নিশ্চিত ফলপ্রসূ ও জিম্মাদারির যোগ্য তাতে ঠিকা দেয়ার ব্যবস্থায় কোন দোষ নেই । অত্র কিতাবের সংকলক আসকালানী (রহঃ) বলেছেন- এ হাদিসটি বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত সাধারনভাবে জমি ঠিকা দেয়ার নিষেধাজ্ঞাসূচক সংক্ষিপ্ত হাদিসটির বিশ্লেষণ স্বরূপ । [৯৭৪] সাবিত ইবনু যাহ্হাক (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উৎপন্ন বস্তুর মধ্যে অংশ ধার্য চাষ আবাদের ব্যবস্থাকে নিষিদ্ধ করেছেন এবং ঠিকা প্রদানের আদেশ দিয়েছেন । [৯৭৫]
শিঙ্গা লাগিয়ে মজুরী নেওয়ার বিধান
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন নবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিঙ্গা লাগালেন এবং যে তাকে শিঙ্গা লাগিয়েছে, তাকে তিনি মজুরী দিলেন । যদি তা হারাম হতো তবে তিনি তা দিতেন না । [৯৭৬] রাফি’ বিন খাদীজ(রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সিঙ্গা লাগানর উপার্জন নোংরা বস্তু ।[৯৭৭]
কর্মচারীর মজুরী না দেয়ার বিধান
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা করেছেন যে, আমি নিজে তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাদী হব । এক ব্যক্তি, যে আমার নামে ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করল । আরেক ব্যক্তি, যে কোন আযাদ মানুষকে বিক্রি করে তাঁর মূল্য ভোগ করল । আর এক ব্যক্তি, যে কোন মজুর নিয়োগ করে পুরো কাজ আদায় করে আর তাঁর পারিশ্রমিক দেয় না । [৯৭৮]
কুরআন শিখিয়ে বেতন নেওয়ার বিধান
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা মজুরী গ্রহন কর এমন সব বস্তুর মধ্যে কুরআনের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহন করা সর্বাপেক্ষা বেশী হকদার ।[৯৭৯] ইবনু ‘উমার(রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, শ্রমিককে তাঁর ঘাম শুকানোর পূর্বেই মজুরী দিয়ে দাও । [৯৮০] আবূ ইয়া’লা ও বাইহাকীতে আবূ হুরাইরা(রাঃ) থেকে আর ত্বাবারানীতে জাবীর(রাঃ) থেকে এ ব্যাপারে আরো হাদীস বর্ণিত হয়েছে, কিন্তু তাঁর সবগুলোই য’ঈফ হাদীস । [৯৮১]
মজুরীর পরিমান জানা আবশ্যক
আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন শ্রমিককে কাজে লাগাবে সে যেন তাঁর পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে কাজে লাগায় । ‘আব্দুর রাযযাক রহ. এর সানাদ মুনকাতে’, আর বাইহাকী আবূ হানীফাহ(রহঃ) – মাওসূল বা অবিচ্ছিন্ন সূত্রে বর্ণনা করেছেন । [৯৮২]
অনাবাদী জমির আবাদ
যে ব্যক্তি পরিত্যক্ত মালিকবিহীন জমি আবাদ করবে ঐ জমির হাক্বদার সেই ব্যক্তি হবে
আয়িশা (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি পরিত্যক্ত মালিকবিহীন জমি আবাদ করবে ঐ জমির হকদার সে ব্যক্তিই হবে । উরওয়াহ বলেছেন, এরূপ ফয়সালাহ ‘উমার(রাঃ) তাঁর খিলাফাত আমলে করেছেন । [৯৮৩] সা’ঈদ ইবনু যায়দ (রাঃ) তিনি নাবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে কোন ব্যক্তি অনাবাদী মৃত জমিকে আবাদ করবে ঐ জমি তারই হবে ।– তিরমিযী একে হাসান বলেছেন, আর তিনি বলেছেন, এটা মুরসালরূপে বর্ণিত হয়েছে । বর্ণনাকারী ‘সাহাবী’ নির্নয়ের ব্যাপারে মতভেদ আছে- কেউ বলেছেন জাবির(রাঃ), কেউ বলেছেন ‘আয়িশা(রাঃ), কেউ বলেছেন ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘উমার(রাঃ), তবে প্রথম মত জাবির(রাঃ) অধিক অগ্রগণ্য । [৯৮৪]
চারণভূমি প্রসঙ্গে
ইবনু আব্বাস (রাঃ) সাব বিন জাসসামাহ আল-লাইসী (রাঃ) তাঁকে জানিয়েছিলেন যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, চারণভূমি সংরক্ষিত করা আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছাড়া আর কারো অধিকারে নেই । [৯৮৫] ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, উদ্দেশ্য প্রণোদনিতভাবে বা উদ্দেশ্যহীনভাবে কাকেও কোন রকম কষ্ট দেয়া বৈধ নয় । [৯৮৬] ইবনু মাজাহয় আবু সাঈদ (রাঃ) অনুরূপ হাদীস বর্ণিত রয়েছে । আর হাদীসটি মুওয়াত্তায় রয়েছে মুরসালরূপে । [৯৮৭]
অনাবাদী জমি আবাদ করার প্রকার সমূহ
সামুরাহ বিন জুনদুব (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন অনাবাদী জমিকে প্রাচীরবেষ্টিত করে নিবে ঐ স্থান তারই হবে । - ইবনু জারূদ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন । [৯৮৮]
বিরানভূমিতে কূপ খননকারীর অধিকার
আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন কূপ খনন করবে তার জন্য ঐ কূপের সংলগ্ন চল্লিশ হাত স্থান তা গৃহ পালিত পশুর অবস্থান ক্ষেত্ররূপে তার অধিকারভুক্ত হবে । - ইবনু মাজাহ দুর্বল সানাদে । [৯৮৯]
জমি বরাদ্দ প্রসঙ্গ
আলাকামাহ বিন ওয়ায়িল (রাঃ) তিনি পিতা (ওয়ায়েল) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে হাযরা মাওত নামক স্থানে কিছু জমি জায়গীরস্বরূপ দিয়েছিলেন । - ইবনু হিব্বান একে সহীহ বলেছেন । [৯৯০] ইবনু উমার (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুবায়ের (রাঃ) এর জন্য তার ঘোড়ার দৌড়ানোর শেষ সীমা পর্যন্ত জমি দেয়ার জন্য বরাদ্দ করলেন । অতঃপর তিনি ঘোড়া দৌড়ালেন ও তা একস্থানে গিয়ে দাঁড়াল, তারপর তিনি তার চাবুকখানি নিক্ষেপ করলেন । নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবার বললেন, তাকে তাঁর চাবুক নিক্ষিপ্ত হবার স্থান পর্যন্ত দিয়ে দাও । - এর সানাদে দুর্বলতা আছে । [৯৯১]
ঘাস, পানি এবং আগুনে মানুষের সমভাবে শরীক
বর্ণনাকারী তিনি বলেছেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গী হয়ে যুদ্ধ করেছিলাম । তখন তাঁকে বলতে শুনেছি, সমস্ত মানুষ তিনটি বস্তুতে সমভাবে অংশীদার – ঘাস, পানি ও আগুন । - এর রাবীগণ নির্ভরযোগ্য । [৯৯২]
ওয়াকফের বিবরণ
মৃত্যুর পরও মানুষের যে আমল অব্যাহত থাকে
আবূ হুরাইরা (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মৃত্যুর পর মানুষের তিনটি আমল ব্যতীত সকল আমল বন্ধ হয়ে যায় । সাদাকাতুল জারিয়াহ, উপকারী ইলম বা বিদ্যা, সৎ সন্তান যে (পিতা-মাতার জন্য) দু’আ করে । [৯৯৩]
ওয়াকফের শর্তসমূহ
ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেছেন, উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) খায়বারে কিছু জমি লাভ করেন । তিনি এ জমির ব্যাপারে পরামর্শর জন্য আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এলেন এবং বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি খায়বারে এমন উৎকৃষ্ট কিছু জমি লাভ করেছি যা ইতোপূর্বে আর কখনো পাইনি, (আপনি আমাকে এ ব্যাপারে কী আদেশ দেন?) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘তুমি ইচ্ছা করলে জমির মূলস্বত্ত্ব ওয়াকফে রাখতে এবং উৎপন্ন বস্তু সদাকাহ করতে পার’। ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, ‘উমার (রাঃ) এ শর্তে তা সদাকাহ (ওয়াকফ) করেন যে, তা বিক্রি করা যাবে না, তা দান করা যাবে না এবং কেউ এর উত্তরাধিকারী হবে না’। তিনি সাদকাহ করে দেন এর উৎপন্ন বস্তু অভাবগ্রস্থ, আত্মীয়-স্বজন, দাসমুক্তি, আল্লাহর রাস্তায়, মুসাফির ও মেহমানদের জন্য । (রাবী আরও বললেন) তার দায়িত্বশীল তা ন্যায়সঙ্গতভাবে খেলে দোষ নেই । বন্ধুকে খাওয়াতে পারবে [৯৯৪] যদি সে নিজস্ব স্বার্থে মাল বৃদ্ধিকারী না হয় । - শব্দ বিন্যাস মুসলিমের । বুখারীর অন্য বর্ণনায় আছে, তার মূল বস্তুকে ওয়াকফ করে রাখ, বিক্রয় করা, হেবা করা চলবে না বরং তার ফল খরচ করে দিতে হবে । [৯৯৫]
ওয়াকফকৃত বস্তু স্থানান্তর করার বিধান
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমার (রাঃ) কে যাকাত ওসুল করার জন্য পাঠিয়েছিলেন, (এটা দীর্ঘ হাদীসের অংশবিশেষ) (তাতে আছে) কিন্তু খালেদ বিন-অলিদ স্বীয় বর্মগুলো ও অস্ত্রসমূহকে আল্লাহর পথে ব্যবহারের জন্য (জিহাদের জন্য) ওয়াকফ করে রেখেছিলেন । [৯৯৬]
হিবা বা দান, উমরী বা আজীবন দান ও রুকবা দানের বিবরণ
দান করার ক্ষেত্রে সন্তানদের মধ্যে করা তারতম্য নিষেধ
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) তার পিতা তাকে নিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এলেন এবং বললেন, আমি আমার এই পুত্রকে একটি গোলাম দান করেছি । তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার সব পুত্রকেই কি তুমি এরূপ দান করেছ? তিনি বললেন, না; তিনি বললেন, তবে তুমি তা ফিরিয়ে নাও । [৯৯৭] অন্যশব্দে এরূপ আছে – আমার পিতা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে হাজির হলেন যাতে করে তাঁকে এ ব্যাপারে সাক্ষী করে নিতে পারেন । নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, তোমার প্রত্যেক ছেলের জন্য কি এরূপ দান করেছ? সাহাবী বললেন, না, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহকে ভয় কর, তোমার সন্তানদের মধ্যে সমভাবে বন্টন কর । ফলে আমার পিতা [বাশীর (রাঃ) ] বাড়ি ফিরে এলেন ও ঐ দান ফেরত নিলেন ।[৯৯৮] মুসলিমের অন্য একটি বর্ণনায় আছে – নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অসন্তুষ্ট হয়ে বললেন, তবে তুমি এর জন্য আমাকে ব্যতীত অন্যকে সাক্ষী করে রাখ । তারপর বললেন, তুমি কি পছন্দ কর যে, তোমার প্রতি তার (পুত্রগণ) সমভাবে সদ্ব্যবহার করুক । সাহাবী বললেন, হাঁ, তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি এরূপ করো না । [৯৯৯]
দান করে ফিরিয়ে নেওয়া হারাম
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দান করে তা ফেরত গ্রহণকারী ঐ কুকুরের মত, যে বমি করে এরপর তার বমি খায় । বুখারীর অন্য একটি বর্ণনায় আছে, খারাপ উপমা দেয়া আমাদের জন্য শোভনীয় নয় তবু যে দান করে তা ফিরিয়ে নেয়, সে ঐ কুকুরের মতো, যে বমি করে তা আবার খায় । [১০০০]
ছেলেকে দান করা বস্তু পিতার ফিরিয়ে নেওয়া বৈধ
ইবনু উমার ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন মুসলিমের জন্য কিছু দান করার পর পুনরায় তা ফেরত নেয়া হালাল নয় । তবে পিতা তার পুত্রকে যা দান করে তা ফেরত নিতে পারে । - তিরমিযী, ইবনু হিব্বান ও হাকিম একে সহীহ বলেছেন । [১০০১]
উমরা এবং রুকবা প্রসঙ্গ [১০০৪]
জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, উমরী বা আজীবন দান তার জন্য সাব্যস্ত হবে যার জন্য তা হেবা করা হয়েছে । [১০০৫] মুসলিমে আছে- তোমাদের মাল তোমাদের জন্য রাখ, তা নষ্ট করে ফেল না । যদি কেউ কাউকে জীবনতক দান করে তাহলে এ দান তার জীবন ও মরণতকই হবে, আর তার মৃত্যুর পর তার সন্তানগণের হবে । অন্য শব্দে এরূপ এসেছে- নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বৈধ বলেছেন ঐ উমরী দান যাতে হিবাকারী বলবে যে, এ দান তোমার জন্য ও তোমার সন্তানদের (ওয়ারিসদের) জন্যও । কিন্তু যদি বলে এ দান তোমার জীবনতক মাত্র । তাহলে ঐ দান সিদ্ধ না হয়ে মালিকেরই থেকে যাবে । [১০০৬] আবু দাউদে ও নাসায়ীতে আছে- তোমরা রুকবা ও উমরা করবে না । যে কিছু রুকবা বা উমরা করবে তাহলে তা তার ওয়ারিসদের জন্যও হবে । [১০০৭]
সদকা দানকারীর স্বীয় সদকা গ্রহণ করা নিষেধ
উমার (রাঃ) তিনি বলেছেন, এক লোককে আমি আমার একটি ঘোড়া আল্লাহর রাস্তায় আরোহণের জন্য দান করলাম ঘোড়াটি যার নিকট ছিল, সে তার চরম অযত্ন করল । তাই সেটা আমি তার নিকট হতে কিনে নিতে চাইলাম । আমার ধারণা ছিলে যে, সে তা কম দামে বিক্রি করবে । এ সম্পর্কে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, এক দিরহামের বিনিময়েও যদি সে তোমাকে তা দিতে রাজী হয় তবু তুমি তা ক্রয় কর না । (এটি একটি দীর্ঘ হাদীসের অংশ) [১০০৮]
হাদিয়া (উপহার) দেয়া মুস্তাহাব এবং এর প্রভাব
আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন । নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, অন্যকে হাদীয়া দাও তাহলে আপোষে ভালবাসা সৃষ্টি করতে পারবে । বুখারী তাঁর আদাবুল মুফরাদে ও আবু ইয়া’লা – উত্তম সানাদে । [১০০৯] আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- আপোষে উপঢৌকন দিতে থাকো, কেননা উপঢৌকন দ্বারা মনের হিংসা-বিদ্বেষজনিত গ্লানি দূর হয়ে যায় । - বাযযার দুর্বল সানাদে । [১০১০] আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, - হে মুসলিম নারীগণ! কোন মহিলা প্রতিবেশিনী যেন অপর মহিলা প্রতিবেশিনীর হাদিয়া তুচ্ছ মনে না করে, এমনকি তা ছাগলের সামান্য গোশতযুক্ত হাড় হলেও । [১০১১]
সাওয়াবের আশায় দান করার বিধান
ইবনু উমার (রাঃ) তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন । নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন হেবা বা দান করে সেই তার উপর বেশী হকদার, যতক্ষণ তার কোন বিনিময় প্রাপ্ত না হয় । - হাকিম একে সহীহ বলেছেন; মাহফূয (সংরক্ষিত) সানাদ হিসেবে এটা ইবনু ‘উমার হতে, উমার (রাঃ) –এর কথা বর্ণিত । [১০১২]
পড়ে থাকা বস্তুর বিধি নিয়ম
পড়ে থাকা সামান্য বস্তু নেয়া জায়েজ আর এটা পড়ে থাকা বস্তুর বিধানে ধর্তব্য নয়
আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাস্তায় পড়ে থাকা খেজুরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার যদি আশংকা না হত যে এটি সাদাকার খেজুর তাহলে আমি এটা খেতাম । [১০১৩]
কুড়িয়ে পাওয়া বস্তুর বিধানাবলী
যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) তিনি বলেছেন, কোন ব্যক্তি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে পতিত (হারানো) বস্তু সমন্ধে জিজ্ঞেস করলেন । তিনি বললেন, তুমি তার থলে ও বাঁধন চিনে রাখ তারপর তা একবছর ধরে ঘোষণা দিতে থাকো, যদি মালিক এসে যায় ভাল, নচেৎ তুমি তাকে ব্যাবহারে নিতে পারবে । লোকটি বললঃ ‘হারানো ছাগল পাওয়া গেলে?’ তিনি বললেন, ‘সেটি তোমার হবে, নাহলে তোমার ভাইয়ের, না হলে বাঘের।’ লোকটি বলল, হারানো উটের কি হবে? নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘উট নিয়ে তোমার কি হয়েছে? তার তো আছে পানির মশক ও শক্ত পা । পানির নিকট যেতে পারে এবং গাছ খেতে পারে । কাজেই তাকে ছেড়ে দাও, এমন সময়ের মধ্যে তার মালিক তাকে পেয়ে যাবে ।’ [১০১৪] যায়দ বিন খালিদ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি হারানো পশুকে আশ্রয় দেবে প্রচার না করা পর্যন্ত সে পথভ্রষ্ট (অন্যায়কারী) বলে গণ্য হবে । [১০১৫]
হারানো বস্তু পেলে কাউকে সাক্ষী করে রাখার বৈধতা
ইয়ায বিন হিমার (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন হারানো বস্তু পাবে সে যেন নির্ভরযোগ্য দু’জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিকে সাক্ষী করে রাখে এবং ঐ বস্তুর পাত্র ও তার বন্ধন (সঠিক পরিচয় লাভের নিদর্শনগুলো) তার স্বীয় অবস্থায় ঠিক রাখে, অতঃপর তাকে গোপন বা গায়েব করে না রাখে । তারপর যদি ঐ বস্তুর মালিক এসে যায় তাহলে সেই প্রকৃত হকদার হবে অন্যথায় তা আল্লাহ্র মাল হিসেবে যাকে তিনি দেন তারই হবে । - ইবনু খু্যাইমাহ, ইবনু জারূদ ও ইবনু হিব্বান একে সহীহ বলেছেন । [১০১৬]
হজ্ব সম্পাদনকারীর পড়ে থাকা কোন বস্তু উঠানোর বিধান
আবদুর রহমান বিন ‘উসমান তাইমী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাজ্ব পালনকারীদের পড়ে থাকা কোন বস্তু উঠাতে নিষেধ করেছেন । [১০১৭]
চুক্তিতে আবদ্ধ ব্যক্তির পড়ে থাকা কোন মাল উঠানোর বিধান
মিকদাদ বিন মা’দীকারিব (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সাবধান! তীক্ষ্ণ বড় দাঁতধারী হিংস্র পশু, গৃহপালিত গাধা আর যিম্মীদের পড়ে থাকা কোন মাল তোমাদের জন্য হালাল নয় । তবে যদি যিম্মী মালিক সেটাকে নিষ্প্রয়োজন মনে করে তাহলে তা কুড়িয়ে নেয়া যাবে । [১০১৮]
ফারায়িয বা মৃতের পরিত্যক্ত সম্পত্তির বণ্টন বিধি
আসাবাদের পূর্বে আসহাবুল ফারায়েয মীরাস পাবে [১০১৯]
ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সুনির্দিষ্ট অংশের হকদারদের মীরাসে পৌঁছে দাও । অতঃপর যা বাকী থাকবে তা (মৃতের) নিকটতম পুরুষের জন্য । [১০২০]
মুসলমান এবং কাফেরের মাঝে উত্তরাধিকার সূত্র নেই
উসামাহ বিন যায়দ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুসলিম কাফেরের উত্তরাধিকারী হয় না, আর কাফিরও মুসলিমের উত্তরাধিকারী হয় না । [১০২১]
বোনেরা মেয়ের সাথে আসাবাহ হয়
ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফয়সলা করেছেন, কন্যা পাবে অর্ধাংশ আর পৌত্রী পাবে ষষ্ঠাংশ । এভাবে দু’তৃতীয়াংশ পূর্ণ হবে । বাকী তৃতীয়াংশ পাবে বোন । [১০২২]
দুই ভিন্ন ধর্মের লোকদের মাঝে উত্তরাধিকার সূত্র নেই
আবদুল্লাহ বিন ‘আম্র (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দু’টি ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিরা একে অপরের ওয়ারিস হবে না । -ইমাম হাকিম (রহঃ) উসমাহ (রাঃ)-এর বর্ণিত শব্দ বিন্যাসে এবং নাসায়ী (রহঃ) উসমাহ (রাঃ)-এর হাদীসকে অত্র (‘আবদুল্লাহ্-এর) হাদীসের শব্দে বর্ণনা করেছেন । [১০২৩]
দাদার মীরাছ (উত্তারধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ)
ইমরান বিন হুসাইন (রাঃ) তিনি বলেন, কোন লোক নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললো, আমার ছেলের ছেলে নাতির মৃত্যু হয়েছে, তার মিরাস থেকে আমার জন্য কি হক রয়েছে? তিনি বললেন- এক ষষ্ঠাংশ । লোকটি ফিরে গেলে আবার তাকে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডেকে বললেন, তোমরা জন্য আর এক ষষ্ঠাংশ । লোকটি ফিরলে পুনরায় তাকে ডেকে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলে দিলেন এর পরবর্তী ষষ্ঠাংশ তোমার খাদ্যের জন্য (আসবাবরূপে) প্রাপ্ত । -তিরমিযী একে সহীহ বলেছেন, এটা ‘ইমরান থেকে হাসান বাসরীর বর্ণনায় রয়েছে । এ সম্বন্ধে বলা হয়েছে-হাসান বাসরী ‘ইমরান (রা) থেকে শ্রবণ করেননি । [১০২৪]
দাদীর মীরাছ
ইবনু বুরাইদাহ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃতের মাতা না থাকার অবস্থায় সম্পত্তি থেকে দাদীর জন্য এক ষষ্ঠাংশ দিয়েছেন । -ইবনু হিব্বান, ইবনু খুযাইমাহ ও ইবনু জারূদ সহীহ, বলেছেন আর ইবনু আদী হাদীসটিকে শক্তিশালী বলেছেন । [১০২৫]
রক্ত সম্পর্কীয়দের মীরাছ
মিকদাদ্ ইবনু মা’দীকারিব (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- যার কোন ওয়ারিস নেই, তার মামা তার ওয়ারিস হবে । -আবু যুর’আতার্ রাযী হাসান বলেছেন এবং হাকিম ও ইবনু হিব্বান একে সহীহ বলেছেন । [১০২৬] আবূ উমামাহ ইবনু সহ্ল (রাঃ) তিনি বলেছেন, ‘উমার (রাঃ) আবূ উবায়দাহ (রাঃ)-কে লিখে জানিয়েছিলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যার কোন অভিভাবক নেই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই তার অভিভাবক এবং যার কোন ওয়ারিস নেই মামাই তার ওয়ারিস । -তিরমিযী একে হাসান বলেছেন এবং ইবনু হিব্বান সহীহ্ বলেছেন । [১০২৭]
বাচ্চার মীরাস
জাবির (রা) তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, ভূমিষ্ঠ সন্তান যদি শব্দ করে চীৎকার দেয় তাহলে তাকে ওয়ারিস বলে গণ্য করতে হবে । -ইবনু হিব্বান সহীহ্ বলেছেন । [১০২৮]
হত্যাকারীকে উত্তরাধিকারী করার বিধান
আম্র বিন শু’আইব তিনি তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, হত্যাকারীর জন্য নিহিত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে কোন অধিকার নেই । -হাদীসটিকে ইবনু ‘আবদিল বার্ শক্তিশালী বলেছেন, নাসায়ী ইল্লাত বা ত্রুটিযুক্ত হাদীস বলেছেন, কিন্তু হাদীসটির ‘আম্র এর উপর মাওকূফ হওয়াটাই সঠিক । [১০২৯]
ওয়ালা সূত্রে উত্তরাধিকারী
উমার বিন খাত্তাব (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, মৃতের পিতা ও পুত্র যা অধিকার করবে তা আসাবা সূত্রেই পাবে, সে যেই হোন না কেন ।–ইবনুল মাদানী ও ইবনু ‘আবদিল বার্ সহীহ্ বলেছেন । [১০৩০]
ওয়ালার বিধানাবলী
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দাসমুক্ত করার দ্বারা ‘ওয়ালা’ [১০৩১] নামে যে সম্পর্ক মুক্তকারী মুনিব ও দাসের মধ্যে স্থাপিত হয় তা বংশীয় সম্পর্কের ন্যায় (স্থায়ী) । সেটি বিক্রয় হয় না ও দানও করা যায় না । হাকিম শাফি’ঈ (রহঃ)-এর সূত্রে তিনি মুহাম্মদ বিন হাসান বিন থেকে, তিনি আবূ ইউসুফ হতে বর্ণনা করেছেন। হাদীসটিকে ইবনু হিব্বান সহীহ বলেছেন; ইমাম বাইহাকী ত্রুটিযুক্ত বা দুর্বল বলেছেন । [১০৩২]
ফারায়েযের ক্ষেত্রে যায়েদ বিন হারেছ (রাঃ) সাহাবীদের মাঝে সবচেয়ে বিজ্ঞ
আবূ কিলাবাহ (রাঃ) তিনি আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যায়েদ বিন সবিত (রাঃ) তোমাদের মধ্যে ফারায়িয বা মৃতের পরিত্যক্ত সম্পত্তি বন্টন বিষয়ে অধিক পারদর্শী । -তিরমিযী, ইবনু হিব্বান ও হাকিম সহীহ বলেছেন কিন্তু এর উপর মুরসাল হবার ত্রুটি আরোপ হয়েছে । [১০৩৩]
অসিয়তের বিধান
ওয়াসিয়্যাত দ্রুত সম্পন্ন করার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদাণ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন মুসলিম ব্যক্তির এটা উচিত নয় যে, কোন ব্যাপারে কোন ওয়াসিয়্যাত করতে ইচ্ছা করার পর লিখিত আকারে কাছে না রেখে দু’দিন অতিবহিত করে । [১০৩৪]
কতটুকু পরিমান ওয়াসিয়্যাত করা হবে – এর বর্ণনা
সাদ বিন আবূ অক্কাস (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি সম্পদশালী। আর একমাত্র কন্যা ছাড়া কেউ আমার উত্তরাধিকারী নেই । তবে আমি কি আমার সম্পদের দু’তৃতীয়াংশ সদাকাহ করতে পারি? তিনি বললেন, না । আমি আবার নিবেদন করলাম, তাহলে অর্ধেক । তিনি বললেন, না । অতঃপর তিনি বললেন, এক তৃতীয়াংশ আর এক তৃতীয়াংশও বিরাট পরিমাণ অথবা অধিক । তোমার ওয়ারিসদের অভাবমুক্ত রেখে যাওয়া, তাদিরকে খালি হাতে পরমুখাপেক্ষী অবস্থায় রেখে যাওয়ার চেয়ে উত্তম । [১০৩৫]
মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে সদাকাহ দান করা মুস্তাহাব
আয়িশা (রাঃ) এক ব্যক্তি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমার মায়ের আকস্মিক মৃত্যু ঘটে, কিন্তু আমার বিশ্বাস তিনি (মৃত্যুর পূর্বে) কথা বলতে সক্ষম হলে কিছু সদাকাহ করে যেতেন । এখন আমি তাঁর পক্ষ হতে সদাকাহ করলে তিনি এর প্রতিফল পাবেন কি? তিনি [নাবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বললেন, হ্যাঁ । শব্দ বিন্যাস মুসলিমের । [১০৩৬]
ওয়ারিছের জন্য ওয়াসিয়্যাত করার বিধান
আবূ উমামাহ বাহিলী (রাঃ) তিনি বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি যে, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক প্রাপকের প্রাপ্য অংশ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন । অতএব কোন ওয়ারিসের অনুকূলে ওসিয়াত করা যাবে না । -আহমাদ ও তিরমিযী একে হাসান বলেছেন এবং ইবনু খুযাইমাহ ও ইবনু জারূদ এক শক্তিশালী বলে মন্তব্য করেছেন । [১০৩৭] দারাকুতনী ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তার শেষে তিনি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, ‘তবে যদি উত্তরাধিকারীহণ ইচ্ছা করে’ । এর সানাদ হাসান । [১০৩৮]
ওয়াসিয়্যাতের বিধানের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহের বর্ণনা
মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ) তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ তোমাদের সওয়াবকে বৃদ্ধি করার সুযোগ দেবার জন্যে তোমাদের মালের তৃতীয়াংশ তোমাদের মৃত্যুর সময় তোমাদেরকে দান করেছেন । [১০৩৯] বর্ণনাকারী ইমাম আহমাদ ও বাযযার হাদীসটিকে আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন । [১০৪০] আবূ হুরাইরা (রাঃ) এর সকল সূত্র দুর্বল কিন্তু এক সূত্র অন্য সূত্র (সানাদ) দ্বারা শক্তিশালী হচ্ছে । (আল্লাহ্ সবচেয়ে ভাল জানেন) । [১০৪১]
কোন বস্তু আমানাত রাখা
কোন বস্তু কারো কাছে সংরক্ষনের জিম্মায় রাখার বিধান
আমর বিন শু‘আইব তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কেউ কারো কাছে ওয়াদিয়া রাখালে) তা ধ্বংস হলে) তার কোন ক্ষতিপূরণ নাই । -এর সানাদ য‘ঈফ । [১০৪২]